ডিসেম্বর গড়িয়ে জানুয়ারিতে পড়েছে মাস।আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তবে কনকনে ঠান্ডা এখনো উপভোগ করার মতো। আজ জানুয়ারির ছয় তারিখ! মাসের প্রথম সপ্তাহ! অরুর ইন্টার ফাইনালের রেজাল্ট বেরোবে। ঠিক দুপুর বারোটায় অনলাইনে চলে আসার কথা। এর আগে জানতে হলে কলেজ যেতে হবে।
আনোয়ার সাহেব মেয়ের রেজাল্ট বেরোবে শুনে আর অফিস গেলেন না। বরং বাক্স ভর্তি মিষ্টান্ন নিয়ে এসেছেন বিশ কেজি। প্রতিবেশী, আত্নীয় স্বজনদের দিবেন বলে৷ দিব্বি ব্যস্ত পায়ে ড্রয়িংরুমে বিচরণ করছেন। সিঙ্গেল মিষ্টান্ন বাক্স গুলোতে, পর্যাপ্ত মিষ্টি গুছিয়ে নিচ্ছেন। একেকজন প্রতিবেশীদের বাড়ি এভাবেই যাবে। তবে আত্নীয় স্বজনদের ব্যাপারটা ভিন্ন। তাদের বাড়ি কেজি হিসেবে যাবে! তিনি এখনই দশ কেজি আলাদা করেছেন।
অরুর খুব বাজে ভাবে ঠান্ডা লেগে বসেছে। সকাল থেকে টিস্যু ব্যবহার করে, ঘরবাড়ি ভরিয়ে ফেলেছে। এতক্ষণ সোফায় বসে টেলিভিশন দেখছিল। হুট করে জবেদা বেগম তাকে ডেকে বসে। তাই রাতারাতি আর টিস্যু গুলো সরাতে পারেনি। হুড়মুড় চলে গেল। কিছুক্ষণ পর মোস্তফা সাহেব ড্রয়িংরুমে এলেন। নিউজপেপারে চোখ রেখে সোফায় বসতে নিচ্ছিলেন! ঠিক অরুর ব্যবহিত টিস্যুর উপর প্রায়!
দীপ্ত ডাইনিং থেকে চেঁচিয়ে উঠলো, 'চাচ্চু বসো না ওখানে! সর্দির টিস্যু দিয়ে অরু আপু ঘরবাড়ি, সোফা সবকিছু নষ্ট করে.. '
দীপ্তর মাথায় একটা ছোট থাপ্পড় বসিয়েছে আকাশ।পরপর দীপ্তর কানে টান মেরেছে বিদায় বেচারা চুপ করে গেল। অসম্পূর্ণ রয়ে গেল কথাগুলো। চমকিত মোস্তফা সাহেব আর বসলেন না। কিঞ্চিৎ ভুরু কুঁচকে সোফায় তাকালেন। সুমিতা বেগম মিষ্টি নিতে এসে এমতাবস্থা দেখে, মেয়েকে বকতে শুরু করেছেন। দ্রুত এগিয়ে বাম হাতে টিস্যুগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন। মোস্তফা সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, 'অরুর জন্য ঔষধ আনা হয়েছে?'
আনোয়ার সাহেব মিষ্টির বাক্স গুনছিলেন। গুনা রেখে, ভাইয়ের প্রশ্নের জবাব দিলেন, 'এনেছি। ঠান্ডা কমছেই না!'
'আজ যাক। রাতের মধ্যে না কমলে আমাকে জানাবে!'
'জি আচ্ছা ভাইয়া।'
বাপ-চাচাদের কীর্তিকলাপে অরু বেশ বিরক্ত এবং লজ্জিত। রেজাল্ট কী এখনো আউট হয়েছে নাকি! আগ বাড়িয়ে কীসব করে বেড়াচ্ছে! এখন যদি সে খারাপ করে! তারপর এই মুখ আর কিভাবে দেখাবে? আনোয়ার সাহেবের অত্যন্ত বিশ্বাস অরুর প্রাণে ডর-ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। প্রত্যেকবার রেজাল্ট আউটের দিন, অরুর মনে শুধু বাপ-চাচাদের প্রত্যাশা ধরে না রাখার ভয় কাজ করে। নাহলে রেজাল্ট নিয়ে অতটা মাথা ব্যথা হয়না!
আপাতত জবেদা বেগম অরুর হাতে কফি ধরিয়ে দিয়েছেন। তন্ময়ের জন্য! তন্ময় এখন বাড়িতেই আছে। অফিস যায়নি। কারণ বিকেলে সোজা বিজনেস ট্যুরে বেরোবে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে। দু'চারটে মিটিং শেষ করে পরদিন রাতে ব্যাক করবে ঢাকা। অরু বিষয়টি শুনে বিচলিত হয়ে পড়েছে। তন্ময় দুদিনের জন্য চলে যাবে, এটা সে মানতে পারছেনা। অদ্ভুত শূন্যতা বুকের ভেতর এখনই অনুভব করছে। অদ্ভুত খারাপ লাগা চারিপাশে ভীড় জমিয়েছে।
অরুর রেজাল্ট বেরোবে শুনে শাবিহাও বাড়িতে। তার অফিস না যাবার আরেকটি কারণ রয়েছে অবশ্য। মোস্তফা সাহেব সাফসাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে আর জব করার প্রয়োজন নেই শাবিহার। তখন জোরপূর্বক কাজে গিয়েছে নিজের ভাইয়ের কষ্ট দেখে। রেগে সেও তখন বাবার টাকায় চলবে না, স্বীদ্ধান্ত নিয়েছিলো। কিন্তু এখন তো সবকিছু ঠিক হয়েছে। মোস্তফা সাহেব তাই আর মেয়েকে কাজে যেতে দিবেন না। বাবার স্বীদ্ধান্তে শাবিহা নারাজ। সে কাজ করতে চায়। মুলত এরজন্য আজ সে বাড়িতেই। বাবার মুখোমুখি হয়ে কথা বলবে। অথচ মোস্তফা সাহেব সুযোগ দিচ্ছেন না কিছু বলবার। বিরক্ত হয়ে তন্ময়ের রুমে এসেছে সে। কথা বলবে তার ভাইয়ের সাথে। তন্ময় তখন মনোযোগ সহকারে কিছু ফাইলস চেক-আউট করছিলো।
শাবিহাকে দেখতেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। 'কি হয়েছে?' বলে সামনে অগ্রসর হতে লাগলো। বসতে ইশারা করলো। শাবিহা বসলো না। দাঁড়িয়ে রইলো মাথা নত করে। আঁখিদুটির নিচে কালো হয়ে আছে। ক্লান্ত দেখাচ্ছে মুখশ্রী। তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সারারাত ঘুমায়নি।
শাবিহা বলল, 'তুমি কি ব্যস্ত?'
'না।'
'আমি কাজ করতে চাই।'
'তাহলে করবি।'
'বাবা যেতে না করে দিল।'
'আমি কথা বলে নিব।'
'ভাইয়া... আমি...'
শাবিহার গলা আটকে আসছে। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে বেশ দ্বিধাবোধ করছে সে। দু ভাইবোনের আলাপ-আলোচনার মধ্যে হুট করে অরু চলে এলো। তবে ভেতরে ঢুকল না। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল। লুকিয়ে গেল দরজার আড়ালে।
শুনতে পেলো তন্ময়ের গম্ভীর স্বরে বলা অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন,'অয়নকে পছন্দ করিস?'
অরু নড়েচড়ে দাঁড়ালো। ভুত দেখার মতো চমকে গেল। প্রশ্নটির পর পরিস্থিতি থমথমে নিস্তব্ধতায় ঘেরা। শাবিহার জবাব এলো না। সে ক্ষীণ দৃষ্টিতে ভাইয়ের পানে তাকিয়ে। ঠোঁট ঠোঁট চেপে অরু চোখজোড়া বড়বড় করে রেখেছে। তারমানে কি তন্ময়ের কথা সত্য? শাবিহা আর অয়ন! অরুর মস্তিষ্কের সবকিছু গুলিয়ে আসছে।
তন্ময়ের গলা পুনরায় শোনা গেল, 'কিছু ভেবেছিস? সিচুয়েশন বেশ খারাপ কিন্তু! বাবা এই বিষয়ে সহজে রাজি হবে বলে মনে হয়না। ইট উইল বি টাফ! আমি কি কথা বলব? নাকি আরও সময় লাগবে?'
'অয়ন... '
তন্ময় কিঞ্চিৎ ভুরু কুঁচকে বলল,'অয়নকে বলেছিস?'
'না!'
'জানিয়ে দেখ। তুই তো একা সবকিছু হ্যান্ডেল করতে পারবি না। তোদের দুজনকে একসাথে এই সিচুয়েশনে ওভারকাম করতে হবে। আজ বাদে কাল তোকে দেখতে আসবে। বাবার কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে, দেখতে এসে আঙটি বদল করে নিবেন।'
'ভাইয়া..'
'আমি জানি, অয়ন ভালো ছেলে। খুব মেধাবী এবং হার্ডওয়ার্কিং গায়। দু তিনবছর পর স্টাডি শেষ করে একজন ভালো বিজনেস ম্যান হয়ে উঠবে। অবস্থা আরও উন্নত হবে! কিন্তু এখনকার সিচুয়েশন তো আর তিন-চার বছরের জন্য ওয়েট করবে না। বুঝতে পারছিস? শাবিহা তুই কি শিয়র? আর ইউ? অয়ন এখনো ইমম্যাচিউর! আন-এডাল্ট! ভালোভাবে ভেবে নিয়েছিস?'
শাবিহা নিশ্চুপ হয়ে রইলো। খুব সময় নিয়ে বলল, 'আমি ওকে ভা..ভালোবাসি!'
কিছুক্ষণ তন্ময় নিশ্চুপ থাকলো। শাবিহাকে ভালোভাবে দেখে তারপর বলল,'ফিরে এসে কথা বলবো বাবার সাথে। তুই অয়নকে জানিয়ে রাখ। সিচুয়েশন ওকেও হ্যান্ডেল করতে হবে।'
শাবিহা মাথা দোলাল। আলগোছে বেরিয়ে পড়লো। অরু নিজের রুমে ঢুকে গিয়েছে দৌড়ে। শাবিহাকে যেতে দেখে বুকে হাত চেপে নিশ্বাস ছাড়লো। সে কি খুশি হবে নাকি অবাক? অয়নকে তার খুব পছন্দ। ছেলেটা যেমন দেখতে সুন্দর তেমন তার চলাফেরা এবং ব্যবহার। সবকিছুই দুর্দান্ত সুন্দর। শাবিহার সাথে নিশ্চয়ই খুব মানাবে? অরুর ঠোঁট জুড়ে অমায়িক হাসি। সে এখন থেকেই ওদের দুজনের ভক্ত হয়ে গেল। ভালোভাবে দুজনকে নিয়ে ভাবতেই,
অদ্ভুত কিছু দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে এলো। যেমন দু'এক বছর আগে বৃষ্টির মধ্যে অয়নের সাথে যখন শাবিহার অফিসের সামনে গিয়েছিল কলেজ বাংক দিয়ে, তখন খুব করে খেয়াল করেছিল অয়নের নজর বারবার শাবিহাকে দেখছে। তারপর সিলেট গিয়েছিল যে তখনো প্রায়শই লক্ষ্য করেছিলো শাবিহা সর্বদাই অয়নের পাশাপাশি আছে! অবশ্য তখন এভাবে ভেবে দেখেনি তাই বুঝতে পারেনি! তবে এখন যখন কাহিনি খোলাসা হয়েছে, সবকিছু তার চোখে রোমান্টিক এবং প্রেমময়।
অরু কফির মগ হাতে উঁকিঝুকি মারছে। কেউ নেই! যেমন মাত্রই এসেছে তেমন ভান ধরে বেড়িয়ে পড়লো। এসে দাঁড়ালো তন্ময়ের রুমের সামনে। দাঁড়াতেই পরপর ঘাবড়ে গেল। একটা ফাইল হাতে তন্ময় দাঁড়িয়ে দরজার সামনেই। যেনো অরুর জন্য অপেক্ষা করছে।
ফাইলের একটা পৃষ্ঠা পাল্টে প্রশ্ন করলো, 'মাত্র এলি?'
'হু।'
'আমিতো দেখলাম তুই কান পেতে দাঁড়িয়েছিলি।'
অরু নাক কুঁচকে বসলো। দেখে ফেলেছে! এরজন্যই এমন হাবভাব নিয়ে রেখেছে। অরু বিরক্ত সুরে বলল,'আমিতো শুনতে চাইনি।'
'ওহ্।'
অরু কফির মগ এগিয়ে দিতে নিয়ে খেয়াল করলো, কফি ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে কফির দিক তাকিয়ে রইলো। এখন কি এই কফিটা ফেরত নিয়ে যাবে? আঁড়চোখে তন্ময়ের দিক তাকাল। কিছু প্রশ্ন আছে তার মনে। প্রশ্ন গুলো কী করবে? তন্ময় ঘুরে ভেতরে চলে গিয়েছে। অরু পেছন পেছন গেল। কফি টেবিলের উপর রেখে দিল।
ইনিয়েবিনিয়ে ধীর স্বরে প্রশ্ন করলো, 'শাবিহা আপু আর অয়ন ভাইয়া কি সত্যিই প্রেম করছে?'
তন্ময়ের জবাব এলো না। সে ফাইল টেবিলে রেখে ঠান্ডা কফি হাতে নিল। কয়েক চুমুক বসিয়ে অরুর দিক তাকিয়ে রইলো। জবাব না পেয়ে অরু বলল,'আমি কাউকে বলবো না। সত্যি! বলেন না তারা প্রেম করছে কী? আমার না তাদের দুজনকে একসাথে অনেক ভালো লাগে। আর অয়ন ভাইয়াকে তো আমার হেব্বি পছন্দ!'
তন্ময়ের অসাধারণ মুখশ্রীর সামান্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল। ভ্রু দুয়ের মাঝে সূক্ষ্ম ভাজ পড়েছে। মগে পুনরায় চুমুক দিতে নিয়েও দিল না। গম্ভীর স্বরে শুধালো, 'তাই বুঝি?'
'হু। আপনার ভালো লাগেনা?'
'লাগেনা।'
অরু পিটপিট চোখে তাকাল। ভালো না লাগার কী আছে আশ্চর্য! কক্ষ জুড়ে পায়চারি করে আবারো তন্ময়ের সামনে এলো। তন্ময় কনসনট্রেশন নিয়ে ফাইল পড়ছে। সাবলীল ভঙ্গিতে অরু জিজ্ঞেস করলো, 'আজ চট্রগ্রাম যাবেন?'
'হু।'
'চট্রগ্রাম অনেক সুন্দর তাই না?'
'হু।'
'আমি কখনো যাইনি।'
'হু।'
'ভাবছিলাম এবার গিয়ে ঘুরে আসবো।'
'হু।'
'আপনার সাথে আমাকে নিবেন?'
'হু..কী!'
অরু খুশিতে গদগদ হয়ে উঠলো। শেষের 'কী' শব্দটি যেমন শোনেনি। 'সত্যি নিবেন?'
'না। সারাদিন মাথায় কি চলে তোর? শুধু আজগুবি! ধর, কফিটা গরম করে নিয়ে আয়।'
অরুর হাতে কফির মগ ধরিয়ে তন্ময় বারান্দায় চলে গেল। অরুর মুখমণ্ডল অন্ধকার তখন। সে কিছুক্ষণ চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে থাকলো বারান্দার দিক। তারপর হনহনিয়ে বেড়িয়ে পড়লো। আজ সে তন্ময়ের সঙ্গে এই বিজনেস ট্যুরে যাবেই যাবে! লাগলে পুরো বাড়ি মাথায় তুলবে! কিন্তু সে যাবেই যাবে!
_______________
অয়ন বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে। কথা বলছে! একসময় বন্ধুগন সব চলে গেল। পাশে রয়ে গেল সৌভিক। একটা সিগারেট ধরাতে গিয়েও ধরালো না অয়ন। সৌভিক তখন দিব্বি সিগারেটে টান মেরে চলেছে। হুট করে বলল,'দোস্ত মন খারাপ করিস না। সব ঠিক হইয়া যাইবো।'
অয়ন থমকে গেল। ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,'কী!'
সৌভিক অয়নের কাঁধ থাপড়ে বলল,'ব্যাটা প্রেমে এমন বাঁধা না আসলে হয় নাকি? আর তুই তো একটা চ্যাম্প, যে পরীর পেছনে ছুটেছে! ওমন পরী ধরতে গেলে ছ্যাকা একটু খেতেই হয়!'
অয়ন এবার পুরোপুরি সৌভিকের দিক ঘুরলো। তার কপাল এখনো মারাত্মক কুঁচকে। সৌভিক ও নড়েচড়ে দাঁড়ালো। দাঁত কেলানো বন্ধ করে, ঠোঁট ভিজিয়ে মাথা চুলকে নিল। অয়নের হাবভাবে বুঝে গেল, এই বোকার বাচ্চায় কিছুই জানে না। এখন? জানানো কি ঠিক হবে? অয়ন জিজ্ঞেস করলো, 'কি হয়েছে? খুলে বল!'
সৌভিক সতর্কতা সহিত বলল,'শাবিহাকে পরশু দেখতে আসছে পাত্রপক্ষ! তুই জানিস না দোস্ত?আম্মার থেকে শুনলাম সেদিনই এনগেজমেন্ট হয়ে যাবে।'
অয়নকে স্তব্ধ দেখাল। তার চাহনি জলন্ত অগ্নির ন্যায়। সৌভিক ছোট ঢোক গিলে বলল,'দোস্ত আমি সত্যি কইতাছি।'
____________
অরুর রেজাল্ট এসেছে কিছুক্ষণ আগে। সে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। অরু সবসময় দুর্দান্ত রেজাল্ট করে এসেছে। এবারও ভিন্ন নয়।সবগুলো সাবজেক্টেই ভালো রেজাল্ট। আনোয়ার সাহেব আরও প্রফুল্লতায় মিষ্টি বিতরণ করছেন। হাসিমুখে মেয়ের প্রশংসায় মগ্ন তিনি।
প্রত্যেকবারই অরুর রেজাল্ট বেরোলে, বাবা এবং চাচারা তার একটি ইচ্ছে পূরণ করে। যা চায় তাই দেওয়ার হয়। এবারও মোস্তফা সাহেব হেসে শুধালেন, 'কি চাই?'
অরু সঙ্গে সঙ্গে বলল,'যা চাই দিবে?'
'হু।'
'আমি চট্রগ্রাম যেতে চাই চাচ্চু!'
'আচ্ছা যেও। সবাই মিলে...'
'আমি আজই যেতে চাই।'
মোস্তফা সাহেব হঠাৎ আতংক চোখে তাকালেন অরুর পানে। আজ মানে? আজ তো তন্ময় চট্রগ্রাম যাবে! তারমানে...হুট করে তার চোখ চলে গেল কিছুটা দূরে। তন্ময় সিঁড়ির সামনে দাঁড়িয়ে। পিতা পুত্রের চোখাচোখি হলো মুহুর্তেই। মোস্তফা সাহেবকে আরেকটু স্তব্ধ করতে, হঠাৎ তন্ময় নিঃশব্দে বাঁকা হাসলো।
.
.
.
চলবে.................................