অতঃপর তুমিহীনা আমি - পর্ব ০৩ - তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


#অতঃপর_তুমিহীনা_আমি 
#পর্ব_৩ 
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া 



নিজের ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে মুহূর্তেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন নাজমা। বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি। চোখেমুখে পানির ছিটে দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ পর নাজমা আক্তার স্বজ্ঞানে ফিরে আসেন। এস.আই সিফাত নাজমাকে শান্তনা দিতে বললেন,
"নাজমা নিজেকে শান্ত করো। এবার আর খুনি কিছুতেই পালাতে পারবেনা।"
"কী করবে তুমি? তিন তিনটে খুন হয়ে গেছে! আরো আগে যদি খুনিকে ধরতে পারতে,তাহলে আমার একমাত্র ভাইকে এভাবে খুন হতো না।"
নাজমার কথার কোন প্রত্যুত্তর দিতে পারলো না সিফাত। সত্যি বলতে নাজমা খুব একটা ভুলও কিন্তু বলেনি।

ফ্লোরে পড়ে আছে মাসুদ রানার নিস্তেজ দেহ।লাশের চারপাশে ইতোমধ্যেই পুলিশ 'ক্রাইম সিন' লেখা হলুদ ট্যাপ দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। ডিটেক্টিভ রাজন একটু ভালো করে লাশটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন। কিছুক্ষণ দেখার পর পুলিশকে লাশটা অটোপসির জন্য নিয়ে যেতে বলেন রাজন।এস.আই সিফাত রাজনের হাবভাব দেখে জিজ্ঞেস করেন,
"কি ব্যাপার মিষ্টার রাজন? আপনাকে কেমন একটা ভাবুক দেখাচ্ছে?"
"আচ্ছা আপনি কি খেয়াল করেছেন, মাসুদ রানা সাহেবের থুতনিতে লালছে রঙ দেখা গেছে? তাছাড়া উনার চোখে এখনো ভয়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে!"
"রঙের ব্যাপারটা আমিও খেয়াল করেছি। কিন্তু মৃত্যুর পরেও চোখে ভয়! কীভাবে বুঝলেন?"
রাজন একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললেন,
"আসলে আপনিও খেয়াল করে দেখলেই বুঝতে পারতেন। 'রিগার মর্ডিস' বা মৃত্যু পরবর্তী লক্ষণ সমূহের কথা তো আপনি নিশ্চয়ই জানেন।"
এস.আই সিফাত একটু জড়তা নিয়ে বললেন,
"অবশ্যই জানি। তবে ব্যাপারটা খেয়াল ছিলো না।"
"এই কারণেই আমি গোয়েন্দা আর আপনি পুলিশ"
রাজনের কথায় সিফাত একটা মেকি হাসি দিয়ে চলে যান।
রাত দশটার দিকে আসাদ বাড়ি চলে আসে।বেডরুমের দরজা খুলে দেখে মায়া বিছানায় গুঁটিসুটি হয়ে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। একবার ভাবে ডাক দিবে। পরক্ষণেই আসাদ ভাবে না মেয়েটাকে আর জাগাবে না। দেখে মনে হচ্ছে অনেক দিন পর একটু নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। তাই আর এই ঘুমটুকু কেড়ে নিতে চাইছে না আসাদ।

পরেরদিন সকালে,
মায়া চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে আসাদের বুকে একহাত দিয়ে ধরে শুয়ে আছে সে। মায়া তড়িৎ গতিতে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে সোফায় বসে।কোন পুরুষকে স্পর্শ করা যদিও মায়ার কাছে ব্যাপার না তবে সেই পুরুষকে ভালোবেসে আকড়ে ধরা মায়ার কাছে অপরাধ। আর আজকাল আসাদের প্রতি তেমনই ভালোবাসার টান অনুভব করছে মায়া! তাই মায়া নিজেকে যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করছে। এরমধ্যে আসাদও ঘুম থেকে জেগে উঠে। মায়া তখনও সোফায় 'থ' হয়ে বসে আছে।
"কী ব্যাপার? এভাবে বসে আছো কেনো?দেখে মনে হচ্ছে বাঘিনী এক্ষুণি শিকার করবে।"
আসাদের কথায় মায়া স্বম্ভিত ফিরে পায়।
"নাহ তেমন কিছুনা বাবু।"
"ফ্রেশ হয়ে এসো,একসাথে নাস্তা করে তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আমি অফিসে চলে যাবো।"
মায়া শুধু মাথা নাড়লো একবার। তাছাড়া কী বলারও বা থাকতে পারে মায়ার! সে তো চাইলেও বলতে পারেনা ওই নরকে আর যেতে চায়না মায়া।

মায়াকে পৌঁছে দিয়ে অফিসে যেতেই বিদেশে একটা মিটিং করতে যেতে হবে বলে জানতে পারে আসা। সেদিন রাতেই আসাদ মিটিং করতে চলে যায় দেশের বাইরে। আর মায়া আবার তার পুরনো জীবনের নিয়ম মাফিক কাজ করতে থাকে।

এদিকে তিন খুনের তেমন কোন সূরাহা না করতে পারলেও ডিটেক্টিভ রাজন তিনটে খুনের মধ্যেই একটা সদৃশ খুঁজে পেয়েছে। তিনজন ভিক্টিমই মৃত্যুর আগে দৈহিক মিলন করেছিলেন। এদের প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সময় পতিতালয় গিয়েছেন। তাছাড়া খুনের সময় প্রত্যেকের শরীরে নারীদের চুল পাওয়া গেছে। আর চেহারার আশেপাশে লিপস্টিকের দাগ! সবকিছু মিলে যা দাঁড়ায় তা হলো কোন নারী এই খুনের কেন্দ্রে আছে। অথবা নারীকে টোপ হিসেবে কাজে লাগিয়ে খুনি খুন করছে! এস.আই সিফাতও হাল ছেড়ে দেননি। নিজের শালার খুন যেন তাকে কেসটার প্রতি আরো আগ্রহী করে তুলেছেন। নাজমা আক্তার তো প্রতিদিন তার স্বামীর কাছে জিজ্ঞাসা করেন কোনল কিছু জানা গেছে কিনা। প্রতিবারই সিফাত নাজমার কথায় পুরোপুরি সন্তোষজনক কোন তথ্য দিতে পারেনা।

আসাদ প্রায় পনেরো দিন পর ফ্লোরিডা থেকে দেশে ফিরেছে। বিদেশে থাকতে প্রতিটা মুহূর্ত মায়ার কথা মনে পড়েছে তার। মায়ার সাথে থাকলে আসাদ অন্যরকম ভালোলাগা অনুভব করে। আসাদের নিজের জীবনের কষ্টের সাথে মায়ার জীবনেরও কিছুটা মিল থাকার কারণেই হয়তো আসাদের মায়ার প্রতি এই টান অনুভব করা। তাই দেশে ফিরেই আসাদ মায়ার কাছে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে মায়া এক অন্য খদ্দেরের বাড়ি গেছে।দুদিন পর আসবে। কথাটা শুনে আসাদের খুব রাগ উঠে। আসাদ রেগে চুমকি মাসিকে বলে,
"এরপর থেকে মায়াকে আর কোন খদ্দেরের কাছে পাঠাবেন না। যত টাকা লাগে আমি দেবো।"
এই কথা বলে আসাদ পকেট থেকে একটা চেক চুমকির হাতে দেয়। চুমকি মাথা দুলিয়ে শুধু হ্যা বলে। আসলে আসাদের রাগ দেখে চুমকি চুপ করে আছে।
ওইদিন রাতেই মায়া আসাদের কাছে যায়। মায়াকে দেখে আসাদ খুব খুশি হয়।
"একা এসেছো কীভাবে?"
"মাসির লোক দিয়ে গেছে।"
কথা বলতে বলতে মায়ার হাতের দিকে ইশারা করে আসাদ বললো,
"তোমার হাতে এটা কী?"
মায়া নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে ভুত দেখার মতো চমকে ওঠে! আমতা আমতা করে বলে,
"ওহ এইটা তো একটা ঘড়ি! খদ্দের খুশি হইয়া দিয়েছিলো।"
"ওটা এক্ষুণি খুলে ফেলো! আমি কাল তোমাকে ঘড়ি কিনে দেবো।"
আসাদের এরকম আচরণের হেতু খুঁজে পায়না মায়া!
রাতে খেয়েদেয়ে আবারো দুজনে গল্প করতে বসে।কথার ছলে আসাদের কাছে মনসুর আলীর বলা সেই কথাটা জিজ্ঞেস করে,
"বাবু আপনি নাকি মেয়েদের সহ্য করতে পারেন না?"
"কথাটা আগে ঠিক ছিলো। তবে তুমি আমার জীবনে আসার পর এখন সেটা বেঠিক হয়ে গেছে!"
মায়া মাথা চুলকাতে চুলকাতে আসাদের দিকে তাকিয়েই আছে। আসাদ আবার বলতে লাগলো,
"তোমার মা যেমন তোমার কথা না ভেবে চলে গিয়েছিলেন। তেমনি আমার মাও আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো।" 
মায়া আসাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো,
"কী বললেন?"
আসাদ নির্লিপ্তভাবে বললো,
"একদম ঠিক শুনতে পেয়েছো।"
 
আসাদ ঘরে পায়চারি করতে করতে বলতে শুরু করে,
"যখন আমার বয়স আট বছর তখন আমার মা আমার বাবার একজন বিজনেস পার্টনারের সাথে পালিয়ে যান। পরে জানতে পারি ওই ভদ্রলোকের সাথে আমার মায়ের প্রায় পাঁচ বছর ধরে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিলো। পরবর্তীতে আমার মাকে ওই লোক একটা পতিতালয় বিক্রি করে দিয়েছিলো। বাবা এতকিছু সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাই করে ফেলেন। মাকে অনেক ভালোবাসতেন উনি। তাছাড়া সমাজের লোকের কথার তীরের আঘাত তিনি নিতে পারছিলেন না। মাত্র নয় বছর বয়সে মা-বাবা হারিয়ে ফেলি আমি। তারপর আমার দাদা আমাকে লালন পালন করেন। তাই ছোটবেলা থেকেই নারী/পুরুষ সব মানুষকেই ঘৃণা করতাম!"

মায়া আসাদের মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। অতীতে যে এত ভয়ংকর ঘটনা লুকিয়ে থাকতে পারে তা ভাবতেও পারেনি মায়া।আসাদ একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে,
"যখন থেকে বুঝতে শিখেছি মেয়েদের দেখে অনেক দূরে থেকেছি। কিন্তু আমি যখন মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে তখন আমার জীবনে ঐশি আসে।"
"ঐশি?"
"হ্যা,আমার প্রাক্তন! দীর্ঘ চার বছর রিলেশনের পর জানতে পারি সে অলরেডি ম্যারেড এবং তার স্বামী বিদেশ থাকে! অতএব নিজের অজান্তেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলাম! তারপর থেকে অনেক কঠিন হয়ে যাই। যখন শরীরের চাহিদা মেটাতে হতো পতিতালয় যেতাম। ঐশী আমার সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছিল, সমস্ত অভ্যাস।"
"আপনের জীবনে আসলেই ম্যালা কষ্ট!"
"ধোঁকা আর বিশ্বাসঘাতকতা এইসব ছাড়া জীবনে কিছু পাইনি আমি।"
"আচ্ছা বাবু ওই দিন যে লোকটা মারা গেছিল তার কী মরার কারণ পাইছে পুলিশ?"
মায়া আসাদের পাশে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে।
আসাদ ভ্রুঁ উঁচিয়ে বলে,
"কী কথা থেকে কী কথায় চলে আসলা!"
"না মানে সেইদিন কইছিলেন,তহন থেকেই জিগাইতে চাইছিলাম আরকি!"
আসাদ একবার কী ভেবে যেন মায়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
"আজ যেন তোমার হাবভাব কেমন একটা লাগছে!।
আর হয় আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলো নয়তো চলিত। দু'টো একসাথে গোলমেলে লাগে। যাইহোক, এখন পর্যন্ত উনার খুনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মনে হয় খুনি একটু বেশিই চালাক!"

"হয়তো হ্যা,আবার অপরাধী যতই চালাক হোক না কেন আইনের উর্ধে কেউ নয়!"

আসাদ মায়ার দিকে হতম্ভ হয়ে তাকিয়ে আছে।আসাদ কিছু বলার আগেই মায়া বলে উঠে,
"হাহা,এইডা একটা সিনেমায় শুনছিলাম!"
আসাদ মায়ার কথায় হো হো করে হেসে উঠলো।
"সিনেমাও দেখো তাহলে তুমি?"
"ওই আর কী মাঝে মধ্যে ।"
ওইদিন এভাবেই টুকটাক কথাবার্তা বলে ঘুমিয়ে পরে দুজন।

ডিটেক্টিভ রাজনের ফোনে একটা পরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। রাজন কলটা রিসিভ করে,
"আসসালামু আলাইকুম। কি খবর বলো এবার!"
তারপর অপরপাশে থাকা ব্যক্তির কথা শুনে রাজনের ঠোঁটের কোণে প্রশান্তির হাসি ফুটে ওঠে।

কলিংবেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙে আসাদের। ঘুম থেকে উঠে মায়াকে পাশে দেখে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আসাদ। তারপর দরজা খোলার উদ্দেশ্যে ড্রয়িংরুমে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে আগে থেকেই মনসুর আলী দরজা খুলে এক ভদ্র লোককে সোফায় বসতে বলছেন। ইতোমধ্যে আসাদকে দেখে মনসুর আলী লোকটার উদ্দেশ্যে বললো,
"স্যার এই ভদ্রলোক আপনার সাথে দেখা করতে এসেছেন।"
আসাদ লোকটার দিকে একনজর তাকিয়ে দেখে।জিন্সের প্যান্ট আর একটা টি-শার্ট পরনে, ছোট করে চুল কাটা লোকটার। বয়সে আসাদের ছোটই হবে। আসাদ লোকটার উদ্দেশ্যে হ্যান্ডশেক করতে হাত বাড়িয়ে বললো,
"হাই,আমি আসাদ।"
ভদ্রলোকও হ্যান্ডশেক করে হেসে বললো,
"হাই। আমি রাজন আহমেদ,স্পেশাল অফিসার অফ সিআইডি।"
"গোয়েন্দা! বাহ,তা হঠাৎ মহোদয়ের আমার সাথে দেখা করার জন্য বাড়িতে আসার কারণ?"
"একটা কেসের বিষয়ে কথা বলতে এসেছি।"
"অবশ্যই কথা বলবেন। তবে এত সকালবেলা যখন এসেই পড়েছেন নাস্তা না করলে কথাই বলবো না।"
রাজন মুচকি হেসে বললেন,
"কথা তো বলতেই হবে। তাই যা দেখছি না খেয়ে উপায়ও নেই!"
এরপর রাজনকে সাথে নিয়ে আসাদ ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসে। এরমধ্যেই মনসুর আলী সকালের নাস্তা পরিবেশন করছেন টেবিলে। দুজনে নাস্তা খেতে খেতে টুকটাক কথাবার্তা বলেন।

"তা মি.আসাদ আপনার বিজনেস পার্টনার মাসুদ রানার খুনের ব্যাপারে কতটুকু জানেন?"
"যতটুকু সবাই জানে বা দেখেছে আমিও ততটুকুই অবগত।"
"আমি যদি বলি আপনি তার চেয়েও বেশি জানেন?"
আসাদ একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,
"এরকম বলার কারণ?"
রাজন একটু গম্ভীর স্বরে বললেন,
"খুনের স্পটে আপনার চুল পাওয়া গেছে। সেই সাথে আপনার এই ঘড়িটাও ওই বাগানবাড়ি থেকে পেয়েছি।"
আসাদ ঘড়িটা দেখে একটা বড়সড় শক পায়!
"এই ঘড়িটা তো আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না!"
"ওপস! এটা আমাদের প্রফেশনে কমন কথা। তা ঘড়িটা ঠিক কবে হারিয়েছিলেন?"
"তিন দিন আগে। আর চুল তো থাকতেই পারে।আমি তো খুন হবার খবর শুনে স্পটে গিয়েছিলাম।"
"আচ্ছা আপনি কয়টা নাগাদ বাসা থেকে বের হয়েছিলেন?"
"আটটা কী সাড়ে আটটার দিকে।"
"যেখানে মি.মাসুদ রাত নয়টা বেজে দুই মিনিটে মারা গেছেন,সেখানে প্রায় আধঘন্টা একঘন্টা আগে খুনের খবর কীভাবে পেয়েছিলেন?"

আসাদ এবার যেনো আরো একটা বড় শক পেলো!
"কী? আমাকে কেউ একজন কল করে জানায় যে রানা খুন হয়েছে। আমি যখন ওখানে পৌঁছাই তখন অলরেডি নয়টা দশ বেজেছিলো!"
"কে ফোন করেছিলো? ফোন নম্বরে একবার কল করুন তো।"
"ফোন! ফোনটা কালকে রাতেই চুরি হয়ে গেছে!"
নিজেকে কোন রকম সামলে বলল আসাদ।
আসাদ কিছুই বুঝতে পারছে না। কীভাবে যেনো কাকতালীয় ভাবেই খুনের ঘটনার সাথে আরো ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে।
"তা মি.আসাদ আপনি বলতে চাইছেন,আপনার ঘড়িটা কেউ ইচ্ছে করে খুনের স্পটে রেখেছিল,চুল এমনি পড়েছিল। আর আপনাকে কেউ খুন হবার কথা আগে থেকেই কল করে বলেছিলো। আর এখন আপনার ফোনটাও চুরি হয়ে গেছে?"

রাজন একটু ব্যাঙ্গের সুরেই কথাটা বললেন। আসাদ শুধু মাথা কাত করে "হুম" বললো।
"দেখুন মি.আসাদ এসব ভনিতা করে লাভ নেই।সত্যিটা খুব জলদি উদঘটন করবো ইনশাআল্লাহ।আজ আসছি।"
"আমি সব সত্যি বলছি।"
"সেটা প্রমাণ সাপেক্ষ!"
রাজন চলে যায়। আসাদ পুরো শকড! কোথা থেকে কীভাবে এই খুনের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে আসাদ!এসব ভাবতে ভাবতে আসাদের হঠাৎ মায়ার কথা মনে পরলো। উফ মেয়েটা একা একা কী করছে এতক্ষণ? আসাদ ডাইনিং টেবিল থেকে উঠে সোজা বেডরুমে চলে যায়।



চলবে..........................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন