চোখের তারা তুই
পর্ব ০১
তাইয়েবা বিন কেয়া
.
.
.
মা যেখান থেকে ডিভোর্স নিয়ে চলে আসে সেই বাড়িতে আজ বউ হয়ে যেতে হচ্ছে আমার। মা কখনো এই বাড়িতে পা রাখতে দেয় নি আমাকে কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর সেই বাড়িতে যেতে হচ্ছে ওরা মাকে অনেক অত্যাচার করেছে তাই মা বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে চলে আসে। মনে ভয় হচ্ছে যদি আমার স্বামী একজন খারাপ মানুষ হয় অত্যাচার করে তখন কোথায় ঠিকানা হবে আমার হঠাৎ কেউ আমার মাথায় হাত রাখে।
নিজের ভাবনা থেকে বাহিরে এসে গাড়ি থেকে নেমে পড় সবাই তোকে বরণ করে ঘরে তুলে নিবে। নিলয় চৌধুরীর মেয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছে এই বাড়িতে বউ হয়ে আজ সবাই আনন্দ করবে।
এই বৃদ্ধ মানুষ আর কেউ না আমার বাবা জন্মের আগে মা এই বাড়ি থেকে বের হয়ে তাই ওনার মুখ ভালো করে দেখা হয়ে উঠে নাই। কিন্তু ওনি আমার জীবন থেকে সুখ কেড়ে নিয়ে এখন আমার সামনে ভালো মানুষ হিসাবে নাটক করছে গাড়ি থেকে নেমে যায় আমি বরণ করে ঘরে তুলে নেয় সবাই ফুল দিয়ে সজ্জিত একটা রুমে বসে থাকতে হচ্ছে।
আরে ছোট সাহেব বিয়ে করে বাড়ি না এসে কোথায় চলে গেছে বড় সাহেব জোর করে বিয়ে দিয়েছে এই মেয়ের সাথে।ছোট সাহেব অনেক রাগী এই মেয়ে কি করে ওনার সাথে থাকবে।
আমি সবার কথা শুনে মনে মনে চিন্তা করি"যদি ওনি অনেক রাগী আর খারাপ হয় তাহলে আমার উপর অত্যাচার করবেন কিন্তু তোকে প্রতিবাদ করতে শিখতে হবে।আর এই বাড়িতে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি সেটা পূরণ করতে হবে।"
তবে মেয়ে খুব সুন্দরী ছোট সাহেব যেমন সুন্দর দেখতে বউ তেমন দেখতে, একদম মানিক জোড়া দারুণ মানাবে।
শরীর বেশ খারাপ হয়ে গেছে সকাল থেকে বিয়ে নিয়ে যাহ নাটক হয়েছে যার সাথে বিয়ে হয়েছে তাকে এক নজর দেখার ভাগ্য হয়ে উঠে নাই। আর এখন ওনি কোথায় চলে গেছে কে যানে চোখে ঘুম চলে আসে সকাল হয়ে যায় ঘুম থেকে উঠে পড়ি। কিন্তু ফোনের কথা বলতে শুনে পিছনে ফিরে দেখি
সরি ফাহিম কালকে একটু ঢাকার বাহিরে যাই সেই জন্য মিটিং করতে পারি নাই।তবে আজকে ভুল হবে না তুমি আবার আসতে হবে সবাইকে বলে দাও।
এই লোক আমার রুমে কি করছে "আপনি কে আমার রুমে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলেন এতো সাহস হয় কি করে, রুমে ঢুকতে হলে নক করে ঢুকতে হয় জানেন না আপনি"।
আমি ফোন রেখে পিছনে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, খুব বেশি বয়স না মনে হচ্ছে কলেজে পড়ে " যার সাথে বিয়ে হয়েছে তাকে দেখে অবাক হয়ে গেলে হবে আর সাহস আমার অনেক ভবিষ্যতে আপনার সাহসের সাথে পরিচয় হয়ে যাবে।
ওহ তাহলে আপনি সেই যার সাথে বিয়ে হয়েছে আমার কালকে সারারাত কোথায় ছিলেন আপনি। বাসর রাতে নতুন বউকে রেখে প্রেমিকার সাথে সময় কাটাতে তার বাড়িতে রাত কাটিয়ে চলে আসলেন.
বাহ বিয়ের পরের দিন বউ হয়ে গেলেন দেখি আর আমি যার সাথে ইচ্ছা তার সাথে সময় কাটিয়ে বাড়ি ফিরে আসি সেই বিষয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। আমি শুধু বড় আব্বুর জন্য বিয়ে করেছি আমার থেকে কোনো আশা করবেন না আপনি।
শুনুন আমি আপনাকে খুশি হয়ে বিয়ে করি নাই বাধ্য হয়ে বিয়ে করতে হয়েছে ভালো হয়েছে আপনি বিয়ে মেনে নেন নাই। যদি আপনি রাজি থাকেন তাহলে আমরা কয়েকদিন পর বিয়ে ভেঙে দিতে পারি.
হুম আমি রাজি কিন্তু বিয়ে শেষ করতে হলে ছয়মাস একসাথে থাকতে হবে কারণ ডিভোর্স ছয়মাস একসাথে না থাকলে হয় না.
ঠিক আছে ছয়মাস একসাথে থাকতে রাজি আমি। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে প্রেমো পড়া বারণ।
আমার আপনার মতো মেয়ের প্রেমে পড়তে বয়ে গেছে। যদি এই ফারিশ ফারহান চৌধুরী ইচ্ছে করে তাহলে আপনার মতো একশো মেয়েকে প্রেমে ফেলতে পারে।
আপনি একশো মেয়ে নিয়ে থাকেন বাহ দুইশো মেয়ে সেই বিষয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নাই আমার। শুধু আমার থেকে দূরে থাকতে হবে কথাটা মনে রাখতে হবে।
আপনার কাছে থাকতে চাই না আমি শুধু একটা কথা ঝুঝতে পারি না আপনি বড় আব্বুর মেয়ে হয়ে এতো খারাপ ব্যবহার করতে জানেন কেমন করে।
শুনুন জন্ম দিলে কেউ বাবা হয়ে যায় না আর আমি ওনার কেউ হয় না।শুধু ঘৃণা করি এই বাড়ি আর এই বাড়ির মানুষকে।
আপনি কাকে ঘৃণা করেন সেটা আপনার বিষয়। কিন্তু আমি চাই আপনি আমাকে ঘৃণা করেন আর এই ছয়মাস আমার থেকে দূরে থাকবেন।আমার রাগ কিন্তু অনেক বেশি তাই কেনো বিরক্ত করবেন না মনে রাখবেন কথা সব।
ঠিক আছে মনে থাকবে আমি আর আপনি বিবাহিত কিন্তু আলাদা।
হুম ঠিক আছে আমি ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে যায়। বাহিরে এসে দেখি মেয়ে টা ঘরে নেই মনে হয় বাহিরে গেছে আমি খাবার খেতে নিচে যায়।
আমি খাবার টেবিলে সবাই বসে ওনার জন্য অপেক্ষা করছে।আমি নতুন বউ তাই কাজ করতে হবে না কিন্তু হাতে হাতে জরিনা থালার সাহায্য করি থালা খুব ভালো এই বাড়ির কাজের লোক কিন্তু সবাই ওনাকে থালা হিসাবে সম্মান করে।
খাবার টেবিলে গিয়ে বসে পড়ি বড় আব্বু আর মা বাবা অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছে।
ফারিশ তোর আর আঁধার তো বিয়ে হয়ে গেছে কিন্তু কেনো অনুষ্ঠান করা হলো না তাই একটা ছোট অনুষ্ঠান করতে চাই।
বড় আব্বু তুমি বিয়ে করতে বললে আমি সেটা মেনে নিয়েছি এখন সবাইকে জানাতে হবে সেটা আমি মেনে নিব না। আর বিয়ে হয়েছে সেই বিষয়ে কেউ জানবে সেটা আমি চাই না কারণ এই বিয়ে মেনে নিতে আমার একটু সময় লাগবে। তাই যখন সময় হবে তখন সবাইকে সত্যি জানিয়ে দিও কিন্তু এখন না মানে না।
আচ্ছা ঠিক আছে তোকে জোর করব না আমি কিন্তু আঁধার এই শহরে নতুন তুই ওকে কলেজে এডমিট করে দিতে যাহ।
ওনি ছোটো বাচ্চা না ওনাকে নিয়ে যেতে হবে আর তুলি আছে ওর সাথে চলে যাবে। আমার অনেক কাজ আছে সবসময় তোমার মেয়েকে নিয়ে বসে থাকতে পারব না দয়া করে একটু শান্তি দেও বড় আব্বু।
ফারিশ তুই জেদ করবি না আর তোর কাজের জায়গা থেকে কলেজ খুব দূরে না।
ঠিক আছে তোমার যাহ ইচ্ছা তাই হবে কিন্তু ফারিশ ফারহান চৌধুরী লেট করা পছন্দ করে না। তাই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে গাড়িতে আসতে বলবে।
আমি শুধু কথা শুনে যাচ্ছি ওনার সাথে যেতে হবে কালকে কাজের মেয়ে সত্যি বলেছে ওনি অনেক রাগী আমি রেডি হয়ে গাড়িতে বসে যায় তুলি ও আসে। তুলি আমার ননদ বেশ ভালো মেয়ে বিয়ের দিন ওর সাথে কথা হয় আমরা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যায়।
ভাবি তুমি আর ফারিশ ভাইয়া পিছনে বসে যাও আমি সামনে বসে যায়।
তুলির মুখে ভাবি ডাক শুনে একটু অবাক হয় আসলে এই ডাক আমার কাছে নতুন। তাই কিছু না বলে পিছনে বসে যায় ওনি চুপচাপ ফোনে নিউজ দেখছে। পুরো রাস্তায় অনেক মানুষ আছে কিন্তু গাড়ির ভিতরে অনেক নিরবতা মনে হচ্ছে এখানে কেউ নাই আমি শুধু চুপচাপ বসে থাকি যদি ওনি বকা দেন তাহলে।
তুলি গাড়ি থেকে নাম আমার একটু ওনার সাথে কথা আছে। তুই বাহিরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাক।
ওনি আমার সাথে কথা বললেন শুনে ভয় করছে আমাকে বকবে না তো কিন্তু আমি ভুল কি করেছি সেটা বুঝতে পারছি না।
এই মেয়ে শুনুন কলেজে এডমিট হলে আপনি যে বিবাহিত সেটা বলতে হবে না। আর ফারিশ ফারহান চৌধুরী আপনার হাসবেন্ড সেটা কেউ জানতে যাতে না পারে। সবাইকে জানাতে হবে আপনি তুলির বন্ধু ফারিশ নাম ভুল করে নিজের মুখে আনতে যাবেন না তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।
আমি কোনো কথা না বলে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেয় গাড়ি থেকে নেমে পড়ি মনে হয় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ওনি বকা দেন নাই। তুলি দাঁড়িয়ে আছে ও আমার কাছে আসে।
তোমাকে কি ভাইয়া বকা দিয়েছে আসলে ভাইয়া একটু এরকম সবাই ভাইয়ার রাগ দেখে ভয় পাই। বাড়িতে শুধু বড় আব্বু ছাড়া কেউ ভাইয়ার সাথে কথা বলতে সাহস করতে পারে না মা বাবা সবাই শুধু জরুরি কথা বলে।
ওহ তাহলে গাড়িতে তুমি তাই চুপ করে থাকলে আমি মনে করেছি তোমার কথা কম বলা পছন্দ আর তোমার ভাইয়া বকা দেয় নাই। আমাকে সে শুধু সবাইকে বিয়ের বিষয়ে জানাতে নিষেধ করেছে।
ওহ তুমি বেঁচে গেলে না হলে ভাইয়া যে রাগী আর আমি অনেক কথা বলি কিন্তু বেশি কথা বললে ভাইয়া বকা দেয় সেইজন্য চুপ থাকতে হয়। আচ্ছা কলেজে তোমাকে ভাবি বলে ডাকতে পারব না কিন্তু কি বলে ডাকব।
তুমি আমার নাম ধরে ডাকবে। আমার নাম আঁধার আর আমরা একসাথে পড়াশোনা করব তাই তুমি আমার বন্ধু। আচ্ছা তুমি কলেজ ঘুরিয়ে দেখাবে না।
আমি ওর কথা শুনে খুশি হয়ে যায় "সত্যি বড় আব্বু অনেক ভালো একজন মেয়েকে এই বাড়ির বউ করে নিয়ে এসেছে"।
কিন্তু ফারিশ ভাইয়া ওকে মেনে নিবে যে রাগী ভাইয়া " আমি পুরো কলেজ ঘুরিয়ে দেখায়। "
কলেজ খুব সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো দেখে পছন্দ হয়ে যায়। কিন্তু আচ্ছা বড় আব্বু যদি ভালো হয় তাহলে মা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে কেনো সত্যি বড় আব্বু দোষ করেছে না অন্য সত্যি লুকিয়ে আছে এর পিছনে।
আধাঁর সবার সাথে পরিচয় হয়ে নেয় প্রথম দিন খুব সুন্দর করে কেটে গেলো ওর তুলি আর আঁধার বাড়ি ফিরে আসে। নিজের রুমে যায় ফারিশ বাড়ি ফিরে আসে নাই তাতে আঁধার একটু শান্তি পেয়ে যায় কারণ ফারিশ থাকলে যদি বকে।
আমি একটু ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় দেখি আমার শাশুড়ী রান্না ঘরে রান্না করছে বাড়িতে অনেক কাজের লোক আছে। তবু ওনি রান্না করছে মনে হয় ওনি বেশ পরিশ্রম করে আমি রান্না ঘরে যায়।
আরে আঁধার তুমি এখানে কেনো নতুন বউ রান্না ঘরে আসতে নেই মা। রুমে গিয়ে যাও আর যদি কোনো দরকার থাকে জরিনা বাহ অন্য কাউকে ডাক দিবে নিচে আসতে হবে না।
আরে কোনো সমস্যা নাই আম্মু আসলে ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগছে না তাই বাহিরে আসি। আর আপনার কেনো সাহায্য লাগলে বলেন আমি করে দেয়।
আম্মু ডাক শুনে বেশ খুশি হয়ে যায় আর ওর ব্যবহার দেখে ভালো লাগে "সাহায্য করতে হবে না আর তুমি রান্না করতে পারবে না।"
আম্মু মেয়ে হয়ে যদি রান্না করতে না পারি তাহলে কেমন করে হবে। আমি সব রান্না করতে পারি আম্মু মৃত্যুর আগে অনেক অসুস্থ ছিলো ঘরের সব কাজ আমাকে করতে হয়েছে তাই রান্না করতে কেনো অসুবিধা হবে না। আমার আম্মু সবসময় বলে মেয়ে হয়ে ঘরের সব কাজ জানতে হয়, আর আম্মু সবসময় আপনার কথা বলেছে আপনি অনেক ভালো।
আসলে তোমার শশুড় আর আমার প্রেমের বিয়ে হয়েছে তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে গেছে কিন্তু ভাইজান বিয়ে করতে একটু সময় নেই। যখন ফারিশ পেটে তখন তাদের বিয়ে হয় কিন্তু ভাবী অনকে ভালো ছিলেন বোনের মতো আদর করতেন আর ওনি থাকতে বাড়ির সব কাজ ওনি করতেন কিন্তু হঠাৎ করে।
আম্মু কথা বলতে বলতে থেমে যায় " কি হয়েছে আম্মু হঠাৎ করে পরে কি "
না পরে কিছু না তুমি কফি তৈরি করে দাও ফারিশ চলে আসবে ও কফি না পেলে রাগ করবে।
আমি কফি রেডি করি তখন ওনি চলে আসে।
আমি দেখি আম্মু আর সেই মেয়ে রান্না করছে দুইজন বেশ বন্ধু হয়ে গেছে মনে হয় আর মা সবার সাথে খুব সহজ ভাবে মিশে পড়ে "আম্মু জরিনা থালাকে দিয়ে রুমে কফি পাঠিয়ে দাও মাথা ব্যাথা করছে আর যেনো ডাকতে না হয় "।
এই যে ফারিশ চলে এসেছে বউমা তুমি কফি নিয়ে যাও দেরি হলে রাগ করবে কিন্তু।
আমি বাধ্য হয়ে কফি নিয়ে যায় কি করব মায়ের সামনে কিছু বলতে পারি নাই কিন্তু কফি যদি ভালে্ না হয় তাহলে যদি বকা দেন। আমি রুমে যায় একটু ভয় নিয়ে ওনাকে কফি দেয় " এই নেন আপনার কফি "।
আমি হাত থেকে কফি নিয়ে খাওযা শুরু করে দেয়। আজ কফি খেতে বেশ ভালো হয়েছে এই বাড়িতে এতো ভালো কফি কেউ বানাতে পারে না। তাহলে এই মেয়ে কফি তৈরি করেছে কিন্তু কেনো।
আমি খুব ভালো করে কফি খাওয়া শেষ করলেন " একটু ভয় নিয়ে জিজ্ঞেস করি কফি কি খেতে খারাপ হয়েছে যদি খারাপ হয় আর কখনো নিয়ে আসব না।
আমি ওর কথা শুনে একটু হাসি সকালে অনেক বলেছে মুখে মুখে কিন্তু এখন ভয় পেয়ে বলছে। আমি কত রাগী তার সাথে পরিচয় হয়ে গেছে মনে হয় "কফি বেশ ভালো খেতে হয়েছে রোজ যদি এরকম কফি তৈরি করেন তাহলে ভালো হবে আর আমার অনেক রাগ ঠিক আছে কিন্তু বিনা কারণে বকা দেয় না আমি।
ওনার মুখে কফি ভালো হয়েছে শুনে খুশি হয়ে যায় আমি কফি ভালো বানাতে পারি সেটা সবাই বলে কিন্তু ওনি যখন বললেন তখন অন্যরকম একটা খুশি হচ্ছে। যদিও এক কারণ জানা নাই তবে লোক টা খুব খারাপ না একটু ভালো আছে।
কি হয়েছে আপনার এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে যান পড়তে বসেন কলেজে এডমিট হলে তো হবে না। মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে শুধু শুধু বড় আব্বুর টাকা খরচ হবে এইটা আমি মেনে নিব না।
এই কথা শুনে একটু রাগ হয় " শুনুন আপনার বড় আব্বুর আমার পড়াশোনার জন্য কেনো টাকা দিতে হবে না আমি নিজের খরচ নিজে চালিয়ে নিতে পারি আর কলেজে এডমিট হয়ে পড়াশোনা করতে হয় সেটা জানি তাই ঠিক সময় পড়তে বসে যাব। বিকাল ছয়টা সময় কেউ পড়ে না নিশ্চয়ই আর আমি যথেষ্ট টাকা রোজগার করি তাই একদম খোটা দিয়ে কেনো কথা বলবেন না।
বাহ মেয়েটা দেখি বেশ কথা বলতে পারে ফারিশ চৌধুরীর মুখে উপর কেউ কথা বলে না আর এই মেয়ে বলল। আর কারো সম্মানে আঘাত লাগলে সে কথা বলবে আমার একটু বুঝে কথা বলা উচিত ছিলো "আচ্ছা ঠিক আছে সরি বুঝতে পারি নাই কথা শুনে আপনি কষ্ট পেতে পারেন আমি শুধু চাই আপনার পড়াশোনা ঠিক করে করেন।
ছয়মাস পড়ে যখন চলে যাব তখন এতো আমার পড়াশোনা নিয়ে চিন্তা করে কি হবে এই কথা বিরবির করে বলে রুম থেকে বের হয়ে তুলির রুমে যায়। এই লোকটা আসলে একটা জঘন্য লোক আর অনেক খারাপ মানুষ।
আরে ভাবী তুমি এখানে বাহিরে দাঁড়িয়ে কেনো রুমে আসো আর কাকে বিরবির করে গালি দিলে।
আর কাকে গালি দিব তোমার ভাইকে। আচ্ছা ওনি এমন কেনো এই মনে হয় ভালো ঠিক তখন আমাকে ভুল প্রমাণ করে দেয় একটা জঘন্য লোক ওনি।
আরে ভাইয়া একটু এরকম সবার সাথে ঠিক ফ্রি না। কিন্তু তুমি অনেক লাকী ভাইয়া তোমার জামাই কারণ ভাইয়া রাগী কিন্তু খারাপ না সহজে কাউকে ভালোবাসে না। কিন্তু যদি একবার কাউকে ভালোবাসে তাহলে অনেক যত্ন নেয়।
শোনে তোমার ভাইয়া কেমন সেটা জেনে কোনো কাজ নাই আমার ওনি একটা জঘন্য লোক সেটা আমি জানি।আচ্ছা একটু গল্প করি আর মাগরিবের আযান দিলে নামাজ পড়ে পড়তে বসে যাব।
আচ্ছা ঠিক আছে আমরা অনেক গল্প করি আযান দিলে ভাবী চলে যায় আমি পড়তে বসে যায়।
আমি রুমে চলে আসি ওজু করতে ওয়াশরুমে চলে যায় বের হয়ে নামাজ পড়তে বসে যায়। ওনি কোথায় সেটা দেখি না মনে হয় ছাদে গেছে অবশ্য ভালো হয়েছে।
আমি রুমে আসি এসে দেখি মেয়েটা নামাজ পড়ছে হিজাব পড়ে কেনো মেয়েকে এতো সুন্দর লাগতে পারে সেটা না বুঝতে পারব না। মেয়েটি কিন্তু খারাপ না বড় আব্বুর মেয়ে ভালো হতে হবে কিন্তু বড় আব্বু আমার সাথে বিয়ে দিয়ে ভুল করে ফেলেছে কারণ আমি অনেক খারাপ। আচ্ছা ছয়মাস পড়ে চলে যাবে তাই এই মেয়ের প্রতি দুর্বল হলে চলবে না।
ফারিশ রুমে এসেছে টুপি নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাবে কিন্তু আঁধার কে দেখে সব ভুলে গেছে তাই টুপি নিয়ে বাহিরে চলে যায়। অন্যদিকে আধাঁর নামাজ শেষ করে টেবিলে যায় বই বের করে আসলে সে ডাক্তার হয়ে নিজের মায়ের সপ্ন পূরণ করতে চাই কিন্তু সে একজন ডিজাইনার সেটা কেউ জানে না ওর মা ডিজাইন করা পছন্দ করে না তাই মা কে লুকিয়ে এই কাজ করে ওর একটা অফিস আছে কিন্তু সেটা কেউ জানে না একজন মানুষ ছাড়া সেটা কে পড়ে জানা যাবে।
আমি পড়াশোনা করতে থাকি ছোটবেলা থেকে আমি খুব মেধাবী সব ক্লাসে প্রথম হয়ে অনেক পুরস্কার আছে আমার। ভালো রেজাল্ট করে মেডিকেলে খুব সহজে চান্স হয়ে যায় আমার। পড়াশোনা করতে থাকি তখন ওনি রুমে আসলেন কেনো কথা না বলে মনযোগ দেয় প্রায় তিনঘণ্টা পড়াশোনা করি। আজ কলেজে প্রথম দিন তাই একটু চাপ কম নিজের ডিজাইন খাতা বের করে আকাঁ শুরু করি সাতদিন একটা কোম্পানির সাথে ডিল আছে কিন্তু আমি বিজি থাকব তাই আমার পিএ যাবে।
আমি দেখি মেয়েটি খুব মনযোগ দিয়ে কি করছে আর একটু ভাবুক হয়ে কাজ করছে আসলে মেয়েটা অদ্ভুত। না ফারিশ তুই একদিনে এই মেয়েকে অনেক আপন করে ফেললি তুই ওর থেকে দূরে থাকবি ছয়মাস পরে ও চলে যাবে মনে রাখবি।
এই ফারিশ তুই আর আঁধার নিচে চল খাবার খেতে হবে সবাই অপেক্ষা করছে।
মায়ের ডাকে নিচে চলে যায় সবাই খাবার খাওয়া শুরু করে দেয় ওই মেয়ে একটু জরিনা থালাকে সাহায্য করতে থাকে। আসলে এই বাড়িতে পুরুষ আগে খাবার খাওয়া শুরু করে পরে সবাই নিয়ম একটু পুরানো হলে সবাই সেটা মেনে চলে।
.
.
.
চলবে..........................