প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল - পর্ব ৪৭ - নাবিলা ইষ্ক - ধারাবাহিক গল্প


সদরঘাট। সাব্বির শেখ সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন একটি তিনতলা সাদা লঞ্চের সামনে। শ্যাম বর্নের বেঁটেখাটো লোক। গম্ভীর মুখশ্রীর অধিকারী। কন্ঠের স্বরও ভদ্রলোকের গম্ভীর। মুখ জুড়ে দাঁড়ি। ঢিলাঢালা প্যান্ট-শার্ট পরে আছেন। তার সামনে দাঁড়িয়ে ছেলে রুস্তম। চোখমুখে ভয়ার্ত'তা লেপ্টে। আঁড়চোখে নিজের বাবার দিক তাকাল। সাব্বির সাহেব অন্ধকার মুখে বললেন, 'এতগুলা ছেলেপেলে, মাইয়ালোক মিল্লা জাইতাছ বাজান। কোনো আকাম-কুকাম কইরা এই বাপের মুখে চুলকানি মাইখা দিও না।'
'কি যে বলোনা। সবাই বিবাহিত আব্বা। কী হইবো! আর এখানে কেউ পোলাপান না। সবাই ত্রিশের উপরে।'
'ওইযে পুচকে মাইয়াডা। ওইডাও ত্রিশের উপরে? বাপেরে কি খুকি পাইয়া নিছো? ওইঠা কেডা? একটুখানি মাইয়া। মনে হয় উর্ধ্বে গেলে ক্লাস টেনে পড়ে। এই মাইয়া কই যায়?'
'অতটাও ছোট না আব্বা। অরু অনার্সে উঠবে এইবার। তন্ময়ের বউ। বুঝছ? গেজাও কম।'
'কি কইলি বান্দির পো। আমি গেজাই?'
'আরে আব্বা! আমি তো এম্নেই বলতাছি।'

রুস্তম আলগোছে সরে দাঁড়ালো কানে থাপ্পড় পড়ার আগে। তার বাবার স্বভাব ভালো না৷ হাতের কাছে পেলেই চড় দিয়ে বসে৷ এতো বড়ো ছেলে সে।অল্প বয়সে বিয়ে হলে পোলাপান থাকতো দশ বছরের। অথচ তার বাবার বোধগম্য নেই৷ দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুস্তম হাতে মাইক নিল। সেখানে মুখ লাগিয়ে উচ্চস্বরে চেঁচাল, 'সবাই ল্যাগেজ নিয়ে উঠে পড়৷ কাউন্টার থেকে ক্যাবিনের চাবি সঞ্চয় করে নে। লঞ্চ ছাড়া হবে এগারোটা বিশে। বাকি কথা হবে ভেতরে।'

নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাবে মোট চল্লিশজন৷ সবগুলো একই ব্যাচের। তবে তেমন কাছের নয় অনেকেই। এই কয়েকবার একসঙ্গে বসে চা-পানি খাওয়া হয়েছে হয়তো। বা হুট করে ক্যাম্পাসে দেখা হয়েছে। সঙ্গে হায়-হ্যালো করে নিলো। এমন! তবে এই চল্লিশজনের মধ্যে, বন্ধুবান্ধবদের আলাদা বিভাগ রয়েছে। বড়ো, ছোটো দল বেঁধে থাকে একেকজন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বন্ডিং এবং বড়ো দল তন্ময়দের। ছেলেমেয়ে মিলিয়ে তারা চৌদ্দজন বন্ধুবান্ধব। সেসময় ভার্সিটিতে রাজ করে বেরিয়েছে একসাথে। ক্যান্টিনে কাঁধে কাঁধ ঘেষে আড্ডা দিয়েছে কতশত বার। ক্যাম্পাসে পা দুলিয়ে বসে জমবেশ চায়ের কাপে চুমুক বসিয়েছে। খুব সুন্দর অমায়িক স্মৃতি সেসব। এখনো সপ্তাহে একবার হলেও রেস্তোরাঁয় আড্ডা বসায় সকলে মিলে। নাহলে হুটহাট কল করে কথা বলে সীমাহীন।
বন্ধুদলের সবথেকে শান্তশিষ্ট গম্ভীর তন্ময়কেও আসতে বাধ্য হতে হয়। না আসলে দেখা যাবে তন্ময়ের অফিসে চলে এসেছে সবগুলো। সেই কী তুলকালাম দৃশ্য সৃষ্টি করবে, তা না ভাবাই উত্তম! 

অরু তন্ময়ের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। একপ্রকার লেপ্টে আছে সে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের চিহ্ন। নাকের ডগায়ও খানিক ঘাম ফুটে আছে। তন্ময়ের হাত অরুর কাঁধে। শক্ত করে ধরে আছে। অন্যহাতে ল্যাগেজ। খুব কোলাহল চারিপাশে। তাদের সামনে সাব্বির সাহেব। তন্ময় হেসে সামনাসামনি দাঁড়ালো। সালাম জানালো। সাব্বির সাহেব গম্ভীরমুখের একটু পরিবর্তন এলো। তিনি তন্ময়ের পাশে থাকা একটুখানি অরুকে দেখে নিলেন। গম্ভীর স্বরে শুধালেন 'নাম কী?'

অরু ভয় পেল। দুরুদুরু কাঁপতে থাকা বুক নিয়ে বলল,'আরাবী।'
'বংশ নাম?'
'আরাবী শাহজাহান।'

সাব্বির সাহেব থমকে গেলেন। পরপর ধমকে উঠলেন, 'ওই মাইয়া! জামাইর বংশের নাম কইবা কেন? আমাগো ধর্মে তো এইটা নাই। তুমি কইবা তোমার আব্বার বংশের নাম। বুঝলা?'

অরু কাচুমাচু ভঙিতে তন্ময়ের আরও পেছনে চলে গেল। ভয়ে তার রুহ উড়ে যাবার যোগাড়। এতবড় ধমক তো তাকে তন্ময়ও দেয়নি কখনো। অন্যদিকে তন্ময় হেসে উঠলো। শব্দময় উজ্জ্বল, উচ্ছ্বাস হাসি। রুস্তম পাশেই ছিলো। সে তার বাবার উদ্দেশ্যে অতিষ্ট স্বরে বলল, 'চাচাতো ভাইবোন এরা। ওর আব্বার বংশের নামই বলছে। এখন তুমি যাও আর দাঁড়ায় থাকিও না। মেলা রাত হইছে।'

সাব্বির সাহেব আঁড়চোখে অরুকে আরেকটি বার দেখে নিলেন, 'ওহ! পারিবারিক মনে হয়। ভালোই। মিল্লা-মিশ্যা থাইকো। ঝগড়াবিবাদ কইরো না।সাবধানে যাও। আগাও... '

তন্ময় ভয়ার্ত অরুকে নিয়ে সামনে অগ্রসর হলো। লঞ্চে উঠতে নিয়ে থমকে দাঁড়ালো। মাথা নত করে প্রশ্ন করলো, 'কিছু খেতে ইচ্ছে করছে? নিয়ে নিব এখান থেকে কিছু?' 
' লাগবে না। আমি সব নিয়েছি।'

অরু নিজের ফুলোফুলো ব্যাগটা দেখাল। সত্যিই সে দুনিয়ায় সব নিয়ে নিয়েছে। খাবার থেকে ধরে চা'টাও নিয়েছে ফ্ল্যাক্সে। মোট দুটো ফ্ল্যাক্স। অন্যটায় গরম পানি। তন্ময়ের জন্য কফি বানাতে হয় কি-না! সুমিতা বেগমও অনেকরকম খাবার প্যাক করে দিয়েছেন। জবেদা বেগম পিছু নেই। এতসব খাবার দিয়েই মুলত ব্যাগ ভর্তি। তাই তার কাপড়চোপড় তন্ময়ের ল্যাগেজে নিতে হয়েছে। 

মাহিন তন্ময়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তারা এখন লঞ্চের ভেতর। সিঁড়ির সামনে, দোতলায় উঠবে। মাহিন তন্ময়ের কাঁধ জড়িয়ে বলল,'মাম্মা দেখ পোলাপান কেম্নে লাইন মারতেছে! আইজকা তুফান ছুটব ক্যাবিনে। ওই দেখ ফয়সালরে। শালায় একটু আগে শীলার সাথে ফষ্টিনষ্টি করল। এখন আবার সাথীর সাথে। ছ্যাহ!'

রিহান তাচ্ছিল্যের সুরে বলল, 'অবিবাহিত গুলা মুলত লাইন মারতে আইছে।'

পাশে দাঁড়ানো অবিবাহিত মাহিন ছোট চোখে তাকাল। রিহান লাজুক হেসে সরে গেল। অযুহাত সরূপ শুহানিকে কাজে লাগালো। মুলত তার নাম ডাকতে ডাকতে হাঁটা ধরেছে। নাহলে মাহিন উল্টাপাল্টা কিছু একটা বলে 'দিবে। ছেলেটার মুখে একদম লাগাম নেই।

রুস্তম দৌড়ে এসেছে। হাতে চাবি। মোট তেরোটা। সম্পুর্ন দোতলার ক্যাবিন গুলো নিয়েছে তারা। সিরিয়াল সমেত। একেকজনের হাতে চাবি ধরিয়ে দিল। বলে গেল লঞ্চ ছাড়বে কিছুক্ষণের মধ্যেই। ডিনার করলে নিচ তলায় চলে যেতে। খাবার ব্যবস্থা আছে। চা-পানির স্টল খোলা আছে প্রয়োজনে। 

তন্ময়ের ক্যাবিন নাম্বার সাতাশ। বড়ো লাক্সারিয়াস খোলামেলা ক্যাবিন। অরুর মস্তিষ্ক জ্বলতে শুরু করেছে। এতক্ষণ মাথায় আসেনি। দুজন একসাথে থাকবে? বুকের ভেতর তোলপাড় মুহুর্তে শুরু হলো। গলাটা শুকিয়ে কাঠকাঠ হয়ে গেল। তন্ময় ব্যস্ত পায়ে পুরো ক্যাবিনে পা চালালো। ল্যাগেজ পাশে রেখে সোফায় বসলো। সামনে টিভি স্যাট করা। একটা মিনারেল ওয়াটার বোতল রাখা টি-টেবিলে। সেটা হাতে নিল। ঢাকনা খুলে ঢকঢক শব্দে খেয়ে নিল। অরু তখনো চুপসে দাঁড়িয়ে। তন্ময় ভুরু উঁচু করলো, 'কী?'

অরু মাথা দোলাল। কিছুই হয়নি। তবে কিছু একটা সে ঠিকই অনুভব করছে। বলার সাহস নেই। ধীর পায়ে বিছানার একপাশে বসলো। কি করবে? আঁড়চোখে তন্ময়কে দেখল। তন্ময় ব্যস্ত হাতে মোবাইল টিপছে। খুব মনোযোগ! অরু ভাবলো সে কী ড্রেস পরিবর্তন করবে? নাকি এভাবেই থাকবে। সে তো লঞ্চ ছাড়ার সময়টা দেখতে চায়। তা কী বলবে মুখ ফুটে? 
__________
অয়ন গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে একটানে। পাশে বসে থাকা শাবিহার দিক ফিরে তাকাচ্ছে না। সম্পুর্ন ধ্যান সামনে। গম্ভীর করে রেখেছে মুখশ্রী। শাবিহা শতাংশ বার বলেছে গাড়ি থামাতে। কে শুনে কার কথা! অয়ন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাল না। গাড়ি অলরেডি শহরের বাইরে চলে এসেছে। আশেপাশের সবকিছু শান্ত এবং নির্জন। গাছপালা দু'দিকে সমানতালে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। আকাশে গোলাকার চাঁদ। উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গাড়ি থেমেছে। সামনে বড়ো পুকুর। ঘাষের মেলা। হিমশীতল বাতাস। কাঁচ নামানো। অয়ন চোখবুঁজে মাথা স্টেরিংয়ে রেখেছে। শাবিহা আঁড়চোখে তাকাল। জড়তার কারণে ভালোভাবে 
অয়নকে দেখতে অবদি পারেনি। কতটা অনুভব করেছে জানে? কতটা হৃদয় ব্যাকুল ছিল জানে? জানে না। শাবিহা জানতেও দিবে না। 

অয়ন মাথা ওঠাল। চুলগুলো কপাল থেকে দু'হাতে উপরে উঠিয়ে দিল। তাকাল শাবিহার দিক। মুহুর্তে চোখাচোখি হলো। শাবিহা নজর ফিরিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে তাকিয়ে। অয়ন হাত বাড়িয়ে শাবিহার থুতনি চেপে ধরলো। মুখটা নিজের দিক ঘুরিয়ে নিয়েছে। কিছুটা শক্তি প্রয়োগ করেছে সে। চোখ জোড়া লাল। শুকনো ঠোঁট। নিজেকে ঠান্ডা করার আপ্রান চেষ্টা। স্বাভাবিক স্বরে প্রশ্ন করার অসম্ভব প্রচেষ্টা, 'মিস করেছেন আমাকে?'

সেই আপনি সম্বোধন। শাবিহার এখনো স্পষ্ট মনে আছে, এই হুট করে আপনি সম্বোধন করার কারণ। তার উপর অতিরিক্ত অভিমান হলেই আপনি বলতে থাকে। আর তা তীরের ন্যায় ছুটে লাগে তার বুকে। রক্তাক্ত করে দেয় ভেতরটা। শাবিহা মুখটা সরাতে চাইল। পারলো না। অয়ন দ্বিতীয় বার প্রশ্ন করলো না। তবে উত্তরের আশায় ঝুকে রইলো। জবাব শোনার জন্য ব্যকুল সে। শাবিহা জবাবে অন্যকিছু বলতে চাইল, 'বাসায় যাব। গাড়ি ঘুরা....'

অয়নের ঠোঁট শব্দ করে ছুয়ে গেছে শাবিহার ঠোঁট। গাঢ় চুমু দিয়ে বলল, 'জবাব শুনতে চাই। অন্যকোনো কথা নেই। বলুন শাবিহা। ডিড ইউ মিসড মি?'

শাবিহা চোখ রাঙিয়ে তাকাল। রাগান্বিত হবার চেষ্টা। তবে সত্যি বলতে অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই অনুভব করতে পারছে না সে৷ রাগ তো ভুলেও নয়। অয়নের প্রতি বিন্দু পরিমাণ রাগ নেই। আছে সীমাহীন ভালোবাসা, অনুভূতি আর ব্যাকুলতা। অয়ন থুতনি ছেড়ে দিল। দু'হাতে শাবিহাকে বুকে টেনে নিল। শক্ত করে চুমু খেল কপালে। কন্ঠের স্বর কাতর শোনালো, 'খুব মিস করেছি। রাতভর ঘুমাতে পারিনি। তোমাকে ছাড়া ভালো নেই। একটুও না। আমার সাথে এমন করো না শাবিহা। আমি শান্তিতে বাঁচতে পারবো না।'

শাবিহার কঠোর করতে চাওয়া হৃদয় মুহুর্তে গলে গেল। ছিন্নবিচ্ছিন্ন ভঙ্গিতে ছটফট করতে লাগল। হাত দুটো অয়নকে জড়িয়ে ধরার জন্য ব্যাকুল। চোখের কোণ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল আনমনে। অয়ন মাথা এগিয়ে এনে তাকাল। ডান হাতে মুছে দিল চোখের জল। চুমু খেল চোখে, 'আমি জানি আমাকে মিস করেছ। খুব কেঁদেছ। একদম ভালো ছিলে না। আমিতো আমার শাবিহাকে চিনি।'
'কেন এলে আবার? আমি কী করবো!'
'কিচ্ছু করতে হবে না। সব আমি করবো। সবকিছু ঠিক করবো। কাঁদে না।'

অজস্র ক্ষুদ্র চুমুতে রাঙিয়ে দিল শাবিহার মুখশ্রী। ব্যাকুল হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটাতে বুকে টেনে নিচ্ছে একটু পরপর। শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে। মাথায় হাত বুলিয়ে চুলগুলো গুছিয়ে নিয়েছে। সেই কী আদুরে অনুভূতি। 
_________
অরুকে বলতে হলো না নিজের ইচ্ছের বিষয়টি। তন্ময় নিজেই বলেছে অরুকে ফ্রেশ হয়ে নিতে। ছাদে যাবে তারা। লঞ্চ ছাড়বে একটু পর। বাতাস উপভোগ করবে বসে। সেখানে সিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অরু দ্রুত পায়ে ফ্রেশ হয়ে ফিরেছে। চুল ঝুটি করে নিয়েছে। তন্ময় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে। অরুকে দেখতেই বলল, 'ইয়ারফোন নিয়ে আয়।'

অরু ছুটে গেল ভেতরে পুনরায়। ল্যাগেজ খুলে ইয়ারফোন নিল। দ্রুত পায়ে তন্ময়ের সামনে দাঁড়ালো। ইয়ারফোন এগিয়ে দিল। চোখমুখে আগ্রহ। তন্ময় নিজের ফোনে ইয়ারফোন স্যাট করলো। একটা হিন্দি গান ছেড়ে দু'কানে ঢোকাল। সাউন্ড মেপে অরুর দু'কানে ঢুকিয়ে দিল। তীব্র শব্দ। অরু বোকার মতো তাকিয়ে। তন্ময় ধমকের সুরে বলল, 'ভুলেও ইয়ারফোন কান থেকে সরাবি না। মনে থাকবে?'

অরুর চোখমুখ বিরক্তিতে ভরে গেল। অসহ্য! কানে ইয়ারফোন রাখতে হবে কেন? সেভাবেই তন্ময়ের সাথে বেরোলো। সামনে রিহান আর শুহানি দাঁড়িয়ে। তর্ক করছে। মাহিন ফোনে কথা বলছে। ধীরে তারা এগোচ্ছে সিঁড়ির দিক। ছাঁদে উঠবে। রিহান দুষ্টু স্বরে বলল, 'একটা জিনিস খেয়াল করেছিস তোরা?'

সৈয়দ শুধালো, 'কী?'
'তন্ময়ের বিয়ের পরের ট্রিপ এটা। সাথে বউ। মনে হচ্ছে না হানিমুনে বেরিয়েছে।'

মাহিন ফোন রেখে এগিয়ে আসলো , 'দ্বিতীয় হানিমুন হবে এটা। প্রথমটা তো চট্টগ্রামে সেড়ে ফেলেছে নিশ্চিত। নারায়ণগঞ্জ হবে দ্বিতীয় হানিমুন। বাই দা ওয়ে দোস্ত, প্রিপারেশন কেমন?'
'মানে কনড....'

শুহানি ধমকের সুরে বলল, 'থামবি? অরু এখানেই। বাচ্চা মেয়ে একটা!'

এইমাত্র সকলে খেয়াল করলো অরু ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে। চোখমুখে লজ্জার ছিটেফোঁটাও নেই। পরপর দেখল মেয়েটার কানে ইয়ারফোন। হাতে সেলফোন। মাহিন বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। রিহান আওড়াল, 'মেয়েটাকে পাকতে দিবে না বলে শপথ নিয়ে রেখেছে তন্ময় চাচা! একটু চালাকচতুর হতে হয়। কিছু-মিছু জানতে তো হইব।'

তন্ময় হাসলো। স্মিথ হাসি। অনিমেষ ভঙ্গিতে বলল, 'জানতে হবেনা। এভাবেই পারফেক্ট।'
.
.
.
চলবে................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন