আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

চোখের তারা তুই - পর্ব ২১ - তাইয়েবা বিন কেয়া - ধারাবাহিক গল্প


#চোখের_তারা_তুই 
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া 
#পর্ব ২১



ফারিশ চলে যায় আজকে পরিষদে কিছু কাজ রয়েছে সামনে নিবার্চন আসছে। কিন্তু সব কাজ শেষ করে আঁধারের কথা মনে পড়ে আর আঁধারের মুখ মনে পড়ে ওর মুখে হাসি ফুটে। ফারিশ মিটিং ছিলো সে সবার উদ্দেশ্য করে বলে 

"- দেখেন এবার নিবার্চান এতো সহজ হবে না সেটা বুঝতে পারছেন কার বিরোধী টিম অনেক শক্তিশালী। সে সবাইকে বলছি আমার পোস্টার সহ বিভিন্ন বিষয়ে খেয়াল রাখবেন "।

ফারিশের কথা সবাই শুনে আসলে মিটিং অনেকে ছিলো যেমন চেয়ারম্যান মেম্বার সহ সবাই। সেখান থেকে একজন নেতা বলেন 

"- এমপি স্যার আমাদের সকলের মনে হয় এইবার বিরোধী দলের মাথা লোকমান হালদার পিছনে কেউ আছে যে তাকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে। না হলে লোকমান বড়ো লোক ঠিক আছে বাট নির্বাচনে এখন থেকে যে পরিমাণ টাকা খরচ করছে সেটা ওর সম্ভব না। নিশ্চিত এখানে কারো হাত রয়েছে -"।

ফারিশ ওনার কথা শুনে আসলে ওনি পার্টির একজন সিনিয়র লোক রাজনীতি অনেক ভালো বুঝতে পারেন। ফারিশ এই ধারণা আগে করেছে এই সবকিছুর পিছনে কেউ আছে কে আছে সেটা ও জানে কিন্তু কিছু বলতে চাই না। ফারিশ বলে

" একদম আপনার কথা ঠিক এসবকিছু পিছনে অন্য কেউ আছে কিন্তু জনগণ যদি নিবার্চনের সময় টাকা দিলে অন্য মানুষকে ভোট দেয় তাহলে ঠিক আছে তারা যাকে চাই সেই এমপি হবে-"। 

ফারিশের কথা শুনে সবাই চুপ থাকে তেমন কিছু বলে না। ফারিশ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় বিকাল হয়ে গেছে বিকালে আঁধারকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে তাই ফারিশ বলে -

" ওকে আজকের মতো মিটিং এখানে শেষ করি। আমাকে একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যেতে হবে। সো আবার দেখা হবে নিবার্চন আসছে সবাই কাজ করেন -"।

আঁধার আর তুলি অনেক সময় ধরে গল্প করছে। তুলি ওর আর ফারিশের বিষয়ে জিজ্ঞেস করছে। তুলি বলে 

-" আচ্ছা পরে রাতে ভাইয়া আর তোমার সাথে কিছু করে নাই। মানে তোমরা ঘুমিয়ে পড়লে শুধু -"।

ফারিশ বাড়িতে ফিরে এসেছে রুমে ঢুকতে যাবে তখন তুলি আর আঁধারের কথা শুনে। ফারিশ একটু দাঁড়িয়ে যায় 

আঁধার বলে 

" আরে যাও তুলি এইসব কি বলো। আর তোমার ভাইকে জানো ওনি কেমন আন রোমান্টিক মানুষ এইসব কিছু হবে না -"।

তুলি একটু মন খারাপ করে বলে-

-" হুম বুঝতে পারছি কিছু হবে না। তবুও একটা কাজ করো এখন তোমরা জুটিয়ে প্রেম করো -" 

ফারিশ একটু হেসে চুপ করে রুমে এসে তুলির কান ধরে ফেলে। ফারিশ বলে -

-" কি করে জুটিয়ে প্রেম করা শিখানো হচ্ছে পড়াশোনা বাদ দিয়ে এইসব মাথায় থাকে তাই না। পরীক্ষার রেজাল্ট শুধু দেখবো পরে তোকে জুটিয়ে মারব "।

তুলি একটু কান ছাড়িয়ে বলে 

" দেখো ভাইয়া আমি ভুল কি বলেছি আর সারাদিন পড়াশোনার কথা বলবে না এইসব পছন্দ হয় না আমার। তুমি বিয়ে করেছো এখন আমাকে বিয়ে দেও আমি আমার জামাইয়ের সাথে জুটিয়ে প্রেম করতে চাই -"।

ফারিশ আর আঁধার দুইজনে অবাক হয়ে গেছে ফারিশ রাগী চোখ নিয়ে কিছু বলতে যাবে। তখন তুলি এক দৌড় দিয়ে রুমে চলে যায়। ফারিশ আর আঁধার দুইজনে হেসে দেয় ওর কাণ্ড দেখে। ফারিশ এবার বলে 

-" কি সারাদিন শুধু এইসব নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছা করে হুম। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে পড়াশোনা করতে হবে -"।

আঁধার এবার একটু রাগ হয় এই লোকটা এমন কোনো সারাদিন পড়া পড়া করতে থাকে। আঁধার বলে -

-" আপনি কি টিচার সারাদিন এমন পড়াশোনা কোনো করেন। আমার মনে হয় আপনার এমপি না হয়ে টিচার হওয়ার দরকার ছিলো কিন্তু ভােট চুরি করে এমপি হয়ে গেছেন -"।

ফারিশ হাতের ঘড়ি খুলতে খুলতে বলে -

" এবার নির্বাচনে ফেল করলে টিচার হিসাবে জয়েন করবো।আর আপনি কি বললেন আমি ভোট চুরি করে পাশ করেছি -"। 

আঁধার ফিক করে হেসে দিয়ে বলে -

-" আপনি কি করে পাশ করেছেন সেটা আপনি জানেন। কিন্তু একটা কথা বলুন এখন বিয়ের পর স্বামীরা তার বউকে পড়াতে চাই না কিন্তু আপনি সকাল বিকাশ শুধু পড়াশোনা করেন -"।

ফারিশ ওয়াশরুমে যেতে থাকে আর বলে -

-" কারণ আমি বাজে মানসিকতায় বিশ্বাস করি না নিজের ওয়াইফকে সুশিক্ষিত করা খুব জরুরি। এখন এইসব বিষয় নিয়ে টেনশন না করে যান একটা ভালো জামাকাপড় পড়ে রেডি হন বেড়াতে যেতে হবে -"।

ফারিশের কথা শুনে আঁধার খুশি হয়ে যায় সে ঘুরতে যাবে। ওরা খাবার খেয়ে নেয় এরপর গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যায় আজ ফারিশ গাড়ি চালিয়ে যাবে। একটু সময় পর ওরা পৌঁছে যায়। ফারিশ বলে -

-" আঁধার নেমে আসেন -"।

ফারিশ ওর দরজা খুলে যায় আঁধার যদি দরজা খুলতে গিয়ে হাতে ব্যাথা পায়। আঁধার খুশি হয়ে গাড়ি থেকে নেমে আসে কিন্তু একটা নাম দেখে অবাক হয়ে যায় 

"- আপনি সব জায়গা রেখে হাসপাতালে কোনো নিয়ে এসেছেন। একটা কথা বলুন আপনি কি আমাকে পেসেন্ট দেখতে আর মৃত মানুষের সাথে দেখা করতে মর্গে নিয়ে যাবেন -"।

ফারিশ একটু রাগী চোখে তাকিয়ে দেখে। ফারিশ বলে -

"- যদি আমার সম্ভব হয় তাহলে আপনাকে ওখানে রেখে আসবো। কিন্তু এখন ডাক্তারের কাছে যান হাতের বেন্ডেজ গুলো খুলে নতুন বেন্ডেজ করতে হবে -"।

আঁধার ওর কথা শুনে কি বলবে বুঝতে পারে না জীবনে আন রোমান্টিক মানুষ আছে কিন্তু ফারিশের মতো নাই সেটা সে বুঝতে পেরেছে। আঁধার বলে

"- ঠিক আছে তাহলে চলেন। বেন্ডেজ করে আসি হায়রে আমার পুড়া কপাল এই জীবনে আর প্রেম করা হলো না -"।

ফারিশ আর আঁধার ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার ফারিশকে দেখে খুশি হয়ে বলে 

"- আরে এমপি সাহেব আপনি এখানে কোনো বসেন। আর কারো কোনো সমস্যা হলে আমাকে কল দিতেন বাড়িতে গিয়ে দেখে আসতাম -"।

ফারিশ বলে -

"- আরে তেমন কিছু না আসলে একটা দরকার ছিলো এখন আপনার হাসপাতাল রাস্তায় পড়ে তাই চলে এসেছি। আচ্ছা ওর হাতের বেন্ডেজ একটু চেক করেন সব ঠিক আছে কি না -"।

ডাক্তার একটু অবাক হয় আঁধারকে দেখে আগে কখনো এই মেয়েকে সে দেখে নাই আর কোনো মেয়ের জন্য ফারিশ ফারহান চৌধুরী নিজে হাসপাতালে আসবে সেটা কল্পনার বাহিরে ছিলো। ডাক্তার জিজ্ঞেস করে -

"- কিন্তু এই মেয়েকে আগে কখনো দেখি নাই ওনি কে হয় আপনার -"। 

ফারিশ একটু আঁধারের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে 

"- ওনি আমার বোন তুলির বন্ধু হন। একটা কারণে এই বাড়িতে থাকে আমার কারণে ওনার হাতে সমস্যা হয়েছে। তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি "-।

আঁধার কিছু বলে না ডাক্তার বেন্ডেজ খুলে নতুন করে করে দেয়। আর বলে আর কয়েকদিন পরে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু কেয়ারফুল থাকতে হবে। 

ফারিশ আর আঁধার দুইজনে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যায়। আঁধার গাড়িতে উঠে পড়ে ফারিশ ড্রাইভিং সিটে বসে ফারিশ বলে -

"- আঁধার আপনি কি রাগ করলেন আমার উপর "।

-"রাগ করবো কোনো। রাগ করার মতো কি হয়েছে -"।

-" আসলে ডাক্তার কে আপনার আসল পরিচয় দিতে চাই নাই কারণ এখন সামনে নির্বাচন। কেউ যদি জানে আপনি আমার ওয়াইফ তাহলে সমস্যা হবে "

-" ফারিশ আমার সমাজের কোনো মানুষের কাছে পরিচয়ের দরকার নাই আপনার দরকার। আপনি হলে হবে ফারিশ আমার। আচ্ছা এখন কোথায় যাবেন কবরস্থানে "।

" হুম কবরস্থানে ভুতের কাছে আপনাকে রেখে আসবো তখন এইসব বাচ্চামি করা শেষ হবে "।

ফারিশ গাড়ি নিয়ে একটা মেলার মধ্যে রাখে সবাই আনন্দ করছে সেখানে। আঁধার গাড়ি থেকে নেমে যায় 

"- ও কতো সুন্দর জায়গা অনেক কিছু আছে। আপনি এখানে নিয়ে আসবেন আগে বলবেন না "।

ফারিশ তার মুখ ডেকে ফেললো কেউ দেখলে সমস্যা হতে পারে। ফারিশ বলে 

-" কি এখন খুশি যান কিছু কিনেন "।

আঁধার অনেক খুশি হয়ে যায় কিন্তু ফারিশ মুখ ডেকে রেখেছে তাই জিজ্ঞেস করে 

"- আপনি মুখ কোনো ডেকে রেখেছেন "।

" কারণ এখানে সবাই জানে আমি এমপি তাই সমস্যা হতে পারে। আর আপনি আছেন তাই এই মুখ ডেকে রাখতে হবে "।

আঁধার একটা চুড়ির দোকানে যায় সেখানে অনেক চুড়ি দেখে খুশি হয়ে যায়। আঁধার বলে 

"- আপনি এক জোড়া চুড়ি দেখান চুড়ি কিনবো "।

দোকানদার ওকে চুড়ি দেখায় কিন্তু আঁধার এক হাতে থাকার কারণে পড়তে পারে নাই। ফারিশ ওর হাত ধরে ফেলে চুড়ি পরিয়ে দেয় আঁধার একটু হাসি দেয়। 

ফুসকার দোকানে যায় আঁধার ফুসকা খেতে চাই।

ফারিশ বলে 

"- এই কোনো ফুসকা খাওয়া যাবে না বকা দিবো আঁধার "।

আঁধার একটু বাচ্চাদের লুকে তাকিয়ে বলে 

"- আপনি এমন করেন কোনো শুধু ফুসকা খেতে চাই একটু দেন খেতে। শুধু কয়েকটা "।

ফারিশ কি করবে না করলে মেয়েটা আবার কান্না শুরু করে দিবে এই বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে সব সম্ভব। কিন্তু ফারিশ দেখে আঁধার ফুসকা আর আইসক্রিম একসাথে খাচ্ছে।

" এই ফুসকা আর আইসক্রিম একসাথে কে খায় "।

" আরে এতো অনেক মজা একটু ফুসকা খান জ্বাল হবে আর আইসক্রিম খান মিষ্টি লাগবে। দারুণ খেতে হবে আপনি খান "।

" না এইসব খাবো না "।

ফারিশ দেখে আঁধারের মুখে একটু আইসক্রিম লেগে আছে। ফারিশ বলে 

" - আঁধার আপনার মুখে আইসক্রিম লেগে আছে মুছে ফেলেন "।

আঁধার টিস্যু দিয়ে চেষ্টা করে কিন্তু মুছতে পারে না। ফারিশ হাত থেকে টিস্যু নিয়ে ওর কাছে গিয়ে মুছে দেয়। ফারিশ কাছে এসেছে সেটা দেখে আঁধার লজ্জা পায়। 

" হুম এখন ঠিক আছে "।

আঁধার হাসি দিয়ে একটু মুখোশ খুলে ওর মুখে একটা ফুসকা দিয়ে বলে 

" হুম এমপি সাহেব এখন ঠিক আছে "।

আঁধারের খাওয়ার পুরা সময় ফারিশ ও দিকে তাকিয়ে থাকে। ফারিশ আনমনে বলে 

" মায়াবী "।



চলবে............................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।