পর্ব ০১
শারমিন আক্তার বর্ষা
.
.
.
সুদূর আমেরিকা থেকে সকালের ফ্লাইটে দেশে ফিরেছে অভ্র। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে দেখে বাবা রাজীব চৌধুরী ইমিগ্রেশন গেটে দাঁড়িয়ে আছেন। অভ্রকে দেখে ড্রাইভার দ্রুত ছুটে গেল। সে তার হাত থেকে লাগেজটা নিয়ে গাড়ির ট্রাঙ্কে রাখল। বাসায় ফেরার পথে বাবার সাথে কিছু কথা ছাড়া খুব একটা কথা বলেনি অভ্র। শরীর ক্লান্ত! একটু বিশ্রাম দরকার। বাড়িতে এসে মাকে দেখতে পায়। সে কাঁদতে কাঁদতে এগিয়ে গেল অভ্রর দিকে। অভ্র মাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে বলল, ' কান্না বন্ধ করো মা, দেখো, আমি তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।'
নিজেকে সামলালেন আছিয়া চৌধুরী। অভ্র নিচু গলায় বলল,
' আমি খুব ক্লান্ত মা, এখন একটু ঘুমাব। আমাকে ডাক দিও না প্লিজ।'
' আমি তোর পছন্দের খাবার রান্না করেছি। ফ্রেশ হয়ে আয় আগে খাবি তারপর ঘুম।'
অভ্র রুমে গেল।
ঘড়িতে নয়টা বেজে যাচ্ছে। মিসেস রোজা রান্নাঘরের কাজ শেষ করলেন, তারপর শাড়ির আঁচলে ভিজে হাত মুছতে মুছতে মেয়ের ঘরে এলেন। নীল ঘুমাচ্ছে। সে এসি ও ফ্যানের সুইচ বন্ধ করে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দেন। এরপর উচ্চস্বরে বললেন,
' তাড়াতাড়ি উঠো। এখন না উঠলে তুমি কলেজে যেতে দেরি করবা।'
নীল কাঁধ নাড়ল। ঘুমন্ত গলায় বলল,
' মা গরম লাগছে, ফ্যান..'
মিসেস রোজা জানালার পর্দা সরিয়ে জানালা খুলে দিলেন। মেঝেতে রোদ পড়ে গেল। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফের বললেন,
' সকাল নয়টা বাজে। এখনো ঘুমাবে?'
নীল চোখ খুলে তাকায়। দেয়াল ঘড়িতে সময় দেখে উঠে দাঁড়াল। জুতা পরে তারাহুরোয় বাথরুমে ঢুকল। রেডি হতে বিশ মিনিট লেগেছিল, তারপর সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেল। মিসেস রোজা বারবার বললেন নাস্তা করে তারপর যাও। সময় কম থাকায়, না খেয়েই বেরিয়ে পড়ল।
চালক লতিফ কলেজ গেটের পাশে পার্কিং স্থানে গাড়ি থামায়। নীল গাড়ি থেকে নেমে গেট দিয়ে ঢুকল। ক্যাম্পাস ফাঁকা। কেউ নেই। ক্লাস শুরু হয়েছে? নীল দৌঁড়ে গেল। ক্লাসরুমের দরজার সামনে এসে থামল। নিজেকে কিছুটা শান্ত করল। ক্লাসরুমের ভিতরে তাকিয়ে দেখে তার সহপাঠীরা নিজেদের মধ্যে গসিপ করছে। যার অর্থ স্যার এখনো ক্লাসে আসেননি। নীল তার বুকে একটা হাত রাখল, তারপর সিটে গিয়ে বসল।
নীল ইন্ট্রোভার্ট আর তার তিন বন্ধু ঠিক ওঁর উল্টো। ক্লাসে বসে তিনজনে ছুটির পর কফিশপে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পরিকল্পনা করল। অনেকদিন ধরে আড্ডা দেওয়া হয় না। নীল তাদের কথা শোনেনি। নীলের চোখ-মুখ গম্ভীর, কাজল কপালের চামড়াটা একটু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,
' তোর কি হয়েছে নীল? তুই আজ কথা বলছিস না।'
নীল বইয়ে মুখ চাপা দিয়ে বসে আছে। এদিক-ওদিক দু-একবার মাথা নাড়ল। যার অর্থ কিছু না।
দোতলা বিল্ডিং। পুরোটা ক্যাফে। যারা পার্টি করেন তাদের জন্য উপরের তলা সংরক্ষিত। চারপাশের পরিবেশ সুন্দর। বেশ ভিড় একটু অপেক্ষা করার পর তারা একটি টেবিল খালি পায়। ওয়েটার এসে অর্ডার নিল, প্রায় ত্রিশ মিনিট হয়ে গেছে ওয়েটার এখনো ফিরে আসেনি। নীল তার কাঁধ থেকে ব্যাগটা নামিয়ে টেবিলে রাখল। তারপর বলল, 'তোরা বোস। আমি কাউন্টার থেকে আসছি।'
তানিয়া নিষেধ করল। তার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নীল কাউন্টারে গিয়ে বলল, 'এই যে শুনুন!'
'হ্যাঁ ম্যাম। বলুন, কি লাগবে?'
' আমি অর্ডার করেছি ত্রিশ মিনিট হয়ে গেছে এখনও পাইনি। আপনারা গ্রাহকদের সেবা ঠিকমতো দিচ্ছেন না।'
লোকটা করুণ গলায় বলল, ' দুঃখিত ম্যাডাম। আজ খুব ভিড়। আমাদের দুজন ওয়েটার; তারা একসাথে সবকিছু সামলাতে পারছে না। আপনার অর্ডার বলুন, আমি এক্ষুনি পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।'
নীল থেমে গেল, নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর বলল,
' আপনি রেডি করে আমাকে দিন। আমি নিয়ে যাব।'
লোকটা অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে রইল। দশ মিনিট পর নীল কফির ট্রে নিয়ে টেবিলের দিকে যেতে নিল। হঠাৎ কেউ ছুটে এসে ধাক্কা দিল। এবং সাথে সাথে ট্রেটি পড়ে গেল। নীল লোকটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকাল। তাকে বিভ্রান্ত দেখাচ্ছে। লোকটি বলল, ' আমি দুঃখিত মিস, আমি আপনাকে আসতে দেখিনি।'
নীলা ধৈর্য ধরে দাঁড়িয়ে রইল। তারপর বলল,
' ঠিক আছে। ইচ্ছে করে কেউ এমন করবে না।'
আশেপাশের লোকজন অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। এমন দৃশ্য আগে দেখেনি যেন। তানিয়া চেয়ার থেকে উঠে এলো। তানিয়া দাঁতে দাঁত চেপে বলল, ' কতবার বারণ করেছি? তুই শুনিসনি, ফেললি তো সব।'
নীল চুপ করে আছে। লোকটি বলল,
' তার দোষ নেই। আমার মনোযোগ না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে।'
তানিয়া জিজ্ঞেস করল,
' তুমি কে?'
সে বলল,
'আমি সাদমান.. সাদমান চৌধুরী অভ্র।'
নীল তানিয়ার হাত ধরল। আবার অর্ডার দিতে কাউন্টারে গেল ওঁরা। ভিড় দেখে এগিয়ে আসে অভ্রর বন্ধু আকাশ ও শুভ। আকাশ অভ্রর কাঁধে হাত রেখে বলল, ' কি হয়েছে?'
' কিছুই ঘটেনি। গিয়ে বসি?'
' হ্যাঁ চল।'
তারা পাশাপাশি টেবিলে বসল। অভ্র চুপচাপ পাশের টেবিলের কথাবার্তা শুনছে। তানজুম নীলকে ডাকল, সে উত্তর দিল। অভ্র তার নাম শুনতে পারায় মৃদু হেসে বলল, 'নীল!'
শুভ জিজ্ঞেস করল,
' তুই এত দেরি করলি কেন? আমরা অনেকক্ষণ বসে আছি।'
' আমি এই জায়গা চিনি না। খুঁজে বের করতে সময় লেগেছে।'
অভ্র কথা বলছে। কিন্তু তার মনোযোগ পাশের টেবিলে। আকাশ অভ্রর দৃষ্টি অনুসরণ করে নীলের দিকে তাকাল। ঠোঁট টিপে হাসল। আকাশ ঠাট্টা করে বলল, 'উম, প্রেমে পড়ছিস?'
শান্ত গলায় অভ্র বলল,
' আমি বুঝতে পারছি না। তাকে দেখার পর থেকে শুধু আমার আমার মনে হচ্ছে।'
শুভ খিলখিল করে হেসে উঠল।
সন্ধ্যা সাতটা বাজে। অভ্র বারান্দায় দাঁড়ানো। ঠাণ্ডা আবহাওয়া শরীর ও মন ছুঁয়ে যায়। প্রথম দর্শনের অনুভূতি যে এত প্রবল হবে বুঝতে পারেনি অভ্র। তার মন খারাপ লাগছে। আকাশ বলেছে ওঁ মেয়েকে খুঁজে বের করবে। এত সময় লাগছে কেন? ওঁ আবার ভুলে গেল না তো? ওঁকে ফোন করে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য অভ্র রুমে এলো। বিছানায় রাখা ফোনটা হাতে তুলতেই যন্ত্রটা বেজে উঠল। আকাশ কল দিয়েছে। অভ্র কল রিসিভ করে বলল, ' আমি এখনই তোকে কল করতে যাচ্ছিলাম।'
আকাশ গাড়ি পার্ক করার পর বলল, ' সবুর কর ভাই। নাম পরিচয় ছাড়া মানুষ খুঁজে পেতে সময় লাগে তো।'
' তুই এখনও তার পরিচয় জানতে পারিস নি?'
' হ্যাঁ, পেরেছি। কফিশপ থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে একটি কলেজ আছে। তারা ওই কলেজে পড়ে। আর বিস্তারিত দেখা হলেই জানাবো।'
' আমি আসছি। এখন তুই কোথায়?'
' এই অভ্র! দাঁড়া, দাঁড়া। এখন তোর আসার দরকার নেই। আগামীকাল কলেজ ছুটির সময় আসলেই হবে. তখন দেখাব।'
আকাশ কল কেটে দিল।
হঠাৎ তোয়া দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। দরজায় টোকা দিয়ে ক্ষীণ স্বরে বলল, ' ভাই! বাবা তোমাকে ডাকছে। জলদি আসো।'
অভ্র দরজা খুলে দিল। জিজ্ঞাসা করল,
'কেনো ডাকছেন?'
'বাবা তোমাকে কিছু বলবেন।'
'কি বলবেন?'
'আমি জানি না আমাকে কিছু বলেনি।'
রাজীব চৌধুরী গম্ভীর হয়ে বসে আছেন। কিছুক্ষণ পর বললেন, 'অভ্র তুমি দেশে এসেছ, আমরা খুব খুশি। কয়েকটা দিন ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াও। এরপর অফিস জয়েন করো। আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, আমি থাকতে থাকতে সবকিছু বুঝে নেওয়া তোমার কর্তব্য।'
অভ্র চুপ করে রইল। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বলল, ' বাবা, আপনি যা ভালো মনে করবেন তাই হবে।'
কলেজ ক্যাম্পাসের দক্ষিণ পাশে বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছ। ঝরে পড়া ফুল মাটি বিছিয়ে আছে। গাছটি বেশ বড় এবং এর ছাঁয়া ক্যাম্পাসের অনেক জায়গায় পড়ে। ক্লাস শুরু না হওয়া পর্যন্ত সবাই এখানে বসে আছে। তানজুমকে নিয়ে গাছের গুঁড়িতে বসে আছে নীল। ক্লাস শুরু হবে, সময় কম তাই দুজনে কথা বলতে বলতে ক্লাসের দিকে হাঁটা দিল। তানিয়া আর কাজল ক্লাসেই বসে আছে। নীলকে দেখে বসার জায়গা করে দিল।
ছুটি হলো ঠিক তিনটায়। একটা ছেলে সিঁড়ি ভেঙে নীলের সামনে এসে দাঁড়াল। তারপর তাকে একটা খাম দিয়ে বলল,
'এইটা তোমার জন্য।'
কাজল জিজ্ঞেস করল, 'চিঠি?'
ছেলেটা কিছু বলল না। মৃদু হেসে চলে গেল। সব ক্লাসরুমের সামনে ডাস্টবিন আছে। নীল খামটা ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে হাঁটতে লাগল।
তানিয়া রূঢ় গলায় বলল, 'ছেলেরা চিঠি দেয়। তোর সাথে বন্ধুত্ব করতে চায় আর তুই? তাদের চিঠিগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দিস।'
নীল মুখ না দেখে কণ্ঠ শক্ত করে বলল,
'আমি এসব পছন্দ করি না।'
নীল গেটের সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। তানজুম রিকশা ডাকল। রাস্তার উল্টোদিকে অভ্রকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তানিয়া হঠাৎ বলে উঠল, 'ক্যাফের সেই ছেলেটা যার সাথে গতকাল নীলের ধাক্কা লেগেছিল।'
কাজল তার ভ্রু কুঁচকেছে। তানজুম বলল, 'সে ছেলেটা এখানে কী করছে? কোনোভাবে নীলকে ফলো করছে না তো?'
কাজল বলল, ' লম্বা, চওড়া কাঁধ, দেখতে সুন্দর, সুদর্শন যুবক। করলেই বা ক্ষতি কী?'
অভ্র অধৈর্য হয়ে গেল। অভ্র আকাশকে কিছু বলার আগেই আকাশ বলল, ' চল যাই। তুই কথা বলে নিস।'
অভ্র নীলের সামনে এসে দাঁড়াল। তার বুক ধকধক করছে। বুক ধড়ফড় কোনোভাবেই থামছে না। অভ্র নরম গলায় জিজ্ঞেস করল, 'নাম কি তোমার?'
নীল কথা বলল না। নীল পিছিয়ে এসে তার সামনে থেকে সরে দাঁড়াল। কাজল শান্ত গলায় বলল ' ওঁর নাম নীলাঞ্জনা সরকার। সবাই তাকে নীল বলে ডাকে।'
অভ্র বলল,
' আর তুমি কি তার বন্ধু?'
'হ্যাঁ আমরা চার বন্ধু।' বলল কাজল।
নীলের মুখ থমথমে। অভ্র নীলকে চুপ থাকতে দেখে বলল, ' চুপ করে আছো কেন? আমি তোমার জন্য এখানে আসছি। কিছু বল।'
নীল অভ্রর প্রশ্ন এড়িয়ে গেল। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে এসেছে। নীল গাড়িতে বসল। গাড়িটা চলে গেল। অভ্রর হাসি মিলিয়ে যায়। অভ্র অভিমানে রাস্তা দিয়ে হেঁটে ওপাশে গেল। আকাশ হতাশ হয়ে শুভর দিকে তাকাল। শুভ নীলের বন্ধুদের সাথে কিছু জরুরি কথা বলে নিল।
__
এক সপ্তাহ কেটে গেল। হঠাৎ অসুস্থতার কারণে নীল তিন দিনের ছুটি নেয়। গভীর অলসতায় এই দিনগুলো ও কেটে গেল। আজ শরীরটা একটু ভালো, তাই কলেজে যেতে চায়। বন্ধুদের মাঝে থাকলে ভালো লাগবে, দিনটা ভালো যাবে। মিসেস রোজা তার মেয়েকে নিষেধ করেন, তাকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার জন্য আরও একদিন ছুটি কাটাতে বলেন। নীল সুস্থ বোধ করছে। সেজন্য সে কলেজে যাবেই। ক্যাম্পাসে পা রাখতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। নীল কাকভেজা শরীর নিয়ে ক্লাসে ঢুকল। আজ এভাবেই ক্লাস করতে হবে। ছুটি নেবে কোন উপায় নেই। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে স্যার আসলেন।
বৃষ্টির পরে, আকাশ তার অপূর্ব সৌন্দর্য দেখায় পৃথিবীকে। পরিষ্কার আকাশে সাদা মেঘ ভাসছে, পাখি ডানা মেলে উড়ছে, গাছের ডাল-পাতা থেকে ছোট ছোট বৃষ্টির ফোঁটা মাটিতে পড়ছে। রাস্তায় থাকা ছোট্ট ছোট্ট গর্তগুলোয় পানি জমেছে। গাড়ি চলার সময় চাকা গর্তের মধ্যে পড়ে গেলে পানি ছিটকে বেরিয়ে আসে। কিছুক্ষণ পর সেই গর্তগুলো আবার পানিতে ভরে যায়। নীল গেটের সামনে এসে দাঁড়াল। গাড়ি আসতে দেরি হবে। ড্রাইভার কল করে জানিয়েছেন রাস্তায় অনেক জ্যাম। ফোন ব্যাগে রেখে রাস্তার ওপারে তাকাল নীল। কত মানুষ হাঁটাচলা করছে। অথচ অভ্র নেই। গত একটা সপ্তাহ কলেজ ছুটির পর লোকটি এখানে দাঁড়িয়ে থাকত। তাহলে আজ কেন নাই? নীল চারপাশে তাকিয়ে খোঁজার চেষ্টা করে।
তানিয়া বলল,
' কাউকে খুঁজছিস?'
' না। কেন?'
' তোকে দেখে মনে হচ্ছে তুই কাউকে খুঁজছিস।'
কাজল মৃদু হেসে বলল,
' অভ্র ভাইয়ের আজ তার বাবার কোম্পানিতে জয়েন করার কথা। তাই আসেনি। গতকাল আসছিল, তোর খোঁজ খবর নিয়ে গেছে।'
নীল ভ্রুকুটি করল। খানিকটা রাগী গলায় বলল,
' আমার খোঁজ নেওয়ার সে কে? আর তোরাই বা বলতে গেলি কেন?'
'এখন কেউ না। ভবিষ্যতে হতেও পারে।' কন্ঠ তুলল তানজুম। এরপর ওঁ রিকশায় উঠে গেল। নীল দাঁড়িয়ে আছে। পনেরো মিনিট পর লতিফ চাচা গাড়ি নিয়ে আসলেন।
জ্যোৎস্না প্রস্ফুটিত হয়েছে। মাঝরাতে বারান্দায় এলো নীল। তার লম্বা চুলগুলো বিনুনি করা। খোলা আকাশে রাতপাখি শব্দ করে উড়ে গেল। বিশাল আকাশে শুধু একটিমাত্র চাঁদ, তাঁরা নেই। নীল করুণ গলায় বলল,
' তুমিও কি একা আমার মতো?'
.
.
.
চলবে............................