উন্মুক্ত লাইব্রেরী - পর্ব ১৬ - আয্যাহ সূচনা - ধারাবাহিক গল্প


উন্মুক্ত লাইব্রেরী
পর্ব ১৬
আয্যাহ সূচনা



“নারী নির্যাতনের মামলা দিবো”

“আর তুমি যে বখাইট্টা মাইয়াগো মতন আমার পিছন পিছন ঘুরো?তোমার নামে ইভটিজিং এর মামলা দেই?”

“দাও লাভ হবে না।মানুষের মতে ইভটিজিং শুধু ছেলেরাই করে”

“হ!শেষমেশ আমরাই বলির পাঁঠা।আর তোমরা দেবী।দেখি সামনে থেকা সরো আমার কাম আছে”

“তুমি আজ আমার সাথে যাবে।”

“খায়া দায়া কাজ কাম নাইতো আমার?ভালো মানুষের মতন কইতাছি তোমার এই খোমা নিয়া উধাও হও চক্ষের সামনে থিকা। জ্বালাইও না।”

দুজনে রাস্তার একপাশে বিতর্কে জড়িয়ে আছে।সাব্বির ছেলেটা হা করে তাদের দুজনকে দেখছে। কত পারে এই দুজন? যতবার একসাথে দেখেছে তর্ক করতেই দেখেছে।সোজা কথা যেনো কারো মুখ দিয়েই বেরোয় না।এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখতে বেশ ভালোই লাগছে।আলগোছে হাসছে সাব্বির।সেটি আবার বর্ণের দৃষ্টি এড়ায়নি।রেগে গিয়ে তার মাথায় চাপড় দিয়ে বললো,

“হাসোস কেন?”

মাথায় হাত রেখে হতভম্বের মত রইলো সাব্বির। অন্বেষা হাত টেনে সাব্বিরকে নিজের দিকে এনে বললো,

“ওর উপরে জেদ ঝাড়ছো কেনো?সাহস থাকলে আমার কথার কঠিন জবাব দাও।”

বর্ণ বলে উঠে, 

“তুমি একদিন আমার হাতে চিপা মাইর খাইবা ছেমড়ি কইয়া দিলাম।”

কথা শেষে এক মুহুর্ত সেই স্থানে দাঁড়ালো না বর্ণ। হাঁটা শুরু করলো গার্মেন্টস এর উদ্দেশ্যে।বেতন কম দিবে কাজ কামাই এর জন্য সেটি বর্ণের তেমন গায়ে না লাগলেও বাড়িওয়ালা ঘাড়ে চড়ে তান্ডব করবে ভাড়া না পেলে।এই এক ঠাঁয় এর জন্যই যত কিছু।মাঝেমধ্যে খোলা আকাশের নিচে থাকতে ইচ্ছে হয়। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে সেটাও সম্ভব হয়ে উঠে না।কোনো বিষয়কে তোয়াক্কা না করা বর্ণ এখানে কিছুটা হলেও আটকে।মাথার ছাদ থাকুক অন্তত।

অন্বেষা বর্ণের চলে যাওয়া দেখে।ঘুরে তাকালো কিছু সময় পর সাব্বিরের দিকে। বললো,

“তোমার ভাইজান কত নিষ্ঠুর দেখলে?”

“ভাইতো এমনি আপা।আপনিই খালি বাজাবাজি করেন।”

অন্বেষা মিথ্যে রাগ দেখিয়ে বলে, 

“আমি করি?”

সাব্বির এর মুখটা চিন্তিত হলো।বললো, 

“রাগ করছেন আপা?ভাই বেশি কথা কওয়া মানুষ পছন্দ করেনা।”

“আর সে যে বেশি কথা বলে?”

সাব্বির হাসতে হাসতে বললো, 

“ভাইতো ভাইই।ভাইয়ের মতো এই এলাকায় আরেক পিস খুঁইজা পাইবেন না আপা।”

অন্বেষা তার কথায় হাসলো।ভুল নেই সাব্বিরের কথায়।যা বলেছে কাটায় কাটায় সত্য কথা। তার দেখা এক পিসই বর্ণ।যার কোনো চাহিদা যেই,কোনো আশা, আকাঙ্ক্ষা নেই।নিজের দুনিয়ায় মগ্ন এক অদ্ভুত মনুষ্য।

অন্বেষা বলে, 

“আমি তোমার ভাইজানকে নিয়ে মার্কেটে যেতে চেয়েছিলাম।তোমার জন্য উপহার কিনবো।সেতো ঘাউরামি করে চলে গেলো।….তুমিই চলো”

সাব্বিরের চোখে চঞ্চলতা দেখতে পায় অন্বেষা উপহারের কথা শুনে।কিন্তু সেটি দ্রুত গতিতে দমিয়ে ফেললো সে।বললো,

“আমারে উপহার কেন দিবেন আপা?আমার লাগবো না কিছু।”

“কেনো লাগবে না? দেখো তোমার মুখ কত সুন্দর।আর কাপড়ের অবস্থা নাজেহাল।”

সাব্বির চোখ নুয়ে জবাব দিলো, 

“আমরা গরীব মানুষ আপা।টাকা কই পামু ভালো কাপড় কেনার।আব্বা আম্মা মিলা যা কামায় সব ঋণ শোধ করতে করতেই শেষ।”

অন্বেষা সাব্বিরের মাথায় হাত রাখলো।ঠিক সেদিনের মতো।বিষয়টা খুব উপভোগ করে সাব্বির।ভালো লাগে তার।মনে হয় কেউ পরম যত্নে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।সাব্বিরের চুল ঝেড়ে দিয়ে আদুরে গলায় বলে,

“বাবা মা দিতে পারেনাতো কি হয়েছে?তোমার বোন আছে না?তার যতদিন ক্ষমতা থাকবে তুমি সব আবদার তার কাছে করবে।”

সাব্বির আশ্চর্য ভঙ্গিতে প্রশ্ন করে, “বইন?”

“হুম বোন।আমাকে আপা বলে ডাকো না?আমার সাথে চলো”

সাব্বির ছেলেটিকে নিয়ে এসে নিউমার্কেট এর দিকে।এখানে ফুটপাতে ভালো ভালো কাপড় বিক্রি হয়।অন্বেষা প্রায়শই এখান থেকেই কেনাকাটা করে।সামর্থ্য কম থাকলেও এক বিশাল সমুদ্রের ন্যায় অন্তর অন্বেষার মধ্যে।যেখানে জল মায়ার।

সাব্বিরের মন মতো দুটো টি শার্ট,দুটো প্যান্ট আর দুটো জুতো কিনে নিলো।নীলক্ষেত মোড় থেকে চিকেন রোল কিনে সাব্বিরের হাতে ধরিয়ে বললো,

“যদি কখনো কিছু প্রয়োজন হয় আমায় বলবে কেমন?”

“ধন্যবাদ আপা।আপনি আমার লেইগা এতকিছু কিনা দিলেন।”

“জানো আমার বাবা আমাকে অনেক অনেক উপদেশ দিতেন। মা একটু কম দিতেন।কিন্তু সে একটা কথা বলেছিলেন।তোমাকেও বলছি শুনো।নিজের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত অর্থ কখনো এমন মানুষের উপর খরচ করবে না যে তোমাকে মূল্য দেয়না।যাদের তুমি ভালোবাসো? যারা তোমাকে ভালোবাসে তাদের উপর জান ছিটালেও কোনো ক্ষতি নেই।তারা বিনিময়ে তোমাকে আর্থিক সহায়তা না করতে পারলেও ভালোবেসে যত্ন করে পুষিয়ে দিবে।তাইতো আমি তোমাকে এখানে নিয়ে এলাম।আমার তোমাকে খুব ভালো লেগেছে।”

সাব্বির কথাগুলো শুনলো মনোযোগ সহকারে।কিছু সময় পর প্রশ্ন করলো,

“তাইলে কি আপনি বর্ণ ভাইজানরেও ভালোবাসেন? ট্যাকা খরচ কইরা যে ভাইয়ের অপারেশন করাইলেন?”

পা জোড়া এগিয়েছিল অন্বেষা।যাওয়ার উদ্দেশ্যে।সাব্বিরের এরূপ প্রশ্নে থমকে দাঁড়ালো।মুখ ফিরিয়ে তাকাতে পারলো না তবে।সাব্বির আবার প্রশ্ন করে,

“কইলেন না আপা?”

অন্বেষা জবাবে বলে, “এসব জানতে হবেনা।”

সাব্বির থামলো না বরং বললো, 

“আপনে বর্ণ ভাইজানরে বিয়া করেন আপা।আমার ভাইজান অনেক একলা।কেউরে কয় না।আমি কিন্তু বুঝি।আপনি অনেক ভালা আপা।বর্ণ ভাই আপনার লগে থাকলে অনেক খুশি থাকবো।”

ছোট মুখে এত বড় কথা শুনে আরেকদফা অন্বেষার কদম স্থির হয়। এবারে সরাসরি ঘুরে তাকালো সাব্বিরের দিকে। স্তম্ভিত হয়ে চেয়ে রইলো কয়েক সেকেন্ড। কথাগুলো অন্তরে বিধেছে কেবল। মস্তিষ্কের নিউরনে গিয়ে আঘাত করেছে।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্বেষা বললো,

“চলো তোমার মা আবার তোমার খোঁজ করবেন।”

______

“এক হাজার টাকা কাইটা আমার কোনো বালটাও ছিঁড়া গেলো না।যে টাকা কাইটা রাখছেন এই টাকা দিয়া নিজের আগাছা ছাঁটাই কইরেন।”

ম্যানেজার এর সামনে এরূপ বাক্য ছুঁড়ে সবাইকে বিস্ময়ে ফেলে দিলো বর্ণ। হাসপাতালে থাকার কারণে কাজে আসতে পারেনি বলে বেতন থেকে এক হাজার টাকা কেটে নিয়েছে ম্যানেজার।ম্যানেজার রাগে ফুঁসছে।তেড়ে এলো মারবে বলে।বর্ণের কলার চেপে ধরে বললো,

“বস্তির থিকা উইঠা আয়া আমার লগে ঘাউরামী?”

“আপনি কোন মহল থেইকা আইছেন?”

বর্ণের গালে চড় মারতে চাইলে বর্ণ হাত শক্ত করে চেপে ধরে।ধাক্কা দিয়ে পেছনে সরিয়ে দিলো।

উপস্থিত কয়েকজন তাকে থামিয়েছে।বর্ণ কান দিলো না কোনো গালিগালাজে।ম্যানেজার বললো,

“কুত্তার বাচ্চা তুই বাইর হ!তোর আর কাম করা লাগবো না।”

“আপনি কেঠা?এই জায়গার মালিক? আপনে বেতন দেন আমারে? আপনে আরেক গোলাম।চলেন মালিকের ঠ্যাং চাইটা।মালিকরে ডাকেন।হেয় বাইর করলে যামু গা”

“দেইখা লইস। তোরে আমি যদি কাম ছাড়া না করছি!”

বর্ণ হাসলো।ম্যানেজার এর কাছে এগিয়ে গেলো।কলার ঠিক করতে করতে কানে কাজে ফিসফিসিয়ে বললো,

“মাঝেমধ্যে যে হিসাব মিলে না? কিল্লেগা মিলে না?আবার টাকাও এদিক ওদিক হয়।সব জানি বুঝছোস গোলাম! বুইঝা হুইনা ফড়ফড় করিস। পাংখা কাইটা হাতে ধরায় দিমু”

বর্ণের জীবন দশা এক অপ্রকাশিত কাব্য।অন্তরে লুকানো সিন্দুকে যতনে রেখেছে সবকিছু।এই হাস্যজ্জ্বল চেহারায় কোনো অশুভ শক্তির ছোঁয়া চায় না সে।যা গেছে তা গেছে।হারানোর কোনো বেদনা নেই।কোনো চাওয়া পাওয়া কোনো কালেই ছিলো না। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে নেওয়ার এক অদম্য শক্তি নিয়ে চলে।নির্ভিক,অনুভূতিহীন।

প্রতিদিনের ন্যায় জীবন আবারো চা নিয়ে এসেছে। ভাবুক বর্ণের পানে চেয়ে প্রশ্ন করলো,

“ কি ভাবোস?”

“হুম?” আবছা স্বর শোনা গেলো বর্ণের দিক থেকে।

জীবন বললো, 

“আরেহ ব্যাটা চাকরি যাইবো না।টেনশন করিস না।এমনেতেই মালিকের হাতে ধরা এই ম্যানেজার।”

“আমি চাকরির কথা ভাবতাছি না।”

“তাইলে?”

আজ মনে হলো জীবনের সাথে তার বর্ণের জীবনে ঘটে যাওয়া বিষয় এর একাংশ বলতে।বর্ণ দুই হাঁটুর উপর হাত বেঁধে বললো,

“একটা মাইয়া আছে বুঝছোস।নাম অন্বেষা।আমি আমার বাপের জন্মে এমন ছেড়ি মানুষ দেখি নাই। মানে কুত্তার মতন পিছনে লাগছে। ছাড়েও না বাপ!”

“ভালো টালো বাসেনি আবার?”

“জানি না।কিন্তু আমার অপারেশন করাইলো। আমার পিছে খাটলো।আমার যত্ন করে…..আমার এসব ভালো লাগতাছে নারে।আমি চাই আমারে ওয় না জ্বালাক!”

“এমন মানুষ হারাবি? পস্তাবি কিন্তু!”

ভেবেছিলো জীবন অন্য কিছু বলবে।আর বর্ণ নির্বিঘ্নে জবাব দিবে।তবে কিছু সময়ের জন্য থেমে গেলো বর্ণ।কথার জবাব এত সোজা নয়।দেওয়া এত সহজ মনে হচ্ছে না।তারপরও মনের সাথে তোড়জোড় করে জবাব দিলো,

“পস্তামু না”

“ আয় তোরে একটা আইডিয়া দেই”

গভীর রাতে অন্বেষার দু চোখ জ্বলজ্বল করছে।সন্ধ্যায় সাব্বিরের বলা স্বল্প কিছু কথা বাজছে বারংবার। এ কেমন বিড়ম্বনায় পড়লো?সে যার ভালো চাইছে?যার সুখ চাইছে?সেই মানুষটি নিজের ভালো চায় না সুখ চায় না।পৃথিবীতে এমন মানুষ আদৌ খুঁজে পাওয়া যাবে?যে নিজ থেকে সুখের পথ ত্যাগ করে?নাকি এখনো অন্বেষাকে বিশ্বাস করতে পারেনি?বুঝতে পারেনি তার অন্তর।হতে পারে এমনটাই।ঘড়ির কাঁটা রাত আড়াইটেতে।বর্ণ কাজে গিয়েছে সেটি জানা আছে। নিশ্চয়ই জেগে? বিদ্যুতের বেগে ফোন মেলায় কোনকিছু না ভেবে।

বরাবরের মতই একবারে ফোন ধরলো না বর্ণ। অন্বেষা কয়েকবার ফোন মেলালো।তারপর রিসিভ করে।তবে কোনো কথা বললো না।চুপ হয়ে আছে। অন্বেষা প্রশ্ন করে,

“ঠিক আছো?”

“কিছু হওয়ার কথা?” গুরুগম্ভীর গলার স্বর।

“না পায়ের…..”

“এতো চিন্তা কে করতে কইছে তোমারে?”

অন্বেষা নিশ্চুপ নীরব।রাতের আঁধার যেনো অনুভুতির নিগূঢ়তা বৃদ্ধি করে। চাপা আর্তনাদেরা জটিল হয়ে উঠে। অন্বেষা প্রশ্ন করলো,

“তোমার কি মনে হচ্ছে আমি তোমার উপর রাজত্ব করার জন্য তোমার সাথে আছি? সঙ্গ চাইছি?”

“রাজত্ব করতাছো না?”

কথার প্রতুত্তরে আবারো চুপ অন্বেষা।মনে কোনো প্রকার দ্বৈত মনোভাব রাখেনি অন্বেষা।বর্ণের জন্য তার প্রতিটি পদক্ষেপ এসে মনের অন্তরস্থল থেকে।বুঝতে চায় না বর্ণ এসব কিছুই।

“তুমি যে পথে চলতে চাইতাছো ওই পথে কাঁটা ছাড়া কিছুই পাইবা না।”

“হুম”

“আমার দিক থিকা সইরা গিয়া বেশি ভালো থাকবা।নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মাইরো না।আমি একটা বস্তির পোলা।বারবার কইছি আমার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই।আমার কোনো ভবিষ্যতও নাই।আমার লগে থাকলে তোমার খালি দিয়াই যাইতে হইবো।ফিরতি কিছুই পাইবা যা।সিনেমা না এটা।শেষে গিয়া হ্যাপী এন্ডিং হইবো।আমার জীবনের এন্ডিংয়ে সুখ দুঃখ দুইটার একটাও থাকবো না।আমি একলা থাকতে চাই।রাজার হালে।এই মহল্লায়!”

“বর্ণ…”

বর্ণ লম্বা দম ফেলে।জবাব দিলো,

“কি?”

“আমার উদ্দেশ্য মোটেও তোমার আত্মসম্মানে আঘাত করা না।তোমার জন্য আমি যা করেছি কোনোটাই দয়া দেখিয়ে নয়।আমার ভালো লাগে।সত্যিই ভালো লাগে।তুমি জানো না এতকাল আমি কি করে কাটিয়েছি।আমি বলতে চাই না।থাকুক পুরোনো সব কথা।আমি কখনও এত খুশি অনুভব করিনি কারো সাথে।তুমি লক্ষ্য করে দেখলে সত্যিই মিল খুঁজে পাবে।আমাদের মাঝে অমিল শুধু একটাই।আমি একটা ছোট্ট সুখের সংসার চাই তুমি চাও না।মানিয়ে নিতাম সবকিছু।”

অগোছালো কথাগুলো বলতেও গলা জড়িয়ে আসছিলো অন্বেষার।ভারী একাকিত্ব কাটিয়ে একটু আশার আলো খুঁজে পেয়েও যেনো ব্যর্থ।বর্ণ জবাবে বললো,

“সম্ভব না।”

“এক বিন্দু অনুভূতি?অথবা সহানুভূতি নেই?”

“তোমারে আমি ঠান্ডা মাথায় কথা বুঝায়াও পারতাছি না।”

অন্বেষা ক্ষণে ক্ষণে চুপ হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যাখানে চোখ টলমল করতে লাগলো।বর্ণ কোনো জবাব না পেয়ে বলে উঠে,

“আমার মত জাহিল এর পিছনে তুমি টাকা আর সময় দুইটাই নষ্ট করছো।আমি কারো ভালোবাসা পাওয়ার লায়েক না।আমি চাইও না।মানুষের লগে ভাব কইরা কি লাভ?আমার মনে হয় এগুলি দুনিয়ার যত তামাশা। আইছি একলা যামুও একলা।মধ্যে দিয়া মানুষের লগে খাতির জমায় কি লাভ?সময় নষ্ট!”

কারো উপর জোর খাটানো যায় কি? জোর করে ভালোবাসা আদায় করা অসম্ভব। অন্বেষার এই মুহূর্তে মনে হলো সে বর্ণের ঘাড়ে চাপতে চাইছে।হস্তক্ষেপ করতে চাইছে বর্ণের নিজস্ব জীবনে।উপলব্ধি এলো এক প্রকার।সত্যিই বেহায়াপনা করছিলো?তাও আবার নিজের ভালো থাকার জন্য?একাকীত্ব কাটানোর জন্য? অন্বেষার নিজেকে নিজের কাছেই ভীষণ ছোট মনে হতে শুরু করে। অপরাধবোধ জেগে উঠে তরতর করে।আবেগের প্রবণতা বেশি।যে কোনো প্রকার অনুভুতি এসে হানা দেয় তৎক্ষনাৎ।

“তোমাকে বড্ড বেশি জ্বালিয়ে ফেলেছি আমি…”



চলবে.............................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন