আড়ালে আবডালে - পর্ব ৩৬ - মুন্নি আক্তার প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে গল্প করছে নিহি,তরু, আবুল আর টুকটুকি। রান্নাঘরের দায়িত্ব আজ আমানের। আজ বলতে এখন আরকি! বৃষ্টি হবে আর খিচুড়ি খাওয়া হবে না এটা তো হতে পারে না। বৃষ্টির দিনে গরম গরম খিচুড়ি সঙ্গে আচারের তেল! ইশ! জিহ্বায় পানি এসে যায়। খিচুড়ি রান্না করার দায়িত্ব আমানকে দিয়েছে নিহি। আবুল আর টুকটুকি সাহায্য করতে চাইলেও নিহি দেয়নি। একটা শাস্তি তার পাওয়া দরকার। করুক একা একা রান্না হুহ!

বৃষ্টির তেজ কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। এখন বৃষ্টির পরিমাণ মিডেলে আছে। মানে বেশিও নয় আবার কমও নয়। নিহির এক মন বলেছিল বৃষ্টিতে ভিজতে। কিন্তু আমানের জন্য সাহস হয়নি। নিহি যে খুব বাধ্য বউ তা কিন্তু নয়। আমানকে দিয়ে বিশ্বাস নেই। তার কথা না শুনলে দেখা যাবে সেও সঙ্গে বৃষ্টিতে ভিজবে। আর পরে জ্বরে বিছানায় পড়ে থাকবে। তার চেয়ে বরং না ভেজাই ভালো।

খিচুড়ির ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে এখানেই। আবুল উৎসুক ও আনন্দিত হয়ে নিহিকে বলে,
"আপামুনি আপনে খিচুড়ির ঘেরাণ (ঘ্রাণ) পাইতাছেন? আহা! খিদা মনে হয় আমারই বাইড়া গেছে।"
নিহির উত্তরের আগে টুকটুকি বলে,
"হ রে! আমিও ঘেরাণ (ঘ্রাণ) পাইতাছি।"

নিহি হেসে বলে,
"হুম পাচ্ছি। তোমাদের ভাইজান তাহলে রান্না পারে!"
"পারে মানে? ভাইজানের রান্না হাত চাইটা(চেটে) তো খাইতে মন চাইবই। পারলে মনে কয় পেলেট (প্লেট) চাইটা (চেটে) খাই।" একটু ভাব নিয়েই বলল আবুল।
টুকটুকি তখন আবুলকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলে,
"জানেন না আপা এই ছেম্রায় দুনিয়ার খারাপ। পেলেট (প্লেট) চাইটাও খায়।"

তরু আর নিহি শব্দ করে হেসে ফেলে। আবুল আর টুকটুকির ঝগড়া লেগে যায়। নিহি ওদের থামিয়ে বলে,
"তোমরা না আমায় কথা দিয়েছিলে আর ঝগড়া করবে না?"
আবুল জিভ কেটে বলে,
"ভুল হইয়া গেছে আপামুনি। এতদিন কিন্তু ঝগড়া করি নাই। আপনের সামনে আইজ করলাম। আপনে যে ধমক দেন আমগো ভালো লাগে।"
টুকটুকিও তখন মাথা চুলকে বলে,
"আবুল কিন্তু ঠিক কইছে আপাজান।"
"বুঝলাম! আমাকে ছাড়া থাকতে কেমন লাগে তোমাদের?" বলতে বলতে নিহি রান্নাঘরে যায়।

ড্রয়িংরুম থেকে উত্তর আসে,
"ভালা লাগে না আপা। আপনে তাড়াতাড়ি আইসা পড়েন।"
নিহি কোনো উত্তর করল না। আমানের গা ঘেঁষে দাঁড়ালো। আমান সরলো না। জিজ্ঞেস করল,
"এখন কেউ দেখবে না?"
"কী দেখবে?" অবাক হয়ে জানতে চাইল নিহি।
"এইযে আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েছ।"
"তো? আমি কি আর কিছু করেছি নাকি?"
"এহ্! করতে চাইলেই মনে হয় আমি এলাউ করব? কখনো না।"
"ঐ হ্যালো! পার্ট কম নেন ওকে?"

আমান নিহির মুখের সামনে একটু ঝুঁকে গিয়ে বলে,
"পার্ট নয় এটাই সত্যি।"
তারপর নিহির মুখে একটা ফুঁ দিয়ে আবার রান্নায় মনোযোগ দেয়। নিহি রাগে ফুলছে। হুট করেই আমানকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আমান মুচকি মুচকি হাসে। নিহিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে না। নিহি তখন ভাব নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
"একটু আগে কে যেন পার্ট নিয়ে কীসব বলল?"
আমান মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে বলে,
"ঐসব না বললে কি এখন বউ কাছে এসে জড়িয়ে ধরত?"

সঙ্গে সঙ্গে নিহি তাকে ছেড়ে দেয়। আমান শব্দ করে হাসে। নিহি দাঁত কটমট করে বলে,
"আপনি খুব বাজে। খুব!"
"বউয়ের কাছে বাজে হলে কিছু হয় না।"
"আপনার মাথা!" বলে নিহি রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে।


বাড়িতে গিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছেন নিজাম ইসলাম। সালেহা বেগম চা নিয়ে আসেন। নিজাম ইসলাম চায়ে চুমুক দিয়ে বলেন,
"আমান ছেলেটাকে প্রথমে চিনতে না পারলেও এখন কিন্তু ওকে আমার বেশ লাগছে।"
সালেহা বেগম বিছানায় বসে বলেন,
"আগেই তো বলেছিলাম তোমায়। আমানকে আমারও খুব ভালো লাগে। আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।"
"হ্যাঁ। অনলের সঙ্গে না জড়িয়ে ভালোই হয়েছে। ঐ ছেলের সঙ্গে রিলেশনে গেলে নিহি কখনোই সুখী হতো না। প্রতিশোধ পরায়ণ লোক কখনো ভালোবাসতে পারে না।"
"ওর জন্য তুমি নিহিকে কম কষ্ট দাওনি!"
"তা আমি মানি। মাথা ঠিক ছিল না। মেয়েটাকে দূরে রেখে আমি নিজেও ভালো নেই। বাড়িটা খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগে।"
"মন খারাপ কোরো না। আর তো মাত্র এক বছরের মতো আছে। তারপর তো চলেই আসবে।"
"চলে আসলেই কী? আমান তো নিহিকে নিয়ে যেতে চাইবে।"
"তাহলে তুমি কী চাইছ? মেয়েকে সারাজীবন নিজের কাছে রেখে দেবে?"

এবার তিনি হাসলেন। চায়ের কাপ পাশের টেবিলের ওপর রেখে বলেন,
"তা তো আর সম্ভব নয়। মেয়ে হয়ে যখন জন্ম নিয়েছে, তখন পরের ঘরে তো যেতেই হবে। আমি ভাবছি, এই এক বছরের মাঝেই আমানের পরিবার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেব। আমানের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শেষ। ওকে নিয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই। খাঁটি সোনা আমান। এখন ওর পরিবার কেমন সেটাই জানতে হবে।"
"হ্যাঁ, তাই ভালো।"
___________________

চেয়ারে বসে টেবিলের ওপর পা উঠিয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে অনল। নিহির অনেকগুলো ছবি কালেক্ট করেছে নিহির ক্লাসমেটদের কাছ থেকে। সেই ছবিগুলোই এখন দেখছে। উপমার আইডিতে গিয়েও নিহির কয়েকটা ছবি পেয়েছে। কলেজের প্রথম দিনের ছবি দেখে বুকের ভেতর ঢিপঢিপ ব্যথা শুরু হয়। সেই জামা, সেই চুল, সেই কাজলকালো চোখ। অনলকে ব্যাকুল করে তোলে! নবীনবরণ অনুষ্ঠানের শাড়ি পরা ছবিও আছে। হলুদিয়া পাখি যেন! থাপ্পড়ের কথাটা মনে পড়ে যায়। অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, আগে থাপ্পড়ের কথা মনে পড়লে যেমন রাগ হতো এখন রাগ হচ্ছে না। বরং ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি। এই হাসিতে আছে ভালোবাসা সঙ্গে বিষাদ। একটার পর একটা ছবি দেখছে আর নিহির স্মৃতিচারণ করছে।

আজমল আহমেদ অনলের ঘরে আসেন। অনল ফোনটা রেখে বাবার দিকে তাকায়। সে বিছানায় বসে জিজ্ঞেস করে,
"কী করছিলে?"
"কিছু না আব্বু। ফোন ঘাঁটছিলাম।"
"ফোনে কী করছিলে সেটাই জানতে চাচ্ছি।"
"তেমন কিছুই না আব্বু।" হেসে বলে অনল।
তিনি বলেন,
"আমি কিন্তু দেখেছি। তুমি একটা মেয়ের ছবি দেখছিলে। বলো দেখছিলে না?"

অনল লজ্জামিশ্রিত হেসে উপর-নিচ মাথা ঝাঁকায়। উনার ঠোঁটের হাসি চওড়া হয়। তিনি বলেন,
"কে মেয়েটা? ইরা?"
"না আব্বু! কিন্তু তুমি ইরার কথা জানো কীভাবে?"
"ছেলে রিলেশন করে। আর তার কথা আমার কানে আসবে না? তোমার সব খোঁজ-খবরই আমার কাছে থাকে। ব্রেকাপও করে ফেলেছ শুনলাম।"
"গোয়েন্দাগিরি করো না?"
"ছেলে দুষ্টু হলে বাবার তো একটু গোয়েন্দাগিরি করতেই হয়!"

অনল হেসে বলে,
"হুম, আমি তো আর ভাইয়ার মতো গুড বয় না।"
"কে বলল? অবশ্যই তুমি গুড বয়। তবে তুমি তোমার মতো। আর আমান আমানের মতো। আমার দুই ছেলেই হীরের টুকরা।"
"ভাইয়া হীরের টুকরা হতে পারে। কিন্তু আমি বোধ হয় নই!"
"এভাবে বলছো কেন আব্বু? তুমি কি কোনো বিষয় নিয়ে আপসেট?"

অনল হাসার চেষ্টা করে বলে,
"না আব্বু।"
"মিথ্যা বলবে না। কী লুকাচ্ছো বলো?"
"কী লুকাবো?"
"সেটাই তো আমি জানতে চাচ্ছি।"
অনল একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। কিছুক্ষণ মৌন থেকে বলে,
"আমার খোঁজ-খবর যখন রাখো তখন অবশ্যই নিহির কথাও শুনেছ?"
"কোন নিহি?"
"আমার পরিচিত জীবনে একটাই নিহি আব্বু!"
"যে মেয়েটা তোমায় লাইব্রেরিতে জড়িয়ে ধরেছিল?"
"ঐ নিহিই! সবাই এটাই জানে। কিন্তু আসলে সেদিন নিহি নয় বরং আমিই ওকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।"

তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন,
"তাহলে তুমি প্রিন্সিপ্যালের কাছে কেন মিথ্যা কথা বলেছ?"
"প্রতিশোধ! প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।"
শুরু থেকে সবটা তাকে খুলে বলে অনল। সব শুনে তিনি আফসোস করে বলেন,
"সময় থাকতে কেন যে বোঝোনি!"
"এখন কি সময় নেই আব্বু?"
"একেবারে যে নেই তাও নয়। তবে এতকিছুর পরও নিহি তোমার কাছে ফিরে আসবে বলে মনে হয় না। আবার আসতেও পারে। আল্লাহ্ চাইলে কী-না সম্ভব বলো?"
"হুম।"
"আচ্ছা তুমি মন খারাপ কোরো না। আমি দেখি তোমার জন্য কিছু করতে পারি নাকি।"
"না আব্বু। তুমি কিছু করবে না। যা করার আমি করব।"
তিনি অনলের পিঠ চাপড়ে বলেন,
"আরে বাহ্! আচ্ছা ঠিকাছে ছবি তো দেখতে পারি?"
"অবশ্যই।"

অনল ফোন থেকে নিহির ছবি বের করে দেখায়। তিনি বলেন,
"মাশ-আল্লাহ্! আমার ছেলের পছন্দ আছে বলতে হয়।"
অনল হাসে। তারপর বলে,
"তুমি কিন্তু কাউকে বলবে না। মাকেও না।"
"তোমার মাকে বললে সমস্যা কী?"
"না! মাকে আমার ভয় করে।"
তিনি হেসে বলেন,
"আচ্ছা বলব না। এখন চলো।"
"কোথায়?"
"তোমার মা ভুনাখিচুড়ি রান্না করেছে। বৃষ্টির মধ্যে ভুনাখিচুড়ি খাওয়ার স্বাদ নিশ্চয়ই জানো?"
"অবশ্যই। ভাইয়া তো ভুনাখিচুড়ি খুব পছন্দ করে। দাঁড়াও একটা ফোন দেই। দেখি আসে নাকি!"
"দাও।"


আমান, নিহি, তরু, আবুল আর টুকটুকি সবাই একসঙ্গে টেবিলে খেতে বসেছে। আবুল আর টুকটুকি নিচে বসে খেতে চাইলেও ওরা কেউ শোনেনি। খিচুড়ির প্লেট সামনে নিয়ে নিহি ঘ্রাণ নেয়। বলে,
"একটু আচারের তেল হলে দারুণ হতো।"

আমান হেসে রান্নাঘরে চলে যায়। ফিরে আসে আচার নিয়ে। ছোট কাঁচের বৈয়ামে আম তেলের মাঝে ডুবানো। নিহি খুশিতে প্রায় লাফিয়ে উঠে বলে,
"ওয়াও! আপনিও আচারের তেল দিয়ে খান?"
"হুম। আমার খুব ফেভারিট। আম্মু বানিয়ে বানিয়ে পাঠিয়ে দেয়।"
"তাড়াতাড়ি দিন। আমার তো খিদে বেড়ে গিয়েছে।"

আমানের ফোন বাজছে। ফোন ঘরে। আচারের বৈয়াম টেবিলের ওপর রেখে ঘরে চলে যায় ফোন আনতে। অনল ফোন করেছে। ফোন লাউডে দিয়ে কথা বলতে বলতে ডাইনিংরুমে আসে। আচারের তেল নিয়ে খাওয়া শুরু করেছে নিহি। অনলের কণ্ঠস্বর শুনে খাবার গলা দিয়ে নামা বন্ধ হয়ে যায়। চুপচাপ ওদের কথোপকথন শুনতে থাকে। অনলের পাশ থেকে ওদের বাবা-মায়ের কথাও শুনতে পায়। আমান হেসে হেসে কথা বলছে। অনল লোভ দেখিয়ে বলে,
"খিচুড়িটা দারুণ হয়েছে ভাইয়া। সঙ্গে আমের আচারের তেল। খেতে চাইলে কিন্তু চলে আসতে পারো।"
আমান হেসে বলে,
"তুই খা। তাহলেই আমার পেট ভরবে।"
"মিস করবে কিন্তু বলে দিলাম।"
"মিস করব না। আমিও খিচুড়ি রান্না করেছি।"
আরো কিছুক্ষণ ওদের কথাবার্তা চলতে থাকে। আমান খেয়াল করে দেখে নিহি খাচ্ছে না। ইশারায় জিজ্ঞেস করে,
"কী হয়েছে? খাচ্ছো না কেন?"
"এমনি!" ঠোঁটে মেকি হাসি টেনে বলে নিহি।

আমান হাত ধুয়ে নিহির প্লেটটা নিজের সামনে নিয়ে আসে। তারপর খিচুড়ি তুলে নিহির মুখের সামনে ধরে। নিহি একবার উপস্থিত সকলের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে বলে,
"খাব না!"
আমান চোখ পাকিয়ে তাকায়। তরু বলে,
"আরে খা। আমরা কিছু দেখব না।"

আমান পরে কথা বলবে বলে ফোন রেখে দেয়। নিহিকে জিজ্ঞেস করে,
"সমস্যা কী? রান্না ভালো হয়নি?"
"ভালো হয়েছে।"
"তাহলে খাচ্ছো না কেন?"
"এমনিই।"
"এমনি তো না। অবশ্যই কোনো কারণ আছে। কারণটা বলো।"
"আসলে... মানে আমার লজ্জা করে!"

আমান বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকায়। নিহি ইতস্তত হয়ে বলে,
"কারো হাতে খেতে আরকি! আনইজি লাগে কেমন জানি।"
"কোনো রকম কথাই আমি শুনব না। কারো হাতে খাওয়ার অভ্যাস থাকুক বা না থাকুক আমার হাতে খাওয়ার অভ্যাস করো। যখন একেবারে আমার কাছে চলে আসবে তখন একবেলা করে হলেও আমার হাতেই খেতে হবে।"

নিহি লজ্জায় লাল হয়ে যায়। তরু, আবুল, টুকটুকি মুচকি মুচকি হাসছে। নিহি ভেবেই পায় না এই লোকের কি সামান্য লাজ-লজ্জাও নেই? ওদের সামনেই বলতে হবে? নিহির উপায় নেই। অল্প করে আমানের হাতে খায়। খেতে খেতেই হঠাৎ করে ঐ পিচ্চির কথা মনে পড়ে যায়। জিজ্ঞেস করে,
"আপনার ছোট কোনো কাজিন আছে?"
"না। আমার আব্বু ভাইদের মাঝে একাই। ফুপুর ছেলে-মেয়ে সবাই বড় বড়। মামা নেই। খালামনির ছেলে-মেয়েরাও বড়। একটা কলেজে পড়ে, আরেকটা ভার্সিটিতে।"
"স্কুলে পড়ে এমন কোনো কাজিন নেই?"
"না। কেন?"
"এমনিই জানতে ইচ্ছে হলো। যাদের বিয়ে হয়েছে তাদের ছেলে মেয়ে নেই?"
"আছে কয়েকটার। একজনের তো কিছুদিন আগে একটা মেয়ে হলো।"
"তাদের মধ্যে কেউ স্কুলে পড়ে?" উৎসুক হয়ে জানতে চাইল নিহি।

আমান নিহিকে পানি খাইয়ে দিতে দিতে বলল,
"আরে পাগলী না! ওরা সবাই অনেক ছোট ছোট। কাউকেই স্কুলে ভর্তি করানো হয়নি। কিন্তু তুমি এসব কেন জিজ্ঞেস করছো বলো তো? বাচ্চা লাগবে তোমার? লাগলে আমায় বলো। আমি রাজি।"

তরু, আবুল, টুকটুকি শব্দ করে হাসে। নিহি দাঁতমুখ খিঁচে বলে,
"আপনি আসলেই বদ লোক!"
আমান নিজেও হাসতে হাসতে অস্থির। নিহির সেদিকে মন নেই। সে ভাবছে অনলের সাথে তাহলে ঐ ছেলেটা কে? কেমন ভাই হয় চিঠির মালিক? আর এই চিঠির মালিকটাই বা কে! আমান, অনল নাকি অন্য কেউ?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন