#অতঃপর_মায়া
#অনু_গল্প
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া
অনিকের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে নীলা একটু মুচকি হাসে। খুব ভালোবাসে ছেলেটাকে নীলা। এই মুখের মায়া কাটাতে মনে হয় এ জীবনে আর পারবে না সে। কলেজে যেদিন প্রথম অনিক নীলাকে ভালোবাসার কথা বলেছিল মেয়েটা একেবারে লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিল।
" আজকাল কেউ এতো লজ্জা পায়?"
অনিকের কথায় নীলা যেন দ্বিগুণ লজ্জা পেয়েছিল সেদিন। তারপর থেকে দুজনের একসাথে পথ চলা শুরু। কত সময় একসাথে কাটিয়েছে দুজনে। সুখ-দুঃখ,আনন্দ-বেদনা প্রতিটি মুহূর্তে দুজনে দুজনের পাশে থেকেছে। দুজনে সমঝোতার মাধ্যমে সম্পর্কটা টিকিয়ে রেখেছে দীর্ঘ পাঁচ বছর । তারপর?
তারপর ওদের বিয়ে ঠিক হলো। পারিবারিক ভাবেই বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় অনিক। দুজনের পরিবার সম্মতি জানায় তাদের বিয়েতে। ব্যাস! সবকিছু ঠিকঠাক।
" অনিক! এই তুমি আর কত ঘুমাবে? এবার বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ো।"
ছোঁয়ার ডাকে নীলা শুধু তাকিয়ে দেখছিল। কি সুন্দর করে ডাকছে অনিককে। বেঁচে থাকলে আজ হয়তো এভাবেই সে-ও অনিককে ঘুম থেকে ডেকে তুলতো। ছোঁয়ার ডাকে অনিক ঘুম ঘুম চোখে কোন রকম তাকিয়ে বলে আরেকটু ঘুমালে কি হবে? আজ তো অফ ডে! কিন্তু ছোঁয়া নাছোড়বান্দা। অনিককে ঘুম থেকে না তুলে সে ছাড়বে না। কারণ অনিক আরেকটু ঘুমাই ঘুমাই করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল করে ফেলবে। নীলার ছোঁয়ার চোখে চোখ পড়তেই সে একটা মুচকি মুচকি হাসি দিয়ে উধাও হয়ে যায়।
ছোঁয়া সম্পর্কে নীলার চাচাতো বোন। অনিক আর নীলার রিলেশনের কথা ছোঁয়া সবকিছুই জানতো। তবুও অনিকের প্রতি একটা দূর্বলতা ছিল ছোঁয়ার। সেটা আসলে নীলাও হয়তো বুঝতে পেরেছিল। তাই হয়তো মৃত্যুর আগে অনিকের খেয়াল রাখার দায়িত্ব ছোঁয়াকেই নিতে বলেছিল। বিয়ের দুই দিন আগে নীলার একটা কার এক্সিডেন্ট হয়। ড্রাইভার সহ নীলা ওই এক্সিডেন্টে মারা যায়।
দীর্ঘ চার বছর পর অনিক মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। ছোঁয়ার সাথে নতুন জীবন শুরু করে। নীলা কিন্তু আজও অনিকের ভালোবাসায় আঁটকে আছে। অদৃশ্যভাবে নিজের ভালোবাসার মানুষের সান্নিধ্যে থেকে শুধু নিজের ভালোবাসা আগলে রেখেছে।