মেঘের বাড়ি - পর্ব ০৬ - ফারহানা ছবি - ধারাবাহিক গল্প

পড়ুন ফারহানা আক্তার ছবি'র লেখা একটি সামাজিক ধারাবাহিক গল্প মেঘের বাড়ি
মেঘের বাড়ি
মেঘের বাড়ি

"আখি তোর ভাবি অসুস্থ এখন থেকে তোর ভাবির কাজে হাত লাগাবি৷ আর এখন থেকে এই সব কাজ তুই আর বাকিরা মিলে করবি৷ এটো থালা গুলো ধুয়ে তোর ছেলের জন্য দুধটা গরম করে নিয়ে যাস৷ চলো মেঘ এখন বিশ্রাম নিবে৷"

বলে মেঘের হাত ধরে গট গট করে হেটে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো৷ এদিকে সোহেলের কথা শুনে তার বোন হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে রইল৷ পরেরদিন সকাল সকাল উঠে মেঘ সবার জন্য নাস্তা বানাতে নিলে আখি সাথী মিলা মনি মিলে মেঘকে রান্না ঘর থেকে বের করে দিয়ে বলে,

"ভাবি তুমি গিয়া আর একটু ঘুমাও আমরা আছি তো! আমরা সবাই মিলে সকালের নাস্তা বানায় ফেলমু তুমি চিন্তা কইরো না৷"

মেঘ হঠাৎ সবার এত পরিবর্তণ দেখে বিস্ময় চোখে তাকিয়ে আছে তার ননদ আর জায়ের দিকে৷ কি অদ্ভুত তাই না? যারা পদে পদে তাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে তারা আজ তাকে সাহায্য করার জন্য ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে কাজে লেগে পড়েছে৷

(১২)

মেঘ তার রুমে না গিয়ে গরুর গোয়ালে গিয়ে তাদের কোলায় ছেড়ে দিয়ে এসে খর কাটতে বসে পড়ে৷ অন্যদিকে মেঘের ননদেরা রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে রুটি ভাজি বানাতে লাগলো৷

"দেখ আপা আমার এত সকালে উঠার অভ্যাস নাই তাও আম্মার জন্য এত সকালে উঠতে হইলো৷" ঘুম ঘুম চোখে কথা গুলো বললো সাথী৷ সাথীর কথা শুনে আখি বললো,

"শোন সাথী আম্মা যা বলতাছে আমাগো তাই করা লাগবো৷ ভাইজান আর এক মাসের মত আছে৷ এই একমাস একটু কষ্ট কর বইন তারপর খেলা শুরু হইবো৷ সে পর্যন্ত অপেক্ষা কর বইন৷" (আখি)

আখির কথা শুনে মনি বললো,

"দেহেন আপা আপনাদের যা খুশি হয় করেন কিন্তু আমারে টানবেন না৷ আমি কিন্তু বড় ভাবির কোন ক্ষতি করতে পারুম না৷ আল্লাহ আমারে তিন সন্তান দিছে৷"

"চুপ করো ছোট বউ৷ আম্মা যা কইবো তাই হইবো৷ গতকাল রাইতে আম্মা কী বলছিলো তা নিশ্চয়ই ভুইলা যাও নাই?" (মিলা)

"না ভুলি নাই ছোট আপা কিন্তু ক্ষতি আমি করতে পারুম না৷ হ আমি বড় ভাবিরে হিংসা করি কিন্তু তার ক্ষতি হোক সেইটা আমি চাই না৷"

মনির কথার মাঝে জায়েদা তাদের হাজির হন৷

"আখি এখনো সকালে নাস্তা বানানো হয় নাই কেন?"

"আম্মা আমরা কী জীন ভুত যে কাজে বয়নের সাথে সাথে সব কাম করা শেষ হইয়া যাইবো?"

"তর্ক করবি না আখি তাড়াতাড়ি নাস্তা বানা তোর আব্বা আর বাকিরা খাইয়া কাজে যাইবো৷"

"আম্মা তোমার বড় পুতের বউ নিশ্চয়ই এখনো পইরা পইরা ঘুমায়তাছে?"

"না আওনের সময় দেখলাম গরু কোলায় ছেড়ে দিয়া খর কাটতাছে৷"

"দেখছো বড় আপা, বড় ভাবি হুদাই বইয়া থাওনের মাইয়া না৷"

"চুপকর সাথী হাত চালা৷ রুটি গুলা ভাইজা বাচ্চাগো জন্য খাওন বানা৷"

"হ বানাইতাছি৷"

সকালে বেশ বেলা করে সবাই নাস্তা করে কাজে চলে যায়৷ এদিকে সোহেল মেঘকে যেন চোখের আড়াল হতেই দিচ্ছে না৷ চোখের সামনে না দেখলেই মেঘ মেঘ বলে চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় তুলছে৷ যে তার পরিবারের কেউ সহ্য করতে পারছে না৷ মেঘ সুযোগ বুঝে সোহেল কে বলে,

"আচ্ছা আপনি এত বছর বাইরে থেকে দেশে নিজের জন্য কী করলেন বলেন তো?"

"কেন জায়গা জমি কিনেছি৷ পাশে মেজ চাচার বাড়ির পরের ভিটা টা আমি কিনেছি৷ আরও অনেক জমি জমা কিনেছি৷"

"সেগুলো দলিল পত্র আপনি দেখেছেন?"

"না সবটা আব্বা জানে তার কাছেই তো পাঠিয়েছি৷"

"আপনাকে একটা কথা বলবো যদি মনে কিছু না করেন?"

সোহেল মেঘ কে ঘুড়িয়ে কোলে বসিয়ে বলে,

"একটা কেন একশটা কথা বলো৷ আমি শুনবো বলে তোমার কাছে রয়েছি৷"

মেঘ শুকনো ঢোক গিলে বলে,

"আপনি আজ আপনার আব্বার সাথে কথা বলবেন৷ যত জমি জমা কিনেছে তার দলিল দেখতে চাইবেন৷"

সোহেল মেঘের কথা শুনে একটু চুপ থেকে বললো,

"ঠিক আছে আজ আমি আব্বার সাথে কথা বলবো৷"

দুপুরে খাবার সময় বাড়ির পুরুষরা এক সাথে বসেছে৷ বাকি মেয়েরা তারা খাবার পরিবেশন করছে৷ সোহেল খেতে খেতে তার আব্বা আমজাতকে বলে,

"আব্বা আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে?"

"কি কথা?"

"আমি বিদেশে থাকা অবস্থায় আপনাকে আমার নামে যে জমি কিনতে টাকা দিয়ে ছিলাম সে জমির দলিল দেখতে চাই৷"

সোহেলের কথা যে সবার মাথায় বিনা মেঘে বজ্রপাত ফেলার মত অবস্থা৷ সোহেলের ভাইয়ের মুখটা ভয়ে শুকিয়ে গেছে৷ আর বাকিদের মুখটাও দেখার মত৷ মেঘের ননদেরা মেঘের দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ মেঘ সে দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পারলো তার ননদেরা তার দিকে তাকিয়ে আছে৷ সোহেলের বাবা আমজাত কোন রকমের খাবার খেয়ে উঠে গেলেন৷ সোহেল তার মত করে খেয়ে উঠে বললো,

"আমি রুমে অপেক্ষা করছি আব্বা৷ আপনি দলিল গুলো নিয়ে আমার রুমে আসেন৷"

এই বলে সোহেল তার রুমে চলে গেল৷ এদিকে আমজাত মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে৷ কারণ জমি সোহেলের নামে কিনেছে তবে তা যথেষ্ট কম৷ সোহেলের ছোট ভাই সবুজ নিজের নামে অনেক জমি কিনেছে৷ সাথে জামাইরাও প্রচুর টাকা নিয়েছিলো ব্যবসা করার জন্য এগুলো সোহেল কিচ্ছু জানে না৷ কিন্তু এখন তো সব জেনে যাবে৷ কী উওর দেবে ছেলেকে সেটাই ভাবছে৷ এদিকে জামাই আর সবুজ বেশ ভয়ে আছে সোহেল সবটা জানলে কী করবে না করবে সেটা এখনো তারা জানে না৷ তবে সোহেল যদি ক্ষেপে যায় তাহলে তাদের জন্য সেটা সুখকর যে হবে না সেটা তারা ভালো করেই জানে৷ আমজাত সব দলিলপত্র নিয়ে সোহেলের রুমে হাজির হয়৷ সোহেল এক এক করে সব দলিল পড়ে সবুজ আর বাকি জামাইদের ডাকতে লাগলো৷ সবাই যেটার ভয় এতদিন ধরে পাচ্ছিলো আজ সেটাই হচ্ছে৷ সবাই এক সাথে রুমে হাজির হয়৷ মেঘ খাবার খেতে খেতে শুনতে পাচ্ছে তার স্বামী শশুড় দেবর আর জামাইদের কথা৷ সোহেল যে প্রচন্ড রেগে গেছে তার কথা শুনে আখি সাথী মিলা মনি বুঝতে পারছে৷ তবে তার শাশুড়ি নির্বিকার হয়ে খেয়ে যাচ্ছে৷ আধাঘন্টা পর তর্কাতর্কি শেষ হলে সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷ মেঘের খাওয়া শেষ হলে সে এটো থালা বাসন নিয়ে যেতে নিলে জায়েদা বারণ করে৷

"বউমা এগুলো তুমি রাখো ছোট বউ আছে তোমার ননদেরা আছে তারাই ধুইবো৷ তুমি তোমার ঘরে যাও সোহেলের মাথা ঠান্ডা করো৷"

মেঘ তার শাশুড়ির কথা শুনে মাথা নেরে নিজের রুমে চলে যায়৷ মেঘ যেতে আখি মনি রেগে ফুঁসে উঠে বলে,

"দেখছো আম্মা যে বিপদের আশঙ্কা করছিলাম সেই বিপদটাই ঘটলো৷ আর আমি জানি এই সব বড় বউয়ের কারণে হইতাছে৷"

"আম্মা কিছু একটা করেন আপনার ছোট পোলা তো কোন কাজ করে না ৷ জমি বর্গা দিয়া যা পায় তাই সংসারে দেয়৷ এহন যদি বড় ভাই সে গুলো নিয়া যায় তাহলে কী হইবো?"

"আহ ছোট বউ ফ্যাচ ফ্যাচ কইরা না কাইন্দা থালা বাসন গুলা ধুইয়া আনো৷ আর আমার উপর ছাইড়া দেও কী করন লাগবো কী লাগবো না সেটা আমি বুঝমু৷ তোমাগো যা কইছি তাই করো৷"

আখি আর মনি রেগে থালা বাসন নিয়ে পুকুর পাড়ে চলে যায়৷ এদিকে জায়েদা বেগম সত্যি চিন্তায় পরে গেল৷ সোহেলকে কী বলে এই সব শান্ত করবে তা ভেবে উঠতে পারছে না৷ তবে মেঘ কে সব কিছুর জন্য দায়ি করে মনে মনে এক ভয়ংকর পরিকল্পনা করে নিলো জায়েদা৷

(১৩)

ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি নিয়ে এসে সোহেল কে দিলে সোহেল পানিটা খেয়ে নিয়ে বলে,

"ধন্যবাদ মেঘ তোমার জন্য আজ আমার সামনে এত বড় একটা সত্য চলে আসলো৷ যাদের বিশ্বাস করলাম তারা'ই আমার বিশ্বাস ভাঙলো!"

"চিন্তা করবেন না৷ আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে৷ এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন কল্যান লুকিয়ে আছে?"

সোহেল মেঘের কোলে মাথা রেখে বলে,

"জানো তো মেঘ অল্প বয়সে বিদেশ পাড়ি দিয়ে সংসারের হাল ধরলাম৷ না খেয়ে দিনের পর দিন কত না কষ্ট করেছি আজ তার মূল্য পেলাম৷ টাকার কাছে সন্তানের ভালোবাসা, ত্যাগ, বা সন্তানের কোন মূল্য নেই৷ তাই আজ আমি আমার সিধার্ন্ত আব্বাকে জানিয়ে দিয়েছি৷"

"কী সিধার্ন্ত নিয়েছো?"

"আখি,সাথী,মিলাকে এই বাড়ি ছাড়তে হবে৷ তবে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিবো৷ আর কিছু সম্পত্তি সবুজকে দিয়ে বাকিটা নিজের নামে করে নিবো৷ এর অন্যথায় হলে আমি ঘর ছাড়বো সেটাও জানিয়ে দিয়েছি৷"

মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

"এত সব ঝামেলা আমার জন্যই হলো তাই না?"

"না একদম না৷ তুমি বলেছো বলে আজ আমি জানতে পারলাম এত বছর আমার পরিবার আমাকে ঠকিয়ে আসছে৷"

মাগরিবের আগে আগে কান্নার আওয়াজ শুনে মেঘের ঘুম ভেঙে যায়৷ সোহেলের অনেক আগেই ঘুম ভেঙে গেছে তবুও মেঘ কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে ছিলো৷ মেঘ চোখ মেলে ওঠার চেষ্টা করতে সোহেল বলে,

"বউ আর একটু ঘুমাও এখন উঠবে না৷"

"আরে কে যেন কাদঁছে শুনতে পাচ্ছো না? আমাকে দেখতে দেও কী হয়েছে?"

"একদম না৷ তোমার ওই সবে ঢুকতে হবে না৷"

"ঠিক আছে ঢুকলাম না কিন্তু এখন তো ছাড়ো সন্ধ্যা হয়ে গেছে৷ আম্মা কি ভাববে বলো তো?"

সোহেল এবার মেঘকে ছেড়ে দিয়ে বললো,

"কোন ভারি কাজ করবে না হালকা কাজ করবে৷ আর কে কী করছে সেটা তোমার না দেখলেও চলবে শুধু নিজের খেয়াল রাখবে৷"

"ওকে জনাব৷"

মেঘ মিষ্টি করে হেসে বলে শাড়ি ঠিক করে রুম থেকে বার হলো৷ রুম থেকে বের হতেই মেঘের বড় ননদ কান্নারত অবস্থায় মেঘের দিকে হিংস্র চাউনিতে তাকিয়ে তেরে আসতে নিলে মেঘ ভয় পেয়ে যায় কিন্তু হঠাৎ পাশে সোহেল কে দেখতে পেয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে আখি ওখানে দাড়িয়ে আছে সামনে আর এগোলো না৷

সোহেল রেগে তার আম্মাকে ডাকতে লাগলো,

"আম্মা আম্মা কোথায় তুমি?"

হন্তদন্ত হয়ে বড় ছেলের হাকডাক শুনতে পেয়ে ছুটে এসে বলে,

"কী হয়ছে বাবা?"

"আম্মা তোমার বড় মেয়ে সাহস কী করে হয় মেঘের দিকে তেরে আসার? তোমার মেয়ে কী ভুলে গেছে মেঘ সম্পর্কে তার বড় ভাবি হয়?" জায়েদা দাঁত কিড়মিড় করে আখির দিকে তাকিয়ে বলে,

"বেয়াদপ মাইয়া এই শিক্ষা দিছি তোগো আমি? তুই জানোস না বড় বউ পোয়াতি? কোন সাহসে তুই বড় বউমার দিকে তেরে যাস? কাল সকাল হইলে তোর জিনিস পত্র নিয়া চইলা যাবি এ বাড়িতে তোগো আর জায়গা হইবো না৷"

জায়েদার কথা শুনে আখি সহ তার দুই বোন ও কান্না করতে লাগলো৷ মেঘ এতোক্ষণে বুঝতে পারলো আসল কাহিনী৷ এরা সবাই এখন তাকে দোষারোপ করছে৷ তাতে মেঘের কিছু যায় আসে বলে মনে হয় না৷ মেঘ ফ্রেস হয়ে চা নাস্তা বানিয়ে সবাই কে দেয় তবে তার ননদ জা কেউ সে চা নাস্তা মুখে তোলে না৷ তবে তাতে মেঘের কী? মেঘ নিজে খেয়ে বাকি খাবার পাশের বাসায় চাচা শশুর কে ডেকে খাইয়ে দেয়৷ রাতে সবাই এক টেবিলে খেতে বসে না৷ সবুজের বিকেল থেকে খোজ নেই৷ শহরে গিয়ে দলিল পত্র ঠিক করে সোহেলের নামে করার জন্য দৌরঝাপ করছে আর এই দিকে জামাইরা তাদের দেওয়া ভিটা ঠিকঠাক করতে ব্যস্ত৷ তাই টেবিলে আজ শুধু আমজাত আর সোহেল৷ সোহেল নিজের মত করে খেতে খেতে বলতে লাগলো,

"আব্বা কয়েকদিন আগে দুই গরু যে বিক্রি করলেন সে টাকা কোথায়?"

সোহেলের কথা শুনে আখি আর মিলার পা থেমে গেল৷ কারণ সে টাকা তাদের দুই জামাইকে দিয়েছে আমজাত তা এখনো সোহেল জানে না৷ তবে মেঘ সবটাই জানে আর সেই সোহেলকে বলেছে৷

"কী হলো আব্বা বলুন কোথায় সে টাকা? আমার কিছু টাকা লাগবো৷"

"কত টাকা লাগবো তোর?"

"চার লাখ৷"

টাকার এমাউন্ট শুনে আমজাতের চোখ কপালে ওঠার উপক্রম৷

"চার লাখ টাকা দিয়ে কী করবা বাজান?"

"দরকার আছে৷ টাকা গুলো কাল বিকেলের মধ্যে লাগবো আব্বা আপনি জোগাড় কইড়া রাখবেন৷"

এই বলে সোহেল উঠে গেল৷ আর এদিকে আমজাত সহ তার বড় ও ছোট মেয়ের কপাল দিয়ে ঘাম ছুটে গেছে৷ টাকা গুলো দুই বোন গহনা কিনবে বলে ব্যবসার নাম করে নিয়ে গুছিয়ে রেখেছিলো কিন্তু কে জানতো টাকা গুলো এভাবে হাত ছাড়া হবে? পরের দিন বিকেল বেলা সবুজ সহ তার বাবা এসে সোহেলের রুমে হাজির হয়ে বলে,

"এই নেও ভাই তোমার জমির দলিল৷"

"আর এই নে সোহেল তো টাকা৷"

সোহেল টাকা আর দলিল নিয়ে আলমারির লকারে রেখে তালা দিয়ে বলে,

"আব্বা তুমি যাও আমার সবুজের সাথে কথা আছে৷"

আমজাত ছেলের কথা শুনে রুম থেকে চলে যায়৷ তখন সোহেল বলে,

"আমি জানি সবুজ এখনো দুই বিঘা জমি তোর নামে আছে সে গুলো তুই আমার নামে দিসনি৷"

সবুজ তার ভাইয়ের কথা শুনে কী বলবে বুঝে উঠতে পারছে না কিন্তু তার ভাই কি করে জানলো এটাই সবুজ বুঝতে পারছে না৷

"কিরে কি ভাবছিস? এটাই তো আমি কী করে জানলাম?"

সবুজ মাথা নিচু করে আছে৷

"দেখ ভাই তুই যতটা আমাকে বোকা ভাবিস আমি ততটাও বোকা নই ভাই৷ আমি বিদেশ থেকে আসার পর সব খোঁজ খবর নিয়েছি আর দলিল দেখে তো বাকিটা ক্লিয়ার হলো৷ তবে তোকে আর ওই দুই বিঘা জমি আমার নামে করে দিতে হবে না৷ ওটা তোরই থাক৷"

সোহেলের কথা শুনে সবুজ অবাক চোখে তাকিয়ে বললো," কী বলছো ভাই? সব জেনেও এই কথা বলবে?"

"কেন বলবো না তুই আমার আদরের ছোট ভাই৷ তুই আমাকে আগে জানিয়ে দিলে হয়তো এত কিছু হতো না কিন্তু তুই আমার থেকে সবটা লুকিয়ে গেলি৷"

"মাফ করো ভাই জীবনে আর কখনো তোমাকে না জানিয়ে কিছু করবো না৷"

সোহেল হাসি মুখে ছোট ভাইকে বুকে টেনে নিলো৷ আড়ালে দাড়িয়ে মেঘ সবটা দেখে মুচকি হেসে চলে গেলো৷ সন্ধ্যে নাগাদ তিন মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তাদের জিনিস পত্র নিয়ে তৈরি হয়ে নিলো৷ মেঘ তার তিন ননদকে থামানোর জন্য যেতে নিলে তৎক্ষনাৎ পেছন থেকে মেঘের হাত টেনে ধরে...........

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন