আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আরোরা - পর্ব ১৭ - তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


#আরোরা (ফ্যান্টাসি, রোমান্টিক)
#পর্ব_১৭
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া



" চলো আলেক্সা সময় এসে গেছে। "
কিং নিক, আলেক্সা আর ডেবিটের সাথে প্রাসাদের মূল ফটকের দিকে অগ্রসর হতে লাগলো। আলেক্সা রাজাকে আরোরার কথা বলেছে। সেজন্য তিনি কালবিলম্ব না করে দ্রুত আরোরার সাথে সাক্ষাৎ করতে চাচ্ছেন। 

মস্ত বড়ো এক প্রাসাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে আরোরা। একটু দম নিয়ে আশেপাশে নজর বুলিয়ে নিচ্ছে সে। যতদূর মনে হচ্ছে এটাই তার ঠিকানা। ভুল তো হওয়ার কথাই নয়। মন বড়ো অস্থির হয়ে আছে ওর। উসখুস লাগছে বলে নেকড়ে রূপ থেকে মানবী রূপ ধারণ করলো সে। অদ্ভুত শুভ্র পোশাকে সজ্জিত হয়েছে আরোরার সমস্ত শরীর। কাঁধ থেকে পা পর্যন্ত সেই সাদা পোশাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে আরোরাকে। আরোরা নিজের পোশাক দেখতে যখন ব্যস্ত তখনই ওর সামনে এসে দাঁড়াল ওয়ারউলফ কিং নিক। আশেপাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে আরোরা সামনে দৃষ্টিপাত করে। শুভ্র রঙের চুল বৃদ্ধের, মুখখানায় রাজকীয় ছাপ। আরোরার উনাকে চিনতে সময়ে লাগলো না। আরোরা সর্বশক্তি সম্পন্ন ওয়ারউলফ। অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে সে অবগত কেবল ভবিষ্যত ছাড়া। 
" অবশেষে আপনি আসলেন! "
বিস্ময় কাটছে না রাজা নিকের। অবশেষে তাদের সম্রাজ্ঞী এসেছে! আরোরা নিকের কথায় মুচকি হাসলো। আলেক্সা এবং ডেবিট আরোরাকে কুর্নিশ করছে। আরোরা শান্ত ভঙ্গিতে বললো,
" আসতে তো আমাকে হতোই কিং নিক। প্রতিশোধের এক নতুন অধ্যায় সূচনা করতেই তো আমার জন্ম।"
" হ্যাঁ মহারাণী। অনুগ্রহ করে আমাকে কিং বলে সম্মোধন করবেন না। আপনি আমাদের মহারাণী! আমার দায়িত্ব ছিলো এতদিন সবকিছু দেখেশুনে রেখেছি। এবার আপনার রাজ্যের হাল আপনি ধরবেন।"
" সেজন্য আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ আমি নিক। "
আলেক্সা ডেবিটকে নিয়ে সমস্ত প্রাসাদে আরোরা ফেরার সংবাদ প্রেরণ করতে অন্দরমহলে গেছে। নিক আরোরার সামনে কুর্নিশ করে তাকে প্রাসাদের ভেতর প্রবেশ করার জন্য বলেন। আরোরাও ধীর পায়ে এগিয়ে যায় নিজের পরিচিত গন্তব্যের দিকে। এই আরোরা আগের আরোরা নেই আর। আগের আরোরার পৃথিবী ছিলো তার বোন ও স্বামী এডওয়ার্ডকে ঘিরে। কিন্তু এখন কুইন আরোরার এক ও একমাত্র কাজ নিজের সম্রাজ্য সামলানো এবং নিজের পরিবার হত্যার তীব্র প্রতিশোধ নেওয়া। 

রাত পেরিয়ে ভোর হওয়ার আগ মুহুর্তে এডওয়ার্ড এনাকে সবকিছু বুঝিয়ে নিজের রাজ্য ফিরে এসেছে। আগামীকাল কঠোর সাধনা করবে সে। দিনের আলোতেও সমানভাবে চলাচলের জন্য তাদের সৃষ্টিকর্তার নিকট আকুতি জানাবে। শুধু রাতের ভরসায় বসে থাকলে এখন আর হবে না। আরোরাকে কোনো মুল্যে হারাতে চায় না এডওয়ার্ড। পূর্ব আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। নিজের কক্ষের বাইরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে এডওয়ার্ড। তাড়াহুড়ো করে বিয়েটা করেও শেষ রক্ষা হলোনা ভেবে অস্থির লাগছে। বাবা, মা'কে কীভাবে বলবে ওয়ারউলফ কুইন এখন ভ্যাম্পায়ার কিং এর স্ত্রী! প্রজারাই বা মেনে নিবে তো? 
" এডওয়ার্ড তোমার সাথে তোমার বাবার কিছু কথা আছে। তুমি এক্ষুণি আমার সাথে চলো।"
আচমকা মায়ের চিন্তিত স্বরে এডওয়ার্ড নিজেও বিচলিত বোধ করছে। হেলগার হাবেভাবে এডওয়ার্ড স্পষ্ট বুঝতে পারছে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। 
" ঠিক আছে মা। চলো।"
এডওয়ার্ড বিনাবাক্যে মায়ের সাথে চলতেে লাগলো। 

নিজের বিছানায় পা দুলিয়ে বসে আছেন জোহানসন। এডওয়ার্ডকে দেখেই নড়েচড়ে উঠলেন তিনি। হেলগা জোহানসনের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
" বসো এডওয়ার্ড। "
এডওয়ার্ড বাবার কথায় মুখোমুখি একটা কেদারায় বসলো। 
" বাবা কিছু হয়েছে? "
" হ্যাঁ। "
" কী? "
" আমাদের রাজ্য বিপদে পড়তে চলেছে শীঘ্রই। "
" কীসের বিপদ?"
" বালির ঘড়ির সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। তারমানে ওয়ারউলফরা শীঘ্রই আমাদের রাজ্যের উপর আক্রমণ করবে। যে ভুল আমার পিতা করেছিলেন সেই ভুলের মাশুল দিতে হবে আমাদের। "
এডওয়ার্ডের কপালে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। উনাদের কীভাবে বলবে সেই আক্রমণ করবে স্বয়ং তাদের পুত্রবধূ রূপে কুইন আরোরা! 
" বাবা কী হয়েছিল তখন? আমি শুনতে চাই সবকিছু। "
" বলবো। কিন্তু এখন নয়। "
" তাহলে? "
" আগামীকাল বলবো। অনেক কথা সেসব। আপাতত সমস্ত রাজ্যের সুরক্ষার দায়িত্ব তোমার। আমরা শক্তিতে মায়ানেকড়েদের থেকে কম নই বরং বেশি। কিন্তু ওদের মায়াবিদ্যা শক্তি প্রবল। তাছাড়া যে এসেছে সে অমৃত শক্তির অধিকারী। "
" ঠিক আছে বাবা। আমি আসছি এখন।"
" এসো।"
এডওয়ার্ড কক্ষ ত্যাগ করার পরে হেলগা জোহানসনের দিকে দৃষ্টিপাত করলো। 
" এখুনি কেনো বললেন না?"
" সবকিছুর একটা নির্দিষ্ট সময় আছে হেলগা। এডওয়ার্ডের মন বিক্ষিপ্ত এখন।"

" আমার ভয় করছে ভীষণ। সবকিছু কেমন লাগছে। "
" শান্ত হও, ধৈর্য ধরো।"
জোহানসনের কথায় চুপ করে থাকেন হেলগা। পরিস্থিতি কেমন থমথমে হয়ে গেছে যেনো। 

সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে। তবুও আরোরা বাড়ি ফেরেনি। সেজন্য এনা খুব চিন্তা করছে। গুলিনটাও যেনো কোথায় চলে গেছে। চেম্বারেও আজ যায়নি এনা। এডওয়ার্ডেরও কোনো খবর নেই। সবকিছু ভীষণ অদ্ভুত লাগছে। 
" কী হয়েছে তোমার? এভাবে রাস্তায় পায়চারি করছো কেনো?"
প্রতিবেশী জেইনের কথায় টনক নড়ে উঠলো এনার। জেইন মধ্যবয়সী এক বাবা, দুই সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। স্ত্রী মারা গেছে অনেক বছর আগেই। এনা জেইনকে উদ্দেশ্য করে বলে,
" তেমন কিছু না আঙ্কেল। আপনি কোথায় যাচ্ছেন এই দুপুরবেলা? "
" বাজারে যাবো এনা। ছোটো মেয়ে বায়না ধরেছে মাশরুমের স্যুপ খাবে। সেজন্য সরাইখানা থেকে কিনে নিয়ে আসবো। ঘরে স্যুপ তৈরি করার মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই। "
" ঠিক আছে আঙ্কেল। "
" হ্যাঁ আসছি।"
ভদ্রলোকের গমনপথের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো এনা। কী একটা অবস্থা কারো কোনো খোঁজ নেই!

রাত নামতেই ম্যাক সাঁচির কাছে চলে এসেছে আজ। এই মেয়েটাকে ছাড়া দূরে থাকা ভীষণ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সাঁচি বিছানার একপাশে বসে আছে। ম্যাক সাঁচিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে আলতো করে ঠোঁট বুলিয়ে যাচ্ছে। থেকে থেকে কেঁপে উঠছে তাতে সাঁচি। অনেকক্ষণ ধরেই ম্যাক এভাবে অস্থির করে তুলছে সাঁচিকে। বেচারা সাঁচি আর সহ্য করতে না পেরে বলে,
" আর কতক্ষণ এভাবে পোড়াবেন? "
ম্যাক সাঁচির কোমরে শক্ত করে আঙুল চেপে ধরে নিজের বুকের সাথে হেঁচকা টান মারে। ঘাড়ে মৃদু কামড় বসিয়ে অস্থির চিত্তে বলে,
" ইচ্ছে করলেই সম্ভব হচ্ছে না সাঁচি। তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে আবারো। আমার সাথে তোমার মিলন সম্ভব নয় সাঁচি। তুমি মানুষ, ভীষণ দূর্বল আমার থেকে। আর আমি বিশেষ মুহুর্তে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি না সেটা তুমি জানো।"
দুজনের মন খারাপ হয়ে গেছে। সাঁচি চুপ করে আছে সাথে ম্যাকও। অনুভূতিরা লুটোপুটি খাচ্ছে দু'টি দেহে,মনে। কিন্তু কাছাকাছি যেতে পারছেনা। কী করবে ভাবতে ভাবতে সাঁচিকে নিজের কোলে তুলে বসা থেকে দাঁড়াল ম্যাক। মেয়েটা শক্ত করে গলা আঁকড়ে ধরলো ওর। 
" কী করছেন?"
" চলো আজ তোমাকে আকাশে উড়াই।"
" কী!"
চমকিত কণ্ঠে সাঁচি বললো। ম্যাক মুচকি হেসে ওকে কোলে নিয়েই জানালার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। 
" হ্যাঁ। ভয় করবে?"
" আপনি আছেন তাই ভয় নেই কিন্তু.... "
" কিছু হবে না। যেভাবে আছো সেভাবেই আঁকড়ে ধরে থেকো আজীবন। "
" আপনিও তাহলে আজীবন এমন করে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। "
" থাকলাম, সমস্যা কী? তোমার মতো পাঁচটা মেয়েকে একসাথে কোলে তুলে আজীবন চলতে পারবো। "
" পাঁচটা মেয়ে?"
সাঁচির অভিমানী কথায় খুব হাসে পাচ্ছে ম্যাকের। কিন্তু সে কিছু বলে না। ম্যাক তার বিশাল ডানা ঝাপটে জানালা থেকে লাফ দিয়ে উড়তে লাগলো। চোখ বন্ধ করে আছে সাঁচি। খানিকক্ষণ সময় পর চোখে মেলে তাকিয়ে আশেপাশে নজর বুলিয়ে নিলো সাঁচি। 
" ওটা কথার কথা বলেছি। এখন চারপাশে দেখো তো। "



চলবে..........................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।