#চোখের_তারা_তুই
#পর্ব ১০
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া
আঁধার সকালে উঠে মেডিকেল কাজে বের হয়ে গেছে আর ফারিশ ঘুমিয়ে আছে তাই ওকে বিরক্ত করে নাই। এক ঘন্টা পর বাসের কাছে গিয়ে পৌঁছে যায় নিরব সেখানে অপেক্ষা করতে থাকে।
" স্যার আমি চলে এসেছি আসলে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেছে সরি "।
" আরে সরি বলতে হবে না তুমি সঠিক সময়ে চলে এসেছো আর আমি মনে করেছি তুমি আসবে না"।
নিরব স্যারের সাথে কথা বলে বাসে উঠে যায় একটা সিটে বসে যায় সে। পাশে একটা মেয়ে থাকে সিনিয়র আপু তার সাথে একটু কথা বলে আঁধার
" হাই আপু আমি আঁধার। তোমার নাম কি আপু?"
পাশে থাকা মেয়েটা একটু হাসি দিয়ে ওকে হাই বলে
" হাই আমার নাম দিশা। তোমার সাথে পরিচয় হলে ভালো খুশি হলাম"।
বাস নিজের রাস্তা অনুযায়ী চলতে থাকে। আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বেলা অনেক হয়ে গেছে নিশ্চয়ই ফারিশ ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। ওনি কি কফি খেয়েছে আর জরিনা থালা সব রান্না একা করতে পেরেছে ফারিশের কাজের জায়গায় দেরি হয়ে যাবে না তো।
পাশে সিটে বসে থাকা দিশা দেখে আঁধার কি নিয়ে চিন্তা করছে তাই দিশা জিজ্ঞেস করে
"কি হয়েছে আঁধার তুমি এতো চিন্তা কেনো করছো। কিছু কি হয়েছে "।
দিশা আপুর ডাক শুনে একটু নরমাল হয়। আমি কেনো ফারিশকে নিয়ে চিন্তা করব ছয়মাস পরে চলে যাবো তখন ওনি নিশ্চয়ই কফি না খাওয়া ছাড়া থাকবে না।দিশাকে একটু হাসি মুখে জবাব দেয় আঁধার
" আরে দিশা আপু কোনাে সমস্যা হয় নাই আসলে এতো দূরে যাচ্ছি তাই বাড়ির জন্য চিন্তা হচ্ছে"।
আঁধারের কথা শুনে দিশা একটু ফ্রি হয়ে ওকে জিজ্ঞেস করে
"আচ্ছা তুমি কিছু মনে না করলে একটা জিজ্ঞেস করি নিরব স্যার তোমার কে হয়। মানে স্যার আর তুমি কি রিলেশন করো"।
দিশার কথা শুনে আঁধার অনেক অবাক হয় এইসব কি বলছে। নিরব স্যারের সে রিলেশন করবে ভাবতে কেমন লাগছে আর ফারিশের সাথে এখনো ডিভোর্স হয় নাই। আঁধার বলে
" নিরব স্যারের সাথে আমি রিলেশন করব এইটা কখনো সম্ভব না। আর স্যার আমার টিচার ওনার বিষয়ে এইসব কল্পনা করি না আমি"।
আঁধারের কথা শুনে দিশা বলে
" আসলে এই মেডিকেল কাজে সব সিনিয়র মানুষ যায় তুমি জুনিয়র আর বাসে উঠার পর থেকে নিরব স্যার তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই মনে করেছি তুমি আর নিরব স্যান রিলেশন করো "।
দিশা আপুর কথা আঁধার একটু নিরব স্যারের দিকে তাকায় সত্যি স্যার তার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কেনো স্যার কেনো তার দিকে তাকিয়ে থাকবে। আঁধার বলে
" আমার মনে হয় স্যার এমনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর এই দিকে কি অনেক ছাএী আছে স্যার সবাইকে দেখছে "।
" স্যার সবাইকে দেখছে না আঁধার শুধু তোমাকে দেখছে। আর তুমি স্যারের বিষয়ে কি ফিল করো সেটা আমি জানি না কিন্তু মনে হয় স্যার তোমাকে পছন্দ করে "।
দিশা আপুর কথা শুনে আঁধার একটু টেনশন করে আসলে নিরব স্যার আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি এখন বিবাহিত স্যারকে কি এই কথা বলে দিবো কিন্তু ফারিশ বলতে নিষেধ করেছে তাহলে কি করব।আচ্ছা স্যার যদি কখনো এইসব পছন্দ কথা বলে তাহলে আমি না করে দিবো।
ফারিশ ঘুম থেকে উঠে পড়ে ফ্রেশ হয়ে আঁধারকে ডাকতে থাকে
" আঁধার আমার কফি নিয়ে আসেন। আঁধার "।
ফারিশের ডাক শুনে জরিনা কফি নিয়ে যায়। আর জরিনা বলে
"
এই নেও ফারিশ বাবা তোমার কফি "
জরিনা থালাকে দেখে ফারিশ অনেক অবাক হয়ে যায় জরিনা খালা কেনো কফি নিয়ে আসলেন। ফারিশ জিজ্ঞেস করলেন
" জরিনা খালা তুমি কফি নিয়ে আসলে যে আঁধার কোথায় ওতো সবসময় কফি নিয়ে আসে "।
" আঁধার ওতো মেডিকেল কাজে বাহিরে চলে গেছে আসতে দেরি হবে বলেছে "।
জরিনা খালার কথা শুনে মনে হলো আঁধার আজ কাজে যাওয়ার কথা। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে তাই ডাক দেয় নাই মনে হয়।ফারিশ বলে
" আচ্ছা খালা তুমি যাও আমি কফি খেয়ে নিবো "।
" ঠিক আছে ফারিশ বাবা আর কিছু লাগলে আমাকে বলবে ঠিক আছে "।
জরিনা থালা চলে গেছে ফারিশ চেয়ারে বসে কফি খাচ্ছে কিন্তু কফি আজ ভালো হয় নাই কারণ আঁধার তৈরি করে নাই। সকালে খাওয়া শেষ করে গাড়িতে উঠে বসে যায় তুলি আসে
" তুলি তুই আজ আমার সাথে বসে গেলি আঁধার এখানে বসবে "।
" ভাই আঁধার বাহিরে গেছে তুমি কি ভুলর গেলে তাই এখানে বসতে পারি "।
তুলির কথা শুনে মনে পড়ছে আঁধার নাই এখন কি হয়েছে তোর ফারিশ সব জায়গায় আঁধারকে কেনো চাই তোর। ছয়মাস পরে ও চলে যাবে সো আঁধারের কথা আর ভাবতে পারবি না তুই।
" আচ্ছা তুলি তুই মেডিকেল কাজে বাহিরে কেনো গেলি না আঁধার গিয়েছে শুধু "।
" আরে সেখানে সবার যাওয়ার অনুমতি নাই শুধু সিনিয়র মানুষ যেতে পারবে আর আঁধার গিয়েছে কারণ নিরব স্যার তাকে যেতে বলেছে। আর সেখানে নিরব স্যার আছে তাই আঁধারের কেনো সমস্যা হবে না সেখানে "।
তুলির মুখে নিরব স্যার নাম শুনে একটু রাগ হয় ফারিশের এই আঁধারের প্রতি এতো টান কেনো স্যারের। কলেজে কি অন্য ছাএী নাই আজব।
বিকাল হয়ে যায় আঁধার গাড়ি করে সেখানে পৌঁছে যায়। সবাই গাড়ি থেকে নেমে যায় নিজের রুমে চলে যায় আঁধার একটু ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে। এখন ফারিশ নিশ্চয়ই বাড়ি ফিরে আসবে কিন্তু এই টাইমে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে থাকে ওনাকে খাবার গরম করে দিবে কে।
ফারিশ বাড়ি ফিরে আসে সবাই ঘুমিয়ে আছে কিন্তু আজকে তার খিদে লাগে নাই কিন্তু কেনো সেটা জানে না। আচ্ছা আঁধার কি পৌঁছে গেছে ঠিক করে ঔষধ খেয়েছে একটা ফোন করব আচ্ছা ফোন করি।
হঠাৎ করে ফোনে ফারিশের নাম্বার দেখে খুশি হয়ে যায় আঁধার ফোন রিসিভ করে
" আপনি বাড়ি ফিরে এসেছেন এখন বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে খাবার কে গরম করে দিবে। জরিনা খালাকে বলেন খাবার দিতে আপনাকে "।
আঁধারের কথা শুনে ফারিশ একটু হাসে মেয়েটা এখনো তার টেনশন করছে। ফারিশ একটু হেসে উত্তর দেয়
" টেনশন করবেন না আঁধার আমার খিদে লাগে নাই আর জরিনা খালা আছে তাকে ডেকে নিবো। আচ্ছা আপনি মেডিসিন নিয়েছেন আর ঠিক করে খাবার খাবেন"।
" আপনার আমাকে নিয়ে টেনশন হচ্ছে আমাকে মিস করছেন সত্যি করে বলুন "।
ফারিশ কিছু বলতে যাবে তখন আঁধারের ফোনে একটা পুরুষের কণ্ঠ আসে।
চলবে......................