নিষ্ঠুর নিয়তি - মুন্নি আক্তার প্রিয়া - অনু গল্প

পড়ুন মুন্নি আক্তার প্রিয়া'র লেখা একটি অনু গল্প নিষ্ঠুর নিয়তি
নিষ্ঠুর নিয়তি
নিষ্ঠুর নিয়তি by মুন্নি আক্তার প্রিয়া

১!!

নিজের বউকে, ভালোবাসার মানুষটিকে এই মাত্র অন্যের হাতে তুলে দিয়ে আসলো ইরফান। নিজে অন্য একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিলো।এটা বোধ হয় খুব কম মানুষই পারবে। ৫টা বছরের সম্পর্ক যেন নিমিষেই হাতের মুঠোয় কবর দিয়ে আসলো ইরফান। একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোয়া ছড়িয়ে টানছে আর রাস্তা দিয়ে হাঁটছে ইরফান। চলে গেলো ভাবনার জগতে আজ থেকে ৫ বছর আগের সময়ে.....!!

ইরফান ছোট থেকেই গানটা খুব ভালো করতো। গান নিয়েও ছিল তার অনেক স্বপ্ন। অনেক অনুষ্ঠান টিভির শো'তে তাকে গান গাইতে দেখা যেত।
সেবারও ইরফানের একটি গানের শো থাকে। সেখানে যাওয়ার পর দেখে ইরফান যে গানটি চয়েস করেছে একটি মেয়েও ঠিক সে গানটাই চয়েস করেছে। পরে গেল দুজনে মহা মুশকিলে। এক গান তো দু'বার দুজনে গাওয়া সম্ভব না। অবশেষে দুজনে সিদ্ধান্ত নিলো গানটা তারা দুজনই একসাথে গাইবে। 
গান শেষে পরিচয়ের মাধ্যমে জানতে পারলো মেয়েটির নাম নুহা। গল্পটা এখান থেকেই.....
এরপর থেকে ইরফানের সাথে নুহার প্রায়ই ফোনে কথা হতো। একসময় দুজনই অনুভব করলো তারা দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলেছে। দেখতে দেখতে তাদের সম্পর্কের ২ বছর যে কখন পেড়িয়ে গেল টেরই পেলো না কেউ। ব্যাপারটা তখনই মস্তিষ্কে এলো যখন নুহার পরিবার ওদের সম্পর্কের কথা জেনে যায়। শুরু হয় নুহার উপর অমানুষিক টর্চার।
একসময় নুহা বাধ্য হয় বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার।  ইরফান নুহাকে তার খালার বাসায় নেয়। ইরফানের সাথে তার মায়ের সম্পর্ক ফ্রেন্ডলি হওয়ায় রিলেশনের শুরু থেকে সবটাই জানতো ইরফানের মা। নুহার পরিবার থেকে থানা, পুলিশ করা হয়।
অনশেষে দুই ফ্যামিলি একসাথে বসে। বিচার আলোচনায় এটাই সিদ্ধান্তে আসে যে তারা উপযুক্ত বয়সে আসলে দুজনের বিয়ে দেওয়া হবে।
নুহাকে বাড়িতে নেওয়ার পর তার উপর আবারও শুরু হয় নির্যাতন।
১ এপ্রিল ২০১১,
নুহা বাড়ি থেকে পালিয়ে ফোন দেয় ইরফানকে।
- হ্যালো ইরফান
- হুম নুহা বলো
- ইরফান, আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। প্লিজ কিছু করো। আমি আর এসব সহ্য করতে পারছি না।
- আচ্ছা আমি আসছি।
ইরফান বেড়িয়ে পড়ে বাড়ি থেকে। নুহাকে নিয়ে চলে যায় যশোর ইরফানের খালার বাড়ি। বিয়ে করে নেয় দুজনে। ইরফানের বাবা-মা তাদের বিয়েটা মেনে নিলেও মেনে নেয়নি নুহার পরিবার। নুহার বাবার সোজাসাপ্টা কথা,
- আমার কোনো মেয়ে নেই। মরে গেছে আমার মেয়ে।
৭দিন পর ইরফান আর নুহা ইরফানদের বাড়ি চলে আসে। এভাবে সম্পর্কটা ভালোই চলছিল।

কিছুদিন পর....
ইরফান খেয়াল করলো নুহার সাথে তার মায়ের ঝগরা লেগেই থাকে। প্রথমে ব্যাপারটাকে ততটা পাত্তা দেইনি ইরফান এই ভেবে যে, দুটো পাতিল একসাথে থাকলে একটু টোকা লাগবেই। এদিকে সমস্যা দিনকে দিন বেড়েই চলছিল। ইরফান পড়ে যায় দোটানায়। এদিকে না পারছে নুহাকে কিছু বলতে আর না পারছে তার মাকে কিছু বলতে। নিজের মধ্যে নিজেই বিড়বিড় করছে ইরফান,
- এখন যদি মাকে কিছু বলি মা ভাববে, ২দিনের মেয়েটার জন্য আমাকে বলছে। আর যদি নুহাকে কিছু বলি তাহলে বলবে, যার জন্য সব ছেড়ে চলে এসেছি তার কাছেই আমি অবহেলিত!
অবশেষে ইরফান সিদ্ধান্ত নিলো নুহাকে নিয়ে সে আলাদা থাকবে। ইরফান করলোও তাই। নুহাকে নিয়ে সে পাড়ি জমালো ঢাকার বুকে।
ছোট্ট একটা রুম ভাড়া নিলো তারা।  অবশেষে শুরু হলো দুজনের টোনাটুনির সংসার। উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হওয়া সত্ত্বেও রিক্সা চালানো শুরু করে ইরফান। কারণ এদেশে যে চাকরীর বড়'ই অভাব! রিক্সা চালিয়ে যে টাকা পেতো তা দিয়েই কোনোরকমে তাদের সংসার জীবন কেটে যেত। রাতে বাসায় ফেরার পথে নুহার জন্য মজো নয়তো আইসক্রিম নিয়ে ফিরতো আর তা দেখেই যেন নুহার মুখে বিশ্বজয়ের হাসি ফুটতো। শীতের রাতে নুহার একটি ওড়না বিছিয়ে মাথার নিচে ইরফানের একটি জিন্সের প্যান্ট দিতো। আর নুহা ঘুমাতো ইরফানের হাতের উপর। ইরফানের একটা অভ্যাস হলো কোলবালিশ ধরে ঘুমানো কিন্তু তারপর কোলবালিশ বাতিল হয়ে সঙ্গী হলো নুহা। নুহাকে ছাড়া কোনো রাতেই ঘুমায়নি ইরফান।
দেখতে দেখতে নুহার এস.এস.সি পরীক্ষা চলে আসে।
- ইরফান
- হুম বলো
- আমার তো পরীক্ষা চলে আসলো। ফর্ম ফিলাপের টাকা পাবো কোথায় ইরফান?
- তুমি কি পরীক্ষাটা দিতে চাও?
- হ্যাঁ।
- আচ্ছা আমি টাকা জোগার করার ব্যবস্থা করছি।
- লাভ ইউ ইরফান
- লাভ ইউ টু
- খেতে আসো, আমি ভাত বেড়ে দিচ্ছি।
- তুমি ভাত বাড়ো আমি আসছি।
রাতের খাবার খেয়ে-দেয়ে দুজনে শুয়ে পড়ে। নুহা গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলেও ঘুম আসেনা ইরফানের। মাথায় তার একই চিন্তা যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা সেখানে এতগুলো টাকা কিভাবে জোগার করবে। পরিবারের কাছেই বা কোন মুখে টাকা চাইবে ইরফান। ভাবনার দিগ-দিগান্ত খুঁজে পাচ্ছে না ইরফান।

২/৩ দিন পরঃ
- নুহা
- বলো
- এই ধরো তোমার ফর্ম ফিলাপের টাকা।
- এত অল্প সময়ে তুমি টাকা পেলে কিভাবে ইরফান?
- এক বন্ধুর থেকে ধার নিয়েছি।
- আমার জন্য তোমার কত কষ্ট হচ্ছে তাই না ইরফান?
- ধুর পাগলী, কষ্ট কেন হবে! আমি যে আমার নুহাকে খুব ভালোবাসি।
নুহা ইরফানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। ইরফানও নুহাকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বলতে থাকে,
- স্যরি নুহা। আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি। আমি টাকা ধার নেইনি বরং নিজের রক্ত বিক্রি করে টাকা জোগার করেছি। এই সত্যিটা জানলে যে তুমি অনেক কষ্ট পাবে। আর আমি তো তোমাকে কোনো কষ্ট দিতে পারবো না।
নুহার পরীক্ষা চলে আসে এবং খুব ভালোমতই পরীক্ষা দেয় নুহা। এভাবে কাটতে থাকে তাদের দিনগুলি। একসময় ভাগ্যে সুখের বৃষ্টি দেখা দেয়। ইরফানের ভালো একটা বেতনের চাকরী হয়ে যায়। তা দিয়ে দুজনের সংসার চলেও ইরফানের কাছে হাজার দুয়েক টাকা প্রতি মাসেই থাকে। অফিস থেকে ইরফানকে একটা বাড়িও দেওয়া হয় থাকার জন্য। বাড়ির চারপাশে রয়েছে অনেক গাছ-গাছালি, ফুলের গাছ। ইরফান অফিস থেকে ফিরে আসার পথে নুহার জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসতো। রাতের বেলায় বাড়ির ভেতর বাগানে হাঁটতো আর আইসক্রিম খেতো দুজনে। খুনসুটিতে কত রাত যে এভাবে কেটেছে তার কোনো হিসাব নেই ইরফানের।
রাত:২টা
- ইরফান এই ইরফান
ইরফান ঘুমঘুম চোখে তাকায় নুহার দিকে,
- কি হয়েছে?
- আইসক্রিম খাবো।
ইরফানের বালিশের পাশ থেকে ফোন নিয়ে দেখে ২টা বাজে। ইরফান লাফিয়ে বিছানায় বসে পড়ে।
- মাথা ঠিক আছে নুহা?  ২টা বাজে রাত। এত রাতে আইসক্রিম কোথায় পাবো আমি?
- জানিনা কিছু। আইসক্রিম খাবো মানে খাবোই।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
ইরফান উঠে গিয়ে তার পরিচিত এক রিক্সাওয়ালাকে ফোন দিয়ে আসতে বলে। ইরফান নুহাকে নিয়ে বের হয় আইসক্রিম খাওয়ার জন্য। মনে মনে নিজেই হাসে ইরফান কি পাগলি একটা মেয়ে জুটেছে তার কপালে।
প্রতিটা শুক্রবার তাদের কাছে যেন অনেক বেশিই স্পেশাল ছিল। এই একটা দিনই ইরফান নুহাকে একটু ভালোমত সময় দিতে পারতো।  সকালে রেডি হয়ে সেই যে বের হতো রাতে ডিনার করে বাড়ি ফিরতো। তার মধ্যে, ফুসকা, চকবার, কোণ আইসক্রিম, হালিম, মজো, কাচ্চিবিরিয়ানি তো মাস্ট বি ছিলোই।বিকালের দিকটায় দুজনে হাতে হাত রেখে হাতিরঝিলে হাঁটতো।

পরীক্ষার রেজাল্ট শেষে নুহা বায়না ধরে সে চাকরী করবে। প্রথমে ইরফান রাজি না হলেও নুহার জোড়াজুড়িতে রাজি হয়ে যায়। নুহা একটা কেজি স্কুলে জব নেয়। বেতন ছিল মাত্র এক হাজার টাকা।
দুজনেই দুপুরে একসাথে খেতে আসতো। কয়েকদিন দেখা যেত ইরফান নুহার ৫/৬ মিনিট আগে এসেছে তো কখনো নুহা ইরফানের আগে এসেছে। যখন ইরফান আগে আসতো তখন নুহার ঐ ক্লান্ত চোখমুখ দেখে বুকে মোচর দিয়ে ওঠতো ইরফানের। ইরফান আর না পেরে একদিন নুহাকে বলেই বসলো,
- মাত্র ১ হাজার টাকার জন্য এত কষ্ট করার কোনো মানে হয়না নুহা।
- কাজ করতে হলে একটু কষ্ট হবেই।
- কোনো দরকার নেই। তুমি জবটা ছেড়ে দাও। তোমার চাকরী করার কোনো দরকার নেই। আমি যে টাকা পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার অনেক ভালোমত চলে। তোমার সব চাওয়াই পূরণ করতে পারি আশা করি।
- আমি চাকরী করলে তোমার সমস্যা কি ইরফান?
- আমি চাইনা তোমার কোনো কষ্ট হোক তুমি চাকরী করো!
- কিন্তু আমি চাকরীটা করবোই।
এক কথায় দুই কথায় নিজেদের মধ্যে তর্কে চলে যায়। নুহা বেশ কয়েকদিন গম্ভীর হয়ে থাকে।
ইদানীং ইরফান ফোন দিলেই নুহার ফোন ওয়েটিং পায়। একদিন ইরফান জিজ্ঞেস করলো,
- তোমার ফোন এত ওয়েটিং থাকে কেন?
- কতদিন পর মায়ের সাথে কথা হলো। কাজিনদের সাথে কথা বললাম তাই।

ইরফানও বিশ্বাস করে নেয়। যেহেতু নুহার পরিবার এখন অনেকটাই মেনে নিয়েছে সো কথা বলতেই পারে। 
কিন্তু এই বিষয়টা ইদানীং দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। ইরফান এটা কিছুতেই ভেবে পায়না প্রতিটা দিনই কি এতক্ষণ ধরে পরিবারের সাথে কথা বলে নুহা!
ইরফান একদিন তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরে। নুহা তখন রান্নাঘরে রান্না করছে। এর মধ্যেই নুহার ফোন বেজে ওঠে। ইরফান ফোনটে রিসিভ করে কিন্তু ওর গলা শুনে কল কেটে দেয় অপর পাশের মানুষটি। ইরফান নুহাকে ডাক দিয়ে নাম্বারটি দেখায়,
- এই নাম্বারটা চিনো নুহা?
নুহার চোখমুখের ভাবটা কেমন চেঞ্জ হয়ে যায়। নুহা ইরফানকে জানায় যে নুহা নাম্বারটি চিনে না।
নুহার এমন রিয়াকশন দেখে নিজের মনে একটা ঘটকা লাগে ইরফানের। ইরফান নুহার ফোন থেকে নাম্বারটি টুকে নেয়...।

২!!

নুহার ফোন থেকে ইরফান নাম্বারটি টুকে নেয়। অন্য সিম থেকে ফোন দেয় সেই নাম্বারটিতে এবং বিভিন্ন কলাকৌশলে জানতে পারে ছেলেটির পরিচয়। ছেলোটির নাম রিয়াদ। ইরফান ওর বেষ্টফ্রেন্ড সিয়ামকে বলে,
- দোস্ত তুই এই নাম্বারটিতে প্রতি ২০ মিনিট পরপর কল দিয়ে দেখবি নাম্বারটা ওয়েটিং পাস কি না।
- ঠিক আছে, কিন্তু কেন বলতো?
- দরকার আছে। পরে বলবো, এখন আসি। তুই কিন্তু ফোন দিয়ে দেখিস।
- আচ্ছা।

সিয়াম কয়েকবার ফোন দিয়ে রিয়াদের নাম্বারটি ওয়েটিং পায়। সেই সাথে ইরফানও নুহাকে ফোন দিয়ে কল ওয়েটিং পায়। ইরফান যখন ফোন করে তখন নুহা কল'টা কেটে ইরফানের কল রিসিভ করে।
- হ্যাঁ ইরফান বলো।
- কার সাথে কথা বলছিলে?
- কাজিন কল দিছিলো।
- ওহ। খাইছো?
- না, পরে খাবো।
- আচ্ছা খেয়ে নিয়ো।
- তুমি আসবা কখন?
- রাতে।
- আচ্ছা। 
ইরফান ফোন রাখার পর বুঝতে পারে আসলে কাহিনীটা কি।  
প্রতিদিনের তুলনায় সেদিন ইরফান একটু তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরে।
- নুহা
- বলো
- প্রচণ্ড পানি পিপাসা পেয়েছে। এক ক্লাস পানি দাও তো।
- পারবোনা।
ইরফান নুহার দিকে ভালো করে তাকায়। এই কি সেই নুহা যাকে ভালোবেসে ঘর ছেড়েছিল ইরফান।
- আচ্ছা পানি দিতে হবে না। তুমি এখানে এসে বসো।
নুহা গিয়ে ইরফানের পাশে বসে। ইরফান বেশ ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞেস করে,
- রিয়াদ কে?
এবার যেন নুহার দিকে তাকানোই যাচ্ছে না। রিয়াদ নামটা শুনে নুহার মুখ একদম শুকিয়ে গেছে। নুহা কোনো কথা বলছে না দেখে ইরফান আবার জিজ্ঞেস করলো,
- কি হলো চুপ করে আছো কেন?
- আমি চিনি না রিয়াদ কে।
- তাই?
- হুম।
- ঠিক আছে তোমার ফোনটা দাও। আমি নাম্বারটিতে কল দিচ্ছি তুমি কথা বলবে।
ইরফান নুহার ফোন থেকে রিয়াদকে কল দেয়। ওপাশ থেকে  রিয়াদ ফোন রিসিভ করে স্বাভাবিকভাবেই বলে,
- হ্যালো বলো।
নুহা কোনো কথা বলছে না। ইরফানই এবার বললো,
- তুমি রিয়াদ না?
- হ্যাঁ।
ইরফান কল কেটে দিয়ে নুহার দিকে তাকায়।
- কতদিন ধরে চলছে এসব?
নুহা কোনো কথা বলছে না। ইরফানের মাথা গরম হয়ে যায় এবং রিলেশন আর সংসার জীবনে প্রথম নুহাকে একটা থাপ্পড় দেয়। নুহা সেই মুহুর্তে কান্না করে বলে,
- আমি তোমার সাথে থাকবো না। চলে যাবো আমি।
- ওকে ফাইন। তুমি চলে যাবে তো? ঠিক আছে চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসবো।
সে রাতে নুহা যায়নি। নিজের জামাকাপড় সব গুছিয়ে নিয়েছে। পরেরদিন ভোরে ইরফান নিজে রিক্সায় উঠিয়ে দেয় নুহাকে।
ইরফান বাড়িতে আসার পর বুঝতে পারে যে ও এটা কি করলো। পুরো বাড়িটা একদম ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। নিজের মনে ইরফান নিজেই বলে,
- সামান্য একটা থাপ্পড় দিয়েছি বলে আমাকে ছেড়ে এভাবে চলে যেতে হবে। আর আমিই বা কি করলাম! কেন যেতে দিলাম নুহাকে।
ইরফান ওর বেষ্টফ্রেন্ড সিয়ামকে কল দিয়ে বাড়িতে আসতে বলে। সিয়াম বাড়িতে এসে নক করতেই ইরফান দরজা খুলে দেয়। দরজা খোলার পর সিয়ামের প্রথম প্রশ্নই ছিল,
- নুহা কই?
ইরফান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি। সিয়ামকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। সিয়ামকে সবটা খুলে বলে ইরফান। সেই সময়টায় ইরফানের খুব বড় সাপোর্টার ছিল সিয়াম। ইরফান নুহার মায়ের কাছে ফোন দেয়।
- আসসালামু আলাইকুম মা।
- ওয়ালাইকুম আসসালাম। হ্যাঁ ইরফান বলো
- নুহা কেমন আছে মা?
- আছে ভালোই। ঝগরা করেছো তোমরা?
- একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল আর ও বাড়ি ছেড়ে চলে গেল।
- আচ্ছা তুমি টেনশন করো না। আসছে যখন কয়েকটা দিন থাকুক তারপর মন ভালো হলে পাঠিয়ে দিবো।
- আচ্ছা।
নুহার মায়ের কথায় যেন প্রাণ ফিরে পায় ইরফান। মনের মধ্যে আশা উকি দেয় যে নুহা আবার ফিরে আসবে। এভাবে কেটে যায় বেশ কয়েকটাদিন। ইরফানের নাওয়া নাই খাওয়া নাই। একদম ঘরবন্দি অবস্থা। সেই সময়ে ইরফানের আরো একটা সঙ্গি ছিল সিগারেট। বেশকয়েকদিন কাটার পর ইরফান নুহার মাকে আবার কল দেয়। এবার নুহার মায়ের কথা শুনে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায় ইরফানের।
- দেখো ইরফান, আমরা নুহাকে বুঝিয়েছি কিন্তু সে আর তোমার কাছে ফিরে যাবে না। তুমি আর ফোন দিয়ো না।

এতদিন ইরফানের মনে ছোট একটা আশা থাকলেও এখন যেন তাও দুমরে মুচরে গেল। ইরফানের অবস্থা আরো খারাপের পথে গেল। এতকিছু ঘটে গেলেও ইরফান তার পরিবারকে এসব কিছুই জানায়নি। কিভাবেই বা জানাবে এসব যাকে ভালোবেসে পরিবার থেকে আজ এত দূরে এসেছে সেই মানুষটাই যে ইরফানকে ছেড়ে চলে গেল। ইরফান নিজেও জানায়নি এমনকি সিয়ামকেও জানাতে দেয়নি। সিয়ামকে মাথার দিব্যি দেওয়ায় সিয়াম চুপ করে ছিল। কিন্তু ইরফানের এহেন অবস্থা দেখে আর সহ্য করতে পারেনি সিয়াম। তবে সে নিজে জানায়নি ইরফানের পরিবারকে। আরেকজনকে দিয়ে জানিয়েছে। এসব কথা শুনে ইরফানের বাবা-মা ছুটে আসে ইরফানের কাছে। দরজায় নক পেয়ে দরজা খুললো ইরফান এবং অবাক হয়ে গেল তার বাবা-মাকে দেখে। কিন্তু ইরফানের বাবা-মায়ের ব্যবহার খুবই স্বাভাবিক। এমন একটা ভাব যেন তারা কিছুই জানেনা। ইরফানের বাবা দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে রইলো। ইরফানের মা ভেতরে ঢুকলো।
- কিরে রুমের এই অবস্থা কেন?
- (চুপ)
- নুহা কোথায়?
এবার যেন ইরফানের দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। কি করে এবার বলবে যে নুহা তাকে ছেড়ে চলে গেছে।
- মা নুহা তো বাসায় নেই।
- কোথায় গেছে?
- ওর বাবা-মায়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছে। কয়দিন পরই ফিরে আসবে।
ইরফানের মা ইরফানের মিথ্যা কথা শুনে একটা থাপ্পড় দেয়।
- আমরা কি তোর কেউ না ইরফান? নিজের সুখের জন্য আলাদা হলি বউ নিয়ে কিচ্ছু বলিনি শুধু এটা ভেবে যে তুই সুখে থাক। এখন আবার এতকিছু হয়ে গেল কিছু জানানোরও প্রয়োজন মনে করলি না? আমরা কি তোর পর হয়ে গেছি ইরফান?

ইরফান কিছু বলছে না। নিরবে চোখের পানি ফেলছে। কিছু বলারও নেই ইরফানের। ইরফান তাকিয়ে দেখলো তার মা কাঁদছে তারচেয়েও বেশি অবাক হলো যখন দেখলো দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তার রাগি বাবাও চোখের পানি ফেলছে। নিজেকে আটকিয়ে রাখতে পারেনি তার মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে।

ইরফানের বাবা-মা ইরফানকে সাথে নিয়ে গ্রামে ফিরে। গ্রামে ফিরেও ঘরবন্দি হয়ে থাকে ইরফান। বাহিরে বের হতো না। টুকটাক খাবার যাও খেতো কিন্তু সিগারেট ছাড়া তার চলতোই না। সকালে ইরফান যখন ঘুমিয়ে থাকতো তার বাবা এসে বালিশের নিচে টাকা রেখে যেত। ইরফানের ছোট ভাই আরমানকে দিয়ে দোকান থেকে সিগারেট আনিয়ে খেতো। এভাবেই চলছিল ইরফানের জীবন। এরমধ্যে নুহার সাথে বেশ ভালোই কথা হতো ইরফানের। প্রায় ১০/২০ মিনিট করে ফোনে কথা বলতো কিন্তু ফিরে আসবে নাকি এই বিষয়ে কিছুই বলতো না নুহা। তাই বাধ্য হয়ে ইরফান খুব প্রেশার দিয়েই বলে,
-নুহা এভাবে আর কতদিন? তুমি আমাকে ছাড়ছোও না আবার আমার কাছে ফিরেও আসছো না। আজ তোমাকে বলতেই হবে তুমি কি চাও। হয় ফিরে এসো নয়তো ডিভোর্স দাও।
ইরফানের মন বলছিল নুহা ফিরে আসবে। এতদিনের ভালোবাসা তো আর এভাবে মিথ্যা হয়ে যেতে পারে না। কিন্তু ইরফানের ধারণাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণ করে নুহা বলে,
- আমি তোমার কাছে ফিরে যেতে পারবো না। আমি ডিভোর্স চাই।
ইরফান যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। নুহা ডিভোর্স চায়!!

অবশেষে ২০ এপ্রিল ২০১৪,
২ বছরের রিলেশন আর ৩ বছর ৭ মাসের সংসার জীবনের ইতি টানে নুহা ও ইরফান।  ডিভোর্স হয়ে যায় ওদের।
ইরফান যেন তখনও বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে নুহা আর তার জীবনে নেই।

৩ জুন ২০১৪,
নুহা ইরফানকে ফোন দেয়। এতদিন পর নুহার ফোন পেয়ে বেশ অবাক হয় ইরফান।  ফোন রিসিভ করে ইরফান।
- হ্যালো ইরফান।
- হ্যাঁ বলো
- আমি যদি তোমার কাছে কিছু চাই তাহলে কি তুমি আমাকে দিবে ইরফান?
- আমার সাধ্যের মধ্যে হলে অবশ্যই দিবো।
- ইরফান আমি চাই, রিয়াদের সাথে আমার বিয়েটা তুমি দিয়ে দাও।
নুহার কথাটা শুনে ইরফানের বুকে মোচর দিয়ে ওঠে। এসব কি বলছে নুহা। ওর বিয়ে দিতে বলছে তাও আবার আমাকে!
- তোমার ফ্যামিলিতে জানাও।
- ওরা কেউ মেনে নিবে না। প্লিজ তুমি আমার এই হেল্প টা করো প্লিজ।
- তাহলে তুমি খুশি তো?
- হ্যাঁ।
- রিয়াদ তোমাকে বিয়ে করবে?
- হ্যাঁ।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
ইরফান ফোন রেখে নতুন সিগারেট জ্বালায়। সিগারেট খেতে খেতে ভাবছে, 
- নিয়তি কি আমাকে নিয়ে খেলছে! এ কোন খেলায়  মেতে ওঠলো নিয়তি!
ইরফানের মনে পড়ে যায় তাদের বাসররাতের কথা। তাদের প্রথম রাতের কথা।  নুহাকে সেদিন রাতে ইরফান ২টা কথা দিয়েছিল। নুহা ইরফানের হাত ধরে বলেছিল,
- আমাকে ২টা কথা দিবে ইরফান?
- হ্যাঁ বলো
- আমি কোনোদিন তোমাকে ছেড়ে গেলেও তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না বলো।
ইরফান নুহার হাতটি শক্ত করে ধরে বলে,
- তুমি আমাকে ছেড়ে গেলেও আমি তোমাকে কখনোই ছেড়ে যাবো না।
এবার ২য়টা বলো
- সুখ দিতে না পারলেও কখনো কষ্ট দিবানা বলো।
- সুখ দিতে না পারলেও কখনোই কষ্ট দিবো না নুহা।
আগের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে সিগারেট যে কখন শেষ সে খেয়ালই নেই ইরফানের। হুস আসলো যখন সিগারেটের আগুন তার হাতে লাগলো। নতুন আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে ইরফান কল দিলো রিয়াদকে।
- হ্যালো রিয়াদ
- জ্বী বলুন
- আমি ইরফান বলছিলাম।  তুমি কি নুহাকে ভালোবাসো?
- হ্যাঁ বাসি।
- বিয়ে করবে নুহাকে?
- বিয়ে তো করতে চাই কিন্তু এমন হুটহাট করে তো আর বিয়ে করা যায়না। টাকারও একটা ব্যাপার আছে।
- টাকার কথা তোমার কিছু  ভাবতে হবে না তুমি শুধু বলো সবকিছুই জেনে তুমি নুহাকে বিয়ে করবে কি না!
- করবো।
- আচ্ছা কাল বিকালে কাজি অফিসে চলে এসো। আমি নুহাকে নিয়ে আসবো। আর একটা কথা, আমার জীবনের অনেক দামি একটা জিনিস তোমার হাতে তুলে দিবো কাল আশা করি নুহার কোনো অযত্ন হবে না এবং তুমি নুহাকে সুখে রাখবে।
- হুম রাখবো।

পরেরদিন নুহা আবারও বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। তবে এবার ইরফানের জন্য নয় রিয়াদের জন্য। ইরফানের বুকটা কষ্টে ফেঁটে গেলেও নুহাকে বুঝতে দিচ্ছে না। ইরফান নুহাকে নিয়ে প্রথমে শপিংমলে যায়। নুহাকে শাড়ি, কিছু গহনা আর কসমেটিক্স কিনে দিয়ে তার এক ফ্রেন্ডের বাসায় যায়। ইরফান নিজে নুহার চুল আচরে দেয় সেদিন। নুহার ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে দেয়।
নুহাকে নিয়ে কাজি অফিসে গিয়ে রিয়াদের সাথে নুহার বিয়ে দিয়ে দেয় ইরফান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে।
কাজি অফিস থেকে বেড়িয়েই সিগারেট খাচ্ছিলো আর ভাবছিল অতীতের কথা। হাঁটতে হাঁটতে বাড়িতে পৌঁছে যায় ইরফান। রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে কাঁদতে থাকে ইরফান। ছেলেদের কাঁদতে নেই কিন্তু ইরফান পারছে না নিজেকে আটকে রাখতে। বড্ড অসহায় লাগছে নিজেকে। 
তবুও ইরফান নিজেকে শান্তনা দেয় যে সে তার কথা রাখতে পেরেছে। তবে ইরফান নুহাকে একটি শেষ প্রশ্ন করেছিল যার উত্তর নুহা দিতে পারেনি। ইরফানের প্রশ্নটি ছিল,
- নুহা, আমি তোমার কোনোকিছুতেই কমতি রাখিনি কোনো। তাহলে কেনো ছেড়ে গেলে আমাকে!
তুমি শুধু এই প্রশ্নের উত্তরটি দাও যাতে আমি নিজেকে মানাতে পারি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারি।
ইরফান পায়নি তার প্রশ্নের উত্তর। নুহার কাছে কি ছিল এই প্রশ্নের উত্তর?..

দেখতে দেখতে কেটে যায় তিনটি বছর। ইরফানের কোনো উন্নতি দেখেনি তার পরিবার। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিলো যে ইরফানের আবার বিয়ে দিবে। ইরফান কিছু বলেনি যদি তার বাবা-মা খুশি হয় তাহলেই হলো। ইরফানও মনে মনে চায় একটু সুখে থাকতে। ইরফানের বাবা-মা ইরফানের বিয়ে ঠিক করে কিন্তু ইরফান বিয়ের আগে মেয়েকে দেখেনি। শুধু ২বার ফোনে কথা হয়েছিল। একবার কথা হয়েছিল এটা জানার জন্য যে সে কি গহনা নিবে বিয়েতে আর দ্বিতীয়বার কথা হয়েছিল ইরফানের অতীত নিয়ে। ইরফান তার অতীতের সব কথা জানায় মেয়েটিকে। সে সব জেনেও এই বিয়েতে রাজি হয়। মেয়েটির নাম মৌ। বিয়েটাও হয়ে যায় তাদের।
বিয়ের পর ইরফান খেয়াল করলো মৌ তার সাথে কথা বলে না। ইরফান ভেবেছিল, পরিবার ছেড়ে এসেছে তাই বোধহয় এরকম চুপচাপ।  কিন্তু না সময় যায় সময়ের মত তবুও কথা বলে না প্রয়োজন ব্যতীত। পরে ইরফান এটা ভেবে নিলো যে মৌ নিশ্চয় চুপচাপ স্বভাবের। কিন্তু ইরফানের এই ধারণাটাও মিথ্যা হলো কারণ মৌ শুধু তার সাথেই কথা বলত না। মৌ তার বাপের বাড়ির লোকদের সাথে ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে। ইরফানের বাবা-মায়ের সাথেও গল্প করে কিন্তু কথা বলেনা শুধু ইরফানের সাথেই। ইরফান মৌ এর বিষয়ে খবর নিলো কিন্তু খবর নিয়ে জানতে পারলো মৌয়ের আগে কোনো রিলেশনও ছিল না। মৌ এর মনে জায়গা করার জন্য কোনোকিছুর ত্রুটি রাখেনি ইরফান কিন্তু ফলাফল শূন্য। ১বছর কেটে যায় এভাবেই। শেষে পরিবারের সবাই বললো বেবি নিতে,তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
তাই ইরফান এক প্রকার বাধ্যই হলো। তাদের একটি ফুটফুটে মেয়েও হলো। কিন্তু মৌয়ের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ইরফান হতাশ হয়ে পড়ে। ইরফানের সাথে মৌয়ের শুধু এতটুকুই কথা হতো,
- ভাত বেড়েছি, খেতে আসেন।
ইরফান না পেরে একদিন জিজ্ঞেস করেই বসে,
- মৌ তুমি আমার সাথে কথা বলো না কেন?
কিন্তু কোনো জবাব পায়নি ইরফান।
ইরফান বুঝে গেল তার এই পোড়া কপালে ভালোবাসার দেখা বুঝি সে পাবে না। নিষ্ঠুর নিয়তি তাকে নিয়ে এক নিষ্ঠুর খেলায় মেতে ওঠেছে। প্রথমে ভালোবাসার মানুষটিকে হারালো তারপর যাকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে চাইলো সে যেন ধরা দিয়েও ধরা দিচ্ছে না।
তবে ইরফান নুহাকে দেওয়া কথা রেখেছে। কোনো না কোনোভাবে ইরফান এখনো নুহাকে ছাড়েনি। অদৃশ্যভাবে হলেও ধরে রেখেছে নুহার হাত। খোঁজ নিচ্ছে তার প্রতিনিয়ত। দূর থেকেই সমাধান করছে তার সমস্যাগুলো। এই ৫ বছরে মাত্র ২বার কথা হয়েছিল নুহার সাথে। ইরফান নিজেকে এটা ভেবেই শান্তনা দেয় যে হয়তো কোথাও আমার ভালোবাসার কমতি ছিল তাই নুহা আমাকে রেখে তার সুখের ঠিকানায় চলে গিয়েছে। অপরদিকে ইরফানের মেয়ের বয়স এখন ৬মাস। মৌকে নিয়ে তার অভিযোগ থেকেও নেই এখন ইরফানের সবকিছুই তার মেয়ে বর্ষা। বর্ষাকে নিয়েই তার আগামীদিনের পথচলা।.....

ইরফানের জীবন কাহিনী এখানেই শেষ। কিন্তু আসলেই কি শেষ হলো ইরফানের জীবন কাহিনী? না হয়নি। শেষ হয়েছে শুধু গল্পের সমাপ্তি। এখনো তার জীবনের অনেক কিছুই বাকি। আল্লাহ্ ভালো রাখুক ইরফানকে ভালো রাখুক তার মেয়ে বর্ষাকে। ইরফানের এই নিয়তি ভবিষ্যতে যেন আর নিষ্ঠুর না হয় আল্লাহর কাছে এই কামনা।



***(সমাপ্ত)***

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন