নদীর পারে এসে মাহিনকে নিজেদের অবস্থান জানাতে কল করে সভ্যতা। মাহিন কল রিসিভ করল না বরং দূর থেকে হাত নেড়ে ইশারা করলো। ইশারাটি দেখামাত্র মাহিনের পাশে দন্ডায়মাণ ব্যক্তিটির ওপরও নজর পড়ে সভ্যতার। নম্রতা তাকে না চিনলেও সভ্যতা কিছুটা চেনে। মাহিন এসে ওদের সঙ্গে আরশানের পরিচয় করিয়ে দিল। সভ্যতা আরশানের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে। নম্রতা ও মাহিন কথা বলছে।
আজ নম্রতা প্রস্তুত হয়েই এসেছে। প্রথমে সে মাহিনকে বোঝাবে, না বুঝলে রাজি হবে। তবে বিয়েটাই হবে, ভালোবাসা নিয়ে পরে ভাববে।
সভ্যতা নম্রতার হাবভাব সম্পর্কে অবগত। নম্রতা ঠিক কি ভাবছে সেটাও বুঝতে পারছে। তাই দাঁতে দাঁত পিষে বলল,
'ওইটাই হোক। ওসব ভালোবাসা দিয়ে কি হবে? বিয়েটা হলেই হবে।'
আরশান ফোঁড়ন কেটে বলল, 'ম্যাডাম মনে হচ্ছে বেশ রাগি। ভালোবাসা এত অপছন্দ কেন?'
সভ্যতার তৎক্ষণাৎ উত্তর, 'ন্যাকামি, হ্যাংলামি বেশি। ভালোবাসার বিরোধিতা করছি বিষয়টা এমন নয় কিন্তু অতিরিক্ত আবেগ আমার পছন্দ না। এই যে দেখুন ওনার (নম্রতা) অতিরিক্ত আবেগ ওনাকে আজ কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছে। এসব দেখলেই তো ভালোবাসার সাইড ইফেক্টগুলো বোঝা যায়।আমি এসব ইফেক্টওয়ালা জিনিস ঠিক, সহ্য করতে পারি না।'
আরশান সভ্যতার খোঁচাগুলো শুনে হাসে। নম্রতার এই বোকামি তার ছোটবোন একদমই পছন্দ করেনা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু মেয়েটার মেজাজ যৎসামান্য অর্থাৎ একটুখানি খারাপ। ছ্যাত ছ্যাত করে ওঠার স্বভাব আছে সভ্যতার। আরশান সভ্যতাকে আরেকটু তাঁতিয়ে দেখতে চায়। তাই রসিকতা ধরে রেখে বলে,
'তা তোমার কাছে ভালোবাসার সংজ্ঞা কি?'
'যে বাসায় দরজা,জানালা, ছাদ, দেওয়াল, মেঝে, এবং বাসার ভেতরে থাকা মানুষগুলো ভালো। সেটাই ভালোবাসা, নাথিং এলস।'
আরশান হেসে ফেলল। সভ্যতা নম্রতাদের কথা শোনার চেষ্টা করছে। নম্রতা বলছে,'বোঝার চেষ্টা করুন। এভাবে সব হয়না।'
'হওয়ালেই হয়। এখন বিয়েটা করবে কিনা সেটা বলো।'
'সহ্য করতে পারবেন? আমি অন্য একজনকে এতটা ভালোবাসতাম। যতটা হয়তো আপনাকেও বাসতে পারবো না।'
সভ্যতা ললাটে ভাঁজ ফেলে বলল, 'এজন্য-ই এসব ভালোবাসা আমার সহ্য হয়না। মানুষের জীবন ধ্বংস করতে এই প্রেম-ভালোবাসা, আবেগ-ই যথেষ্ট। আমার আপুর অনুভূতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।'
আরশান বুকের ওপর হাত গুজে বলল, 'শুনেছি তোমার ওই ভাইয়ের বউ ভেগে গেছে। তার আর কোনো খোঁজ পেয়েছ?'
'কেন? আপনি তার প্রতি আগ্রহী নাকি? আগ্রহী হলে বলুন খোঁজ না থাকলেও জোগাড় করা যাবে। মেয়েটা দেখতে শুনতে ফার্স্ট ক্লাস। শুধু স্বভাব চরিত্র একটুখানি খারাপ। আপনার মত সুদর্শনের পাশে তাকে বেশ মানাবে। কিন্তু জুঁই আপু সেটা মেনে নেবে বলে মনে হয় না।'
আরশান ভয় পাওয়ার ভান করে বলল, 'বাপরে! তুমি তো বেশ ডেঞ্জারাস মেয়ে।'
পরপরই চিন্তিত হলো কন্ঠস্বর, 'জুঁইয়ের কথা জানলে কি করে? ওয়ান সেকেন্ড, তুমি কি আমাকে আগে থেকে চেনো? কিভাবে?'
সভ্যতা আড়চোখে তাঁকাল। আরশানকে চিন্তিত দেখে বেশ বিরক্ত হলো। অতিষ্ঠ কন্ঠে বলল, 'আপনি একটু চুপ করবেন? আপনার জন্য আমি ওদের কথাবার্তা শুনতে পাচ্ছি না। এখন যদি চুপ না করেন, ডেঞ্জারাস কাকে বলে, কত প্রকার তা প্রাক্টিক্যালি বুঝিয়ে দেব। আমাকে চেনেন না আপনি! আমি যা বলি, তা-ই করি। আর হ্যাঁ, আপনাকে কিছুটা চিনি। ছবি দেখেছি,জুঁই আপুর কাজিন আমার সাথে একই কোচিং-য়ে পড়ে। এবার আর বিরক্ত করবেন না আরশান ভাই।আমাকে আপুদের দেখতে দিন।'
কথাগুলো বলে সভ্যতা পুনরায় নম্রতাদের দিকে তাঁকাল। মনোযোগী হলো নম্রতাদের প্রতি। আরশান প্রথমে জুঁইয়ের কথা শুনে চমকালেও এখন সবকিছু জেনে, মুচকি হেসে সভ্যতাকে দেখছে। মেয়েটা কত ব্যাকুল মাহিন ও নম্রতার কথা শোনার জন্য। কত চেষ্টা করছে দুজনকে এক করার। এখনকার যুগে সভ্যতার মতো বোন পাওয়া বেশ দুষ্কর। নম্রতা ভাগ্যবতী ওর কাছে এমন সুন্দর একটি পরিবার ও সভ্যতার মতো বোন আছে। আরশান সভ্যতার ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মাহিনকে ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করল।
নম্রতা বলছে,'আমাকেই কেন বিয়ে করতে চাচ্ছেন? দেখুন, বোঝার চেষ্টা করুন আপনি আমার থেকে বেটার কাউকে ডিজার্ভ করেন। আমি আপনার যোগ্য নই মাহিন।'
'তোমাকে চাওয়ার একটাই কারণ কুহু। আমি তোমাকে ভালোবাসি।'
'কিন্তু আমি কেন?পৃথিবীতে এত মেয়ে থাকতে আমাকে কেন ভালোবাসলেন?'
'আমারও একই প্রশ্ন। পৃথিবীতে এত মেয়ে আছে তবুও তোমাকে কেন ভালোবাসলাম?তোমার প্রতি এই অনুভূতি কেন জন্মালো? সেটা জানার জন্যই বিয়েটা করতে চাই। তুমি চাইলেই আমাকে সব প্রশ্নের উত্তর দ্রুত পেতে সাহায্য করতে পারো। একবার শুধু চেয়ে দেখো।'
নম্রতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সভ্যতা আরশানকে প্রশ্ন করে, 'আপনার কাছে ভালোবাসার অর্থ কি আরশান ভাই?'
'বিশ্বাস। বিভ্রান্ত পথিকের শেষ গন্তব্যস্থল। ক্লান্ত মনের একটি সুখের নীড়।যখন অসহায়ত্ব, নিঃসঙ্গতা ঘিরে ধরে তখন 'আমি আছি' বলার মত মানুষ থাকে ভালোবাসায়।'
সভ্যতা সকৌতুকে বলল, 'আসলেই কি ভালোবাসায় এসব থাকে?'
আরশান গম্ভীরকন্ঠে বলল,'ভালোবেসে দেখো। এসব থাকে কিনা নিজেই বুঝে যাবে। এখন বিশ্বাস না করলেও তখন বিশ্বাস করবে যে,আরশান ভাই মিথ্যা বলেনি।'
সভ্যতা আরশানের কথায় গুরুত্ব দিল না। কয়েক মুহূর্ত অতিবাহিত হলো। ধীরে ধীরে নম্রতার মন গলতে শুরু করে। মাহিনের প্রস্তাবে অবশেষে রাজি হলো নম্রতা। মাহিনকে সে বিয়ে করবে।
সভ্যতা ছুটে গিয়ে নম্রতাকে জড়িয়ে ধরে। জড়িয়ে ধরেই কেঁদে ফেলে। সে-দিনের কঠোর আচরণের জন্য ক্ষমা চায়। সভ্যতাকে ক্ষমা চাইতে দেখে নম্রতাও কেঁদে ফেলল এবার। সভ্যতা কান্না থামিয়ে নাক টেনে বলল,
'কাঁদিস না। কাঁদলে তোকে বিশ্রি লাগে।'
নম্রতার কান্না থেমে গেল। মাহিন-রা আছে সামনে মনে পড়তেই লজ্জা পেল। সবাই রেস্তোরাঁয় এলো। সভ্যতা ও নম্রতার চেয়ার টেনে, ওদের বসতে সাহায্য করে মাহিন। এরপর নিজের চেয়ারে বসে বলল,
'এবার আমার শালিকার জীবনেও এমন কেউ আসুক যে এই মেয়েটাকে তার মত করে ভালোবাসবে, আগলে রাখবে, মেজাজ সামলে রাখবে, সকল আবদার পূরণ করবে, আদরে রাখবে, যত্নে রাখবে, সুলতানার মত ট্রিট করবে। দোয়া করে দিলাম শীঘ্রই এমন একজন সুলতানের আগমন ঘটবে আমাদের শাহজাদির জীবনে।'
'এত সুন্দর দোয়া করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ মাহিন ভাই। আমিও তোমার পক্ষে। দ্রুত এই সিঙ্গেল জীবনের ইতি টেনে তোমাদের সঙ্গে হানিমুনের ট্রিপটা দিতে চাই। বাট আমার স্বপ্নের রাজকুমার মনে হয় ঘোড়ার বদলে কচ্ছপের পিঠে চড়ে আসছে। যাই হোক, আসলেই হবে কিসে চড়ে আসছে, সেটা ম্যাটার করে না। তুমি শুধু এটা মনে রেখো, ট্রিপের পুরো খরচ তোমার। তোমাদের জন্য এত কষ্ট করেছি, এই হক আমি ছাড়বো না।'
'অবশ্যই! তোর কি মনে হয় সামান্য টাকা নিয়ে আমি কার্পণ্য করবো? প্রথম হানিমুন তো হবে, প্রয়োজনে আরেকবার যাব। সেকেন্ড হানিমুন দেশের বাইরে করবো, সেই খরচও আমি দেব। আরশান তোর কাজও সেরে ফ্যাল। শুভকাজে দেরি করতে নেই।'
সভ্যতা সায় দিয়, 'হ্যাঁ আরশান ভাই। আপনিও দ্রুত বিয়ে করে ফেলুন। তারপর আমরা ছয়জন মিলে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াবো।'
আরশান জুঁইকে ভিডিও কল করলো। জুঁইয়ের সঙ্গে সবার কথা বলিয়ে দিচ্ছে, সভ্যতাকে জুঁই অনেক আগে থেকে চেনে তাই দুজনের মধ্যে দ্রুত সখ্যতা গড়ে ওঠে। নম্রতা মৃদু হেসে সবকিছু অবলোকন করছে।
আজ সভ্যতা ভীষণ খুশি। অবশেষে তার আপু আর মাহিন ভাই এক হচ্ছে। পিহুর, কুহু আপু এমন একজন জীবনসঙ্গী পাচ্ছে, যে কুহুকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসবে। সভ্যতা নম্রতার চেহারায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করে মুচকি হাসে। মনে মনে বলে,
'তোকে বলেছিলাম না আপু?তোর জীবনেও ভালোবাসা আসবে। আরীব ভাইয়ের থেকেও বেটার কেউ আসবে। দ্যাখ, সে এসেছে। হয়ত তোর আকাঙ্ক্ষার মানুষ নয় সে কিন্তু আমি জানি মাহিন ভাই ঠিক তোর মন জয় করতে পারবে।'
.
.
বাড়ি ফিরে নম্রতা চুপচাপ নিজের ঘরে চলে যায়। সেটা দেখে সভ্যতার কপালে ভাঁজ পড়ে। সভ্যতা শুনেছে, এই সময় অর্থাৎ প্রেমিক পুরুষ পাওয়ার পর নারীর মনে এক বিশাল পরিবর্তন আসে। ফুরফুরে লাগে সবকিছু,আনন্দের ঝলক থাকে চেহারায়, উৎফুল্ল থাকে, চঞ্চল হয়ে ওঠে, প্রেমিকের জন্য মন ছটফট করে। কিন্তু নম্রতা নামক মেয়েটার মাঝে তেমন কোনো লক্ষণ-ই নেই। মনে হচ্ছে ওকে জোর করে বিপত্নীক আরীবের মত কোনো দুশ্চরিত্র ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।সভ্যতা কিছুটা হতাশ হয়।পরে ভাবে নম্রতার স্বভাবই একটু অস্বাভাবিক। অস্বাভাবিক মানুষ স্বাভাবিক কাজ করতে পারবে না।
সভ্যতা হাই তুলল, আজ অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে গেছে। ঘুম আসছে। চোখমুখ ধুয়ে বিছানায় গড়িয়ে পড়ে সে। বালিশে মাথা রেখে ২-৪মিনিট কাটানোর পর ঘুম বাবাজি গায়েব। ঘুম চলে যাওয়ায় এবার সভ্যতা ফোন নিয়ে বসলো। নিজের ছবি আপলোড করার পর ইদানিং ছেলেদের প্রচুর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসছে। প্রফাইল লক করা নয়। তাই কমেন্টে তাদের 'ওয়াও, গর্জিয়াস, বিউটিফুল নাইস, এ্যাট্রক্টিভ' শব্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সভ্যতা জানালার গ্রিলে পা বাঁধিয়ে, পা নাচাতে নাচাতে সেসব দেখছে। নম্রতা কড়া নাড়ে দরজায়। সভ্যতা ঘাড় সামান্য কাত করে দরজার দিকে তাঁকায়। নম্রতা ঘরে ঢুকে বলল,
'কি করছিস?'
সভ্যতা গুরুগম্ভীর স্বরে বলল, 'বুঝলি আপু, এবার মনে হয় আমারও খুব দ্রুত বিয়ে হয়ে যাবে।বেশিদিন এ বাড়ি থাকতে পারবো না। আমার ছবি প্রকাশ করার পর ছেলেগুলো বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে, কয়েকজন ঠিকঠাক পাত্র নকটক দিচ্ছে,খোঁজখবর নিতে চাচ্ছে।এটা ডাক্তার, অর্থোপেডিক না কি যেন, হাড়ের ডাক্তার মে-বি। কিন্তু এই ডাক্তারকে পছন্দ হচ্ছে না, বয়স একটু বেশি মনে হচ্ছে।দেখ এটা বুয়েটিয়ান, বাট রাজনীতির সাথে যুক্ত। এই আপু, এই ছেলেটাকে দেখ, মা'রাত্মক কিউট না বল? কিন্তু আমার থেকে ছোট মনে হয়। ছোট হলেও এত লম্বা! উফ, এসব বিয়ে আর পাত্র বাছাই করা আমার পক্ষে অসম্ভব। এসব এত কঠিন কেন রে?'
নম্রতা হেসে বলল, 'এদেশের ছেলে যখন পছন্দ হচ্ছে না তখন অন্যদেশের ছেলে দেখি?'
'হ্যাঁ, হ্যাঁ দেখতে পারিস। কিন্তু ছেলে যেন খাঁটি বিদেশি হয়। এদেশের কেউ অন্যদেশে গিয়ে, থেকে, আবার ফিরে এসেছে, এমন ছেলে যেন না হয়। স্পষ্ট ভাষায় আরীব ভাইয়ের মত কাউকে চাচ্ছি না। আরীব ভাইয়ের ঘটনার সঙ্গে অল্পস্বল্প সাদৃশ্য আছে তেমন কাউকেও চাচ্ছি না।'
'আচ্ছা। আরকিছু?'
সভ্যতা সন্দিগ্ধ চোখে তাঁকিয়ে বলল, 'আরেকটা বিষয় আছে। আজ মাহিন ভাই তোর হাত ধরার সময় যেভাবে লজ্জা পেলি, আমি তো চিন্তায় পড়ে গেছি সেটা দেখে।'
নম্রতা থতমত খেয়ে বলল,'প্রথমবার তো। তাই একটু লজ্জা লাগছিল। কিন্তু তোর চিন্তা কি নিয়ে? কি হয়েছে?'
সভ্যতা নির্বিকার ভঙ্গিতে, নির্লিপ্ত কন্ঠে বলল,'এখনও কিছু হয়নি, তবে হবে। আমার মনে হয় আমি তোদের মতো লাজুক নই। আমার পাশে এসে কেউ বসলে, হাত টাত ধরলে আমি বোধহয় লজ্জা-টজ্জা পাবো না রে আপু। এমন রোম্যান্টিক মোমেন্টে লজ্জা পাওয়া অতি আবশ্যক একটি বিষয় কিন্তু আমার কেন জানি লজ্জা ঠিক আসে না।প্রতিটি বর-ই বোধ হয় একটু লাজুক বউ পছন্দ করে কিন্তু আমার বর আমার এমন লজ্জাহীন আচরণে খুবই হতাশ হবে। তার হতাশার কারণ হবো আমি, এটা ভেবেই চিন্তা হচ্ছে। কি করা যায় বলত?'
নম্রতা হাসি চেপে গম্ভীরকন্ঠে বলল, 'তাহলে তোর জন্য আমরা একটা লাল টুকটুকে লাজুক বর খুঁজে আনবো। রোম্যান্টিক মোমেন্টে লজ্জা পাওয়া আবশ্যক হলে সে লজ্জা পাবে আর তুই দেখবি। ব্যাস সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। ঠিক আছে?'
বলতে বলতেই হেসে ফেলল নম্রতা। সভ্যতা নম্রতার উপহাস শুনে রাগান্বিত দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করে।নম্রতার সঙ্গে তর্ক করতেই যাবে এমন সময় সভ্যতার মনে পড়ল আগামীকাল কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আছে।
ওরা সব বন্ধুরা শাড়ি পড়বে ঠিক করেছিল। দুপুর ধরে নম্রতাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। সভ্যতা চিন্তিত চেহারায় নম্রতাকে উপেক্ষা করে দ্রুত উঠে আলমারির কাছে চলে যায়, শাড়ি বাঁছতে হবে। নম্রতাও হাসি থামিয়ে এগিয়ে আসে সভ্যতাকে শাড়ি বাঁছতে সাহায্য করার জন্য।
.
.
.
চলবে..............................