চোখের তারা তুই - পর্ব ০৮ - তাইয়েবা বিন কেয়া - ধারাবাহিক গল্প


#চোখের_তারা_তুই
#পর্বঃ০৮
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া



ফজরের আযান দিয়েছে নামাজ শেষ করে রান্না ঘরে যায় সবার জন্য চা রেডি করে। জরিনা খালা কাজে সাহায্য করে নিজের রুমে চলে আসে। দেখে ফারিশ রেডি ঘুম থেকে উঠে পড়েছে আঁধার বলে : 

"আপনার কফি নিয়ে এসেছি। যদি সময় মতো কফি না খেতে পারেন তাহলে আবার বকা দিবেন। তাই কফি খেয়ে নেন "।

আঁধারের কথা শুনে কফির কাপ হাতে নেয় আর ফারিশ বলে: 

"শুনুন এই ফারিশ ফারহান চৌধুরী সবাইকে শুধু শুধু বকা দেয় না। কেউ যদি কাজে ফাঁকি দেয় তাহলে তাকে বকা দিতে হয়। কিন্তু আপনাকে এখনো বকা দেওয়া হয় নাই তাই এরকম কাজ করবেন না যাতে বকা খেতে হয়"।

ফারিশের কথা শুনে আঁধার একটু অভিমান করে ওয়াশরুমে চলে যায়। ফারিশ ওকে ফাঁকিবাজ বলে দিলো একটু রাগ হয় ওর। পাঁচ মিনিট পরে বেরিয়ে এসে আয়নার কাছে চলে যায়। আঁধার বলে : 

"আপনি রেডি হয়ে যাবেন না কাজে যেতে হবে। আর আমাদের কলেজে নিয়ে যেতে হবে"।

ফারিশ কফি খাওয়া শেষ করে আয়নার কাছে যায় নিজের চুল ঠিক করে নেয়। আর ফারিশ বলে : 

" আমি রেডি। আপনি রেডি হয়ে নিচে আসেন লেট করবেন না কিন্তু। আর আপনাকে আমি বকা দেয় না কারণ আপনি ফাঁকিবাজ না। কালকে রাতে একটু কথা বেশি বলেছিলেন তাই বকা দিতে হয়েছে। আর কফি খুব ভালো তৈরি করেন আপনি অসাধারণ"।

ফারিশ এই কথা বলে চলে যায়। ফারিশের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে অনেক খুশি হয়ে যায়। তখন দরজায় কেউ নক করে আঁধার পিছনে তাকিয়ে দেখে তুলি এসেছে। আঁধার হাসি মুখ নিয়ে বলে : 

"আরে তুলি তুমি এখানে আর বাহিরে দাঁড়িয়ে কেনো ভিতরে এসে বসো "।

তুলি ভিতরে যায় তবে সে খেয়াল করে আঁধার অনেক খুশি আজকে আর সুন্দর করে রেডি হচ্ছে। তাই একটু সময় লাগছে। আঁধারকে হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে তুলি : 

" কি হয়েছে আঁধার তুমি আজ অনেক খুশি মনে হচ্ছে কারণ কি?আর এতো সুন্দর করে রেডি হয়ে কলেজে যাচ্ছো কাহিনী কি। 

তুলির কথা শুনে আঁধার আয়নার দিকে খেয়াল করে আসলে সে এতো সেজে কলেজে কেনো যাচ্ছে। আঁধার কখনো সাজতে পছন্দ করে না তাহলে। আঁধার বলে: 

"আসলে তুলি আজকে আমি কফি তৈরি করে ফারিশকে দেয় ওনি আমার প্রশংসা করেন। আর এইটা বলেন কফি খুব ভালো খেতে হয়েছে তাই একটু খুশি লাগছে "।

তুলি একটু খেয়াল করে দেখে আঁধার একটু লজ্জা পেয়ে কথা বলছে। একটু মাথা নিচু করে কথা বলছে। তুলি ওর কাছে যায় আর মাথা উঁচু করে দিয়ে বলে : 

"হুম শুধু খুশি না তুমি আঁধার অনেক খুশি। ভাইয়া একটু প্রশংসা করেছে বলে এতো খুশি। তুমি ভাইয়ার প্রেমে পড়ে গেলে আঁধার"?

তুলির কথা শুনে আঁধার একটু অবাক হয় সত্যি ফারিশ একটু প্রশংসা করেছে বলে সে এতো খুশি। আঁধার সবসময় ভালো কফি তৈরি করে সবাই ওর প্রশংসা করে কিন্তু ফারিশের কথা শুনে এতো খুশি হয়ে গেছে। আঁধার বলে : 

" আরে তুলি এইসব প্রেমে পড়ে নিজের সময় নষ্ট করি না আমি। আর তোমার ভাইয়া যে রাগী ওনার প্রেমে পড়লে জীবন শেষ। এখন চলো খাবার খেয়ে কলেজে যেতে হবে"।

সকালে সবাই খাওয়া শেষ করে কলেজ যেতে হবে তাই গাড়িতে বসে পড়ে, ফারিশ আর আঁধার এক সিটে বসে আর তুলি সামনে বসে পড়তে থাকে। 

আঁধার দেখে তুলি পড়াশোনা করছে কিন্তু এতো পড়ার চাপ নেই আজ। তাই তুলিকে জিজ্ঞেস করে আঁধার : 

" তুলি তুমি এতো পড়াশোনা কেনো করছো আজকে কলেজে এতো পড়ার চাপ নাই। "

আঁধারের কথা শুনে তুলি বই থেকে চোখ তুলে আঁধারকে বলে। 

" হুম এতো চাপ নাই পড়াশোনার কিন্তু নীরব স্যার অনেক পড়া দিয়েছে। ভালো করে পড়া বলতে না পারলে অনেক বকা দিবে। লোকটা এতো রাগী মনে হয় ভালো করে কথা বলতে পারে না। আর ভালো করে নোট করতে না পারলে অনেক বকা দেয় "।

তুলির কথা শুনে আঁধার একটু রাগ হয় কারণ নীরব স্যার খুব ভালো মানুষ। আঁধারের সাথে অনকে ভালো করে কথা বলে : তাই আঁধার বলে 

" তুলি তুমি নীরব স্যারকে রাগী কেনো বললে স্যার অনেক ভালো মানুষ । আমার সাথে কতো ভালো করে কথা বলে আর নোট না তুললে বকা দেয় না স্যার নিজের বাড়ি থেকে আরো নোট করে আমাকে দেয়। " 

আঁধারের কথা শুনে তুলি বলে : 

"তোমাকে নোট করে দেয় তোমার সাথে শুধু ভালো ব্যবহার করে না হলে সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করে নীরব স্যার। কলেজে অনেক মেয়ে আছে স্যার কারো সাথে কথা বলে না শুধু তুমি ছাড়া। স্যার তোমাকে পছন্দ করে তাই। "

তুলি আর আঁধার কথা বলতে থাকে কিন্তু ভুলে যায় গাড়িতে ফারিশ বসে আছে। তুলি স্যারের বিষয়ে অনেক খারাপ কথা বলছে কিন্তু নীরব স্যারকে নিয়ে আঁধার সব ভালো কথা বলে। এই বিষয়টা ফারিশ বেশ বুঝতে পারে। কথা বলতে বলতে কলেজ এসে যায় ওদের কলেজে দিয়ে ফারিশ কাজের জায়গায় চলে যায়। 

তুলি আর আঁধার কলেজে ভিতরে যায় তখন নিরব স্যার সামনে চলে আসে। নিরব স্যার বলে 

" আঁধার তুমি আসতে এতো দেরি কেনো করলে। অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছি তোমার আর তোমার সাথে জরুরি কিছু কথা বলতে চাই আমি "।

নিরব স্যারের কথা শুনে আঁধার অবাক হয়ে যায় কারণ স্যার আবার তার সাথে কি কথা বলবে। তবুও জিজ্ঞেস করে আঁধার:

"স্যার আপনি বলতে পারেন কি জরুরি কথা"।

আঁধারের কথা শুনে পাশে থাকা তুলিকে স্যার যেতে বলে। তুলি একটু রাগ করে চলে যায়। নিরব বলে 

" আঁধার তুমি অনেক ভালো একজন ছাত্রী। এবার মেডিকেল থেকে বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য অনেক সিনিয়র ছাত্রী যাবে। আমি চাই তুমি যাও " 



চলবে...........................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন