শাহজাহান তন্ময় - পর্ব ৬৪ - নাবিলা ইষ্ক - ধারাবাহিক গল্প


জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সব কর্মকাণ্ড কখনো স্কেজুয়াল করিয়ে হয় না। থেমে থাকে না পূর্বভাবনায়। সয়ে রয় না অন্তরের হেকটিক ডায়েরিতে লেখা তারিখ মেপে। সর্বদাই চিন্তাভাবনার বাইরে গিয়েই অলৌকিকভাবেই জীবনের শ্রেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো হয়ে যায়। আপোষহীনভাবে আফসোস করবার ফুরসত মেলা বেশ ভার। তন্ময় কি কখনো ভেবেছিল এভাবে অরুকে নিজের করে নিতে উৎসুক হবে? তার গর্বিত ধৈর্যের কাছে এমন নিষ্ঠুরভাবে হেরে যাবে? প্রিয়তমাকে নিজের করে নেয়াটা এযাত্রায় মর ন - বাঁচার বৈঠকি।
নিশ্বাস নেবার অক্সিজেন। বেঁচে থাকার সিম্বল। ফুলের তৃপ্তিকর সুভাস যেন এক অদেখিত মোহনিয়া। এক প্রিয়তম অ্যালকোহল। যা অতি ধীরেসুস্থে গ্রাস করে নিচ্ছে তার অস্তিত্বকে। সেতারার ন্যায় বেজে চলছে ঝুম বৃষ্টির শব্দগুচ্ছ। কৃষ্ণচূড়া গাছটার ঘ্রাণ নাকের কাছটায় ভেসে আসছে। সেই কী মাদকপূর্ণ সুভাস! চমৎকার এক আবেদনময়ী নেশা। নিশীথনিবিড় আঁধারিয়া সুবিস্তৃত আকাশে যেন এক টুকরো স্থানে ভাঙন ধরল। সঙ্গে-সঙ্গে ত্যারচা এক দাগ ভাসল সেথায়। ঘটল ভীতিকর বজ্রের পতন। কেঁপে উঠল ভূমি। খোলা জানালাটার পর্দা তিনটে সরানো। ক্ষণিকের স্বচ্ছ আলোতে অরুর ভেজা আঁখিজোড়া সু-স্পষ্ট দেখা গেল। ভেজা আঁখিজোড়ার বড়ো পাপড়িযুগল কাঁপছে। ক্ষণে-ক্ষণে চোখ বুজে ঢাকতে ব্যাকুল সমস্ত এক গূঢ় তাৎপর্যপূর্ণ পৃথিবী। তিরতির করে কম্পমান অধরের চতুর্দিক জুড়ে লিপস্টিক চিহ্ন। লেপ্টেছে থুতনি পর্যান্ত। দৃশ্যটুকু নিবিড়, দৃঢ় –গাঢ় চোখে দেখল তন্ময়। স্তব্ধীভূত তার সুগভীর অন্তরের কিছু একটা আওয়াজ করে ভাঙল। খানখান শব্দ হলো। সেই শব্দ কি অরু শুনতে পেলো? অনুমান কি করতে পারল তার অন্তরের দুর্বাসনা? এক অতি মধুর বিক্ষোভ শুরু করল দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। বিদ্রোহ করতে ওরা প্রস্তুত। তন্ময় আশকারা দিল। গা ভাসাল সমুদ্রের উত্তাল স্রোতের সুবিশাল গভীরে। ঝুঁকল নিজের প্রেমিক সত্তার কাছে। অধৈর্য হাত দুটো কয়েকটি সেকেন্ডের মধ্যেই, পরনের শার্টের প্রত্যেকটা বোতাম খুলে ফেলল। ছুঁড়ে ফেলল অদূরে। তিমিরাচ্ছন্ন রুমের এক কার্নিশ ছুঁয়ে ফ্লোরে পড়ল সেটি। অরু সেই সুযোগটুকুতে উঠে বসতে চায়। তবে সম্ভব হয় না। তন্ময় নিজের রুক্ষপ্রকৃতিক সুবিস্তৃত ডান হাত দ্বারা ওর কোমল, শীর্ণ কোমর চেপে ধরে। বিছানায় শুইয়ে রাখে জোরপূর্বক। ওঠার–সরে যাবার, পালানোর কোনো পথই নেই যেন। পরপর গুঁজে থাকা শাড়ির ভাঁজ খুলে ফেলল তন্ময়। অরু বাঁধা দিতে চাইল। মেয়েটা থরথর করে কাঁপছে। তন্ময় সুস্পষ্ট উপলব্ধ করছে ওর উত্তেজিত হার্টবিট। বাইরে তখন প্রবল ঝোড়ো তাণ্ডব। তীব্র মাত্রায় বাড়ছে বৃষ্টির প্রখরতা। উদাসীন হাওয়ার বেগে নৃত্য খেলতে ব্যস্ত পর্দাগুলো। সাদা শাড়িটা বিছানার পাশেই ফেলল তন্ময়। বেশ অবলীলাক্রমে তা পড়ে রইল ফ্লোরে। সেই-মুহূর্তেই হঠাৎ শব্দ হলো। দরজায় করাঘাত পড়ল গুণে-গুণে চারটা। ওপারের মাহিন-রিয়ানের দুষ্টু স্বর। ঘনঘন শ্বাসপ্রশ্বাস ফেলা উত্তেজিত তন্ময় না শুনলেও, ভয়ার্ত অরু ঠিকঠাক শুনল। সম্বিত ফিরল যেন ওর। নাজুক দেহখানা কুণ্ঠিত হলো। হাত দুটো ব্যস্ত হলো তন্ময়ের উদোম প্রশস্ত বুক ঠেলে সরাতে। সেই নগ্ন দেহ ছুঁয়েও যেন মেয়েটা দিশেহারা, ছন্নছাড়া। দ্বিতীয়বার ছুঁতেও দ্বিধান্বিত। মাথাটা কোনোমত ঘুরিয়ে ভাঙা গলায় জানাল,

‘তন্ময় ভাই, বাইরে কে যেন! টো–টোকা পড়ল।’

‘শুউউস! কনসেন্ট্রেট, জান।’ কথাটুকু গভীর কণ্ঠে আওড়ে তন্ময় পলকও ফেলল না। শীর্ণ, নরম দেহের ওপর হতে সরলও না। তার বুকের ওপর থাকা হাত দুটো চেপে ধরল। শুধুমাত্র বাহ্যিক শক্তি দিয়ে অরুর মাথাটা ঘুরিয়ে অ্যানেস্থিয়ার মতন কাজটা করে বসল। 
অধরযুগলের স্পর্শে অধর, দেহের সংস্পর্শে দেহ ছুঁয়ে এক আশ্চর্যবোধক অনুভূতিপ্রবণ স্থাপিত্যের সূচনাকাল আরম্ভ হলো। উদগ্রীব পুরুষোত্তম হাত দুটো অবিন্যস্ততায় মশগুল। যেন সিলমোহর দিতে ব্যস্ত। বাইরের তুমুল ঝড়, বৃষ্টি তখন সর্ব ওপরে। তবুও ঘরের ভেতরের ভয়াবহ তাণ্ডবকে হারাতে পারল না। দমাতে পারল না অনুভূতি নামক এই অসহ্যকর প্রহরকে, এই অকল্পনীয় নিশীথকে।

———

ছোটো ছোটো পাখির দলবল একত্রিত হয়ে, কোলাহলের সুমধুর ধ্বনি তুলছে চতুর্দিক জুড়ে। ভোরের মিঠা রোদ উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে ঘরদোরে। সরানো পর্দা ছুঁয়ে রশ্মি ভীড় জমিয়েছে বিছানায়। গভীর স্বপ্নে আচ্ছাদিত অরুর চোখে একফালি সোনালি রোদ্দুর বসল। রোদ্দুরের মিঠা যন্ত্রণায় পাপড়িযুগল কাঁপল। নাক কুঁচকে এলো। লালচে অধরজোড়া নড়ল। তন্ময় সম্মোহিত হয়ে সেই দৃশ্যটুকু নয়ন জুড়িয়ে ভোগ করল। বালিশে কনুই রেখে, তালুতে মাথা ঠেকিয়ে পাশ ফিরে আধশোয়া হলো। সুবিশাল পুরুষোচিত দেহের ছায়াতে কুণ্ঠিত হলো রোদ। ছায়াতলের সংস্পর্শে অরুর কুঞ্চিত ভ্রুদ্বয় শান্ত হয়। মিইয়ে যায় কুঁচকে আসা নাক। শান্ত হয় জখমিত ঠোঁট। পরনের সুবিশাল কালো শার্টে অরুকে ঠিক কেমন দেখাচ্ছে, তন্ময় ভাষায় ব্যক্ত করতে পারবে না। আর নাইবা পারছে পিঞ্জর কাঁপানো উত্তেজনা দমাতে। এই শার্ট পরিয়েও যেন নিজের ঘাড়ে সে মস্তবড় মসিবত এনে ফেলেছে। এইমুহূর্তেই কি সে ঝটপট ওকে চেঞ্জ করিয়ে দেবে? তবে সেটিও একইরকম ভয়াবহরকম বিষয়। দীর্ঘশ্বাস বেরুল বুক থেকে। ডান হাতটা এগুল অরুর অগোছালো চুলবাহার গুছাতে। ক্লান্ত, বিধ্বস্ত অরুকে দেখে তার কেন মায়া হচ্ছে না? কেন সে পস্তাচ্ছে না? কেনই বা গতকাল রাতের কর্মকাণ্ডে লজ্জিত হচ্ছে না? তাহলে কি সে পরিবর্তন হয়ে গেল? এই কাজ পূর্বের তন্ময় কখনোই করতে পারতো না। করলেও হয়তোবা নিজের ওপর ধিক্কার জানাতো একশোবার। ভাবতো পরিবারের কথা, বাবার আদেশের কথা, অরুর অল্প বয়সের কথা। তবে এখন এসবের কিছুই আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। তন্ময় মাথা নুয়ায়। ঠোঁট ছোঁয়ায় অরুর ললাটে। বিড়বিড়িয়ে ওঠে,

‘নাথিং ইজ মোর ইম্পরট্যান্ট দ্যান মাই লাভ ফর ইউ।’

স্মার্টফোনে টুন বেজে উঠল। ফোন-টা ঠিক কোথায় ফেলেছে তার মনে নেই। কোথা থেকে বাজছে? তন্ময় চতুর্দিক তাকাল। দৃষ্টি গিয়ে থামল পশ্চিমের ফ্লোরে। উবুড় হয়ে পড়ে আছে অসহায়ভাবে। তন্ময় দাঁতে ঠোঁট টিপল। উঠে বসল। শরীরে একটি প্যান্ট জড়ানো। বেল্ট ছাড়া। ঢিল হয়ে পুরুষালি কোমরে পড়ে আছে। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই অনুভব করল পিঠের চিনচিন ব্যথা। অরুর হাতের নখগুলো কেটে ফেলা পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মনে করে হাতের নখ গুলো সে আজই কেটে দেবে। এগিয়ে গিয়ে পর্দা লাগাল। এরপর ফোন তুলল ফ্লোর থেকে। স্ক্রিনে ভাসছে তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নোটিফিকেশন। সহস্র আন-রিড মেসেজেস। সারারাত ধরে বোধহয় সবগুলো চ্যাট করেছে। গতকাল রাতেও এসেছিল জ্বালাতে। তন্ময় ওদের হাতের কাছে পেলে একেকটাকে বুড়িগঙ্গাতে চুবাবে। ফোন বিছানার সাইড ড্রয়ারে রাখতে নিয়ে বিছানায় দৃষ্টি গেল। নিগূঢ়ভাবে লক্ষ করতেই ধরতে পারল। অরুর চোখ দুটোর পাপড়ি কাঁপছে। ঘুমের ভাণ ধরে থাকা অপূর্ব চেষ্টা। তন্ময় নিঃশব্দে হাসল। এগুলো বিছানায়। পাশেই বসল ফের। একচিত্তে চেয়ে থাকাতে অরু নড়চড় করল। অন্যপাশে ফিরতে উদগ্রীব। তন্ময় হাত বাড়িয়ে ধরল ওকে। গভীর, সুগম্ভীর কণ্ঠে জানাল,

‘গুড মর্নিং, মিসেস শাহজাহান আরাবী!’

অরুর বন্ধ চোখের পাপড়িজোড়া এবার ঘনঘন নড়ছে। এযাত্রায় নিশপিশ ভঙ্গিতে চাইল। ঘুমকাতুরে চোখদুটো চেয়েই দৃষ্টি ফেরাল। লাজুক গাল দুটোতে লাজের আভাস। ঘুমঘোর গলায় অরুও চাপাস্বরে বলল,

‘গুড মর্নিং।’

‘ঘুম ভালো হলো?’ তন্ময়ের কণ্ঠে কৌতুক প্রভাব। দু'ঘণ্টাও হয়নি অরু ঘুমিয়েছে। সেক্ষেত্রে ঘুম ভালো হয়েছে কীনা জানাটা হাস্যকর বৈ কিছু না। তবে সরল অরু এতশত বুঝেনি। বেশ সাবলীলভাবেই মাথাটা দোলাল। মুখে বলল, ‘হুঁ।’

তন্ময় মুখ ভরিয়ে হাসে। মাথাটা ঝুঁকিয়ে ফের শুধায়, ‘সত্যি?’

এবেলায় অরুকে ইতস্তত দেখাল। সে আলগোছে উঠে বসল। তন্ময়ের বড়ো শার্টের হাতা দুটোতে হারিয়ে গেল অরুর হাত দুটো। এই দৃশ্য অনুভব করে অরু কুণ্ঠিত হলো। লাজে মাটি খুঁড়ে হারিয়ে যেতে ব্যকুল যেন। তন্ময় হেসে হাত বাড়ায়। দু'হাতে কয়েক ধাপে ভাঁজ করে দিলো ডান হাতাটা। একইভাবে বা'হাতাটাও ভাঁজ করতে ব্যস্ত। অরুর ধীর ভাঙন ধরা লাজুক কণ্ঠ শোনা গেল এইমুহূর্তে, 

‘কখনো পুরো নাম ডাকেন না।’

তন্ময় দৃষ্টি তুলে চাইল না। মাথা ঝুঁকানো অবস্থাতেই হাসল নিঃশব্দে। শুধাল, ‘ভালো লাগে?’

অরুর নিরপেক্ষ প্রত্যুত্তর, ‘হুঁ।’
‘তাহলে কী এখন থেকে আরাবী বলে ডাকব?’
‘উহুঁ। হঠাৎ, হঠাৎ।’

তন্ময় এবারে সটানদেহে বসল। চোখে চোখ রাখার চেষ্টারত শুধাল, ‘কেন?’

অরুর ছন্নছাড়া দৃষ্টির স্পষ্ট কেন্দ্র নেই। এদিক-ওদিক চেয়েই বলল, ‘ভালোলাগার বিষয় গুলো রেগুলার ব্যসিসে বললে তো এতো ভালো লাগবে না।’

তন্ময় আশ্চর্য হওয়ার ভাণ ধরল, ‘বাহ! তুই তো দেখছি দারুণ কথা বলতে শিখেছিস।’

অরুর সংকুচিত কণ্ঠে প্রফুল্লতার দীপ্তি, ‘আমি আরও ভালো-ভালো কথা জানি।’

তন্ময় ঠোঁটে ঠোঁট টিপে হাসিটুকু দমন করতে নিয়েই বলল ‘তাই বুঝি? আমি শুনতে চাই। দেখি বলল ভালো-ভালো কথা।’

অরুকে দ্বিধাগ্রস্ত দেখাল, ‘হঠাৎ করে কীভাবে বলব? কোনো একটা বিষয়ের প্রেক্ষিতে এইসব ইম্পরট্যান্ট ভালো কথাবার্তা মাথায় আসে।’

তন্ময় মুখ বাড়িয়ে শব্দ তুলে অরুর ফোলাফোলা গালে চুমু বসাল, ‘ওকে। আম ওয়েটিং। যখন মাথায় আসবে শুনব। হুঁ? এখন শুয়ে পড়। মাত্র ছয়টা বিশ।’

‘আপনি ঘুমাবেন না?’ অরুর ততক্ষণাৎ আগ্রহী প্রশ্ন। তন্ময় ভেবে রেখেছে ঘুমোবে না। তার দু'চোখে ঘুম ছিল না। অথচ এই এক প্রশ্নের সামনে তার দু’চোখ ভরে ঘুম এলো যেন। ইচ্ছে করল ঘুমোতে। একটা লম্বা ঘুম দিতে। তন্ময় আনমনা ‘হুঁ।’ বলেই বিছানায় উঠল। শুয়ে পড়ল। অরুর হাত টেনে বুকে নিলো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে। চুলের ওপর ঠোঁট ছুঁইয়ে চোখ বুজল। জীবনের এক বড়ো প্রাপ্তির হাওয়া শরীর, তনুমন জুড়ে লেপ্টে গেল। দিয়ে গেল ভরসা, মধুর দায়িত্ব, সু-নিবিড় ভালোবাসার বেড়াজাল। 

——— 

ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে একটা উনিশে। কড়াকড়ি রোদ উঠেছে। শুঁকিয়েছে গতকাল রাতে ঝড়ো বৃষ্টির চিহ্ন।
রোদের ঝাঁঝ এসে মুঝ ছুঁয়ে দিলো সদরদরজা পেরুতেই। প্রাঙ্গণে বসে আছে মাহিন এবং রিয়ান। দুজনের হাতে লেবুর শরবত। আয়েসি ভঙ্গিতেই পান করছিল। তন্ময়কে দেখে সটানদেহে দাঁড়াল। উৎসুক দুজনের দৃষ্টি। তন্ময় ভ্রুক্ষেপহীন। মাহিন থতমত খাওয়া গলায় আওড়াল,

‘দোস্ত, তোরে চেঞ্জ চেঞ্জ লাগতেছে।’

রিয়ান উচ্চকণ্ঠে সুরে সুর মেলাল, ‘যেমন, যেমন?’

‘বেশ রোজি রোজি ভাব চেহারায়। মনে হচ্ছে ত্রিশ বছরে প্রথম ভোজন করেছে।’

তন্ময় বসতে নিয়েছিল চেয়ারে। এহেন কথাতে আর বসল না। কয়েক পদক্ষেপে এগিয়েই দু'হাতে মাহিনের গলা পেঁচিয়ে মার ধর শুরু করল। পাশ থেকে রিয়ান উৎসাহ দিচ্ছে। দুজনের ধস্তাধস্তির মধ্যেই বেরুল ইব্রাহিম। ছানাবড়া চোখে শুধাল,

‘এই ভাই, তোরা দিন-দুপুরে এই কী ধরনের সংযমে লিপ্ত হলি? লাজলজ্জা কি সব খেয়ে নিছিস?’

রিয়ান সুরে সুর মেলাল, ‘সহমত।’ কথাটুকু বলতে না বলতেই তন্ময় মাহিনকে ছেড়ে রিয়ানের পিঠে কয়েক ঘাঁ লাগাল। বন্ধুবান্ধবদের এসব কাহিনী নিত্যদিনকার। ইব্রাহিম প্রশ্ন ছুঁড়ল,

‘অরু কোথায়?’

তন্ময় বসতে নিয়েই জবাব দিলো, ‘ঘুমুচ্ছে।’

মাহিন সুর টানল, ‘ঘুমুচ্ছেএএএএএ…কিন্তু কেন?’

তন্ময় চোখ রাঙাল, ‘মাহিন, ইউ স্টপ রাইট দেয়ার।’
‘ফুলস্টপ। একেবারে।।’
.
.
.
চলবে................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন