ঠাণ্ডা বাতাস শরীরের প্রতিটি লোমকূপে আঘাত হানতেই ইনানের হুশ ফিরে। পিটপিট করে চোখ খুলে সে। ঘোলাটে হয়ে আসা দৃষ্টি মেলতে থাকে ধীরে ধীরে। মাথাটা ভারী লাগছে অনেক। যেন দশ মণ পাথর দিয়ে কেউ তাকে চেপে ধরেছে। শরীর যেন প্যারালাইজড। মাথার নিচে তুলতুলে। মন্থর গতিতে মাথা তুলে বোঝার চেষ্টা করে অবস্থা। বাইরের বাতাস এবং বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কিছুই কানে যাচ্ছে না তার। উঠে বসল সে ঢলতে ঢলতে। অনুভব করল তার শরীর জিন্স প্যান্ট ভেজা, টপ ভেজা ছিল হয়তো। পাতলা কাপড়ের হওয়ায় শুকিয়ে গেছে। চুলের গোড়া ভেজা।
টের পেল সে তার বাবার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে। রুমের আলো কম। সেই কম আলোতেই দেখল তার বাবা ইনানকে দুহাতে আগলে রেখে বুকে জড়িয়ে কাঁদছেন।
‘বাবা, কাঁদছ কেন? কী হয়েছে?’
ফ্ল্যাশের মতো ইনানের চোখের পর্দায় ভেসে উঠল কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। ছাদে আগুন পোহানোর প্ল্যান, বনে কাঠ কাটতে যাওয়া, বৃষ্টি, শরৎ, শরৎএর ধাওয়া, বাবার কল, প্রাণপণে ছোটা, তারপর? তারপর কী?
ইনান বাবার দিকে তাকায় ঝট করে, ছটফট করতে করতে বলে,
‘শরৎ? শরৎ কোথায় বাবা? আর…আর আমি ঘরে আসলাম কীভাবে? জেহফিল, জেহফিল কোথায়?
ইফাজ খান নিজেকে সামলান। কান্না বন্ধ করে শক্ত করেন নিজেকে। কেঁদে তো লাভ নেই, যা হওয়ার হয়ে গেছে। কণ্ঠ দৃঢ় রেখে বললেন,
‘রিল্যাক্স ইনান। কোথায় যাচ্ছি না তো আমি। ধীরে ধীরে বলছি সব।’
ইনান শান্ত হয় না। তার শরীরের শক্তি ফিরে পাচ্ছে না বিধায় উঠে দাঁড়াতে পারছে না। ঘড়ির কাঁটা এখন এগারোটা বরাবর। বৃষ্টি যখন হয়েছিল, জেহফিল যে ভাঙ্গা পায়েও ছাতা হাতে তার কাছে যাবে সে ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত ছিলো। এখন জেহফিলকে সে কোথাও দেখতে পারছে না। সে বারবার জেহফিলের খোঁজ জানতে চাইছে বাবার কাছে।
‘জেহফিল কি আমাকে খোঁজা জন্য বাইরে গিয়েছিল বাবা? প্লিজ চুপ থেকো না।’
ইফাজ খান কিছুটা ইতস্তত করে জবাব দেন,
‘কী যে বলো না ইনান, জেহফিলের হাঁটতেই তো কত কষ্ট হয়, ও কীভাবে সিঁড়ি ভেঙে নিচে যাবে এই অবস্থায়? ওকে ঔষধ দিয়ে দিয়েছি আমি। এখন ঘুমাচ্ছে। তোমার কাওসার আঙ্কেল আসছে, চেকাপ করবে জেহফিলের আর তোমার। এই মাসের টাইম এসে গেছে তো।’
কথা ঘুরানোর চেষ্টা করে ইফাজ। ফোন হাতে নিয়ে কাওসারকে কল লাগান। নিজেকে ব্যস্ত দেখান যেন ইনান কোনো প্রশ্ন করতে না পারে।
কিন্তু ইনান মুখ বন্ধ রাখল না।
‘তাহলে আমাকে নিয়ে আসলো কে?’
‘সিঁড়িতে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলে, বৃষ্টির ঠাণ্ডায় আর প্যানিক অ্যাটাকে। আমি এসে তোমাকে নিয়ে এসেছি।’
‘আর শরৎ?’
কিছুক্ষণ চুপ থেকে ইফাজ খান ইনানের চোখ চোখ রেখে জোর করে হেসে বলল,
‘জেলে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
ইনানের চোখ ঝলমল করে উঠল।
‘থ্যাংকিউ সো মাচ বাবা। তুমি জানো না ও আমার লাইফটাকে হেল করে ছেড়েছে। ও যাতে বের না হতে পারে।’
‘ডোন্ট অরি। আমি ওর ফাঁ’সির ব্যবস্থা করব।’
ইনান কিছুটা নিভে, ‘এটা করা কি ঠিক হবে? একটা জীবন নিয়ে নেয়া? মৃ’ত্যু ছাড়া তো আরো কত ধরনের শাস্তি আছে। ওগুলো দাও। কিন্তু প্লিজ বাবা, এসব না। আমার জন্য কেউ প্রাণ হারাক এটা আমি চাই না।’
ইফাজ খান কিছু বললেন না। কয়েকবার শুকনো গলায় ঢোক গিললেন যে ইনান বৃষ্টির আওয়াজকে ছাপিয়েও সেই শব্দ শুনতে পায়। সে পূর্ন দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকায়। কেমন অস্বাভাবিক লাগছে তাকে। হাত কচলাচ্ছে, পা নাচাচ্ছে, এদিক ওদিক বারবার তাকাচ্ছে, মুখের আদলে বয়স্কের ছাপ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে যেন। ইনান জানে যখন তার বাবা অতিরিক্ত টেনশন করেন তখনই এমন করে। ইনানের কৌতুহল হলো। কী নিয়ে এত টেন্সড? শরৎএর বাবা পাওয়ারফুল, শরৎকে ছাড়িয়ে নিবে বলে?
‘বাবা.. আমার কথা…’
ইনানের চোখ আটকে যায় ইফাজের পরনের গেঞ্জির একটা নির্দিষ্ট অংশে। ইনান কথা থামিয়ে মনোযোগী চোখে তাকায়। ইফাজের হাতে ধরা মোবাইলের আলো তার পরিহিত গেঞ্জিতে গিয়ে পড়েছে।
ইনান খপ করে তার গেঞ্জির সাইডের অংশটা ধরে। যেখানে শুকিয়ে যাওয়া গাঢ় লাল র’ক্ত এবং কাঁদা মাটি লেগে আছে।
‘রক্ত! রক্ত কেন?’ প্রায় চিৎকার করে উঠে ইনান, ‘বাবা, তোমার কিছু হয়েছে? বলো না? এত রক্ত কেন আসলো?’
ইনান অস্থির হয়ে পড়ে, শরৎ কি তার বাবাকে মে’রেছে? নিশ্চয়ই মে’রেছে, কতটা বিবেকহীন হলে বাবার বয়সী লোকের গায়ে হাত তুলে।
ইফাজ খান থতমত খেয়ে যান। শরৎএর বডির প্রত্যেকটা অংশ সে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে ডিসচার্জ করে আসেন। চাইলে এইখানের জঙ্গলেই পুঁতে ফেলতে পারতেন। কিন্তু এই জঙ্গলে ইদানীং কাঠুরেদের উৎপাত বেড়েছে, তার যদি কোনোভাবে শরৎএর লাশ পেয়ে যায়, তাহলেই বিপদে পড়ে যাবে তারা। কারণ এই জঙ্গলের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত জেহফিলের বাড়ি ছাড়া আর কোনো বাড়ি নেই। সুতরাং সবার আগে আঙুল উঠবে এই বাড়িটার দিকেই। তাই তিনি দূরের এক গভীর জঙ্গলে শরৎকে পুঁতে দিয়ে এসেছেন। ঘরে আসার পর গায়ের জ্যাকেট খুললেও ভুলে গেছিলেন গেঞ্জির কথা। তার ধারণা ছিল জ্যাকেটেই র’ক্ত লেগেছে। গাঢ় নীল রঙেল গেঞ্জিতেও যে র’ক্ত ছিল তা তার চোখের আড়ালেই রয়ে গেল।
ইনান এবার নিজের দিকেও খেয়াল করে দেখল তার হলুদ টপেও র’ক্ত লেগে গেছে ইফাজের গেঞ্জি থেকে। রক্তের বোটকা গন্ধে ইনানের মাথা দুলে গেল। এমনিতেই সে রক্ত দেখতে পারে না।
ইফাজ খান দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে বললেন,
‘শরৎএর সাথে জাস্ট একটু মা’রামারি লেগেছে। তবে টেনশন করো না, আমার কিছুই হয়নি। তুমি তো জানো তোমার বাবা কত স্ট্রং। ওকে মে’রে কুপোপাত করেছি আমি। আর ওর গায়ে র’ক্তই আমার জামায় লেগেছে।’
‘জেহফিল জানে শরৎএর কথা?’
‘ন..নাহ, ও’কে এসব বলিনি। বলেছি তুমি কাঠ কাটতে গিয়ে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েছো, ব্যস।’
ইনান নিশ্চিন্ত হলো।
‘আচ্ছা বাবা, তাহলে আমি রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে আসছি। তুমি জেহফিলের একটা শার্ট পরে নাও।’
ইনান দূর্বল শরীরে রুমে যেতেই পা থেমে যায় তার। জেহফিল খাটে নেই। সে জেহফিল বলে ডাকবে তার আগেই তার কোমর জড়িয়ে ধরে এক জোড়া বলিষ্ঠ হাত।
ইনান না দেখেই চিনতে পারে মানুষটা কে। জেহফিলের হাতের প্রগাঢ় স্পর্শে দূর্বল শরীর আরো দূর্বল হয়ে যায় তার। ঢলে পড়তে নিলেই জেহফিল শক্ত করে চেপে ধরে নিজের কাষ্ঠ বুকের সঙ্গে।
ইনান জেহফিলের দিকে ফিরে দেখল স্নিগ্ধ হাসির রেখা জেহফিলের বাদামী ঠোঁটে। মুচকি হেসে ইনান জেহফিলের কাঁধে এক হাত রেখে মাথায় আরেক হাত রাখে। হাসি বন্ধ হয়ে যায় জেহফিলের ভেজা চুল দেখে।
‘আপনার চুল ভেজা কেন?’
জেহফিলের হাসি সরলো না,
‘গোসল করেছিলাম, গরম লাগছিল।’
‘এই ঠাণ্ডায় গরম লাগবে কেন? নাকি আমাকে বৃষ্টির মাঝে খুঁজতে বের হয়েছিলেন?’ চিন্তার সুর ইনানের কণ্ঠে।
জেহফিল জবাব না দিয়ে ইনানের গলায় মুখ গুঁজে ঘ্রাণ নেয়।
‘আমার বাটারফ্লাই…’
ইনান পুলকিত হয়, উষ্ণ শিহরণ বয়ে যায় শরীরে। জেহফিলের চুলে হাত বুলিয়ে মৃদু গলায় বলল,
‘আপনি নাকি ঘুমাচ্ছিলেন?’
‘ঔষধে কাজ করে না বাটারফ্লাই। এসব কৃত্রিম ঔষধে আমি ঠিক হবো না। আমার সুস্থ হওয়ার ঔষধ শুধুই তুমি।’
এই বলে ইনানের ক্রপ টপ গলে হাত ঢুকিয়ে পেটে বিচরণ শুরু করে। ইনান কাঁপছে। জেহফিল ক্রাচ দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে রেখেছে। ইনান ক্রাচটা না নিয়েই জেহফিলকে ধরে খাটে বসায়। এবার নিজেও জেহফিলের কোলের উপর বসে দুই পা দিয়ে জেহফিলের কোমর চেপে ধরে।
জেহফিল নেশাতুর চোখে ইনানের দিকে তাকিয়ে আছে। তার ধূসর চোখের শাণিত চাহনি এখন কোমল চোখে ইনানকে দেখছে।
জেহফিল আচনক ইনানের ঠোঁট চেপে ধরে নিজে্য ওষ্ঠাধরে। যেন কতদিনের ক্ষুধার্ত সে। দম ফেলার সুযোগ পায় না ইনান, তবে আগের মতো জেহফিলের থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টাও করল না, বরং দুই হাতে জেহফিলের ঘাড় জড়িয়ে ধরল। লম্বা সময়ের চুম্বনের পর জেহফিল ইনানের গলায় নেমে আসে। ইনানের পিঠে থাকা জেহফিলের হাত দুটো চলে আসে ইনানের পেটের কাছে। তখনই তার নজর গেল ক্রপ টপে লেগে থাকা রক্তের দিকে। চোখে ধিক করে জ্বলে উঠল আগুন। ইনান জেহফিলের দৃষ্টি বরাবর তাকালে বুঝে যায় জেহফিলের চাহনি বদলালো কেন। সে নিজেকে ব্যাখ্যা দেওয়ার মতো করে বলল,
‘আমার কিছুই হয়নি জেহফিল। ঐ শরৎএর সাথে বাবার একটা হয়েছিল বুঝলেন, ওরই রক্ত বাবার গেঞ্জিতে লেগেছিল। আর বাবা আমাকে হাগ করেছিল তা-ই আমার টপেও লেগেছে।’
জেহফিল ইনানের কথা কানে তুলল না। তার ঘাড়ের রগ ফুলে গেছে,
‘টেক ইট অফ রাইট নাউ।’ জেহফিল অগ্নি ঝড়া গলায় বলল,
‘তোমার শরীরের অন্যের রক্ত মাখা জামা কেন থাকবে? হোয়াই? আই ফাকিং হেইট ইট। তুমি ভুলে গেছ তোমার শরীর, মন যে একান্তই আমার? তোমার শরীরে রক্ত দিয়ে আমার নাম লেখাটা ভুলে গেছ? এই বাজে জামাটা তাড়াতাড়ি খুলো, হারি আপ।’
জেহফিল রাগে কাঁপছে। অ্যাক্সিডেন্টের পর এই প্রথম ইনান জেহফিলের অগ্নিমূর্তি দেখল। জেহফিলের রাগ দেখে ইনান হেসে ফেলল। তার গাল দুইহাতে চেপে ধরে দুই গালে চুমু খায় সে, যেন জেহফিল একটা বাচ্চা।
ইনান জেহফিলের চুলে বিলি কেটে বলল,
‘আপনার এই অশান্ত রূপকেই আমি ভালোবাসি জেহফিল। প্লিজ, বদলাবেন না।’
এই বলে ইনান জেহফিলের ঠোঁটে টুপ করে চুমু খেয়ে জামা কাপড় নিয়ে বাথরুমে চলে গেল। চেঞ্জ হয়ে এসে জেহফিলের কাছে চলে এলো। ইনান খাটের কাছে আসা মাত্রই জেহফিল ইনানের হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে বুকের উপর ফেলে। ইনানের চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজে ইনানের কাছাকাছি এগিয়ে যায় সে। সেই মোমেন্টেই দরজায় আওয়াজ পড়ে।
‘ইনান মামনি, জেহফিলকে নিয়ে আসো, তোমার কাওসার আঙ্কেল এসেছে।’
জেহফিল দাঁতে দাঁত চাপল।
‘কোথাও যাচ্ছ না তুমি।’
ইনান উঠে গেল জেহফিলের বুক থেকে। জামা ঠিক করে জেহফিলকে শার্ট ঠিক করে দিলো, ‘শুধু আমি যাবো না, আপনিও যাচ্ছেন সাথে।’
জেহফিল কিছু বলার আগে ইনান এক আঙ্গুল চেপে ধরল জেহফিলের ঠোঁটে,
‘শশহ, একটা কথাও না। চেকাপ না করলে পা ঠিক হবে কীভাবে? চুপচাপ বসে থাকবেন। ভদ্র ছেলের মতো। গট ইট?’
জেহফিল মুখ গোমড়া করে রইল।
ইনান দরজা খুলে দেয়। কাওসার এসে ইনান আর জেহফিল দুজনকেই ভালো করে চেকাপ করে।
‘ইনান, ঠিক মতো ঔষধ খাচ্ছো তো মা?’
‘জি আঙ্কেল।’
‘আচ্ছা, আর চাপ নিবে না বেশি, টেনশন কম করবে। আর জেহফিলকে হাঁটা চলা করিও না। ওকে বেড রেস্টেই থাকতে বলবে। যত কম হাঁটবে তত ভালো। পায়ের উপর প্রেশার কম পড়বে।’
ইনান জেহফিলের কাছে গিয়ে বসে। জেহফিল চঝখ বন্ধ করে মাথা ঠেকিয়ে আছে হেডবোর্ডে তার মুখ কঠিন। চোখ বুজে শক্ত মুখে বলল,
‘ওনাদেরকে তাড়াতাড়ি চলে যেতে বলো।’
ইফাজ আর কাওসার কিছুটা চমকে উঠেন। ইনান ইতস্ততবোধ করে। আমতা আমতা করে বলে,
‘সরি আঙ্কেল প্লিজ কিছু মনে করবেন না। ওনার শরীরটা একটু খারাপ লাগছে আজ।’
কাওসার মুচকি হেসে বললেন,
‘ইটস ওকে। বুঝতে পেরেছি।’
তারপর ইফাজকে ইশারা করে রুমের বাইরে নিলেন।
‘কী হয়েছে সবটা বল আমায়।’
‘যেতে যেতে বলব। এইখানে বললে ইনান শুনে ফেলবে।’
‘আচ্ছা। তবে.. যা বুঝলাম, পরিস্থিতি যথেষ্ট ঘোলাটে। মনে হচ্ছে না…’
ইফাজ হঠাৎ কাওসারের হাত চেপে ধরে জোল করে হেসে বললেন,
‘আরে ইনান, কিছু লাগবে?’
কাওসার ফিরে দেখেন ইনান পেছনে। ভাগ্যিস ইফাজ তাকে থামিয়েছে।
‘আঙ্কেল, বসুন না। আমি একটু আসছি।’
‘কিচ্ছু করতে হবে না ইনান। ব্যস্ত হইয়ো না। আমি এখনি চলে যাব ইফাজকে নিয়ে। আর্জেন্ট বুঝলে।’
ইনানের সাথে আরো কিছুক্ষণ ভালোমন্দ বলে কাওসার আর ইফাজ বিদায় নিলেন।
ভেজা কাপড়গুলো মেলতে ভুলে গেছিল ইনান। বাবাকে বিদায় দিয়ে দ্রুত গেল বারান্দায়। কাপড় মেলতে গিয়ে দেখল, এই বৃষ্টির মাঝেও তাজবীর বারান্দায় বসে ইনানের বারান্দার দিকে তাকিয়ে আছে। আজ রুমে পর্দা টানানো ছিল ভাগ্যিস।
আজ তাজবীর আগের দিনের তুলনায় একটু বেশিই হাসছে মনে হচ্ছে। চওড়া হেসে ইনানের দিকে তাকিয়ে আছে। তার হাতে আজ আর মোবাইল নেই। যেন বড় কোনো অর্জন হয়েছে তার, সেই খুশিতেই মেতে উঠেছে সে।
তাজবীর ইনানকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে বলল,
‘বায় বায়, গেমের ফাইনাল রাউন্ড চলে এসেছে। ইটস গনা বি ফান।’
এই বলে চোখ মেরে রুমে চলে গেল হাসতে হাসতে।
ইনান তাজবীরের কথার আগামাথাও বুঝতে পারল না। বোঝার চেষ্টাও করল না। বারান্দার দরজা আটকে দিলো ঠাস করে।
.
.
.
চলবে….....................