অনুভবে - পর্ব ৩৩ - সিজন ২ - নিলুফার ইয়াসমিন ঊষা - ধারাবাহিক গল্প


ইনারা এবার দৌড়ে নিজের রুমে যেতে নিলেই সভ্য তার হাত ধরে নেয়। তাকে ফিরিয়ে নিজের দিকে ঘোরাতেই সর্বুপ্রথম তার চোখে পড়ে ইনারার কপালের সেলাইয়ে। সে আঁতকে উঠল, "তোমার কী হয়েছে? কপালে কী হয়েছে তোমার? ব্যাথা পেলে কীভাবে?" 

ইনারা খুঁজে পায় না কি বলবে। সত্যিটা সে বলতে চাচ্ছিল না। সভ্য অকারণে চিন্তায় পড়ে যাবে এজন্য। তাই একটি মিথ্যাই বানিয়ে বলতে হলো তাকে, "শুটিং এর একটা সিন শুট করতে যেয়ে লেগেছে।"
"শুট করতে যেয়ে? তারা নিজের এক্টরদের সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখে না? আমি এখনই রহমানকে ফোন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।"
সভ্য ফোন বের করে।রহমানকে কল দেবার পূর্বেই ইনারা তা ছিনিয়ে নেয়, "দোষ উনাদের ছিলো না। আমার ছিলো। জানেনই তো আমি কত ক্লামজি। আমার নিজের দোষেই ব্যাথা পেয়েছি।"
"তোমার কথার ধরণ আজ এত আজব লাগছে কেন?"
ইনারা মুখ ফুলিয়ে তার কপাল দিকে ইশারা করে। সভ্য ভ্রু কপালে তুলে বলে, "ব্যাথা পাওয়ায় তোমার কথার ধরণ আজব হয়ে গেছে?"
ইনারা মাথা নাড়ায়। সভ্য গভীর নিশ্বাস ফেলে মিনমিনে গলায় বলে, "মেয়েটা আস্তো এক পাগল। ওর সাথে থাকতে থাকতে আমিও একদিন পাগল হয়ে যাব।"
সে আবার ইনারাকে জিজ্ঞেস করে, "মেডিসিন নিয়েছ?"
"ছিঃ! মেডিসিন কে খায়? একটুও মজা না।"
"ঔষধ তোমার মজার জন্য দেয় নি। ব্যাথা ঠিক হওয়ার জন্য দিয়েছে।"
"ঠিক করার কিন্তু উপায় আছে।"
"কী?"
ইনারা ঠোঁটের উপর আঙ্গুল রেখে বলল, "কিসসি দিলে ব্যাথা কমে যাবে।"
সভ্য মুখ বানায়, "ব্যাথা লেগেছে কপালে, তোমার ঠোঁটে না। চলো চুপচাপ ঔষধ খেয়ে নিবে।"
ইনারা হাজার কান্নাকাটির ঢঙ করে কিন্তু এতে কোনো লাভ হয় না। সভ্য তাকে ঔষধ খাইয়েই ছাড়ে।
.
.
"আমি বুঝতে পারছি না ইনারা বিলাসবহুল এলাকায় প্রবেশ করলো কীভাবে? সে এলাকায় তো কেবল দেশের বড় বড় ধনীরা থাকে।" মুশতাক সাহেব বললেন। তিনি মিঃ হকের অফিসে বসে আছেন। আজ ইনারার পিছনে লোক লাগিয়েছিলেন তিনি। তার বাসার ঠিকানা জানার জন্য। কিন্তু কাজে দেয় নি। এর পূর্বেও কয়েকবার ইনারার ঠিকানা জানার জন্য লোক লাগিয়েছিলেন পিছনে। লাভ হয় নি।

মিঃ হক বললেন, "ওর কী আপনার ছাড়া কেউ আছে?"
"আছে এক পরিবার। কিন্তু তাদের কথা তো ইনারার জানে না। জানার কথাও না। আমি বাদে কেবল একজনই তাদের কথা জানে। সৌমিতা। ও কী..."
মিঃ হক কথা কেটে বললন, "না, সৌমিতার সাথে ইনারার কোনো যোগাযোগ নেই। ওর উপর আমার লোকের নজর থাকে চব্বিশ ঘণ্টা।"
"তাহলে ইনারা কীভাবে এত বিলাসবহুল জায়গায় থাকছে আমি বুঝতে পারছি না।"

দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে জোহান। কক্ষে মুশতাক সাহেবকে দেখেও না দেখার ভান করে। এবং তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে, "বাবা আমি কী শুনলাম? তুমি এই মিথ্যা বক্তব্য কেন দিলে? ইনারার তো সভ্যর যাওয়ার সাথে জড়িত না।"
"তুমি কী সব ভদ্রতা ভুলে গেছ? এক তো অনুমতি ছাড়া রুমে ঢুকেছ। এর উপর বড় কাওকে দেখেও তার সাথে কথা বললে না? এসব শিক্ষা দিয়েছি তোমাকে?"
মুশতাক সাহেব তাকে থামালেন, "আহা বকছেন কেন ওকে? ইনারা মেয়েটা আসার পর থেকে সবার জীবনটা এলোমেলো করে দিলো। বেচারাও তো আমাদের মতো চিন্তায় আছে না'কি?"
"চিন্তার কিছু নেই। ওর ঠিকানা না পেলে কি হয়েছে? আগামীকালের ব্যবস্থা আমি করে রেখেছি। আগামীকাল ধামাকা হবে। ওর তুচ্ছ মেয়ের সব সাফল্য, কৃতিত্ব, অহংকার মুহূর্তে মাটিতে মিশে যাবে।"
.
.
পরেরদিন ইনারা খবর পায় তার কিছুক্ষণের মধ্যে বের হতে হবে। একটি বিউটি ব্যান্ডের ফেস হিসেবে সে সাইন করেছিল কয়মাস পূর্বে। তার নতুন পণ্য লঞ্চের জন্য তার আজ যেতে হবে। শেষ মুহূর্তে তারা ইভেন্ট ক্যান্সেল করতে পারবে না। টাকা দিয়েই ব্যাপারটা মিটমাট করা সম্ভব না। সে না গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। একারণে তার ঝুঁকি নিয়ে বের হতেই হলো। একটি শপিং মলে ছিলো সে ইভেন্ট। ইনারা ইভেন্টে যেয়ে দেখে অনেক মানুষের ভিড় জমে আছে। এখনো সে স্টেজে উঠে নি। তার এক প্রকার ভয় করতে লাগলো গতকালের ঘটনার পর। কিন্তু এই কিছু সময় পাড় করতে পারলেই সে বাঁচে।

অন্যদিকে সভ্য অফিসে কাজ করছিল। আনিকাকে ডাকা হয় কনসার্টের খবরের জন্য। কনসার্টে টিকিট কত টাকায় ধরলে ভালো হয় তা নিয়ে পরামর্শ লাগবে। আনিকা এসে দাঁড়ায় সভ্যের সামনে। সবার পূর্বেই জিজ্ঞেস করে, "ইনারা ম্যামের কী অবস্থা স্যার?"
সভ্য কাজ করছিল। আনিকার কথা শুনে সে মুখ তুলে তাকায়। আনিকা ইনারার কপালের আঘাত এর কথা জানল কীভাবে?
সে জিজ্ঞেস করে, "কোন বিষয়ে কথা বলছ?"
"স্যার গতকাল যে মিঃ হক স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন সে বিষয়ে। ইনারা ম্যামের উপর গতকাল থেকে সকলে ক্ষেপে আছে। শুনেছি গতকাল একজন না'কি তাকে আঘাতও করেছে।"
সভ্য এইসব ব্যাপারে কিছুই জানে না। সাথে সাথে সে এই খবর নিয়ে সার্চ করে। আসলে ব্যাপারটা সত্যি। মুহূর্তে রাগে ক্ষোভে তার গা জ্বলে উঠে। সে রহমানকে ফোন দিয়ে ধমক দিয়ে সেই মুহূর্তে তার কক্ষে উপস্থিত হতে বলে। 

রহমান দৌড়ে আসে সেখানে। জিজ্ঞেস করে, "স্যার...স্যার ডেকেছিলেন?"
সভ্য ল্যাপটপটা তার দিকে ঘুরায়, "এসবের মানে কী?"
রহমান ভূত দেখার মতো চমকে উঠে। ভীত সুরে বলে, "মাফ করবেন স্যার ইনারা ম্যাম বলেছিল আপনাকে না জানাতে।"
"তোমাকে বেতন কে দেয়? আমি না তোমার ম্যাম? তোমাকে ওর দায়িত্ব দিয়েছি আমি। ওর সব খবর আমাকে দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। আর এত বড় খবর তুমি আমাকে দেও নি? সাহস কী করে হয় তোমার? তোমাকে আমি এসে দেখব। এখন বাসায় যাচ্ছি ইনারার কাছে। আমার সব কাজ বাসায় পাঠিয়ে দিও।"
"স্যা...স্যার... আসলে ম্যাম তো বাসায় নেই।"
আরও ভড়কে উঠে সভ্য, "তুমি এই অবস্থায় ওকে শুটিং এ যেতে দিয়েছ? মাথা খারাপ তোমার?"
"না স্যার। ডিরেক্টর তো নিয়েই তাকে ছুটি দিয়েছে। কিন্তু... "
"কিন্তু? কিন্তু কী?"
"ম্যামের একটা ব্যান্ডের সাথে ডিল ছিলো৷ আমি তো জানি না একমাস পূর্বে মিঃহক সে ব্যান্ডের শেয়ারে ইনভেস্ট করেছে। আজ সে ব্যান্ডের ইভেন্টে ম্যামের যাবার কথা ছিলো। ম্যাম বলেছিল যাবে না কিন্তু তাকে জোর করা হয়েছে। আমি টাকার অফার দিয়েছি রাজি হয় নি।"
রহমান দ্রুত টিভি চালু করল। বিভিন্ন নিউজে সে ইভেন্টের খবর আসছে। মানুষ ভরা সে ইভেন্টে। ইনারা এখনো সেখানে যায় নি। 

সভ্য বসে পড়ে তার চেয়ারে। এই মুহূর্তে তার মাথা কাজ করছিলাম। গতকালের ভিডিও সে দেখল। ইনারাকে যেভাবে আঘাত করা হয়েছ তা দেখার পর জান শুকিয়ে এলো তার। সে বুঝতে পারছিল না তার কি করা উচিত হবে।
.
.
ইনারা স্টেজে উঠে দেখে সেখানে মিঃ হক উপস্থিত। তাকে দেখে ইনারা যতটা অবাক হয় এর থেকে বেশি তার রাগও উঠে। উনার জন্যই তার আজ এই ঝামেলায় পড়তে হলো। তবুও সে নিজেকে সামলে রাখে। স্টেজে উঠে। কিন্তু প্রডাক্টের এনাউন্সমেন্ট করার আগেই সামনে দাঁড়ানো কতগুলো মিডিয়ার লোকেরা তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে শুরু করে,
"মিস ইনারা বিগত কিছুদিন ধরে আপনার নামই সকল খবরে ছড়িয়ে আছে। নানান কথা জানা গেল আপনাকে নিয়ে। আপনার পরিবারের সম্পর্কে আজ পর্যন্ত আমরা কিছু জানি না। এই ব্যাপারে কী বলতে চান আপনি?"
উওর দেবার পূর্বেই তাকে আবারও একজন জিজ্ঞেস করে, "আপনি কী আসলে পরিচালক আজমলের আত্নীয়? আপনার জন্য কী সত্যিই পঞ্চসুর ভাঙলো? আপনার জন্য সভ্য এই ব্যান্ড ছেড়ে দিয়েছে?"

"যে মেয়ের জন্য আমাদের ফিফথ মেলোডি ভেঙে গেছে তাকে আমরা মোটেও ছাড়ব না।" ভিড়ের থেকে একটি কন্ঠ ভেসে এলো। এরপর একের পর এক মানুষ কথা বলতে শুরু করে। তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। তাকে গালাগাল দেয়। ভিড়ে এখন আর কোনো কথা পরিষ্কার নয়। এক পর্যায়ে এসে তার উপর হামলাও করা হয়। জিনিসপত্র ছুড়ে মারা হয়। কয়েকজন উঠে স্টেজেও আসতে চায় কিন্তু তার বডিগার্ডের জন্য পারে না। ইনারা বুঝতে পারছিল না সে কি করবে। মাইক নিয়ে সে সত্যিটা সবাইকে বলতে চেয়েছিল। কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক তাও সে বলতো। কিন্তু এমন অবস্থা দেখে সে যেন নড়াও ভুলে যায়। পাথর হয়ে যায় সে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। সেই জায়গায় চারপাশে মানুষের ধাক্কাধাক্কি। নেমে যাবারও উপায় নেই। এমন সময় সে ভিড়ের মাঝে দেখতে পেল জোহানকে। সে স্টেজের দিকেই আসছিলো। তাহলে জোহানও তার তামাশা দেখতে এসেছে তার বাবার সাথে?

এমন সময় তাকে জিনিসপত্র ছুড়ে মারার গতি বাড়ল। সে তার হাত মুখের উপর দিয়ে তা বাঁধা দেবার চেষ্টা করে। কিন্তু লাভ হয় না। সে ব্যাথা ঠিকই পায়। সে কি করবে বুঝতে পারে না। কান্না পাচ্ছে তার। খুব কান্না পাচ্ছে। এ সময় তার পাশে তার মা বা সভ্য থাকলে হয়তো তার এতকিছু সহ্য করতে হতো না।

হঠাৎ কারও ছোঁয়া পেল সে। কেউ তাকে বাহুডোরে ভরে তার মাথার পিছনে তার রেখে নিজের বুকে তার মাথা গুঁজলো। চমকে উঠে সে। এই স্পর্শ তার চেনা। সে চকিতে মুখ তুলে তাকায়। একটি মাস্ক পরা লোক তাকে বুকে ভরে রেখেছে। তার চোখদুটো দেখেই তাকে চিনে নিলো ইনারা। সভ্য তার সামনে। সভ্য? সে এখানে কী করছে? তার তো সকলের সামনে আসাটা মানা। তার তো এখানে আসাটা অসম্ভব ব্যাপার ছিলো।

সভ্য আর থাকতে পারে না। গাড়ি নিয়ে সোজা এসে পরে শপিং কমপ্লেক্সে। এসেই দেখে ভিড়ে কয়েকজন মানুষ আঘাত করছে স্টেজে দাঁড়ানো ইনারাকে। তার বুক কেঁপে উঠে। সে ভিড় চিরে যায় ভেতরে। তার বডিগার্ডরা সাহায্য করে তাকে। স্টেজে উঠেই ইনারাকে জড়িয়ে ধরে । ভিড়ের দিকে করে দেয় তার পিঠ। ইনারা চোখ তুলে তাকায়। সে চোখে ভয় ও বিস্ময় ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেল না সভ্য। সে দেখতে পায় ইনারার গালে ছোট একটি স্থানে কাটা গেছে। থেকে হাতেও ব্যাথা পেয়েছে সে। অনেক বাজে জিনিস মারা হচ্ছে তাকে। তাকে দেখেই ইনারার চোখ ভিজে গেল। চোখ দিয়ে পানি পড়লো। সে কাঁপা গলায় বলল, "আ-আপনি এখানে?"
তাকে উওর দিলো না সভ্য। তার অবস্থা দেখে সভ্যর যেমন কষ্ট হচ্ছে এর থেকে বেশি রাগ হচ্ছে মানুষগুলোর উপর। সে এক-দুই না ভেবে নিজের মাস্ক খুলে তাকায় পিছনে। তাকে দেখতেই ভিড় শান্ত হয়ে যায়। চিৎকার চেঁচামেচি পরিবর্তে হয় গুনগুন শব্দ। সকলের চোখেমুখে বিস্ময়। হবেই তো, আজ এত বছর পর সভ্য সবার সামনে এসেছে। আর সবচেয়ে বেশি বিস্ময় সে দেখতে পেল মিঃ হকের চোখেমুখে। সে স্টেজের অপরপাশে যেয়ে একজনের হাতের থেকে মাইক নিয়ে বলল, "হ্যালো এভরি ওয়ান, আশা করি আপনারা সবাই আমাকে চিনতে পেরেছেন। অবশ্যই চেনা উচিত। আমার জন্যই তো আপনারা এখানে এসে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করেছেন। এসব আপনাদের শোভা দেয়?"
সভ্য আবার মিঃহকের দিকে তাকিয়ে বলে, "আপনারা কীভাবে যার তার কথা শুনে কারও উপর এমন আঘাত করতে পারেন? আমি তো কাওকে আমার ছাড়ার কারণ বলিনি। সিদ্ধান্তটা এক ব্যক্তিগত কারণে ছিলো। কিন্তু অবশ্যই এর কারণ আমার ডিয়ার ওয়াইফ ইনারা না।"

শেষ কথাটা শুনে সবাই যেন আকাশ থেকে পড়লো। সবাই অবাক হবার জন্য শব্দ করল। সভ্য সবাইকে শান্ত করে ইনারার পাশে যেয়ে দাঁড়ায়। তার কাঁধে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে এনে বলে, "জ্বি আপনারা ঠিক শুনেছেন। ইনারা আমার স্ত্রী, আমার জীবন, আমার অর্ধাঙ্গিনী এবং ওর সাথে আমার ব্যান্ড ছাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে গতকাল যে কথাটি বলেছিল তার সম্পর্ক আছে। মিঃ হক আপনিই না ছিলেন যে আমাদের ব্যান্ডকে আলাদা করতে চেয়েছিলেন। যেন আপনার ছেলে আরও সাফল্যতা অর্জন করে?"
মিঃহক থতমত খেয়ে গেলেন কথাটি শুনে। সে বিস্ময়ে না কিছু বলতে পারলেন আর না করতে পারলেন। 
সভ্য আবার তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়, "আপনার সাহস আছে বলতে হবে। ন্যাশনাল টিভিতে এত বড় মিথ্যা ঘটনা সাজালেন আবার আজ তার পরিণামও দেখতে আসলেন? বাহ! আমার স্ত্রীকে অনেক জ্বালাতন করেছেন আপনারা। আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু এখন আমার ধৈর্যের সীমা পেরিয়ে গেছে। সামলে থাকবেন কারণ সাফওয়াত ইসমাত সভ্যর স্ত্রীকে কষ্ট দেবার পরিণাম ভালো হবে না।"

সম্পূর্ণ নাম শোনার পর যেন মিঃ হক আকাশ থেকে পড়লেন। নিজেকে সামলাতে না পেরে পিছিয়ে গেলেন। তার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে এলো।

জোহান ভীড়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্যটা দেখছিল। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো দুইজনের দিকে। তার চোখেমুখে বিস্ময়ের ছায়া। সভ্য ইনারার বিয়ে থেকে শুরু করে সভ্যর আসল নাম জানা পর্যন্ত সবটাই তার জন্য মেনে নেওয়া মুশকিল ছিলো। এত বছর সে সভ্যর সাথে বন্ধু ছিলো অথচ কখনো জানলোই না সে ইসমাত পরিবারের অংশ!

সভ্য তার শেষ কথাটি বলল জনগণের সাথে। অত্যন্ত বিনয়ের সাথে, "আমি জানি আপনারা আমাকে খুব ভালোবাসেন। আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি," সে ইনারার হাত ধরে। ইনারা তাকায় তার দিকে। সভ্যও তার দিকে তাকিয়ে বলল, "যারা আমাকে ভালোবাসেন তারা আমার বউকেও ভালোবাসা দিবেন। ও আমার কাছে আমার জীবন থেকেও বেশি দামী। ওকে আঘাত করা মানে আমার অন্তরে আঘাত করা।"
.
.
.
চলবে...................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন