ভয়ানক রাগ নিয়ে রওনকের দিকে হেঁটে গেল কুহু। রিশা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল! শাহিনূর মাহির রিনরিনে গলায় প্রশ্ন করল রওনককে বিয়ে কবে করছে সে? আচমকা চলন্ত পা দুটো থেমে গেল কুহুর। আড় চোখ কুহুকে খেয়াল করছিল রওনক। ভীষণ অসস্থি লাগছে রওনকের কাছে। শাহিনূর মাহি ম্যাম খুব গায়ে পরা স্বভাবের। এই কারণে কলেজে কানাঘুষা কম হচ্ছে না। সদ্য নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। সেভাবে কিছু বলাও যায় না। রুদ্ধশ্বাসে রওনকের উত্তর শোনার অপেক্ষায় কুহু! প্যান্টের পকেটে এক হাত পুরে নিয়ে জবাব দিল রওনক,
"যেদিন উপযুক্ত সময় মনে হবে সেদিন শুভ কাজটা সেরে ফেলব।
পাশ থেকে শিক্ষার্থীরা হইহই করে উঠল। কয়েকজন ছাত্রের হাতে কেক। বাকি সব শিক্ষককরা এগিয়ে আসলেন। পাশেই একদল মেয়ে শাহিনূর মাহিকে নিয়ে বলাবলি করছে, স্যারের জন্মদিন আর তাতেই শাড়ি পরে চলে এসেছেন নূর ম্যাম। যেন আজ উনাদের এনগেজমেন্ট! কি একটা অবস্থা! সামনে থাকা সবকিছু ঝাপসা দেখছে কুহু। রওনক ভাই তাকে স্বীকৃতি দিল না! ধুপধাপ এলোমেলো পা ফেলে বিশাল ভবনের ভেতর চলে গেল সে।বিষয়টা দৃষ্টিগোচর হলো না রওনকের। কুহুর রাগ,কষ্ট স্পষ্ট তার চোখে ধরা দিয়েছে। কুহু এখানে পড়বে বলেই ইচ্ছে করে বিয়ের ব্যাপারটা চেপে গেছে রওনক। সবমিলিয়ে তার কাছে মনে হয়েছে এটা বলা ঠিক হবে না। রিশা ছুটেছে পাঁচতলা ভবনে। শূন্য কক্ষে জানালার ধারে বেঞ্চিতে বসে আছে কুহু। চোখের জল গাল ভিজিয়ে থুতনি চুইয়ে পড়ছে। নাক টা রক্তিম হয়ে উঠেছে। বাম হাতের উল্টোপিঠে বারংবার মুছে যাচ্ছে সে। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করলো রিশা। ধীর পায়ে এগিয়ে এসে বলল,
" কাঁদছিস কেন কুহু?
রিশার কথা শুনে পাশ ফিরে তাকাল না কুহু। কোনোরকম উত্তর দিল না। কন্ঠনালী শক্ত হয়ে চেপে আছে। চোখ উপচে জল গড়াচ্ছে। কুহুর মাথায় হাত রাখল রিশা। ঘাড় ঘুরিয়ে ভাঙ্গা স্বরে বলল কুহু,
"আমার সামনে সব জলের মতো পরিষ্কার রিশু! রওনক ভাই আমাকে মানতেই পারেনি। বরং এতদিন মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশেপাশে সবাই কতরকম কথা বলছে নতুন ম্যাম আর তোর ভাইকে নিয়ে। তবুও তিনি নিজেকে অবিবাহিত বললেন। এর মানে কি বোঝায় বল?
" হ্যাঁ, শুনেছি আমি। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তুই কান্না কেন করবি? তুইও তো মন থেকে মেনে নিতে পারিসনি বিয়েটাকে। এখন এই সম্পর্ক নিয়ে ভাইয়া যাই বলুক এতে কি আসে যায় বল?
ক্রুদ্ধ স্বরে বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলল কুহু,
"আসে যায় রিশু! আমার কষ্ট হচ্ছে। ওই কথাটা আমি মেনে নিতে পারছি না। এবং ওই শাহিনূর ম্যামকে আমার সহ্য হচ্ছে না। আমি এখানে পড়বই না।
রিশা স্তব্ধ হয়ে কুহুর কথা শুনছিল। কুহুর চোখেমুখে জেলাসি! এটাই তো ভালবাসার লক্ষণ! নিজের মানুষটার প্রতি অধিকার খাটানো। সেটা জোড় গলায় বলতে পারা এসবই তো ভালবাসারই ইঙ্গিত বহন করে। রিশার ঠোঁটের কার্নিশে মৃদু হাসি ফুটে উঠলো। তপ্ত শ্বাস ফেলে কুহুকে বসিয়ে দিয়ে বলল,
" হ্যাঁ বুঝলাম তোর কষ্ট হচ্ছে। আর এও বুঝলাম তুই আমার ভাইকে ভালবাসিস। যার জন্য সামান্য কারণে এত উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিস। সীমাহীন কষ্ট পাচ্ছিস!
জানালা গলিয়ে দৃষ্টি বাইরে রেখে নাক টেনে বলল কুহু,
"ভালবাসি না তোর ভাইকে। তুই একদম আর উল্টাপাল্টা কিছু বোঝাবি না আমাকে।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল রিশা,
" ঠিক আছে বোঝাব না। ভাইয়া যা ইচ্ছে হয় বলুক শাহিনূর ম্যামকে তাতে তোর কি? ভাইয়াকে তুই হারিয়ে ফেললেই বা কি বল?
রিশার কথাগুলো ভাল লাগল না কুহুর। ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। রওনক ভাই হারিয়ে যাবে বা অন্য কারো হয়ে যাবে কথাটা ভাবতেও পারছে না কুহু! সবকিছু অসহ্য আর বিরক্তিকর লাগছে।রিশা আনমনে বাইরে তাকিয়ে ভাবতে বসল, প্রিয় মানুষটাকে অন্য কারো সঙ্গে দেখা খুব যন্ত্রণা দায়ক! অথচ তার খুশির জন্য নীরবে হাসিমুখে চলে আসতে হয়! দিনশেষে মন মানে? বরঞ প্রতিনিয়ত মন - মস্তিষ্কের সঙ্গে চলে যু-দ্ধ! কুহু খুব অনায়সে ভেতরে থাকা কষ্টটুকু প্রকাশ করে দিচ্ছে! অধিকার আছে বলেই! অথচ রিশা দিনের পর দিন কষ্ট চেপে ভেতরে ভেতরে জ্ব-লেপু-ড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে! কুহুর এই পাগলামো দেখে ভাল লাগছে রিশার। খুব শিঘ্রই হয়তো নিজের অনুভূতি টুকু প্রকাশ করবে কুহু। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ কুহুর সমস্ত কথা শুনেছে রওনক। এসেছিল নির্বোধ মেয়েটাকে বোঝাতে। এখন মনে হচ্ছে উল্টো আরো জেলাসি বাড়িয়ে দিতে হবে। তবেই রওনকের কার্য হাসিল হতে বেশি সময় লাগবে না। দু-হাতে চোখ মুছে উঠে দাঁড়ায় কুহু। রিশার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছোঁড়ে,
"শাহিনূর ম্যাম কি আমার চেয়েও দেখতে সুন্দরী?
কুহুর কথায় বিস্ফোরিত দৃষ্টি ফেলে তাকাল রিশা। মনে হচ্ছে সবদিকেই হিংসায় জর্জরিত হয়ে গেছে কুহু। থুতনিতে হাত রেখে আগাগোড়া পর্যবেক্ষণ করে বলল রিশা,
" উহুম! কোথায় শাহিনূর মাহি ম্যাম আর কোথায় তুই! আমাদের কলেজে কত ছেলেপেলে তোর পেছনে ঘুরেছে সে কথা কি ভুলে গেছি আমি?
"তোর ভাই তো বোঝে না। চোখের সামনে সুন্দরী মেয়ে সারাক্ষণ ঘুরঘুর করলেও বাইরে এসে এসব মহিলাদের দিকে নজর দিবে। এটা আমার খারাপ লাগবে না বল?
" তুই এক কাজ করতে পারিস। সারাক্ষণ সেজেগুজে থাকবি। তাহলে দেখবি ভাইয়ার নজর এদিক-সেদিক যাবে না।
কুহু যেন ঘোর ভাবনায় পরলো।এই মুহূর্তে কিভাবে রওনক ভাইকে নিজের দিকে আকর্ষিত করবে সেটাই মাথায় ঘুরতে থাকল! ঈষৎ হেঁসে প্রস্থান করলো রওনক। আচমকাই মন ভীষণ ভাল হয়ে গেল তার। সম্ভব হলে এই মুহূর্তে শাহিনূর মাহি ম্যামকে বড়োসরো একটা ধন্যবাদ দিয়ে আসতো। তার জন্যই কুহুর মনের কথাটা অনায়সে জানা হয়ে গেল। অথচ এই বিষয়টা নিয়ে সংশয়ে ছিল রওনক। আদৌ কুহুর মনে তার অস্তিত্ব আছে কিনা! বোকা মেয়ে নিজের অনুভূতিটুকুই বুঝতে পারে না সে কি করে অন্যের ভালবাসা উপলব্ধি করবে?
◾
ক্লাস করানোর সময় বেশ গম্ভীর ভাব নিয়ে ছিল রওনক। কুহুকে যেন চিনেও না সে। অনেকদিন পর রুপসা,সোহা নয়ন আর আরিয়ানের সঙ্গে দেখা হলো কুহু,রিশার। ছুটির পর ক্যাম্পাসে আড্ডা হলো বন্ধুমহলের। সবার মনেই প্রশ্নরা দানা বেঁধে ছিল রওনক স্যার আর নূর ম্যামকে নিয়ে। রিশা উপস্থিত থাকায় কেউ কোনোরকম প্রশ্ন করার সুযোগ পেল না। রিশা বাড়ি চলে যেতে চাইলে কুহু জানাল একটুপর যাবে সে। অনেকদিন পর বেরিয়েছে তার উপর আজকে বেজায় মন খারাপ তার। খানিক্ষন পর রওনকেরও ছুটি। দু'জন একসঙ্গে যাবে ভেবে চলে গেল রিশা। এই গরমে বসে থাকতে ভাল লাগছে না তার। রিশা চলে যেতেই রওনকের টপিক নিয়ে কথা তুলল নয়ন।একে একে বাকিরা তাল মেলাল। নিশ্চুপ ছিল কুহু। সবার মুখে মুখে এসব শুনতে ভাল লাগছে না তার। চোখে আবারও জলেরা ভীর জমাতে চাইছে! মনে হচ্ছে এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে কান্না লুকিয়ে রাখা দুষ্কর হয়ে যাবে। চট করেই উঠে দাঁড়ায় কুহু। করিডোর পেরোনোর সময় কুহুকে ক্যাম্পাসে লক্ষ্য করেছে রওনক। ক্লাস চলাকালীনও বারবার বাইরে খেয়াল করছিল কুহুকে। আচমকা রিশাকে সঙ্গে না দেখে ভারী অবাকই হলো। ভাবনার মাঝেই দেখল আরিয়ানের পিঠে ধুপধাপ কিল বসাচ্ছে কুহু। খিলখিল করে হাসছে ছেলেটা। মুহূর্তে মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেল রওনকের! রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসলো। হাত ঘড়ি দেখে নিল সে। মিনিট পাঁচের মধ্যে পরবর্তী ক্লাসে যেতে হবে তাকে। চাইলেও আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না সে।
•
রিকশায় পাশাপাশি বসে আছে রাতিম আর রিশা। রাস্তায় হঠাৎই দেখা লোকটার সঙ্গে। একই রাস্তা ধরে যাবে বলে নিজের রিকশায় ডেকে নিল রিশা। রাতিমের গোছানো কথাগুলো খুব ভাল লাগে তার। চমৎকার ব্যাক্তিত্বের পুরুষ। হাসিমুখে কতরকম কথা বলে যাচ্ছিল রাতিম।আড়াআড়িভাবে সূর্য রশ্মি পরেছে ফর্সা কপাল,গালে। মুহূর্তে জায়গাটা রক্তিম হয়ে উঠেছে। বিষয়টা দৃষ্টি এড়ায়নি রিশার। খানিকক্ষণ আগে মন প্রচন্ড খারাপ থাকলেও এখন অন্যরকম এক ভাল লাগা কাজ করছে। রাতিম ভাই ঠিকই বলেছেন,তিনি মন ভাল করে দেওয়ার স্পেশালিষ্ট! তার উপস্থিতি মষ্তিকে ডোপামিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিষন্ন ভাব কেটে গেছে যেন। রাতিমের প্রতিটা কথা,বলার ভঙ্গিমা খুব নিখুঁত আর যৌক্তিক! আচমকা রিশার ওড়নায় তীব্র টান অনুভব হতেই ভাবনা থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসল সে।ততক্ষণে রিকশার চাকায় সম্পূর্ণ ওড়না পেচিয়ে গলায় টাইট হয়ে লেগে গেল রিশার।অত্যল্পকালে নিঃশ্বাস আঁটকে গেল তার। ভয়ানক আৎকে উঠলো রাতিম! দ্রুত গলায় থাকা ওড়নাটা ঢিলে করার প্রয়াসে টেনে ধরল!চিৎ-কার করতেই রিকশা থেমে গেছে অনেক্ক্ষণ আগেই।আশপাশ থেকে জনতার হই-চই শুরু হয়ে গেল। কোনোরকমে টেনে ওড়নাটা খুলে নিল রাতিম। গলার অনেকাংশে ছুঁ-লে গেল।চোখমুখ খিচে ঘনঘন দম ফেলল রিশা। গলা ব্যাথা হয়ে গেছে তার। রাতিম বারংবার পাগলের মতো জিগ্যেস করে যাচ্ছে রিশার কষ্ট হচ্ছে কিনা? হসপিটালে নিয়ে যাবে কিনা? জলে ভাসা চোখ নিয়ে বিচলিত,চিন্তিত রাতিমের মুখে তাকাল রিশা। এই ছেলেটা না থাকলে আজ সত্যিই ম-রে যেত সে! আশেপাশের ভীর কমে এসেছে। ওড়না প্রায় ছিঁড়ে গেছে অনেক জায়গায়। সেটা রাস্তায় পরে আছে অবহেলায়। রিশার কৃতজ্ঞ ভরা দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে গা থেকে নিজের শার্টটা খুলে দিল রাতিম। তার পরনে এই মুহূর্তে একটা সফেদ সেন্ডো গেঞ্জি। রিশা আশ্চর্যে কথা বলতে পারল না। রাতিম জানে রিশা পোশাকআশাকে যতেষ্ট ভদ্রতা বজায় রাখে। ওড়না দিয়ে গা সম্পূর্ণ ঢাকাই থাকে। এরকম পরিস্থিতিতে সবাই তাকে দেখছে সেটা ভাল লাগছে না রাতিমের। নিশ্চুপ শার্টটা গায়ে জড়িয়ে নিল রিশা। থমথমে দৃষ্টি রাখল নিচে। পাশে একটা দশ,বারো বয়সী মেয়ে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে ছিল। সবার মতো দাঁড়িয়ে সেও হয়তো দূর্ঘটনা দেখছিল। কি ভেবে যেন মেয়েটা এগিয়ে আসলো। মুক্তার মতো দাঁত নিয়ে হেঁসে বলল,
"আপনে ভাবীরে অনেক ভালবাসেন তাই না ভাইজান?
মেয়েটির মুখে এমন কিছু শুনবে ভাবেনি রাতিম। রিশা মাথা তুলে তাকাল অবাক দৃষ্টিতে! রাতিম অপ্রস্তুত হলো। ছোট্ট একটা হাসি ফিরিয়ে দিল মেয়েটিকে। হাতে থাকা গোলাপ থেকে একটা গোলাপ নিয়ে রাতিমকে দিয়ে বলল মেয়েটি,
" এইটা ভাবীরে দ্যান। ট্যাকা লাগব না।
রিশা এবার অসস্থিতে পরে গেল।রাতিম কিছু বলার পূর্বেই মেয়েটির হাত থেকে গোলাপ নিয়ে নিল রিশা। ব্যাপারটা কেন জানি অদ্ভুত ভাল লাগা ছুঁয়ে দিল রাতিমকে। পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে মেয়েটিকে একশো টাকার একটা নোট দিল সে। মেয়েটি নিতে নারাজ।রাতিম জানাল খুশি হয়েই দিয়েছে সে।পরক্ষণে টাকা নিয়ে চলে গেল মেয়েটা। রাতিমের অনুমতি পেয়ে রিকশা চালাতে আরম্ভ করলেন চালক। রিশাকে সহজ করতে বলল রাতিম,
"মেয়েটা খুব সুন্দর মনের। সে জন্যই হয়তো ফুল বিক্রিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে । প্রতিদিন কত মানুষের খুশির কারণ হয় মেয়েটা হয়তো নিজেও জানে না! অবশ্য কাউকে খুশি করতে পারলে তার মূল্য অর্থ দিয়ে বিচার করা যায় না। ফুল একটা জীবন্ত ভালবাসা। আর ভালবাসাও টাকা দিয়ে পরিমাপ হয় না। ভেবে দেখ মেয়েটা প্রতিনিয়ত খুশি,ভালবাসা বিক্রি করে চলেছে!
রাতিমের কথায় পদে পদে মুগ্ধ হয় রিশা। যার ভাবনা সুন্দর সে সত্যিই সুন্দর মনের মানুষ!
◾
ঘড়িতে রাত এগারোটা। বাড়ি ফেরার পর কুহুর সঙ্গে কোনোরকম কথা বলেনি রওনক। আরিয়ানের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছে মেয়েটা। অথচ রওনকের থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি! সন্ধ্যার পর মেয়েটার দেখা আর পায়নি রওনক। আজকে ঘটনা বোধহয় মনে দা-গ কে-টেছে ভালই! যাইহোক মান ভাঙ্গাবে না সে। অবুঝের মতো বসে থাকবে। এবার নির্বোধ মেয়েটা বুঝুক কতখানি ক-ষ্ট হয়।আচমকা রুমের লাইট বন্ধ হয়ে গেল। ভাবনার জাল ছিন্ন হলো রওনকের।তৎক্ষনাৎ বাইরে তাকাল সে। আশেপাশে প্রতিটি বিল্ডিংয়ে আলো জ্বলছে! বসা থেকে উঠে দাঁড়াতেই সামনে এক টুকরো পিঙ্গল আলো জ্বলে উঠল। তাতে কুহুর মোহনীয় রূপ ভেসে উঠলো! একহাতে সাদা রঙা মোমবাতি আর অপর হাতে কিছু একটা নিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে আসলো কুহু। পরনে গাঢ় নীল রঙা শাড়ি! আশ্চর্যের মূক হয়ে গেল রওনক! সে কি ঘুমের ঘোরে নাকি এটা স্বপ্ন? নাকি কুহুর বেশে কোনো রূপবতী পরীর আগমন ঘটলো? বিস্ময়ে চোয়াল ঝুলে গেল রওনকের।চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেল সে। মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়ে রওনকের সামনে ডান হাত তুলে ধরল কুহু। ছোট একটা চকলেট কাপকেক! সেদিকে দৃষ্টি পরতেই ভ্রু কুঁচকে আসলো রওনকের।এইটুকু কেক নিয়ে এসেছে কেন বোকা মেয়েটা?
"এই ছোট কেকটা দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই!প্রথমত আমি আপনার উপর অভিমান করেছি, দ্বিতীয়ত আপনার জন্মদিন পালন করতেও ইচ্ছে করছিল। রাগের কারণে এই ছোট কেকটা নিয়ে এসেছি। আর আপনার মতো পুরুষের এটাই প্রাপ্য!
·
·
·
চলবে...............................................