গতকাল থেকে কালো-কালো মেঘে ঢাকা আকাশটা; এবেলাতে পরিষ্কার হয়ে এসেছে। রক্তিম সূর্যটি আকাশের পূর্বদিক বসে আছে। সূর্যের রশ্মি শহরজুড়ে ভ্যাপসা গরমের সৃষ্টি করছে। বৃষ্টির পরপর এমন তপ্ততা স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন। এই গরমে ঘেমেনেয়ে একাকার হয়েছে তন্ময়। ঘামে পিঠ ভিজে টি-শার্ট শরীরের সঙ্গে লেপ্টে আছে। কপাল বেয়ে ঘাম গালের পাশ গলিয়ে টপ-টপ করে ঝরছে। মনে হচ্ছে গোসল সেরে বেরিয়েছে কেবলই। মুখটা রক্তিমের চূড়ান্তে। হাতে বাজারের ব্যাগ। ব্যাগ ভর্তি কাঁচাবাজার। ওজন ওয়ালা ব্যাগ নিয়েই হেঁটে-হেঁটে কেনাকাটা চলছে। মোস্তফা সাহেব আড়চোখে একটিবার ছেলের এই দুর্দশা দেখলেন। দেখেই উৎসুক হয়ে পড়লেন। আনচান মনে মুহূর্তেই এগুলেন ছেলের সামনে। ব্যাগভর্তি বাজারটা নিজ হাতে নেওয়ার সামান্য চেষ্টা করলেন। তন্ময় আকস্মিক ডান ভ্রু উঁচিয়ে চাইল। মোস্তফা সাহেব স্বাভাবিক এবং সাবলীল গলায় বললেন,
'আমি নিই। দে ব্যাগটা।'
আনোয়ার সাহেব বড়ো ভাইকে টপকে তন্ময়ের সম্মুখে চলে এলেন। উদ্যত হলেন তন্ময়ের হাত থেকে ব্যাগটা নেবার জন্যে। সে থাকতে বড়ো ভাইয়া বাজারের ব্যাগ টানবেন? অসম্ভব–
'আমি নিচ্ছি– আমি নিচ্ছি, ভাইয়া। দে তন্ময়। ব্যাগটা আমিই নিই।'
ওহী সাহেব বড়ো বড়ো চোখে এই দৃশ্য দেখে; তক্ষুনি নিজেও তড়তড়িয়ে এগুলেন। চোখের সামনে বড়ো দুটো ভাই বাজার ব্যাগ টানবেন আর সে ফাঁকা হাতে হাঁটবে? এও সম্ভব? বাম হাতটা কায়দা করে বাড়িয়ে উৎসুক কণ্ঠে বললেন,
'তন্ময়, তুই আমায় দে ব্যাগটা। ক্লান্ত হয়ে গেছিস। দে —দে।'
আকাশের কপালে চার-পাঁচটা তিক্ত ভাঁজ পড়ল। বিরক্ত চোখে দেখল নিজ পিতা সহ চাচাদের কার্যকলাপ। তার হাতেও তো বড়সড় একটি ব্যাগ রয়েছে। ব্যাগ ভর্তি এটাতেও বাজার। সেও ঘেমেনেয়ে একাকার হয়ে আছে। কই তাকে তো এতো আদিখ্যেতা করা হচ্ছে না! কালো মেঘে ঢাকা মুখটায় যেন অমবস্যা নামল।
চাপা স্বরে ভেঙাল,
'একেবারে কোলকাতার সিরিয়াল!'
এই অসহ্যকর গরমে তন্ময় বিরক্ত বটে। বিরক্তিতে মুখ বন্ধ। সে ব্যাগটা ডানহাতে শক্ত করে ধরে এগুতে শুরু করল। কোনোপ্রকার কথা বাড়াল না। গরমে ত্যক্তবিরক্ত সে সবাইকে পেছনে ফেলে রেখে এগুচ্ছে। মোস্তফা সাহেব দু'ভাইকে কড়াকড়ি দৃষ্টিয়ে একটিবার পরখ করে নিলেন। নিজেও ছেলের পেছন চললেন। সামনেই কুদ্দুসের কসাইয়ের দোকানটা। দুপুরের আগ দিয়ে দেশীয় তরতাজা গোরু জবা ই করা হয় সরাসরি। ওখান থেকে পাঁচকেজি গোরুর গোস্ত নেওয়া হবে আজকের জন্য। তাহলেই বাজার প্রায়ই শেষপ্রান্তে। লিস্টের সবকিছু ইতোমধ্যে নেয়া শেষ। তন্ময় হাত বাড়িয়ে রিকশা দাঁড় করাল একটা। চোখের ইশারায় আকাশকে বাজারের ব্যাগটা রাখতে দেখিয়ে নিজের হাতেরটাও রাখল। মোস্তফা সাহেব দু'ভাই নিয়ে কুদ্দুসের দোকানের দিক রওনা দিয়েছেন। অদূর হতেই কুদ্দুস বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। শ্যামবর্ণের হ্যাঙলা-পাতলা মাঝবয়সী ভদ্রলোক। চোখমুখ জুড়ে অমায়িকতা। ঠোঁটে দীর্ঘ হাসি লেপ্টে সালাম জানাল চেনাপরিচিত কণ্ঠে। মোস্তফা সাহেব হেসে শুধালেন,
'তরতাজা গোরুর গোস্ত লাগবে পাঁচ কেজি। গোরু জবা ই দেয়া হয়েছে?'
লাল র ক্ত এখনো কুদ্দুসের হাতে। সে রক্তিম হাত দুটো তুলে দেখিয়ে বিনয়ী হাসল,
'এখনো হাত জোড়া মাইখা আছে লাল রক্তে। আধঘণ্টাও হয় নাই গোরু কাটছি।'
'দাও তাহলে পাঁচ কেজি।'
তন্ময় রিকশা গুছিয়ে এগিয়ে এলো। ঝরঝরে গলায় বলল,
'তুমি চাচ্চুদের নিয়ে উঠে চলে যাও। গোস্ত নিয়ে আমি ফিরছি।'
মোস্তফা সাহেব সহমত পোষণ করলেন না। তিনি চোখমুখ কুঁচকে বিরসমুখে বললেন,
'এখান থেকে এখানে রিকশায় করে যাব কেন!'
ওহী সাহেব নিজ ছেলেকে পিঠ ঠেলে রিকশার দিক এগিয়ে দিয়ে বললেন,
'আকাশ যাবে বাজার নিয়ে।'
আকাশ তো একপায়ে রাজি। সে এই তুখোড় গরমে আর হাঁটতে পারবে না। হাঁটতে-হাঁটতে দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তার পক্ষে আর সম্ভব নয় এই বাজারে থাকা। সে চটজলদি উঠে বসল রিকশায়। এদিক-ওদিক না ফিরে রিকশাওয়ালাকে বলল,
'চাচা, চলুন–চলুন। চটজলদি চলুন।'
টাকা পরিশোধ করে–গোস্তর ব্যাগটা হাত বাড়িয়ে নিলো তন্ময়। বাপ-চাচাদের পায়ের গতির সাথে তাল মিলিয়ে হেঁটে চলল বাড়ির পথে। ফিরবার পথে চেনাপরিচিত অনেকের সাথে দেখা হলো। মিনিটখানেট থেমে-থেমে ভদ্রতাসূচক কথাও হলো। মোস্তফা সাহেব এখানে-সেখানে একে-ওকে দেখে থামছেন। দু'চারটা কথা বলছেন। ভদ্রসভ্য ভঙ্গিতে তন্ময় সহ তার দুই চাচা তখন মোস্তফা সাহেবের পেছনে দাঁড়িয়ে। রোদের তাপমাত্রা তখন তীক্ষ্ণ। তন্ময় ঘর্মাক্ত বাবার মুখ দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বেরোনোর সময় বারংবার বলেছিল ছাতাটা নিতে। কে শোনে কার কথা! গোরুর গোস্ত নিয়ে পৌঁছাতে-পৌঁছাতে দুপুর। মাত্রই যোহরের আজান পড়েছে। সদরদরজার কাছে পৌঁছেই; মোস্তফা সাহেব ছেলের হাত থেকে গোস্তগুলো নিয়ে তাড়া দিলেন,
'রুমে গিয়ে গোসল করে নে।'
জবেদা বেগম ট্রে করে কয়েক গ্লাস লেবু শরবত নিয়ে আসেন। তন্ময় এক গ্লাস তুলে গিলে নেয় চটপট। বাবার কথামতন ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছুটে ওপরে। অরুর রুমের দরজাটা খোলা। বিছানায় শুয়ে গুনগুনিয়ে ডায়রি লিখছে। এই ডায়েরিটা পূর্বেও দেখেছে তন্ময়। কী এতো লিখে এতে? একবার তার হাতের কাছে এসেও পৌঁছেছিল ডায়েরিটা। ভদ্রতার খাতিরে তখন পড়েনি সে। ভেবেছিল মেয়েমানুষের ডায়েরি; প্রাইভেট কিছু হতে পারে। তার পড়া ঠিক হবে না! তবে এখন তো অরু তার স্ত্রী! পড়া যেতেই পারে। অবশ্যই সে নিজ উদ্যেগে যাবে না চুরি করে পড়তে। তার হাতের কাছে স্বেচ্ছায় এসে যদি ধরা পড়ে– তাহলেই পড়বে। এভাবেও অরুটা তার একদমই বোকাসোকা, সুপার ম্যাসি মেয়েমানুষ। কখন কোথায় কী রাখে ওর মনেই থাকে না! এই ডায়েরি পড়ার সুযোগ নিজেই করে দেবে। শীঘ্রই!
____
অতিথি আপ্যায়নের জন্য শাহজাহান বাড়ির সকলে তৈরি। অয়ন-রা ঠিকঠাক বলা সময় মতন এসে পৌঁছেছে। মাগরিবের পরপরই। মোট আটজন তারা। মোস্তফা সাহেব সঙ্গে ছেলে, ভাইদের নিয়ে দরজা পর্যন্ত এগিয়েছেন অতিথি আপ্যায়নের জন্যে। অয়নের বাবার সাথে পূর্বপরিচয় ছিলো মোস্তফা সাহেবের। সখ্যতা না হলেও চেনাজানা ছিলো। সেইসূত্র ধরে তাদের কথাবার্তার রাস্তাটা ক্লিয়ার হয়ে গেল। লিভিংরুমে বসেই গল্পগুজব এগুতে শুরু করল সাবলীল ভঙ্গিতেই। পুরুষদের গল্পের মধ্যে আর থাকলেন না, অয়নের মা আর মামি। দুজন উঠে চলে এলেন রান্নাঘরের দিকটায়। সেখানে হুলস্থল কাণ্ড। জবেদা বেগম, মুফতি বেগম এবং সুমিতা বেগম তখন ব্যস্ততার শিকড়ে। আচমকা তাদের আগমনে জবেদা বেগমের ব্যস্ত হাত দুটো মিনিটের জন্য থামল। মহিলাদের মধ্যে আলাপের কারণ বা যুক্তির দরকার পড়ে আদতেও? মনে হয় না। এইযে মুহূর্তেই পারিবারিক আলোচনায় তারা ব্যস্ত। আলাপে আলাপে অয়নের মা এগুতে চাচ্ছিলেন কাজকর্মে সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্য। মুফতি বেগম হেসে জানান,
'কাজকর্ম সব শেষ। এই নাস্তাপানি গুলো লিভিংরুমে নিলেই হবে। ডিনারের প্রেপারেশনও শেষ!'
তন্ময় আর আকাশ এলো ট্রে ভর্তি নাস্তাপানি নিতে। ট্রে দুটো টি-টেবিলের ওপর রাখতেই জবেদা বেগম তন্ময়কে নিচুস্বরে ডাকেন। তন্ময় কাছাকাছি আসতেই তিনি বলেন,
'একটা মেয়ে হাতের কাছে নেই। সবগুলো ওপরে। গিয়ে বলিস শাবিহাকে একটি শাড়ি পরিয়ে তৈরি করতে।'
দীপ্ত আগ বাড়িয়ে একঝাঁক কোকড়া চুলের মাথা দুলিয়ে বলল, 'বড়ো মা, আমি যাচ্ছি। ইউ জাস্ট ওয়েট!'
জবেদা বেগম মাথা দোলালেও তন্ময় দোলাল না। সে ভ্রু তুলে কিঞ্চিৎ ভেবেচিন্তে নিজেই পা বাড়াল। দীপ্ত ছুটল তার পিছু। সিঁড়ি শেষে পূর্বদিকের মাথাতেই দেখা গেল অরুকে। উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল।
শুধু একা ও নয়। রুবিও সাথে। তন্ময়কে দেখেই দুটো ছুটে পালাল শাবিহার রুমে। তন্ময় পিছু নিলো। রুমে ঢোকার পূর্বে দরজায় দুটো টোকা মারল। শাবিহা এক কোণেতে লাজুক ভঙ্গিতে বসেছিল। তন্ময়কে দেখেই তড়িঘড়ি করে দাঁড়াল। অরু পাশেই। মিটিমিটি হাসছে। ওর এতো হাসার কারণ কী? উঁকিঝুঁকিরও তো কারণ দেখছে না সে। তন্ময় ভেতরে এসে ভ্রুদ্বয় কুঁচকে ফেলল,
'এতো হাসছিস যে?'
অরু মুখে হাত চেপে ফিক করে হেসে ফেলল। হাসার তাগিদে ঠিকঠাক বলতেও পারছিল না। এলোমেলো কণ্ঠে জানাল,
'শাবিহা আপু লজ্জায় লাল হয়ে আছে দেখুন। কিছুক্ষণ পরপর সিঁড়ির মাথাতে গিয়ে–অয়ন ভাইয়াকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিল। একটু —'
শাবিহা একছুটে অরুর মুখ চেপে ধরল। লজ্জায় তার মাথা কাঁটা গেল বড়ো ভাইয়ের সামনে। তন্ময় কাশল ছোটো করে। যেতে উদ্যত হয়ে বলে গেল,
'শাড়ি পরে রেডি হো। ডাকলে নিচে নেমে আসিস।'
অরু মুখ শাবিহার থেকে ছাড়িয়ে তন্ময়ের পিছুপিছু বেরোল। তন্ময় ওকে টের পেয়ে পদচারণ থামাল। পিছু ফিরে চাইতেই অরু বোকার মত হেসে শুধাল,
'আজ কয় তারিখ বলুন তো, তন্ময় ভাই!'
তন্ময় ভ্রু তুলল, 'ক্যালেন্ডার নেই ঘরে?'
অরু পিটপিট করে চাইল। হতাশ হলো বড়ো,
'আছে কিন্তু– আচ্ছা কিছুই না।'
অরু মাথাটা নত করে ভাবুক মুখাবয়ব ধরে শাবিহার রুমে ফিরে গেল। ও যেতেই তন্ময় মৃদু হাসল। ঘুরিয়েফিরিয়ে ও বোঝাতে চাচ্ছিল সামনে ওর জন্মদিন। তন্ময়ের মনে আছে কী না! অবশ্যই মনে আছে। প্রিয়তমার জন্মদিন মনে না থেকে কোথায় যাবে? ওর জন্মদিন উপলক্ষে এবার একটা ট্যুর দিলে মন্দ হয় না। অরুও খুব ঘুরতে চায়। সিলেট যাবে বলে তার বন্ধুবান্ধব তাকে পাগল করে ফেলেছে। অরুকে সঙ্গে নেবার জন্যে হাজারো রিকোয়েস্ট। তন্ময় ভাবছে রাজি হবে।
একটা বার্থডে সারপ্রাইজও না হয় দেয়া যাবে তখন। তবে তার ভয় তো এক জায়গায়– যা সে কাউকেই বোঝাতে পারে না। বুঝিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না।
শাবিহা অয়নের বিয়েটা প্রায় পাকাপাকি হলো। ডেট ফিক্সড করাটা বাকি রইল। ডেট ফিক্সড করতে অন্য একদিন বসবেন। কথাবার্তার শেষে শাবিহাকে দেখেশুনে ওর গলায় নেকলেস পরিয়ে দিলেন অয়নের মা। রাতের খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়লেন তারা। অয়ন একমুহূর্ত থামল। মাথায় শাড়ির আঁচল টানা শাবিহাকে পর্যবেক্ষণ করে দেখল খানিকক্ষণ। মোস্তফা সাহেবের কড়া চোখের সামনে বেশিক্ষণ দেখা সম্ভব হলো না। মাথা নত করে লজ্জিত ভঙ্গিতে বেরিয়ে যেতে হয়েছে বাধ্য ছেলের মতন।
তন্ময় তাদের এগিয়ে দিয়ে ফিরে এসেছে। অরু লিভিংরুমের সোফাতে বসেছিল। এযাত্রায় আধশোয়া হয়ে আপেল খাচ্ছে। সুন্দর কাজ করা একটি কামিজ পরে আছে। চুলে বিনুনি গেঁথে কাঁধে ফেলে রেখেছে। তন্ময়কে দেখেই আগ্রহী গলায় প্রশ্ন করল,
‘বিয়ের তারিখ কী ডিসাইড করা হয়েছে?’
দীপ্ত জ্ঞানী বয়স্কলোকের হাবভাবে জবাবে বলল, ‘তাড়াহুড়োতে নয়। বরঞ্চ ধীরেসুস্থে এগুনো হবে। আগামী মাসের আগে বিয়ের ডেট পড়বে না। বা হতে পারে এরও পরের মাসে।’
অরু চোখ তুলে চাইল। তন্ময় যেন ওই দৃষ্টি পড়তে পারে। বুঝে ফেলল দৃষ্টিতে কী লেখা। দীপ্তর কথা সত্য জাহির করতেই বলল,
'বিয়ে দেরি আছে।’
অরু হতাশাজনক দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আওড়াল, ‘ভেবেছিলাম বিয়ে খেতে পারব এই বুঝি!’
জবেদা বেগম হেসে বলেন, ‘তা তো পারবি। এখন না হলেও পড়ে। নিজের বিয়েও তো খাওয়া বাকি নাকি?’
অরুর মুখ থেকে আপেলটা পড়ে গেল ফ্লোরে। তন্ময়ও খানিক স্তব্ধ হলো বলে!
.
.
.
চলবে............................