উন্মুক্ত লাইব্রেরী
পর্ব ১৩
আয্যাহ সূচনা
অনেকটা অপেক্ষার পর অপারেশন শেষ হয়েছে।অজানা ভয়ে কাতর ছিলো এতক্ষণ অব্দি অন্বেষা। অস্থিরতায় মাথা গরম হয়ে ঘাম ঝরছিলো।সাব্বির অনেকবার অনেক প্রশ্ন করেছে।জবাব দিতে পারেনি।সেই মুহূর্তে অন্বেষা নিজেই ছিলো সাব্বিরের চেয়ে বেশি নির্বোধ।পায়ের অপারেশন শরীরে তেমন ফারাক না ফেললেও এনেসথেসিয়ার প্রভাব কমে গেলে প্রচন্ড ব্যথা হবে।স্বাভাবিক একটি চামড়ার উপর কাটাছেঁড়া চারটে খানি কথা নয়।
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দৌঁড়ের উপর থাকেন। অপারেশন শেষে ছোট্ট একটা কথা বলেছেন “অল ওকে”।ব্যাস!এতটুকুই।
ক্যাবিন খালি নেই।বাধ্য হয়ে ওয়ার্ডে শিফট করা হলো বর্ণকে।খিটখিটে মেজাজ তার।ভারী বিরক্ত অন্বেষার উপর।সাব্বির বর্ণকে দেখে ভীষণ খুশি।পায়ের ব্যান্ডেজ এর দিকে একবার চায়।আরেকবার বর্ণের দিকে। অন্বেষা দুই দিকের পর্দা টেনে পাশে বসলো।নমনীয় সুরে প্রশ্ন করলো,
“কেমন লাগছে?”
তুচ্ছ হেসে বর্ণ বলে,
“সেই মজা লাগতাছে। থিয়েটারে রং বেরঙের নমুনা দেইখা আইলাম।এখন তোমারে দেখতাছি।পায়ের মধ্যে ইয়া বড় প্লাস্টার।এত মজা আমার জীবনেও লাগে নাই”
অন্বেষা চোখ বুঁজে ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে।হয়তো কোনো পরিস্থিতিতেই বর্ণের ক্যাটক্যাট করা থামবে না।হাতে প্রেসক্রিপশন। ওষুধ আনতে হবে।সাথে দুপুরের খাবার।আজ ভার্সিটির ক্লাস কামাই করেছে সাথে অফিস থেকেও ছুটি নিয়েছে।তবে বাড়ি গিয়ে রাঁধতেই হবে। অন্বেষা বললো,
“সাব্বির তুমি তোমার ভাইয়ের সাথে থাকো।আমি তোমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসি। ওষুধও আনতে হবে।”
সাব্বির মাথা দোলায়।বর্ণ নির্বিকার দৃষ্টি ফেলে অন্বেষার যাওয়ার পানে।তাকে দেখলে সুপ্ত মনে একটাই প্রশ্ন জাগে। ‘ এতকিছু?তাও বর্ণের জন্য?কেনো?কি কারণে?’ দৃষ্টির বাহিরে চলে গেলে নজর পড়লো পায়ে।চিনচিন করে ব্যথা উঠছে।অনুভব করলো এই ব্যথা। পা হতে যেনো দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করতে শুরু করলো ব্যথা।বর্ণের ঠোঁট শুকিয়ে চৌচির। মস্তিষ্কে উদ্ভট উদ্যম জাগে।কিছুতেই কাবু হওয়া যাবে না এই পীড়ার।বেদনায় ধরে ফেললে নিজেকে পরাজিত মনে হবে।হোক ব্যথা!আরো বেড়ে যাক।আজ পরখ হয়ে যাক বর্ণের ধৈর্যের সীমা কতটুকু?নিজের বিচিত্র অনুভবগুলো উপলব্ধি করতে শুরু করে।
সাব্বির জিজ্ঞেস করলো, “ও ভাইজান পাও ব্যথা করেনি?”
নিজের মধ্যেই হারিয়ে বর্ণ বলে উঠলো,
“হ করে।কিন্তু ব্যথা ভাল্লাগতাছে রে সাব্বির…কি আজব ছটফটে অনুভূতি…টনটন করে একেকটা রগ!রক্তের মত এদিক ওদিক দৌঁড় পারে”
________
অন্বেষা খাবার নিয়েছে। সাথে দরকারি ঔষধ।একটুপর নার্স এসে বর্ণকে ইনজেকশন দিবেন।খাবার প্যাক হওয়ার পর চলে গেলো ওয়ান টাইম প্লেট এবং গ্লাস কিনতে।সবকিছু হাতে নিয়ে তবেই ফিরতি পথে হাঁটা শুরু করে।কিছু সময় থামলো।আকাশের দিকে চেয়ে মুচকি হাসছে।যেনো এই হাসি তার বাবা মা দেখছে।তাদের বুঝাতে চাইছে সে খুব খুশি।স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো অনেকদিন পর।এত ভালো লাগছে কেনো জানা নেই।তবে মনের মাঝে অন্যরকম প্রশান্তির দোলা।
ভাগ্যিস টাকাগুলো পেয়েছিল।নয়তো কিছুই করতে পারতো না।আগামীকাল গিয়ে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবে।কিছু টাকা রেখে বাকি টাকা ব্যাংকে জমা করে আসবে।এসব ভাবতে ভাবতে তিনশত চার নম্বর ওয়ার্ডে হাজির অন্বেষা।সামনের দৃশ্যে চোখ ছানাবড়া।অপারেশন করা পা অন্য পায়ে তুলে রাজার হালতে শুয়ে আছে বর্ণ। অন্বেষা দৌঁড়ে গেলো।তাড়াহুড়ো করে পা নামিয়ে ধমকে বললো,
“তোমার কি জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পেয়েছে? পা তুলে রেখেছিলে কেনো?”
“আমার জ্ঞান বুদ্ধি নাই।যা আছিলো তোমার লগে থাইকা ওইটাও শেষ!”
“আমাকে ইচ্ছে করে বিরক্ত করছো তাই না?”
“তোমার মনে হয়না তুমি আমার লেইগা বেশি বেশি বাড়াবাড়ি করতাছো।”
অন্বেষা জবাব দিলো না।নার্সকে ডেকে জানলো খাবার দেওয়া যাবে কিনা।সেলাইন শেষ হয়ে এসেছে। নার্স এর কথামত পনেরো মিনিট পর খাওয়ানো যাবে।ততক্ষণে অন্বেষা সাব্বিরকে খাবার দিয়ে বসলো চেয়ারে।ক্লান্ত লাগছে ভীষন।
হুট করে বর্ণের তরফ থেকে অভাবনীয় প্রশ্ন আসে,
“তুমি খাইবা না?”
অন্বেষা চাইলো বর্ণের পানে।মুখ বর্ণহীন। নিষ্পলক চেয়ে প্রশ্নটি করেছে বোঝা গেলো। অন্বেষা কোনো জবাব দিলো না।নিজের খাওয়ার কথা ভাবেনি এখনও। উল্টো অন্য পাত্রে খাবার বেড়ে সাব্বিরের উদ্দেশ্যে বললো,
“তুমি খেয়ে তোমার ভাইজানকে খাইয়ে দিতে পারবে না?”
সাব্বির মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিতে যাচ্ছিলো।তখনই বর্ণ বললো,
“আমি ঠ্যাং দিয়া খাই না।হাত দিয়া খাই।”
অন্বেষা গুরুত্ব দিলো না এবারও।সাব্বিরের দিকে চেয়ে রইলো জবাবের আশায়।বর্ণ ক্যাটক্যাটে গলায় বলে উঠে,
“আমার হাত সহি সালামত আছে।নিজের খাওয়া নিজে খাইবার পারুম।রং তামাশা করা লাগবো না।”
অন্বেষা সাব্বিরের দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো,
“আমি বিকেলে বাড়ি যাবো।রান্না করতে হবে।তুমি থাকবে এখানে?”
“হ আপা থাকুম।আমার আম্মারে কইছি সন্ধ্যায় আইতে। কাম শেষ কইরা আইবো”
“আচ্ছা।কি কাজ করে তোমার মা?”
“আম্মা মাইনষের বাড়ি বাড়ি কাম করে।আর আব্বায় রিকশা চালায়।”
ভালো লাগে শুনতে যে পৃথিবীতে এখনও সৎ কর্ম করে কেউ বেঁচে আছে।অন্যদিকে খারাপ লাগে সৎ থাকার পরও ভালো থাকা হয়না।সাব্বির এর অবস্থা ঠিক এমন। অন্বেষা স্নেহের দৃষ্টিতে তাকায় সাব্বিরের দিকে।ধুলোবালি মাখা মলিন মুখ।বিকাশ হয়নি তার ঠিকমতো।সতেরো বছর হলেও দেহে আর আচরণে কোনো ছাপ নেই।
কিছুসময় পর অন্বেষা বর্ণের দিকে তাকায়।নিজে থেকেই খাবার নিয়ে খেতে শুরু করেছে। খিঁচে মুখ কুচকাচ্ছে বারংবার।অলৌকিকভাবে মনে হলো ব্যথা হচ্ছে নাতো আবার?শুধায় নরম গলায়,
“ব্যথা হচ্ছে?”
ঘাড়ত্যাড়ার মত উত্তর দিলো, “না”
ইতিমধ্যে নার্স এসেছে।খাওয়া শেষে অন্বেষা জানায় ব্যথার কথা। নার্স পেইন কিলার দিলেন।বললেন তিনদিন পর ছেড়ে দেওয়া হবে বর্ণকে।এটা শুনে বর্ণের বিরক্তি আকাশে।
_________
“জব্বার চাচা আজ খাবার দ্রুত নিয়ে যাবেন”
জব্বার চাচা ফোনের অন্যপাশে থেকে শুনলেন।ভীষণ ব্যস্ত শোনাচ্ছে অন্বেষার কন্ঠস্বর। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করেন,
“আম্মা তোমার তাড়া আছে নাকি আজকে কোনো?”
“হ্যাঁ চাচা।”
“এই বিকাল বেলা নিয়া গেলে এতগুলি খাবার নষ্ট হইবো।আমি কই রাখমু। ফ্রিজওতো নাই?”
বিষয়টা চিন্তার।আসলেই রাতের খাবার বিকেলে নিলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।ফোন লাউড স্পিকারে রেখে কথা বলছে অন্বেষা।জব্বার চাচাকে কলে রেখেই ভাবতে লাগলো উপায়।ঠিক তখনই সুদীপ্তা এসে চুলোর আঁচ কমিয়ে দেন।
বললেন,
“এই তোমার তরকারিতো পুড়ে যাচ্ছে”
হুশে এলো যেনো।দ্রুত কণ্ঠে জব্বার চাচাকে জানায় একটুপর কল করছে। সুদীপ্তা তার চিন্তিত মুখপানে চেয়ে বললো,
“তুমি কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত?”
“না তেমন কিছু না”
সুদীপ্তা আশ্বাস দেওয়ার সুরে বললো,
“আমিতো তোমার বোনের মতো। বলো কোনো সমস্যা হলে।যদি পারি সমাধান করতে।তোমাকে যে ক’দিন যাবত দেখেছি শুধু খাটুনি করতে দেখছি।”
হতাশ চোখে চাইলো অন্বেষা সুদীপ্তার দিকে।সুন্দর তার মুখখানা।কেউ দেখলে বলবে বিরাট বড়লোক বাপের সুন্দরী বেটি।তবে বাস্তবতা ভিন্ন।আপন ভেবে বললো,
“আমাদের মত মানুষের জীবনের ওপর নাম পরিশ্রম।”
“তুমি কি হতাশ দিদিমনি?”
অন্বেষা ত্বরিত হাসলো।বললো,
“একদমই না। মাঝেমধ্যে ক্লান্ত হয়ে যাই।”
সুদীপ্তা খুব যত্ন করে অন্বেষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।বললো,
“আমি তোমায় সাহায্য করবো। বলো কি করতে হবে?”
“আপনি পারবেন না দিদি।আপনার ছোট বাচ্চা। আমি আপনাকে কষ্ট দিতে চাই না।”
সুদীপ্তা জোর করে অন্বেষার হাত থেকে খুন্তি নিয়ে নেয়।নিজেই নাড়াচাড়া করতে লাগলো তরকারি।বললো,
“দিদি যেহেতু ডেকেই ফেলেছো সেক্ষেত্রে আর কোনো কথা হবেনা। কার সাথে কথা বলছিলে বললে না যে?কি করতে হবে আমার বলো?”
অনেকটা সময় নিয়ে ভাবলো অন্বেষা।এভাবে কি তার ঘাড়ে চাপানো ঠিক হবে?ছোট বাচ্চা নিয়ে কি পারবেন এসব করতে?খারাপ দেখায়।সুদীপ্তা আবারো তাগাদা দিলেন।বাধ্য হয়ে অন্বেষা বললো,
“একজন চাচা আসবেন খাবার নিতে।সন্ধ্যা আটটায়।আমি থাকতে পারবো না।হাসপাতালে যেতে হবে।আপনি শুধু খাবারগুলো গরম করে বাটিতে করে তার কাছে দিয়ে দিলেই হবে।”
“মাত্র এইটুকু কাজ? পারবো।তুমি চাচার নাম্বার দাও আমায়।....আর হাসপাতালে যাবে কেনো?কে ভর্তি?’
অন্বেষা জবাবে বলে,
“আছে একজন আমার মতই।যার বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কেউ নেই..”
_________
অসুস্থ মানুষকে ফল খাওয়াতে হয়।মানুষ যদি জাতের হয় তবে তাকে খাওয়াতে কোনো সমস্যা হয়না।কিন্তু বর্ণকে তাদের স্বজাতি মনে হয়না কিছুতেই। ফল নাকচ করছে।খাবে না।এসব স্বাস্থ্যকর জিনিসে নাকি গা গুলিয়ে আসে তার। অন্বেষা তারপরও কেটে কেটে রাখলো তার সামনে।আজ মুখ থেকে কোনো প্রকার ত্যাড়া কথা বেরোচ্ছে না।বর্ণের কথার জবাব দিয়ে তর্কেও জোরালো না অন্বেষা।
ফল এগিয়ে দিয়ে বললো, “খাও”
বলে নিজের বই বের করে।দুটো চেয়ারে নিজের সংসার পেতে বসেছে অন্বেষা।বর্ণ বললো,
“সারারাত আমার লগে থাকবা?”
প্রশ্নটি শুনতে অদ্ভুত শুনায়। অদ্ভুত এর চেয়েও বেশি। অন্বেষা অসস্তি বোধ করে।বলে,
“উপায় নেই এছাড়া।”
বর্ণ থমথমে গলায় বলে উঠে,
“বাড়ি যাও।আমি নিজেরে সামলাইতে পারি একলাই”
অন্বেষা স্থির নয়নে বর্ণের দিকে চায়।সেভাবেই চেয়ে রইলো কিছু সময়। জবাব দিলো সময় নিয়ে।বলে,
“মাঝপথে একা ফেলে যাওয়ার মানুষ আমি নই”
কে জানে কথা ও দৃষ্টির গভীরত্ব পরিমাপ করতে পারলো কিনা বর্ণ?তবে জবাব দিলো,
“আমিতো কোনো পথেই আগাইতে চাই নাই।তুমি মাঝপথে কেমনে পৌঁছাইলা?”
অন্বেষা এমনটাই আশা করেছিলো।বর্ণের কাছে সবকিছুই তাসের পাতার মতো।তাছাড়াও অন্বেষা গুরুত্বহীন তার কাছে।তার জন্য একটি পুরো দিবস দিয়ে দিলো তাতে মনে হয় না তার কিছু আসে যায়।হয়তো একপাক্ষিকভাবে অন্বেষাই তার মলিন মুখ দেখে মায়া উজাড় করে যাচ্ছে।
অন্বেষা নিজের বই আর খাতা বের করলো।ছোট্ট টেবিলে আয়েশ করে বসে।তার দিকে নির্বিশেষ চেয়ে বর্ণ।ভাবসাব ভালো ঠেকলো না। মুখশ্রী তারই মতো বিবর্ণ।কি হলো হঠাৎ এই মেয়ের?সারাদিন পরখ করে অবশেষে প্রশ্ন করলো হৃদয়।
হাসপাতাল এর বেডের খালি অংশে কনুই ঠেকিয়ে পড়ায় মনোযোগী হয় অন্বেষা।বর্ণ ইচ্ছেকৃত চেপে গিয়ে জায়গা দিয়েছে তাকে।
“পড়ার নাটক করতাছো?জানি আমার লগে কথা না কওয়া লাগে?”
নজর বইয়ে রেখেই অন্বেষা বলে,
“যে সোজা মুখে জবাব দেয়না তার সাথে কিসের আলাপ?...তাছাড়াও আমার সামনের সপ্তাহে পরীক্ষা”
“এমনেই সারারাইত বইয়া থাকবা?”
“অভ্যাস আছে রাত জেগে বসে পড়ার।কেনো তোমার চিন্তা হচ্ছে নাকি?”
“ঠ্যাকা পড়ছেতো আমার!”
“তাহলে চুপচাপ চোখ বন্ধ করে ঘুমাও”
বর্ণ দুহাত মাথার পেছনে একত্রিত করে শুয়ে পড়লো।একদম কোনায় তার বেড।দেয়ালের সাথে মিশে জোৎস্না দেখছে ছোট্ট জানালা হতে।ভাবছে বর্ণ।আজকালের বেশ কিছু কর্মকান্ড যা ঘটছে সবকিছুই তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে।সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় কেউ তার ব্যাপারে ভাবছে।এই বিষয়টি মেনে নিতেই পারছে না বর্ণ।কিছুতেই না।ভাবনা চিন্তার ছেদ ঘটে আভাসে।মনে হলো অন্বেষা চেয়ে আছে তার দিকে।বর্ণ সেদিকে না তাকিয়ে বললো,
“আমারে নিয়া যে তোমার মনে জোনাকি পোকা উড়তাছে ঐগুলারে থামাও”
“তুমিও নিঃস্ব,আমিও…. সঙ্গ থাকলে ক্ষতি কি?আমি তোমার মত মজবুত নই।আমি ভেঙে পড়ি প্রায়শই।তোমার কাছে যা তুচ্ছ আমার কাছে খুব প্রিয়,মূল্যবান,প্রয়োজনীয়,আবশ্যক।”
হাসপাতালের বিছানায় মাথা পেতে অজ্ঞাতসারে তন্দ্রায় ডুবে অন্বেষা।তখন রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর।মিটমিটে যে তাঁরারা ছিলো?তারাও কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।তাদের হারিয়ে যাওয়া দেখেছে নির্ঘুম বর্ণের দুচোখ।নিঃশ্বাসের সাথে বুক উঠানামা করছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। উন্মত্তের ন্যায় অসহ্য পায়ের পীড়া অনুভব করতে করতে চোখ গেলো অন্বেষার ঘুমন্ত মুখশ্রীর দিকে।মায়া হওয়া উচিত?কেনো সে অনুভূতিহীন?গায়ে মাখে না কিছুই।আশপাশে তার মতো অনেকেই ব্যথাকাতর।তবে বর্ণ জানতে চায়, কতোটা?দ্বিগুণ?তিনগুণ?নাকি হাজারগুণ বেশি পীড়া তাদের?তার জন্য বরাদ্দ চাদর অন্বেষার গায়ে উড়িয়ে দিয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে চোখ বুজে।
চলবে..............................