চোখের তারা তুই
পর্ব ০৩
তাইয়েবা বিন কেয়া
.
.
.
আঁধার: সকালে সবাই খাবার খেতে টেবিলে আসে ফারিশ ও আসে। আমি কিছু না বলে সবাইকে খাবার পরিবেশন করে দেয় জরিনা খালা সাহায্য করতে থাকে আমাকে।
ফারিশ: বড় আব্বু আজকে আমার জরুরি কিছু কাজ আছে সেই জন্য তাড়াতাড়ি যেতে হবে। আঁধার আর তুলি একসাথে কলেজে চলে যাবে বাড়ির গাড়ি করে। আমি যেতে পারব না।
নিলয় চৌধুরী : আচ্ছা ঠিক আছে তোকে যেতে হবে না। ওরা চলে যেতে পারবে।
আঁধার : ফারিশের কথা শুনে একটু খুশি হয়ে যায় ওনি না গেলে একটু আনন্দ করতে পারব গাড়িতে। তবে ওনি গেলে খারাপ হবে না লোকটা এতো বেশি বকা দেয় না। হয়তো ওনার সত্যি জরুরি কিছু কাজ আছে।
ফারিশ: খাবার খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসি একটু রেডি হয়ে নিচে যায় মেয়েটা খাবার খেতে বসেছে। আমার সাথে যেতে হবে না এই কথাটা শুনে মেয়েটা মনে হয় বেশ খুশি হয়েছে যদিও মুখ দেখে মনে হচ্ছে না। আমি কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে কাজের জায়গায় চলে যায়।
আঁধার: খাবার খাওয়া শেষ করে রেডি হয়ে আমি আর তুলি কলেজে চলে যায়। সেখানে ক্লাস শুরু হয় সবাই পড়াশোনা করছে এক ঘন্টা পর মেডাম ক্লাস থেকে বের হয়।
তুলি: কলেজে আঁধারকে ভাবী ডাকতে পারব না তাই নাম ধরে ডাকি। "আঁধার তোমাকে ইংরেজি বিভাগের নিরব স্যার ডেকে পাঠিয়েছেন। এখুনি যেতে বলছে কিছু কথা বলবে তোমার সাথে"।
আঁধার : তুলির কথা শুনে অনেক ভয় করছে আমার। কারণ আমি এই কলেজে নতুন। স্যার আমাকে হঠাৎ ডাকলেন কেউ কি কেনো অভিযোগ করেছে আমার নামে।
তুলি: আরে আঁধার তাড়াতাড়ি যাও স্যার অনেক রাগী। দেরি করলে বকা দিতে পারে যাও।
আঁধার: আমি কি করব একটু সাহস নিয়ে স্যারের অফিসের সামনে যায় দরজায় একটা টোকা দেয় " স্যার আসতে পারি "।
নিরব: হুম আঁধার ভিতরে আসো। এখানে বসে যাও তোমার সাথে কিছু কথা আছে আমার।
আঁধার : আমি একটু অবাক হয় স্যারের মুখে নিজের নাম শুনে। কলেজে আমি নতুন কেউ আমার নাম জানে না তাহলে স্যার কি করে জানে ওনি কি আমার পরিচিত।
নিরব : আমার মুখে তোমার নাম শুনে অবাক হয়ে গেলে তাই না। আসলে আমি তোমার মায়ের একজন ছাত্র। তোমার ফাইল একটু চেক করছিলাম। সেখানে তোমার মায়ের নাম দেখে বুঝতে পারি তুমি ম্যামের মেয়ে।
আঁধার: স্যারের কথা শুনে একটু খুশি হয় আসলে মা একজন শিক্ষক ছিলেন। স্যারের সাথে অনকে কথা বলি মনে হয় স্যার মাকে অনেক সম্মান করে। ক্লাস শুরু হয়ে যাবে তাই রুমে চলে আসি।
তুলি: কি হলো আঁধার স্যার তোমাকে কি বকা দিয়েছে। নিরব স্যার অনেক রাগী কারাে সাথে ভালো ব্যবহার করে না।
আঁধার: আরে তুলি তুমি চিন্তা করো না স্যার আমাকে বকা দেয় নাই। স্যার আমার মায়ের ছাত্র তাই আমার সাথে কিছু কথা বললেন মায়ের বিষয়ে।
তুলি : ওহ তাই তাহলে তুমি বেঁচে গেলে স্যার অনেক রাগী। কলেজে সবাই অনেক ভয় পায় তাকে।
আঁধার : আচ্ছা ঠিক আছে চলো ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। কলেজ শেষ করে বাসায় ফিরে আসতে যাবো তখন তুলির ফোনে একটা কল আসে। ওর বন্ধুর মা অনেক অসুস্থ ওকে যেতে হবে।
তুলি: আঁধার তুমি গাড়ি নিয়ে বাসায় চলে যাও। আমাকে নিধির মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
আঁধার : "আরে তুলি তোমার গাড়ির দরকার কারণ নিধির মাকে গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তুমি চিন্তা করো না আমি রিকশা নিয়ে চলে যেতে পারব "।
তুলি: "আরে একদম না ভাইয়া যদি জানতে পারে তাহলে অনেক বকা দিবে আমাকে। তুমি এই শহরে নতুন রাস্তা না চিনতে পেরে হারিয়ে গেলে তখন।
আঁধার : তুলিকে অনেক কষ্ট করে রাজি করিয়ে গাড়ি দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। কলেজের সামনে কেনো রিকশা নাই তাই একটু হেঁটে গিয়ে রিকশা নিতে হবে। হঠাৎ সামনে দেখি গোলাপ ফুল দেখে কিনতে ইচ্ছা করে।
দোকানদার : আরে আপু গোলাপ নিবেন। তিরিশ টাকা করে নিতে হবে।
আঁধার: আমি গোলাপ নিয়ে একটু হাঁটতে থাকি এমন সময় দেখি এই জায়গায় অনেক গন্ডগোল হচ্ছে। একটু ভয় পেয়ে যায় আর সামনে কেনো রিকশা নাই কি করে যাবো বাসায়।
ফারিশ: আঁধার আপনি এখানে কি করেন।
আঁধার: হঠাৎ পিছনে কারো ডাক শুনে তাকিয়ে দেখি ওনি মানে ফারিশ। আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করি " আপনি এখানে কি করেন "।
ফারিশ: আঁধার উত্তর আগে আমি জানতে চাই। তুলি কোথায় আর আপনার গাড়ি কোথায়।
আঁধার: আসলে হটাৎ করে তুলির বন্ধুর মা অসুস্থ হয়ে যায় তাই সেখানে যেতে হয়েছে গাড়ি নিয়ে।আমি হেঁটে বাড়ি ফিরে যাব কিন্তু রাস্তায় গন্ডগোল হচ্ছে।
ফারিশ: আচ্ছা ঠিক আছে আপনি আমার সাথে বাসায় চলুন।
আঁধার: আচ্ছা এখানে এমন গন্ডগোল হচ্ছে কেনো। সবাই মারা*মারি করছে।
ফারিশ : আসলে ওদের এমপিকে নিয়ে কেউ খারাপ কথা বলেছে তাই এমন করছে। পুলিশকে ফোন করে ডাকা হয়েছে তারা চলে আসবে।
আঁধার: হঠাৎ খেয়াল করি একটা পাথরের টুকরা ফারিশের দিকে ছুটে আসছে। আমি ওনাকে সরিয়ে দিয়ে সেটা হাত দিয়ে ধরে ফেলি।
ফারিশ: আরে আঁধার আপনার কি হয়েছে। আপনার হাত তো লাল হয়ে গেছে ব্যাথা করছে।
আঁধার: "আসলে পাথরটা হঠাৎ করে হাতে লাগে তাই একটু লাল হয়ে গেছে"।ফারিশ আমাকে ওনার গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে দেন।
ফারিশ: আমি ওনার হাতে মলম লাগিয়ে দেয়। হাত অনেক লাল হয়ে গেছে এই মেয়েটা আমাকে বাঁচাতে নিজেকে কষ্ট দিয়েছে।
আঁধার : সব হয়েছে এই এমপির জন্য। এই শহরের এমপি আসলে অনেক খারাপ দলের লোকদের ঝগড়া করতে দিয়ে ওনি কোথায় চলে গেলেন। এই পাথর ওনার শরীরে ছুড়া উচিত বজ্জাত এমপি।
লেখিকা: আঁধারের কথা শুনে সামনে থাকা ডাইভার পিছনে তাকায়। আসলে আঁধার জানে না এই শহরের এমপি আসলে কে।
.
.
.
চলবে..........................