তুমি রবে নীরবে - পর্ব ০৫ - নাদিয়া সাউদ - ধারাবাহিক গল্প


কুহুর কথায় কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে গেল রওনক।স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে মেয়েটার মুখাবয়ব জুড়ে অসস্থি খেলা করছে!কথায় দ্বিধা'র আভাস!তপ্ত শ্বাস ফেলে,ফিরে গিয়ে বাইকে উঠে বসলো রওনক।গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলল,
"আমার বাইকে উঠতে বলেছি বলে নিজেকে আহামরি কিছু ভাববার প্রয়োজন নেই!বেকার সময় নষ্ট করার জন্য দাঁড়িয়ে নেই আমি!নিজেকে তুমি রানী এলিজাবেথ মনে করলেও অন্যের কাছে পাশের বাড়ির চাকরানী সখিনাও না!

রওনকের কথায় বিস্ফোরিত নয়নে তাকাল কুহু!অত্যল্পকালে জড়তা,সংকোচ কেটে গিয়ে রাগ এসে ভর করলো শরীরে!ঝাঝাল স্বরে বলল,
" আপনার চিন্তাভাবনা এত জঘন্য কেন?কে বলেছে আমার জন্য সময় নষ্ট করতে?চলে যান।

কথাটুকু বলেই অন্যপাশে তাকাল কুহু।ক্রোধে শরীর কাঁপছে তার!বারংবার সামনে কেন চলে আসে লোকটা?এরকম তিতকুটে কথা শোনাতে?কুহু কি যেচে বলেছিল তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা?আরিয়ানের সাথে দিব্যি চলে যেতে পারতো!বাইক স্টার্ট দিয়ে বলল রওনক,
"ঠিক আছে চলে যাচ্ছি।যদি সেদিনের মেলার মতো ঘটনা ঘটে,তখন যেন দোষ আমার উপর এসে না পরে।

তড়াৎ করে রওনকের দিকে দৃষ্টি ফেলল কুহু!মনের সুপ্ত ভয়টা আবারও উঁকি দিল!ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ আকাশ ঢেকে গেছে কালো আঁধারে।আশেপাশে লোকসমাগম খুব একটা বেশি নয়।রাস্তার ধারে জ্বলছে হলদেটে নিয়ন আলো।চারিপাশে দৃষ্টি বুলিয়ে বলল কুহু,
" তখন আরিয়ানকে কেন চলে যেতে বললেন?কে বলেছিল আমার দায় নিতে?এখন স্বার্থপরের মতো কথা শুনিয়ে চলে যাচ্ছেন!

স্টার্ট থামিয়ে দিল রওনক।ভয়ার্ত কুহুর দিকে তাকিয়ে বলল,
"মোটেও স্বার্থপরের মতো চলে যাচ্ছিলাম না।উপকার করতেই চেয়েছি।দায় আছে বলেই দায় নিয়েছি।তুমি তো আর বাচ্চা মেয়ে নও যে কথা না শুনলে জোড় করে কোলে তুলে নিয়ে বাইকে বসাবো!

কুহু আর জবাব দিল না।ভীষণ কান্না পাচ্ছে তাঁর।কন্ঠনালী চেপে আছে!নিঃশব্দে হেঁটে এসে বাইকে উঠে বসলো সে।রওনক হেলমেট বাড়িয়ে দিল।কোনোরকম রা করলো না কুহু।বসে রইল নিশ্চুপ!রওনকের অধর জুড়ে সুক্ষ্ম হাসি!অন্ধকারে সেটুকু দৃষ্টিগোচর হয়ে রইল কুহুর।পুনরায় বাইক স্টার্ট দিল রওনক।মাঝে কিছুটা দূরত্ব নিয়ে বসেছে কুহু।পেছনে হাত রেখে ধরে আছে!স্বল্প গতিতে বাইক চালাচ্ছে রওনক।কুহুর মনে জুড়ে অসস্থির ছড়াছড়ি!বাইক থেকে না নামা অব্ধি এ জড়তা কাটবে না।আশেপাশে তাকাতেই কুহু খেয়াল করলো রওনকের বাইকের চেয়েও রিকশার গতি বেশি!কপাল কুঁচকে নিয়ে বলল,
" আশ্চর্য আপনি কি বাইক চালাচ্ছেন নাকি ঠেলাগাড়ি?

কুহুর চিকন কন্ঠস্বর বোধহয় হেলমেট ভেদ করে রওনকের কান অব্ধি পৌঁছায়নি!খানিকটা জোড়ে ফের একই কথা বলল কুহু।রওনক ঈষৎ ঘাড় ঘুরাল।কিছু শুনেছে বলে মনে হলো না।রাগে হেলমেটে আঘাত করলো কুহু।মুহূর্তে বাইক থামিয়ে দিল রওনক!হেলমেট খুলে পেছনে তাকাল আশ্চর্য হয়ে!শক্ত গলায় বলল,
"কি করলে এটা?

" তো কি করতাম?কখন থেকে কথা বলে যাচ্ছি!শুনতেই তো পাচ্ছেন না!

"তোমার কি মনে হয়,কথা বলার জন্য বাইকে তুলেছি তোমাকে?

" একদম এসব ত্যাড়া ত্যাড়া কথা শোনাবেন না।আমি বলছি আপনি বাইক চালাচ্ছেন নাকি ঠেলাগাড়ি?পেছনে মেয়ে উঠলে তো ছেলেদের বাইকের স্পিড বেড়ে যায়!আর আপনার বাইক উল্টো কচ্ছপের গতিতে চলছে!ঠিকঠাক বাইক চালাতে জানেন তো?

"মুখে তো কথার খই ফুটছে দেখছি!পেছনে প্রেমিকা নয়তো বউ বসিয়ে ছেলেরা স্পিডে বাইক চালায়।তুমি তো এই দুটোর মধ্যে একটাও নও!তারউপর হেলমেট পরোনি।কোনোরকম পেছনে ধরে বসেছো!এই অবস্থায় জোড়ে বাইক চালালে কি হবে ভেবেছো?ছিটকে রাস্তায় পরবে!হাত-পা ভাঙ্গলে তখন তো বিয়েও হবে না!

ভ্রু কুঁচকে বলল কুহু,
" আপনার এই ঠেলাগাড়ি করে গেলে দেখা গেল বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের সকাল হয়ে যাবে।

পাল্টা আর কিছু বলল না রওনক।হেলমেট বাড়িয়ে দিল কুহুর দিকে।মুখ কিঞ্চিৎ বাঁকিয়ে হেলমেট নিল কুহু।ঘাড় ঘুরিয়ে ফের সম্মুখে তাকাল রওনক!তপ্ত শ্বাস ফেলল।নির্বোধ মেয়েটা বোধহয় খেয়ালই করেনি উল্টো পথের রাস্তা ধরেছে রওনক।আচমকা কুহুর ফোন বেজে উঠলো।মায়ের কল দেখতেই চিন্তা বাড়লো কুহুর!নিশ্চয়ই মা তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে!সেদিন মেলা থেকে দেরি করে ফেরায় ইচ্ছেমতো বকেছিল!আজকেও যে কপালে দূর্ভোগ আছে বুঝতে বাকি নেই!শুকনো ঢোক গিলে ফোন রিসিভ করলো কুহু।মাকে বলল রাস্তায় তীব্র জ্যাম!দ্রুত ফিরছে সে!কল কাটতেই রওনককে তাড়া দিল।দীর্ঘস্বাস ফেলে বাইক স্টার্ট দিল রওনক।তারমানে আজ আর মনোহারিণী'কে মনের কথা জানানো হবে না!অহেতুক কথা বলেই সময়ের অপচয় করেছে মেয়েটা!আগের তুলনায় বাইক তিনগুণ স্পিড বাড়িয়ে দিল রওনক।কুহু খেয়াল করলো সত্যিই এবার বসতে অসুবিধা হচ্ছে তার।মনে হচ্ছে পা ফসকে পরে যাবে এক্ষুনি!রাস্তায় উঁচু কিছুর সঙ্গে বাইকের চাকা ধাক্কা খেতেই টাল সামলাতে পারলো না কুহু।রওনকে'র কাঁধ আঁকড়ে ধরলো!মাঝের দূরত্বটুকু সম্পূর্ণ ঘুঁচে গিয়ে লেপ্টে গেল গায়ের সঙ্গে!স্পিড কমালো না রওনক।মনে মনে বলল,নির্বোধ মেয়ে তুমি তো এখন আমায় চরিত্রহীনের তকমা দিয়ে বসবে।যতই দূরত্ব চাও,ধরা তুমি নিজ থেকেই দিবে!ঠিক এভাবে।নিজের অজান্তে!

!!৮!!

সকাল থেকে কাজে ব্যস্ত শারমিন বেগম।তার ভাইয়ের একমাত্র ছেলে আশফিক আসবে আজ।টানা তিনবছর পর কানাডা থেকে গত সপ্তাহে ফিরেছে ছেলেটা।ভাতিজার জন্য নানান পদ খাবার রান্না করছেন শারমিন বেগম।হাতে হাতে কাজ এগিয়ে দিচ্ছে রিশা।বিষয়টা বেশ অবাক করেছে শারমিন বেগমকে।যে মেয়ে পাতে ভাত তুলে খায় না,সে আজ মাকে সাহায্য করতে উঠেপড়ে লেগেছে!মেয়ে কি তবে ইঙ্গিতে বিয়ের কথা বোঝাতে চাচ্ছে?কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব আসলেও তো বাসায় তুলকালাম ঘটায় এই মেয়ে।প্রতিবারই বলে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবে।তবে হুট করে মেয়ের এই আমূল পরিবর্তন ঠিক হজম হচ্ছে না!রহস্য থেকেই গেল!নিশ্চিত হওয়ার জন্য মেয়ের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বললেন শারমিন বেগম,
"রিশু তোকে একটা কথা জানানোর ছিল।তোর বাবা একটা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে তোর জন্য। ছেলে.........

শারমিন বেগম পুরো কথা শেষ করতে পারলেন না।তেতে উঠলো রিশা।আগুনের তাপে গালদুটো লাল আভা ছড়িয়েছে।ঘর্মাক্ত কপালে ভাজ ফেলে বলল,
" কতবার বলেছি মা আমি এখন বিয়েটিয়ে করবো না।দরদ দেখিয়ে সাহায্য করতে এসেছি বলে ভাবছো মেয়ে সংসারী হতে চাইছে?তোমরা বাঙ্গালী মায়েরা সবকিছুতে এত সিরিয়াস হয়ে যাও কেন বলো তো?পরীক্ষা শেষ।বেকার বসে আছি তাই ভাবলাম তোমায় একটু হেল্প করি!তাতেই আকাশকুসুম ভাবনা!

কথাগুলো বলেই চপিংবোর্ডে থাকা আলুর টুকরো গুলো রেখে বেরিয়ে গেল রিশা।হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলেন শারমিন বেগম।আজকালকার ছেলেমেয়েদের মর্জি বোঝা সত্যিই দূরহ!কলিং বেলের শব্দ হতেই এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিল রিশা।ওপাশে কুহু দাঁড়িয়ে আছে।রিশাকে দেখে যেন রীতিমতো ভুত দেখার মতো অবস্থা!চিৎকার দিয়ে কয়েক কদম পিছিয়ে গিয়ে মুখে হাত চেপে ধরলো কুহু!চোখ বড়ো বড়ো করে তাকাল!রিশা পরিস্থিতি কিছুই বুঝতে পারছে না!শক্ত চোখেমুখে কুহুর কান্ড দেখছে!কুহু এগিয়ে এসে রিশার কপালে,গালে হাত ছুঁইয়ে বলল,
"তোর কি জ্বর-টর আসলো রিশু?মানে তুই রান্না করেছিস?তোর কপালে হলুদ লেগে আছে!আমি কি সত্যি দেখছি বান্ধবী?

কুহুর অভিনয় দেখে আরেকদফা বিরক্ত হলো রিশা।সবাই রীতিমতো তাকে নিয়ে মজা শুরু করে দিয়েছে।ফোঁস করে দম ফেলে নিজের রুমে পা বাড়াল রিশা।ঠোঁট টিপে হেসে পেছন পেছন আসলো কুহু।এই সময়টাতে রিশা'দের বাড়িতে আসতে কোনো দ্বিধা কাজ করে না তার।কারণ জল্লাদ রওনক ভাই তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে।হাতমুখ ধুঁয়ে এসে খাটে বসলো রিশা।কুহু গুনগুন করে গান গাইছে আর রিশার অস্থিরতা,চিন্তা খেয়াল করছে।এই মুহূর্তে রিশার মনে কি চলছে সবটাই তার জানা!কুহু উঠে গিয়ে টেবিল থেকে ডায়েরি আর কলম নিয়ে বলল,
" আজকে তোর হয়ে আমি লাভ লেটার লিখব দাঁড়া!তোর সব চিন্তা নিমেষে ফুড়ুৎ করে দিব!

কুহুর কথায় ভড়কে গেল রিশা!দ্রুত উঠে এসে ছিনিয়ে নিল ডায়েরি।

"ভাইয়া কি তোকে সাধে নির্বোধ বলে?মানে লাভ লেটার দিব আশফিক ভাইয়াকে?সেটা যদি সে সবাইকে দেখায়?এই বুদ্ধি মাথায় নিয়ে ঘুরিস তুই?

চোখমুখ কুঁচকে বলল কুহু,
" একদম খোঁটা দিবি না।তাও তোর জল্লাদ ভাইয়ের কথা টেনে।তুমি দু'বছর ধরে চুপিচুপি ভালবেসে যাচ্ছ।অথচ বলতে ভয় পাচ্ছ!যখন তোমার রোমিও বিয়ে করে নিবে তখন বুঝবি।

আনমনা হয়ে ফের খাটে গিয়ে বসলো রিশা।হুট করে একটা ছেলেকে মনের কথা কিভাবে বলবে?সে তো একটা মেয়ে!মেয়েদের বরাবরই লাজ বেশি!তারউপর আশফিক তার কাজিন হয়!কানাডায় যেহেতু থাকে নিশ্চয়ই তার জীবনে কেউ আছে!আগে তো রিশাকে জানতে হবে আশফিক অন্য কাউকে ভালবাসে কিনা!সমস্ত ভাবনা রেখে কুহুর উদ্দেশ্যে বলল,
"দ্যাখ কুহু পাগলামি করে সব হয় না।আশফিক ভাইয়ার জীবনে কেউ আছে কিনা আগে সেটা জানতে হবে আমাদের।তাছাড়া উনার সাথে আমার সেভাবে কখনো কথাই হয়নি।টুকটাক ভাল লাগতো!একসময় বুঝতে পারি এটা শুধু ভাল লাগা নয়,অনুভূতি আরও গভীর!কিন্তু আমি কিভাবে সেটা বলতাম বল?আজকে উনি আসছে শুনেই আমার হার্টবিট কেমন অস্বাভাবিক হয়ে গেছে।মনে হচ্ছে মুখোমুখি দাঁড়াতেই পারবো না!

"ওরে আমার লজ্জাবতীরে!ভালবাসতে পারবে প্রকাশ করতে পারবে না!কোনো চিন্তা করিস না।আগে তো আসতে দে রোমিওকে।মনের খবর কিভাবে বের করতে হয় আমি দেখছি।তাছাড়া আমার তো এখনো সামনা-সামনি দেখাই হয়নি আশফিক ভাইয়াকে।

ডায়েরি টেবিলে রেখে বলল রিশা,
" জানিস এই প্রথম আমি রান্না করেছি।আশফিক ভাই আসবে শুনে।মা তো রীতিমতো সন্দেহ শুরু করে দিয়েছে!যদি টের পেয়ে যেত কিছু!তাই দ্রুত সব কাজ ফেলে চলে এসেছি!

তপ্ত শ্বাস ফেলে বলল কুহু,
"আমি-ই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না!আন্টি যে জ্ঞান হারায়নি এটাই তো বেশি!যাইহোক তোর হাতের রান্না খাওয়া গেলেই হলো!

কুহুর কথার কোনো তোয়াক্কা করলো না রিশা।আলমারি খুলে একটার পর একটা জামা বের করলো।কোনটা পরবে বুঝতে পারছে না!জীবনে এত কঠিন সিচুয়েশনে বোধহয় আগে পরেনি!কুহু মুগ্ধ দৃষ্টি ফেলে রিশার ছটফটানি,অনুভূতি দেখছে!ভালবাসলে বুঝি একটা মানুষ এতটাই মাতোয়ারা হয়ে যায়?প্রিয় মানুষের পছন্দমতো নিজেকে সাজাতে চায়?কি জানি অতো কিছু বোঝে না কুহু।কখনও সেভাবে অনুভব করা হয়নি কাউকে!রিশা কয়েকটা জামা দেখাল কুহুকে।সবকয়টা আকাশী রঙা।আশফিকের পছন্দের রঙ আকাশী।কুহু একটা জামা পছন্দ করে দিতেই সেটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল রিশা।

ঘড়ির কাটা দুপুর তিনটায়!একটুপর রওনকে'র ফিরে আসার সময় হয়ে যাবে।কুহু যেন আর স্থির থাকতে পারলো না।তবে আশফিকও তো এখনো আসেনি।না দেখে যাবে না বলেছে কুহু।মিনিট দশ পরে বেরিয়ে আসলো রিশা।আয়নার সামনে দেখে নিল নিজেকে।কুহু জানাল বেশ চমৎকার লাগছে রিশাকে!কলিং বেলের শব্দ হতেই মৃদু কেঁপে উঠলো রিশা!বক্ষস্থলে শুরু হলো অজানা ঝড়!কুহুকে যাওয়ার জন্য তাড়া দিল সে।কুহু উঠে দাঁড়ালেও ভেতরে এক সংকোচ কাজ কাজ করছে!যদি গিয়ে রওনক স্যারের মুখোমুখি হয়?আকাশকুসুম ভাবনা নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল কুহু।কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে না।তবে পাশের ঘর থেকে শারমিন আন্টির কথা শোনা যাচ্ছে।কয়েকদম এগিয়ে গিয়ে পর্দার ফাঁকা দিয়ে উঁকি দিল কুহু।আকাশী রঙা শার্ট,ব্লু জিন্স পরিহিত বলিষ্ঠ দেহি এক পুরুষ দাঁড়িয়ে আছে!মাথার চুলগুলো জেল দিয়ে বেশ গুছিয়ে রাখা!টান টান চওড়া বক্ষস্থল নিয়ে হাসিমুখে কথা বলছে শারমিন বেগমের সাথে!আশফিককে চিনকে একসেকেন্ড সময়ও লাগলো না কুহুর।হাজার হাজার বার এই যুবকের ছবি রিশা দেখিয়েছে তাঁকে!এই ছেলে তো বাস্তবে মারাত্মক সুদর্শন!আচমকা কুহুর চুলে কেউ একটা ফুঁ দিল।ভেতরের রুমে দৃষ্টি রেখেই হাত উঁচিয়ে ধরে ফিসফিস করে বলল কুহু,
"রিশুরে তোর কাজিন তো দেখি মারাত্মক হট!কি হ্যান্ডসাম,ড্যাশিং উফফ!দেখেই তো প্রেমে পরে যেতে ইচ্ছে করছে!

আচমকা হাতে হ্যাচকা টান অনুভব হতেই হকচকিয়ে উঠলো কুহু!বিরক্তি নিয়ে সামনে তাকাতেই দেখল রওনক কাঠিন্য দৃষ্টি ফেলে তার দিকে তাকিয়ে আছে!চোখদুটো যেন জলন্ত অগ্নিশিখা!নাকের পাটা ফুলে আছে!শক্ত পুরুষালি হাতে নিজের পেলব হাতখানা বন্দী হয়ে আছে কুহুর!সেদিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলল সে!অপর হাতে মুখ চেপে ধরলো!সর্বনাশ একটু আগে কি বলে ফেলেছিল সে?সব কি এই জল্লাদ'টা শুনে নিল?
·
·
·
চলবে..............................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন