শিউরে ওঠে ইনারা। সভ্যের স্পর্শে কেঁপে উঠে সে। হঠাৎ তার নিশ্বাসটা ভারী হয়ে আসে। এমনটা তো আগে হয় নি। এখনো এমনটা হওয়া উচিত না। তাই না?
ইনারা চোখ বন্ধ করে জিজ্ঞেস করে, "এই স্টেপ তো প্রাক্টিসে ছিলো না।"
সভ্য তখন তার কাঁধের সে তিলে আকর্ষণ অনুভব করতে ব্যস্ত। ইনারার কথায় ঘোর ভাঙে তার। সে বাঁকা হেসে। হাতটা কাঁধে রেখে ইনারাকে ঘুরায় তার দিকে, "নতুন কিছু ট্রাই করতে মন্দ আছে না'কি?"
সভ্য ইনারার চুল আলতো করে সরিয়ে দিয়ে তার আঙুলে আঙুল ডুবায়। সামনের স্টেপ করার জন্য।
তার স্পর্শে কেঁপে উঠে ইনারা। বাঁধা দেয়। কেন যেন চোখ মিলাতে পারে না সভ্যের সাথে। সে অস্থিরতার সুরে বলল, "আমি একটু ড্রেস চেঞ্জ করে আসি।"
"কেন? প্রাক্টিস করবে না আর? গাউন পরে না প্রাক্টিস করতে?"
"আর প্রয়োজন নেই। আমি আসি।"
ইনারা গাউন তুলে এক দৌড়ে পালায় সেখান থেকে। ওয়াশরুমে যেয়ে দরজা আটকিয়ে তার পিঠ ঠেকায় দরজায়। তার নিশ্বাস কেমন অস্বাভাবিক। হঠাৎ নিশ্বাস আটকে যাবার অবস্থা হয়ে গিয়েছিলো। সে আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে থাকে। সে তো সমসময়ই এমন বিন্দাসভাবে থাকে। তাহলে সভ্য তার কাছে আসলে এমন অনুভূতি হয় কেন তার? প্রতিটি মেয়েরই কি এমন মনে হয়?
হৃদয়ের স্পন্দন থেমে যাবার মতো অবস্থা ছিলো ইনারার। সে গভীর নিশ্বাস ফেলে। কিছু মুহূর্ত পূর্বে সভ্য যে স্থানে স্পর্শ করেছিলো সে স্থানেই সে একটু ছুঁয়ে দেখলো।
.
তার ড্রেস পালটে বের হয় সে। সভ্য বসে ছিলো বিছানায়। তাকে নাস্তা করতে বলে সে। ইনারা একদম চুপচাপ হয়ে নাস্তা করে। কোনো কথা বলে না। এরপরেও বেশি একটা কথা বলে না সে। কেবল সভ্য প্রশ্ন করলে তার উত্তর দেয়। কিছুক্ষণ পরেই আসে ইরফান এবং সামি। তাদের সাথে সে আগের মতোই কথা বলতে পারে। কিন্তু সভ্যের সাথে নয়। কেমন লজ্জা ভাব তাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে।
সকলে একত্রে অফিসে গেল। তারপর ব্যস্ত হয়ে পরলো কাজে। এ সপ্তাহের সম্পূর্ণ শিডিউল ঠিক করা আছে বলে ইনারার তেমন কোন কাজ নেই। সে এমনিতেই তার নোটবুকের পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছিলো। এমন সময় তার চোখ পড়ে সভ্যের উপর। সামনের সোফাতেই বসে থেকে সে গম্ভীরভাবে কিছু কাজ করছিল। গম্ভীরমুখে তাকে ভীষণ আকর্ষণীয় দেখাচ্ছিলো। ইনারার ভালো লাগছিল তাকে দেখতে। তাই সে তাকিয়ে রইল। পরক্ষণে সকালের কথা মনে করে সে চোখ নামিয়ে নেয়। লজ্জায় মাখা মাখা হয়ে যায় সে। তার নোটবুকটা মুখের সামনে এনে এক দেয়াল বাঁধে যেন সভ্যকে আর তার চোখে না পরে। কিন্তু তবুও কেন যেন সে নোটবুকটা নিচু করে লুকিয়ে একটিবার দেখে নেয় সভ্যকে।
জোহান গানের প্র্যাক্টিস করছিল। একটু সময় ব্রেক নেবার জন্য সে তার গান বন্ধ করে পাশে ফিরতেই দেখতে পায় ইনারাকে। তার লুকিয়ে সভ্যকে দেখাটাকে।
ভ্রু কুঁচকে যায় তার। এভাবে তো সে কত সহজে সভ্যকে তার পছন্দের জিনিস পেতে দেবে না। তাই সে যেয়ে দাঁড়ায় ইনারার সামনে।
হঠাৎ তার মাঝে এসে দাঁড়ানোর কারণে ইনার একটু চমকে উঠে। সে সামনে তাকিয়ে দেখে জোহানকে। জোহান তার দিকে এক গাল হেসে বলে, "একটু ব্রেক নিব। নিচে যাচ্ছি। তোমারও সম্ভবত বেশি কাজ নেই। তুমি আসবে?"
জোহানের এমন প্রশ্নে কক্ষের সকলের দৃষ্টি যেয়ে আটকায় তাদের দুজনের উপর। সামি সভ্যের পাশে বসেছিল। সে উঠে কিছু বলতে চাইলো। কিন্তু সভ্যই থামিয়ে দিল তাকে। সে দেখতে চাইল, ইনারা কি করবে এবার!
ইনারা উঠে দাঁড়ায়। মৃদুস্বরে বলে, "আপনি একা গেলেই হয়তো ভালো হবে। নয়তো আপনার গার্লফ্রেন্ড দেখলে আবার একটা ড্রামা শুরু করবে। যা আমি চাই না।"
জোহান অবাক হয়। সে ভেবেছিল ইনারা একটা সুযোগ পেলেই ছুটে আসবে তার কাছে। কিন্তু এখানে তো উল্টো ইনারা তাকে মানা করছে।
সে নিজের বিস্মিত ভাব লুকিয়ে আবারও প্রশ্ন করে, ""আমি তোমার সাথে এ কয়দিন খুবই রুক্ষ ব্যবহার করেছি। তাই চেয়েছিলাম মন ভালো করার জন্য একটু বাহিরে যাই। এখন না হোক, কাজ শেষে তাহলে সন্ধ্যায় বাইরে যাই? তুমি কফি পছন্দ করলে কফি খেতে যেতে পারি।"
"কফি তো আমার পছন্দ কিন্তু আমার মনে হয় না আপনার আমার সাথে যাওয়া উচিত। আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে। সে আমাকে পছন্দ করে না। আপনি তার থেকে লুকিয়ে আমার সাথে কথা বললে বা বাহিরে গেলে খারাপ দেখা যায়। আর চিন্তা করবেন না। আমি মোটেও মনে কষ্ট রাখে নি। আপনার কোন কথায় আমি বেশিক্ষণ ধরে মনে কষ্ট রাখতেই পারি না। আপনি আমার ফেভারিট এবং সবসময়ই ফেভারিট থাকবেন। কারণ যখন আমার খুব মন খারাপ ছিলো, তখন আপনার গান শুনে আমি খুবই শান্তি পেয়েছিলাম। আমার মন খারাপের দিনগুলোতে আমি আজও আপনার গান শুনি। মন ভালো হয়ে যায়। আপনার কথায় কষ্ট মনে ধরে রাখাটা আমার পক্ষে অসম্ভব। কিন্তু দুইজনের মাঝে আমার জন্য সমস্যা হোক, তা আমি চাইনা।"
একগাল হেসে বলে ইনারা।
জোহান হাত মুঠো বন্দী করে নিল। রাগে তার মাথা গরম হয়ে গেছে। এমন সাধারণ একটা মেয়ে তাকে সবার সামনে রিজেক্ট করছে? ভাবতেই মাথায় রক্ত চড়ে যায় তার। তবুও সে শান্ত গলায় বলল, "ঠিকাছে।"
বলেই সে তাকাল সভ্যের দিকে। সভ্য ইনারার দিকে তাকিয়ে ছিলো। এরপর তাকাল তার দিকে। তার ঠোঁটের কোণে সন্তুষ্টির হাসি। এই হাসি দেখে কেমন অপমানিত বোধ করে জোহান। সে পিছনে ফিরে রওনা দিলো। যাবার সময় তার ব্যাগ নিয়ে যায়।
সামিও যায় তার পিছনে।
জোহান দ্রুত হেঁটেই যাচ্ছে। সামি ডাকছে তাকে পিছনে। সে শুনছে না। রাগে তার মাথা ঠিক নেই। সামি দৌড়ে এসে তাকে ধরতে জোহান তাকে ধাক্কা মারে, "কি সমস্যা তোর? এখানে আমার অপমান করতে এসেছিস? যে ঐ তুচ্ছ একটা মেয়ে আমাকে সবার সামনে রিজেক্ট করে দিলো।"
সামি চিন্তিত সুরে বলল, "ভাই তুই শান্ত হ। তোর জন্য এত রাগ করাটা অনুচিত। তোর মেডিসিন কোথায়?"
"আমার কথা চিন্তা করার নাটক কেন করছিস এখন? যা, তোর বন্ধুর কাছে যেয়ে ওর সাথে আমি অপমান হবার খুশি পালন কর।"
"তুই শান্ত হ।" সামি জোহানের ব্যাগটা নিয়ে তাকে নিয়ে পাশের এক খালি রুমে নিয়ে বসায় এক চেয়ারে। তার ব্যাগ থেকে একটি মেডিসিন বের করে পানির বোতল দিয়ে আবার বলে, "তুই ঔষধটা খা। তোর মাথা ঠান্ডা হবে। তোকে দিয়ে ভরসা নেই। রাগের চোটে আবার নিজের কোন ক্ষতি করে ফেলিস।"
সামি এক প্রকার জোর করে তাকে ঔষধ খাওয়ায়।
সামি বুঝতে পারে ব্যাপারটা জটিল হয়ে যাচ্ছে। সে কিছু না করলে আরও বিগড়ে যাবে ব্যাপারটা। সামি জোহানকে নিয়ে খুবই চিন্তায় পড়ে গেল। মাঝেমধ্যে তার এংজাইটি এট্যাক হয়। এরপর সে নিজেই নিজের ক্ষতি করতে শুরু করে। আগে এমনটা ছিলো না। তাদের ব্যান্ড শুরু হবার এক বছর পর থেকেই কেমন বদলাতে শুরু করে জোহান। চুপচাপ থাকতে শুরু করে। কারও সাথে কথা বলে না, কারও সাথে দেখা করতে চায় না। সভ্যের সাথেও তখন থেকেই তাঁর ঝামেলা বাঁধে। এরপর একদিন হঠাৎ তার সামনেই পাগলামী শুরু করে দেয় জোহান। রাগের চোটে নিজের হাত দিয়ে ঘুষি মারে। মুহূর্তে রক্তাক্ত হয়েছে তার হাত। বাজে এক অবস্থা! এরপর অনেক কিছু খেয়াল করে সামি তাকে একবছর পূর্বে এক কাউন্সিলারকে দেখায়। এ জিনিসটা পাবলিকে আসলে খুবই সমস্যা হবে জোহানের। তাই এই ব্যাপার কেবল সামিই জানে। অন্য কেউ জানে না। এমনকি জোহানের পরিবারও না।
সামি পাশে বসে বলল, "ব্রো ওর কথা বাদ দে। এখানে এত চিন্তা করার কিছু নেই। আর তোর কেন সভ্যের জন্য অকারণে এত চিন্তা করতে হবে?"
"তুই তো ওর পক্ষই নিবি। ও তো আমার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ তোর জন্য। তাইতো গতকালকে ওর কারণে আমার উপর হাত তোলার পূর্বে একবারও ভাবলি না তুই।"
"আরে ভাই মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। তুই এমন কথাই বলেছিল। অকারণে একটা মেয়ের জীবন কেনো নষ্ট করবি তুই। এছাড়া আমি তোর কথাও ভেবেছি।"
"আমার কথা! কীভাবে?"
"হয়তো ইনারার বোনের প্রতি তোর ক্রাশ আছে। তুই না বলেছিলি কনসার্টে যে মেয়েটা এসেছে সেই ইনারার বোন হতে পারে। তুই যদি ইনারার সাথে কিছু করিস তাহলে ওর বোন কখনো তোর চেহেরাও দেখতে চাইবে না।"
জোহানের কঠিন মুখ নম্র হয়। সে চিন্তিত সুরে বলে, "তাইতো। এই মেয়ের পিছনে ঘুরে তারপর আফসোস করতে হতো আমার। ইশশ কি ভুলটাই না করতে যাচ্ছিলাম। ওর কারণে আরও দীপার সাথে ঝগড়া বাঁধালাম।"
"ভালোই তো হলো। ইনারার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে আইজা নিশ্চয়ই তোকে পছন্দ করবে না। এছাড়া দীপাকে তো তুই কদিন পরে ছেড়ে দিবি তাই না?"
"তুই তো আজ ভালোই কথা বলছিস।" জোহান উঠে দাঁড়ায়। আবার বলে, "যাক আমি তাহলে যাই।"
"কোথায় যাচ্ছিস?"
"স্যুট কিনতে? ওইদিন সবচেয়ে বেস্ট লাগতে হবে না? মেয়ের নাম কি যেন! আইজা, হ্যাঁ আইজা। যেন আইজা এক দেখায় আমার প্রেমে পড়ে যায়। আমার অপেক্ষা করতে কষ্ট হচ্ছে। ইচ্ছা করছে এখনই যেয়ে ওকে দেখে আসি। কিন্তু কথায় আছে না, সবুরে মেওয়া ফলে। অনুষ্ঠানের দিন ওর সাথে দেখাটা বিশেষ হবে।"
বলেই জোহান চলে যায়।
সামি ক্লান্তিময় নিশ্বাস ফেলে বলে, "আমি একটা জান কতদিন যে সামলাই। গুড জব সামি, গুড জব।"
.
.
এলো অনুষ্ঠানের দিন। চারদিক সাজানো হয়েছে অসম্ভব সুন্দর করে। কোনো রাজপ্রাসাদের মতো দেখাচ্ছে সব। মহলটা জমজমাট। দেশের বড় বড় সেলিব্রিটি এবং ধনী ব্যক্তি উপস্থিত। কিন্তু সকলের মধ্যমণি হচ্ছে পঞ্চসুর। তাদের নিয়ে চর্চা চারদিকে। যেমন তাদের গুণের চর্চা তেমন রুপেরও। তাদের সাথে কথা বলার জন্য সকলে অস্থির হয়ে আছে। তারা প্রবেশ করতেই যেন মহলটায় অন্যরকম এক আভা ছড়িয়ে গেল। তাদের নিয়েই চর্চা হতে থাকলো। বিশেষ করে সভ্য এবং ঐশিকে নিয়ে কথা বাড়লো। দুইজনেই আজ নীল পরা। তাই অনেকে বলাবলি করছে যে তারা হয়তো কাপল। তা প্রদর্শন করার জন্যই এমন মিল রেখে পোশাক পরিধান করেছে তারা। অথচ ব্যাপারটা সম্পূর্ণ কাকতালীয়।
অন্যদিকে জোহানের নয়ন দুটো আজ ব্যস্ত হয়ে আছে আইজাকে খুঁজতে। তার তো আজ আসার কথা ছিলো। এখনো এলো না কেন সে! অস্থির হয়ে খুঁজেই যাচ্ছে সে তার স্বপ্নচারীণিকে।
হঠাৎ করে তার বাবা তার সামনে এসে দাঁড়ায়। এতে অপ্রস্তুত হয়ে যায় সে। সে জিজ্ঞেস করে, "বাবা তুমি সকলের সাথে কথা না বলে এখানে এলে যে?"
"এ প্রশ্নটা তো আমার তোমাকে করা উচিত।"
জোহান খানিকটা ভীত গলায় বলল, "আমি বুঝতে পারছি না বাবা।"
"তুমি দীপার সাথে না দাঁড়িয়ে এখানে কি করছ? আজ চর্চায় তোমাদের থাকা উচিত ছিল। অথচ সভ্য আজও কিছু না করে সবার আলোচনায় জড়িয়ে গেল। তোমার দ্বারা কোনো কাজ সঠিক ভাবে হয় না। তোমাকে নিয়ে কি করবো আমি?"
মন এবং মেজাজ দুটি খারাপ হয়ে যায় জোহানের। সে মুখ কালো করে নেয়। মৃদুস্বরে বলে, "যাচ্ছি বাবা।"
"দাঁড়াও। কারো সাথে পরিচয় করাব আসো। পরিচালক মুশতাক আবসারের কথা নিশ্চয়ই শুনেছ। উনি আজ এখানে এসেছেন। তার ভাগ্নির সাথে। তার ভাগ্নি সিনেমায় ডেবিও করবে। আমাদের কোম্পানিতে যুক্ত হবে এ মাসেই। ওদের সাথে তোমার দেখা করাতে চাই আসো।"
জোহানের না চাওয়া সত্ত্বেও যেতে হলো সেখানে। মুশতাক সাহেবকে দেখে সালাম দেয়। কিছু কথা বলে। তারপর তিনি এবং বাবা কথা বলতে শুরু করে। মুশতাক সাহেবের সাথে একটি শ্যামবর্ণের মেয়ে ছিলো। জোহান ভালো করেই বুঝতে পারে মেয়েটি তাকে দেখে খুবই উৎসুক। কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। হয়তো লাজুক। তার দিকে ধ্যান দেবার ইচ্ছা হলো না জোহানের। তার দৃষ্টি তো খুঁজছে তার স্বপ্নচারিণীকে।
হঠাৎ করে সে শুনে মুশতাক সাহেব বললেন, "জোহান বুঝলে আমার ভাগ্নি কিন্তু অনেক বড় ফ্যান তোমার গ্রুপের। এখন কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছে। এসব মহলে ও কমফোর্টেবল না তো। একটু ওকে আশেপাশে দেখিয়ে আনবে।"
জোহানের ইচ্ছা ছিলো না। তবুও তার বলতে হলো, "অবশ্যই আংকেল। আমি খুশি হবো।"
মুশতাক সাহেব হাসলেন। বললেন, "আইজা যা ওর সাথে।"
আইজা নামটি শুনে চমকে ওঠে জোহান। বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকায় মেয়েটির দিকে। না, এ মেয়ে তো তার স্বপ্নচারিণী নয়। এটাই কী ইনারার বোন? কিন্তু ইনারা তো সাধারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তাহলে? কিছুই মিলাতে পারছে না জোহান। জোহান কে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার বাবা বলে, "কী হলো জোহান? যাও ওর সাথে?"
জোহান মাথা নাড়ায়। সামনে এগোয়।
আইজা সামনে এগিয়ে থেমে যায়। সে পিছনে ফিরে আবারো জিজ্ঞেস করে, "মামা তুমি বলোনি তো ইনারাও আমাদের সাথে আসবে এখানে।"
কপাল কুচকানো মোশতাক সাহেব, "কোথায় ইনারা?"
"ওই'যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করছে।"
আইজার কথায় জোহান সে দিকে তাকায়। দেখতেই তো চক্ষু কপালে উঠে যায়। যেন বড় এক ধাক্কা খায় সে। তার মনে হলো কোনো এক অপ্সরা যেন স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে। গোলাপি এক গাউন পরা সে, গোলাপির মাঝে সোনালী কাজ করা। তার স্বর্ণোজ্জ্বল খোলা কেশগুলো যেন হাওয়ায় দুলছে। সএ কেশগুলোতে সাদা ফুল বাঁধা। তাকে সাজে তাকে একদম তার স্বপ্নচারিণীর মতো লাগছে। এ কী করে সম্ভব! তাহলে ইনারাই কী তার স্বপ্নচারিণী?
.
.
.
চলবে................................