তুমি রবে নীরবে - পর্ব ০৯ - নাদিয়া সাউদ - ধারাবাহিক গল্প


রওনককে ধাক্কা দিয়ে কোনোরকম সোজা হয়ে দাঁড়াল কুহু।খানিকক্ষণ আগের গাওয়া গানের কথা মনে হতেই লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে!নিচু দৃষ্টি পায়চারি করছে।রিশার মনে অন্য ভয় ঢুকেছে!আশফিককে নিয়ে কি কিছু শুনে নেয়নি তো ভাইয়া?নীরবতা বিচ্ছিন্ন করে বলল রওনক,
"দুনিয়ার সব উদ্ভট কাজ তোমার দ্বারাই সম্ভব।ননসেন্স।পরীক্ষা শেষ হলেই পড়াশোনা একেবারে শেষ?সারাদিন এভাবে টইটই করে ঘুরলে রেজাল্ট তো খারাপ হবেই।

দৃষ্টি তুলে তাকাল কুহু।রওনকের কথায় অপমানিত বোধ করল।চোখেমুখে রাগ নিয়ে বলল,
" রেজাল্ট খারাপ হোক তাতে আপনার কি সমস্যা?মেয়ে মানুষ বিয়ে করে শশুর বাড়ি চলে যাব।এত পড়ে কি হবে?

কুহুর অকপটে বলা কথা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে রইল রওনক।এই ইডিয়ট মেয়ে কি বলে নিজেও বোধহয় জানে না।একে নিয়ে সারাজীবন পাড় করবে কি ভাবে রওনক?আধপাগল বানিয়ে ছাড়বে তাকে।কপালে আঙ্গুল ঘষে নিজেকে ধাতস্থ করার চেষ্টা করলো রওনক।আশফিকের সাথে কুহুর হাসিমুখে দাঁড়িয়ে কথা বলাটা ঠিক সহ্য হয় না তার।কি চলছে এই মেয়ের মনে কে জানে!যে করেই হোক কৌশলে এখন বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হবে তাঁকে।শারমিন বেগম কফি হাতে মেয়ের রুমে আসলেন।রওনককে দেখেই বললেন,
"তোর রুমে পেলাম না তোকে।আশফিককে কফি দিয়ে এসেছি।আর এই নে তোরটা।

নিশ্চুপ কফি হাতে তুলে নিল রওনক।শারমিন বেগম কুহুকে জিগ্যেস করলেন,কফি খাবে কিনা।হাসিমুখে নাকচ করে দিল কুহু।শারমিন বেগম বেরিয়ে গেলেন।কুহুর ভেতর পায়চারি হয়ে আছে।একটুখানি ফাঁকফোকর খুঁজছে আশফিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য।কিন্তু এই জল্লাদটার জন্য তো সময়ই মিলছে না!কুহুর হাবভাব বুঝতে পারছে রিশা।চিন্তায় গলা শুকিয়ে এসেছে তাঁর!না জানি কোন বিপত্তি ঘটে আজ।হাসার চেষ্টা করে ভাইয়ের উদ্দেশ্য বলল রিশা,
" আমার কিছু কেনাকাটা করার ছিল ভাইয়া।আজকে তো তোর ছুটির দিন।আমাকে শপিংয়ে নিয়ে যেতে পারবি একটু?

রিশার কথা শুনে চিন্তা দূরীভূত হলো কুহুর।যাক আশফিকের সঙ্গে কথা বলার একটা রাস্তা পাওয়া গেল অবশেষে!থমথমে মুখে চা'য়ে চুমুক রেখে বলল রওনক,
"ঠিক আছে,সন্ধ্যার পর তৈরি থাকিস।

রওনকের উত্তর শুনে মুখ চুপসে গেল কুহুর।রিশা সঙ্গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।সে যদি চলে ডালে ডালে, তার ভাই চলে পাতায় পাতায়।কুহুকে যে এখন এক মুহূর্তের জন্যও দৃষ্টি ছাড়া করবে না রওনক বেশ বুঝতে পারছে!

" তোরা সবাই এখানে?এদিকে আমি একা একা বোর হচ্ছি।আমাকে ডাকতিস তোরা।

আশফিকের ভরাট স্বরে কথা শুনে সকলে একত্রে তার দিকে দৃষ্টিপাত করল।রিশার চোখদুটো চঞ্চল হয়ে উঠল মুহূর্তে।আশফিক সামনে আসলেই অজানা এক অনুভূতিতে ভাসে সে।কুহুর ঠোঁটে সুক্ষ্ম দুষ্ট হাসি!রওনক কেবল একটা ছোট্ট হাসি ফিরিয়ে দিল আশফিককে।রিশার পুরো রুম হেঁটে হেঁটে দেখছিল আশফিক।খুব গোছানো আর পরিপাটি!আসবাব বলতে খাট,ওয়ারড্রব,পড়ার টেবিল আর ড্রেসিংটেবিল ছাড়া তেমন কিছুই নেই।কোণায় দু'টো বড়ো ফ্লাওয়ার ভাস রাখা।দেওয়াল সজ্জিত কত রকম ওয়ালম্যাট দিয়ে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা খুব শৌখিন!এই প্রথম রিশার রুমে এসেছে আশফিক।চারিদিকটা দেখে বেশ প্রশংসা করল সে।রিশা নিষ্পলক দৃষ্টি ফেলে আশফিকের কথা গুলো মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিল!প্রিয় জনের করা প্রশংসা নিশ্চয়ই আনন্দ বাড়িয়ে দেয়!এই মুহূর্তে রিশার মনে হচ্ছে,তার রুম সাজানো টা সার্থক!বেশিরভাগ সব কিছুই নীল রঙা!যেটা আশফিকের পছন্দের রঙ!টেবিলের উপর থেকে একটা ফটোফ্রেম হাতে তুলে নিল আশফিক।যেটাতে রিশার হাসিমাখা একটা ছবি!আশফিকের হাতে নিজের ছবি দেখে হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেল রিশার।কুহু আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে!শিকারি কি তবে নিজ থেকে ধরা দিচ্ছে?ছবিটাতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল আশফিক,
"সেই ছোট্ট রিশ!ছোট বেলায় আমি ধমকে দিলেই কেঁদে ফেলত!তারপর আমার সামনেই আসতো না ভয়ে!এবার এসে রিশ'কে দেখে আমি তো অবাক!কত বড়ো হয়ে গেছে!এবার আমি চলে গেলে তোর কথা খুব মনে পরবে রিশ।বিশেষ করে তোর রান্না করা চিকেনের কথা!আজীবন মুখে লেগে থাকবে!ভাল থাকিস তোরা।আর এই যে মিষ্টি কুহু!এই মেয়েটার সঙ্গে তোর আজীবনের একটা বন্ধন তৈরি হোক!বন্ধুত্ব থাকুন জনম জনম!

রিশা বেশ গভীর মনোযোগ নিয়ে শুনলো আশফিকের কথা।চলে যাবার কথা শুনেই বুকের ভেতর চিনচিনে ব্যাথা অনুভূত হলো তার!অথচ মুখে সেটুকু প্রকাশ করার কোনো উপায় নেই!জগতের নিয়ম বড্ড কঠিন!চোখ আপনাআপনি ঝাপসা হলো।রিশার ছবিটা ফটোফ্রেম থেকে খানিক বের করতে গিয়ে আচমকা থেমে গেল আশফিক!পরক্ষণে সেটা নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিল।দৃষ্টি তুলে তাকাল রিশার পানে।মেয়েটার চোখেমুখে আশ্চর্য রকম এক দুঃখ ছড়িয়ে আছে!এর মানে টুকু কি হদিস করতে পারল আশফিক?কি জানি পেরেছে হয়তো!মানুষের মন বোঝা দুষ্কর!চট করেই সবার মাঝে বলে উঠল কুহু,
"ছাদে যাবেন আশফিক ভাইয়া?

রিশা আশ্চর্য হয়ে তাকাল কুহুর পানে।রওনকের কপালে পরলো সুক্ষ্ম রাগের ভাজ।তৎক্ষণাৎ ইচ্ছে করে বেখেয়ালি হয়ে,নিজের হাতে থাকা মগের অবশিষ্ট কফিটুকু কুহুর শরীরে ফেলে দিল সে।চোখেমুখে টানল কৃত্রিম অপরাধের ছাপ!চোখমুখ বিশ্রিরকম কুঁচকে ফেলল কুহু।তাৎক্ষণিক হাতে ঝেড়ে নিতে নিতে বলল,
" কি করলেন এটা?এত বড়ো বড়ো গ্লাসের চশমা পরেও মানুষ চোখে দেখে না কি করে?ইশশ!কি দশা করেছে আমার জামাটার!

"বাড়ি গিয়ে চেইন্জ করে নাও

রওনকের কাঠ কাঠ জবাব!আশফিক পকেট থেকে রুমাল বের করে কুহুর উদ্দেশ্য বলল,
" এইটুকু কফির জন্য বাড়ি যেতে হবে না।মুছে নাও মিষ্টি।তারপর ছাদে যাচ্ছি আমরা।রিশ আর রওনক তোরাও চল।আড্ডা হয়ে যাবে।আমি তো বিকেলে চলেই যাচ্ছি।

রিশা রাজি হলেও রওনক কোনোরকম প্রতিক্রিয়া জানাল না।গটগট করে নিজের রুমে চলে গেল।নিজের রাগকে সামাল দেওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে।আর কয়েক সেকেন্ড দাঁড়ালে ভুলে যাবে আশফিক তার কাজিন হয়!নয়তো কুহুকে চরম মূল্য দিতে হবে এই বাড়াবাড়ির।আলতো হাতে জামার একপাশ থেকে কফি টুকু মুছে নিল কুহু।পরক্ষণে ছাদে যাওয়ার জন্য তাড়া দিল আশফিককে।এই মুহূর্তে রওনক তাদের সাথে যাচ্ছে না ভেবে আনন্দ হচ্ছে কুহুর!রিশা সমেত তিনজন ছাঁদে চলে আসল।রিশার দৃষ্টি একটুর জন্যও আশফিকের থেকে সরেনি!ইচ্ছে করছে মুখে বলে দিক,আপনার চলে যাওয়ার কথা শুনে আমার ভেতর পুড়ে যাচ্ছে আশফিক ভাই!অনুভূতি প্রকাশ না করা অব্ধি এই দহন কমবে না!মেয়েদের তো বুক ফাটে তবুও মুখ ফোটে না!

কাঠপাতা বেঞ্চিতে এসে বসল আশফিক।একপাশে রিশা দাঁড়িয়ে রইল।দুজনের মাঝবরাবর কুহু দাঁড়িয়ে।বুক ঢিপঢিপ করছে তার।যা হয় হোক,আজকে রিশার মনের খবর সে আশফিক ভাইকে জানিয়েই দিবে!লম্বা লম্বা দম নিল কুহু।দূরে নীলাভ আকাশে দৃষ্টি রেখে বলল আশফিক,
"কুহু বোধহয় আমাকে কিছু বলতে চাও!

আশফিকের কথা শুনে চমকে তাকাল কুহু!কৌতুহলী দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল রিশা।হাত-পা অসার হয়ে আসতে চাইল তার।এই মুহূর্তে কুহুকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয় সেটা ভাল করেই জানে।কাঙ্ক্ষিত কথাটুকু কি বলেই ফেলবে কুহু?পরিস্থিতি কি হবে এখন?গলা শুকিয়ে এলো।কুহু আমতাআমতা করে বলল,
" আপনি কি কাউকে ভালবাসেন আশফিক ভাই?

 আশফিক দৃষ্টি রাখল কুহুর পানে।একটুখানি হেঁসে বলল,
"তুমি আমাকে ঠিক কি বলতে চাও আমি বোধহয় কিছুটা ধারণা করতে পেরেছি মিষ্টি।তুমি খুব মিশুকে একটা মেয়ে কুহু।তোমাদের সঙ্গে এই একদিনে ভালই সখ্যতা গড়ে উঠেছে।ব্যাক্তিগত কথাও বলতে দ্বিধা নেই।আমার একজন পছন্দের মানুষ আছে।তার নাম জেনিথ।কানাডার বাসিন্দা।কিন্তু তার জাতীয়তা বাঙ্গালী।প্রায় একবছরের সম্পর্ক আমাদের।এই সবকিছু জানার পরেও যদি তুমি তোমার মনের কথা আমাকে জানাতে চাও তবে বলতে পারো।

সিঁড়িঘরে দাঁড়িয়ে আশফিকের বলা কথাটুকু শুনে নিল রওনক!রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসলো!ক্রোধে শরীর কাঁপছে!তারমানে কুহু মনের কথা জানাতে আশফিককে ছাঁদে ডেকেছে?কুহুর উত্তর শোনার জন্য আড়ালেই দাঁড়িয়ে রইল রওনক।

আশফিকের কথাটা বজ্রের মতো শোনাল রিশার কানে!পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে রইল সে।দমবন্ধ লাগছে!কুহুর চোখ ঝাপসা হয়ে উঠল!আশফিক ভাবছে,কুহু তাকে পছন্দ করে এটা স্পষ্ট!আড় চোখে রিশার দিকে তাকাল কুহু।আশফিকের দৃষ্টি শুভ্র রঙা ভেসে যাওয়া মেঘের ভেলায়!ঈষৎ রোদ উঁকি দিচ্ছে ফাঁকফোকর গলিয়ে!আশফিক খুব ভাল করেই জানে রিশার মনের কথা জানানোর জন্যই কুহু ডেকেছে তাকে।তখন ফটোফ্রেম থেকে রিশার ছবি বের করতে গিয়ে পেছনে নিজের একটা ছবি দেখতে পেয়েছিল আশফিক।রিশা তাকে পছন্দ করতো এই সন্দেহ টা আগেই ছিল একটু!আজকে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছে।সাতদিন থাকার ইচ্ছে হলেও থাকতে পারবে না আশফিক।রিশার কষ্টের বোজা বাড়ুক চায়না সে।তার পক্ষে কোনোদিনই সম্ভব না রিশাকে ভালবাসা!মনপ্রাণ জুড়ে শুধু জেনিথ!আর অনুভূতির ওপর কারও হাত থাকে না।

"আমি আপনাকে পছন্দ করতাম।এটা সত্যি।এই কথাটাই জানানোর ছিল।আপনি হয়তো বুঝেও গিয়েছেন এটা।

কুহুর কম্পনরত স্বর শুনে চমকে তাকাল আশফিক!এমন কিছু শোনার জন্য প্রস্তুত ছিল না।কুহুর গাল বেয়ে নামছে নোনা জল।রিশা বাকরুদ্ধ হয়ে গেল।সম্পূর্ণ ব্যাপারটা কত অনায়সে নিজের ওপর টেনে নিল কুহু!রিশাকে একটুখানিও ছোট করল না আশফিকের কাছে!পরিস্থিতি খুব নিখুঁত ভাবে সামলে নিল!ভাইয়া কি এই জন্যই মেয়েটাকে নির্বোধ বলে?এরকম বোকা মেয়ের প্রেমে না পরে থাকা যায়?ভাই যদি ভাগ্যক্রমে কুহুকে পেয়েও যায়,নিসন্দেহে সে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান পুরুষ!কুহুর উত্তরটুকু শুনে চোখ জ্বালা করে উঠল রওনকের।দৃষ্টি ঝাপসা হলো।বক্ষস্থল শুরু হলো তোলপাড়!কোনোরকম এলেমেলো পা ফেলে সিঁড়ি ভেঙ্গে নেমে গেল সে!

রোদের প্রখর বাড়ছে।চামড়া জ্বলসে দেওয়ার মতো!ছাদে আড়াআড়িভাবে কুহুর লম্বাটে ছাঁয়া পরেছে।সেদিকে স্থির দৃষ্টি রেখে তাকিয়ে আছে আশফিক।মেয়েটা ঠিক কতটা উদারমনা হলে,এতবড়ো একটা বিষয় নিজের ওপর টেনে নিতে পারে?রিশা নিসন্দেহে ভাগ্যবতী!এরকম বন্ধু সচরাচর মেলে না!তপ্ত শ্বাস ফেলে বলল আশফিক,
" ভালবাসা খুব অদ্ভুত জানো মিষ্টি!এটার ওপর কারো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।তোমার অনুভূতিকে আমি সম্মান জানাই।আমি বলবো এখনও অনেক কিছু বোঝার,শেখার বাকি আছে তোমার।আমাদের আড়ালে হয়তো অনেকেই নীরবে ভালবাসে।প্রকাশ না করলেও হয়তো বুঝে ফেলি আমরা,আচরণের কারণে।তোমার জন্যও হয়তো কেউ এক আকাশসম ভালবাসা নিয়ে অপেক্ষায় আছে মিষ্টি।তোমার মনের চোখ তা দেখতে পাচ্ছে না।কেন পাচ্ছে না সেটা বুঝতে পারছি না আমি। 

রিশা দাঁড়াল না হনহন করে নেমে চলে গেলে।এমুহূর্তে
ভীষণ কান্না পাচ্ছে তার।কুহু মেঝেতে দৃষ্টি রেখে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আশফিকের কথাগুলো বোধহয় তার কর্নকুহুর অব্ধি পৌঁছায়নি।মাথা ভনভন করছে!আশফিক তাকাল কুহুর পানে।রওনক যে কুহুকে ভালবাসে,এটা কালকে রাতে একটা ডায়েরি থেকে জানতে পেরেছে সে।গভীর রাতে ডায়েরি বুকে নিয়েই ঘুমিয়ে পরেছিল রওনক।সেই ডায়েরিটাই পড়েছিল আশফিক।তবে তার মনে হয়েছে কাউকে ভালবাসলে অনুভূতি এভাবে চেপে রাখা উচিৎ নয়!এই যে রিশা তাকে অনেক আগে থেকেই ভালবাসতো,যদি এটা আগেই প্রকাশ করতো,তবে জেনিথের সঙ্গে হয়তো প্রনয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠতো না আশফিকের।গল্পটা ভিন্নও হতো!হাত ঘড়িতে চোখ রাখল আশফিক।খানিকক্ষণ পরেই চলে যাবে সে।এখন মনে হচ্ছে এখানে আসাই তার চরম ভুল হয়েছে।কুহু মেয়েটা হয়তো দৃষ্টি তুলে কখনও তাকাতেও পারবে না আশফিকের দিকে।অথচ সে সম্পূর্ণ নির্দোষ!

!!১৪!!

বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে রওনক।কেমন হাঁসফাঁস লাগছে তার।আশফিক তো কুহুকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবুও ভেতরের কষ্ট একটুখানিও কমছে না!অস্থির লাগছে।তার অনুভূতিটুকু কি একটুও বুঝতে সক্ষম হলো না মেয়েটা?কুহুর এমন পরিবর্তন মানতে পারছে না রওনক।মস্তিষ্ক এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে!কুহুর মতো নম্র,লাজুক সরলমনা মেয়ে অকপটে কোনো পুরুষকে মনের কথা জানাতে পারে,এটা অকল্পনীয়!মানুষের মন বোঝা সত্যিই দূরহ!রাগে কপালের রগ ফুলে উঠলো রওনকের।স্বগতোক্তি করলো সে,
"ইহজনমে আমি তোমাকে নিজের মনের কথা জানাব না মেয়ে।যতক্ষণ না তুমি নিজে থেকে আমাকে কাছে টেনে নিবে,মনের কথা বলবে।
·
·
·
চলবে..................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন