রুমে জ্বলছে গাঢ় সবুজ রঙা ডিম লাইট।বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে আছে রিশা।উপরে সিলিংফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে একদৃষ্টিতে।রাতিম ভাইয়ের কথাগুলো ভীষণ ভাবাচ্ছে তাকে।সত্যিই তো,কেন নিজের ক্ষতি করবে ও?আশফিক ভাই তো জানেই না রিশার অনুভূতি!আর ক্ষনিকের এই আবেগটুকুর জন্য পরিবারের ভালবাসা,নিজের স্বপ্নটাকে কি করে বিসর্জন দেওয়ার কথা ভাবল সে?তবে একটা বিষয়ে রিশা নিশ্চিত!রাতিম ভাই টের পেয়ে গেছে তার মনের অবস্থা!বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময়ও বারবার বোঝাতে চেষ্টা করছিল কেমন!এতটা দূরের হয়েও লোকটা এক নিমেষে বুঝে নিয়েছে রিশার মন খারাপটুকু!অথচ কিছু কাছের মানুষকে আমরা চিৎকার করে বলেও মনের অবস্থা বোঝাতে সক্ষম হই না!বাসায় ফিরে ঘুমের ট্যাবলেটের পাতাটা বাবার ঔষধের বাক্সে সযত্নে রেখে এসেছে রিশা।এইটুকুতে হেরে গেলে চলবে না।জীবন চলার পথ এখনও অনেকটা বাকি!নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে হলেও তাকে হাসিমুখে বাঁচতে হবে।পরিবারের কথা তাকে ভাবতে হবে।কিছু জিনিস নিয়তিতে থাকে না।সেটা মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর!আশফিক ছিল না রিশার ভাগ্যে!সে ভাল থাকুক নিজের মানুষটা নিয়ে এটাই চায় রিশা।কথাটুকু ভাবতে ভাবতে চোখের কোণা বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো!চোখ বুজে প্রলম্বিত শ্বাস নিল রিশা।কখনো কখনো ভীষণ কষ্ট হলেও মন কে মানাতে হয়!রাতিম ভাইয়ের কথাগুলো যুক্তিযুক্ত ছিল।তাই হয়তো নিজেকে বোঝাবার সাহস পেয়েছে আজ।কাত হয়ে শুয়ে জানালার বাইরে দৃষ্টি রাখল সে।আকাশ আজ তারায় তারায় জ্বলমল হয়ে আছে!অর্ধ চাঁদটার দিকে তাকিয়ে তপ্ত শ্বাস ফেলল রিশা।মন বুঝি ঈষৎ হালকা হয়েছে!
◾
কুহুর পায়ের এক্সরে করানো হয়েছে।বেকায়দায় পা মচকে গেলে অনেক সময় হাড় ভে'ঙ্গে বা টিস্যু ছি'ড়ে গিয়ে পা ফুলে যায়।ডাক্তার জানিয়েছে কুহুর তেমন ক্ষতি হয়নি।আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে রক্তের চলাচল বেড়ে যায়।তাই ফুলে উঠে।সেখানে ঠান্ডা সেঁক দিলে ব্যাথা দ্রুত নেমে যায়।গরম সেঁক দেওয়ার ফলে কুহুর পায়ের ব্যাথা উল্টো বেড়েছে।দুদিন বেডরেস্টে থাকলে ঠিক হয়ে যাবে।নার্স বেশ যত্ন নিয়ে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধে দিল কুহুর পায়ে।পুরোটা সময় রওনক খুব বিচলিত ছিল!রিপোর্টের জন্য এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছিল।সবটাই দূর থেকে হুইল চেয়ারে বসে লক্ষ্য করছিল কুহু।নার্সরা ফিসফিস করে বলাবলি করছিল 'বউ পাগল ছেলে'!কথাটা স্পষ্ট শুনেছে কুহু।কেন জানি কথাটা ভীষণ ভাল লেগেছে তার!হুইল চেয়ারে বসানোর সময়ও কুহুর পায়ের কাছে বসে রওনক বারবার জিগ্যেস করে যাচ্ছিল কষ্ট হচ্ছে কিনা?মাথা ঝাঁকিয়ে 'না' বলেছে কুহু।তবুও সন্তুষ্ট হতে পারেনি লোকটা!নার্সদের সামনে বলেই বসেছে,কোলে করে হাঁটতে তার কোনো সমস্যা হবে না।নার্সদের চেহারাটা তখন দেখার মতো হয়েছিল!কুহু যেন কুন্ঠায় জড়োসড়ো হয়ে যাচ্ছিল ক্রমেই!এতক্ষণ যাবৎ সর্ব মুখ জুড়ে চিন্তার ছাপ থাকলেও এখন অনেকটা শান্ত লাগছে রওনককে।হাসিমুখে কুহুর কাছাকাছি এগিয়ে আসলো সে।
"এক্ষুনি বিল পরিশোধ করে চলে যাব আমরা।
কথাটুকু বলেই পকেটে হাত রাখতে গেল রওনক।তক্ষুনি খেয়াল হলো লুঙ্গি পরে আছে সে!বড়োসরো এক ধাক্কা খেল যেন!এতক্ষণ মাথাতেই ছিল না এই কথা!যাক লুঙ্গি যে এতক্ষণ অক্ষত ছিল এটাই বেশি!কুহুর দিকে তাকিয়ে বলল,
"আমি যে লুঙ্গি পরেই বেরিয়ে এসেছি একবারও বলবে না আমাকে?সব তোমার জন্য হয়েছে!ওয়ালেট,ফোন কিছুই তো নিয়ে আসিনি!
বোকার মতো কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল কুহু,
"পা কি আমি ভেঙ্গেছিলাম?নিজে অপরাধ করেছেন তাই হসপিটালে নিয়ে এসেছেন।নয়তো আসতেন নাকি?দোষ করবেন নিজে,ভুলও করবেন নিজে আর দোষারোপ করবেন আরেক জনকে?এ কেমন বিচার?
পাল্টা আর কিছু বলল না রওনক।কুহুকে বসিয়ে রেখে বেরিয়ে গেল বাড়ির উদ্দেশ্যে।কুহু হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল!রওনক ভাইয়ের চোখেমুখে স্পষ্ট বিরক্তি প্রকাশ পাচ্ছিল যেন!এই লোককে বোঝা সত্যিই মুশকিল!এতক্ষণ কেবল দায়িত্বের কারণেই কুহুকে নিয়ে এভাবে ছুটেছে?অথচ বোকা কুহু কত কিছু ভেবে বসে আছে!
•
সকালের নাশতা তৈরিতে ব্যস্ত শারমিন বেগম।ডাইনিংয়ে অপেক্ষা করছেন রাশেদ জামাল আর রিশা।মেয়ের সঙ্গে টুকিটাকি আলাপ করছেন রাশেদ জামাল।বেশিরভাগটা রওনকের বিষয় নিয়ে।ছেলেকে এভাবে বিয়ে করিয়ে যে বাবা-মা খুশি নয় সেটা বেশ বুঝতে পারছে রিশা।আগে প্রায়ই এই বিষয়টা নিয়ে ভীত থাকত সে!রওনক কিভাবে সামলিয়ে নিবে পরিবারকে?অথচ কত সহজে তাদের বিয়েটা হয়ে গেল!একদম অবাস্তব,অকল্পনীয় ভাবে!তবুও রিশার কোথাও একটা সন্দেহ কাজ করে।এর পেছনে রওনকের হাত নেই তো?নয়তো বিয়ের দিনই কেন বর উপস্থিত হবে না?ভাইয়া কি আবার ছেলেটাকে গুম করে দিল?কুহুর জন্যে সে সবই করতে পারে।এতে সন্দেহ নেই!যদিও এমন কিছু হয় তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।ভালবাসা এভাবে জয়ের পক্ষে নয় রিশা।সুযোগ পেলে অবশ্যই রওনককে জিগ্যেস করবে সে।টেবিলের উপর গরম গরম পরোটা আর আলু ভাজি রাখলেন শারমিন বেগম।অর্ধ বয়সী নারীর কপাল চুইয়ে পড়ছে ঘাম।পাশের চেয়ারে বসলেন তিনি।মায়ের ক্লান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে পরোটার প্লেট টেনে নিল রিশা।বাবার পাতে তুলে দিল।আজকে ঘুম থেকে জাগতে একটু দেরিই হয়ে গেছে তার।সকাল সকাল উঠলে হয়তো মাকে সাহায্য করতে পারতো।অবশ্য শারমিন বেগম কোনো কাজে হাত দিতে দেন না মেয়েকে।পরোটা ছিঁড়ে খানিকটা মুখে পুরে বললেন রাশেদ জামাল,
"ছেলের বউ তো এসেই গেছে।এখন আর কোনো কষ্ট করতে হবে না তোমাকে।কিছুটা দায়িত্ব কুহুকে বুঝিয়ে দিয়ো।
স্বামীর কথার প্রতিত্তোরে কিছু বলল না শারমিন বেগম।মনে শান্তি,আনন্দ থাকলে খুশিমনেই তিনি সংসারের ভার ছেলের বউয়ের হাতে অর্পণ করতেন।কেন জানি কুহুকে তিনি পুত্রবধূর স্থানে ভাবতেই পারেন না।রওনক যদি সবটা মানতে পারে তাহলে এখানে আর বলার কিছু থাকে না।শোভা পায় না।অবশ্য কুহুর সঙ্গে ছেলেটাও যেভাবে ও বাড়িতে পরে আছে।এতে বোঝা যায় এই বিয়েতে রওনকের কোনো আপত্তি ছিল না।সব যেন স্বাভাবিক!রিশা নিশ্চুপ খাওয়ায় মনোযোগী হলো।
◾
রাতে আফসানা বেগমের রুমটায় রওনক আর কুহুকে থাকতে দেওয়া হয়েছে।এই রুমের খাটটা মোটামুটি চওড়া।তবে লম্বায় কম।আগেকার দিনের খাট।কুহু ঠিকঠাক ঘুমাতে পারলেও রওনকের পা মেলতে কষ্ট হয়ে গেছে।সারারাত একটুখানির জন্যও ঘুমায়নি সে।সর্বক্ষণ কুহুকে নজরে রেখেছিল।নিজে ব্যাথা পেলেও বোধহয় এতটা কষ্ট হতো না রওনকের।গোটা এক রাত্র পাড় করেছে ঘুমন্ত কুহুর দিকে তাকিয়ে!সকাল হয়ে গেছে সেই কখন।এখনো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা।জানালার পর্দা টেনে রুম অন্ধকার করে রেখেছে রওনক।পাছে কুহুর ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে যায়!খানিকটা উবু হয়ে কুহুর কপালে পরে থাকা এলোমেলো চুলগুলো আলগোছে সরিয়ে দিল রওনক!ভারী নিশ্বাস পরছে কুহুর।ঘুমের অতল সায়রে সে।বেশ ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে রইল রওনক!এই মেয়েটাকে ভালবাসার নির্দিষ্ট কোনো ব্যাখা আজও দিতে পারেনি তার মন!কি ছিল কুহুর মাঝে?সরলতা?পাগলামো?কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি ফুটলো।
হঠাৎই ভীষণ অবাধ্যের মতো একটা কাজ করে বসল রওনক।কুহুর ঘুমের সুযোগ নিয়ে অধরোষ্ঠে আলত চুমু খেল।কিঞ্চিৎ নড়েচড়ে উঠল কুহু!দ্রুত উঠে বসল রওনক।ঘড়িতে তাকাতেই দেখল আটটা বাজে।ভার্সিটিতে যেতে হবে তাকে।ঘুমন্ত কুহুর দিকে শেষ বারের মতো তাকিয়ে উঠে বেরিয়ে গেল সে।তোহা অনেক্ক্ষণ আগেই নাশতা তৈরি করে নিয়েছে।রওনকে দেখেই ডাকল।রওনক জানাল সে বাড়িতে গিয়েই খেয়ে নিবে।এখন একদম সময় নেই তার।কালকের ভেজা কাপড় গুলো শুকিয়ে গেছে।সেগুলো কোনোরকম পাল্টে নিল রওনক।যাবার আগে তোহাকে বলে গেল কুহুর যেন খেয়াল রাখে।আফসানা বেগম তোহার সঙ্গে খানিকটা রাগ হলেন।রওনককে না খাইয়ে ছাড়ার জন্য।
•
বসার ঘরে খবরের কাগজ নিয়ে বসেছেন শারমিন বেগম।কলিং বাজতেই রিশাকে ডেকে বললেন খুলে দিতে।নিজের রুম ছেড়ে বেরিয়ে আসল রিশা।দরজা খুলে রওনককে দেখে খানিক যেন অবাকই হলো।পাশ কাটিয়ে ভেতরে চলে গেল রওনক।শারমিন বেগম নিশ্চুপ তাকিয়ে রইলেন।ছেলে একবার তাকানোর প্রয়োজনটুকু মনে করলো না!রিশা ছুটে গেল রওনকের পেছন পেছন।রুমের কাছে আসতেই রিশা প্রশ্ন ছুঁড়লো,
"ভাইয়া তোকে কিছু জিগ্যেস করার আছে।
ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল রওনক।পরক্ষণে জানাল এখন বেরোবে সে।কথা পরে শুনবে।রিশার চট করেই মনে হলো ভাইয়ার তো ভার্সিটি আছে।বেমালুম ভুলে গিয়েছিল সে!পরের ইয়ারের জন্য আজকে বই কিনতে বের হবে রিশা।রওনককে বলল বিকেলে একটু সময় দিতে তাকে।আজকে কোচিং নেই রওনকের।সপ্তাহে তিনদিন থাকে।এটা খুব ভাল করেই জানে রিশা।রওনক জানাল বিকাল পাঁচটায় ফ্রি হয়ে কল দিবে রিশাকে।অগত্যা সায় জানিয়ে চলে গেল রিশা।প্রশ্ন গুলো বিকেলের জন্য তোলা রাখল।
◾
সকাল দশটা নাগাদ ঘুম ভাঙ্গলো কুহুর।পাশে তাকাতেই দেখলো রওনক নেই!কিছুটা যেন চমকে উঠলো!কাল রাতে এ ঘরে যে লোকটার ঘুমাতে কষ্ট হয়েছিল সেটা বেশ বুঝতে পেরেছিল সে।কুহুর পায়ের জন্য কোণায় এইটুকু জায়গা নিয়ে কোনোরকম শুয়ে ছিল!আফসানা বেগম নাশতা হাতে মেয়ের রুমে আসলেন।চোখেমুখে এক তৃপ্তির হাসি লেপ্টে আছে।বিয়ের পর মেয়েকে সুখী থাকতে দেখলে বোধহয় সকল মায়েরই ভাল লাগে।কালকে থেকে আজকে পায়ের ফোলা ভাবটা অনেকটা কমে গেছে।তবুও ডাক্তার বলেছে সম্পূর্ণ রেস্টে থাকতে।ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে যেতে চাইল কুহু।আফসানা বেগম জানালেন মুখ ধোঁয়ার জন্য পানি আর ব্রাশ এনে দিবেন।কুহু যেন পড়লো মহা বিপত্তিতে!সে তো বাথরুমেও যাবে।হুট করেই তার মনে হলো রওনক ভাই থাকলে এক্ষুনি কোলে তুলে নিয়ে যেত!কোনো সমস্যাই হতো না!এখন একা যাবে কি করে সে?পরক্ষণে চোখমুখ খিঁচিয়ে নিয়ে স্বগোতক্তি করল,ছিঃ কুহু!এসব নির্লজ্জের মতো কি ভাবছিস?বেশরম লোকটার সঙ্গে থাকতে থাকতে তুই ও লাজহীন হয়ে যাচ্ছিস!ছেলে আয়াশকে কোলে নিয়ে কুহুর রুমে আসলো তোহা।ঠোঁটের কোণে মিটিমিটি হাসি।খানিকটা গলা ঝেড়ে বলল,
"কি ননদী?মুখটা শুকনো চিন্তিত লাগছে কেন?জামাইকে মিস করছো?
তোহার কথায় চোখ তুলে তাকাল কুহু।কোনো উত্তর দিল না।শব্দ করে হেসে বলল তোহা,
" হুম বুঝতে পারছি তোমার কষ্ট!ইশশ তোমার সুপার হিরো হাসবেন্ড এখানে থাকলে এক্ষুনি কোলে তুলে ওয়াশরুমে নিয়ে যেত!আমাদের গায়ে বাপু অত জোড় নেই।
"আ..আমার কি পা নেই?আমি একাই কত যেতে পারি!
নাক ফুলিয়ে বলল কুহু।ততক্ষণে পানি আর ব্রাশ নিয়ে চলে এসেছেন আফসানা বেগম।ছেলেকে শাশুড়ির কোলে দিয়ে বেরিয়ে গেল তোহা।পরক্ষণে এলবো সাপোর্ট হ্যান্ড স্টিক নিয়ে আসলো।কুহু হা করে তাকিয়ে আছে!এটা তো পঙ্গু মানুষরা ব্যবহার করে!তোহা জানাল ফুয়াদ এটা কিনে দিয়ে গেছে।রওনকের অবর্তমানে তো আর কুহুকে কোলে তোলার কেউ নেই!কুহু যেন খুশিই হলো খুব!স্টিক দু'টো হাতে নিয়ে নেমে গেল খাট থেকে।
•
বিকেল নাগাদ রওনককে নিয়ে বই কিনলো রিশা।বাড়িতে যাওয়ার জন্য বারংবার তাড়া দিচ্ছিল রওনক।বাড়িতে কুহুর চিন্তা হচ্ছে তার।ও বাড়ির কারো ফোন নম্বর নেই যে জিগ্যেস করবে।রিশা বায়না ধরলো বার্গার খাবে।না খেয়ে কোনোমতে যাবে না সে।বোনের আবদার পূরণ করতে রাজি হলো রওনক।রিশার উদ্দেশ্য প্রশ্নের উত্তর জানা।রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে বার্গার অর্ডার করলো রওনক।আর চারটা পার্সেল করতে বলল।রিশা বসলেও রওনক দাঁড়িয়ে রইল।হাত ঘড়ি দেখছিল বারবার।রিশা বুঝতে পারছে ভাই তার খুব তাড়া নিয়ে আছে।নতুন বউকে চোখে হারাচ্ছে!
" আমি তোর বিয়ের রহস্য জানতে চাই ভাইয়া!এখন তুই কাকতালীয় বলে চালিয়ে দিতে পারবি না।সত্যি করে বলতো ছেলেটাকে কি করেছিস তুই?কোনো ক্ষতি করিসনি তো?
সোজা প্রশ্ন রিশার।পাশ ফিরে তাকাল রওনক।ভেবেছিল রিশা বোধহয় ভুলেই গেছে বিষয়টা!ভাইয়ের চমকিত মুখের দিকে তাকিয়ে ফের বলল রিশা,
"তুই হয়তো এমন কিছুই ঘটিয়েছিস ভাইয়া!এটা না হয় বাবা-মা কে রাজি করাতে পারবি না বলে করেছিস।কিন্তু কুহু?ও কি মন থেকে মেনে তোকে বিয়ে করেছে?তুই তাকে ভালোবাসিস এটা তো জানালিও না!আমার মনে হয় দু'টো মানুষ মন থেকে রাজি না হয়ে বিয়ের মতো সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া উচিৎ নয়!বলতে গেলে তুই ছলচাতুরী করেছিস!বিয়ের দিনও কুহুর মুখে ভয়ানক চিন্তার ছাপ ছিল।তোকে বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছিল মেয়েটা!সব শেষে বিয়ে করে কি মনে হচ্ছে সার্থক তুই?এটাকে আদৌ পূর্ণতা বলে ভাইয়া?
·
·
·
চলবে.............................................