আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অলকানন্দা - পর্ব ৩৩ - আনিকা রাইশা হৃদি - ধারাবাহিক গল্প

!!৯৪!!

"যেভাবে এসেছিলে সেভাবেই চলে যাও।"

সার্থকের এমন থমথমে গলায়, বলা কথায় আলবার্ট সোফায় আরেকটু হেলান দিয়ে বসে। হাত দুটো একত্র করে নাড়ায় কতক্ষণ। মুখে হাসি। 
"ভয় পেলে?"
আলবার্টের কন্ঠ। সার্থক পায়ের উপর পা তুলে বসেছে। পা নাড়াচ্ছে ছন্দে ছন্দে। কৌতুক সুরে বলে,
"আমি?"
"কেন? তুমি ভয় পাওনা?"
"সেটা তো আমার চেয়ে ভালো তোমার জানার কথা।"
"এখন তো সময় পাল্টেছে।"
"বাঘ শান্ত হয়ে বসে আছে বলে লেজে পা দিতে এসোনা। নিজের অস্তিত্ব বিলীন করে কি মজা পাবে বলোতো?"
"তুমি বেশি বাড়াবাড়ি করছো।"
সার্থক উঠে একদম আলবার্টের মুখোমুখি এসে দাঁড়ালো। খানিক ঘাবড়ানো ভাবটা প্রকাশে আনলোনা আলবার্ট। সার্থকের মুখে বাঁকা হাসি। কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে কিছু একটা বলতেই আলবার্ট উঠে বেরিয়ে গেলো। আর কখনো এখানে আসবেনা বলে মনস্থির করেছে সে। মুইংচিন, নিভাসহ সকলেই চলে গিয়েছে নিজ ঘরে। রাজার রাজত্বে বাঁধা দেওয়ার বুদ্ধি, ক্ষমতা, শক্তি কোনোটাই তাদের নেই। সার্থক চললো তার অলকানন্দার কাছে। 
________________

"এশা, মা। এসব আবার কোন ধরনের কথাবার্তা? হুট করে বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে? তোমার খালামনির সাথেই বা কখন কথা বললে? মনিরা আমাকে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি কেন? তাছাড়া তোমার গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট হয়নি এখনো।"
"আমি খালামনিকে না করেছিলাম, বাবা। আমি আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করতে চাই।"
"সিদ্ধান্ত কি ফাইনাল করে ফেলেছো?"
"জ্বি, বাবা।"

এশা অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশ ছেড়ে পাড়ি জমালো বিদেশে। রেজওয়ান খুবই অনুতপ্ত। সে বুঝতে পারছে মেয়েটির সাথে এরকম অশোভন আচরণ করা ঠিক হয়নি। তবে ততোদিনে পাখি নীড় ছেড়ে পালিয়েছে বহু দূরে। আজ রেজওয়ান এসেছিলো এশার সাথে কথা বলতে। এশার মায়ের কাছে জানতে পারলো এশা দেশে নেই। খালার কাছে চলে গিয়েছে। রেজওয়ান জানেনা কেন হঠাৎ করেই এশা নামের শ্যামবতী, এলোকেশী মেয়েটা তার ভাবনায় এতো আসছে। কেন? 

চার বছরের সুখের সংসার সার্থক আর মাহার। সার্থক কখনো মাহাকে কোনোকিছুর কষ্ট দেয়নি। মাহা যেমন চেয়েছে, যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই সব হয়েছে। মাহা মাঝে সৎ মা দিনার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলো। কিন্তু তিনি সাফ মানা করে দিয়েছেন মাহার সাথে তার, তার ছেলেমেয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। মাহা যেন কোনোদিন কোনো দাবি নিয়ে দিনার সামনে না যায়। সেদিন সার্থকের বুকে মাথা রেখে খুব কেঁদেছে মাহা। এই জীবনে আপন বলতে শুধু এই একজনই রইলো তবে। বাকি সবাই তো চলে গিয়েছে যোজন যোজন দূরে। নিভার আচরণে পরিবর্তন ঘটেছে অনেকটা। সে এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। রঙিন জামা পরিধান শুরু করেছে। মাহার সাথে সেই আগের মতোই হাসিখুশি ভাবে কথা বলে। অদ্ভুতভাবে লুবান আর রবার্ট যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে। মাঝেমাঝে মনে হয় তাদের কোনো অস্তিত্বই কোনোকালে ছিলোনা এই গুলশানের বাড়িটায়। রুমানা এসেছিলো এই বাসায় কয়েকবার। বান্ধবীর এতো সুন্দর সুখের সংসার দেখে কত দোয়া করলো পাগলীটা। মাহা চিরপরিচিত সেই বারান্দায় দাঁড়িয়ে। আকাশে শুক্লপক্ষের চাঁদ। হাতে একটা সাদা খাম। তাতে সার্থকের জন্য বিশেষ কিছু অপেক্ষা করছে। বহু চেষ্টার ফল।

!!৯৫!!

মাহা জানে এখনই সার্থক এসে পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরবে। ঠিক তখনই মাহাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো সার্থক। মানুষটা সত্যিই পাগলাটে। মাহা অনুভব করছে প্রিয় পুরুষের স্পর্শ। বিস্তৃত বারান্দায় টবে লাগানো চার পাঁচেক অলকানন্দা ফুলের গাছ। চাঁদের মিহি আলোয় হলুদ রঙটা অভূতপূর্ব লাগছে। মাহা সেদিকপানে তাকিয়ে বলে,
"আপনার জন্য একটা উপহার আছে।"
"কি উপহার?"

মাহা নিজেকে ছাড়িয়ে সার্থকের মুখোমুখি হলো। চাঁদের আলোয় সবুজ রঙা বাটিক থ্রি-পিস পরনে, নাকে নাক ফুল পরা হলদে ফর্সা মুখটা অপূর্ব লাগছে সার্থকের কাছে। টুক করে গালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিলো সে। মাহা বিরক্ত হয়ে বলে,
"উফ্, আপনিও না।"
"কি?"

দুই ভ্রু নাচিয়ে মজার ছলে জিজ্ঞেস করে সার্থক। মাহা সার্থকের বুকে মাথা রেখে শুধায়,
"দুষ্টু। আপনি ভিষণ দুষ্টু। যে আসবে সেও হয়তো আপনার মতোই দুষ্টু হবে।"
মাহার মাথায় হাত বুলানো থেমে যায় সার্থকের। অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
"কি বললে?"
"কই কি বললাম?"
"কে আসবে?"
মাহা হাতে থাকা খামটা এগিয়ে দেয় সার্থকের নিকট। সার্থক খানিক অবাক হয়ে খামটা হাতে নেয়। 
"কি আছে এতে?"
"খুলে দেখুন।"
দুটো লাল দাগ দেখে অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছে সার্থক। হতভম্ব, বিস্ময়ে হা হয়ে একবার হাতে থাকা জিনিসটায় আরেকবার মাহার পানে চায় সার্থক। 
"আমি বাবা হবো?"
"হুম"

লজ্জায় কিঞ্চিৎ লাল হয় মাহার কপোল। টুপ টাপ করে দু'খানা ভালোবাসার পরশ মাহার গালে এঁকে দেয় সার্থক। অতঃপর কোলে উঠিয়ে ঘুরায় অনেকক্ষণ। সার্থকের বাম চোখের কার্ণিশ বেয়ে পড়ে একফোঁটা নোনাজল। অন্ধকারের রাজা, দুঃখের রাজার সাথে হয়েছে আলোর রাণীর মিলন মেলা। প্রকৃতি কি সইবে এই অসম সম্পর্ক? 

__________

মাতব্বর শরীফ উধাও হওয়ার পর থেকেই যেন ভাটা পড়েছে চৈতির কেস। রেজওয়ান যা একটু তৎপর ছিলো। সিআইডির হাজারো ফাইলের নিচে ধামাচাপা পড়েছে সেই ফাইল। রেজওয়ান পুনরায় কাজে ফেরার পর নতুন কেসগুলোতে এতটাই মগ্ন হয়ে পড়েছিলো যে আর খোঁজ নেয়নি পুরানো কিছুর। চলছে সার্থক মাহার জীবন। তবে আদোও কি এতো সুখে থাকতে পারবে? অভিমানী এশা আর অনুতপ্ত রেজওয়ানের মিল কি হবে? প্রশ্ন জাগে চৈতি কি করে মাহা হলো? সিলেটে কি ঘটেছিলো? মাহা কেন সব ভুলে গেলো? ছায়ামানব কে? চৈতির সাথে কি ঘটেছে? লুবান, রবার্ট কোথায়? মাতব্বর শরীফকে কে গায়েব করলো? মাহা যেদিন হাসপাতালে ছিলো তাকে কে মারতে চেয়েছিলো? ছায়ামানবকে অভ্যন্তরীণ খবর দেয় কে? মাতব্বর শরীফ ঘটনায় ইনচার্জ আজিজ কি করে আগুন লেগে মারা গেলেন? ওয়েন্ডিগোর সাথে ছায়ামানবের কি সম্পর্ক? সিলেটে মাহার জ্ঞান ফেরার পর কেউ কি ভুল তথ্য দিয়েছে সকলকে? এমিলিনের আসল পরিচয় কি? জুস নিয়ে সকলের এত আতংক কেন? আরো অনেক প্রশ্ন রয়ে যায়।
.
.
.
চলবে........................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।