সকালের পত্রিকা বাড়িতে এসেছে পাঁচ মিনিটের মতো হবে। তবে এখন নিজাম ইসলামের পত্রিকা পড়তে ইচ্ছে করছে না। নিহি আজ বাড়িতে ফিরবে তাই তিনি বড্ড খুশি। বেশি দেরি করে বাজারে গেলে তাজা শাকসবজি পাওয়া যাবে না। বড়ো বড়ো মাছও আনবেন আজ। আর আমানের কোনো বাহানা তিনি আজ শুনবেন না। প্রয়োজনে টেনে নিয়ে আসবেন বাড়িতে। জামাই আর মেয়েকে সামনে বসিয়ে খাওয়াবেন। তাই পত্রিকা বিছানার ওপর রেখেই তিনি সালেহা বেগমকে ডাকলেন। রান্নাঘর থেকে ডাকের উত্তর নিতে নিতে ঘরে এসে উপস্থিত হন সাহেলা বেগম। জিজ্ঞেস করেন,
"কী হয়েছে?"
"কিছু হয়নি। বাজারের ব্যাগ দাও। বাজারে যাব।"
"এত সকালে?"
"হ্যাঁ, দরকার আছে।"
"আচ্ছা যাও সমস্যা নেই। নাস্তা তো করে যাও।"
"না, না। বাজার করে আমি দোকানেই খেয়ে নেব।"
"বাসি মুখে বাইরে কেন যাবে?"
"আহা! কথা বাড়াচ্ছো শুধু। বাসি মুখে বাইরে না গেলে আমার মেয়েকে বাসি তরকারি খেতে হবে। শোনো,আজ সব নিহির পছন্দের খাবার রান্না করবে।"
মেয়ের জন্য নিজাম ইসলামের পাগলামি দেখে হেসে ফেললেন সাহেলা বেগম। বাজারের ব্যাগ এনে হাতে দিয়ে বললেন,
"বাইরে থেকে খেয়ে নিও কিছু।"
"আচ্ছা। যাই তাহলে।"
"সাবধানে যাবে।"
ঘর থেকে বের হতেই নীলম ডাইনিং রুম থেকে ডাকে।
"আব্বু? কোথায় যাচ্ছো?"
"আরে, সবাই এত দেরি করাচ্ছিস কেন তোরা? বাজারে যাচ্ছি।"
"দাঁড়াও। আমি তো অফিসে যাব। বাজারে নামিয়ে দিবোনি।"
"তুই তো খাচ্ছিস।"
"খাওয়া শেষ আমার।" হাত ধুয়ে তাড়াতাড়ি ড্রয়িংরুমে আসে। তমা তখন বলে,
"আব্বু আসার সময় জলপাইর আচার নিয়ে আসিয়েন। নিহির তো খুব পছন্দ।"
নীলম তখন হাস্যরসাত্মকভাবে বলে,
"নিহির একার নাকি তোমারও? নাকি নিহির নাম আর তোমার কাম!"
তমা চোখ পাকিয়ে তাকায়। নিজাম ইসলাম,নীলম আর সালেহা বেগম হেসে ফেলেন।
বাইকে করে নীলম বাবাকে বাজারে পৌঁছে দিয়ে অফিসে চলে যায়। বাজারের ভেতর গিয়ে সব তাজা তাজা সবজি কিনেন তিনি। নিহির ইলিশ মাছ খুব পছন্দ। বড়ো দেখে তিনটে ইলিশ মাছ নেন। আমান যেহেতু আজ প্রথম শ্বশুরবাড়িতে খাবে সেহেতু ভালো ভালো রান্নাবান্না তো ওর জন্যও করতে হবে। তাই গরুর মাংস, মুরগিও কিনেন। সব বাজার শেষ হলে আসার সময় লাউশাক দেখে আবার দাঁড়িয়ে যান। শাকের মধ্যে একমাত্র লাউ শাকটাই বেশি পছন্দ নিহির। তাজা শাক দেখে মন বলল নিয়ে যেতে। তাই শাকও নিয়ে নিলেন। সব তাজা জিনিস নিয়ে মনটা এখন ফ্রেশ লাগছে তার।
বাজার করা শেষ হলে পাশের চায়ের দোকানে বসেন। চাওয়ালা উনার পরিচিত। বাজার করতে এলে এই দোকানে অন্তত এক কাপ চা খাওয়া হয়ই। চা পান করা শেষ হলে তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে উঠে পড়েন। রাস্তা পার হয়ে গাড়িতে উঠতে হবে। রাস্তা পার হতে গিয়েই ঘটে গেল দূর্ঘটনা। ঝড়ের গতিতে একটা গাড়ি রাস্তার সাথে তাকে পিষে দিয়ে চলে গেল। এত দ্রুত পুরো ঘটনাটা ঘটল যে কেউ কিছু করতেও পারেনি। গাড়িটাকেও আটকাতে পারেনি। এক্সিডেন্ট করে কোনো ড্রাইভার নিশ্চয়ই চাইবে না পাবলিকের গণপিটুনি খেতে! তাই ড্রাইভারও আর গাড়ি থামায়নি। জানের ভয়ে চলে গেছে।
রাস্তায় পড়ে তখনো দপরাচ্ছিল নিজাম ইসলাম। শরীরে প্রাণ ছিল তখনো। রক্ততে রাস্তা ভেসে যাওয়ার মতো অবস্থা। চাওয়ালাসহ আরো পথচারীরা দৌঁড়ে এসে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে চাওয়ালা নিহিদের বাসায় গিয়ে খবর দেয়। এরপরের ঘটনা আপনাদের জানা!
ড্রয়িংরুমের এক কোণে সোফার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে নিহি। লম্বা চুলগুলো এলোমেলো হয়ে ফ্লোর ছুঁয়েছে। ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে বেজে চলেছে। পাঁচটা প্রায় বাজতে চলল। সালেহা বেগম এবং নিজাম ইসলামের শোবার ঘর থেকে সালেহা বেগমের চিৎকার করা আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। পাগলের মতো কাঁদছেন তিনি। সঙ্গে মিহিরও কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেশী মহিলাদের গলা শোনা যাচ্ছে। শান্তনা দিচ্ছেন সবাই। নিহির থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তরু কাঁদছে। ছেলেরা সবাই গেছে জানাজার নামাজ পড়তে। নিহি আর সবার মতো এখন আর চিৎকার করে কাঁদতে পারছে না। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। গলার স্বর ডেবে গেছে। গলায় ব্যথা করে শব্দ করে কাঁদতে গেলে। বুকের ভেতর চাপা আর্তনাদ নিয়ে নিশ্চুপে চোখের পানি ফেলছে। আগের খুনসুটিগুলোর কথা মনে পড়ছে। কিছুক্ষণ আগে ভাবি কাঁদতে কাঁদতে বলল কত খুশি নিয়ে বাবা বাজার করতে গিয়েছিলেন।
মেইন দরজায় ঢকঢক আওয়াজ হচ্ছে। যে কাজটা করছে সে নিশ্চয়ই এখন হতবুদ্ধি অবস্থায় আছে। নয়তো কলিংবেল রেখে কেন দরজায় করাঘাত করে, ধাক্কা দিয়ে ডাকবে?
তরু গিয়ে দরজা খুলে দিতেই উপমার বাবা-মা হুড়মুড় করে ভেতরে ঢোকে। উপমার মায়ের পাগলের মতো দশা। নিহি চোখের পানি মুছে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তার সামনে দাঁড়াতেই তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
"নিহি!"
"কী হয়েছে আন্টি? কাঁদছেন কেন আপনি?" অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করে নিহি।
কান্নার গতি বাড়িয়ে তিনি বলেন,
"উপমাকে খুঁজে পাচ্ছি না নিহি! কাল রাত থেকে ওর কোনো খবর নেই।"
"মানে? কীভাবে কী হলো?"
"কাল রাতে ওর বাবার ওষুধ আনতে গিয়েছিল। এরপর থেকেই নিখোঁজ। পুলিশের কাছে গিয়েছি তারা বলেছে ২৪ ঘণ্টার আগে কোনো কেস নিবে না। আমরা কী করব বুঝতে পারছি না মা!"
"অবিশ্বাস্য!"
পরক্ষণেই নিহির মনে হলো যারা উপমাকে থ্রেট করেছিল তারা কিডন্যাপ করেনি তো আবার? এত কঠিন সিচুয়েশনে কেন পড়তে হয় নিহিকেই! একদিকে বাবা মারা যাওয়ার কষ্ট অন্যদিকে উপমা নিখোঁজ হওয়ার চিন্তা। উপমার তো কোনো ক্ষতি হতে দেওয়া যাবে না। উপমা যেরকম মেয়ে সে কখনোই পালিয়ে যাওয়ার মতো কাজ করবে না। ওর নিখোঁজ হওয়ার পেছনে যারা আছে তারা উপমার নয় বরং নিহিরই শত্রু। শুধুমাত্র নিজের জন্য নির্দোষ কারো ক্ষতি কী করে হতে দেবে! বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা সাথে নিয়েই উপমার জন্য কিছু একটা করতে হবে।
নিহি জিজ্ঞেস করে,
"কখন গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে?"
"কাল রাতেই।"
"এখন চলেন। আমিও যাচ্ছি।"
তরুকে বলে তাদেরকে নিয়ে নিহি পুলিশের কাছে যাওয়ার জন্য বের হয়। বাড়ি থেকে বের হতেই নিরবের সঙ্গে দেখা হয়। আমানই নিরবকে পাঠিয়েছে। কারণ বাড়িতে কোনো ছেলে মানুষ নেই। এদিকে নীলমকে রেখে আগে আগে আসাও যাবে না। আমান এবং সৈকত নীলমকে সামলাচ্ছে। সঙ্গে লিমনও আছে।
নিরব জিজ্ঞেস করে,
"কোথায় যাচ্ছেন ম্যাম?"
"পুলিশ স্টেশন।" তাড়াতাড়ি করে উত্তর দেয় নিহি।
নিরব পাল্টা আর প্রশ্ন না করে বলল,
"চলুন৷ আমিও যাব।"
নিহি বাঁধা দিলো না। চারজনে একটা সিএনজিতে উঠে বসলো। জানাজায় গিয়েছিল বলে সাথে কেউই ফোন নেয়নি। তাড়াহুড়োয় নিহিও নেয়নি ফোন। উপমার মায়ের কান্না আর আহাজারি শুনেই নিরব বুঝে গেছে উপমার কিছু একটা হয়েছে। খবরটা আমানকে দেওয়া দরকার। কিন্তু ফোন সাথে নেই। তাছাড়া আমানের কাছেও তো এখন ফোন নেই। পুলিশ স্টেশন গিয়ে পরে কারো ফোন থেকে ফোন করে জানিয়ে দিলেই হবে।
_______________
আবছা আবছা দৃষ্টিতে উপমা চোখ মেলে তাকায়। কোথায় আছে বোঝার চেষ্টা করে। শোয়া থেকে উঠে বসতে গেলেই মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। দু'হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে কিছুক্ষণ বসে থেকে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। অন্ধকার লাগছে সবকিছু। মনে পড়ে যায় কাল রাতের ঘটনার কথা।
ফ্লাশব্যাক
গাড়ির সিটের সাথে গা এলিয়ে দিয়ে বসে আছে উপমা। গলা শুকিয়ে কাঠ। শরীরে শক্তি নেই একবিন্দুও। সামনের সিট থেকে লোকটা পানির বোতল এগিয়ে দেয়। অন্ধকার বলে মুখটা দেখা যাচ্ছে না। উপমা পানি পান করল।
গাড়িটা কিছুদূর গিয়ে থেমে গল। গাড়ির হেডলাইট অন রাখল লোকটি। ভড়কে তাকায় উপমা। ছেলেটি পিছন দিকে ঘুরে বসল। জিজ্ঞেস করল,
"খুব অসুস্থ লাগছে?"
গলার স্বর শুনে চিনতে অসুিধা হলো না উপমার। অনলের গলার স্বর! অস্পষ্টভাবে উপমা বলে,
"অনল ভাইয়া!"
অনল একটু যেন হাসলো। আবছা আবছা বোঝা গেল হাসির রেখা। হাসিটা আরো চওড়া করে মৃদু হেসে বলল,
"ঠিকই চিনেছ।"
উত্তেজিত হয়ে উঠল উপমা। মনের মাঝে অসংখ্য প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। সামিয়া কিডন্যাপ করালো। ঐ ছেলেটা ছেড়ে দিলো। আর এখন এখানে অনল। কী রহস্য লুকিয়ে আছে এর মাঝে? অস্তিরতা কাজ করছে উপমার মাঝে। অস্থিরতা আটকিয়ে রাখতে না পেরে অনর্গল প্রশ্ন করা শুরু করে।
"এসবের মানে কী? আপনি এখানে কীভাবে? আমায় কি আপনিই কিডন্যাপ করিয়েছেন? ঐ সামিয়া...সামিয়া মেয়েটা আপনার কী হয়? আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। আমায় বলেন প্লিজ!"
অনল রহস্যজনকভাবে মৃদু হাসলো। উপমার চোখ ছোটো ছোটো হয়ে যাচ্ছে। ঘুমেরা জেঁকে বসেছে চোখে। অনল চুপচাপ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। উপমা বিড়বিড় করে পূণরায় প্রশ্নগুলো আওড়াচ্ছে। তখন অনল বলে,
"অস্থির হয়ো না। সব বলব। আগে তোমার ঘুম প্রয়োজন। পানিটুকু তোমায় ঘুম পাড়িয়ে দেবে। ঘুমাও।"
এতক্ষণে উপমা সিটে শুয়ে পড়েছে। বিড়বিড় করাও কমে আসছে। অনল আবারও রহস্যজনক হাসি দিয়ে ড্রাইভ করা শুরু করে।
--------------
পুলিশ স্টেশনে গিয়ে উপমার বাবা-মা মিসিং ডায়েরি করে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলল নিরব। সব কথাবার্তা শেষ করে পুলিশ স্টেশন থেকে বের হয়ে অনেকভাবে বুঝায় ও শান্তনা দেয় নিরব এবং নিহি। তারপর উনাদের বাড়ির রাস্তার ঐ পাড়ে গিয়ে রিক্সায় উঠিয়ে দেয় নিরব।
সন্ধ্যার অন্ধকার আচ্ছন্ন চারদিক। আনমনা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নিহি। বাবার কথা মনে পড়ছে অনেক। বুক ফেঁটে কান্না পাচ্ছে। ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করে। নিরব এসে বলে,
"ম্যাম বাড়িতে চলুন।"
চোখের পানি লুকিয়ে নিহি বলল,
"হ্যাঁ, চলুন।"
সামনেই একটা সিএনজি ছিল। ঐ সিএনজিতেই ওরা উঠে পড়ে। আকাশের অবস্থা ভালো নয়। বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে। বাতাস হচ্ছে খুব। নিরব প্রশ্ন করে,
"স্যারের নাম্বার কি মুখস্থ আছে ম্যাম?"
নিহি উপরনিচ মাথা নাড়ালো। যার অর্থ 'হ্যাঁ'। নিরব এবার ড্রাইভারকে বলল,
"ভাই আপনার ফোন থেকে একটা ফোন করা যাবে?"
"আমার মোবাইলে চার্জ নাই ভাইজান। বন্ধ হইয়া গেছে।" ড্রাইভারের উত্তর।
নিরব একটু হতাশ হলো। ড্রাইভার অন্য রাস্তায় যাচ্ছে দেখে নিরব বলে,
"ভাই এদিক দিয়ে যাচ্ছেন কেন?"
"বৃষ্টি হইতাছে ভাইজান। ঐ রাস্তায় অনেক পানি জমব। গাড়ি নিয়া যাওন যাইব না।"
"যাওয়া না গেলে আপনি গাড়ি থামান। আমরা অন্য গাড়িতে যাব।"
ড্রাইভার সিএনজি থামালো না। উল্টো গাড়ির স্পিড আরো বাড়িয়ে দিলো। নিরব বারবার গাড়ি থামানোর কথা বলা সত্ত্বেও সে গাড়ি থামায়নি। অজানা ভয়ে মনের ভেতর দানা বাঁধছে নিরবের। কোনদিক থেকে কোনদিকে নিয়ে গিয়ে গাড়ি থামায় সে সেটা বোঝা গেল না। জায়গাটা অনেকটা জঙ্গলের মতো। রেইনকোট পরা কয়েকজন লোক ঘিরে ধরে। নিরব নিহির হাত শক্ত করে ধরে অন্যপাশ দিয়ে নেমে দৌঁড়াতে থাকে। কিন্তু সফল হতে পারে না। আরো কয়েকজন সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। নিরবের হাত থেকে নিহির হাত ছাড়ানোর জন্য জোড়াজুড়ি করে। অন্য একজন কয়েক ঘা লাগিয়ে দেয় নিরবকে। তবুও নিরব হাত ছাড়ে না। নিহি পুরো ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে আছে। কান্না চলে আসছে। আকুতি করে বলে,
"আপনারা ওকে মারছেন কেন? ছাড়েন প্লিজ!"
নিহি অন্য হাত দিয়ে লোকটার পিঠে কিল-ঘুষি দিতে থাকে। পাশের থেকে আরেকজন বলে,
"ঐ ছেলেটা ছাড়বে না সহজে। কেউ বাঁধা দিতে আসলে তাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে বলেছে। বসের আদেশ!"
ছেলেটা এবার ছুরি বের করতেই নিহি চিৎকার দিয়ে বলে,
"না, না। কিছু করবেন না! যেখানে নিয়ে যাবেন আমি যাব।"
নিহির কথা আমলে নিলো না তারা। নিরবের পেটের ভেতর চকচক করা ছুরিটা ঢুকিয়ে দিলো। গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। নিহি জোরে চিৎকার করে। সাহায্যর জন্য আর্তনাদ করে। প্রবল বৃষ্টির শব্দে নিহির শব্দ মিলিয়ে যায়। কেউ আসে না সাহায্যর জন্য। নিহি আর্তনাদ করে কাঁদে। নিরবের রক্তে ভেসে যাচ্ছে মাটির ঢাল বেয়ে নামা পানিতে। নিরবের চোখের পানি মিলিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে। ঝাপসা হয়ে আসে দু'চোখ!
.
.
.
চলবে.......................................