"এতক্ষণ লাগলো তোমার? জোহান কোথায়?" সাইদ ব্যস্ততার মাঝে জিজ্ঞেস করে। হঠাৎ এত কাজের চাপে তার কথার মাঝে বিরক্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগের জোহান এবং দীপার কথায় এমনিতেই তার মেজাজ গরম ছিল। তাই সেও কাঠখোট্টা গলায় বলে, "তিনি প্রেম করছে। সাথে কিচুমিচুও করছে।"
"কিচুমিচু! এটা আবার কী?" সামি জিজ্ঞেস করে আগ্রহের সুরে। ইনারার পিছন থেকেই জোহান আসে। ইনারা তাকে দেখে ভেংচি কেটে বলে, "তাকেই জিজ্ঞেস করো।"
সামিও অবুঝের মতো জোহানকে জিজ্ঞেস করে বসে, "ভাই এই কিচুমিচু কি'রে?"
জোহান রাগী দৃষ্টিতে তাকায় সামির দিকে। তারপর ইনারার দিকে তাকিয়ে বলে, "আমার সাথে আসো। এখনই।"
সাইদ বলে, "জোহান স্যুটের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে তো।"
"হোক।" জোহান আবার ইনারার দিকে তাকিয়ে জোর গলায় বলে, "শুনো নি কী বলেছি?"
"শুনেছি, তো?"
"আসো।"
"আসব না। কি করবেন শুনি?"
সামি তার পাশে বসা ঐশির দিকে ঝুঁকে বলে, "মেয়েটা কী জিনিস ভাই, যাদের সাথে পাঙ্গা নেওয়া সবচেয়ে বেশি ডেঞ্জারাস তাদের সাথে মুখে মুখে তর্ক করে। জোহান আর সভ্যের সাথে কথা বলতে আমার বুক কাঁপে আর এই মেয়ে তাদের সাথে ঝগড়া করে।"
"ইনারা না জোহানের পাগল ছিলো? কী হলো হঠাৎ?"
"দীপা যেদিন থেকে এসেছে সেদিন থেকেই এমন।"
ঐশি হাসে, "দীপার কথা শুনে ওর প্রেম উড়ে গেছে? যাক ভালো, মেয়েটা অনেক মিষ্টি। জোহানের পাল্লায় পড়লে কষ্ট পাবে। দীপাকে ছাড়াও আজকাল না'কি শ্রেষ্ঠার সাথেও কথা বলে।"
"বলিস কী? আমাকে তো বললো নিধির কথা।"
"বাদ দে, আর গুণা লাগবে না।"
সাইদ ইনারার এমন কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়। মেয়েটা নিজের চাকরি তো ডুবাবেই, সাথে তার চাকরিও নিয়ে ডুববে। সে অস্থির হয়ে বলল, "ইনু প্লিজ যাও। এমন করে না।"
ইনারা বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে। আর জোহানের পিছনে যায়। সভ্য এতক্ষণ চুপ করে বসে ছিলো। তার কাজ করছিলো। এত কথার মাঝেও সে চোখ তুলে তাকায় নি। কিন্তু ইনারার যাওয়ার কথাতেই সে চোখ তুলে তাকায় তার দৃষ্টি ইনারার উপরই আটকে গেল। অনুসরণ করল তার পথ।
.
.
জোহান ইনারাকে একপাশে নিয়ে আসে। এদিকে সচারাচর মানুষ কম আসে। তাই সে নিজের রাগ বের করল, "তোমার সাহস কত বড় দীপার সাথে এভাবে কথা বলার? আচ্ছা তুমি কী ভাবো নিজেকে বলো তো। তুমি সামান্য একটা মেয়ে ইমপ্লোয়ী। এভাবে ওর সাথে কথা বলার অধিকার তুমি কোথায় পাও। ও রাগে আমাদের কোম্পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে কী করবে তুমি? আমাদের কত বড় ক্ষতি হবে তুমি জানো? এর ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে তুমি? তুমি আজই ওর কাছে ক্ষমা চাইবে। ও তোমার জন্য ভীষণ বাজে মেজাজ নিয়ে বাহিরে গেছে।"
ইনারা হাই তুলে, "হয়েছে? এবার আমি যাব?"
"আমি কী বলেছি কিছু শুনেছ তুমি? তুমি দীপাকে সরি বলবে। নাহলে... "
"নাহলে কী? কী করবেন আপনি? আর দীপার ফিফা বানায় দিব। তোকে আমার জুতাও সরি বলবে না।"
"তুমি আমাকে পছন্দ করতে একারণে ওর উপর তোমার এত রাগ তাই না? একারণে ওকে তুমি এত শুনালে। নিজের কাজে কাজ রাখো। আর টক্সিক ফ্যানের মতো ব্যবহার করা বন্ধ করো। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে কি করি তাতে তোমার কিছু আসে যায় না।"
একথায় মেজাজ খারাপ হয়ে যায় ইনারার, "এক্সকিউজ মি? আপনার সো কলড গার্লফ্রেন্ড আমাকে কি বলেছে তা আপনার কানে যায় নি। আমি আপনাকে পছন্দ করতাম। তো কী? আমি নিজের রাগ অকারণে কারও উপর ঝারি না। আর আমি আপনার ব্যক্তিগত জীবনের সম্মান করি দেখেই চুপ আছি। আর আপনি হয়তো আমাকে ভুলে গেছেন আমি ভুলিনি। আপনার জন্য আমার সাথে কাটানো একদিন খুব তুচ্ছ ছিলো কিন্তু সেদিনটি আমি আজও মনে রেখেছি। কারণ আমার কাছে মা'য়ের ইচ্ছার সম্মান রাখাটা সর্বোপরি। অন্যদিকে আপনি সৌমিতা আন্টির.... " সৌমিতার কথা আনতেই চুপ হয়ে যায় ইনারা। এ কথাগুলো সে কখনো জোহান কে বলতে চাইনি। সে চেয়েছিলো জোহান নিজ থেকে সবকিছু মনে করুক। কিন্তু এখন দীপার সাথে তার সম্পর্ক জানার পর তার কিছু আসে যায় না। এ চাকরি নিয়েও তার কিছু আসে যায় না। যার কারণে সে চাকরিটা করতে শুরু করেছিলো আজ তার এমন বেমানান প্রতিচ্ছবি তার সামনে ফুটে উঠবে সে কখনো ভাবে নি।
না'কি জোহান সঠিক? হঠাৎ জোহানকে অন্যকারো সাথে দেখেই কী তার জোহানকে অসহ্য লাগছে?
"এতক্ষণ ধরে এখানে কী করছ?" হঠাৎ এক ভারী কন্ঠে ঘোর ভাঙে তার। সভ্য তার পিছনে এসে দাঁড়িয়ে বলে, "স্যুটের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমার মাথা ধরেছে যেয়ে কফি নিয়ে আসো।"
"আপনি অন্যকাওকে বলতে পারেন না?"
"তাহলে তুমি কী করবে? আসো।" সভ্য ইনারার এক হাত ধরে তাকে নিয়ে যেতে নিলেই জোহানও ইনারার হাতটা ধরে নেয়। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সভ্যের দিকে তাকিয়ে বলে, "আমি ওর সাথে কথা বলছি।"
"আই ডোন্ট কেয়ার।"
"তোকে..." জোহান ক্ষেপে সভ্যের দিকে এগোতে নিলেই ইনারা সামনে এসে পড়ে। জোহান সেখানেই থেমে যায়। সে একটা মেয়ের উপর তো তার ক্ষোভ বের করতে পারে না। সভ্য কিছু বলে না। ইনারার হাত ধরে নিয়ে যায় তাকে।
ইনারা সভ্যকে জিজ্ঞেস করে, "আপনারা দুইজন সবসময় এমন কুত্তা বিলাইয়ের মতো মারামারি করেন কেন?"
"ভাষা ঠিক করো।"
"আপনারা এমন ব্যবহার করবেন। আমি বলতেও পারবো না? ঠিক কি হয়েছে আপনাদের মাঝে।"
"নন অফ ইউর বিজনেস। আর এতই জানার ইচ্ছা থাকলে আমাকে আগে বলো, তুমি কে?"
ইনারা বিস্ময় নিয়ে তাকায় সভ্যের দিকে, "আমি কে মানে? আমি ইনারা"
"জোহানের মা'য়ের নাম কেবল তার কাছের কিছু মানুষ জানে। তুমি সৌমিতা আন্টিকে কীভাবে চিনো? আর তোমার মা'য়ের ইচ্ছা বলতে কী বুঝালে তুমি? তুমি আমার সাথে মিথ্যে বলেছ?"
সভ্যের এতগুলো প্রশ্ন একসাথে শুনে হতভম্ব হয়ে যায় ইনারা। তার জন্য কথা বানানো বা ঘুরানো বড় ব্যাপার না। এতবছর ধরে এসব করে অভ্যাস আছে। কিন্তু কোনটা ছেড়ে কোন প্রশ্নের জন্য মিথ্যা বলবে ভেবে পায় না সে। এর উপর সভ্যের দৃষ্টি দেখে আরও ভয় লাগে তার। মিথ্যা বলতে কষ্ট হয়। ইনারা ভীত সুরে বলে, "আমি...আমি আপনার জন্য কফি আনছি। আপনি অপেক্ষা করুন।"
ইনারা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে নিলেই সভ্য তার বাহু ধরে নিজের কাছে টান দেয়।
ইনারা কাছে এসে পড়ে তার। তার নয়নে ভয়, বিস্ময়। সভ্য সে নয়নে গভীর দৃষ্টিতে তাকায়। মৃদু স্বরে বলে, "হাজারোবার ছুটে পালালেও অবশেষে আমার কাছেই তোমার ফিরে আসতে হবে।"
সভ্যের এমন দৃষ্টিতে ইনারার ভয়ের সাথে সাথে হৃদয়ের স্পন্দনও বেড়ে গেল। কেমন যেন তার দৃষ্টি। ভয়ের থেকে বেশি অস্বস্তিটা বেড়ে গেল ইনারার। সে এক মুহূর্তের চোখ নামিয়ে নেয়। আবার একপলক তাকায় তার দিকে। এখনো সে গভীর দৃষ্টি! এমনিতেই সভ্যের চোখদুটো সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় এর মধ্যে এমন দৃষ্টিতে তাকালে যে কোনো নারী তার হৃদয় হেরে বসবে। তাই ইনারা নিজেকে সামলায়, বাঁচায়। সে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। হাত ছাড়িয়ে যেতে নিলেই তার হাতের ব্রেসলেটটা খুলে আসে সভ্যের হাতে। আভাসও পায় না সে।
সভ্য তার হাতে থাকা ব্রেসলেট দেখে বাঁকা হাসে। তার মনে পড়ে তার ও ইনারার প্রথম দেখা। এভাবেই পালিয়ে গিয়েছিলো ইনারা। সভ্যের হাতে বন্দী হয়ে ছিলো কেবল তার চুড়ি। আর আজ ব্রেসলেট। মেয়েটার কী নিজের জিনিসের কোনো কদর নেই?
.
.
ফটোশুট শেষ হবার পর ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে ইনারা। এত পরিশ্রম কখনো করা হয় নি তার। এর উপর শুটিং এর এত তীক্ষ্ণ রশ্মিতে এবং এত মানুষের শব্দে তার মাথা ব্যাথা করছে। তবুও সে সভ্যের সাথে শান্তিতে না এসে, সামি এবং ঐশির সাথে তাদের গাড়িতে চাপাচাপি করে বসে আসে। দুইজনে তার মতো কথা বলা পার্টি। এই কথা বলার চক্করে তার মাথা ব্যাথা আরও বাড়ল। সবই সভ্যের থেকে বাঁচার চেষ্টা। সে ভেবেছিলো গন্তব্যে পৌঁছে সে একটু আরাম করবে কিন্তু সেখানে যেয়ে আরও বাজে অবস্থা দেখে সে। গাড়ি ঢুকতে না ঢুকতেই দেখে চারদিকে গিজগিজ করছে। ভিড়ে গাড়িও ধীর গতি করে নিয়েছে। সাথে সাথে ইনারা তার স্কার্ফ দিয়ে মুখ ঢেকে নেয়।
গাড়ি থামে। তাদের গাড়ি সবার শেষে ছিলো। বডিগার্ডরা বের হয়ে সবাইকে নিয়ে যাচ্ছিলো। ইনারাই কেবল পিছনে ছুটে গেল। আশেপাশের মেয়েরা ছুটাছুটি লাগিয়ে দেয়।
নিজেকে এত ভিড়ের মাঝে সে সামলাতে পারে না। ধাক্কা লেগে নিচে পড়ে যায়। উঠে দাঁড়াবে যে অবস্থাও নেই। ছোটবেলা থেকেই সে ভিড়কে ভয় পায়। ছোটবেলায় এমন অবস্থায় তার মা তাকে সামলাতো। আর আজকাল সুরভি এবং প্রিয় সামলায়। আজ তারাও নেই। ইনারা কানে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না।
সভ্য যাবার পথে খেয়াল করে আশেপাশে কোথাও ইনারা নেই। অথচ সে ঐশীর পিছনে ছিল। তাকে না পেয়ে ঘাবড়ে যায় সভ্য। এত ভিড়ের মাঝে মেয়েটার কিছু হলো না তো? তার পিছনে ফিরে যাওয়াটাই মানা। বডিগার্ড সকলে তাকে প্রটেকশন দিয়ে গেছে। কিন্তু ইনারা জন্য সে নিজেকে আটকাতে পারে না। ছুটে যায় পিছনে। ভিড়ের মাঝে অনেকেই তাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করা। কতজনে দিশেহারা হয়ে যায় তাকে কাছে পেয়ে। হৈ-হুল্লোড় বেড়ে যায়। বডিগার্ডটা বারবার তাকে ডাকে। সে শুনেনা
এই মুহূর্তে তার নজর কেবল ইনারাকে খুঁজছে। অবশেষে সে ইনারাকে পায়। ভিড়ের মাঝে হাঁটু গেড়ে চুপ করে বসে আছে সে। চোখ দুটো চেপে ধরে, কানে হাত দিয়ে বসে আছে। তাকে দেখে যেন সভ্যের প্রাণে প্রাণ ফিরে। সে শান্তির নিশ্বাস ফেলে ইনারার হাত ধরে তাকে টেনে উঠায়। তারপর তার মাথার ক্যাপ ইনারার মাথায় দিয়ে তাকে নিজের বুকের মাঝারে ভরে কোর্ট দিয়ে তাকে ঢেকে নেয়।
হঠাৎ করে এক টান অনুভব করে ইনারা। কারো হাতের উষ্ণতা পেয়ে নরম দৃষ্টিতে উপরে তাকায় সে। বুঝে উঠার পূর্বেই সভ্য তাকে বুকের মাঝে ভরে নেয়। তাকে সকলের থেকে লুকিয়ে, তার কাঁধে হাত রেখে সামলিয়ে তাকে নিয়ে যেতে থাকে বিল্ডিং এর ভেতরে।
"ভয় পাবার কিছু নেই, আমি আছি তো।" সভ্য বলে। চারদিকে হৈ-হুল্লোড়। তবুও এই সাধারণ কিছু শব্দ তার সকল ভয় মুহূর্তেই দূর করে দেয়। কেমন শান্তি ছড়িয়ে দেয় তার মাঝে। তার মনে পড়ে ছোটবেলায় তার মা'ও এই কথা বলেছিলো একবার তাকে। এমন ভিড়ের মাঝে তার কান্না থামানোর জন্য এ ক'টি শব্দই যথেষ্ট। সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সভ্যের দিকে। কত গম্ভীর দেখাচ্ছে তাকে! আচ্ছা গম্ভীরমুখে কী যেকোনো পুরুষের প্রতি আকর্ষণীয়তা বাড়ে? না'কি এটা কেবল সভ্যের প্রতিই প্রযোজ্য?
বডিগার্ডরা এতক্ষণে এসে তাদের আশেপাশে খালি করে ভেতরে নিয়ে যায়। বিল্ডিং-এ ঢুকতে পারে তারা। দলের সবাই আগের থেকেই ভেতরে চলে গেছে।। বাহিরে চেঁচামেচি বেড়েছে। সাইদ ভাইয়াকে কেমন ভীত দেখাচ্ছে। সে কিছু বলতে নিলেই সভ্য তাকে থামিয়ে দেয়। এবং একজন স্টাফ মেম্বারকে বলে, "ওকে আমার ভ্যানিটি রুমে নিয়ে যাও। আমি আসা পর্যন্ত ওকে বের হতে দিবে না এবং কাওকে ঢুকতেও দিবে না।"
স্টাফকে এত কঠিন গলায় কথাগুলো বলার পরে সে ইনারার দিকে তাকিয়ে নরমসুরে বলল, "তোমার শরীর খারাপ দেখাচ্ছে। তুমি যে আরাম করো। খিদে পেলে ওকে বলবে, ও খাবার এনে দিবে বুঝলে?"
ইনারা তার এত বড় কাণ্ডের পরে মুখ খুলে কিছু বলতে পারেনা। তার জন্য সভ্যের এক ক্ষতিও হতে পারতো এই ভীড়ে। তাই সে বাচ্চাদের মতো আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাথা নাড়ায় কেবল।
.
.
ইন্টারভিউ শেষে এক মুহূর্তও সভ্য অপেক্ষা করে না। দ্রুত আসে তার রুমে। এসে দেখে ইনারা সোফায় বসে বসে ঘুমিয়ে পরেছে। এ ক'দিনে তার উপর দিয়ে অনেক চাপ গেছে। নিশ্চয়ই ক্লান্ত সে। সভ্যের হঠাৎ করে তাকে কাছে থেকে দেখার শখ জাগলো
। ইনারার পিছনে যেয়ে দাঁড়িয়ে সোফায় হাত রেখে গভীর দৃষ্টিতে তাকায় ইনারার দিকে। তার দিকে তাকিয়ে গভীরভাবে পরীক্ষণ করতে থাকে তার চোখের পাঁপড়ি, কপালে ছুঁয়ে থাকা ছোট চুলগুলো, গালের লালচে আভা, গোলাপি ঠোঁট জোড়া। তাকে নিদ্রার জগতে হারিয়ে যাওয়া রাজকন্যা লাগছে। আরও সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে। ইনারার ক্লান্তি দূর করার জন্য সে আলতো করে তার কপালে হাত রেখে মাথা টিপে দিতে থাকে। কয়েক মুহূর্তই কাটে। হঠাৎ মাথা টিপে দিতে দিতে তার প্রচুর ইচ্ছা জাগে ইনারার কপালে একটু চুমু খেতে। ইনারা তো ঘুমন্ত। নিদ্রার জগতে হারানো। তার কপালে একখানা চুমু খেলে কী বিরাট বড় কোনো অপরাধ হয়ে যাবে?
.
.
.
চলবে...............................