আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

বন্য প্রণয় - পর্ব ২১ - তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


ছেলেমেয়েদের সব সময় ভালো কিছু শেখানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন বাবা-মা। তাহমির বাবা-মাও তার ব্যতিক্রম নয়।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বসার ঘরে বসে আড্ডা দিচ্ছে আয়ান,সহন ও তৃষা। তাহমি পেয়াজু ভাজি করছে রান্নাঘরে। গরম গরম পেয়াজুর সাথে আড্ডা ভালো জমবে। অনিকের সাথে কথাবার্তা বলে পরিবারের সবারই বেশ ভালো লাগে। তাই আগামী শুক্রবার অনিকের বোন ও বোনের স্বামীকে নিয়ে বিয়ের কথাবার্তা বলতে আসতে বলেছেন তাহমির বাবা। 
" আহা শালিকার মনে এখন কতো আনন্দ! সামনেই তার বিয়ে। আমাকে দেখো! আমার আর কখনো সামনে তো দূর পেছনেও বিয়ে আসবে না।"
সহন আফসোসের সুরে কথাটা বলতেই বসার ঘরে হাসির রোল উঠলো। তৃষার অবস্থা হাসতে হাসতে শেষ। আয়ান কোনোরকমে হাসি থামাল। তাহমি তো রান্নাঘরে কাজ করতে করতে সবকিছুই শুনছে আর লুচির মতো রাগে ফুলছে! আজকে রাতে খবর আছে বেটা সহনশীলের।
" দুলাভাই আপনি পারেনও বটে। আপু কিন্তু খেয়ে ফেলবে আমাকে হাহাহা। "
" তা কী আমি জানি না শালাবাবু! আমি তো চাই তোমার বোন আমাকে ইয়াম্মি ইয়াম্মি করে লুটেপুটে খেয়ে ফেলুক। "
শেষের কথাগুলো সহন একেবারে আস্তে করে বলার জন্য কেউ শুনতে পেলো না। আয়ান ভ্রু নাচিয়ে বললো, 
" ফিসফিস করে কিছু বললেন মনে হয়? "

" আরে না শালাবাবু কিচ্ছু বলিনি। তা পেঁয়াজু কি আজ পাবো? না-কি একজন রান্নাঘরে বসেই সেগুলো সাবাড় করে ফেলবে?"
" আমি ছোঁচা না তোর মতো।"
হাতে খাবারের বাটি নিয়ে বসার ঘরে প্রবেশ করলো তাহমি। টেবিলের উপর রেখে দিয়ে এক পাশে দাঁড়াল সে। সবাই হাতে হাতে পেঁয়াজু নিয়ে খেতে শুরু করেছে এরমধ্যেই। 
" এহহ আমি নাকি ছোঁচা! "
" আপু তুমি কিন্তু দুলাভাইকে ভুলভাল কথা বলতেছো।"
তৃষা দুলাভাইয়ের কথায় সমর্থন করে বললো। তাহমি ভেংচি কেটে বলে, " বিয়ে তো হচ্ছে, বুঝবি বর-গুলো কতবড় বদের হাড্ডি হয়।"
" তারমানে বিয়ের নেগেটিভ রিভিউ দিচ্ছ আপাই? বিয়ে তাহলে করবো না?"
তৃষা জোরে হেসে উঠলো কথা শেষে। তাহমি বোনের কথায় কী বলবে ভাবনায় পড়ে গেল।
" শালিকা তুমি নিশ্চিতে বিয়ে করো। বিরোধী দলের কোনো কথা শুনবে না। অনিক সাহেব ভীষণ ভালো লোক,একদম আমার মতোই! "
" তুই ভালো? তুই ভালো এই কথা যদি ‘ভালো ’ নামক শব্দটা শোনে তাহলে সে নিজেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে।"
সহন কিছু বলতেই যাবে এমন সময় আমেনা ইসলাম এসে সবাইকে রাতের খাওয়াদাওয়া করে নিতে বললেন। আবহাওয়া ভালো না। মেঘ জমেছে আকাশে। যখন তখন কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। তাই বিদ্যুৎ যাওয়ার আগেই খাওয়াদাওয়ার পাট চুকিয়ে ফেলাই উত্তম।

ডাইনিং টেবিলে বসে ডিনার করছে বাবা ও মেয়ে। গত কয়েকদিন ধরেই মেয়ের পরিবর্তন লক্ষ্য করছেন অনিমার বাবা। 
" অনিমা!"
" হ্যাঁ বাবা বলো।"
" কিছুদিন ধরে দেখছি তুমি কেমন আলাদা আচরণ করছো! আগের মতো নেই তুমি। তোমার কি কিছু হয়েছে? কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলো মা। আমি তোমার মায়ের মতো তোমার বন্ধু হয়ে উঠতে না পারলেও এতটুকু তো জানতে পারি!"
অনিমা খাবারের শেষ লোকমা মুখে দিয়ে পানি পান করলো। 
" আমার কিছু হয়নি বাবা। তোমরা সবাই কেনো যে বলছো আমি আগের মতো নেই বুঝি না। শুধু লেখাপড়ার দিকে একটু মনোযোগ দিয়েছি।"

মেয়ের কথায় মৃদু হাসলেন তিনি। অনিমা হাত ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো । 
" আচ্ছা তাহলে ঘরে যাও। শুভ রাত্রি। "
" ঠিক আছে বাবা। সেইম টু ইউ। "

সঠিক সময় এলে অনিমা নিজে থেকেই তার মনের কথা বলবে বাবাকে। মেয়েটা এখন এমন পর্যায়ে আছে নিজের মনের কথা নিজেও বুঝতে পারছে না। এজন্যই বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে তার মন মানসিকতা। 

আকাশে মেঘগুলো এদিকে ওদিকে ছোটাছুটি করতে ব্যস্ত। সাথে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। থেকে থেকে বাতাসের গতিবিধিও ভালোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারেন্ট তো কখন চলে গেছে তার খেয়ালও নেই সহন ও তাহমির। মোমবাতি জ্বেলে যে যার মতো বিছানার দুই দিকে শুয়ে আছে। সহন যে ইচ্ছে করে এরকম এড়িয়ে যাচ্ছে তাহমিকে সেটা সে ভালোই বুঝতে পারছে। তোর একার ইগো আছে? আমার নেই? এসব ভেবে তাহমি নিজেও স্বইচ্ছায় সহনের কাছাকাছি যাচ্ছে না। বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে ঝড়ো হাওয়া। সহন হঠাৎ শোয়া থেকে উঠে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। সবকিছুই তাহমি খেয়াল করছে। জানাল দিয়ে বাইরে তাকিয়েছে সহন৷ আকাশের দিকে তাকিয়ে গুনগুন করে গান ধরলো সে.. 

উমম উমম উমম...
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি , 
এ কোন অপরূপ সৃষ্টি। 
এত মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি, 
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি।
 বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি, 
এ কোন অপরূপ সৃষ্টি। 
এত মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি,
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি। 
এত মেঘের কোণে কোণে 
এল বাতাস হুহুশনে।
 এত মেঘের কোণে কোণে
 এল বাতাস হুহুশনে। 
রিমঝিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি
 এ কি দুষ্ট অনাসৃষ্টি। 
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি 
ওগো বৃষ্টি তুমি মিষ্টি। 
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি, 
এ কোন অপরূপ সৃষ্টি। 
এত মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি, 
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি।

গান শেষে পেছন ফিরে তাকালো সহন। তাহমি আগের মতো শুয়ে আছে। যা ভেবেছিল তা হচ্ছে না! অগত্যা সহনও গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। কিন্তু পরক্ষণেই চমকাল সে। তাহমি হঠাৎ করে সহনের পেটের উপর উঠে বসেছে। সহনের তো চক্ষু কপালে উঠার জোগাড় হয়েছে। 
" এই তাহমি পেত্নীতে ভড় করলো নাকি তোকে?"
" না! তোকে জ্বালিয়ে মারবো বলে নিজেই পেত্নী হয়ে গেছি। "
তাহমি সময় দিলো না সহনকে। দু'জনের বক্ষ যেখানে একত্র হয় সেখানে ঝুঁকে একহাতে সহনের চুলগুলো আঁকড়ে ধরে অন্য হাতে কাঁধ চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। সহসাই দু'জনের শরীরে শিহরণ বয়ে গেলো। সহন এটাই চাচ্ছিল এতদিন। তাহমি যেনো নিজে থেকেই তাকে আদর করে কিংবা কাছে পাওয়ার জন্য আকুল হয়ে যায়। সহন নিজের হাত তাহমির পিঠে রেখে জোরে জোরে স্লাইড করছে। তাহমিও চুলগুলো আঁকড়ে ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মতো ওষ্ঠদ্বয়ে তার থাবা বসিয়ে যাচ্ছে। ক্ষণকাল বাদে থামলো তাহমি। বিছানায় বসে প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ফেলতে ব্যস্ত হয়ে গেছে সে। সহন শুয়ে আছে। তাহমি ওর দিকে তাকাতেই উঠে বসলো। খোলাচুল খোঁপা করে দিলো তাহমির। তাহমির অবাক করা দৃষ্টি দেখে মৃদু হাসলো সহন।
" ভাবছিস চুল বাঁধলাম কেনো?"
" হ্যাঁ। এমনিতে তো চুল খুলে দিস মাঝে মধ্যে। "
" এখন কাজের সময়। এতক্ষণ এই চুলগুলো আমার চোখেমুখে পড়ে ভীষণ বিরক্ত করছিল রে। এখন আর পারবে না।"
" বুঝলাম এবার।"
সহন তাহমিকে কোলে তুলে বসালো। দু'হাতে গলা আঁকড়ে ধরে বসলো তাহমি। এক হাত দিয়ে পেটে স্লাইড করতে করতে অন্য হাতে কামিজের পেছন দিক থেকে চেইন খুলে দিলো সহন। কেঁপে উঠল তাহমি। একটু লজ্জা লজ্জা লাগছে এখন৷ এভাবে চোখ চোখ রেখে থাকা যায়? সহন তাহমির ভাবগতিক বুঝতে পেরে অন্য দিকে দৃষ্টিপাত করলো। কাঁধ পর্যন্ত নামিয়ে ফেললো কামিজ। গলা থেকে ঘাড় এবং সর্বশেষ ঘাড় থেকে ঠোঁট ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে কাঁধে এসে থামলো সহন। তাহমি চোখ বন্ধ করে ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে। মনে হচ্ছে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে সে। সুখ সুখ যন্ত্রণায় আবিষ্ট হচ্ছে সমস্ত শরীর ও মন।
.
.
.
চলবে...........................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।