#চোখের_তারা_তুই
#লেখিকাঃতাইয়েবা_বিন_কেয়া
#পর্ব :২৪ (শেষ পর্ব).
" সবাই দেখুক তাতে কি হয়েছে আমার বউয়ের সমস্যা হবে আমি আসবো না। আর কাল রাতে পরিচয় চেয়েছেন না আপনি এখন পরিচয় দিচ্ছি "।
আঁধার অবাক হয়ে গেছে ফারিশ ওর জুতার ফিতে ঠিক করে স্টেজ উঠে যায়। আঁধার সবার রিয়েকশন দেখে মনে হচ্ছে কোন কারণে যে কালকে রাতে এইসব বলতে গেছে কে জানে "।
সবাই বক্তব্য কি দিবে দলের লোকেরা ফারিশকে জিজ্ঞেস করে।
" এমপি স্যার মেয়েটা কে হয় আপনার "।
" আমার ওয়াইফ"।
সবাই অবাক হয়ে যায় ফারিশ ফারহান চৌধুরী কখন বিয়ে করছে আর সে তার বউয়ের জুতার ফিতে বেঁধে দিচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষ হয় আঁধার বাড়ি ফিরে যায় ফারিশ দলের লোকদের সাথে গাড়িতে উঠে পড়ে সবাই এক গাড়িতে যাবে সো বড়ো গাড়ি ঠিক করা হয়েছে। ফারিশ একটু আঁধারের শরীরের কথা জানতে চাই তাই ওকে কল দেয়।
" হ্যালো ফারিশ বলেন "।
" আপনি কি বাসায় চলে গেছেন "।
" হুম চলে এসেছি কিন্তু আপনি কখন আসবেন "।
" আমার আসতে একটু দেরি হবে শুনুন খাবার খাওয়ার আগে চলে আসবো। আর পাকামো করে হাত দিয়ে খেতে যাবেন না ব্যাথা পাবেন আমি এসে খায়িয়ে দিবো আর চুল নিজে ঠিক করবেন না আমি এসে বেনি করে দিবো। ঠিক আছে "।
" হুম ঠিক আছে "।
গাড়িতে শুধু ফারিশ ছিলো না দলের সবাই ছিলো সবাই রীতিমতো অবাক মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলছে। এই রাগী এমপি ফারিশ ফারহান চৌধুরী নিজের বউয়ের চুলের বেনি করবে তাকে খায়িয়ে দিবে ভাবা যায়।
সময় চলে যায় আঁধার আর ফারিশের দিন খুব ভালো কাটে কিন্তু নির্বাচন কালকে। ফারিশ বাড়ি ফিরে আসে
" কি হলো পড়াশোনা শেষ চলেন খাবার খেয়ে নেয় "।
" হুম অনেক খিদে পেয়েছে "।
আঁধার নিচ থেকে খাবার নিয়ে আসে কিন্তু সে খেতে যাবে ফারিশ তার হাত ধরে ফেলে।
" কি হয়েছে খাবার খেতে দেন "।
" না আমার বউ এতো কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে রান্না করেছে তাই ওকে নিজ হাতে খায়িয়ে দিতে হবে। আসলে আমার বউ অনেক বাচ্চা তো তাই "।
" নির্বাচনের সময় অনেক এমপি তার বউয়ের খেয়াল রাখতে পারে না কিন্তু আপনি একদম আলাদা। আপনি বেস্ট ফারিশ "।
" আই লাভ ইউ আঁধার "।
" আই লাভ ইউ টু এমপি সাহেব"।
রাতে ঘুমিয়ে পড়ে রানেল শুধু সকালের অপেক্ষা করে কারণ রাতে যা করার সে করেছে সব ভোট টাকা দিয়ে কিনেছে। এতো টাকা দিয়েছে সবাই ভোট দিতে বাধ্য হবে।
সকাল হয়ে যায় ভোট শুরু হয় ফারিশ আর রানেল দুইজনে সেখানে দাঁড়িয়ে কিন্তু হঠাৎ পুলিশ এসে রানেলকে এরেস্ট করেছে।
রানেল বলে
" আরে কি হচ্ছে এইসব পুলিশ কোনো আমাকে এরেস্ট করছে। কি করেছি আমি "।
পুলিশ বলে
" আপনি সবার কাছে টাকা দিয়েছেন যাতে সবাই ফারিশ ফারহান চৌধুরীকে ভোট দেয় "।
রানেল অবাক হয়ে যায় সে টাকা দিয়েছে কিন্তু সেটা পুলিশ কি করে জানলো আর ফারিশের নামে টাকা দিয়েছে মানে। তখন ফারিশ ওর কাছে
" আমার প্রিয় রানেল রাজনীতি তোকে দিয়ে হবে না রে। তুই কালকে সবাইকে টাকা দিয়ে ভোট কিনে নিবি চিন্তা করলি কিন্তু আমি কি করেছি তোর লোকে কিনে নিয়েছি। সেখানে সবাই যানে তুই না বরং ফারিশ ফারহান চৌধুরী সবাইকে টাকা দিয়েছে কিন্তু তোকে জেলে পাঠানো দরকার ছিলো তাই আমি লোক দিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছি। পরে পুলিশ আমাকে ফোন করে
" হ্যালো এমপি স্যার আপনি কি জানেন আপনার ফুপাতে ভাই রানেল টাকা দিয়ে ভোট কিনছে "।
" কি সত্যি ও এইসব করছে "।
" হুম এইসব করছে। আমাদের ওকে এরেস্ট করা দরকার"।
" দেখেন অন্যায় করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। আপনারা ওকে শাস্তি দেন "।
ফারিশ এখন হেসে রানেলকে বলে
"- এইটা হলো আসল খেলা। এখন সবাইকে টাকা দিয়ে ভোট কিনে নেওযার অপরাধে তোকে জেলে যেতে হবে আর এমপি নিজে তার লোকে ধরিয়ে দিয়েছে তাই তাকে সবাই পছন্দ করবে। আর ভোটের জন্য কালকে টাকা যা দিয়েছিলি ফেল করার কোনো চান্স নাই। একে বলে সাপ মরলো ও লাঠি ভাঙলো না "।
আঁধার একটা ডায়েরি নিয়ে বড় আব্বুর রুমে ঢুকে।
" আব্বু রুমে আসতে পারি "।
নিলয় চৌধুরী হঠাৎ কারো মুখে আব্বু ডাক শুনে অবাক হয়ে যায় আঁধার তাকে আববু ডাকছে। নিলয় বলে
" ভিতরে আয় কিছু কি বলবি "।
আঁধার গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে আর কান্না করে বলে
"- সরি আব্বু ছোটবেলা থেকে তোমাকে ভুল বুঝার জন্য আমারা যেই বাসায় ভাড়া থাকতাম সেখানে গিয়েছি অনেক কষ্ট করে এই ডায়েরি খুঁজে পেয়েছি। এখানে মা লিখে গিয়েছে আসলে সব কিছু ফুপি করেছে সে তোমার আর মায়ের মধ্যে অন্য একটা মহিলাকে নিয়ে এসেছে। যার কারণে মা তোমাকে ভুল বুঝতে বাধ্য হয়েছে মা মারা যাওয়ার আগে সব ডায়েরি লিখে গিয়েছে "।
নিলয় খুশি হয়ে ওর মেয়েকে জড়িয়ে ধরে
" তুই আর তোর মা সবসময় আমার খুব কাছের। তোর মুখ থেকে আব্বু ডাক শুনে সব রাগ শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি চাই তুই আর ফারিশ সুখে সংসার করবি "।
" হুম ফারিশ খুব ভালো মানুষ ওনাকে আমি অনেক ভালোবাসি "।
" একটা কথা মনে রাখবি আমার আর তোর মায়ের চোখের তারায় তুই থাকবি
সমাপ্ত....................