অভ্র নীল
পর্ব ০৪
শারমিন আক্তার বর্ষা
.
.
.
' অপেক্ষা সত্যিকারের ভালোবাসার নিদর্শন! অনেকেই ভালোবাসতে জানে, কিন্তু অপেক্ষা করে ভালোবাসা প্রমাণ করতে জানে না। প্রয়োজনে আমি চিরকাল তোমার ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করব। আমি বিশ্বাস করি একদিন তুমি আমাকে ভালোবাসবে।' অভ্র নীলকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলে, নীল নির্বাক ঘর থেকে বের হয়ে গেল। অভ্র তাকিয়ে দেখল সে চলে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর রুমে খাবার নিয়ে এলো নীল। টি-টেবিলের উপর রেখে বলল, ' আসছেন অনেকক্ষণ, এখন একটু খেয়ে নিন।'
অভ্র বলল, ' আজ এত মায়া?'
'খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই, মায়ের জন্য করছি। তিনি যদি জানেন যে আপনি রাতে না খেয়ে ঘুমিয়েছেন, তবে কষ্ট পাবেন।'
অভ্র কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল, তারপর বলল, 'মা কষ্ট পাবে, বুঝলে, আমার যে কষ্ট হয়, তুমি কি দেখছ না?'
অভ্র বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। ব্লেজারটা পরে নিয়ে বলল, ' আজকের রাতটা আকাশ আর শুভর সঙ্গেই কাটাবো। তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।'
নীল বলল, 'এখন অনেক রাত, প্লিজ যাবেন না।'
অবাক চোখে তাকিয়ে রইল অভ্র। তারপর বলল,
' যাচ্ছি না।'
সকাল দিকে অভ্রর কাজিন বোনেরা বাড়ি আসলো। ওদের আনন্দ উল্লাসে বাড়িটা যেন হঠাৎই জেগে উঠেছে। সবাই একসাথে বসে আড্ডা গল্পে মজে গেছে। নীল ওদের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি মিলেমিশে গেল। নীল রুমে এলো।
অভ্র বলল, ' আজ কলেজ যাবে না? এখনো রেডি হওনি যে।'
নীল ক্ষীণ স্বরে বলল,
' একটা কথা বলব।'
' হ্যাঁ বলো।'
' আজ কাজলের বিয়ে, তেমন কোনো বড়ো অনুষ্ঠান হবে না। ঘরোয়া ভাবে ছোট্ট একটা আয়োজন করা হবে। আমি কি যাব?'
অভ্র কিছুক্ষণ ভাবলো। বলল,
' বিকেলে তৈরি হয়ে থেকো আমি এসে নিয়ে যাব।'
নীল খুশি হয়ে মুচকি হাসল।
একটা ছেলের সঙ্গে কাজলের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ছিল। বাড়িতে ওঁর বাবা যখন জানতে পারেন তখন কাজলকে চড় মারেন এবং তার কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। মধ্যবিত্ত মানুষ, মান সম্মান হারানোর ভয় তাদের প্রচুর। তন্ময় একদিন কাজলের বাবার সঙ্গে দেখা করে। সরকারি চাকরি তার, দেখতে শুনতে ভালো বৈকি বিয়েতে রাজি হন কাজলের বাবা। তন্ময় খুব সাধারণ ভাবে বিয়েটা করতে চায়, কারণ ওঁর হবু শ্বশুরের বিশাল আয়োজন করার সামর্থ্য নেই। কথাটা ঘুরিয়ে সে নিজের ওপর নিল। শুধু কয়েকজন বরপক্ষ আসবে আর বউ উঠিয়ে নিয়ে যাবে।
সন্ধ্যের দিকে দু'জনকে হলুদ দিতে শুরু করে। এরপর রুমের মধ্যে পাশাপাশি বসিয়ে বিয়েটা সম্পূর্ণ করেন। বাড়ির ছোটো সদস্যরা এককোনায় বসে হাতে মেহেদী দিচ্ছে। ওঁরা ছোটো বলে বিয়ে নামক সম্পর্কটার মূল্য বোঝে না। নিজেদের মধ্যে আনন্দ করছে। অভ্র নীলের দিকে এগিয়ে গেল। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল, ' ওদিকে বাচ্চারা মেহেদী দিচ্ছে। তুমি দিবা?'
নীল বলল,
' আমার বিয়ের মেহেদীর রং এখনো যায়নি।'
' শুনেছি, কনের হাতে মেহেদীর রং যত গাঢ় হয়৷ বর তো ভালোবাসে। তোমার হাতে মেহেদীর রং তো বেশ গাঢ়।'
' ওসব আজেবাজে কথা।'
' আজেবাজে কেন? আমার ভালোবাসায় তুমি কোনো কমতি দেখেছ?'
' আমি তর্ক করতে চাচ্ছি না।'
রাত বেশি হওয়ার আগে বাড়ি ফিরে এলো ওঁরা। আছিয়া চৌধুরী ড্রয়িংরুমে বসে আছেন। ছেলে ও বউকে দেখে উনি কাজের ছেলেটাকে ডেকে খাবার গরম করতে বললেন।
অভ্র বলল, ' আমরা খেয়ে আসছি মা। ওসব ছাড়ো, এখন বলো, তুমি এখনো ঘুমাওনি কেন?'
' তোদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।'
' এখন যাও। ঘুমাও।'
আছিয়া চৌধুরী অভ্রর ঘরটার সেটিং চেঞ্জ করেছেন। সোফা ছিল সেটা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অভ্র বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল। নীল বলল, ' এখানে শুয়েছেন কেন? সোফায় যান।'
অভ্র বলল, ' সোফা নেই। নাই।'
অভ্র উঠে দাঁড়াল। নীল বিছানায় শুয়ে চোখ বুজলো। অভ্র নিচে শুবে না এজন্য বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে থাকল। বেশ কিছুক্ষণ পর নীলের ঘুম ভাঙলো, সে ঘুম থেকে উঠে অভ্রকে কোথাও দেখল না। বারান্দায় এসে অভ্রকে বলল, ' বাহিরে তো ঠাণ্ডা আপনি বারান্দায় কি করছেন ভেতরে আসুন।'
অভ্র রুমে এলো। বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখল, বিছানার মাঝখানে একটি কোলবালিশ, কোন সন্দেহ নেই
নীল তার ঘুমানোর জন্য আলাদা জায়গা করে দিয়েছে। বিয়ের একমাস পূর্ণ হলো, বোধহয় একটু একটু করে সন্ধি হচ্ছে। অভ্র শুয়ে পড়ল। কোলবালিশর দিকে ইশারা করে বলল, ' এটাকে মাঝখান থেকে সরিয়ে ফেললে হয় না?'
নীল বলল, ' না।'
অভ্র হুট করে বলল, ' নীল।'
' জি।'
' ঘুমাওনি?'
' না। কেনো?'
' তোমাকে একটা প্রশ্ন করি, সত্য বলবে কিন্তু?'
' কি প্রশ্ন?'
' এই একমাসে তোমার মনে কী আমার জন্য একটুও ভালোবাসা তৈরী হয়নি?'
নীল জবাব দিল না। অভ্র বলল,
' কাউকে ভালোবাসো? তার জন্যই কি আমাকে গ্রহণ করতে পারছ না?'
নীল নিশ্চুপ। অভ্র ঘুমানোর চেষ্টা করল।
আছিয়া চৌধুরী রান্নাঘরে খাবার তৈরি করছেন। নীল আর তোয়া এসে একসাথে দাঁড়াল। তোয়া বলল, 'কি করছ মা? দারুণ গন্ধ।'
' স্ন্যাকস তৈরি করছি। তোরা গিয়ে বোস। আমি ভাজা শেষে নিয়ে আসছি।'
এ সময় কলিংবেল বেজে উঠে আছিয়া চিন্তিত কণ্ঠে বললেন, ' এত সকালে কে এলো? রহিমা দরজা খুলে এসো।'
আকাশ আর শুভ আসছে। সেই অভ্রর বিয়ের দিন গেল ওঁরা তারপর আর এমুখো হয়নি দুজন। অফিসে কাজের চাপ, আজ একটু সময় পেয়েছে আর এসে গেছে। অভ্র অফিস যাওয়ার জন্য একেবারে তৈরি হয়েই নিচে নামে। ওদের দেখে চমকে যায়। আকাশ বলল, ' জলদি আয়তো একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার আছে।'
' কি কথা?'
' শুনলাম তুই আবার আমেরিকা যাচ্ছিস?'
' হ্যাঁ। শুক্রবার আমার ফ্লাইট।'
' কিছুদিন পর গেলে হয় না?'
' কেনো?'
শুভ বলল,
' আমরা যে লুকিয়ে বিয়ে করে ফেলেছি। সেটা বাড়িতে জানাজানি হয়ে গেছে। বাবা-মা খুব ক্ষেপে আছেন। উনারা চাচ্ছেন আমাকে ঘর থেকে বের করে দিবেন। তুই আমার হয়ে একটু তাদের বুঝাবি প্লিজ।'
' বিয়ে? কাকে? আর কবে?'
' তুই যেদিন করেছিস সেদিন।'
অভ্র বলল,
' আমাকে আগে কেন বলিসনি? তাছাড়া এই ব্যাপারটা তো আকাশ নিজেও সল্ভ করতে পারে। ওঁকে নিয়ে গেলেই তো হতো।'
শুভ ইতস্তত করে বলল,
' ওঁর প্রবলেম আমার থেকেও ডাবল।'
অভ্র ভ্রুকুটি করল। বলল,
' মানে?'
' ওঁর বউ প্রেগন্যান্ট।' এক নিঃশ্বাসে বলল শুভ।
অভ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রুদ্ধ নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ' তোর আগে আমি বিয়ে করছি। আর তুই আমার আগে বাবা হবি?'
অভ্র পুরো ঘটনা শুনেছে আকাশ আর শুভর কাছ থেকে। আকাশ ও তানজুমের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই অনেক দিন আগে শখ করে বিয়ে করে ফেলে ওঁরা। তাদের বিয়ের সাক্ষী তানিয়া, কাজল ও শুভ। আর অভ্রর বিয়ের দিন রাতেই বিয়ে করে তানিয়া ও শুভ। কয়েক বছর পর পারিবারিক ভাবে বিয়ে করতে চেয়েছিল শুভ। তার আগেই বাড়িতে জানাজানি হয়ে গেল। তানজুম প্রেগন্যান্ট এটাও ছিল আকাশের কাছে ভূমিধসের মতো।
অভ্র থেমে গেল, অনেকক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল,
' ঠিক আছে। আমি সব ম্যানেজ করছি।'
আজ বুধবার। অভ্রর সহযোগিতায় ওঁর বন্ধুদের বিয়ে সম্পূর্ণ হল। অফিস থেকে অতি জরুরি কাজের জন্য আজ রাতের ফ্লাইটে অভ্রকে লন্ডন যেতে হবে। আইএস কোম্পানির সিইওর সঙ্গে মিটিং আছে। এই মিটিংটা সুন্দর মতো হলে ওদের কোম্পানি বিশাল লাভ পাবে। অভ্র বাড়ি এসে মা আর বাবাকে জানালো। আছিয়া চৌধুরী বললেন, ' একা যাবি কেন নীলকে সঙ্গে নিয়ে যা। তাছাড়া বিয়ের পর তো তোরা কোথাও ঘুরতে যেতেও পারিসনি।'
অভ্র নীলের দিকে তাকিয়ে। নীল বলল,
' না, না। আমি যাব না।'
' কেনো মা?'
' আমার ফ্লাইটে ভয় লাগে মা।'
নীল স্বস্তি ফিরে পেল। অভ্র চলে গেলে ওঁর দিনগুলো ভালো কাটবে। রোজ রোজ ওঁকে দেখতে হবে না। অভ্র লাগেজ গুছিয়ে নিল। নীলের থেকে ওঁর ফোন চেয়ে বলল, ' তোমার ফোনটা দাও।'
' কেনো?'
' বলছি দাও।'
অভ্র নীলের নাম্বার ওঁর ফোনে সেভ করে নিল। এরপর বলল, ' আমি পৌঁছে তোমাকে কল করব। আর তোমার যদি আমাকে মনে পরে তুমিও মাঝেমধ্যে আমাকে কল দিও।'
নীল বলল,
' আমার মনে পরবে না।'
অভ্রর সঙ্গে এয়ারপোর্ট যাচ্ছেন ওঁর বাবা।
রাত গভীর হতে লাগল। নীল চুলগুলো হাত খোঁপা করে নিল। ফাঁকা রুমটায় একপলক, দু'পলক তাকিয়ে রুম ত্যাগ করল। হাঁসপাঁস লাগছে। বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে শূন্য আকাশটা দেখতে লাগল। আর বারবার হাতের ফোনে সময় দেখে নেয়। নিজের অজান্তেই অভ্রর কলের অপেক্ষা করছে নীল। লোকটা বলে গেছে পৌঁছেই প্রথম তাঁকে কল দিবে।
সকাল ন'টা। আজ থেকে নীলকে কলেজ পৌঁছে দিবে ড্রাইভার এবং সময় হলে উনিই নিয়ে আসবেন। ক্লাসে বসেও মনটা উসখুস করছে। ছুটির পর গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে রইল। অভ্র তাকে কলেজ নামিয়ে দিত এটা যেন ওঁর অভ্যেস হয়ে গেছে। ড্রাইভারকে দেখলে কান্না পাচ্ছে। নীল ওঁর বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টা শেয়ার করে, তাঁরা বলেছে অভ্রকে কল করার জন্য। অথচ ওদেশের নাম্বার তাঁর কাছে নেই। তাছাড়া সে তো এখনো সেদেশে গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি। ২৪ঘণ্টার পথ এখনো ১২টা বাকি আছে।
অভ্র চলে যাওয়ার পর আজ দু'দিন। নীলের মন খারাপ। সে ওখানে পৌঁছে কাউকে কল করেনি। এজন্য আরও খারাপ। রাজীব চৌধুরী পুত্রবধূকে বললেন, ' শোন বউমা, কয়েকদিনের জন্য বাবা-মায়ের কাছ থেকে ঘুরে আসো। মন ভালো হয়ে যাবে।'
নীল যাবে না। ওখানে গেলে আরও একা লাগবে।
পাহাড় এলাকায় রাজীব চৌধুরীর একটা বাড়ি আছে। রাজীব চৌধুরী সেখানে মাঝেমধ্যে গিয়ে সময় কাটাতেন। প্রায় দুই বছর যাওয়া হয় না। স্ত্রী ও পুত্রবধূর মন খারাপ দেখে তিনি ভাবলেন সেখানে পরিবার নিয়ে ঘুরেফিরে আসবেন। একজন তত্ত্বাবধায়ক বাড়ির যত্ন নেয়। তাকে কল দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিলেন।
বিকেল নামার আগেই পৌঁছে যান৷ গাড়ি থেকে নামল নীল। হাঁটতে হাঁটতে জায়গাটা দেখে নিল। ঘন জঙ্গলের বুক চিরে মসৃণ রাস্তা, দু'ধারে বড়বড় গাছ ও উঁচু পাহাড়। রাস্তায় দাঁড়িয়েই বনের ভেতরকার হরিণ দেখতে পেল নীল। বাড়ির সামনেই কয়েকটি ময়ূর দাঁড়িয়ে আছে। তোয়া উচ্চকণ্ঠে বলল, ' দেখ ভাবী ময়ূর।'
' সুন্দর। তোমাদের?'
' হ্যাঁ।'
দুজনে দরজার দিকে এগিয়ে গেল। অনেক দূরের ভ্রমণ। সবাই ক্লান্ত! আজকে বিশ্রাম নিবে এবং আগামীকাল ঘুরতে বেরিয়ে পড়বে।
চারিদিক থেকে পাখির কিচিরমিচির শব্দে খুব ভোরে ঘুম ভাঙে। সকালের নাস্তার পরপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সবাই একসাথে ঘুরে বেড়ায়। এখানে আসার পর নীলের মুখে উজ্জ্বলতা ফুটে উঠেছে। সবাই হেঁটে হেঁটে পাহাড়ের কাছে যাচ্ছে। তারপর সবাই উঁচু পাহাড়ে উঠল। এখান থেকে পুরো জায়গাটা পরিষ্কার দেখা যায়। অনেক সুন্দর জায়গা। পাহাড়ের চূড়া থেকে একটা নদী দেখা যায়, সেখানকার পানি খুবই সুন্দর।
নীল বলল, ' আমি ওই নদীর ধারে যাব।'
রাজীব চৌধুরী বললেন, ' সেখানে যাওয়া নিষেধ। ওই পানিতে কুমির আছে।'
নীল বলল, ' এত সুন্দর পানিতে কুমির? অবিশ্বাস্য!'
দুদিন পুরো বাগান পরিদর্শন করে সবাই আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
হঠাৎ বেল বাজতেই দরজা খুলে দিল অভ্র। অভ্রকে ফিরে আসতে দেখে খুশি হন আছিয়া চৌধুরী। নীল হতভম্ব হয়ে গেল এবং তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। অভ্র জানে না গত ছয় দিনে নীল তাকে কতটা মিস করেছে। অভ্রকে হঠাৎ সামনে দেখবে নীল কল্পনা করেনি।
বিয়ের প্রায় দেড় মাস হতে চলল। এতদিনে অভ্রর পছন্দ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা হয়েছে নীলের। অভ্র বাবার সাথে রুমে গেল। শাশুড়ির অনুমতি নিয়ে নীল আজ তার প্রিয় খাবার রান্না করতে লাগল। সব ধরনের রান্না শেষ করতে দুপুর হয়ে যায়। টেবিলে খাবার গুছিয়ে দিয়ে নীল গোসল করতে রুমে যায়। ফিরে এসে দেখল সবাই খেতে বসেছে। অভ্রর পাশে অচেনা মেয়েকে দেখে নীল থমকে গেল। অভ্র সকলের সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় করিয়ে দিল। মেয়েটি তাঁর ছোটো বেলার হারিয়ে ফেলা বন্ধু। নীল হাসতে পারল না।
অভ্র খাবার খেতে খেতে বলল, ' উম্ম, মা, রান্নাটা দারুণ হয়েছে। অনেকদিন পর বাড়ির রান্না খাচ্ছি।'
আছিয়া চৌধুরী বললেন, ' আজ সব রান্না নীল করেছে।'
অভ্র চমকে তাকাল। এক চিলতে হাসি উপহার দিয়ে বলল, ' বেশ ভালো হয়েছে।'
'এটা খাও,' মাছের তরকারিটা অভ্র পাতার হাতে দিয়ে বলল মারিয়া। অনেক মজা হয়েছে।'
অভ্রর নাকেমুখে উঠল। সে কাশি দিতে লাগল। মারিয়া এক গ্লাস পানি অভ্রর দিকে দিয়ে বলল, ' জলদি পানি খাও।'
অভ্রর সাথে মারিয়ার বাড়াবাড়ি পছন্দ করছে না নীল। সে ঠোঁট কামড়ে দাঁড়িয়ে রইল।
.
.
.
চলবে..........................