অনুভবে - পর্ব ২৪ - নিলুফার ইয়াসমিন ঊষা - ধারাবাহিক গল্প


"ও প্রিয়তমা, শুনোনা, শুনোনা আমার এই বায়না
ও প্রিয়তমা, তোমার মাঝে আমার আয়না
এই অবেলায় মন যে হারায়,
এই অবেলায় তোমার সাথী হতে চায়, 
এই নিঝুম রাতে হবে তোমার আমার প্রেমকথন..." 

থেমে যায় সভ্য। ইনারাকে জিজ্ঞেস করে, "কেমন লেগেছে? এতটুকুই লেখা হয়েছে।"
"হুম, গানটা সুন্দর। কিন্তু আপনি হঠাৎ করে প্রেমের গান লিখলেন কেন? ওটা তো অন্যদের কাজ তাই না? আপনি না বেশিরভাগই অন্য ধরনের গান লিখেন?"
"অন্যকিছু চেষ্টা করলাম। ভালো লাগে নি?"
"না না লেগেছে। কিন্তু সত্যি বলতে আপনাদের গানের স্টান্ডার্ড যত হাই এতটা ভালো হয় নি। আপনি যেগুলো 
ভালো লিখেন তার উপরই ধ্যান দেন। প্রেমের গান বেস্ট লিখে জোহান আর ঐশি। দুঃখের গান বেস্ট হয় ইরফানের। এটাই তো আপনাদের দলের বিশেষত্ব যে সকলের গানের জগতের পাঁচ ধরণ আমরা একত্রে পাই।" 

সভ্য চুপ করে রইলো প্রথমে। ইনারার কথাটা কটু শোনালেও সত্য। সে জানে। সাধারণত তার এমন সত্য উওর শোনাটা পছন্দের। কিন্তু আজ তার সত্যটা শুনতে তেমন ভালো লাগে নি। বিশেষ করে ইনারার মুখ থেকে। তাও জোহানের সাথে তার তুলনা করে। সে পণ নিলো একদিন ইনারাকে প্রেমের গান শুনিয়েই ছাড়বে। তাও তাদের লেখা সবচেয়ে সুন্দর প্রেমের গান। 

"হ্যালো হ্যালো ফোন টেস্টিং। ওয়ান টু থ্রি..." ইনারা ফোনেই দুষ্টুমি করতে থাকে। সভ্য বিরক্ত হয়ে বলে, " কি শুরু করলে?"
"আপনি কথা বলতেছিলেন না তাই দেখছিলাম ফোনে আছেন না-কি হাওয়া হয়ে গেছেন?"
"তুমি একটু আস্তে কথা বলতে পারো না? কানের পর্দা ফাটিয়ে দিলে।"
"আপনার কন্ঠ শুনতে না পেলে কি করব?"
"কেন তোমার কি আমার কন্ঠ শুনতে ইচ্ছা করছে?" সভ্য বলল। তার গিটারটা বুকে জড়িয়ে ধরে। তার ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি। 
"কারও সাথে কথা বলার সময় সামনের জন চুপ থাকলে আমার খুব বিরক্ত লাগে।"
"তাই? আর তুমি যে সারাক্ষণ সবাইকে বিরক্ত করো তার কি?"
"আমার জীবনে যাকে থাকতে হবে তার আমার বিরক্তি সইতে হবে। সইয়ে যারা থাকতে চায় তারা সারাজীবনের জন্য আমার সাথে থাকবে। আমি কখনো কারও জন্য চেঞ্জ হবো না। বুঝলেন?"
"বুঝলাম।"
"আচ্ছা আপনার এত রাত জাগার অভ্যাস কবের থেকে হলো? আপনি যেয়ে ঘুমান। আমি গোপাল ভাড় দেখি। আপনার জন্য আমার আজকের এপিসোড শেষ হয় নাই কিন্তু কেক শেষ হয়ে যাইতেছে। কাল সকালে এসে কথা হবে।"
বলেই সে সভ্যের মুখের উপর কল কেটে দিলো। 

সভ্য থতমত খেয়ে যায়। সে অবাক হয়ে তাকায় ফোনটার দিকে। মেয়েরা তার সাথে কথা বলার জন্য অস্থির হয়ে থাকে আর ইনারা তাকে দুই পয়সার পাত্তাও দেয় না। আজ পর্যন্ত তার পরিবারের কেউ তার ফোন কাটার সাহস পেল আর এই মেয়ে এভাবে তার মুখের উপর ফোন কেটে দিলো। মানুষ ঠিকই বলে কতগুলো মানুষের শান্তি ভালো লাগে না। সে সাথে সাথে মেসেজ দিলো ইনারাকে, "কাল আমার বাসায় আসবে। সকাল ৭ টায়। কাজ আছে।"
মেসেজটা দিয়ে উঠতে দেরি কিন্তু ইনারার কল আসতে দেরি নেই। কিন্তু এইবার সে ফোন ধরল না। সাইলেন্ট করে পাশে রেখে দিলো। গিটার বাজাতে শুরু করে। বারবার তার চোখ যাচ্ছে সে ফোনের উপর। মনটা আকুপাকু করছে একটিবার তার কল রিসিভ করার জন্য। ইনারার কন্ঠ শোনার জন্য। কিন্তু তার ইগোটা বেশি। তাই হাজার চাওয়া সত্ত্বেও কল রিসিভ করে না সে।
.
.
সকাল সকাল সভ্য কফি বানাচ্ছিল। এমন সময় কলিংবেল বাজে। সভ্য জানে ইনারা এসেছে। দেরি করার শাস্তিটা ইনারার ভালো করে জানা। তাই এই ভুল সে করবে না। তবুও সে আরামে কফিটা বানিয়ে যেয়ে দরজা খুলে। যেয়ে দেখে ইনারা মেঝেতে বসে আছে গালে হাত রেখে। তা দেখেই চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেল তার।
"এ'কি? নিচে বসে আছো কেন?"
"হয়রান হয়ে আছি দেখেন না?" কাঠখোট্টা গলায় বলল ইনারা। সকাল সকাল তাড়া দিয়ে ডেকে নিজে আরাম করেন। এতক্ষণ লাগে দরজা খুলতে?"
"তাই বলে তুমি মেঝেতে বসে পরবে? আমি পাগল ছাগল মানুষ দেখেছি। তোমার মতো দেখি নি।" 

"এহ নিজে তো ঘরে বসে থাকেন। আমার সে কত দূর থেকে আসা লাগে। এসেও আপনি দাঁড় করিয়ে রাখবেন। আমার আইলসামি খারাপ মনে করবে না? তাই বসে পরেছি।" ইনারা উঠে দাঁড়িয়ে সভ্যের কফিটা তার হাত থেকে নিয়ে ভেতরে যেতে যেতে বলল, "এটা এখন আমার। আপনি নতুন বানিয়ে নিন।"
সভ্য চোখ দুটো বড় বড় করে বলে, "এভাবে কাওকে না জিজ্ঞেস করে তার থেকে জিনিস নেওয়াটা বেয়াদবি। "
ইনারা তাকে পাত্তা না দিয়েই বেডরুমের দিকে যেতে যেতে বলল, "এভাবে কারও ঘুম নষ্ট করে ডাকাটাও বেয়াদবি। আপনি করছেন, আমিও করেছি। বেয়াদবি, বেয়াদবি কাটাকাটি। হিসাব বরাবর। চাপ্টার ক্লোজ।" 

সভ্য দরজা লাগিয়ে ইনারার পিছনে যায়। যেতেই দেখে মেয়েটা আসতেই বিছানার উপর ব্যাগ রেখে নিজে যেয়ে বারান্দার দোলনায় বসে আরামে কফিতে চুমুক দিচ্ছে। সভ্য বিরক্ত হয়ে বিছানা থেকে ব্যাগ উঠিয়ে টেবিলে রাখে এবং বিছানার ভাঁজ ঠিক করে। তার অগুছালো জিনিস একদম অসহ্যকর লাগে। অথচ সে এই অগুছালো মেয়েটাকেই মন দিয়ে বসলো।  

সে ইনারার সামনে যেয়ে দাঁড়িয়ে বলে, "তোমার কি একটু জ্ঞান বুদ্ধি নেই এভাবে কে বিছানায় ব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে।"
"আমি।"
"তোমার মাঝে আদব কায়দা বলতে কিছু নেই।"
"উফফ! আপনি যেয়ে কফি খান তো। আপনার মাথা ঠান্ডা হবে। যান যান।"
"আমার কফি তো তুমি চুরি করে নিয়ে নিলে।"
"এখন আমি আয়েশ করে খাব আর আপনি আহত চোখে তা দেখেন।"
বলেই ইনারা সভ্যকে দেখিয়ে চুমুক দিলো কফিতে। সভ্যও কম কীসের? তার মাথায় এক দুষ্টুমি বুদ্ধি এসে হাজির হলো। সে ইনারার দিকে তাকিয়ে তীক্ষ্ণ হাসে। আর দ্রুত তার দিকে এগিয়ে যায়। 

হঠাৎ এভাবে সভ্যের কাছে আসায় চমকে যায় ইনারা। ভয়ে খানিকটা লাফিয়ে উঠে। সে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে সভ্যের দিকে। সভ্য তো বহু কষ্টে তার হাসি থামায়। তার ইনারার এমন অবস্থা দেখে হাসিই পাচ্ছে। কিন্তু সে তা প্রকাশ করে না। সে ইনারার হাতের উপর হাত দেখে তার মগটা ঠোঁটের কাছে নিয়ে এক চুমুক দেয়। আজ কেন যেন তার হাতে সভ্যের হাতের ছোঁয়া পেতেই কেঁপে উঠে ইনারা। এর কারণ কি একটি পুরুষের তার এত কাছে থাকাটা, না এই শুভ্র সকালের মাতাল হাওয়ার। কেন যেন সে শিউরে উঠে। তার হৃদয়ের স্পন্দন বেগতিক হয়। সভ্যের এমন চাহনি দেখে নড়তেও ভুলে গেছে সে। 

সভ্য ইনারাকে এতটা কাছে থেকে দেখে নিজেও হারিয়ে যায়। কেমন মাতাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ইনারার দিকে।ছোট একটি দুষ্টুমি করতে যেয়ে সে নিজেই নিজের হৃদয় আবারও হেরে বসলো। দূরের থেকে বুঝা যায় না। কিন্তু কাছের থেকে দেখতে পেলে যে কেউ ইনারার চোখে তাকিয়ে নিজেকে হেরে বসবে। তার নীলাভ চোখদুটো গভীর। সাগরের মতো গভীর। যেন মায়ার সমুদ্র। এ সমুদ্রতে ডুবে যাওয়াটাও ভাগ্য। হঠাৎ তার বুক কেঁপে উঠে। অন্তরের ভেতর জ্বালাতন শুরু হয়। এক ঘোরে হারিয়ে যায় সে। ইনারার কন্ঠে ঘোর ভাঙে তার, "কী কর..করছেন আপনি?" 

কেমন জড়োসড়ো কন্ঠ তার। কন্ঠটা শুনে হুঁশ ফিরে তার। সে নিজেকে সামলে বলে, "আমার সবটা কীভাবে আদায় করতে হয় আমি ভালো করেই জানি।"
বলেই চোখ টিপ মেরে উঠে পড়ে সে। 

ইনারা থমকে যায়। এতক্ষণে নিশ্বাস আসে তার। সভ্য এই কফিটার জন্য এমন করল? আর সে কি উলটাপালটা কথাই না ভাবছিলো! ভাবছিলো সভ্যের হঠাৎ তার এত কাছে আসার ব্যাপারটা। নিজেকে সংযত করে সে রাগে কটমট করতে করতে সভ্যের হাতে কফিটা দিয়ে বলে, "আপনার কফি আপনিই রাখেন।" বলে সে ভেতরে চলে যায়। তার ব্যাগ থেকে কিছু কাগজ বের করতে করতে বলে, "আমি কাজের সব কাগজপত্র নিয়ে এসেছি। একবার দেখে নেন।" 

সভ্যের তো কাজে ধ্যান নেই। তাই সে এসব কথায় পাত্তা না দিয়ে নিজের মতলবের কথাই বলে, "আচ্ছা তুমি না গতকাল রাতে বললে যে তুমি কারও জন্য চেঞ্জ হবে না? দহরো জোহানের দীপার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ও যদি তোমার অন্যরূপে তোমাকে পছন্দ করতো তাহলে কি করতে তুমি? উদাহরণসরূপ তুমি যেদিন আমাদের কনসার্টে এসেছিলে।"
ইনারা তাকায় সভ্যের দিকে, "হঠাৎ এ প্রশ্ন?"
"গতকাল রাতে যে বললে তুমি কারও জন্য চেঞ্জ হবে না। কিন্তু জোহানের জন্য তো ভালোই পাগল ছিলে তুমি তাই প্রশ্ন জাগলো মনে।"
"আমার যতদিন মন চাইতো ততদিন আমি এমনই থাকতাম। আমি যেমন সে আমাকে সেভাবে ভালো না বাসলে তাকে কি ভালোবাসা বলা যায়? কাকে জিজ্ঞেস করছি। যে না'কি কখনো ভালোই বাসে নি। আচ্ছা আপনার কেমন মেয়ে পছন্দ বলেন তো। তেমন মেয়ে খুঁজে দিব।"
"যে যেমন নিজেকে তেমনই প্রদর্শন করে। চোখে লাগা বা মনে লাগার জন্য নিজেকে অন্যকেউ না বানিয়ে নেয়। আজ পর্যন্ত আমার জীবনে যত মেয়ে এসেছে সকলেই তাদেরকে আসলভাবে প্রদর্শন করতো না। জানো তো এই মিডিয়া জগৎ দুই মুখী। সকলে মুখোশ পরা থাকে। কেউ ভালো হবার, আর কেউ সুখী হবার। আর যারা নিজেকে আসলেই সামনে রেখেছে তাদের মনে ধরে নি। আমার সম্ভবত সাধারণ মেয়ে পছন্দ। যে মন খুলে হাসতে দ্বিধাবোধ করে না, নিজেকে প্রদর্শন করতে দ্বিধাবোধ করে না, অন্যদের ভালোবাসতে দ্বিধাবোধ করে না।"
সভ্য একটানা কথাগুলো বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। 

ইনারা মিটিমিটি হেসে বলে, " তাহলে হলো আপনার প্রেম। আপনি এত বড় সেলিব্রিটি। এত সাধারণ মেয়ে পাবেন কোথা থেকে শুনি।"
সভ্য পিছনের দেয়ালে হেলান দিয়ে এক হাত পকেটে ভরে কফিতে চুমুক দিয়ে বলে, "কাওকে না পেলে তোমাকে বিয়ে করে নিব।"
"ইশশ আমার তো বয়ে গেছে আপনার মতো অসভ্যের সাথে বিয়ে করতে।"
সভ্যের মেজাজ খারাপ হয়ে যায় কথাটা শুনে। সে কঠিন চোখে তাকায় ইনারার দিকে, "তাই? তুমি জানো হাজারো মেয়ে পাগল আমার সাথে একবার কথা বলার জন্য। " " আমি সে হাজারো মেয়ের মতো না। ইনারা সবচেয়ে বেশি ইউনিক। আচ্ছা শুনেন না আমার খিদু পেয়েছে। কিছু না খেয়ে দৌড়ে এসেছি।"
"তো আমি কি করব? আমি কি তোমার বর হই যে এভাবে আবদার করে বলছ? আমি তো অসভ্য, তাই না?" অভিমানী সুরে বলে সভ্য। কিন্তু এই অভিমান ধরতে পারে না ইনারা। সে বাচ্চাদের মতো মুখ করে আবদারের সুরে বলে, "প্লিজ না, অনেক খিদু পেয়েছে।" 

সভ্যের রাজি হবার ইচ্ছা না থাকলেও ইনারার এমন মিষ্টি চেহেরাটা দেখে তার রাজি হতে হলো। সে গেল নাস্তা বানাতে। কিন্তু এসে দেখে ইনারা রুমে নেই। সে নাস্তার ট্রে টেবিলে রেখে বারান্দায় যেয়ে ইনারাকে খুঁজতে যেতেই পিছন থেকে কিছু শব্দ শুনে। সে পিছনে তাকিয়ে দেখে ইনারা ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে। তাকে দেখেই অবাক হয় সে। তার পরনে একটি নীল রঙের গাউন। সভ্য তাকে কিছু জিজ্ঞেস করার পূর্বেই ইনারা বলে, "আমরা তো ফাংশনে নাচার সময় আমি গাউন পরব। তাই একবার ভাবলাম পরে প্রাক্টিস করে দেখি। আপনাকে দিয়ে ভরসা নেই। যদিও ফাংশনে এই গাউন পরব না। সুন্দর একটি গাউন অর্ডার দিয়েছি। ওই দীপার বাচ্চা এত অপমান করছিলো না আমাকে? তার থেকে সুন্দর করে সেজে যেয়ে দেখাবো আমি।" 

ইনারা নিজেকে একবার আয়নায় দেখে তারপর দৌড়ে সামনে যেয়ে দাঁড়ায় সভ্যের। জিজ্ঞেস করে, "গাউনে কি আমাকে আজব দেখাচ্ছে?"
সভ্য ঝুঁকে দাঁড়ায় তার দিকে। তার চুলের ক্লিপ খুলে দেবার সাথে সাথেই তার লালচে-সোনালী চুলগুলো ঝরে ছড়িয়ে যায় তার পিঠে। ইনারা অনেকটা অবাক হয়ে তাকায় তার দিকে। সভ্য তার কপালে আসা চুল ঠিক করতে করতে বলে, "তোমার কাওকে কিছু দেখানোর প্রয়োজন নেই। তুমি যেমন তেমন-ই সুন্দর।" 

খুবই সাধারণ কথাটা। কিন্তু এতটুকুই কেমন মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় ইনারার মনে-তে। তার ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি এঁকে উঠে। সে বলে, "সত্যি?"
সভ্য ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি এঁকে উঠে। ইনারার কোমরে হাত রেখে সে একটানে তাকে কাছে টেনে নেয়, "একদম সত্যি।"
ইনারার চমকে উঠে, "কী করছেন আপনি?"
"কেন তুমি না নাচের প্রাক্টিস করবে? তাই করছি?"
"এখন করবেন?"
"হুম, এখনই।" 

চোখে চোখ মিলে দুইজনের। সভ্য ইনারার এক হাত ধরে তার কাঁধে রাখে এবং তাকে আরও কাছে টেনে এনে চোখে মিলিয়ে প্রেমের তালে তাল মিলিয়ে নাচতে শুরু করে। নেই কোনো গানের সুর তবুও সভ্য খুব উপভোগ করছে এই মুহূর্তটা। ইনারার বুঝে উঠার পূর্বেই সভ্য তাকে পিছনে ঘুরিয়ে নিজের বুকে তার পিঠ ঠেকায়। 
হঠাৎ তার চোখ পরে ইনারার কাঁধের তিলের উপর। তিলটা আগে কখনো তার চোখে পড়ে নি। কেননা ইনারা সবসময় হুডি বা টপ পড়ে থাকে। সহজে তা দেখা যায় না। কিন্তু আজ যখন তিলটা তার চোখে পড়ে কেমন নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে তার। খুবই আকর্ষণবোধ করে সে। নিজেকে সামলে নিতে পারে না সে। আঙুল দিয়ে আলতো করে স্পর্শ করে সে স্থানে। 

শিউরে ওঠে ইনারা। সভ্যের স্পর্শে কেঁপে উঠে সে। হঠাৎ তার নিশ্বাসটা ভারী হয়ে আসে। এমনটা তো আগে হয় নি। এখনো এমনটা হওয়া উচিত না। তাই না? 
.
.
.
চলবে...............................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন