নম্রতা আলমারি গোছাচ্ছে। সভ্যতা ঘরে ফেরামাত্র তাকে নম্রতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো। নম্রতা পার্সেল নিয়ে নানা কথা বলার চেষ্টা করছে, খানিকটা রাগও দেখাচ্ছে। সভ্যতা সেসবের তোয়াক্কা না করে রাগান্বিত ভাব নিয়ে বলল,
'আমি কি যেচে গিয়ে প্যাকেট নিয়ে এসেছি? পার্সেল এসেছে, তাও বাড়িতে। আমি তো জানতাম-ও না কে পাঠিয়েছে। শুধু শুধু আমাকে বকছিস। বকতে হলে ওনাকে বক, বকা দিতে দিতে এমন হাল করে ফ্যাল যাতে এমন ছ্যাঁচড়ামি আর না করে। ভালোবেসে সব ছ্যাঁচড়া হয়ে গেছে। অসহ্য!'
নম্রতা চুপ হয়ে গেল। সভ্যতা সহজে রাগে না। বিশেষ করে নম্রতার সামনে। তাই নরমসুরে বলল,'ওনাকে কেন মানা করিস না?'
'আমি কেন মানা করবো? তোকে মানা করেছিলাম, আরীব ভাইকে ভালোবাসতে? তাহলে মাহিন ভাইকে কেন মানা করবো? যার যাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করবে, তাকে ভালোবাসবে। আমার কি? এসব ভালোবাসার চক্করে পড়ে তোর মতো কান্নাকাটি করার প্লান নেই আমার। তাই যার ঝামেলা সে মেটাও।'
বলতে বলতেই থ্রি-পিচ নিয়ে বাথরুমের দিকে অগ্রসর হলো সভ্যতা। কন্ঠে মিষ্টি গানের সুর,
"সখি ভাবনা কাহারে বলে,
সখি যাতনা কাহারে বলে,
তোমরা যে বলো দিবস রজনী,
ভালোবাসা, ভালোবাসা।
সখি ভালোবাসা কারে কয়.."
নম্রতা মুগ্ধ হয়ে সভ্যতার গান শোনে।মেয়েটার চমৎকার গলা। কিন্তু স্বভাবটা একটু তেতো হয়ে গেছে। বড় বোনকে মান্যই করেনা। এখন নম্রতার নিজেকেই ছোট মনে হয় সভ্যতার সামনে। কথায় কথায় ওর সেই ছোট্ট পিহু ওকে শাসন করতে চলে আসে। মেয়েটা এত বড় হয়ে গেল কবে?
.
.
বিছানার ওপর বালিশে হেলান দিয়ে বসে মাহিনের কথা ভাবছে নম্রতা। গত দু-বছর ধরে মানুষটা ভালোবাসা প্রকাশ করছে। বুঝতেই চাচ্ছে না নম্রতার এখন ভালোবাসতে ভয় করে। সে হয়তো ভয়টা কাটিয়ে তুলতে পারবে না, আবার হয়তো পারবে, কিন্তু সময় লাগবে।
নম্রতা কতবার মাহিনকে রিজেক্ট করেছে তারও কোনো হিসেব নেই। আস্তে আস্তে নম্রতা পুরোনো ভুলের পথে পা বাড়াবে আশঙ্কাটা নেহাত-ই তুচ্ছ নয়। একবারের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি। আবারও একই ভুল করলে নিজেকে সামলাবে কি করে? এসব ভেবেই বিয়ে, প্রেম, ভালোবাসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সে। কিন্তু মাহিন কিছুতেই পিঁছু ছাড়ছে না। সভ্যতা চাইলে মাহিনকে আটকাতে পারত কিন্তু সে এমন কিছু করবে না বুঝতে পারছে নম্রতা।
এর পরিণতি কি হবে শেষে? মাহিনের পাগলামিতে সায় দিতে হবে না তো? ভাবলেই শিউরে উঠছে। সে অপেক্ষা করতে থাকে সভ্যতার জন্য। সভ্যতা আসলে বিষয়টি নিয়ে গুরুতর আলাপ করতে হবে। সভ্যতা শাওয়ার নিয়ে ফিরে আসলে তাকে সামনে বসিয়ে নম্রতা কঠিনস্বরে প্রশ্ন করে,
'কি প্লান করছিস? একদম সত্যি কথা বলবি।'
সভ্যতা ফোনে চোখ রেখে বলল,'আমি ভালো মানুষ খুজছি। তোরা তো বিয়েশাদী করবি না। তোদের জন্য আমার আব্বু আম্মু নাতি-নাতনির সুখ থেকে বঞ্চিত হবে। এটা কি করে মেনে নেই? তাই তোদের জন্য, শুধুমাত্র তোদের জন্য স্যাক্রিফাইজ করার কথা ভাবছি। বাধ্য হয়ে একটা ছোকরাকে ধরে তার গলায় মুক্তোর মালা হয়ে ঝুলে পড়বো। আপাততো এটাই আমার প্লান।'
নম্রতা বিরক্ত চেহারায় বলল, 'মাহিনের কথা শুনতে চাচ্ছি।'
সভ্যতা অবাক হবার ভান করে,'কে মাহিন?কোন মাহিন? তুই ছেলেদের কথা আমার কাছ থেকে জানতে চাচ্ছিস? তোর মনে হয় আমি ছেলেদের খোঁজ রেখে বেড়াই? বিশেষ করে ওইসব ছ্যাঁচড়াদের।'
'আহ্ পিহু।উনি আমারও বড়।রেসপেক্ট দিয়ে কথা বল।'
'বড় বলে ছ্যাঁচড়াকে ছ্যাঁচড়া বলা যাবে না? আশ্চর্য! সত্য বলতে দ্বিধা কি? তোর মনে হয় না উনি ছ্যাঁচড়া? দুই বছর ধরে পেছনে পড়ে আছে, ভালো মানুষ হলে কেউ এমন করে? এসব ভালোবাসা নাকি ছ্যাঁচড়ামি? ভালোবাসার সংজ্ঞা কি বলতো। তোর ওই প্রতারিত হওয়া নাকি মাহিন ভাইয়ার রিজেকশন? আই মাস্ট সে আপু লাভ ইজ অ্যা ইরিটেটিং থিং। অ্যানোয়িং থট, নাথিং লেস অর মোর।'
সভ্যতা কথাগুলো বলে চলে গেল। নম্রতা বসে থেকেই বলল, 'ভালোবাসা সুন্দর পিহু। আমার জন্য তুই এমন হয়ে গেলি কেন?কতটা শক্ত হয়েছিস তা বুঝতে পারছিস? আমি তো চাইনি তুই এমন হ। পরিবারের সঙ্গে, বাইরের সবার সঙ্গে তোর এমন রুক্ষ আচরণ.. সব দো'ষ আমার। সবকিছু আমার জন্য হয়েছে। আ'ম সরি পিহু। আ'ম রিয়েলি সরি।'
সভ্যতা ফেরত আসে এয়ারফোন নিতে।নম্রতাকে চোখের পানি ছেড়ে, বিলাপ বকতে দেখে ভ্রুঁ কুচকে বলে, 'ইউ আর যাস্ট.. স্টপ ক্রাইং লাইক অ্যা বেবি আপু। সবসময় এমন ফ্যাচফ্যাচ করে কান্নাকাটি করিস কেন? আশ্চর্য!'
নম্রতা বলল, 'আমার পক্ষে আবার ভালোবাসা সম্ভব না পিহু। বোঝার চেষ্টা কর।'
সভ্যতা বিরক্তি নিয়ে বলল,'আমার বোঝা লাগবে কেন? আমি বুঝে কি করবো? যাকে বোঝানোর প্রয়োজন তাকে বোঝাও।'
'মাহিনকে তুই সামলাতে পারবি, আমি না। আমি বললে ও শুনবে না।'
'সামলাতে পারব? ওয়েট তোকে প্রমাণ দিচ্ছি যে আমি মাহিন ভাইকে তোর পেছনে লাগাইনি।'
সভ্যতা মাহিনকে ফোন করল। নম্রতা চুপচাপ বসে আছে। মাহিন ফোন রিসিভ করতেই সভ্যতা ঝটপট বলে ওঠে,
'আই লাভ ইউ মাহিন। ফরগেট দ্যাট অ্যানোয়িং কুহু অ্যান্ড ম্যারি মি। প্লিজ...'
মাহিন গম্ভীর গলায় বলল, 'কি বললি?'
'বাংলায় বলতে হবে? ইংরেজি বোঝেন না?'
'না। বাংলায় বল।'
'বিয়ে করুন আমাকে। কুহুর কথা ভুলে যান। এমনিতে ও বিয়েশাদী করবে না, করলেও সংসার করবে কিনা ঠিক নেই। ওর থেকে আমাকে বিয়ে করা বেশ লাভজনক। তাছাড়া আমি সংসার করতে বেশ আগ্রহী।'
'পরশু নদীর পারে আয়।দেখা করে, জানাচ্ছি।'
সভ্যতা নম্রতার চেহারায় দৃষ্টি বুলিয়ে বলল, 'দেখা করে কেন শুনবো? আমি এখন জানতে চাই। আমাকে তো ভালো করেই জানেন।উত্তর না শুনে ঘুমাতে পারবো না। দ্রুত বলুন, আমার প্রতি কোনো অনুভূতি কাজ করে না? একটুও না? আমি কি আপনার কুহুর মত শ্যামলা? লেখাপড়া খারাপ? নাকি এতিম?'
নম্রতা তড়িৎ তাঁকাল সভ্যতার পানে। সভ্যতা এভাবে তিক্ত সত্যগুলো বলে উঠবে ভাবেনি সে। টলমল করে উঠল চক্ষুদ্বয়। এই কারণগুলোই তো আরীবকেও দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। মাহিন গম্ভীরগলায় বলল,
'ভালো একজনকেই বাসা যায়।'
'আমাকে সেই একজন বানানো যায় না?' আবদারসূচক বাক্য সভ্যতার।
মাহিনের সরল স্বীকারক্তি, 'না।'
সভ্যটা কল কেটে দিয়ে দায়সারা ভাব নিয়ে বলল, 'সি? হি ডিডেন্ট এগ্রি ইট। এখন আমি আর কি করতে পারি? লাজলজ্জা ভুলে প্রপোজও করলাম, তোর জন্য আমার এই সম্মানহানি হলো।এখন আমি কিচ্ছু জানি না। পরশু নদীর পারে গিয়ে আমার ডুবে যাওয়া সম্মান তুলে না আনলে তোর সাথে সকল সম্পর্ক ডিসমিস অ্যান্ড আই মিন ইট ফর দ্য ফার্স্ট টাইম।'
নম্রতা ঠায় বসে শুনলো সব কথা। সভ্যতা চলে গেল। আজ প্রথমবার সভ্যতার থেকে এত তিক্ত কথা শোনার পর অসহায়বোধ করছে নম্রতা। ওর বোন এমন ছিল না। সম্পর্ক, অতিত নিয়ে ঘাটাঘাটি করত না। সবসময় নম্রতার পাশে থাকত, নম্রতাকে ডিফেন্স করে কথা বলত। যেই সভ্যতার জন্য নম্রতাকে কেউ আজেবাজে কথা বলতে পারত না সেই সভ্যতাই আজ এতগুলো কথা শোনাল।
ঘরের বাইরে চাচিজানের গলা শোনা যাচ্ছে। সভ্যতাকে তার অসংলগ্ন কথার জন্য ক্ষমা চাইতে বলছে। নম্রতার চোখের সামনেটা ঝাপসা হয়ে আসে। পরিবারের বোঝা হয়ে যাচ্ছে সে। বয়স তো কম হয়নি। মানুষ তো ঠিক-ই বলে, আর কতদিন নম্রতা চাচা-চাচির ঘাড়ে বসে খাবে?
.
লেখিকাঃ Saira Sheikh
.
রাতে রেগে সভ্যতাকে চড় মা'রলেন ওর বাবা। জীবনে প্রথমবার! নম্রতা ঠেকাতে গেলে সভ্যতার মা নম্রতাকে আটকালেন। বললেন, 'যাস না। ওর স্পর্ধা অনেক বেড়েছে। আরীবকেও যা নয় তা বলেছে। আব্বুকে শাসন করতে দে।'
'কিন্তু আম্মু.. ও ছোট। '
'এজন্যই শাসনের প্রয়োজন।' নম্রতা কিছু বলতে পারল না। সভ্যতাও রাগ করে ছুটে গেল নিজের ঘরে।
সভ্যতা ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে আছে। নম্রতা গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ে। ভেতর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ এলো না। নম্রতা এবার কাঁদতে কাঁদতে বলল,
'দরজা খোল না।'
সভ্যতা চেঁচাল, 'চলে যাও।'
'আমার ভুল, সব ভুল আমার। যা শা'স্তি দিবি দে। তাও দরজা খোল পিহু।'
সভ্যতা দরজা খুলল। একদম স্বাভাবিক চেহারা তার, যেন কিছু হয়নি। অথচ নম্রতার কাঁদতে কাঁদতে ম'রম'র দশা। সে ভেবেছিল সভ্যতাও ভেতরে বসে কাঁদছে কিন্তু তার সে চিন্তায় পানি ঢেলে সভ্যতা ল্যাপটপে সিনেমা দেখছিল। সভ্যতা পুনরায় বিছানায় শুয়ে সিনেমা দেখতে শুরু করে। নম্রতা ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল। সভ্যতা শক্ত গলায় বলে,
'এ-বাড়ি থেকে দ্রুত চলে যা আপু। তোর জন্য, শুধুমাত্র তোর জন্য আব্বু আমাকে মা'রল। এটা তো তোর বাড়ি না। তাও পড়ে আছিস কেন?'
নম্রতার ফোনে মাহিনের কল আসে। সভ্যতা সিনেমায় মনোযোগী। নম্রতা কল রিসিভ করতেই মাহিন বলল,
'কিছু জরুরি কথা বলার ছিল।পিহুর সঙ্গে তুমিও এসো। আর বিরক্ত করবো না। শেষবারের মত কথাগুলো শুনে যাও।'
'জ্বি, আসবো।'
'পিহুর কথা শুনেছ? ও তোমাকে কিছু বলেছে?'
'আপনাকে ভালোবাসে, এ ব্যাপারে?'
'হ্যাঁ।আজ কিসব বলছিল।বুঝতে পারিনি ঠিক কি বলতে চাইল। ও আগে কখনও এমন কিছু বলেনি।'
'দেখা করে সবটা বলি? এখন একটু ব্যস্ত আছি।'
'ওহ, ওকে।'
নম্রতা ফোন রাখতেই সভ্যতা বলল, 'ডিস্টার্ব করিস না। একা থাকতে দে। তোর উপস্থিতিও আমার সহ্য হচ্ছে না। প্লিজ লিভ মি অ্যালোন আপু। পরে কথা বলিস। এখন আমার মেজাজ ঠিক নেই।মুখ দিয়ে আরও উল্টোপাল্টা কথা বের হবে, তখন কষ্ট পাবি।'
'বল। যা ইচ্ছা বল। তবুও যাবো না। আজ এখানেই থাকবো।'
'ওকে ফাইন। আমিই চলে যাচ্ছি।'সভ্যতা সত্যি সত্যি-ই উঠে চলে গেল। নম্রতা অশ্রুসিক্ত নয়নে কেবল তাঁকিয়ে রইল।
.
.
গেস্টরুমে এসে মহা ফ্যাসাদে পড়ল সভ্যতা। ফ্যান নষ্ট, ঠিক করবে করবে করেও ঠিক করা হয়নি। বিছানায় মলিন চাদর, ফ্লোর ঝাড়ু দেওয়া হয়না ৩-৪দিন হয়ে গেছে। মশাদের গোপনবৈঠক চলছে। যখন তখন তারা ক্লান্ত হয়ে আসছে আর সভ্যতার তাজা র'ক্ত পান করে চাঙ্গা হচ্ছে। এমন জায়গায় আজ রাতে কিভাবে থাকবে সভ্যতা? মেজাজ খারাপ হচ্ছে। রাগ উঠছে। রেগে মাহিনকে কল করল সে। রিসিভ করল মাহিনের খালাতো ভাই আরশান। সভ্যতা ঠান্ডা মেজাজে বলল, 'মাহিন ভাইকে ফোনটা দেওয়া যাবে?'
'আপনার মাহিন ভাই ওয়াশরুমে। সেখানে আপাততো ফোন পৌঁছানো যাবে না।'
'আসলে একটু বলবেন, আমি কল করেছিলাম।'
'আমি কে?'
'সভ্যতা। নাম বললেই চিনবে।'
'কিন্তু নাম্বার তো পিহু নামে সেভ করা।'
'ওটা আমার ডাকনাম।'
'দুঃখিত পিহু।এখন ফোন কাটলে আমি আপনার কথা মাহিনকে বলতে পারবো না। আমি পিয়নের কাজ করি না।'
'আচ্ছা। আমি পরে কল করে নিবো।'
সভ্যতা ফোন কেটে দিল। মাহিনের দিকে তাঁকিয়ে আরশান ভ্রুকুটি করে বলল, 'স্ট্রেঞ্জ! মাঝে একদিন তোর সঙ্গে ওর যেমন কথা বলার স্টাইল দেখেছিলাম আজ পুরোটাই চেঞ্জ। আমি তো ভেবেছিলাম ফোন দেব না বললে তর্ক জুড়ে বসবে। কিন্তু মেয়েটা ওর নামের মতই বেশ সভ্য।'
মাহিন হেসে বলে, 'আমার সঙ্গে ওমন করে কথা বলে। ওর ধারণা আমি গাধা, নয়তো ওর নরম বোনকে বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারিনি কেন? ২ বছর ধরে ঝুলছি কেন? ওর বোন কষ্ট পাচ্ছে এটা ওর পছন্দ না। তাই রেগে থাকে আমার ওপর। দ্রুত বিয়ে করলে ওর বোনটা সুখে থাকত, কিন্তু তা হচ্ছে না। আর এসবের সম্পূর্ণ দায়ভার নাকি আমার।'
'কুহু তো ওর আপন বোন না। রাইট?'
'চাচাতো বোন। কুহুর মা-বাবার মৃ'ত্যুর পর পিহুর বাবা কুহুকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। নিজের পরিচয়ে বড় করেন। ওরা কুহুকে প্রচণ্ড ভালোবাসে।'
'আরীব কোন ফুফুর ছেলে? ফোনে কিসব বলেছিলিস মনে পড়ছে না।'
'সাইফুল আঙ্কেল মানে পিহুর বাবা-রা দুই ভাই। কুহুর বাবা বড়। আর সাইফুল আঙ্কেল ছোট। আরীবের মা ওদের আপন ফুফু না। এমনি আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে, কাছাকাছি বাড়ি তাই ঘনিষ্ঠতা একটু বেশি ছিল।'
'বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা আমি ঘুমাতে গেলাম। তুই জেগে থাক, তোর বউয়ের বোন কল করবে বোধ হয়।'
ঠিক ১০মিনিট পর সভ্যতা কল করল।মাহিন কল রিসিভ করতেই সভ্যতা রগড়াই গলায় বলল, 'অনেক কষ্টে ম্যানেজ করেছি। প্রপোজালে যেন কোনো ভুল না হয়। আমি কিন্তু আর হেল্প করবো না মাহিন ভাই। এবারই লাস্ট..'
'অনেক রাত হয়েছে। জেগে না থেকে ঘুমা।'
'আর ঘুম.. তোমাদের এক করতে গিয়ে আমি সোজা গেস্টরুমে পৌঁছে গেছি। মশাদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। ওরা বলছে আমি গল্প করার জন্য চমৎকার মানুষ তাই আমি যেন না ঘুমিয়ে ওদের সঙ্গ দেই। কি আর করবো? তুমি তো জানোই আমি কারোর কথা ফেলতে পারিনা। বাধ্য হয়ে ওদের কথাও শুনতে হচ্ছে।'
'আহা রে! কত কষ্ট হচ্ছে। এই কষ্টের বিনিময়ে আমি তোকে,আমাদের সঙ্গে হানিমুনে নিয়ে যাবো।রাঙামাটি, সিলেট, বান্দরবানের এক্সক্লুসিভ ট্যুর। ইজ ইট ওকে?'
সভ্যতা মিনমিনে গলায় বলল, 'অফার খারাপ না। তবে আমার বরটাকেও অ্যাড করো।সিঙ্গেল মানুষ তোমাদের হানিমুনে গিয়ে কি করবো? তার থেকে জোড়ায় যাবো। ইজ ইট ওকে উইথ ইউ?'
মাহিন হেসে বলল, 'ওকে।তাহলে এই কথা-ই ফাইনাল।'
.
.
.
চলবে............................