আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অলকানন্দা - পর্ব ৪৭ - আনিকা রাইশা হৃদি - ধারাবাহিক গল্প

!!১২২!!

সার্থক বাসায় নেই। আজ দিনটা বেশ রৌদ্রজ্জ্বল ছিলো। একেবারে কাঠফাটা রোদ গিয়েছে আজ। এমন দিনে মন কেমন করে। গরম হাওয়ায় মন দোলে। বোধ জাগে হয়তো ঘটবে কোনো অশোভন ঘটনা। সারাদিনে অবশ্য তেমন কিছুই ঘটেনি। এখন সন্ধ্যে গিয়ে রাতের আর্বিভাব। মাহার শরীরটা আজকাল বেশি একটা ভালো যাচ্ছেনা। খাবারে বেশি রুচি নেই। সাঁওতাল পল্লি থেকে তারা বাড়ি ফিরেছে আজ মাসখানেক হতে চললো। মাহার দিনগুলো ভালোই কেটেছে। পাহাড়ের মনোরম নয়নাভিরাম, প্রিয় মানুষটার গভীর ভালোবাসা। সব চাইতে বড় কথা ডেভিড বাসায় আসেনা। মাহা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ায়। নাহার অবশ্য সঙ্গে থাকে। ম্যাম এটা করবেন না ওটা করবেন না। এখানে যাবেন না ওখানে যাবেন না। সবকিছুতে বাঁধা। মাহা ভ্রু কুঁচকায়। বিরক্ত হয়। অদ্ভুত তো! মনিব কে আর কর্মচারী কে মাহা যেন গুলিয়ে ফেলে। সার্থক স্যার মানা করেছেন এই তার একমাত্র অজুহাত। এই তো সেদিন মাহা বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত গ্যারেজের মতো জায়গাটায় যেতে চাইলো। কোথ থেকে দৌড়ে এসে নাহার চিৎকার দিয়ে বললো, 'ঐদিকে যাবেন না। সাপ আছে।' অগত্যা মাহাকে ফিরে আসতে হলো। শরীরটা ভিষণ ক্লান্ত লাগছে মাহার। নাহারকে দুবার ডেকেছে একটু লেবু শরবত করে দিতে। কিন্তু কোনো সাড়া নেই। মেরির কি যেন হয়েছে। কথা বলেনা। প্রশ্ন করলে জবাব দেয় না। তাই মাহাও আর আগ বাড়িয়ে কিছু জিজ্ঞেস করতে যায় না। নাহার কে আরেকদফা ডেকেও কোনো সাড়া পাওয়া গেলো না। মাহাকেই নামতে হলো নিচে। ডিএনএর ডাবল হেলিক্স সূত্রের ন্যায় প্যাঁচানো সিড়ি। ঘুরে ঘুরে নামতে হয়। মাহা এক পা এক পা করে এগুচ্ছে। নিরব চারপাশ। হলদে বাতির টিমটিমে আলো। বাইরে একটা দাঁড়কাক ডাকছে বোধহয়। কা কা করে। বিচ্ছিরি আওয়াজ। মনে হলো পিছনে কেউ আছে। মাহা মাথা ঘুরিয়ে পিছনে চাইলো। উঁহু, নেই। আবারো হাঁটছে মাহা। একপা একপা করে সিঁড়ি ডিঙিয়ে নিচে নামছে। কেউ একজন আছে পিছনে। গা শিরশির করছে। মাহা এবার পায়ের গতি বাড়ায়। সেই সাথে পিছনের মানুষটার পায়ের গতিও বাড়ে। মাহা ভয় পায়। পিছনে তাকানোর নিয়মটা সে ভুলে গিয়েছে। অর্থাৎ কি করে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে চাইতে হয় তার মস্তিষ্ক মনে করতে পারছেনা। সেই সাথে গলার স্বরযন্ত্রও শত্রুতা শুরু করেছে। স্বর তৈরি করার নিয়ম ভুলে বসেছে। চিৎকার করতে পারছেনা মাহা। হাত পা কাঁপছে। প্যাঁচানো সিঁড়িটার প্রায় শেষপ্রান্তে মাহা। হঠাৎ তীব্র ধাক্কা লাগলো পিঠে। কিন্তু মাহা পড়ে যায়নি। সে শক্ত করে সিঁড়ির কাঠের বেষ্টনী ধরেছিলো। এখনো সে পিছনে ফিরে তাকায়নি। কিন্তু বুঝতে পারলো হয়তো হামলা হবে। অনুভব হলো তেমনই। দিশেহারা হয়ে মাহা ডানপাশে গলিতে ছুটে গেলো। অন্ধকার এপাশটা। পিছনের ব্যাক্তিটাও আসছে পিছুপিছু। এই গলিটাতেই রাতুল বসে কান্না করছিলো। সেদিন যে মাহা এসেছিলো। এরপরে আর এখানে আসা হয়নি। এখানে না একটা দরজা দেখেছিলো মাহা? পিছনের ব্যাক্তি ক্রমশ এগিয়ে আসছে। মাহা অন্ধকারেই গলির দেয়ালে দরজা খুঁজে চলেছে। শরীর কাঁপছে তার। ব্যাক্তিটা এগিয়ে এসেছে। দরজাটা খোলাই ছিলো। মাহা ভিতরে ঢুকে দরজা আটকানো কালে বিপত্তি বাঁধে। কেউ একজন দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করতে চাইছে। মাহা নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করছে। অবশেষে দরজা আটকাতে সফল সে। ঘরটায় বিদঘুটে অন্ধকার। কেমন এক ভ্যাপসা গন্ধ। হঠাৎ মনে হলো কি যেন একটা উড়ে গেলো সামনে দিয়ে। এদিকে দরজায় আঘাত করেই চলেছে কেউ। মাহা ধপ করে নিচে বসে পড়ে। বদ্ধ স্থানে দম আটকে আসছে তার। ক্লাস্টোফোবিয়ায় আক্রান্ত মাহা। বদ্ধ স্থানে উন্মাদের মত লাগছে তার। মাথা ঘুরছে। দরজায় আঘাতও কমে গিয়েছে। তবে এত চাপ নিতে না পেরে কোথায় যেন হারিয়ে যায় মাহা। 
____________

পাহাড়ের ধারে ইংলিশ তরুণীকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। দু'হাত বাঁধা, মুখ বাঁধা। চোখে বাঁচার আকুতি। সামনে দাঁড়িয়ে মাউথ অর্গান বাজাচ্ছে ছায়ামানব। বড়ই অদ্ভুত সুরে। তরুণী মুখে শব্দ করার চেষ্টা করছে। বিরক্ত হয়ে রক্তচক্ষু নিয়ে মেরির পানে চাইলো ছায়ামানব। হৃদয়ে হিম ধরানো চাহনি। তরুণী শব্দ করা বন্ধ করে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলো। পুরো নাম মেরি পারকার। চোখের সামনে ভেসে উঠলো অতীত। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ। নিজের দেশ ছেড়ে কানাডায় চলে আসা।জীবিকার তাগিদে ঘুরে বেড়ানো। এক রহস্যময় মানবকে মাঝরাতে খুঁজে পাওয়া। বিশাল এক গোষ্ঠীর সাথে পরিচিত হওয়া। অদ্ভুত খাদ্যের সন্ধান। মা'নু'ষের মাং'স। প্রথমে জোর করে এক টুকরো খাওয়ানো হয়েছিলো। বমি করতে করতে গলা দিয়ে র'ক্ত চলে এসেছিলো তার। তবে কেমন যেন নেশা ধরানো স্বাদ। মৃ'ত্যুর মুখে এসেও জিহ্বায় পানি চলে আসে মেরি পারকারের। আস্তে আস্তে আসক্তি। মাংসের বিনিময়ে কাজ। কত বছর কেটে গেলো। অতঃপর বাংলাদেশে আগমন। ডেভিড.. 
কিছু ভাবার পূর্বে নিজের শরীরে ধাক্কা অনুভব করে মেরি পারকার। সময় ফুরিয়ে এসেছে। শূন্যে ভেসে যাচ্ছে মেরি পারকার। হঠাৎ শরীরে আকস্মিক সংঘাত। চোখ বুজে আসে। অবসান ঘটে আরো একটা অধ্যায়ের। 
____________

অন্ধকার রাস্তা। মাহা হেঁটে চলেছে একমনে। দু'ধারে বন্য তরুর মেলা। হাঁটছে তো হাঁটছেই। রাস্তা ফুরোয় না। পাশ দিয়ে একটা ঘোড়া দৌড়ে যাচ্ছে। মাহা তাকায় এক পলক। কালো রঙের এক ঘোড়া। তার উপরে চৈতি বসেনা? সাদা শাড়ি পরে চৈতি মুখ অন্ধকার করে আছে। ছোঁয়ার আগেই কোথায় যেন মিলিয়ে গেলো সেই ঘোড়া সহ চৈতি। মাহা হাঁটছে। মিলিয়ে গেলো সব। ঢাকার এক ব্যস্ত রাস্তা। 'ভুট্টা, ভুট্টা, আফা ভুট্টা নিবেন?' হাঁক ছাড়ছে ভুট্টা বিক্রেতা। মাথার উপর কাক ডাকছে। কাঠফাটা রোদ। রাস্তার যানবাহনের বিকট শব্দ। একটা বাচ্চা কান্না করছে। তার মা তাকে থামানোর চেষ্টা করছে। আবার... 

আবার সব থমকে গেলো। বিশাল এক মাঠ। বালুর মাঠ। মাহা হেঁটে চলেছে। এখানে অবশ্য শব্দ নেই। আবছা আলো। মাহা সামনে চেয়ে থমকে গেলো। ম'র্গে দেখা চৈতির পা সামনের দিক থেকে উড়ে আসছে। কেবল ছি'ন্ন পা। দেহের অন্যান্য অংশ নেই। মাহা ভয় পেয়ে পিছনে ফিরলো সেদিক থেকেও একটা পায়ের খ'ন্ড আসছে। ডান বাম থেকেও। এবারে স্বরযন্ত্র কাজ করেছে। চিৎকার করছে মাহা। হঠাৎ কারো স্পর্শ পায় গালে।
.
.
.
চলবে...........................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।