প্রেমান্বেষা - পর্ব ১৭ - সারা মেহেক - ধারাবাহিক গল্প


নীলিমার দৃষ্টিজোড়া মোমের আলোয় নিবদ্ধ। ওদিকে স্মরণের দৃষ্টিজোড়া আবদ্ধ নীলিমার সুললিত তেজোহীন মুখশ্রীতে। তার চোখের পলক পড়ছে না। দৃষ্টিতে শুধুই একরাশ মুগ্ধতা। প্রথম প্রেমে পড়ার মুগ্ধতা। 

" মোম আনতে গিয়ে কই গায়েব হয়ে গেলি নীলু?"

রাফার কণ্ঠে চকিতে ধ্যান ফিরলো স্মরণের। অকস্মাৎ চমকে ওঠায় হাত থেকে মোম পড়তে পড়তে সামলে নিলো সে। নীলিমা তার এহেন কান্ডে মৃদু হেসে বললো,
" কি? ভয় পেয়ে গেলেন বুঝি?"

স্মরণ বোকাসোকা হেসে বললো,
" না সেটা না।
আচ্ছা, হ্যারিকেনটা জ্বালাবে না?"

নীলিমা ঘাড় ঘুরিয়ে হ্যারিকেনের দিকে চেয়ে বললো,
" হুম জ্বালাবো। আপনি একটু এদিকটায় আসুন৷ জানালার বাতাসার জন্য হাত সরালেই মোম নিভে যাবে।"

নীলিমার কথা মতো স্মরণ এগুলো, আর নীলিমা পিছালো। হ্যারিকেনের কাছে এসে নীলিমা স্মরণের হাত হতে মোমবাতি নিয়ে সেই আগুনেই হ্যারিকেন জ্বালালো। হ্যারিকেনের আলোয় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আবছায়া রান্নাঘর প্রায় পূর্ণ আলোয় ছেয়ে উঠলো। এ আলোয় নীলিমার ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির রেখা ফুটে উঠলো। নির্দ্বিধায় স্মরণ এ হাসি চেয়ে দেখলো, যেনো তাকে বাঁধা দেয়ার কেউ নেই এ জগত-দুনিয়ায়। 

হ্যারিকেনের কাঁচ বন্ধ করে নীলিমা স্মরণের হাতে মোম দিয়ে বললো,
" নিন, মোমটা আপনি নিয়ে যান। হ্যারিকেনটা আমি নিয়ে যাচ্ছি।"

স্মরণ বিনা বাক্যে মোমটা হাতে নিলো। ঠিক তখনই মোম গলে তার বৃদ্ধাঙ্গুলে পড়লো। মুহূর্তেই চিনচিনে ব্যাথায় বাম হাতে মোম নিয়ে ডান হাত পিছিয়ে নিলো সে। মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো মৃদু আর্তনাদ। মুখচ্ছবিতে ফুটে উঠলো বেদনাদায়ক অনুভূতি। 
স্মরণের এ আর্তনাদ নীলিমার মস্তিষ্কে উৎকণ্ঠা তৈরি করলো। ক্ষণেই নীলিমা হ্যারিকেন রেখে স্মরণের হাত থেকে মোমবাতি কেড়ে নিলো। রান্নাঘরের তাকে মোমবাতি রেখে উদ্বেগ নিয়ে শুধালো,
" হাত পুড়ছে?"

উত্তপ্ত মোমের গলিত অংশ প্রায় শক্ত হয়ে এসেছে। ফলে পূর্বের তুলনায় ব্যাথা খানিক কম হচ্ছে। তবে শিরশির করে পুড়েছ। মন্থর গতিতে পুড়ছে। এই ক্ষীণ ব্যাথার অনুভূতিতেও স্মরণ দেখালো, তার হাত যেনো জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। ব্যাথায় 'আহ, উহ' শব্দ করে যাচ্ছে। 
এদিকে চিন্তায় নীলিমার চোখেমুখে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। সে দ্রুত স্মরণের আঙুল থেকে মোমের অংশটুকু তুলে নিলো। দ্রুত গিয়ে ফ্রিজ থেকে বরফ এনে স্মরণের আঙুলে চেপে ধরলো। মুহূর্তেই যেনো স্বস্তির অনুভূতি এসে জুড়ে বসলো সেখানে। নীলিমা সেই মোমের আলোতেই দেখলো স্মরণের ফর্সা আঙুলটা লালচে হয়ে গিয়েছে। যেনো নিজেই আঘাত পেয়েছে এমন ভঙ্গিতে বললো,
" ইশ, আঙুলটা পুরো লাল হয়ে গিয়েছে! একটু সাবধানে মোম হাতে নিবেন তো!"

স্মরণ আলতো হাসলো। নীলিমার এই উৎকণ্ঠিত স্বর ও মুখাভঙ্গির সঙ্গে সে পরিচিত বহু আগে থেকেই। ছোটবেলা থেকেই নীলিমা তার ব্যাথায় যেনো নিজে ব্যথিত হতো। স্মরণের এখনও মনে আছে, নীলিমা সে বছর ক্লাস সেভেনের বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। স্মরণ তখন এডমিশনের পড়ায় মগ্ন৷ এমতাবস্থায় একদিন সাইকেল চালাতে গিয়ে পিচ ঢালা রাস্তায় পড়ে পায়ের অনেকাংশ বাজে ভাবে ছিলে গিয়েছিলো। সে সময় মায়ের বকুনি থেকে বাঁচতে স্মরণ কাউকে এ ব্যাপারে জানায়নি। কিন্তু নীলিমা ঠিকই উঠোনে গিয়ে স্মরণের নিজ হাতে ধোয়া প্যান্টে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করেছিলো। পরে বেশ জোরাজোরি করায় স্মরণ নিজের পায়ের কথা বলেছিলো। সেসময় নীলিমার উদ্বেগ, অস্থিরতা দেখে স্মরণ হেসেছিলো। চোখের কোনে জমে থাকা নোনাজল দেখে হেসেছিলো। কিন্তু আজ মুগ্ধ হচ্ছে। নীলিমার এই দুশ্চিন্তা, আকুলতা তাকে অন্য রকমের স্বস্তি দিচ্ছে। 
স্মরণের এই হাসি দেখে নীলিমা মৃদু ধমকের সুরে বলে উঠলো,
" আবার হাসছেন কেনো? ব্যাথা কম পেয়েছেন নাকি?"

স্মরণ মুহূর্তেই ঠোঁট চেপে ধরলো। মৃদু গোঙানিতে কপট ব্যাথার ভান করে বললো,
" উঁহু উঁহু। মোটেও কম ব্যাথা পাইনি। খুব পুড়ছে, দেখছো না?"

নীলিমা বরফ চেপে ধরে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। বললো,
" ব্যাথা বুঝি দেখা যায়? আমি কি করে বুঝবো আপনার হাত পুড়ছে কি না?"

স্মরণ ভ্রু নাচিয়ে বললো,
" কেনো বুঝবে না? শুনেছি ভালোবাসলে নাকি অপর মানুষটার আঘাতও অনুভব করা যায়। তুমি আমার ব্যাথা অনুভব করতে পারছো না?"

থমকে যায় নীলিমা। হাতখানা থেমে যায় আকস্মিকভাবে। রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে পড়ে স্মরণের পানে চেয়ে থাকে ক্ষণিকের জন্য। তার দৃষ্টিতে মৃদু কুণ্ঠাবোধ। বক্ষপিঞ্জরের যন্ত্রটা দ্রিমদ্রিম শব্দে স্পন্দিত হচ্ছে।। হলদে মোলায়েম আলোয় নীলিমার চাহনি ও মুখশ্রী উভয়ই স্মরণের বুকের ভেতর উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। নতুন প্রেমের উষ্ণতা। তার হৃৎস্পন্দনও ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে। পড়ছে না চোখের পলক। এভাবে দুজনের মাঝে কেটে যায় ক্ষণিক মুহূর্ত। নীলিমা স্মরণ হতে দৃষ্টি হটাতে পারে না। যেনো এই পুরুষটা কোনো এক মোহনীয় শক্তি দিয়ে তাকে কাবু করে রেখেছে। স্মরণের দৃষ্টি অন্যরকম। ঐ চাহনিতে একবার হারিয়ে গেলে নীলিমা বোধহয় নিজেকে আর খুঁজে পাবে না। চিরতরে হারিয়ে যাবে স্মরণের ঐ গাঢ়, নিবিড় চাহনিতে। 
স্মরণ এবার নিষ্পলক চাহনিতে চেয়ে গুনগুনে মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করে,
" নীলি? পারছো না আমার ব্যাথা অনুভব করতে? ভালোবাসো না আমায়?"

স্মরণের কণ্ঠস্বর কর্ণপাত হওয়া মাত্র নীলিমার টনক নড়ে। এক ঝটকায় পিছিয়ে আসে সে। অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে সে। কণ্ঠে প্রকাশ পাচ্ছে তীব্র বিব্রতবোধ,
" উল্টোপাল্টা প্রশ্ন বন্ধ করুন স্মরণ ভাই।"
বলেই সে দৃষ্টি নামিয়ে দ্রুত আরেকটু পিছিয়ে হ্যারিকেন নিয়ে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গেলো সে। বুকটা এখনও মাত্রাতিরিক্ত লাফাচ্ছে। মনে হচ্ছে এক্ষুণি খাঁচা ছেড়ে পালিয়ে যাবে। 
হ্যারিকেনের আলোয় রুম অব্দি আসার পর নীলিমা দেখলো রুমে কেউ নেই। এ নিয়ে খটকা লাগতেই অন্যান্য রুমে উঁকি দিয়ে দেখলো, কোনো রুমেই জনগণ নেই। ওদিকে উঠোন হতে খিলখিলিয়ে হাসার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। হ্যারিকেন নিয়ে উঠোন অব্দি আসতেই দেখলো বাড়ির প্রতিটি সদস্য উঠোনে উপস্থিত। কেউ পাটিতে বসে তো কেউ চেয়ারে বসে। চলছে চরম এক আড্ডা। নীলিমা দ্রুত এগিয়ে যায় আড্ডার মধ্যে। লিলি বেগম এতক্ষণ বাদে মেয়েকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
" কি রে নীলু? কোথায় ছিলি এতক্ষণ? "

নীলিমা চট করে খানিক ঘাবড়ে যায়। যেনো মাত্রই মূল্যবান কিছু চুরি করে এসেছে। কিন্তু নিজের হাতে হ্যারিকেন দেখিয়ে বললো,
" এটা জ্বালাতে গিয়েছিলাম। অন্ধকারে ম্যাচ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তোমরা উঠোনে কখন এসেছো আম্মু?"

" এই পাঁচ মিনিটের মতো হলো। যা, পাটিতে গিয়ে বস।"

নীলিমা গিয়ে রাফার পাশে বসলো। অতঃপর হ্যারিকেনের আগুন নিভিয়ে তা পাশে রাখলো। আড্ডার মাঝেই রাফা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো,
" এতক্ষণ কই ছিলি নীলু? তোকে ডাকলাম যে!"

নীলিমা লিলি বেগমকে বলা কথাটাই রাফাকে বলতে যাচ্ছিলো। কিন্তু এর পূর্বেই স্মরণের আগমন ঘটলো। নীলিমার দৃষ্টি সোজা চলে গেলো বাড়ির সিঁড়িতে। সিঁড়ির উপর রাখা‌ একমাত্র মোমের আলোয় নীলিমা দেখলো‌ স্মরণ বাড়ির ভেতর হতে বেরিয়ে আসছে। তার এক হাত ঢোকানো প্যান্টের পকেটে। আর অপর হাত‌ মাথার ঘন চুলে। শিস বাজাতে বাজাতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আড্ডায় শামিল হতে আসছে সে। 

স্মরণকেও প্রায় কাছাকাছি সময়ে বাড়ি থেকে বের হতে দেখে রাফা মিটিমিটি হেসে নীলিমাকে বললো,
" হয়েছে থাক। আর বলতে হবে না। বুঝে গিয়েছি কোথায় ছিলি এতক্ষণ।"
বলেই নিজের বাহু দ্বারা নীলিমার বাহুতে আলতো গুঁতো দিলো সে। নীলিমা এ নিয়ে আর সাফাই দিলো না। কেননা সে প্রকৃতপক্ষেই স্মরণের সাথে ছিলো এবং রাফা সম্পূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত। 

স্মরণ এসে মাহবুবের পাশে বসলো। মাহবুব নীলিমাকে খেয়াল করেছিলো বিধায় টিপ্পনী কেটে স্মরণকে বললো,
" আপনি তো বড়ই ছুপা রুস্তুম! সবার আড়ালে কি প্রেমলীলা চালিয়ে আসলেন?"

স্মরণ ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। তার দৃষ্টি সরাসরি নীলিমার উপর। লোকচক্ষুর সম্মুখে থেকেও আড়ালে সে নীলিমাকে পর্যবেক্ষণ করছে। ওদিকে নীলিমা পারে না এখান থেকে এক্ষুণি পালিয়ে যেতে। স্মরণের ঐ চাহনি সে সহ্য করতে পারছে না। লজ্জায় ও দ্বিধায় নিজেকে হারিয়ে ফেলছে নীলিমা। 

" আমি বড় মামার সময়কার ঈদের ঘটনা শুনতে চাই।"

পাশেই বসা নওরীনের উচ্চ আওয়াজে নড়েচড়ে বসলো স্মরণ। টনক নড়লো তার। চোরা দৃষ্টিতে আশপাশ লক্ষ্য করে দেখলো, এতক্ষণ যাবত তার এই দুষ্টুমি কান্ডগুলো কেউ দেখলো নাকি! ভাগ্যিস বড়দের মধ্যে কেউ দেখেনি। সবাই আড্ডায় মগ্ন। অবশ্য স্মরণের ঐ আড়চোখের চাহনি এত সহজে দেখা সম্ভব না। কেননা সিঁড়িতে রাখা ঐ একটি মোমবাতির আলো এতদূর অব্দি পৌঁছাতে পৌঁছাতে ফিকে হয়ে আসছে। 

আনিস সাহেব নওরীনের আবদার মেনে বললেন,
" আচ্ছা আচ্ছা বলছি বলছি। আমাদের সময়কার ঈদ আরোও মজাদার হতো। ছোট থাকতে রাত ৯টা পর্যন্ত সবাই খেলা করতাম। উঠোন জুড়ে দৌড়ে বেড়াতাম৷ ১০টার মধ্যে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমাতাম আর উঠতাম ফজরের ওয়াক্তে। এরপর শুরু হতো ঈদগাহে যাওয়ার তাড়া। পাল্লা লাগতো, কে সবার আগে গিয়ে ইমামের পিছনে ঈদ জামাত ধরবে। 
ঈদের নামাজ শেষে ভাজাপোড়া, মিষ্টিজাতীয় অনেক খাবার কিনে বাড়ি ফিরতাম। আশেপাশের কয়েকজন মিলে সে খাবার ভাগ করে খেতাম। এরপর সারাদিনই মাঠেঘাটে দৌড়ে বেড়াতাম। এই গেলো ছোট বেলার ঈদ। 
তবে বড় হওয়ার পর বদলে গেলো। বাড়লো ব্যস্ততা। বিয়ের পর তখন নতুন এক দায়িত্ব। তোমাদের মামি যে বছর প্রথম এ বাড়িতে ঈদ করলো, কাজের ভয়েই সে রুমের এক কোনে গুটি-শুটি মেরে বসে থাকতো। পরে আম্মা গিয়ে ভয় কাটিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছিলো। এরপর থেকে স্মরণের মা'র ভয় কমে। স্বাভাবিক হয়ে আসে ও। আসলে আগেকার সময়ে ঈদে অন্য রকম এক আমেজ ছিলো। যা এখন হাজার চেষ্টা করলেও ফিরে আনা সম্ভব হয় না। "
বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি। মহলটা মুহূর্তেই নিশ্চুপ হয়ে গেলো। কিন্তু সাজিদ আড্ডায় আরোও প্রাণ আনতে বললো,
" আচ্ছা, এবার গানের কলি খেলা যাক। শুরুটা হোক বড় মামাকে দিয়েই। 
মামা, আপনি আপনার পছন্দমতো গান শুরু করুন।"

আনিস সাহেব নাকচ করলেন না৷ গলা ছেড়ে গাওয়া শুরু করলেন তিনি।
" কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো
সে কথা তুমি যদি জানতে
কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো
সে কথা তুমি যদি জানতে
এই হৃদয় চিঁড়ে যদি দেখানো যেত
হৃদয় চিঁড়ে যদি দেখানো যেত
আমি যে তোমার, তুমি মানতে
সে কথা তুমি যদি জানতে...."

আনিস সাহেবের গান শেষ হওয়া মাত্রই নাজমা বেগমের পালা এলো। ছোটরা সবাই 'ত' দিয়ে গান গাওয়ার জন্য বললো। নাজমা বেগম এক মিনিটের মাঝে খুঁজে পেলেন একটি গান। চোখ বুজে সেটিই গাওয়া শুরু করলেন,
" তোমাকে দিয়ে শেষ করতে চাই
তোমার মাঝেই সব হারিয়ে
তোমার মাঝেই সব হারিয়ে
আমার বলতে কিছু নাই...
তোমাকে দিয়ে শেষ করতে চাই...."

এভাবে ঘুরে ঘুরে পাঁচজন পর স্মরণের পালা এলো। 'আ' অক্ষর দিয়ে তাকে গান গাইতে বলা হলো। কিছুক্ষণ চিন্তা করার পরই সে তার পুরুষালী গম্ভীর সুরেলা কণ্ঠে গাইতে আরম্ভ করলো,
" আমি তোমার মনের ভেতর
একবার ঘুরে আসতে চাই
আমায় কতটা ভালোবাসো
সেই কথাটা জানতে চাই
ভালোবাসার যত কথা
হৃদয় দিয়ে শুনতে চাই
তুমি শুধু আমার হবে
পৃথিবীকে বলতে চাই...."

পুরোটা গান গাওয়ার সময় তার দৃষ্টি শুধুমাত্র নীলিমাতে নিবদ্ধ ছিলো। তবে থেকে থেকে এদিক ওদিক দৃষ্টি ঘোরাচ্ছিলো, যেনো কারোর সন্দেহের কাতারে না পড়ে। তবে স্মরণ পুরো গানটাই নীলিমাকে উদ্দেশ্য করে গাইলো। গানের মাধ্যমে জানতে চাইলো নীলিমার ভেতরে লুকানো অব্যক্ত কিছু কথা। কে জানে নীলিমা স্মরণের এ ইশারার অর্থোদ্ধার করতে পারলো কি না!
.
.
.
চলবে..................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন