অসস্থি যেন আচমকা কেটে গেল! স্বাভাবিক মনে হলো সবকিছু। তবে রওনক ভাই যে ভয়ানক রেগে আছে এইটুকু কুহুর মস্তিষ্ক বুঝতে পারল। শক্ত হাতে কুহুর বাহু ধরে রাখা হাত ছেড়ে দিল রওনক। দৃষ্টি দেখাল করুণ। ঘন ঘন দম ফেলে উঠে দাঁড়াল সে। স্টিকগুলো কুহুর সামনে রেখে চলে গেল বেলকনিতে।একবারের জন্যও ফিরে তাকাল না বোকা মেয়েটার দিকে।এমনটা বোধহয় আশা করেনি কুহু।আচমকা তার বক্ষস্থলে কষ্ট হলো!মন বলছিল, শাসিয়ে কিছু বলবে রওনক ভাই।তারপর নিজেই ওয়াশরুম অবধি নিয়ে যাবে।খানিক্ষন আগের ঘটনাটা হুলের মতো মস্তিষ্কে বিঁ-ধে আছে।কেন জানি রাগ হতে পারলো না কুহু!তার বিবেক কোথাও একটা বলছে, অন্যায়ই করছে সে।রওনক ভাই সব মেনে নিলে কুহুরও কি মানিয়ে নিয়ে সংসার করা উচিৎ নয়? শত প্রশ্ন মাথায় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল কুহু।
•
তীব্র বর্ষণ নেমেছে।মাঝে থেমে থেমে বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে আলোর ঝলকানি তুলে আলোকিত করছে গোটা শহর।ঝপঝপ বৃষ্টির শব্দে মুখরিত চারিপাশ।রওনক দাঁড়িয়ে আছে খোলা বারান্দার কার্নিশ ঘেঁষে।বৃষ্টির ছাট চশমা ঘোলাটে করে দিচ্ছে তার। আকাশী রঙা টিশার্ট ভিজিয়ে দিয়েছে বক্ষস্থলের বা পাশ।ডান হাত চুলের মাঝে হাত চালিয়ে নিয়ে লম্বা দম নিল সে।খানিক্ষন আগে অতিরিক্ত রাগ সামাল দিতে পারেনি।ফলস্বরূপ ওইরকম ভয়ানক আচরণ করে ফেলেছে কুহুর সঙ্গে!মেয়েটা কি রওনকের কেয়ার একটুখানিও বুঝতে পারে না?এর পেছনের কারণটুকু হদিস করতে পারে না?হয়তো বোঝে সবই!তবে কি ধরে নেবে রওনককেই চায় না সে? মনে হচ্ছে এত কৌশল খাটিয়ে বিয়ে করাটা বৃথাই হলো।যার মনে সারাজীবনেও অনুভূতির জন্ম দিতে পারবে না,তাকে এত বুঝিয়ে কি হবে? ঘুমের ভাব ধরা মানুষকে তো আর জাগ্রত করা সম্ভব নয়।এক তরফা নিজের মতো ভালবেসে কুহুকে আপন করে নেওয়াটা চরম বোকামি হয়েছে রওনকের। অপছন্দের মানুষের কাছ থেকে ভালবাসার সংকেত আসলেও কিছু যায় আসে না আমাদের।হয়তো সেটা পরোয়াই করি না আমরা! কুহুর জীবনেও রওনক ঠিক এমন অপছন্দ আর ফেলনাই! তীব্র কষ্ট থেকে রাগ হলো রওনকের।ধরে বেঁধে কাউকে ভালবাসার জন্য জোড় করা সম্ভব নয়।আর কুহুর সামনে নিজেকে খোলা বইয়ের মতো মেলে ধরবে না রওনক। টেবিলে পড়ে থাকা ডায়েরি টা ভিজে চুপচুপ হয়ে আছে। কিছুক্ষণ আগের লেখাগুলো জলের স্পর্শ পেতেই কালি ছড়িয়ে দিয়েছে। মুছে গেছে প্রতিটি অক্ষর! তপ্ত শ্বাস ফেলে ডায়েরি টা হাতে তুলে নিল রওনক। কুহুকে নিয়ে তার পূর্বের সমস্ত অনুভূতি লেখার পাতা গুলো এক এক করে ছিঁড়ে ফেলল। কুহু যদি কখনও তাকে বোঝে, ভালবাসে তবে সেদিন নতুন করে লিখবে সব!
◾
সকাল হয়েছে বেশ অনেক্ক্ষণ আগে।জানালা ছুঁয়েছে পেলব কমলা রোদ।সারারাত বৃষ্টি হওয়ার ফলে প্রকৃতি একদম স্নিগ্ধ,স্বচ্ছ!রোদটাও যতেষ্ট মোলায়েম!জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে রিশা।সারারাত বৃষ্টি দেখে কাটিয়েছে সে।ছোটখাটো একটা ঝড় তার মনের উপর দিয়েও বয়ে গেছে।অতিরিক্ত মন খারাপের সময় তুমুল বর্ষণ হলে,ভেতরটা যেন আরও গুমোট হয়ে যায়। হাসফাস লাগে কেমন।বৃষ্টির শব্দ ভয়ানক সুর তোলে কানে! ভোরে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি পরার সময় বোধহয় খানিক চোখ লেগেছিল রিশার।ঘন্টাখানেক এর মাঝে আবারও ঘুম ছুটেছে।জীবন কেমন ছন্দ হারাচ্ছে।নিজের প্রতিই বিরক্ত হচ্ছে রিশা।আশফিক তো তার সঙ্গে কোনোরকম চিট করেনি,আর না তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল!তবে এতটা কেন উন্মাদ হয়ে আছে রিশা? অপরিচিতা মেয়েটাকে কোনোভাবেই আশফিকের সঙ্গে মানতে পারছে না মন।সে তো আশফিককে এই মেয়েটার আগে ভালবেসেছিল! তবে নিয়তি এত নিষ্ঠুর হলো কি করে তার সঙ্গে? এটাই মানতে পারছে না রিশা।
"এত গভীর ভাবে কি ভাবছিস রিশু?
কুহুর কথায় ঘোর কাটলো রিশার।তৎক্ষনাৎ ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল সে।স্টিকে ভর দিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে কুহু।বিচলিত হয়ে এগিয়ে গেল রিশা।আশেপাশে ভাইকে না দেখে বেশ অবাকই হলো। কিছু একটা বুঝতে পেরে বলল কুহু,
রওনক ভাই চলে গেছে ভার্সিটিতে।
" তাহলে তুই আমাকে ডাকতি!একা চলে এলি কেন?
মৃদু হেঁসে রিশার খাটে গিয়ে বসলো কুহু।পাশে বসলো রিশা।কুহুর মুখাবয়ব জুড়ে অন্যরকম এক দুশ্চিন্তা!রিশা বোধহয় আন্দাজ করতে পেরেছে।আবারো কি দু'জনের মাঝে জগড়া বাঁধল কিনা কে জানে!জানালা গলিয়ে বাইরে দৃষ্টি ফেলে হতাশ স্বরে বলল কুহু,
"রওনক ভাইকে বিয়ে করাটা বোধহয় ঠিক হয়নি রিশা।আমাদের মধ্যে হয়তো কখনও বোঝাপড়া হবে না।আমি রওনক ভাইকে বুঝতে পারি না।হয়তো দায়িত্বের কারণে আমাকে দিনের পর দিন সহ্য করছেন তিনি।
" তুই ভাইয়াকে ভালবাসিস?
রিশার হঠাৎ করা প্রশ্নে থমকে গেল কুহু।ভাবনায় পরলো কিয়ৎক্ষণ। এই প্রশ্নর উত্তর তার কাছে নেই।গভীর মনোযোগ নিয়ে কুহুকে দেখে বলল রিশা,
"আমাদের সঙ্গে যখন যা ঘটে তার পরিপ্রেক্ষিতে সবকিছু ভাবি আমরা। হয়তো কারণ ভিন্নও হতে পারে কুহু। তুই যদি ভাইয়াকে বুঝতে চেষ্টা করিস তাহলে দেখবি তোর সামনে সব জলের মতো পরিষ্কার!তোদের বিয়ে হয়ে গেছে।এখন মূল উদ্দেশ্যে তোরা হ্যাপিলি সংসার করবি। দু'জন দুজনকে বোঝার চেষ্টা করলে ভালবাসা জন্মাতে বেশি সময় লাগে না।অহেতুক মন থেকে সব সন্দেহ,দোনোমোনো ভাব ঝেড়ে ফ্যাল।জীবনে যখন সত্যিকার অর্থে ভালবাসা ধরা দেয় তখন সম্পূর্ণ জীবনটাই পাল্টে যায়!আমি তো দেখছি ভাইয়া খুব সুন্দর ভাবেই মানিয়ে নিতে চাচ্ছে তোকে।অখুশি তো দেখছি না।তাহলে তুই মাথা ভর্তি এসব ফালতু চিন্তা ঠেসে রেখেছিস কেন?
চুপচাপ রিশার কথা শুনছে কুহু।সত্যিই রওনক ভাইকে কোনরকম বাজে আচরণ সে করতে দেখেনি।তাহলে মনে হাবিজাবি চিন্তা কেন আসে? তপ্ত শ্বাস ফেলে কুহুর চিন্তিত মুখে তাকিয়ে রইল রিশা।ভাইয়ের জন্য সত্যিই আফসোস হচ্ছে তার।কুহু এখনো ভালবাসাটা উপলব্ধি করেনি তাই হয়তো রওনকের অনুভূতি বুঝতে পারছে না।আগের আচরণ গুলোই মনে ধরে বসে আছে!রিশার পক্ষে সম্ভব হলে এক্ষুনি জানিয়ে দিত,রওনক কুহুকে ঠিক কতখানি ভালবাসে!এখন তো রিশারও মনে হচ্ছে আগে অনুভূতিটুকু উপলব্ধি করুক কুহু।সহজে পাওয়া কিছুর মূল্য মানুষ দিতে জানে না।
"তুই অহেতুক মন খারাপ করছিস।ভাইয়ার জীবনে কিন্তু তুই ছাড়া কোনো মেয়ে ছিল না কুহু।প্রথম তুই'ই।তাহলে তোকে অপছন্দ,অবহেলা করার তো কোনো কারণ দেখছি না আমি।বরং তুই মনে মনে আমার ভাইকে চাচ্ছিস না সেটা বল!
" না,না এমন কিছু নয়।আমার কখনো মনে হয় রওনক ভাই আমাকে পছন্দ করে আবার মনে হয় আমাকে সবচেয়ে অপছন্দ করে!তাই এই বিষয়টা তোর সঙ্গে শেয়ার করতে এসেছি আমি।
কপাল চাপড়ে বলল রিশা,
"আমি বলছি মন থেকে সব সংশয় ঝেড়ে ফ্যাল।ভাল করে বুঝতে চেষ্টা কর ভাইয়া কি চায়।তোর সঙ্গে সবসময় ক্ষ্যাপানো আচরণ করতো বলে কি এখনো করবে নাকি?এখন তো তুই তার ওয়াইফ!নিজেও খেয়াল করলে পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবি!সেটা তো এমনি এমনি না।
" তাহলে তুই কি বলতে চাইছিস রওনক ভাই আমাকে ভালবাসে?
তীর্যক দৃষ্টি কুহুর।থতমত খেল রিশা।এই যা গরগর করতে করতে পেটের সব কথা উগড়ে দিচ্ছে!আমতাআমতা করে কোনোমতে বলল,
"ভাইয়ার মনের কথা আমি কি করে বলবো? তুই আসলেই একটা মাথামোটা! মনের ভেতর লুকায়িত কথা তো তোকে হদিস করতে হবে তাই না? আচ্ছা তুই আরেকটা কথা ভাব,ভাইয়া যদি তোকে এতই অপছন্দ করতো তাহলে কি বিয়ে করতো? তোর সম্মানের কথা ভাবত? ডাল ম্যায় কুচ কালা হ্যায়! তোকে এখন কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হবে। লেগে পর 'ভালবাসা' নামক মিশনে।
রিশার কথায় থমকে বসে আছে কুহু।আদতে সে এভাবে ভাবেইনি। রওনক ভাই তাকে ভালবাসতে পারে এমন কিছু অবাস্তব,অকল্পনীয় তার কাছে! এখন মনে হচ্ছে সত্যিই মিশনে নামতে হবে তাকে। কুহুর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে অনুপ্রেরণা কাজে দিয়েছে। গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলল রিশা।ভাইয়ের দুঃখ ঘুচলেই হলো এবার!
◾
কুহু প্রথমে গাইগুই করলেই রওনকের ইচ্ছেতে শেষমেশ দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হতে রাজি হয়েছে। রিশা ভীষণ খুশি! শারমিন বেগম বাদে কমবেশি সবারই মত ছিল কুহুর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে। বিশেষ করে রওনকের একহাত ইচ্ছে। কুহু ছিল শারমিন বেগমের পক্ষে। এই মাথা নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চিন্তা করা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়। কোন কুলক্ষণে যে টিচার বিয়ে করেছিল! পড়াশোনা বুঝি আর পিছুই ছাড়ল না! আজকে থেকেই কুহুদের ক্লাস শুরু।ঘড়িতে সকাল আটটা।খাওয়ার টেবিলে বসে আছে সবাই। খানিকক্ষণের মাঝে রিশা উপস্থিত হলো।কাঁধে ব্যাগ নিয়ে।রওনকের পাশে বসে বিরস মুখে খাবার গিলছে কুহু। সেদিনের পর থেকে কথা বলা একেবারে কমিয়ে দিয়েছেন রওনক ভাই। যার কারণে হুটহাট কিছু বলতেও পারে না কুহু। দশটা কথা বললে একটা জবাব আসে না ঠিকঠাক! মনে হচ্ছে মিশন ফেইলই হবে সে। খাওয়া শেষ হতেই তাড়া দিল রওনক। রিশার তখনো কিছুটা খাবার বাকি। সিএনজি ডাকতে একাই বেরিয়ে গেল রওনক।কিছুক্ষণ পর রিশাকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো কুহু। হাঁটতে হাঁটতে মনমরা কুহুর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো রিশা,
"কিরে আনন্দ হচ্ছে না তোর? আজকে প্রথম ক্লাস!
চোখমুখ কুঁচকে বলল কুহু,
" দূর! তোর ভাইকে বিয়ে করা আসলেই উচিত হয়নি। জোড় করে পড়াশোনা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে! সারাক্ষণ কথা বললেও শোনে না। বধিরের মতো বসে থাকে। বিয়ে হয়েছে কোথায় সংসার করবো, ঘর ভর্তি বাচ্চা-কাচ্চা পালন করবো তা নয়! বই খাতা নিয়ে ছুটছি!
কুহুর শেষের কথাটা বোধহয় রওনকের কানে গিয়েছে স্পষ্ট! অবাক হয়ে কিছু পল তাকিয়ে রইল সে। কোনো উত্তর দিল না। চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসলো।রিশা ঠোঁট টিপে হাসল।গাড়িতে উঠে বসতেই কুহুর কানে ফিসফিস করে বলল,
" আরও বেশি করে ঝগড়া কর। তুই যদি ভাইয়াকে ভালবাসতি তাহলে তোর এসব স্বপ্ন কবেই পূরণ হয়ে যেত। আর আমি ডজন খানেক বাচ্চাকাচ্চার ফুপি হতে পারতাম!
শেষের কথাটা আফসোসের স্বরে কিছুটা জোড়েই বলে ফেলল রিশা।সামনে বসা রওনক হঠাৎ কেশে উঠল। মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে ফিসফিস করে উত্তর দিল কুহু,
"তোর রগচটা, কলহপ্রিয় ভাইকে বিয়ে করেছি! জীবনে মা ডাক শুনতে পারব কিনা সেই চিন্তায় আছি।পড়াশোনা করিয়েই মেরে ফেলবে আমাকে।
বহুকষ্টে হাসি দমিয়ে রাখল রিশা। কুহু যেন সিরিয়াস হয়ে গেছে একটু বেশিই!
•
সিএনজি ভার্সিটির সামনে আসতেই ভাড়া মিটিয়ে চলে গেল রওনক। রিশা নেমে দাঁড়াল। কুহু হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে আছে। রওনক ভাইয়ের অবজ্ঞা ঠিক হজম হলো না তার! কেমন নির্দয়ের মতো ফেলে চলে গেল! চোখমুখ শক্ত করে নেমে দাঁড়াল কুহু। সম্মুখে দৃষ্টি পরতেই তার চোখ দু'টো রসগোল্লার মতো হয়ে গেল! যুবতী বয়সের এক মেয়ে গাঢ় নীল রঙের শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে রওনকের হাত ধরে। ফর্সা, পাতলা গড়নের শরীর। মুখে সাজ বলতে ভালই আছে!ন্যুড শেডের ঠোঁটে চওড়া হাসি। ঈষৎ হাসি রওনের ঠোঁটেও! এই মেয়েটাকে ঠিক চিনতে পারলো না কুহু। রিশাও হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। পরক্ষণে পাশ থেকে একটা স্টুডেন্ট কে ডেকে জিগ্যেস করতেই বলল,ভার্সিটির নতুন ম্যাম শাহিনূর মাহি। প্রথম বর্ষে থিওরি বিষয়ে ক্লাস নেন তিনি। ব্যাষ্টিক অর্থনীতি।
ছেলেটা যাবার পূর্বে হেসে কিছুটা রসিয়ে বলল, রওনক স্যারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালই। আমরা তো তাদের নাম দিয়েছি রোমিও-জুলিয়েট! দারুণ মানিয়েছেও তাদের!
পাশ থেকে একটা মেয়ে হ্যাচকা টানে সরিয়ে নিল ছেলেটাকে। কড়া গলায় বলল রিশা রওনক স্যারের বোন হয়। নিমেষে ছেলেটার মুখ চুপসে গেল।আর মুখাবয়ব জুড়ে নামলো ভয়ের আঁধার! কুহু তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল। দাঁত চিবিয়ে বলল রিশাকে,
"কি বলেছিলি তুই? ভালবাসার মিশনে নামতে? এদিকে তোর সুশীল ভাই পরকীয়া করে বেড়াচ্ছে! ভার্সিটির সবাই নাকি জানেও এটা! কত বড়ো সাহস দেখেছিস? ঘরে বউ রেখে বাইরে কিসব করে বেড়াচ্ছে! তোর ভাইয়ের একদিন কি আর আমার যতদিন লাগে!
কথা বলার সময় অতিরিক্ত রাগে কুহুর গলা কাঁপছিল। শাহিনূর মাহি হাসিমুখে দাঁড়িয়ে রওনকের সাথে সেলফি তুলছে। আচমকা রিশার হতবাক মস্তিষ্কে ঠাওর হলো আজ রওনকের জন্মদিন!
·
·
·
চলবে................................................