বিশ মিনিটের পথ অতিক্রম করলেই দুটো মল আছে। তন্ময় সেখানেই চলে যেতো বাজারসদাইয়ের জন্য। তবে জবেদা বেগম পূর্বেই ছেলের হাবভাবের সঙ্গে পরিচিত বলে; দৃঢ়ভাবে বলে দিয়েছেন এলাকার বাজার হতে তাজা শাকসবজি গুলো নিয়ে আসতে। তাদের এলাকার বাজার আবার বেশিদূর নয়। দশ-পনেরো মিনিটের রাস্তা কেবলমাত্র। এসময়ে বাজারে তরতাজা শাকসবজি উঠেছে। অগ্যত বাধ্য পুত্রের ন্যায় তন্ময় বাজারের উদ্দেশ্যে বেরোল। অরু তার পাশেই শান্তশিষ্ট পদচারণ চালিয়ে হাঁটছে। ছোটোখাটো উচ্চতার সে তন্ময়ের কাঁধের সামান্য নিচুতে পড়ছে। সূর্যের তাপমাত্রা তখন ক্ষীণ। নরম বাতাস বয়ে চলেছে। আবহাওয়া চমৎকার। দুজনের হাঁটার গতি সাধারণ, কোমল। নিপুণভাবে হেঁটে যাবার তালের একফাঁকে অরুকে খেয়ালে রাখছে তন্ময়। সুকৌশলে অরুকে সুরক্ষিত পাশটায় হাঁটতে দিয়ে, সে হয়েছে দৃঢ় দেয়াল।
চলার পথে সুপরিচিত অনেকের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তন্ময় ভদ্রতার খাতিরে থেমে থেকে দু-বাক্যের আলাপ জুড়ছে। অরু চুপচাপ পাশেই দাঁড়িয়ে থাকছে সেসময়টুকু। তন্ময় বাদে ওর আর কোনোপ্রকার কোনোকিছুতেই মাথাব্যথা নেই। মেয়েটার এহেন উদাসীনতা উপলব্ধি করে সে অগোচরে ঈষৎ হাসল। এসময় বাজারে কিঞ্চিৎ ভীড়ের-হৈচৈয়ের দেখা মিলল। তন্ময় পকেট থেকে লিস্টের কাগজ বের করল। চারিপাশে বিচক্ষণতার দৃষ্টি ফেলে তাকাল। অরুর তুলতুলে নরম ডান হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলো। এগুতে-এগুতে সতর্ক করল,
‘পাশেপাশে থাক।’
অরুর অষ্টাদশী হৃদয়ে তখন উষ্ণ পরশের তীক্ষ্ণ অনুভূতির বিরাজ।
সে কোনোমতে দুবার মাথা নাড়াল। একচিত্তে চেয়ে রইল পুরুষালি হাতের মুঠোতে থাকা তার ছোটোখাটো হাত খানার পানে। দুটো একত্রিত হওয়া হাতজোড়ার দৃশ্যটুকু নির্নিমেষ উপভোগ করল। তন্ময় তখন ব্যস্ত কেনাকাটাতে। গুনেগুনে বিশ মিনিট বাজারে চলে গেল। তালিকায় থাকা শাকসবজি নেয়া হতেই একটি রিকশা থামাল। অরু উঠে বসতেই, তন্ময় পাশে উঠে বসল। দুহাতে তার শাকসবজির ব্যাগ। তন্ময় এযাত্রায় উপলব্ধি করল অরু উশখুশ করছে। আড়ে-আড়ে চেয়েই চলেছে। এবারে ভ্রু তুলে দৃষ্টিতে দৃষ্টি মেলাতেই, অরু চোরের মত এলোমেলো দৃষ্টিতে; এদিক-ওদিক তাকাতে লাগল। তন্ময় নিবিড়ভাবে ওর সুশ্রী মুখমন্ডল দেখে শুধাল,
'কিছু হয়েছে?’
অর অকপটে জবাবে মাথা নাড়াল। যার অর্থ বোঝাল কিছুই হয়নি। মুখে সে কুলুপ এঁটে থাকল। তন্ময় জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তখনো চেয়ে। যেন দৃষ্টিতেই বলছে, ‘দ্রুত বল কী হয়েছে!’ অরু আড়চোখে চেয়ে এযাত্রায় মুখ খুলল,
'কিছু হয়নি। আমি শুধু দেখছিলাম।’
তন্ময় নির্বিকার হাবভাবে বলল,
'আমাকে নাকি?’
অরু বিরক্ত গলায় জানাল,
‘আশপাশটা দেখছিলাম।’
তন্ময়ের কণ্ঠজুড়ে নির্লিপ্তের ছাপ,
‘ওহ, আচ্ছা। কেমন লাগল আশপাশটা? সুদর্শন তো?’
অরুর মেজাজ বুঝি খারাপ হলো। কণ্ঠস্বরে একরোখা তেজী ভাব। দুধাপে উচ্চমাত্রায় পৌঁছাল,
‘আশপাশ সুদর্শন হয় কীভাবে, ভাইয়া? সুদর্শন পুরুষদের সৌন্দর্য বর্ণনাতে ব্যবহার করা হয়। আমি তো আমার আশেপাশে কোনো সুদর্শন পুরুষ দেখতে পারছি না।’
তন্ময় ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করে বসল, ‘ইউ শিয়র?’
অরু অন্যপাশে ফিরে তাকিয়েছে ইতোমধ্যে। ওর কালো ঘন চুলগুলো ঝুটিতে বাঁধা। ওড়নার একাংশ তার কোলে পড়ে। অরুর মুখশ্রীর একপাশটা তন্ময় দিব্যি উপভোগ করল। লালাভ গাল দুটো জাহির করছে অরু লজ্জিত। ওর লাজুক হাবভাব লুকোনোর বৃথা প্রচেষ্টা সে দারুণভাবে, তৃপ্তিসহকারে ভক্ষণ করল। এবারে রিকশাটা এসে থামল শাহজাহান বাড়ির সামনে। অরু তৎপরে নেমে এলো। আগেভাগে ভেতরে চলে গেল। দারোয়ান চাচা ছুটে এলেন। বাজারের ব্যাগ গুলো দুহাতে তুলে নিলেন। নিজউদ্যোগে অগ্রসর হলেন ভেতরে। রিকশা ভাড়া মিটিয়ে তন্ময়ও ভেতরের উদ্দ্যেশ্যে হাঁটা ধরল। অরু রান্নাঘরে ছোঁকছোঁক করছে। গোরুর মাংস রান্না করতে চাওয়ার ভূতটুকু; এখনো মস্তিষ্ক হতে বিতাড়িত হয়নি।
সুমিতা বেগম গলা তুলে বললেন,
‘গোরুর মাংস গুলো কেন নষ্ট করতে চাচ্ছিস, হ্যাঁ? আজ মেহমান আসবে। আবোলতাবোল কাজকর্ম অন্য একদিন করিস।’
অরুর ভোঁতা মুখটুকু দেখে তন্ময়ের হৃদয় নরম হলো। মায়া লাগল।
একটু নাহয় কষ্ট করে খেয়ে নেবে। দশমিনিটের কষ্ট প্রেয়সীর সম্মুখে নিছক বটে। তন্ময় লিভিংরুমের সোফায় বসতে নিয়েই উচ্চকণ্ঠে বলল,
‘ইচ্ছে যেহেতু হয়েছে, ওকে রাঁধতে দিন চাচি।’
সুমিতা বেগম অসহায় অনুভব করেন,
‘তোদের আশকারাতেই এই মেয়ে এমন বাঁদর হয়েছে।’
জবেদা হেসে বলেন, ‘থাম তো। আমাদের মেয়ের রান্না আমরাই খাব। মেহমানদের জন্য তো রান্না হচ্ছে। এই অরু, আয় বড়ো মায়ের কাছে। আমি পাশ থেকে একটুকরো বলেকয়ে দিব। ঠিকাছে?’
মুরগি যেভাবে চাল খায় অরু সেভাবেই লাগাতার মাথা দোলাল। ত্বরান্বিত পায়ে এগিয়ে গেল জবেদা বেগমের পাশে। মনপ্রাণ লাগিয়ে নিপুণভাবে শিখতে লাগল গোরুর মাংস রান্না। অদূর হতে এই দৃশ্য দেখে তন্ময় ভাবল,‘খাবারের টেস্ট ভালো নাহলেও তার হৃদয় নিশ্চিত আজ প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ হবে।’
দ্বিপ্রাহরিক নামাজের আগ পর্যন্ত রান্নাঘর জুড়ে রান্নাবান্না চলল।
তন্ময় নিজ কক্ষে ফিরে এসেছে। ওয়ার্ক-আউট করে গোসল নিয়ে ফেলেছে। ফিন্যান্সিয়াল মিসম্যানেজমেন্টের বইটা নিয়ে বারান্দায় বসেছে। মনোযোগ সহ সে বইটা পড়ছে। এরমধ্যে তাকে বিরক্ত করতে দু-তিনবার দীপ্ত এসেছে। ল্যাপটপ নেবার অযুহাত ধরে শাবিহাও মিনিট খানেক পূর্বে এলো। তৃতীয় জন অর্থাৎ রুবি এলো এখন। তন্ময় ত্বরিত বইটা বন্ধ করল। গুরুগম্ভীর মুখে গম্ভীর কণ্ঠে ধমকের সুরে শুধাল,
‘কী চাই?’
রুবি চমকাল। বুঝল দুজনের দুষ্টুমির অপরাধ তার কাঁধে পড়েছে। অতএব তোতলানো সুরে জানাল,
‘কিছু না, ভাইয়া।’
বলেই সে একদৌড়ে পালাল। তন্ময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়াল। বাসায় সবগুলো বাঁদর ফিরেছে। এখন আর শান্তিমগ্নতায় বই পড়া সম্ভব নয়। বইটা শেল্ফে রেখে পিছু ফিরতেই অরুর আদুরে মুখশ্রীর দর্শন হলো। তন্ময় ভ্রু তুলে বলল,
'আপনার কী প্রয়োজন?’
অরু মুহূর্তে মুখ ভেঙাল। হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল। চলে যাওয়ার জন্য এসেছিল বুঝি? কপালে দু’আগুল ঘষে তন্ময় দীর্ঘশ্বাস ফেলল। দেয়াল ঘড়িতে নজর পড়তেই দেখল দুটো বাজল বলে। সেলফোন হাতে তুলে দেখল মিসড কল এসে আছে। কল ব্যাক করে কথা বলছিল। ওসময় দীপ্ত দুয়ার হতেই চেঁচিয়ে ডাকল,
‘ভাইয়া মেহমান এসেছে। বড়োমা ডাকছে।’
ডেকেই উধাও সে। তন্ময়ের হাতে কেলানি খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে তার নেই। কথা শেষ করে তন্ময় কক্ষ ছেড়ে বেরোল। লিভিংরুম হতে ভেসে আসছে আলাপের উচ্চধ্বনি। সিঁড়ি বেয়ে নামতেই লিভিংরুমে বসা রাহনুমা বেগম এবং রেবেকার সম্মুখে পড়তে হলো।
ভদ্রতাসূচক অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে সালাম জানাল। রাহনুমা বেগম হেসেদুলে তন্ময়ের সম্বন্ধিত আলাপ শুরু করলেন। রেবেকা উঠে এসে হেসে প্রশ্ন করল,
‘কেমন আছেন?’
তন্ময় সাবলীলভাবে বলল,
‘ভালো। আপনি?’
রেবেকার হাস্যজ্বল মুখে জানাল,
‘আলহামদুলিল্লাহ্। আজ অফিস যাননি!’
তন্ময় নিজ মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, নিজ মনে বিড়বিড়িয়ে উঠল, ‘প্রেয়সীর মনমালিন্যতা ভাঙাতে চুমু খেয়েছি। সেই চুমু খেয়ে আমি ক্লান্ত। তাই আর অফিস যাইনি।’ মনে অশ্লীল চিন্তাভাবনা জাহির করলেও মুখে সে জেন্টালম্যান,
‘একদিন ব্রেক নিলাম।’
অরুর ছায়াও এতক্ষণ আশেপাশে ছিলো না। তবে এযাত্রায় কোথা হতে যেন উদয় হলো। জাসুসের ন্যায় নাকমুখ কুঁচকে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সরু চোখে বারংবার রেবেকার মুখপানে চাইছে। জবেদা বেগম হেসে আহ্লাদিত ভঙ্গিতে মেহমানদের ডাইনিংয়ে আসতে বললেন। ইতোমধ্যে মুফতি বেগম, সুমিতা বেগম খাবারদাবার পরিবেশনের কাজে লিপ্ত হয়েছেন। তন্ময় একপাশে বসল। তার বাম পাশে এসে বসল দীপ্ত। ডান পাশে আশ্চর্যজনক ভাবে রেবেকা বসেছে। এতে তন্ময় নির্বিকার এবং উদাসীন। বিষয়টা সে খেয়াল করেনি। সে তখনো অদূরে দাঁড়ানো অরুকে দেখছে। চোখমুখ ওর থমথমে। কাঠখোট্টা দৃষ্টি একবার তারপানে ফেলল। হঠাৎ কী হলো মেয়েটার? রেগে আছে কেন? ওর হাতের রান্না করা গোরুর মাংসের তরকারি চাচ্ছে না বলে কী? তন্ময় দেখল তার থেকে বেশ দুরত্ব বজায় রেখে বসেছে। প্লেট উল্টিয়ে তৈরি খাওয়াদাওয়ার জন্য। সে তো উল্টো আশাতে বসে অরু উদ্বিগ্নতার সহিত তরকারি হাতে তার সামনে হাজির হবে। ক্রমান্বয়ে তাকে খেতে বলবে! শাবিহা গরম গরম ভাত নিয়ে বলল,
‘আমার পাখিটার তরকারি কোথায়?’
সুমিতা বেগম হেসে বলেন,
‘ওর তরকারি খাওয়ার মতো হবে নাকি?’
শাবিহা দৃড়ভাবে বলল,
‘কেন হবে না? আনো তাড়াতাড়ি।’
দীপ্ত, রুবিও সুরে সুর মেলাল। অগ্যত সুমিতা বেগম অরুর তরকারিটা পরিবেশন করলেন। তন্ময় আগ বাড়িয়ে আলগোছে নিজের পাতে বেশ খানিক তরকারি তুলে নিলো। তার পাশে বসা রেবেকা হেসে শুধাল,
‘অরু বুঝি এই প্রথম রেঁধেছে? তাহলে তো আমারও খেয়ে দেখা দরকার।’
অরু ফিনফিনে পাতলা গলায় বলল,
'আপনার মুখের টেস্ট নষ্ট হয়ে যাবে, আপু।’
তন্ময় বিনাসংকোচে তরকারিতে ভাত মাখিয়ে মুখে তুলল। সঙ্গে সঙ্গে অবাকের চূড়ান্তে চলে গেল। চোখ বড়ো বড়ো করে তাকাল অরুর পানে। অরু এবারে আগ্রহী চোখে চেয়ে। শাবিহা দু লোকমা খেয়ে চেঁচাল,
‘এই তরকারি আমাদের অরু রেঁধেছে? আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না। এতো সুস্বাদু হয়েছে।’
দীপ্ত আর রুবিও আশ্চর্যের সপ্তমে,
‘অরুর রান্নার হাত যে এতো দারুণ হবে কে জানতো?’
জবেদা বেগম হেসে আদুরে ভঙ্গিতে অরুর মাথা বুলিয়ে বলেন,
‘গোরুর মাংস প্রথম রান্না করলেও মেয়েটা শিখছে মাস খানেক যাবত। আমাকে বেশ কয়েকবার রাঁধতে দেখেছে। কুটকুট করে একেকটি স্টেপ লিখে নিয়েছে। রান্না সুস্বাদু না হয়ে যাবে কোথায়?’
তন্ময় ত্বরিত লোকমার পর লোকমা তুলে খাচ্ছে। শাবিহা ত্বরান্বিত খেতে থাকা বড়ো ভাইয়ের পানে চেয়ে; দুষ্টুমি সুরে বলল,
'ভাইয়ার ফেভারিট তরকারি গোরুর মাংস। ভাইয়া, কেমন লাগল?’
তন্ময় খেতে খেতেই জানাল, ‘মজা হয়েছে।’
রুবি দুষ্টুমিতে আরেকধাপ এগিয়ে, ‘ব্যস, এতটুকুই? অরুর এতো স্নেহের সঙ্গে রান্না করা তরকারির প্রশংসা এক শব্দে হতে পারে না।
আরো কিছু শব্দ মিলিয়ে বলো।’
তন্ময় ভ্রু তুলে চাইতেই চুপসে গেল রুবি। খাওয়াতে ভীষণভাবে মনোযোগী হয়ে উঠল। ওকে চুপ করিয়ে তন্ময় তাকাল অরুর পানে। এবারেও অরু মুখ বাঁকাল। আশ্চর্য! এই মেয়েটার হলো কী? পরমুহূর্তেই শুনল পাশে বসা রেবেকা তাকে ডাকছে। হেসে এটা-সেটা নিয়ে কথাবার্তা বলার প্রচেষ্টায়। তন্ময় আড়চোখে পাশে বসা রেবেকার দিকে তাকাতেই চোক্ষু কপালে। তৎপর অরুর বিষাদময় মুখে চেয়ে মস্তিষ্ক সচল হলো। এই রেবেকা পাশে বসেছে বলে কী ও মুখ ফুলিয়ে আছে? মেয়েমানুষের মন বোঝা বড়ো কঠিন ব্যাপারস্যাপার! তন্ময় চটপট চেটেপুটে খেয়ে প্লেট ফকফকে পরিষ্কার করে ফেলল। তক্ষুণি উঠে পড়ল চেয়ার হতে। যেমন এই চেয়ারে কাঁটা বেছানো। সিঙ্কে হাত ধুয়ে আর সেখানে দাঁড়াল না। ওপরে চলে এলো। অপেক্ষা করতে থাকল অরুর আসবার। তবে ঘন্টার পর ঘন্টা গেল, অরু আর আসলো না। ঊরুতে থাকা ল্যাপটপ সরিয়ে বিরক্ত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে পড়ল তন্ময়। দরজা খুলতেই দেখল অরু দাঁড়িয়ে। কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে কে জানে! তন্ময় দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বলল,
‘আসছিস কেন? ভেতরে আয়।’
অরু ছোটো ছোটো পদচারণে ভেতরে এলো। পিটপিট চোখে এদিক-ওদিক চাইছে। অধৈর্য তন্ময়ই শেষমেশ শুধাল,
‘তোর হাতের রান্না কেমন লাগল জানতে চাইবি না?’
অরু বিড়বিড়িয়ে বলল,
‘বলেন।’
তন্ময় ঈষৎ অদেখা হাসে। কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলে,
‘ভীষণ সুস্বাদু। আমাকে মাঝেমধ্যে রান্না করে খাওয়াতে হবে। খাওয়াবি তো?’
ছোটো এই কমপ্লিমেন্টে অরুর থমথমে মুখমণ্ডলে রশ্মি ছড়াল।
লাজুক ভঙ্গিতে হেসে মাথা দোলাল। ছোটো করে বলল,
‘হুঁ।’
.
.
.
চলবে.............................