রাত্র প্রহর।আকাশে অগণিত নক্ষত্রের ছড়াছড়ি।চাঁদটা কেবল একা নিঃসঙ্গ!ঠিক রিশার মতো!জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে রিশা।চোখের জল কপোলে শুকিয়েছে!অনিশ্চিত কিছু নিয়ে বোধহয় বেশি আশা করা ঠিক না!পরে আশাহত হলে,সইবার মতো ক্ষমতা থাকে না।আশফিক ভাইকে ফেসবুকে তো কোনোদিন তেমন কিছু পোস্ট করতে দেখেনি রিশা!জেনিথ নামের কোনো মেয়ের সঙ্গে রিলেশনে থাকলে,একদিন হলেও নিশ্চয়ই ছবি পোস্ট করতো মেয়েটার সঙ্গে!খানিক্ষন আগে আশফিকের আইডি তন্নতন্ন করে ঘেঁটেও তেমন কিছু মিলেনি।মন বলছে সব মিথ্যে বলেছে আশফিক ভাই!লোকটা তো টের পাচ্ছে না কেউ একজন যে তার জন্য ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে যাচ্ছে!কথাটুকু ভাবতেই চোখ ভিজে উঠলো আবার।রাতের আহারের জন্য মেয়েকে ডাকলেন শারমিন বেগম।রুমের ভেতর থেকেই জানিয়ে দিল রিশা,সে আজকে খাবে না।অগত্যা আর মেয়েকে বিরক্ত করলেন না শারমিন বেগম।খাবার গুছিয়ে তুলে রাখলেন।
•
খাটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে আছে রওনক।হাতে কুহুর একটা ছবি।বেশ প্রাণোচ্ছল আর হাসিখুশি লাগছে মেয়েটাকে!কি আছে এই মেয়ের মধ্যে?বুঝতে পারে না রওনক!পৃথিবীতে এত এত মেয়ে থাকতে,তার অনুভূতিটুকু কেন এই মেয়েকে ঘিরেই জন্মালো?যে কিনা অনুভূতি বোঝার ক্ষমতা রাখে না!একদম শুরুতেই কুহুকে দেখে ভালবাসা জন্মে গিয়েছিল এমন নয়।মেয়েটা সবসময় একটা না একটা উদ্ভট কাজ করতোই!রওনক প্রচন্ড বিরক্ত,রাগ হলেও তা একসময় ভালবাসায় রূপ নিয়েছিল!পৃথিবীর সবচেয়ে অত্যাশ্চর্য বোধহয় ভালবাসার অনুভূতি!এটা কখন কার জন্য হয়ে যায়,বলা দায়।পরিস্থিতির এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে রওনক,না কুহুকে ভোলা সম্ভব আর না ছেড়ে দেওয়া!আজকের ঘটনা তার অন্তরকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে!কতটা আঘাত করেছে হৃদয়ে, সেটা কুহুর ধারণার সহস্র মাইল বাহিরে!ছবিটা বালিশের তলায় রেখে উঠে বসল রওনক।বক্ষস্থল ভার হয়ে আছে এখনও!কুহু না চাইলেও তাকে রওনকের হতে হবে!হোক সেটা যে কোনো উপায়ে,যে কোনো পরিস্থিতিতে!খাট থেকে নেমে রিশার রুমের দিকে গেল রওনক।দরজার বাইরে থেকে নক করলো।ভাইয়ের শব্দ পেয়ে চোখ মুছে এগিয়ে গেল রিশা।একবার তো সে বলে দিয়েছে খাবে না।তাহলে কেন ভাইয়া তাকে ডাকতে আসলো?দরজা খুলতেই রওনকের বিধ্বস্ত চোখেমুখে দৃষ্টি আঁটকাল রিশার!কেমন উদভ্রান্তের মতো লাগছে রওনককে!চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপাল ছুঁয়ে আছে।চশমা বিহীন চোখে দৃষ্টি রেখে বলল রিশা,
"কিছু বলবি ভাইয়া?
" কয়েকটা কথা বলার ছিল।
শান্ত শীতল স্বর রওনকের।দরজা থেকে সরে দাঁড়াল রিশা।ভাইকে রুমে প্রবেশ করার অনুমতি দিল।রুমে এসে চেয়ার টেনে বসল রওনক।রিশার দিকে তাকিয়ে বলল,
"তোকে যেদিন কুহুর কথা বলেছিলাম মনে আছে তোর?সেদিন সোজাসাপ্টা বলেছিলাম,মেয়েটাকে আমার ভাল লাগে।তুই শুধু একটু নজরে রাখবি,যেন কোনো ছেলের সঙ্গে না জড়ায়।যেহেতু কুহু তোর বেস্টফ্রেন্ড।
ভাইয়ের কথা শুনে কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলল রিশা,
" হ্যাঁ বলেছিলি।কিন্তু কুহু কি কিছু করেছে?
চোখমুখ কাঠিন্যে করে ফের বলল রওনক,
"কুহুকে যখন পছন্দ করতাম,তখন সে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।আর ওইটুকু বয়সে মনের কথা জানানোর মতো উপযুক্ত সময় আমার মনে হয়নি।এতদিন অবধিও বলিনি কারণ কুহু কখনো কোনো ছেলের সঙ্গে জড়ায়নি,ভদ্র স্বভাবের ছিল তাই।আর আমাদের মাঝে ঝগড়ার একটা তিক্ত সম্পর্ক তো আছেই!এ যাবৎ কুহু যখন কোনো ছেলের প্রেম নিবেদন গ্রহণ করেনি,নিসন্দেহে আমাকেও প্রত্যাখান করতো।সেজন্য অনুভূতিটুকু নীরবে নিজের মাঝেই বাঁচিয়ে রেখেছি।
ভাইয়া যে কুহুকে এত আগে থেকে ভালবাসতো এটা জানা ছিল না রিশার।এসএসসির পরপরই জেনেছে সে।কিন্তু হঠাৎ এসব কথা কেন বলছে রওনক,বুঝতে পারছে না রিশা।ক্রমেই অজানা এক সন্দেহ তাকে গলাধঃকরণ করে নিচ্ছে।
"হ্যাঁ,এসব তো অনেক আগের কথা।নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার কি আছে?
"দরকার আছে।কুহু আশফিককে পছন্দ করে ফেলেছে সেটা আমাকে কেন জানাসনি তুই?এখন আবার এটা বলিস না,এসব তুই জানতিস না।কুহুর মতো একটা লাজুক,ভদ্র ধাঁচের মেয়ে,যে কিনা সোজাসাপ্টা মনের কথা জানিয়ে দিল একটা অজানা ছেলেকে!তাও একদিনের পরিচয়ে!মানা যায় এটা?ছাদে তোদের কথা আমি সবই শুনেছি।
রওনকের কথা শুনে মাথা ভনভন করে উঠল রিশার!সর্বনাশ!পরিস্থিতি মারাত্মক বেহাল দশায় চলে গেছে!এখন কি করে সামলাবে রিশা?গলা শুকিয়ে এলো তার!কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয়,সেখানেই সন্ধ্যে হয়!এখন কি করে বোঝাবে,রিশার হয়ে আশফিককে এসব বলেছে কুহু?বার কয়েক চোখের পাতা ঝাপটে নিয়ে আমতাআমতা করে বলল রিশা,
" আ,,,আরে তু,,,ই ও না ভাইয়া!সব কথা এত সিরিয়াস নিতে হয়?কুহুর মতো মেয়ে কোনো ছেলেকে প্রপোজ করবে,এটা তো নিজ কানে শুনলেও তোর বিশ্বাস করার কথা না।কারণ তোর চেয়ে ভাল কুহুকে কে জানে?
"রিশ!অযথা কথা বাড়ছে।আমার কথার উত্তর চাই।
" ডে,,,,ডেয়ার ছিল।আরে আমি কুহুকে ডেয়ার দিয়ে বলেছিলাম আশফিক ভাইকে প্রপোজ করে দেখা।আরে এসব তো মজা ছিল!আমার ভাইটা বোধহয় সব সত্য ভেবে,চিন্তায় নিজের অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে!আমি সবসময় কুহুকে নজরবন্ধী রাখছি।কোনো ছেলের সঙ্গে জড়ানোর সুযোগ আছে নাকি ওর?
কিয়ৎক্ষণ রিশার দিকে তাকিয়ে রইল রওনক।বোনকে আচমকা কেমন অস্থির,অশান্ত লাগছে।শক্ত দৃষ্টি রেখেই বলল রওনক,
"আমি বলবো তোর এই ডেয়ারটা খুব বাজে ছিল রিশ।তুই আশফিকের সামনে কুহুকে ছোট করে দিলি!কারো অনুভূতি নিয়ে এরকম মজা করা উচিৎ নয়!কুহু যদি একবারও বুঝতো আশফিককে এইসব কথা বলার মানে কি দাঁড়ায়,তাহলে কখনই তোর ডেয়ার টা ও নিতো না।মেয়েটা অজান্তে নিজের অনুভূতিকে সস্তা বানিয়ে দিল।
রওনকের কথায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে রিশা।সত্যিই সে কুহুকে অনেক ছোট করে দিয়েছে!আশফিক ভাই যদি জানতো রিশা'ই তাকে পছন্দ করে তাহলে আহামরি কোনো ক্ষতি হতো না। ভাইয়াও এতখানি কষ্ট পেত না।বহু কষ্টে কান্না চেপে রাখল রিশা।চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে বলল রওনক,
" ওই নির্বোধ মেয়ের দায়িত্ব অতিসত্বর আমাকেই নিতে হবে।যতদিন না নিজের কাছে নিয়ে আসতে পারছি।দুদণ্ড শান্তি দিবে না আমাকে।আজকে যে কান্ড ঘটিয়েছে,দেহ থেকে আত্না উড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল আমার।
কথাটুকু বলেই চলে গেল রওনক।রিশা দৃষ্টি তুলে তাকাল।ভাইয়ার কাছে মিথ্যা বলাতেও কেমন অপরাধবোধ হচ্ছে!সবকিছু মিলে তার মস্তিষ্ক এলোমেলো হয়ে আছে!
!!১৫!!
পরীক্ষা শেষ হয়েছে প্রায় মাস খানেকের বেশি সময় হয়েছে।আজকে ফল প্রকাশের দিন।সকাল থেকেই বেশ উত্তেজিত হয়ে আছে কুহু!হাতে ফোন নিয়ে বসে আছে,কখন ওয়েবসাইটে রেজাল্ট পাবলিশ হবে।আফসানা বেগম মেয়ের পায়চারি খেয়াল করছেন।কোনোকালে তো পড়াশোনা নিয়ে এত সিরিয়াস হতে দেখেনি তাকে।তোহা বারংবার খেয়ে নেওয়ার কথা বলছে কুহুকে।পরীক্ষা তো দিয়েই ফেলেছে।এখন রেজাল্ট নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করলে তো হবে না।না খেলে শরীর খারাপ করবে।ভাবীর কোনো কথা কানে তুলল না কুহু।তার তো এবার আশা আছে অনেক ভাল রেজাল্ট করবে!তারপর জল্লাদটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গিয়ে ইচ্ছেমতো কথা শুনিয়ে আসবে!এই ক'দিন কেন জানি রওনককে তেমন কথা বলতে দেখেনি কুহু।কোনোরকম ঝগড়াও করেনি তার সঙ্গে!কি জানি মাথায় সুবুদ্ধির উদয় হচ্ছে হয়তো!ফোনের রিংটোন বাজতেই ভাবনার ঘোর কাটলো কুহুর।রিশার ফোন।কিন্তু এই মুহূর্তে রিসিভ করবে না কুহু।ভাল মতোই জানে রিশা তাকে যাওয়ার জন্য ফোন করেছে।রেজাল্ট জানার আগে বাঘের গুহায় যাচ্ছে না কুহু!ফুয়াদ তৈরি হয়ে আসল বসার রুমে।এক্ষুনি কাজে বেরোবে সে।কুহুর অস্থিরতা দেখে একগাল হেসে বলল,
"রেজাল্ট নিয়ে এত উত্তেজিত হয়ে কাজ নেই তোর!যা রেজাল্ট করিস এতে তো কাজের বুয়ার চাকরিও পাবি না।তারচে ভাল শশুড় বাড়ি গিয়ে জামাইয়ের সেবা করবি।
ছেলের কথা শুনে মিটিমিটি হাসছেন আফসানা বেগম।কুহু চোখমুখ বিশ্রিরকম কুঁচকে ফেলল।ভাই সবসময় তাকে খুঁচিয়ে কথা বলে।শুধু ভাল রেজাল্ট আসুক একবার!সবার কথার দাঁতভাঙা জবাব দিবে কুহু!তোহা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হলো।ওয়েবসাইটে রেজাল্ট আসতেই চেঁচিয়ে উঠলো!কুহুর আত্না কেঁপে উঠলো!কোনোরকম তোহার হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে রেজাল্ট দেখলো সে।ফুয়াদ আর আফসানা বেগম তাকিয়ে আছে তোহার মুখের দিকে!কেমন ফ্যাকাশে লাগছে!কুহু স্তব্ধ হয়ে আছে!শুকনো ঢোক গিলে বলল তোহা,সিজিপিএ ২.২৬ পেয়েছে কুহু!ফুয়াদ অট্টহাসিতে ফেঁটে পরলো!কুহুর মুখখানা চুপসে গেল!এরকম বাজে রেজাল্ট হওয়ার মতো পরীক্ষা তো সে দেয়নি!সোফায় ফোন ছুঁড়ে ফেলে হাতপা তুলে বসে রইল কুহু।মনে হচ্ছে পড়াশোনা তাকে এবার ইস্তফা দিতেই হবে!চোখ জলে ভেসে উঠলো!ছেলে আয়াশকে কোলে তুলে নিয়ে,বোনের সামনে এসে দাঁড়াল ফুয়াদ।মাথায় হাত বুলিয়ে নিয়ে বলল,
" তোর চাকরী করতে হবে কেন?আমি আছি তো সংসারের হাল ধরতে!মাকে দেখার জন্য যতেষ্ট নই আমি?বরং তোকে ভাল ঘরে বিয়ে দিতে পারলে আমাদের শান্তি।তোর পরীক্ষার আগে একটা সম্মন্ধের কথা বলেছিলাম না?তারা কালকে আসতে চাইছে।ছেলে কলেজে চাকরি করে।খুব ভদ্র।
ভাইয়ের কথা শুনে মাথা নিচু করে বসে রইল কুহু।মনে হচ্ছে তার মতো অকর্মার ঢেঁকির বিয়ে করে ফেলাই উত্তম!পাশ থেকে ছেলের কথা শুনে ভীষণ খুশি হলেন আফসানা বেগম।এই সম্মন্ধ টা এখনো তার মেয়ের অপেক্ষায় আছে!কুহুর মতামত জানতে চাইলো তোহা।সোফা থেকে থেকে নেমে বলল কুহু,
"তোমাদের যা ইচ্ছে হয় করো।
কথাটুকু বলেই মোবাইল হাতে নিয়ে রুমে চলে গেল কুহু।উপস্থিত সবাই খুব খুশি হলো কুহুর কথায়!মানে অবশেষে মত দিল মেয়েটা!তোহা তো জোড় গলায় বলেই ফেলল,কুহুকে তাদের পছন্দ হবেই!এক দেখাতেই পুত্রবধূ করে নিয়ে যেতে চাইবে তারা।ফুয়াদ জানাল,ঢাকায় ছেলের বোনের বাড়িতে থাকে সে।গ্রামে বাবা,মা আছেন।কালকে ছেলের বোন আর বোন জামাই নিয়ে আসবে।তাদের পছন্দ হলেই বাকি কথা এগোবে।
•
বিয়ের কথা শুনেই আচমকা মন আরো দ্বিগুণ খারাপ হয়ে গেল কুহুর।চোখ ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে বারবার।অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে!তবে এবার ভাইয়ের মুখের উপর না বলতে পারলো না সে।নিজের তো পছন্দের কেউ নেই,তাহলে অযথা তাদের কষ্ট দিয়ে কি হবে?আর যে রেজাল্ট করেছে,এতে জোড় গলায় কিছু বলতেও পারবে না!হাতে থাকা ফোনটা বেজে উঠলো কুহুর।স্ক্রিনে রিশার নাম।এতক্ষণে জল্লাদসহ রিশা যে তার রেজাল্ট জেনে গেছে,এতে সন্দেহ নেই!এই মুখ নিয়ে রিশাদের বাড়ি যাবে কি করে কুহু?আচমকা তার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল।দমবার মতো পাত্রী তো সে নয়।বিয়ের খবরটা অবশ্যই বড়ো মুখ করে বলেই আসতে পারে।ভাবনা মোতাবেক রিশাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো সে।
!!১৬!!
রাশেদ জামাল মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে বাড়ি এসেছেন।মেয়ে তার খুব ভাল রেজাল্ট করেছে।খুশির অন্ত নেই তার।রিশা প্যাকেট খুলে আগে বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে দিল।তারপর মায়ের মুখে তুলে দিল।কিছুটা দূরে হাতভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে রওনক।বোনের ভাল ফলাফলে আনন্দ হচ্ছে তার তবে কোথাও একটা খারাপ লাগার রেশ রয়ে গেছে।কুহুর ফলাফল খুব একটা ভাল হয়নি।নিশ্চয়ই মন খারাপ করে ঘরে বসে আছে মেয়েটা!রিশাকে দিয়ে বার বার ফোন করিয়েছে রওনক।বলেছে কুহু আসলে তাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে যেন মন ভাল করে দেয়।মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে ভাইয়ের সামনে এসে দাঁড়াল রিশা।হাসিমুখে একটা মিষ্টি তুলে নিল রওনক।তক্ষুনি সদর দরজায় কুহুর আগমন হলো।বেশ ফুরফুরা মেজাজেরই লাগছে তাকে।ভ্রু কুঁচকে তাকাল রওনক।বসার ঘরে প্রবেশ করে রাশেদ জামালের উদ্দেশ্যে সালাম জানাল কুহু।পরক্ষণে রিশা কুহুর হাত ধরে রুমে নিয়ে চলে গেল।আয়েশী ভঙ্গিতে খাটে বসল কুহু।পাশে রিশাকে বসতে বলল।পরক্ষণে
প্যাকেট থেকে মিষ্টি তুলে নিয়ে মুখে পুরে চিবুতে চিবুতে বলল,
"দারুণ একটা নিউজ আছে রিশু জানু!
রিশা কিছু বলার পূর্বেই রওনকের আগমন হলো।কুহুর দিকে তাকিয়ে বলল সে,
" রেজাল্ট খারাপ করেও দূর্দান্ত ভাবে উল্লাস করা যায় তাহলে!
ঘাড় ঘুরিয়ে ভাইয়ের দিকে তাকাল রিশা।এখন তো মনে হচ্ছে সে নিজেই এসে পরেছে কুহুর মন খারাপ করে দিতে।ত্যাড়া কথা না বললেই নয়।কুহু অবাক হলো রওনকের খোঁচা শুনে!এই কয়দিন তো ভালই চুপচাপ ছিল!আজকে যেই সুযোগ পেয়েছে ওমনি ঝগড়া করার জন্যে চলে এসেছে বদের হাড্ডিটা!রিশার দিকে তাকিয়ে বলল কুহু,
"তোর ভাইকে বলে দে,আমি অন্য কারণে মিষ্টি মুখ করে উল্লাস করছি।কালকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসছে আমাকে।পছন্দ হলে একেবারে বিয়ে করে নিব বুঝলি!এসব পড়াশোনা আর করবো না!অন্তত তোর ভাইয়ের কাছ থেকে রেহাই পাব।
রিশা যেন সপ্তম আকাশ থেকে টুপ করে মাটিতে পরলো!দ্রুত ভাইয়ের দিকে তাকাল সে।কুহুকে দেখতে আসছে কালকে!বিষয়টা রিশারই হজম হচ্ছে না!যদি পাত্রপক্ষের পছন্দ হয়ে যায়?বিয়ে তো আঁটকাবে কি করে রওনক?
·
·
·
চলবে............................................