আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

হাওয়াই মিঠাই - পর্ব ২৬ - মৌরি মরিয়ম - ধারাবাহিক গল্প

পড়ুন মৌরি মরিয়ম'এর লেখা একটি অসাধারণ ধারাবাহিক গল্প হাওয়াই মিঠাই'র ষড়বিংশ পর্ব
হাওয়াই মিঠাই
হাওয়াই মিঠাই

ড্রয়িং রুমে বসে অপেক্ষারত মীরা কিছুটা নার্ভাস। সালওয়া সুলতানা রাফির মায়ের নাম। এছাড়া আর কিছুই জানে না মীরা তার সম্পর্কে। ছবিতে একবার দেখেছে শুধু। যে মানুষ ছেলেমেয়েদের এত শক্ত করে তৈরি করতে পারে সে নিজে কতটা শক্ত হতে পারে তাই ভাবছে। মীরার কথাগুলো কীভাবে নেবে সে? এসব ভাবতে ভাবতেই ড্রয়িং রুমে ঢুকলেন সালওয়া। সালোয়ার-কামিজ পরা ঘোমটা মাথায়, শুভ্রের ন্যায় গায়ের রঙ তার।কাটাকাটা চেহারা! মীরা তাকে দেখেই উঠে দাঁড়িয়ে সালাম করল। তিনি বললেন,

"আপনাকে তো চিনলাম না।"

স্পষ্ট বাংলা তবে উচ্চারণ খানিকটা অন্যরকম। হবু শাশুড়ির মুখে আপনি সম্বোধন শুনে মীরার নার্ভাসনেস আরো বেড়ে গেল। মীরা বলল,

"প্লিজ আমাকে তুমি করে বলুন। আমি আপনার ছোট ছেলেরও ছোট।"

সালওয়া হেসে বললেন,

"আচ্ছা আচ্ছা। তুমি কে?"

মীরা এবার নিঃশ্বাস আটকে রেখে দ্রুত বলে ফেলল,

"আমি আসলে... কীভাবে আমার পরিচয় দিলে যে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে সেটা ঠিক জানি না। আসলে ৯ বছর আগে আমার সাথে আপনার বড় ছেলের প্রেম ছিল।"

সালওয়া কিছুক্ষণ অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন। তারপর বললেন,

"তুমি সেই মীরা?"

এবার মীরার অবাক হওয়ার পালা। বলল,

"আপনি আমাকে চেনেন?"

সালওয়া বললেন,

"শুনেছিলাম তোমার কথা। রাফি তখন হঠাৎ করেই সারাদিন ফোনে কথা বলতো, তাই একদিন কৌতূহলবশত জিজ্ঞেস করেছিলাম। তখন বলেছিল তোমার কথা। খুব এক্সাইটেড ছিল তোমার ব্যাপারে। তোমার ছবিও দেখিয়েছিল। তবে এতদিন পর আর মনে নেই, তাই তোমাকে দেখে চিনতে পারিনি। আমি অনেকদিন দেশে ছিলাম না। ফিরে এসে দেখি রাফি ফোন ব্যবহার করে না। তখন তোমার কথা জিজ্ঞেস করতেই বলল ব্রেকাপ হয়ে গেছে।"

"রাফি আপনাকে মিথ্যে বলেছে।"

"মিথ্যে বলেছে!"

"আমাদের ব্রেকাপ হয়নি। আপনার ছেলে হুট করেই যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল। এটা আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। আপনি এই অন্যায়ের বিচার করুন।"

"আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।"

মীরা এবার একটু কাঁদো কাঁদো ভাব আনার চেষ্টা করল। কিন্তু কেন যেন এই মুহুর্তে তার একফোঁটা কান্না আসছে না। কান্না আসছে না বলে নিজের উপরই রাগ লাগছে। সে আবার বলা শুরু করল,

"রাফি আমার জীবন থেকে চলে যাওয়ার পর জীবন আর জীবন ছিল না। মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম আমি। আমার পাগলামির কারণে ফ্যামিলিতে জানাজানি হয়েছে, মার খেয়েছি, অপমানিত হয়েছি। তবু রাফিকে আমার মাথা থেকে নামাতে পারিনি। ৯ টা বছর ধরে আমি তাকে পাগলের মত খুঁজেছি। তাকে খোঁজার জন্য জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি কারণ আমার দরকার ছিল স্বাধীনতা আর ওই এলাকায় থাকা। ব্যাংক টাউন আর ধামরাই তন্ন তন্ন করে ফেলেছি। তবে আমার খোঁজার সময় আর উপায় হয়তো ভুল ছিল, তাই খুঁজে পাইনি। অবশেষে কিছুদিন আগে পেলাম। অথচ এখন আপনার ছেলে বলছে সে নাকি আমার যোগ্য নয়। কারণ সে কলেজের পর আর পড়াশোনা করেনি আর আমি ম্যাথে মাস্টার্স পড়ছি। এটা কেমন যুক্তি? অথচ সে এখনো আমাকে ভালোবাসে।"

এবার সালওয়া মীরাকে এক গ্লাস পানি ঢেলে এগিয়ে দিয়ে বললেন,

"নাও পানি খেয়ে একটু স্বাভাবিক হও আগে।"

মীরা বলল,

"আপনার ছেলেকে না পেলে আমি কখনোই স্বাভাবিক হতে পারব না।"

"বুঝেছি। পানিটা খাও ভালো লাগবে।"

মীরার পানি খাওয়া হলে সালওয়া বললেন,

"রাফি যদি এখনো তোমাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে হঠাৎ তোমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল কেন?"

মীরা পুরো ঘটনাটা খুলে বলল। সব শুনে সালওয়া একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,

"আসলে রাফির ধারণা ভুল ছিল না। রাফির জন্য কত মেয়ে দেখছি। পছন্দমতো মেয়ে পাচ্ছি না। যেসব মেয়ে আমাদের পছন্দ হয় সেসব ফ্যামিলি রাফির পড়াশোনা হয়নি শুনে পিছিয়ে যায়। আবার যারা রাজী হয় সেসব মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়না। তোমার ফ্যামিলিও হয়তো রাজী হতো না।"

মীরা মাথানিচু করে বলল,

"আমি আমার ফ্যামিলিতে অলরেডি জানিয়েছি। তারা রাজী হচ্ছে না।"

এবার সালওয়া কিছু বলার আগেই মীরা তার পা চেপে ধরে বলল,

"এখন আপনিই একমাত্র ভরসা। প্লিজ আপনার ছেলেকে রাজী করান আর আমার বাবা-মাকেও। আপনি গিয়ে কথা বললে হয়তো তারা রাজী হবে। আপনার ছেলেকে আরেকবার হারালে আমি বাঁচবো না।"

সালওয়া মীরাকে ওঠাতে ওঠাতে বললেন,

"আরে কী পাগলামি করছো? ওঠো ওঠো, আমার পাশে বসো।"

মীরা উঠে তার পাশে বসলো। তিনি এবার বললেন,

"বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যদি রাজী না হয় তাহলে কী করবে?"

মীরা কিছু বলার আগেই বেল বাজলো। দিয়া এসে দরজা খুলে দিল। রাফি ঢুকে দেখে তার মা আর মীরার মধ্যে মিটিং চলছে। রাফি মীরাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করল,

"মীরা এখানে কী তোমার? আমার মায়ের সাথে কী? এখন তুমি লিমিট ক্রস করছো।"

সালওয়া রাফিকে ধমক দিয়ে বললেল,

"এখন আমি কার সাথে কথা বলব আর কার সাথে বলব না, সেটাও কি তুমি ঠিক করে দেবে বাবা?"

পর্ব ২৫পর্ব ২৭
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।