“ইদানিং শরীরটা ভালো লাগছে না রুদ্র। জানি, প্রেগন্যান্সিতে এটা স্বাভাবিক। আমি যেদিন শুনলাম, মা হবো। সেদিন থেকে আমি প্রেগন্যান্সি নিয়ে অনেক স্টাডি করেছি। একটা মেয়ের কাছে সবচেয়ে আনন্দের দুটো মুহূর্ত হলো প্রিয় মানুষটাকে নিজের করে পাওয়া এবং তার অংশকে নিজের মাঝে পাওয়া। আলহামদুলিল্লাহ! দুটোই পেয়েছি।
প্রতিদিন আমি অনুভব করি, আমার ভেতরে একটা প্রাণ বড় হচ্ছে। জানেন রুদ্র? আমি ওর সাথে সারাদিন গল্প করি। আপনার-আমার কাহিনী শোনাই আমার সোনাটাকে। তারও জানার অধিকার আছে, তার মা-পাপাই এর এই লুকোচুরি প্রেমের ইতিহাস। মাঝে মাঝে আমার সোনাটাকে আমি ঘুম পাড়াই। অনেক আদর করি। আরো বেশি করতে ইচ্ছে হয়। জানেন রুদ্র? প্রতি রাতে যে আপনি আমার পেটে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন, আমি খুব শান্তি পাই। আমার অগোচরে, তার সাথে কত্ত কথা বলেন আপনি। আমি কিন্তু ঘুমাই না তখন। আপনার সব কথা শুনি। এইযে, কাল রাতে বললেন, খুব ইচ্ছে আপনার, একটা পিচ্চি আসবে। তার ছোট্ট ছোট্ট আঙ্গুল ধরে হাঁটা শিখাবেন। তাকে নিয়ে খেলবেন। আরো কতো কিছু!
আমার না, খুব ইচ্ছে, আমারও একটা হ্যাপি ফ্যামিলি হবে। এই যেমনটা ভাইয়া আর ভাবির হয়েছে। তারা কত্ত সুখী। আমারও এমন একটা হ্যাপি ফ্যামিলি চাই। কিন্তু.... ইদানিং অদ্ভুত একটা অনুভুতি হচ্ছে। অনেক জায়গায় শুনেছি,অনেক প্রেগন্যান্সিতে কম্পলিকেশন হয়। মা, বাচ্চার যেকোনো একজন বাঁচে। আচ্ছা, যদি আমার বেলায় এরকম কিছু হয়ে যায়? আমি আপনার থেকে আপনার বাচ্চাকে কেড়ে নিতে পারবো না আগেই বলছি। এই সাধ্য আমার নেই। তবে কি আমিই আপনার থেকে দূরে সরে যাবো?
রুদ্র! কেমন যেনো লাগছে আমার। খুব ইচ্ছে হচ্ছে, আপনাকে কিছু কথা বলতে। অনেক তো আপনার কাহিনী শুনলাম। কিভাবে আমার মায়ায় জড়িয়ে গেলেন? কিভাবে আমায় ভালোবাসলেন!
আজ না হয় আপনাকে আমার কাহিনী বলি! শুনবেন আমার কাহিনী? আপনার সামনে কখনোই এসব বলতে পারবো না। মাঝে মাঝে ঝগড়া করি ঠিক আছে। রাগ করি, মন খারাপ করি, লজ্জা পাই। সব করতেই পারি। কিন্তু কেনো যেনো আমি আপনাকে ভালোবাসার কথা বলতে পারিনা।
একদম বাচ্চা ছিলাম আমি। আপনি আমাদের বাড়িতে এলেন। বাচ্চা আমিটা কিছু বুঝতাম না। তবে, আপনার আশে পাশে থাকতে ভালো লাগতো ভীষণ। ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলাম আমি। বয়স তখন সবে ষোলো আমার। ভাইয়ার সাথে লন্ডন থেকে ফিরলেন। সেদিন আপনাকে দেখে আমার মনে অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিলো। দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলাম আমি। এই বয়সটাই এরকম। ক্লাসের সব বান্ধবীর সাথে এই নিয়ে আলোচনা করলাম।
তারা এক বাক্যে বলে দিলো,“নিশা! তুই প্রেমে পড়ে গিয়েছিস।”
তবে আমার কাছে মনে হতো না, এটা প্রেমে পড়া। ওরাও তো সেই বয়সে অনেকের কথাই বলতো। তাদের কথার মূল বিষয়বস্তু ছিলো, তারা ছেলেকে বাহ্যিক ভাবে দেখে পছন্দ করেছে। তবে, আমার মনে আপনার জন্য অনুভূতি গুলো অন্যরকম লাগতো।
সময় এগোতে লাগলো। আপনার সব পছন্দ-অপছন্দ জেনেছি। সেদিন, একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম। আপনার আর আমার পছন্দ-অপছন্দের বেশ অমিল আছে। ভাবনায় পড়ে গেলাম। এতো অমিলে, মিল কী করে হবে? তারপর, হুট করেই একটা আইডিয়া চলে এলো।
আমি না! আগে সবজি পছন্দ করতাম না। বিশেষ করে করলা। কিন্তু যখন শুনলাম আপনি সেটা পছন্দ করেন! আমি সেদিনই খেয়েছি। এরপর থেকে প্রায়ই খাই। এখনো করলা পছন্দ করিনা। তবুও খাই।
সেদিন জানলাম, আপনি নীল পছন্দ করেন। আমার আবার নীল রং দেখলেই মনে হতো, এমা! এ তো বিষের রং! এটা আবার কার পছন্দ হয়?
আপনি বিশ্বাস করবেন কি না জানিনা। যেদিন জানলাম এটা আপনার পছন্দ, সেদিনই আমার রুম স্কাই ব্লু কালারে পেইন্ট করিয়েছি। পুরো রুম ব্লু ফার্নিচারে ডেকোরেশন করিয়েছি। ইন ফ্যাক্ট, আমার ওয়াড্রপের সব কাপড় সরিয়ে শুধু ব্লু কিনে রেখেছি। এতটা পাগল হয়ে গিয়েছিলাম আমি।
আপনি যখন বাড়িতে আসতেন! লুকিয়ে লুকিয়ে আপনাকে দুচোখ ভরে দেখতাম। সারারাত আপনাকে নিয়ে ভাবতাম আমি। বিভিন্ন স্বপ্ন তৈরি করতাম। ধীরে ধীরে আমি অন্যরকম হয়ে যাই। ফ্যামিলি, ফ্রেন্ডস কারো সাথে আগের মতো কথা বলিনা। আমার দিবা রাত্রি শুধু আপনার কল্পনায় বিভোর হয়ে কাটে। আপনি সামনে এলে আমার সবকথা আওলিয়ে যেতো। কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে যেতো। কথা বলতে পারতাম না। হৃদপিন্ডের অন্তঃস্থলে কেমন যেনো হাঁসফাঁস অনুভূতি হতো।
ধীরে ধীরে সময়ের কাটা এগোতে লাগলো। আপনাতে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরনে নিউরনে একটা কথাই ছিলো,“এই শ্যামপুরুষ আমার”। খুব করে চাইতাম আপনাকে। আপনাকে এক ঝলক দেখার জন্য মরিয়া হয়ে যেতাম। আমার এসব অনুভূতির সাথে সাক্ষাৎ-তো আগেই হয়েছে। কিন্তু অবুঝ আমিটা বুঝতে পারিনি এর পরিচয়। তবে পরে জেনে নিলাম এর নাম। আপনি ছিলেন আমার কাছে এক নেশা দ্রব্যের ন্যায়। তাই তো আপনিনামক নেশাদ্রব্যে অনেক বাজে ভাবে নেশাক্ত হয়ে যাই। ভালোবাসার এই নেশায় বড্ড অদ্ভুত ভাবে আসক্ত হয়ে যাই।
কিন্তু মাঝপথে ভুল বোঝাবুঝি আমাদের থেকে কেড়ে নিলো একটা বছর। যন্ত্রণার সাথে সাক্ষাৎ করালেন আপনি আমায়। যেভাবে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলেন, সেভাবেই কষ্টের সাথে পরিচয় করালেন। এমন একটা দিন নেই, আমার বুকটা শূন্য শূন্য লাগেনি। সবসময় মনে হতো, কী হতো? যদি আমি আমার প্রিয় মানুষটাকে পেয়ে যেতাম! চাওয়াটা তো অন্যায় না। ভালোই তো বেসেছি।
কেনো এরকম হচ্ছে?
জানেন রুদ্র? আমি সব মেনে নিতে পারতাম। কিন্তু আপনার অবহেলা সহ্য করতে পারতাম না। আর সেটাই হতো। প্রচন্ড মন খারাপ হতো। মাঝে মাঝে পাথরের মতো বসে থাকতাম। আবার মাঝে মাঝে হাউমাউ করে কাঁদতাম। এসব কেনো করতাম জানিনা আমি। শুধু জানতাম, আমার বুকটা পুড়ে যাচ্ছে। এতো কষ্ট! এত্তো কষ্ট! আমি নিতে পারতাম না।
কিন্তু, আমার ভাগ্যে আপনি ছিলেন। এজন্যই তো সব ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে, আপনাকে পেয়ে গেলাম। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কী জানেন? আপনি আমার হয়েছেন। আমার নিজস্ব একটা মানুষ।”
ডায়েরির এটুকু অংশ পড়লো রুদ্র। সময় অনেকটা পেরিয়েছে। আটটা ক্যালেন্ডার পুরনো হয়েছে। নিশার মৃত্যুর আজ আট বছর। পাল্টেছে সবার কাহিনী। শুধু থেমে রয়েছে রুদ্র। কারন তার কাহিনী তো তার নিশাপাখিতেই সীমাবদ্ধ। নিশার মৃত্যুর পরপর রুদ্র কিছুদিন পাগলের ন্যায় ছিলো। ছোট্ট শিশুকে সামলাতে অনেক কষ্ট হয়েছে। মা ছাড়া একটা সন্তান। সহজ তো ছিলো না। রুদ্রকে এরপর থেকে এ বাড়িতেই রাখা হয়। মাস যেতে না যেতেই রুদ্রের হাতে এই ডায়েরি এসে যায়। যেখানে লেখা ছিলো, নিশার অব্যক্ত সব অনুভূতি। প্রকাশ করা কি এতোই সহজ ছিলো? এজন্যই তো লিখে রাখা। যাতে মনটা সামান্য হলেও হালকা হয়।
পাতা ঝাপটালো রুদ্র। আবারো পড়া শুরু করলো। এই নিয়ে কতবার যে পড়েছে! তার হিসেব নেই। রুদ্র নাকি এই ডায়েরিতে নিশাকে খুঁজে পায়। অতঃপর পরের পৃষ্ঠায় ছিলো—
“প্রেগন্যান্সির মাস যতো এগোচ্ছে, টেনশন আমার ঠিক ততোই বাড়ছে। বারবার আপনাকে হারিয়ে ফেলার ভয় আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আমি পারছি না এসব নিতে। বড্ড খারাপ একটা অনুভুতি হয়। শুনেছি, মানুষ তার মৃত্যুর আগে কিছুটা হলেও বুঝতে পারে। তবে সেসব খেয়ালে নেয়না। আমারও ওরকম অনুভূতি হচ্ছে রুদ্র। আমি কী তবে সত্যিই..?
রুদ্র! আমি আপনার সাথে পুরোটা জীবন চাই। আমি বড্ড লোভী রুদ্র। আপনার ভালোবাসা আমার একার। আমি এর ভাগ দিতে পারবো না। রুদ্র! প্লিজ! আমি থাকি বা না থাকি, আমার হয়ে থাকবেন,প্লিজ! আপনাকে ভালোবাসি। অদ্ভুত রকম ভাবে ভালোবাসি। এই ভালোবাসায় অসম্ভব রকমের সুখ আছে, তার চেয়েও বেশি আছে হারানোয় ভয়।
রুদ্র! একটা রিকুয়েস্ট। আমি জানিনা এটা কখনো আপনার হাতে পড়বে কি না! কিংবা প্রয়োজন হবে কি না। তবুও বলে যেতে চাই, আমার বেবির ভালোবাসায় একটুও কমতি রাখবেন না। তার জন্য আবার নতুন কাউকে আনার প্রয়োজন নেই। বেশি মাতব্বরি করতে যাবেন না। মেয়ে মানুষের থেকে দূরে থাকবেন। আমি মরে গেলেও আপনার পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারবো না। রুদ্র। ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে। ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি। আর খুব শীঘ্রই আপনাকে প্রপোজ করবো। আমি চাইনা দেরি হয়ে যাক। তাই খুব জলদি আপনাকে প্রপোজ করে দেবো।
আমার কথাগুলো মাথায় রাখবেন। নয়তো ভূত হয়ে ঘাড়ে চেপে বসবো। আপনি আমার। শুধু আমার। আপনার পাশে নিজের ছায়াকেও সহ্য হয়না। কেমন যেনো লাগে। আচ্ছা! কাজ আছে। পরে আবার লিখবো।”
এরপরের পৃষ্ঠাগুলো ফাঁকা। আর লেখার সময় হয়নি। সুযোগ হয়ে উঠেনি নিশার। তার আগেই তো চলে গেলো সব মায়া ছেড়ে। মায়াবিনী সব মায়া ভুলে পরলোক গমন করলো।
রুদ্র ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে পড়ছিলো এটা। চোখ জোড়া তার ছলছল করছে। কিন্তু পানি গড়িয়ে পড়ে না। কোনোবারই না। নিষ্ঠুর এই ধরণীতে সন্ধ্যে নেমেছে। নিষ্ঠুর! হ্যাঁ, নিষ্ঠুর-ই তো। কারণ এই ধরণী, নিশার শেষ ইচ্ছে পুরন করলো না। বড্ড নিষ্ঠুর ভাবে কেড়ে নিলো, রুদ্রের কাছ থেকে তার পিচ্চি পাখিকে। ইশ! কি নিদারুণ যন্ত্রণা!
রুদ্র একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,“ভালোবাসি নিশা। তোমার সব কথা শুনেছি আমি। কিন্তু তুমি আমার কথা ভাবলে না। একবারও না। তুমি না! বড্ড সেলফিশ। কেনো এরকম করলে? তুমি জানো না? তোমাকে ছাড়া আমি একটা মুহূর্ত কল্পনা করতে পারতাম না, সেই তুমি আমাকে বাকিটা জীবন তুমিহীনা ছাড়লে। জানো? আত্মহত্যা যদি মহাপাপ না হতো, তবে তোমাকে একা ছাড়তাম না। আমিও চলে আসতাম তোমার কাছে।
আমার না! এখন কষ্ট হয়না। খারাপ লাগে না। প্রথম প্রথমের মতো অত কান্না আসে না। তবে এই যে বুকে। এই বুকের বা পাশটায় খালি খালি লাগে। মনে হয় কী জানো পাখি? তুমি গেছো, সাথে তুমিনামক প্রতিটি স্পন্দন নিয়ে গেছো। এই স্পন্দন গুলোতো তোমার নামেই ছিলো।
দিব্যি ঘুরছি, ফিরছি, খাচ্ছি, নিশ্বাস নিচ্ছি। কিন্তু... কিন্তু তুমি ছাড়া আমি? আমি নেই। আমার আমিটা নেই। আমিতো যন্ত্র হয় গেছি। তুমি কি ফিরে আসতে পারো না? আমি ভালো নেই তোমাকে ছাড়া। একটুও ভালো নেই। তবে আমি বেঁচে আছি কী করে জানো? আমাদের মেয়েকে দেখে। একদম তোমার মত হয়েছে। ভেবেছিলাম শুধু তোমার চেহারা পেয়েছে। নাহ্! অভ্যেস গুলোও তোমার মত। ওর মাঝে তোমাকে দেখি।
কিন্তু নিশা পাখি! তোমাকে ছাড়া আমি শূন্য। ভেবেছিলাম তুমি আমার সুখপাখি। তবে তুমিই তো সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দিলে। সমস্ত সুখ আমার জন্য হারাম করে, তুমি চলে গেলে। আফসোস রয়ে গেলো জানো? তোমার মুখ থেকে ‘ভালোবাসি’ শোনার সৌভাগ্য আমার হলো না। এটা কতটা কষ্টের জানো? আমার সাথে না থাকতে পারলে কেনো আমার জীবনে এলে তুমি? শুরুতেই দূরত্ব ভালো ছিলো না? কেনো আসক্তি হয়ে গেলে আমার।
নিশা! ভালোবাসি তোমাকে। মৃত্যু তোমার হলো। মরণ যন্ত্রণা আমি অনুভব করছি। করতে করতেই ভালোবাসছি। শেষ নিশ্বাস অবদি ভালোবাসবো পাখি।”
তখনই পেছন থেকে নীরু দৌড়িয়ে এসে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো। রুদ্র উত্তেজিত হয়ে হাতের ডায়েরিটা ডিভানের উপর ফেলে নীরুর সামনে হাঁটু মুড়ে বসে বললো, “কী হয়েছে আমার মামনিটার? এভাবে কাঁদছে কেনো?”
নীরু কাঁদতে কাঁদতেই বললো,“পাপাই! মেরেছে ও আমাকে।”
“কে মেরেছে মামনি?”
“নিহান ভাই মেরেছে আমাকে।”
•
“অরু! আম্মু রেডি হয়ে নাও জলদি।”
“আম্মু! আব্বু যাবে না?”
“না সোনা। আব্বুর কাজ আছে তো।”
অরু মন খারাপ করে বসলো। রুশী এগিয়ে গেলো। মেয়েটা বড্ড জেদি। বয়স দশের কোঠায় নেমেছে। ভীষণ চঞ্চল। এই বয়সেই প্রচুর গান শোনে। গান গায়। সুযোগ পেলেই নিজের গিটার নিয়ে ছাদে গিয়ে গান গায় মেয়েটি। সিঙ্গার ‘এ জে’ এর বিশাল বড় ভক্ত অরু। এই ‘এ জে’ এর চেহারাতো দূরের কথা, নামটাও পুরোটা জানে না কেউ। আজ তারই একটা কনসার্ট আছে। আর প্রথম বারের মতো সেখানে, জনসম্মুখে আসবে সে। সেখানেই যাবার জন্য বায়না ধরেছিলো অরু।
অজ্ঞাত এক কারণবশত রুশী না করে দেওয়ায় তার বাবার কাছে বলেছে। সে রাজি হয়ে গিয়েছে। এজন্যই যাচ্ছিলো সবাই মিলে। কিন্তু হঠাৎ করে মারুফের কিছু কাজ পড়ে যাওয়ায়, সে যেতে পারবে না।
রুশী, অরুর দিকে এগিয়ে গেলো। চেহারায় একদম রুশী ছাপ পেয়েছে। তবে স্বভাবে অন্যরকম। রাগী, জেদি, গম্ভীর ও খানিকটা উষ্কখুষ্ক মেজাজের অধিকারিণী অরু। এসব তো সেই একজনেরই ছিলো।
রুশীর মাথায় খেলে না। দুজন মানুষের স্বভাবে এত মিল কী করে হয়?
“এখন কি যাওয়া ক্যানসেল?”
অরু এতক্ষণ অন্যদিকে মুখ ফুলিয়ে থাকলেও, এখন রুশীর দিকে তাকালো। ফুলো মুখেই বললো,“যাবো তো।”
রুশী হেসে দিয়ে বললো, “আসো, তবে জলদি রেডি করিয়ে দেই।”
.
.
.
চলবে.......................................................