প্রকৃতিতে তখন ছোপছোপ ঘন অন্ধকার। জোনাকিরা উড়ছে, নাচানাচি করছে। পুবের বারান্দায় বসলে জংগলে জোনাকির ওড়াওড়ি আর ঝিঁঝির ডাক শোনা যায়। সেখানে এসে দাঁড়াল ওরা দুজন, সারল্য ও জাহ্নবী। আজকের সন্ধ্যা জাহ্নবী'র জীবনে অভাবনীয় সৌন্দর্য নিয়ে ধরা দিয়েছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে পেরে ওর আনন্দের সীমা নেই। এরপর এইযে মোহময় রাত্রি, নিস্তব্ধতায় মোড়ানো চারপাশ। পাশে দাঁড়িয়ে পান্নাবান্নার, এরচেয়ে মধুর মুহুর্ত জীবনে আর কী এসেছিল তার? ভাবে সে। ভাবতে ভাবতে লেবুগাছের পাতায় হাত বোলায়। বারান্দার পাশেই যে লেবুগাছটা, তার একটা ডাল উঠে এসেছে এদিকে। স্বচ্ছ, পরিষ্কার পাতা। লেবুপাতা কচলালে যে কড়া সুঘ্রাণটা ভেতর থেকে আসে, সেটা ভালো লাগে ওর।
পান্নাবান্নার বলল, 'এখানে এসে কেমন লাগছে বলুন?'
'খুব ভালো লাগছে। আপনার প্রতি আমি কতটা কৃতজ্ঞ হয়েছি সেটা বলে বোঝানো যাবে না।'
'তাহলে লিখে বোঝান।'
'কী!'
'বলে বোঝাতে না পারলে লিখে বোঝান।'
জাহ্নবী মুচকি হেসে বলল, 'আপনি এখানে এসে কিন্তু খুব ফুরফুরে হয়ে গেছেন। দেখতে ভালো লাগছে।'
'আপনিও ফুরফুরে হয়ে গেছেন। সেটা অস্বীকার করবেন না।'
'অস্বীকার করছি না। একটা সত্যি কথা বলবো? আমি নিজেকে প্রকাশ করতে পছন্দ করিনা। তাও বলতে ইচ্ছে করছে।'
'বলুন। নিজেকে যদি অপ্রকাশ্য রেখে বলা যায় তাহলে বলে ফেলুন।'
জাহ্নবী আবারও মুচকি হাসলো। সারল্য'র মনে আজ খুব ফূর্তি সেটা ওর কথাতেই বোঝা যাচ্ছে। ঘন অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে থেকে জাহ্নবী বলল, 'আমি খুব চাপা স্বভাবের একটা মেয়ে। আমার মধ্যে অনেক জড়তা। সহজে কারো সাথে মিশতে পারিনা। এখানে এসেও খুব অস্বস্তিতে ছিলাম। কিন্তু সন্ধ্যায় সবার সঙ্গে খেলতে গিয়ে আমার সেই জড়তা ভ্যানিশ হয়ে গেছে। খুব সহজে সবার সঙ্গে গল্প করতে পারছি। এটা অনেক আনন্দের। এই অনুভূতি আমার আগে হয়নি।'
সারল্য মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, 'বেশ ভালো। অনেকদিন ধরে আমার মধ্যেও একটা বিরক্তিকর ব্যাপার চলছিল। হতাশার মতোন। মনে হচ্ছিল আমি একটা ট্রমার ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। একটা সার্কেলে আবদ্ধ হয়ে গেছিলাম, যেখান থেকে বের হতে পারছিলাম না। এখানে এসে আমার সেটা ভাংল। নতুন করে বেঁচে উঠলাম মনে হচ্ছে।'
জাহ্নবী উৎফুল্ল হয়ে উঠল। সারল্য'র এই ভাললাগার অনুভূতিটা ওর সন্ধ্যার আনন্দকেও ছাড়িয়ে গেল। সারল্য'র সুখেই যেন ওর সুখ, এমনটাই মনে হচ্ছে। কী জানি! কী এর কারণ..
সারল্য বলল, 'ভেতরে যাই চলুন।'
'আপনি যান, আমি আসছি।'
'এখানে দাঁড়াবেন কিছুক্ষণ?'
'হুম।'
সারল্য ভেতরে প্রবেশ করলো। একলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইল জাহ্নবী। বারান্দায় টিমটিমে আলো জ্বলছে। বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। মশা কামড়াচ্ছে বেশ। তবুও দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে। এখানে এসে সবই ভালো লাগছে তার। আনন্দে বুক ভরে যাচ্ছে। জীবনে সুখগুলো অনেকভাবে আসে, সেটা যেন এখানে এসেই উপলব্ধি করছে। এইযে জোনাকি জ্বলা বাগান, লেবুগাছের ডগা, কিংবা ঝিঁঝিঁর ডাক, সবকিছুই হতে পারে আনন্দের কারণ। শুধু শিখতে হবে উপভোগ করতে।
জাহ্নবী বড় করে শ্বাস নিলো। উনাইসা এসে দাঁড়াল ওর পাশে, 'আন্টি এখানে কী করছো?'
'কিছু না।'
'আন্টি, মামা কি তোমার বয়ফ্রেন্ড?'
জাহ্নবী চমকে উঠে উত্তর দিলো, 'না তো। শুধু বন্ধু।'
'শুধু বন্ধু? কিন্তু আমার তোমাদের দেখে মনে হচ্ছে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড।'
'কেন এমন মনে হচ্ছে?'
'এইযে এখানে একাকী দাঁড়িয়ে কথা বলছো। বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড ছাড়া কেউ একাকী দাঁড়িয়ে কথা বলে?'
জাহ্নবী মুচকি হেসে বলল, 'বলে। তুমি হয়ত জানো না। তোমার মামা খুব ভালো মানুষ। ওর সঙ্গে আমার অফিসে পরিচয় হয়েছে। আমরা বন্ধুর মতো গল্প করি। এর বেশী কিছু না।'
'আচ্ছা। আমার বয়ফ্রেন্ড আছে। ওকে দেখতে চাও?'
'তাই? হ্যাঁ দেখতে চাই।'
'রুমে আসো। তোমাকে গল্প বলি। আমাদের কীভাবে প্রেম হয়েছে। শুনবে?'
জাহ্নবী মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, 'হুম শুনবো।'
সারা রাত ধরে উনাইসার গুল্প শুনতে শুনতে ভোররাতে ঘুমাতে হল জাহ্নবীকে। উনাইসা মন খুলে কথা বলছিল। বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে ওর গল্প শুনতে বিভোর হয়ে উঠেছিল জাহ্নবী। পালিয়ে গিয়েছিল ঘুম। কিশোরী মেয়েটা তার বয়সী একজনের সাথে মন খুলে কথা বলছে, এটাই অবাক করছিল জাহ্নবীকে।
সকালের নাস্তা খাওয়ার পর সারল্য'র পরিবার ও জাহ্নবী ঘুরতে বের হল। ইমতিয়াজ মামা নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ি থেকে কাছেই যে চা বাগানটা আছে, সেখানে যাবেন। টি এস্টেটের ম্যানেজার মামার পরিচিত।
থরে থরে সাজানো চায়ের বাগান দেখে মুগ্ধ হল জাহ্নবী। উজ্জ্বল সবুজ পাতাগুলো ওর ছুঁয়ে দিতে ভালো লাগছিল। দূর হতে তাকিয়ে দেখল সারল্য তার মাকে জড়িয়ে ধরে হাঁটছে। মানুষটার মনটা এত ভালো! মুহুর্তের জন্য ওর ভেতর ইচ্ছে জাগে জনম জনমের জন্য এমন একটা মানুষের সাথী হয়ে যেতে। পরক্ষণেই একটা নিশ্বাস ফেলল সে। শার্লিন পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
জানতে চাইলো, 'তুমি বিয়ে করোনি কেন?'
জাহ্নবী সংকোচ বোধ করে। উত্তর না চুপ থাকাটাও বেয়াদবি হয়ে যায়। নিতান্তই দায়সারা উত্তর দিলো সে, 'একটা বয়স পর্যন্ত বিয়ের প্রতি আগ্রহই ছিল না।'
'আর এখন?'
জাহ্নবী চমকে উঠলো, 'এখন শুধু আগ্রহ না, বিশ্বাসও এসেছে। এই সম্পর্কটার চাইতে হয়তো সুন্দর কোনো সম্পর্কই হয় না।'
'এমন বিশ্বাস আসার কারণ কী? যেখানে বিয়ের প্রতি আগ্রহই ছিল না তোমার? শুনেছি মানুষের আগ্রহ তখন চলে যায়, যখন বিয়ের পরের বাস্তবতার মুখোমুখি হয়।'
'মানুষ তো আপু, জীবনে একজন সঙ্গীর প্রয়োজন অনুভব হবেই। এই অনুভূতিটা আগে ছিল না। এখন বয়স বাড়ছে তাই প্রয়োজন মনে হচ্ছে। আর একইরকম ভাবে কতদিন বাঁচা যায়? দিনশেষে একটা সুন্দর সংসারের স্বপ্ন সবাই দেখে।'
শার্লিন খানিক্ষণ জাহ্নবীর দিকে চেয়ে থেকে বলল, 'আচ্ছা, সংসারের স্বপ্ন শুধু মেয়েরাই কি দেখে? ছেলেরা দেখে না?'
'জানিনা।'
'ছেলেরাও দেখে। আমার ভাইও স্বপ্ন দেখেছিল। ও অনেক সংসারী মাইন্ডের ছেলে। ছোটবেলা থেকেই মায়ের পাশে থাকে, মাকে হেল্প করে। সংসারের বিষয় গুলো বোঝে। কিন্তু ওর জীবনে সংসার হল না। এখন ও আর সংসারে বিশ্বাস করে না।'
জাহ্নবী চুপ করে রইল। শার্লিন উদাস গলায় বলল, 'তোমার যে বোধ হয়েছে, তাতে বাকি জীবনটা খুব সুখে থাকবে তুমি। কিন্তু যাদের উল্টোটা হয়, এরা কোনোদিন সংসারে সুখী হয় না।'
'যেমন আপনার ভাই?'
শার্লিন চমকে উঠলো। এমন প্রশ্ন সে আশা করেনি। জাহ্নবী'র চোখে চোখ রেখে শুধু বলল, 'ওকে আমি সুখী দেখতে চাই। এভাবে জীবন কেটে যেতে পারেনা।'
জাহ্নবী ভদ্রতাসূচক হাসলো। আর কোনো কথা হলো না তাদের। বাগানের এক প্রান্তে মালীরা চা পাতা তুলছে। জাহ্নবী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল সেই দৃশ্য। মনে হচ্ছে তারা শুধু চা পাতা নয়, স্বপ্ন জমাচ্ছে ঝুড়িতে। অথচ নিতান্তই ছোট্ট ছোট্ট সেই স্বপ্নগুলোও পূরণ হয়না ওদের!
দু দিনের সফর শেষ করে ঢাকায় ফিরলো ওরা। ফেরার পরদিন রাতেই সারল্য'কে ডেকে নিলেন ওর মা। পাশে বসিয়ে বেশ কোমল গলায় জানতে চাইলেন, 'নানুবাড়ি ঘুরে এসে কেমন লাগছে তোর বাবা?'
'ভালো মা। মনটা ফ্রেশ হয়েছে।'
'জাহ্নবীও খুব মজা করেছে। মেয়েটার সঙ্গে দু তিন দিন থেকেই আমার এমন মায়া পড়ে গেল, বারবার ওর কথা মনে পড়ছে।'
'তাই? এরকম হয়। জাহ্নবী অনেক ভালো মেয়ে। তোমাকে খালা বলে ডাকে এজন্য হয়ত আরও বেশী মায়ায় পড়েছো।'
'তুই ওকে নিয়ে আয় না বাবা। কালকেই নিয়ে আয়।'
'কালকেই? অফিসে ছুটি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল। এরমধ্যে আবার কাল আসতে বলবো?'
'তাও ঠিক। কিন্তু আমার যে ওর কথা খুব মনে পড়ছে। তুই ওকে বল কাল রাতে আমাদের বাসায় খেতে। অফিস থেকে সোজা এখানে আসবে। রাতে খেয়েদেয়ে কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে তুই ওকে রেখে আসবি।'
সারল্য মায়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, 'আচ্ছা মা ঠিক আছে। আসতে বলবো। খুশি?'
মা খুশি হলেন। কিন্তু খুশি হওয়ার কারণটা শুধু জাহ্নবী আসবে বলে নয়। তিনি জাহ্নবীকে আরও একটু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে চান। দুদিনেই মেয়েটার সম্পর্কে ভালো ধারণা রপ্ত করে ফেলেছেন। আদব কায়দা, আচরণ, জ্ঞানে, বুদ্ধিতে সবদিক থেকেই মেয়েটা আদর্শ। তার ছেলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে কী না সেটা এখনো বুঝতে পারছেন না। তাছাড়া আগের পুত্রবধূকে তিনি অতটা আদর ভালবাসার সুযোগ পান'নি। মেয়েটা সারাক্ষণ দূরত্ব বজায় রেখে চলতো। কখনো মেয়ে হয়ে উঠতেই পারেনি। তাই এবার যেন মেয়ের মতো একজন তার ঘরে আসে, যে তার দিকে খেয়ালও রাখবে। জাহ্নবী এতটা সংসারী কী না সেটাও দেখতে চান তিনি।
পরেরদিন জাহ্নবী সারল্য'র মায়ের জন্য রসমালাই আর একটা চাদর নিয়ে এলো। কী মনে করে যেন শাড়িও পরে ফেলল সে।
অফিস থেকে সারল্য তাকে রিসিভ করার সময় শাড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখে খানিকটা অবাক হয়ে জানতে চাইলো, 'আজকে দাওয়াত উপলক্ষে শাড়ি নাকি?'
'বলতে পারেন।'
'তাহলে মাকে বলি প্রতিদিন দাওয়াত দিতে?'
সারল্য'র কথা শুনে শব্দ করে হেসে উঠল জাহ্নবী। আজ শাড়ি পরতে আরাম লাগছে। মনে হচ্ছে তাকে খুব সুন্দর আর পরিপাটি দেখাচ্ছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে তার।
রাতের খাবার খেয়ে অনেক্ষণ সে সারল্য'র মায়ের সঙ্গে গল্প করলো। রাতে তাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেল সারল্য। ক্লান্তিতে ও ঘুমে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছিল বলে শাড়িটা কোনোমত খুলে রেখেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো জাহ্নবী।
তারপর কেটে গেল অনেক গুলো দিন। ভায়োলেটের ব্যবসার শুরুটা হল খুব গুছিয়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই ক্লায়েন্টদের এত বেশী ভালবাসা প্রাপ্তির উচ্ছ্বাসে চাকরিটা ছেড়েই দিলো জাহ্নবী। সে এখন জানপ্রাণ দিয়ে ব্যবসার হাল ধরতে চায়। এরমধ্যে টুকটাক করে এগিয়ে চলেছে নাদির স্যারের বিজনেসটাও। সেখানেও প্রায়ই উপস্থিত হতে হয় জাহ্নবীকে। গুরুত্বপূর্ণ মিটিং গুলোতে মতামত দিতে হয়, কাজ করতে হয় ঘরে বসে। কোনো কোনো দিন কাজের ফাঁকে সারল্য'র সঙ্গে চা খাওয়া আর খুচরো আলাপ, তবে সারল্য কেমন যেন বদলে গেছে। আগের মতো কথা বলে না তার সাথে। জাহ্নবী'র মাঝেমাঝে আক্ষেপ হয়। তবে আক্ষেপ ধরে রাখার সময় পায় না। খুবই ব্যস্ত সময় কাটছে তার। নবজাতক শিশুর মতো পরম যত্নে ব্যবসাটাকে গড়ে তুলতে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করছে সে।
তবে হাল ছেড়ে দেননি সারল্য'র মা। তিনি এতদিন ধরে রোজ সারল্য'কে বুঝিয়ে যাচ্ছেন কেন তার বিয়েটা করা উচিৎ, আর কেন জাহ্নবীকেই করতে হবে। সারল্য মায়ের কথা নিরবে শুনে যায়। কখনো রাগ করে উঠে যায় কথার মাঝখানে। কখনো বা উত্তর দেয়, আমি আর বিয়ে করবো না মা। আমাকে এ ব্যাপারে বোলো না প্লিজ।
নাদিরের প্রথম প্রজেক্ট সফলভাবে শেষ হওয়ায় ছোটখাটো সেলিব্রেশনের আয়োজন করেছে। মাত্র জন ছয়েক কাছের বন্ধুরাই এসেছে শুধু। খাওয়াদাওয়া শেষ করে সবাই যখন উঠে চলে গেল, রেস্টুরেন্টের ছাদের এক কোণায় এসে দাঁড়াল জাহ্নবী। আজকাল এত ব্যস্ত সময় কাটছে তার, বুক ভরে শ্বাস নেয়াই হয়না। এখানে দাঁড়িয়ে কয়েকবার বড় বড় শ্বাস নিলো সে। বারো তলা বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে পরিচিত শহরটাকে দেখতে লাগল।
সারল্য কখন পাশে এসে দাঁড়িয়েছে খেয়াল করেনি সে। সারল্য'র কথায় চমকে উঠলো, 'এই ইট পাথরের শহর ছেড়ে দূরে চলে যেতে ইচ্ছে করে না?'
জাহ্নবী মিষ্টি হেসে উত্তর দিলো, 'না, করে না। এখানে আমার অনেক কাজ বাকি।'
'আজকাল কাজের ভেতর ডুবে আছেন। বেশ ভালো।'
'ছোটবোন ভরসা করে দায়িত্ব দিয়েছে। তাছাড়া আমার এই ছোট্ট স্টার্টআপটাকে এখন নিজের বাচ্চা মনে হয়। আমি এটাকে ছাড়তে পারবো না কখনো।'
'আমায় বিয়ে করবেন জাহ্নবী?'
প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে সারল্য'র মুখের পানে তাকাল সে। বিশ্বাস হতে চাইল না, এইমুহুর্তে ঠিক কী শুনেছে সে! তার মুখভঙ্গির দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। চোখের পলক পড়ছে না ক্ষণিকের জন্য। সে স্থিরচোখে সারল্য'র নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়েই রইলো।
সারল্য আবারও বলল সেই স্বপ্নময় বাক্যটা, 'আমায় বিয়ে করবেন?'
স্তব্ধ জাহ্নবী ধীরেধীরে চোখ বন্ধ করে ফেলল। তার মনে হচ্ছে চোখ খুললেই দেখবে সারল্য নেই। সবটাই স্বপ্ন। কিন্তু না, চোখ মেলে সে দেখল সারল্য তার উত্তরের অপেক্ষায়।
.
.
.
চলবে....................................................................