ইনানের বাসা থেকে দু কদম আগাতেই তাজবীর খেয়াল করল তার হাতে ইনানের ছাতা। সে তখন ইনানের হাত থেকে হেঁচকা টানে ছাতা নিয়েছিল, আর নিজেরটা নিচেই পড়েছিল। একবার ভাবল ইনানের ছাতা নিয়েই চলে যাবে। আরেকবার ভাবল, নাহ, একবার ইনানের ঘরে ঢু মেরে দেখা দরকার। ছাতা ফেরতের উছিলা হয়ে যাওয়া যায়। তাই তাজবীর আবার ব্যাক করল। বৃষ্টিতে তার কোটের নিচের অংশ ভিজে চুপচুপে হয়ে গেছে। পা টেনে টেনে ইনানের গেটের কাছে আসতেই দেখল ইনানের মোবাইলের ফ্ল্যাশ অন করে উল্টে পড়ে আছে। কপাল কুঁচকে গেল তার। ইনানের মোবাইল পড়ে আছে কেন? আর ইনানই বা কোথায়? মোবাইল নিচে ফেলে কোথায় গেল? গেটের ভেতরে ঢুকতেই অস্পষ্ট চিৎকার তার কানে বারি খেল। কান খাড়া হয়ে গেল তাজবীরের। দ্রুত পদে চিৎকার অনুসরণ করে গোডাউনের সামনে আসলো। নিজের ফ্ল্যাশ অফ করে দরজা খুলে দেখল ইনানের শরীরের উপর একটা ছেলে ইনানের জামা খোলার চেষ্টা করছে।
চোয়াল শক্ত হয়ে গেল তাজবীরের। দাঁতে দাঁত চেপে নিচ থেকে মোটা লাঠি নিয়ে শরৎএর মাথা বরাবর আঘাত করল। শরৎ ইনানের উপর থেকে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ভারী জুতা দিয়ে গলা চেপে ধরল। শরৎ ছটফট করতে করতে কিছুটা কাবু হলে তাজবীর তাকে ছেড়ে কোট খুলে ইনানের গায়ে পরিয়ে দেয়। কাঁদতে কাঁদতে ইনানের গলা বসে গেছে। ফ্যাসফ্যাসে গলায় কাঁদছে সে। আজ যদি তাজবীর তাকে না বাঁচাতো…
ইনানকে ধরে তাজবীর দাঁড় করায়, বিচলিত গলায় বলল, ‘ঠিক আছো তুমি? কোথাও লেগেছে?’
ইনান মাথা নিচু করে হেঁচকি তুলে কাঁদছে। তাজবীর কোনো প্রশ্ন করল না। সে ইনানের হাত ধরে টেনে নিয়ে আসতে চাইলে পেছন থেকে শরৎ লাথি মা’রে তাজবীরের পিঠে। আচমকা ধাক্কায় পড়ে যেতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয় সে। দেখে র’ক্তমাখা শরৎ জানোয়ারের ন্যায় ফুঁসছে। তার মুখশ্রী এত বিভৎস যে দেখলে মনে হয় হরর মুভির খাইষ্টা ভূতগুলো।
শরৎ আর তাজবীরের মধ্যে এক প্রকার ধস্তাধস্তি লেগে গেল। এ ওকে মা’রে, তো ও একে মা’রে। ইনান কোণায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। ওদের মা’রামারি দেখে একবার মনে হলো বাবাকে কল দেয়া দরকার, কিন্তু মোবাইল তো নেই তার কাছে। তাই নিচে পড়ে থাকা শক্ত কাঠ নিয়ে ওদের পেছনে যায়। হাত কাঁপছে তার থরথর করে। ঠোঁট চেপে শরৎএর পিঠে আঘাত করতে নেয়। কিন্তু ইনানের ভাগ্যও আজ তার বিরুদ্ধে। শরৎ আর তাজবীর এক জায়গায় স্থির হয়ে লড়াই করছে না, এদিক সেদিক ঘুরছে বিধায় আঘাত লাগল তাজবীরের পায়ের কাছে। ইনানের কাঠ শক্ত হওয়ায় তাজবীরের পায়ে লাগল ভালোভাবেই। নিজের করা কাণ্ড দেখে ইনান মুখ চেপে ধরে চিৎকার করে উঠে। তাজবীরের কাছে গিয়ে তাকে ধরে উঠাতে উঠাতে কান্না করতে লাগল সে,
‘আমি স…রি তাজবীর, আমি..আমি…বুঝ..বুঝতে পা..’
‘ওয়াও! হোয়াট আ শট ইনানসোনা! আ’ম ইম্প্রেসড।’ শরৎ ইনানের হাত ধরে উঠিয়ে বিদঘুটে হেসে বলল, ‘আমার কাজ তো তুইই অর্ধেক করে দিলি, এই জন্যই তো তোকে এত ভালোবাসিরে ইনু সোনা।’
শরৎ ইনানের দুহাত চেপে পেছনে মুড়ে দিলো। ইনানের মনে হচ্ছে তার জান যাবার উপক্রম। চোখ বড় হয়ে গেল তার। শরৎ হিংস্র প্রাণীর ন্যায় এক প্রকার ঝাঁপিয়ে পড়ল ইনানের উপর। ইনানের গাল, গলা খামচে কামড়াতে লাগল।
তাজবীর পা ধরে বসে পড়ে। এত যন্ত্রণা হওয়ার কথা ছিল শরৎএর। কিন্তু ইনানের ভয়ের কারণে ঝড় যাচ্ছে তার উপর দিয়ে। তাজবীর ইনানের সেই কাঠটা নিয়ে তাক করল শরৎএর মাথা বরাবর। শরৎ তখন ব্যস্ত ছিল ইনানের গলার মধ্যে। তাজবীরের গা রাগে রি রি করে উঠল তা দেখে। এক চোখ বন্ধ রেখে শরৎএর মাথা বরাবর তাক করে খুব জোরে ছুড়ে মারল সে। সেকেন্ডের মাঝেই কাতড়াতে কাতড়াতে শরৎ নিচে পড়ে গেল। ইনান মুক্তি পেয়ে তাজবীরের কাছে যায়। ব্যথায় চোখমুখ কুঁচকে আসে তাজবীরের। পকেটে নিজের মোবাইল খুঁজে না পেয়ে ইনানের মোবাইলটা ইনানকে দিয়ে বলে,
‘দ্রুত তোমার বাবাকে ফোন লাগাও। এই শালা যাতে পালাতে না পারে।’
ইনান ফোন লাগায় তার বাবার কাছে। চোখমুখ ফ্যাকাশে তার, চুল এলোমেলো যেন কোনো পাগলনি। ফোন দেয়ার টাইমে কানে আসলো মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ। শিট! শিট! শিট!
শরৎ শত ব্যথা স্বত্ত্বেও উঠে দাঁড়াল। এত মা’র খেল তাও ছেলের জোর কমে না। টাল মাতাল পায়ে তাদের কাছে আসতে নিলে ইনান শরৎকে শুনিয়ে ফোনে তড়িঘড়ি করে বলে,
‘বাবা তুমি এসে পড়েছো? প্লিজ তাড়াতাড়ি আসো, আমাদের বাঁচাও। শরৎ, শরৎ ও এখনো আছে এখানে, তুমি জলদি আসো। ও যেতে পারবে না।’
ইনানের বুদ্ধি কাজে লাগলো। শরৎ ইনানের বাবাকে ভয় পায় না এমন না, তবে একবার ধোলাই খাওয়ার পর ইফাজ খানের লাঠির বাড়িকে আর হুমকিকে বড্ড ভয় পায়। কোনোভাবে শরৎএর বাবার কানে কথা উঠালে তাকে ত্যাজ্য করে দিবে, এই ভয়ে শরৎ আর ওদের কাছে গেল না। এলোমেলোভাবে পা ফেলতে ফেলতে বাইরে চলে যায়। যাওয়ার আগে আঙ্গুল তুলে শাসায় ইনানকে,
‘দেখে নেবো তোকে, চিনিস না তো আমাকে। মনে রাখিস তুই।’
তারপর অকথ্য ভাষায় কিছু গালি ছুঁড়ে চলে গেল সে। এই দুর্বল অবস্থায় শরৎ বেশিদূর যেতে পারবে না। তাই তাজবীর ইনানকে তাড়া দেয়,
‘কোথায় আছে তোমার বাবা? শরৎ বেশিদূর যেতে পারবে না এই অবস্থায়। বলো ওনাকে, কুইক।’
ইনান কান থেকে ফোন সরিয়ে আমতা আমতা করে বলে, ‘ইয়ে, মানে ব্যালেন্স নেই মোবাইলে।’
‘তাহলে এতক্ষণ কথা বললে কীভাবে?’
‘কথা বলার ভান ধরেছিলাম।’
তাজবীর বিস্ফারিত নয়নে চায়, ‘সিরিয়াসলি!! তোমার মাথায় এত আজাইরা বুদ্ধি কেন?’
‘এখন না বললে তো শরৎ আবার হামলা করতো। আরো মা’র খেতেন আপনি।’
‘আরে ভাই!!’ তাজবীর হতাশ সুরে নিজের কপালে হাত রাখে। পায়ের ব্যথার চেয়ে ইনানের বোকামিই তার হতাশার কারণ।
‘কোটে দেখো তো আমার মোবাইলটা রেখেছি, ওটা দিয়ে তোমার বাবাকে কল দাও, ফাস্ট!’
ইনান মোবাইল খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে গেল। তখন তাজবীরের চোখে পড়ল বাইরে এত অন্ধকারের মাঝেও কোনো গাড়ির হেডলাইটের আলো। সে যখন বাইরে ছিলো তখন আশেপাশে গাড়ি তো দূর, কোনো মানুষের অস্তিত্বও ছিল না। আর এখন শরৎ গাড়িতে করে যাচ্ছে, নিশ্চয়ই সাথে কেউ আছে। দুই সেকেন্ডের মাথায় গাড়ি অদৃশ্য হয়ে গেল।
‘বাদ দাও, তোমার বাপকে কল করে লাভ নেই। শুধু শুধু আমার মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ করবে। আমাকে ধরো তো, হাঁটতে পারছি না, হাড় ভাঙছে কিনা কে জানে!’
‘ধরে কোথায় নিবো?’
‘আমার মাথায় নাও না রে মাথামোটা কোথাকার!’ দাঁত কটমট করে বলল তাজবীর। ‘তোমার ঘরে নাও, আগে আমার অন্যান্য ক্ষতগুলোয় ব্যান্ডেজ করে দাও, তারপর আমাকে নিয়ে হসপিটালে যাও।’
ইনান তাজবীরকে ছেড়ে বলল, ‘আচ্ছা ওয়েট করেন। এক মিনিটে আসছি।’
ইনান দৌড়ে গেল উপরে। আস্তে ধীরে দরজা খুলে পা টিপে টিপে ঘরে ঢুকল। জেহফিলের আর্ট রুমে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখল জেহফিল মোম জ্বালিয়েএকটা আর্ট মনোযোগ দিয়ে করছে। তারমানে জেহফিল নিচে চলা হইচই শুনতে পায়নি। আর শুনবেই বা কীভাবে! যা বৃষ্টি হচ্ছে, এতে মাইক দিয়ে চেঁচালেও শুনবে না।
ইনান রুমে গিয়ে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে চলে এলো নিচে। তাজবীর হতবুদ্ধি হয়ে চেয়ে রইল। কোথায় ভাবল ইনানের বাসাটা দেখবে আর এই মেয়ে সেই সুযোগ না দিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে নিচে চলে এলো?
ইনান যেন তাজবীরের মনের কথা শুনতে পেল,
‘উপরে নিলে আবার নিচে আসতে কষ্ট হতো আপনার। তাই এখানেই নিয়ে আসছি সব।’
‘যাক, কিছুটা হলেও বুদ্ধি আছে মেয়ের।’ মনে মনে বলল তাজবীর।
তাজবীরকে সেবা দিয়ে তাজবীরের পায়েও অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
‘চলুন হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
‘নো নিড। হাড় ভাঙেনি, ব্যাথা একটু কম লাগছে।’
‘তাহলে এখন কোথায় যাবেন?’
‘তোমার বাসায়?’
‘কী?’
‘জাস্ট কিডিং, আমার বাসাতেই দিয়ে আসো।’
ইনান তাজবীরকে ধরে তার গাড়িতে বসালো। যদিও আট দশ কদম পা ফেললেই তাজবীরের বাসা কিন্তু এই বৃষ্টিতে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়াটা রিস্ক। তাই গাড়ি করে তাজবীরের বাসায় দিয়ে আসলো। তাজবীরকে তার বাসায় ঢুকানোর টাইমে স্বল্প আলোয় ঘরটায় চোখ বুলিয়ে নিলো সে। বাসাটা নতুন হলেও কোনো আসবাবপত্র নেই। সম্পূর্ণ বাসা খালি। শুধু তাজবীরের রুমে দুয়েকটা ফার্নিচার।
তাজবীরকে ঠিক করে দিয়ে ইনান নরম সুরে বলল,
‘আপনার সাথে করা ব্যবহারের জন্য দুঃখিত। আর আপনার সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ।’
‘টাকা লাগবে।’
‘সরি?’
‘তোমাকে তো বিনা বেতনে পাহাড়া দেই, তার উপর আজকে অবস্থা খারাপ আমার। তাই টাকা লাগবে।’
‘কত চাই।’
‘ওয়েল, টাকার বদলে আরেকটা জিনিস দাও।’
‘কী?’
‘রান্না করে প্রতিবেলা খাবার দিয়ে যাবে। রান্না করতে খুব বিরক্ত লাগে আমার।’
‘বুয়া ঠিক করে দেই?’
‘নো। রান্না যখন করবে, একটু বেশি করেই করবে। তাহলেই তো হয়।’
ইনান চিন্তিতমুখে বলল, ‘আচ্ছা। যাই তবে। বায়।’
ইনান বেরিয়ে আসলো। তার চিন্তা জেহফিলকে নিয়ে। কী বলবে, কী করবে দিক দিশা পাচ্ছে না। আগের জেহফিল হলে তার এত কিছু ভাবতে হতো না। জেহফিল সব নিজ কাঁধে নিয়ে ইনানকে টেনশন ফ্রি রাখতো। এমনকি শরৎ কখনো তার দিকে হাত বাড়ানোর সাহস অবধি করতো না।
ইনান মিস করছে। সেই আগের জেহফিলকে খুব..খুব মিস করছে। কবে জেহফিল ঠিক হবে, কবে আগের মতো তার উপর রাগ দেখিয়ে কাজ করতে বাঁধা দিবে, কবে তাকে আগের মতো শাসন করবে, আগের মতো ভালোবাসবে, আগলে রাখবে!! ইনান সামলাতে পারে না নিজেকে। হু হু করে কেঁদে দেয়।
আর্ট রুমের দরজা শব্দ করে খুলে ইনান। আওয়াজ কানে গেল না ঝড়ের কারণে। ইনান জেহফিল পেছনে এসে দাঁড়ায়, দেখল বড় ক্যানভাসে ইনানের খুব সুন্দর একটা পোর্ট্রেট আঁকছে সে, যেখানে গালে হাত দিয়ে আনমনা হয়ে চেয়ে আছে ইনান, আকাশে পেঁজা তুলোর আড়ালে রংধনু। এত সুন্দর ছবি দেখেও ইনান আজ খুশি হতে পারছে না। জানে না কেন! ইনানের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্র জেহফিল ইনানের দিকে ফিরে। তার মৃদু হাসির বদলে কাঠিন্যতা দেখা দিলো ইনানের আলুথালু অবস্থা দেখে।
‘তোমার এই অবস্থা কে করেছে বাটারফ্লাই?’
ইনান জেহফিলের পায়ের কাছে পড়ে গেল কাঁদতে কাঁদতে। জেহফিলের হাঁটু জড়িয়ে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল।
‘বাটারফ্লাই? কী হয়েছে সোনা বলো আমায়?’
জেহফিল আদুরে ভঙ্গিতে ইনানের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিতে লাগল। তার বুকের মাঝে নিভু নিভু করা আগুন ধীরে ধীরে জ্বলে উঠছে।
জেহফিলের স্নেহের গলায় আরো ভেঙে পড়ল ইনান। সব বলে দিলো সে জেহফিলকে। শরৎএর করা সব। জেহফিল ইনানকে উঠিয়ে গায়ের কোটটা খুলে দিলো। মোম সামনে নিয়ে ইনানের শরীরের ক্ষতগুলো দেখলো। ইনানের গলায় ঘাড়ে আঁচড়ের, কামড়ের দাগ। রক্ত জমাট বেঁধে শুকিয়ে গেছে।
‘আপনার কষ্ট হচ্ছে না জেহফিল?’
জেহফিল শূন্য চোখে তাকায়। তার চোখের ভাষা বুঝতে পারে না ইনান। যেন কোনো ব্ল্যাক হোলের মধ্যে তাকিয়ে আছে সে।
‘তোমার কী মনে হয়?’
‘অবশ্যই আপনার কষ্ট লাগছে না, নাহলে এত শান্ত আছেন কীভাবে? কেন আগের মতো রিয়েক্ট করছেন না?’
‘শান্ত থাকলেই কি মানুষের মনে কষ্ট জমে না?’
ইনান জেহফিলের কোলে বসে জেহফিলের গলা জড়িয়ে ধরে ধরা গলায় বলল,
‘আমি জানি না জেহফিল। কিচ্ছু জানি না। মানুষ শান্ত থাকুক, কিন্তু আমার অশান্ত আপনাকেই চাই। আপনাকে খুব মিস করছি জেহফিল। আপনার এই ভালো হয়ে যাওয়াটা আমি মেনে নিতে পারছি না জেহফিল। আমি..আমি আগের জেহফিলকে চাই, আমার বাস্তবের জেহফিলকে, কল্পনার ভালো জেহফিলকে নয়। আপনার পাগলামো ভালোবাসা, আপনার পজেসিভনেস, সব চাই আমার, সব..।’
জেহফিল গম্ভীর গলায় বলল, ‘কিন্তু তুমি তো সারাজীবন এটাই চেয়ে এসেছিলে বাটারফ্লাই, সুইট, শান্ত, হাসিখুশি পার্সন। একথম তোমার মনমতো। যখন খারাপ ছিলাম তখন তো পছন্দ করতে না, এখন ভালো হলাম তাও পছন্দ করছো না!’
ইনান মাথা দুদিকে নাড়াতে নাড়াতে নাক টেনৈ বলল, ‘না, আমার কল্পনার সেই ভালো পুরুষকে আমার চাই না, আমি কখনোই চাইবো না আর।’
‘ভেবে বলছো তো বাটারফ্লাই?’
ইনান হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল।
‘মুখে বলো, তুমি জানো আমি এসব পছন্দ করি না।’
জেহফিলের শাসনের সুর শুনে ইনান দুঃখের মাঝেও হেসে ফেলল। জেহফিলের গালে হাত রেখে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল,
‘আমি হিরোকে না, ভিলেনকে চাই, যে আমার জন্য সারা দুনিয়া ছারখার করে দিবে। ঠিক যেমনটা আপনি আগে ছিলেন।’
জেহফিল বাঁকা হেসে ইনানের ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল,
‘Anything and Everything for you MY PRINCESS.’
.
.
.
চলবে….......................