#চোখের_তারা_তুই
#পর্বঃ০৬
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া
ফারিশ বাড়ি ফিরে এসে দেখে আঁধার রুমে পড়াশোনা করছে, সে কিছু না বলে ওয়াশরুমে যায় একটু ফ্রেশ হয়ে টেবিলে গিয়ে ফারিশ জিজ্ঞেস করে :
"আপনার হাতের ব্যাথা ঠিক হয়ে গেছে। এই ঔষধ নিয়ে এসেছি খাবার খেয়ে ঔষধ খান।
ফারিশের কথা শুনে রাগ হয় আঁধারের নিজে ভুল করে এখন ঔষধ নিয়ে এসেছে।আঁধার বলে :
" আপনি তুলিকে বকা কেনো দিলেন সাহস কি করে হয় আপনার। নিজে এমপি হয়ে ঝগড়া তৈরি করবেন এখন কেউ আপনার জন্য রাস্তা দিয়ে যেতে পারবে না"।
আঁধারের কথা শুনে ফারিশ অবাক হয়ে যায়। এই মেয়েটা তার সাথে এভাবে কথা বলছে সাহস হয় কি করে ওর। আঁধারকে বলে ফারিশ :
"দেখুন তুলি যদি গাড়ি নিয়ে না যেতো তাহলে এতো বড় সমস্যা হতো না। তাই ওকে বকা দিয়েছি আর আপনি ফারিশ ফারহান চৌধুরী সাথে এভাবে কথা বলছেন।"
আঁধার এবার অনেক রেগে যায় লোকটা কতো খারাপ নিজে অন্যায় করেছে আবার অন্য কাউকে বকা দিবে। আর ওনাকে কিছু বলতে পারব না। আঁধার রাগী কণ্ঠে বলে :
ওহ তুলি গাড়ি নিয়ে গেছে বলে সমস্যা হয়েছে আজকে যদি তুলি গাড়ি নিয়ে না যেতো। তাহলে আপনার লোকেরা যেভাবে সব ভেঙে ফেলতে থাকে যদি গাড়ি ভেঙে ফেলতো তখন কি হতো। নিজে এমপি হয়ে শহর সামলাতে পারে না আসছে অন্য কাউকে বকা দিতে।
আঁধারের কথা শুনে অনেক রাগ করে ফারিশ এই মেয়ে আমাকে বলছে আমি শহর সামলাতে পারি না এতো বড়ো কথা।ফারিশ বলে :
"আমি এই শহর খুব সুন্দর করে সামলাতে পারি। কেউ যদি তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার জন্য পাথরের আঘাত পায় তাহলর আমি কি করব। "
এবার ফারিশের কথা শুনে বেশ অভিমান হয় আঁধারের । সে রাগ করে ঔষধ ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আঁধার বলে :
"ঠিক বলেছেন আপনার জন্য কিছু করা আমার উচিত হয় নাই। ভুল যখন করেছি শাস্তি পেতে হবে তাই এই ব্যাথা বাড়তে দেন ঔষধ খাবো না আমি। আর আমার কিছু হয়ে গেলে আপনার কি হবে ছয়মাস পর চলে যাবো আমি। যদি এখন মারা যায় তাহলে আপনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। "
ফারিশ এবার অনেক রেগে যায় এই মেয়ে ঔষধ না খেলে খাবে না তাতে আমার কি। ছয়মাস পরে চলে তো যাবে। ফারিশ বলে:
"ঠিক আছে ঔষধ খেতে হবে না আপনার। আমার ভুল দয়া করে ঔষধ নিয়ে এসেছি আপনার জন্য সরি "।
ফারিশের কথা শুনে আঁধার একটা হাসি দেয়।আর বলে :
"আপনারা শুধু পারেন দয়া করতে আর ব্যাথা দিতে যখন চাহিদা থাকে তখন কাছে ডেকে নেন চাহিদা ফুরিয়ে গেলে ছুঁড়ে ফেলে দেন। আমি ছয়মাস শুধু আপনার সাথে থাকবো তারপর কখনো আপনার মুখ দেখতে চাই না"।
আঁধারের কথা শুনে ফারিশ রুম থেকে বের হয়ে যায় মেয়েটা এতো সাহস। আমি ওকে চাহিদা অনুযায়ী বিয়ে করেছি যদি চাহিদা থাকতো তাহলে সেটা এতদিনে কি হতো কল্পনা করতে পারবে না। সে বাহিরে চলে যায়।
আঁধার রুমে চোখের পানি মুছে পড়তে বসে । আমি নিজের মায়ের মতো সব কথা সয্য করে নিতে পারব না। আর ছয়মাস পরে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে যখন তাহলে
মায়া করে কি হবে। প্রায় এক ঘন্টা পর কেউ রুমে নক করে।
এক ঘন্টা আগে ফারিশকে বাড়িতে আসতে দেখে তাই ওর সাথে কথা বলতে রুমে আসে নিলয় চৌধুরী। কিন্তু দেখে আঁধার পড়াশোনা করছে তাই দরজার নক করে নিলয় বলে :
"ফারিশ তোর সাথে কিছু কথা আছে আমার রুমে চল। "
আঁধার দরজার নক শুনে ভেবেছে ফারিশ এসেছে কিন্তু কণ্ঠ শুনে দেখে বড় আব্বু এসেছে। সে এমনি রাগ করে আছে তাই আঁধার বলে :
"দেখুন আপনার ফারিশ এই রুমে নাই। যদি জরুরি কথা থাকে তাহলর ফোন করে জেনে নিবেন।"
আঁধারের কথা শুনে নিলয় চৌধুরী বেশ বুঝতে পারে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে তাই নিলয় চৌধুরী আঁধারকে জিজ্ঞেস করে:
"তোর আর ফারিশের মধ্যে কি ঝগড়া হয়েছে। ফারিশ কি তোকে কিছু বলেছে কিন্তু ফারিশ এমন ছেলে না। কখনো তোর সাথে খারাপ আচরণ করতে পারে না"।
বড় আব্বুর কথা শুনে আঁধার বিষাদের হাসি দেয়। আঁধার বলে :
"যে মানুষ নিজের বউয়ের সাথে খারাপ আচরণ করে তাকে গর্ভবতী অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তার ভাইয়ের ছেলে নিজের বউয়ের সাথে কি করে ভালো ব্যবহার করবে। নিজের সংসারের সমস্যা যে সমাধান করতে পারে নাই সে এসেছে অন্য কারের সমস্যা সমাধান করতে "।
আঁধারের কথা শুনে নিলয় চৌধুরীর অনেক কষ্ট হয়েছে সব কথা বুকে এসে বেঁধে যায় তার। সে কিছু বলতে যাবে তখন আঁধার দরজা বন্ধ করে দেয় চোখে জল নিয়ে রুমে চলে আসে।
আঁধার কিছু না বলে দরজার সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চোখ দিয়ে কান্না করছে। নিজের মায়ের ছবি হাতে নিয়ে বলে :
"আম্মু আজকে আমি খুব খারাপ ব্যবহার করেছি সবার সাথে তাই না। কিন্তু ওরা যাহ করেছে সেটা কি ঠিক তুমি যখন অসুস্থ ছিলে তখন যদি ভালো চিকিৎসা হতো তাহলে তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যেতে না। এই চৌধুরী বাড়ির বউ হয়ে তুমি বিনা চিকিৎসায় মারা গেলে তাদের কি শাস্তি দরকার না। আর এই বড় আব্বু এতো বছর আমাদের খবর নেন নাই কিন্তু এখন সব ভালোবাসা কোথা থেকে আসছে। ওনি তোমার খুনি আমার কাছে আম্মু "।
চলবে........................