চোখের তারা তুই - পর্ব ২৩ - তাইয়েবা বিন কেয়া - ধারাবাহিক গল্প


#চোখের_তারা_তুই 
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া 
#পর্ব :২৩



রাতে রানেল বাড়ি ফিরে আসে ফরিদা ওর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে অনেক সময় ধরে। ফরিদা শরীরে রাগ নিয়ে ওর কাছে গিয়ে বলে 

" তোর এতো কি কাজ ছিলো রানেল। সারাদিন বাহিরে থাকতে হয়েছে এইদিকে এই আঁধার আর ফারিশ আমাকে কতো অপমান করেছে তার কোনো ঠিক আছে "।

রানেল মাকে শান্ত করতে বলে 

"- আরে মম এতো টেনশন কোনো করছো একটা কাজ ছিলো সেটা করে এসেছি। আর আঁধার আর ফারিশের টেনশন করতে হবে না এবার নির্বাচনে ফারিশ ফারহান চৌধুরী কখনো জিততে পারবে না 

ফরিদার নিজের ছেলের উপর বিশ্বাস কিন্তু ফারিশ আর আঁধার সবসময় বেঁচে যায় তাই ও সিউর হতে জিজ্ঞেস করলো। 

" সত্যি কিন্তু কি এমন করবি যাতে ফারিশ কখনো মুখ দেখাতে না পারে। আজকে আমি আঁধার যখন ছাঁদে কথা বলছে তখন সিঁড়িতে তেল দিয়ে এসেছি পিছলে পড়ে ওর হাতে ব্যাথা পেয়েছে ".

ফরিদা এখন শান্ত লাগছে এই ফারিশ ছোট থেকে ওর ছেলের সব জিনিস কেঁড়ে নিয়েছে।এখন এই ব্যবসা সম্পত্তির মালিক শুধু হবে ওরা কারণ এই বাড়ির আর কোনো মালিক থাকবে না। ফরিদা বলে 

"- এবারে বুদ্ধি আগের মতো খারাপ হয়ে যাবে না তো "।

"- আরে মম ফারিশকে মারার সব বুদ্ধি ওই আঁধার শেষ করে দিয়েছে তাই এবার আঁধারকে ফারিশের থেকে দূরে সরিয়ে দিতে হবে। এমন কিছু করব যাতে ফারিশকে মারতে না হয় সে আত্মাহত্যা করতে বাধ্য হবে। মানে সাপ ও মরবে আর লাঠিও ভাঙবে না "।

রাতে ফারিশ আর আঁধার এক বেডে ঘুমিয়ে পড়ে আঁধারের মাথা একটু ব্যাথা করছে। ফারিশ সেটা নোটিশ করে 

" আঁধার এখানে আসেন মাথা টিপে দেয় "।

আঁধার খুশি হয়ে ওর কাছে যায়।

" আপনাকে একটা কথা বলি এমপি সাহেব "।

" যদি অনুমতি না দেয় তাহলে কি বলবেন না। বলেন কি বলবেন "।

" যানেন ছোটবেলা যখন মায়ের সাথে থাকতাম সবাই আমার বাবার নাম জিজ্ঞেস করতো কিন্তু কাউকে বলতে পারতাম না আমার বাবা কে। সমাজের সবাই অনেক খারাপ কথা বলতো সব সয্য করে নিয়েই চলেছি। কিন্তু যখন হাতে গুলি লেগেছে তখন মনে হয়েছে তার বেঁচে থাকতে পারব না তখন খুব ইচ্ছা করছে সবাই যাতে জানে আমার কোনো পরিচয় আছে। আপনাকে বলেছি সমাজের মানুষের কথায় আমার কোনো যায় আসে না কিন্তু সত্যি হলো এইসব কথা শুনে আমি বিরক্ত এখন আমার কোনো পরিচয় চাই। আচ্ছা যদি এই আসল অপরাধী সামনে চলে আসে তখন সবার সামনে আমি আমাকে বউ হিসাবে মেনে নিবেন। সবাই জানবে আমি এমপির বউ ছিলাম "।

ফারিশ এর মাথা নিজের বুকে নিয়ে আসে আর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আর বলে 

" হুম একবার শুধু এইসব শেষ হতে দেন পরে একটা বড়ো অনুষ্ঠান করে এই পুরো শহরকে বলবো। আপনি ফারিশ ফারহান চৌধুরী বউ আর এই বাড়ির মেয়ে"।

আঁধার ওর মুখে মাথা রেখে শান্তি পেয়েছে। আঁধার বলে 

"- যদি এর আগে আমি মারা যায় তখন কি হবে। আমার কোনো পরিচয় থাকবে না কারো কাছে "।

ফারিশ যানে না ওকে কি বলা উচিত মেয়েটা যতো বাচ্চাদের ব্যবহার করুক ওর জীবনে অনেক কষ্ট। ফারিশ বলে

"- ঘুমিয়ে পড়ুন আঁধার কালকে সকালে যেতে হবে কলেজে। আর আপনার আশেপাশে গার্ড হিসাবে অনেক লোক থাকবে কিন্তু কেউ বুঝতে পারবে না "।

সকাল হয়ে গেছে আঁধার ঘুম থেকে উঠে পড়ে রেডি হতে ওয়াশরুমে চলে যায় হাতের ব্যাথা করছে। কিন্তু ফারিশকে বললে যেতে দিবে না তাই বলে নাই। 

ফারিশ ঘুম থেকে উঠে দেখে আঁধারকে রেডি হয়ে গেছে ফারিশ উঠে রেডি হয়। 

আঁধার বলে 

" আচ্ছা আপনি কি আমার সাথে কলেজে যাবেন মানে আজকে ওখানে যেতে হবে "।

ফারিশ একটু আয়নার কাছে গিয়ে ওর চুল ঠিক করে দিয়ে বলতে থাকে। 

" না আমরা একসাথে কলেজে যেতে পারব না কারণ আপনাকে আগে যেতে হবে আর আমি দলীয় নেতাদের সাথে যাবে "।

আঁধারের একটু মন খারাপ হয়ে গেলো আসলে এখন ফারিশের থেকে দূরে থাকতে ওর ভালো লাগে না। আঁধার বলে 

" হুম ঠিক আছে এমপি বলে কথা আপনি আমার মতো সাধারণ মেয়ের সাথে কোনো যাবেন। এই জন্য আমি চাই আপনি নির্বাচনে ফেল করেন পরে একদম সাধারণ মানুষ হয়ে যাবে পরে যেখানে ইচ্ছা সেখানে নিয়ে যেতে পারব "।

ফারিশ একটু মুচকি হাসি দেয় মেয়েটা সবসময় বাচ্চা থাকবে। ওরা সবাই খাওয়া শেষ করে কলেজে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে পড়েছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেছে। তুলি নেমে পড়েছে কিন্তু আঁধার নামে নাই। 

ফারিশ বলে 

"- কি হলো গাড়ি থেকে নেমে যান "।

আঁধার মাথায় এখন অন্য কিছু চলছে কারণ এই কলেজের মেয়েরা যদি ফারিশের দিকে নজর দেয় তাহলে কি হবে। আঁধার বলে

"- শুনুন কলেজ যখন যাবেন মুখোশ পড়ে যাবেন যাতে আমার বন্ধুরা আপনাকে নজর দিতে না পারে। 

" ঠিক আছে যাবো এখন যান গাড়ি থেকে নেমে যান "।

"- গাড়ি থেকে কেমন করে নামিয়ে দিলেন তাই না এমপির গাড়ি বলে এমন করছেন। আমার জামাইয়ের এর চেয়ে সুন্দর গাড়ি আছে কালকে থেকে সেই গাড়ি করে কলেজে যাবে তখন বুঝতে পারবেন "।

আঁধার গাড়ি থেকে নেমে যায় ফারিশ একটা হাসি দিয়ে চলে যায়। আঁধার কলেজে সবার সাথে কথা বলে তবে এতো নড়াচড়া করে না কারণ ফারিশ বারণ করে দিয়েছে।কলেজে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায় সবাই এমপির জন্য অপেক্ষা করে। 

" এই এমপি এসে গেছে। এমপি এসেছে "।

পুরো কলেজ একটা আওয়াজ শুনা যাচ্ছে আঁধার একটু দূর থেকে এমপি সাহবকে দেখছে তার এমপি ভাবতে খুশি লাগছে। ফারিশ একটু ওর দিকে তাকিয়ে দেখে তারপর কলেজ ভিতরে চলে যায়। 

সবাই ভাষণ দিচ্ছে আঁধারের এইসব বোরিং লাগছে কখন পুরস্কার দিবে কে যানে। 



চলবে.........................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন