উন্মুক্ত লাইব্রেরী
পর্ব ১৭
আয্যাহ সূচনা
১৭.
বিগত রাত্রী কেঁটেছে তন্দ্রাহীন।খোলা চোখ আর মস্তিষ্ক বোঝাই করা চিন্তা।আবার কিছু অলীক কল্পনা।যার বিশেষ কোনো ভাবার্থ নেই। তবে অন্বেষা নিজেকে বুঝিয়েছে।কারো উপর জোর খাটানো কি আদৌ ঠিক?কেউ তাকে জীবনে গ্রহণ করতে চায় না সেটি তার একান্ত ব্যাপার।জোর করে তার কাছে থেকে যাওয়ার কোনো মানে নেই।চাপিয়ে দিতে পারেনা সে নিজের ইচ্ছে এবং স্বয়ং নিজেকে।এমন কি অনুভুতি আছে তার মাঝে?অনুরাগের গভীরতা অত্যন্ত অর্বাচীন।তবে কিছু পেতে চেয়ে সেটি হারিয়ে ফেলার ভোগান্তি ব্যাপক।এর আগেও হয়েছে তার সাথে এমন।হাত বাড়িয়ে কিছু চেয়েও পায়নি।শূন্য হস্তে ফিরে আসতে হয়েছে। বারবার ভাগ্য বলেছে,
“সব ভালো তোর জন্য নয়”
নিদ্রাহীন হীনবল কায়া নিয়ে উঠে দাঁড়ালো।চিত্ত সংকুচিত।কিন্তু কাজ কি আর থেমে থাকবে?পরশুদিন থেকে পরীক্ষা।হয়তো পড়ালেখায় ডুবে ভুলে থাকা যাবে না পাওয়ার ঝাপসা মর্মবেদনা।
তৈরি হয়ে বেরিয়েছে অন্বেষা।আরো একটা দিন এর সিংহভাগ দিয়ে দিতে হবে এখানে।মাথায় কাপড় টেনে হাঁটা শুরু করেছে আপন মনে।প্রতিদিনের ন্যায় বর্ণ চায়ের দোকানে।মাথা নুয়ে চা খেতে দেখলো তাকে। তড়িঘড়ি করে এগিয়ে গেলো অন্বেষা।দরকার নেই কোনো চোখাচোখি হওয়ার। বর্ণও ঠিক সেই সময় মুখ তুলে চাইলো।চিনতে ভুল করলো না অন্বেষার চলন। ত্বরিত কপালে মৃদু ভাঁজ পড়ে।
পাশে থাকা সাব্বির বলে উঠলো,
“আজকে আপা আপনার লগে ঝগড়া করলো না?গেলো গা দিহি।”
বর্ণও কিছুটা অবাক।সাব্বিরের প্রশ্নে তার দিকে চেয়ে বললো,
“কি জানি”
নীরবতার স্তব্ধতা ভাঙবে না অন্বেষা।নিজের উপর যে লজ্জাবোধ হচ্ছে সেটি দমাতে পারবে একমাত্র তার নির্লিপ্ততা।অবাধ্য স্বপ্নের তোরণ বন্ধ রেখেই চলবে।আজকাল স্বপ্নদল উড়ন্ত অবস্থায় ছিলো।সাহস সঞ্চয় করে দৃঢ় প্রত্যয়ে।
এমন এড়ানো ইচ্ছেকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত?প্রশ্নটি একবার বর্ণের মাথায় আসলেও টিকেনি বেশিক্ষণ। এড়িয়ে যাওয়া তার জন্যই মঙ্গল।হাত ভর্তি রং নিয়ে এসেছিলো মরিচা ধরা বর্ণ সত্ত্বায় মাখাবে বলে। সেটি বর্ণ হতে দেয়নি।নিজেকে উজাড় করার ইচ্ছা নেই যে একেবারেই।তার স্ব জীবনাঙ্গনে সাদা কালো রংই বরং বেশি শোভা পায়।
____
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পা রেখেছে অন্বেষা।মুখ অবয়ব ফ্যাকাশে।সব সময় এভাবেই চলাফেরা করে সে। প্রতিক্রিয়া শূন্য হয়ে। কারো সাথে তেমন মিশতে ইচ্ছে হয়না। মিশলেও কিছুদিন পর শুরু হয় মত বিরোধ।কি প্রয়োজন প্রয়োজন ছাড়া কাউকে অপছন্দের তালিকায় ফেলার।
ফ্যাকাল্টির সিঁড়িতে পা রাখতেই পথ এক প্রকার রুখে দাঁড়ালো ঝুমা আর রুম্পা।অনেকদিন পর তাদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত। স্বাভাবিকভাবেই এড়িয়ে যেতে চাইলে ঝুমা বলে উঠে,
“আমরা তোমার সিনিয়র।আদব কায়দা কি সব ভুলে গেছো?”
ম্লান দৃষ্টিতে চায় অন্বেষা। গুরুত্বহীন ভঙ্গিমা।জবাব দিলো,
“ভুলিনি আপু।”
রুম্পা ঝুমার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বললো, “সালাম আদাব কিছুইতো পেলাম না।”
অন্বেষা বাঁকা হেসে বললো, “সম্মান পাওয়ার মতো কিছু করলে অবশ্যই সালাম দিতাম আর সম্মান করতাম।”
গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো শোনায় অন্বেষার বাক্য।তেমন কোনো জটিল সমস্যা নেই তাদের মধ্যে।শুধু উচুঁ আর নিচু জাতের ফারাক।এই তফাৎকে অহংকারের কেন্দ্র বিন্দু বানিয়ে জুলুম চালাতে চায় ঝুমা এবং রুম্পা।তাদের মতে অন্বেষার মতো সর্বহারা মানুষগুলো পৃথিবীতে এসেছে তাদের হাতের পুতুল হতে।একই বাড়িতে থাকাকালীন তাদের বেশিরভাগ কাজই করেছে অন্বেষা।করতে না চাইলে বাধ্য করা হয়েছে। বাড়ি ছাড়া করিয়েও যেনো মস্তিষ্ক ঠান্ডা হয়নি তাদের।
“ক্যাম্পাস এর বাহিরে নাহয় বডিগার্ড নিয়া ঘুরো। ক্যাম্পাসের ভিতরে কি করবে?”
অন্বেষা আবার হাসে।গা জ্বালানো হাসি।বললো,
“ক্যাম্পাসের ভিতরে আমাদের শিক্ষকগণ আছেন।”
বলে এড়িয়ে গেলো অন্বেষা।দুয়েক সিঁড়ি উপরে উঠতেই রুম্পা হলো,
“তোমার পাস্ট হিস্ট্রি সব জানছি! কুলাঙ্গার বাটপার জাত! কপটচারীর মেয়ে।এই পরিচয় নিয়ে এত তেজ?”
অন্বেষার পা জোড়া কেঁপে উঠে।সাথে সর্বাঙ্গ।কিছু মুহূর্তের জন্য টালমাটাল হয়ে পড়ছিলো।দেয়ালে হাত রেখে ধাতস্ত করলো নিজেকে।থরথর কাপতে থাকা শরীর।পেছনে এগিয়ে গেলো।কষিয়ে চড় বসিয়ে দেয় রুম্পার গালে।বলে,
“আমার বাবা নির্দোষ ছিলেন!এটা প্রমাণিত হয়েছে।সব প্রমাণ আছে আমার কাছে।আগামীবার আমার বাবার সম্পর্কে কিছু বলার আগে একশোবার ভাববি।আর কুলাঙ্গার তুই!তোরা!যারা নিজে কিছুই করতে পারিস না জীবনে। অন্যের পেছনে লেগে….না পায়ে ধরে ঝুলে থাকাই তোদের কাজ।দুআ করি আজীবন এভাবেই আমার পায়ের নিচে পড়ে থাক।আমাকে টেনে নামানোর চেষ্টা কর!আর আমি আরো উপরে উঠি।”
সিঁড়ি এবং করিডোর কেঁপে উঠেছে অন্বেষার কণ্ঠের ভয়াবহতায়।চুপচাপ থাকা মেয়েটির এমন রূপে বিস্মিত অনেকেই।ক্লাসে গেলো না অন্বেষা।কান্না পাচ্ছে তার।তাদের সামনে কাঁদলে নির্ঘাত তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করবে।
উন্মুক্ত লাইব্রেরীতে একাকী বসে আছে বর্ণ।এদিক ওদিক পাখির ন্যায় ঘাড় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে।যেনো কোনো অপেক্ষায়।বাটন ফোনের বোতাম চেপে দেখলো দুপুর দুইটা বাজতে অল্প কিছু সময় বাকি।অবাক হলো অনেকটা।সময় তো অনেকখানি পেরিয়ে।তবে?সবুজ বেঞ্চির পাশের খালি সিটের দিকে একবার চেয়ে সেও উঠে দাঁড়ায়।চাকরির ঠিক ঠিকানা নেই। টিউশন বাঁচাতে হবে।
___
অসময়ের বৃষ্টি ভারী বিরক্ত করে। বর্ণকেও করছে। জানতো না এভাবেই পরবর্তী নয় দিন পাশের সিটটা খালিই থেকে যাবে।বিকেলের আলো ম্লান।বর্ষ পেরিয়ে বর্ণের অন্তরে যেন এক অজানা শূন্যতা নেমে এলো। প্রতিটি দিন কাটে ঠিক আগের মতই নিরবতায়। কোথা থেকে যেন সাব্বির এসে হাজির হলো।হাতে ঘুড়ি।বর্ণের চুপচাপ সরু গলির পানে চেয়ে থাকতে দেখে প্রশ্ন করলো,
“কি ভাবতাছেন ভাইজান?”
বর্ণ সাব্বিরের দিকে দৃষ্টিপাত করে ঠান্ডা গলায় বলে,
“অন্বেষারে দেখছিলি?”
“হ ভাইজান দেখছিলাম অনেকদিন আগে।দুপুর বেলা বাড়ির দিকে যাইতাছিলো।চোখ মুখ ফুইলা আছিলো। কাঁনছে মনে হয়।আমি জিগাইলাম কোনো উত্তর না দিয়া গেলো গা চোখ মুখ মুছতে মুছতে।”
“কবে?”
“ঐযে যেদিন সকালে আপনার লগে ঝগড়া না কইরাই গেলো গা?ওইদিন”
“দুপুরে?”
অতি ক্ষুদ্র মাত্রায় উদ্বেগপূর্ণ দেখা গেলো বর্ণকে
দুপুরে বাড়ি ফেরার কথা না অন্বেষা।সেদিন লাইব্রেরীতেও দেখা মেলেনি।কোনো ফোন আসেনি এই অব্দি তার তরফ থেকে। ভাবাচ্ছে বর্ণকে বিষয়টা।সময় অতিবাহিত করে সম্পূর্ণ চেহারার ভঙ্গি পাল্টে বলে উঠে বিরক্তির সুরে,
“মাইয়া মানুষের যত ঢং!সন্ন্যাস নিছে…তামাশা করে…রং লাগছে মনে…পিরিতের রং!” শেষ শব্দজোড়া সাব্বিরের কর্ন গোচর হয়নি।অত্যন্ত ধীর আওয়াজে বলেছে বর্ণ।
____
সাব্বিরের সাথে আলাপের পর আরো দুটো দিন কেঁটেছে।এই দুটোদিন ছিলো একেবারে ভিন্ন।এলোমেলো ভাবনার সমারোহ ছিলো সর্বক্ষণ।তাকেই বড্ড ভাবাচ্ছে অনুভূতিহীন বর্ণের এমন পরিবর্তন। তার মনে এক অজানা আশঙ্কা,এক অদ্ভুত চিন্তা।নিষ্প্রাণ সত্ত্বাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।যার হেঁয়ালি চালচলন।এই অভিযানে খুঁজে পেলো বর্ণের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অনুভূতির আভাস।তার মধ্যে মায়া আছে। এতো জানতো না।মস্তিষ্ক তাড়না দিচ্ছে।জানতে চাইছে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাওয়া মেয়েটা ঠিক আছেতো?নাকি ভারী অভিমানের পাহাড় তুলে রেখেছে মধ্য বরাবর।
দূরে এক ব্যক্তি দেয়ালে ছোটখাটো আয়না টানিয়ে রেখেছেন।তার পাশেই চেয়ার।আর যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী।এটা তার ছোটখাটো সেলুন।সেই ভেজা আয়নায় মুখখানা স্পষ্ট বর্ণের। ধীর গতিতে পলক ফেলে।এক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়ে নিজেকে ভীষণ অচেনা মনে হলো।
“কি সমস্যা কি তোমার? পিরিতের বাত্তি নিভাইতে কইছি।নিজের সুইচ অফ কইরা বইয়া থাকতে কই নাই।”
ঠান্ডায় নাক টানছে অন্বেষা।সাথে কান্নার প্রভাব।গতকাল বাবা মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো তার।এতটাই মনে পড়ছিলো যে চোখ ভেঙে কেঁদেছে সারারাত্রি। ফোনে বর্ণের এমন কর্কশ আওয়াজ শুনে উঠে বসলো।রাত নয়টা বাজে।
অন্বেষার অনুত্তরিত ভাবসাব তরতর করে বর্ণের মেজাজকে তুঙ্গে চড়িয়ে দেয়।বর্ণ বলে,
“ ঠেঁটামি করো? ভেংসা ধরছো?তোমারে খুঁইজা পাওয়ন যায় না। লাইব্রেরীতে যাও না।আমারে দেখলে দেমাগ দেহায় পিঠ ঘুরায় যাওগা।কি সমস্যা কি?তুমি ভাবতাছো এগুলি কইরা আমার মন পাইবা?”
“উহু”
“আবার উহু মারায়!চেহারা নকশা ভস্কায় দিমু মাইরা।”
এরপর আর কিছু বলার থাকে?হুট করে চিৎকারের আওয়াজে বুক কেঁপে উঠেছে অন্বেষার। জবাবহীন নাক টানতে শুরু করলো বারবার।
“কাঁন্দো কেন?”
“কাঁদি না।একটু সর্দি এই আরকি।”
বর্ণ কোমরে একহাত এবং অন্য হাতে ফোন কানে চেপে দাঁড়িয়ে আছে।গলার কঠোরতা বজায় রেখে বললো,
“কালকে কই গেছিলা?সাব্বির খবর দিলো!রাস্তায় রাস্তায় গুড়াগাড়া পোলাপাইন এর লগে কি?”
“বাবা মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো।বাচ্চাদের খাইয়েছি। সাব্বিরওতো ছিলো।এটা বলেনি?”
বর্ণ কোনো ভাবনা চিন্তা ব্যতীত বললো, “বাইর হও কাম আছে।”
অন্বেষা পথ খুঁজলো পালাবার।কিছুতেই বর্ণের মুখোমুখি হবে না।ভীষণ লজ্জা হয় তার।বিদ্যুতের বেগে জবাব দিলো,
“আমার ঘুম আসছে। ঘুমাবো।”
বলে মুখের উপর ফোন কেটে দিলো।অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে ফোন সাইলেন্ট করে ফেলে।
_____
গলিতে কুকুর ডাকছে।বর্ণকে নির্জন আঁধারে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে যেনো শাসানোর চেষ্টায়। তবে নির্লিপ্ত বর্ণ।তার চেঁচামেচিতে কান দিলো না।দোতলা বাড়ির সামনে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে কোমরে হাত রেখে।মস্তিষ্ক তুখোড় পরিকল্পনায় মগ্ন।হুট করে দেখলো সামনের বাড়ি থেকে একজন বেরিয়ে এলো।মধ্য বয়স্ক লোক তিনি।
পেছনে দুহাত বেঁধে এগিয়ে এলেন বর্ণের দিকে।তাকে দেখে কুকুরটা চেচানো বন্ধ করে দিলো।হয়তো পরিচিত মুখ দেখে।তিনি সোজা বর্ণের সামনে দাঁড়িয়ে কাটকাট গলায় বলে উঠেন,
“এই ছেলে এই!তোমাকে অনেকক্ষন যাবত দেখছি এখানে দাঁড়িয়ে আছো।তোমার লক্ষণ ভালো লাগছে না আমার। উদ্দেশ্য কি বলোতো? মুখটাও সন্দেহজনক।”
বর্ণ নিমেষহীন চেয়ে প্রশ্ন করলো,
“এই বাড়িটা কি আপনার চাচা?”
“হ্যাঁ আমি মালিক।”
“এই রাস্তাটা আপনার?”
বাড়ির মালিক বিরক্তির সুরে বললেন, “রাস্তা আমার হবে কেনো?”
“ঠিক।রাস্তা জনগণের।যেহেতু আপনার ব্যক্তিগত মালিকানা নাই এদিকে তাইলে আমার দাঁড়ায় থাকায় আপনার সমস্যা হওনের কথা না”
“তুমি আমার বাড়ির দিকে চেয়ে আছো।কি মতলব বলোতো!আমি কিন্তু পুলিশে কল করবো?”
“আপনার চোখ দিয়া তাকাইছি।আমার আপনা মালিকানা আমার চোখ।ঐটা দিয়া তাকায় আছি।”
“বড্ড বেয়াদবতো ছেলে তুমি!এক্ষুনি যাও এখান থেকে।নাহয় হাজতে ভরবো তোমাকে।আমাকে চেনো?এলাকার প্রায় সব মানুষ আমাকে ভয় পায়”
“আর আপনি আমারে!”
“মানে?”
“ডরাইতাছেন আমারে।চোর ডাকাত ছিনতাইকারী ভাইবা।”
বিপরীতে থতমত খেয়ে যান বাড়ির মালিক।অপমানিত বোধ করলো।এই ছেলের সাথে কথা বাড়ানো মানে সময় অপচয়।বাহিরে সিসিটিভি লাগানো আছে।বাড়ি গিয়ে এক নজরে রাখা যাবে।তাই কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো।
পেছন থেকে স্বর উচু করে বলে উঠলো, “আপনার বাড়িটা আমার পছন্দ হইছে চাচা।কিন্তু টাকা নাই। মাগনা দিবেন?”
বাড়ি ওয়ালা চলে যাওয়ার পর বর্ণ বাম দিকে চাইলো। উচুঁ দেয়াল।দেয়াল থেকে সোজাসুজি একটা খোলা বারান্দা।ব্যয়াম করার ভঙ্গিতে হাত তুললো।শরীরে একটা ভাব এসেছে এবার।সৃষ্টিকর্তার নাম নিয়ে উঠে যায় একলাফে দেয়ালের উপর।
অদ্ভুত আওয়াজে ঘুম হালকা হয় অন্বেষার।আড়মোড়া দিয়ে উঠে চোখ কচলে আলগোছে প্রশ্ন করে,
“কে?দিদি এসেছেন?”
বারান্দা আর ঘরের মাঝে কোনো দরজা নেই।একটা টেবিল ল্যাম্প জ্বলছে বিছানার পাশে। অন্বেষা চোখ কচলাতে কচলাতে মাথা ঝুঁকিয়ে নিলো। মাঝেমধ্যেই সুদীপ্তার মেয়ে আসে।হুটহাট না বলে।ঘুমের ঘোর পুরোপুরি কাঁটার পূর্বেই মনে হলো ডান পাশে থাকা টেবিল ল্যাম্প তার খুব সন্নিকটে।ভারী আওয়াজ ভেসে এলো।মুখের সামনে ছোট্টো ছুরি ধরে বললো,
“এই ছেমড়ি এই! পাখনা গজাইছে না?আমারে এড়ায় যাও!এইযে চাক্কু দেখতাছো?আমার লগে এক্ষণ না আইলে এটা ডাইরেক্ট তোমার গলায় হান্দায় দিমু। বাঁচতে চাইলে জলদি উঠো!আজকা তোমার কিসমতের একটা পৃষ্ঠা আমি উল্টামু।অনেক উজাইছো না? চলো !”
চলবে........................