মাই মিস্টিরিয়াস প্রিন্স - পর্ব ০২ - মৌমিতা মৌ - ধারাবাহিক গল্প


পৃথিবী গোলাকার, আকারে অন্যান্য গ্রহের তুলনায় বেশ ছোট হলেও, আমাদের কল্পনার সীমা থেকে অনেক বিস্তৃত। এটি শুধু একটি গ্রহ নয়, বরং এক অজস্র রহস্যের আধার। এর আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা রহস্য আর ইতিহাস যুগ যুগ ধরে মানুষের কৌতূহলকে উসকে দিয়েছে। পৃথিবীর অজস্র রহস্য আর বিস্তারের ভাবনা মাথায় রেখে অনন্যা দীর্ঘক্ষণ নিজের চিন্তায় ডুবে ছিল। প্রিন্সের কল্পনা এখন তার মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে। সে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে সোফায় বসে আছে, যেন কোনো কিছুতেই আর কিছু যায় আসে না। বিপরীত দিকে স্টেজে পাত্র বসে আছে, দাঁত কেলিয়ে হাসছে। ডাক্তার মানুষ, বড় রোজগার। জীবনের বেশিরভাগ সময় টাকা কামানোর ধান্দায় কাটিয়ে দেয়ায় এতদিন বিয়ে করেনি।

কিন্তু এবার, পরিচিত হওয়ার সুবাদে হঠাৎ মন চাইল আর অনন্যার জন্য প্রস্তাব রেখে দিলো। এদিকে তার এই অর্থ-প্রতিপত্তির ঝলক দেখে সবাই প্রস্তাবটি লুফে নিলো। শুধুমাত্র যার বিয়ে, সেই অনন্যাই জানতে পারল না, তার মতামতকে একপাশে সরিয়ে রেখে সব সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।

আজ যদি আরণ্যকের সাথে তার সম্পর্কটা আগের মতো থাকত, তাহলে এই বিয়ে কখনোই হতে দিতো না সে। আরণ্যকের স্মৃতি এখনো তার মনে গভীরভাবে দাগ কেটে আছে। অথচ বাস্তবতায় সে পুরোপুরি অসহায়। চারপাশের মানুষ আর পরিস্থিতির চাপে অনন্যার জীবন যেন তার হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে। 

অনন্যার মামী তাকে ধরে দাঁড় করিয়ে বলল,
"চুপচাপ, সুন্দরমতো থাকবি। বিয়েতে বেশি ঝামেলা করিস না। বিয়ে হয়ে গেলে তো যা মন চায় তাই করতে পারবি। স্বামী সারাদিন হাসপাতালে থাকবে। তুই পড়াশোনা করতে চাস, পড়বি। তোকে তো কেউ বাঁধা দিচ্ছে না।"

মামীকে কিছু না বলে অনন্যা একপাশে মাথা নাড়ালো। কোনো কথা না বলে মামীর হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকল। কিন্তু আচমকা মাটির তলা যেন নড়ে উঠলো! একটা অদ্ভুত কম্পনে সবাই থমকে দাঁড়িয়ে গেল। ঘরের ভেতরে উপস্থিত মানুষেরা বিস্ময়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে লাগল যে, আসলে কী হচ্ছে।

একজন আতঙ্কিত কণ্ঠে বলে উঠল,
"ভূমিকম্প হচ্ছে মনে হয়!"

কিন্তু কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই এই বিভ্রান্তি বদলে গেল বিস্ময়ে। প্রবেশদ্বারের দিকে সকলের চোখ আটকে গেল। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল এক বিদেশি যুবক। কেমন যেন রহস্যময় চাহনি, আকাশি-কালো মেশানো চকচকে পোশাক আর আত্মবিশ্বাসে ভরা তার উপস্থিতি যেন পুরো বাড়ির পরিবেশ বদলে দিল। বিয়ের অনুষ্ঠান বাড়ির ভেতরেই হচ্ছিল, তাই এই অচেনা আগন্তুককে দেখে সবার চোখ বিস্ময়ে বড় হয়ে গেল।

যুবকটি বলে উঠলো,
"এই বিয়ে হতে পারে না।"

অনন্যা তো বিস্ময়ে কিছু বলতে পারছে না! হাঁ করে তাকিয়ে আছে স্যারের দিকে। সে কখনো ভাবতেই পারেনি তার করা অদ্ভুত কাজটা এইভাবে সত্যি হয়ে যাবে। কিন্তু স্যার? স্যার কেন?

ইশতেহার কৌশিক ধীর অথচ দৃঢ় পায়ে এগিয়ে এলো অনন্যার দিকে। এক মুহূর্তের জন্যও তার চোখ অনন্যার চোখ ছেড়ে যায়নি। একেবারে কাছে এসে অনন্যার হাত শক্ত করে ধরে নিজের শরীরের সাথে মিশিয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
"এই বিয়ে হবে না।"

তার কথা যেন বজ্রপাতের মতো আঘাত করলো পুরো বাড়ির পরিবেশে। আত্মীয়-স্বজনেরা প্রথমে চমকে গেলেও পর মুহূর্তেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠল। কিন্তু সেই রাগ কৌশিকের প্রতি নয়, বরং অনন্যার প্রতি।

একজন উচ্চস্বরে বলল,
"অনন্যা, তোমার প্রেমিক ছিল? কই, কোনোদিন তো বললে না!"

আরেকজন যেন ধিক্কার জানিয়ে বলল,
"ছিঃ ছিঃ! এভাবে সবার মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিলে? এটা কী ধরনের কাজ!"

পাত্রপক্ষের লোকজন পুরো বিষয়টি দেখে আরো উত্তেজিত হয়ে উঠল। তাদের মধ্যে একজন রাগে ফেটে পড়ে বলে উঠল,
"এই বিয়ে ওই ছেলে কী ভাঙবে! আমাদের পাত্রই ভেঙে দেবে। কী অবস্থা! লাজ-লজ্জা সব খেয়ে বসে আছে মেয়েটা। প্রেমিক জুটিয়েছে তাও কিনা বিদেশি!"

এই সমস্ত অভিযোগ, ধিক্কার আর ক্ষোভের মধ্যে অনন্যা সম্পূর্ণ নীরব। তার মুখে একটাও শব্দ নেই। সে শুধু চুপচাপ স্যারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।

ঈরার বাবা এগিয়ে আসলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ইশতেহার কৌশিককে পরখ করে বললো,
"কী চাই? কে তুমি? ওকে চেনো? বিয়ে কেনো হবে না?"

আইকের গম্ভীর দৃষ্টি যেন শাণিত তলোয়ার। সে শক্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করলো,
"জানি না! কিন্তু এই বিয়ে...হবে না।"

ডাক্তার বর দাঁড়িয়ে পড়লো, কৌশিকের দিকে এগিয়ে এসে বললো,
"ম্যান! তোমার দৃষ্টি বুঝিয়ে দিচ্ছে তুমি এই মেয়েটাকে চেনো না। আচ্ছা, বলো তো মেয়েটার নাম কী?"

ইশতেহার কৌশিক কয়েক মুহূর্ত স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো, চোখের পলক ফেলতে ফেলতে আশেপাশের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলো। মাথায় চাপ দিয়ে নাম মনে করতে চেষ্টা করল। কিন্তু মেয়েটির নাম মনে পড়ছিল না কারণ সে তো জানেই না। অনন্যা ইশারা করে নাম বোঝানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু কৌশিক তার দিকে তাকানোর পরিবর্তে আশেপাশে ব্যানার খুঁজতে লাগল।

মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সে ব্যানারে চোখ বুলিয়ে নাম খুঁজে বের করলো এবং দৃঢ় কণ্ঠে উচ্চারণ করলো,
"অনন্যা!"

ডাক্তার তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে ইশতেহারের দৃষ্টি অনুসরণ করে একবার ব্যানারের দিকে তাকালো। তারপর ইশতেহারের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে বলল,
"যার নামই জানো না তার বিয়ে থামাতে এসেছো? বাই দ্য ওয়ে, এই বিয়ে তো হয়েই ছাড়বে।"

এই বলে ডাক্তার অনন্যার অপর হাত চেপে ধরল, যেন তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ডাক্তার দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
"আসো, অনন্যা! এই লোকটাকে ভয় পেতে হবে না।"

কিন্তু অনন্যা যেতে চাইছিল না। তার এক হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে ইশতেহার, আর অপর দিক দিয়ে ডাক্তার হাত ধরে টানতে চাইছে। সবার চোখ শুধু এই দুই পুরুষের মুখোমুখি অবস্থানের দিকে।

তখনই ইশতেহার কৌশিক গম্ভীর, অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠল,
"আমি বিয়ে করতে এসেছি। বিয়ে করেই যাবো।"

এই কথা সকলের কানে পৌঁছুতেই সঙ্গে সঙ্গেই ঘরে উপস্থিত সবাই হতবাক হয়ে গেল। চারপাশের চেঁচামেচি, রাগ-ক্ষোভ, সব এক নিমেষে থেমে গেল। পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে গেল, যেন কেউ কিছু শুনতে পায়নি।

অনন্যার ভেতরে হঠাৎ করে এক অদ্ভুত ধ্বক ধ্বক আওয়াজ হলো। কেনো হলো এতো ভাবার সময় নেই! কিন্তু লোকটা সত্যিই কী তার রাজকুমার হয়ে এসেছে?

ঠিক তখনই ঈরা দৌড়ে এসে ইশতেহারের সামনে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত কণ্ঠে বলল,
"জিজু, আপনার জন্য কী বিয়ের পোশাক নিয়ে আসবো?"

ইশতেহার চোখ তুলে ঈরার দিকে তাকিয়ে বলল,
"নিয়ে আসুন! আজ, এই মুহূর্তে, এই স্থানে অনন্যার সাথে আমার বিয়ে হবে। আর কেউ এটাকে আটকাতে পারবে না।"

তার কণ্ঠে এমন দৃঢ়তা, সাহসিকতা ছিল যে কেউ আর কোনো কথা বলার সাহস পেল না। ঘরের পরিবেশে যেন এক নতুন উত্তেজনার স্রোত বইতে লাগল।

বিয়ের পোশাক আনা হলো, ইশতেহার তার রেসিং স্যুটের উপরেই বিয়ের পোশাক পরিধান করলো। ঈরার বাবা-মা অসহায়ভাবে একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইলেন, যেন পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আত্মীয়-স্বজনের উদ্যোগেই অনন্যা আর ইশতেহারের বিয়ে সম্পন্ন হলো। আশ্চর্যের ব্যাপার, কেউই সরাসরি বাধা দিল না।

বিয়ের শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো কথা না বলে, কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে ইশতেহার কৌশিক অনন্যার হাত শক্ত করে ধরে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। অনন্যা হতবাক হয়ে তার পিছু পিছু হাঁটছিল, যদিও তার মুখে কোনো কথা ছিল না।

ঠিক তখনই ঈরা ছুটে এসে অনন্যাকে জড়িয়ে ধরলো। তার চোখে জল, কণ্ঠে ভারি আবেগ।
"ভালো থাকিস, অনু। আর তোর ফোনটা!"

ঈরা তাড়াতাড়ি ফোনটা অনন্যার হাতে গুঁজে দিয়ে ফোঁপাতে লাগল। অনন্যা ঈরার কাঁধে আলতো করে হাত রেখে শান্ত স্বরে বললো,
"ফোন করবো তোকে। তুইও ভালো থাকিস! জানি, আমি চলে যাওয়ার পরে মামা-মামী তোর উপরে ঝড় ওঠাবে। থ্যাংকস আর স্যরি।"

ঈরা কোনো উত্তর দিল না, শুধু শক্ত করে অনন্যাকে ধরে থাকলো। কিছুক্ষণ পরে অনন্যা ধীরে ধীরে ঈরার আলিঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত করলো। কৌশিক স্যার ততক্ষণে নিজের রেসিং কারে বসে পড়েছে। ইঞ্জিন এর গড়গড় আওয়াজে ধোঁয়া উড়ছে চারপাশে। ঈরাকে বিদায় জানিয়ে অনন্যা দ্রুত গাড়িতে উঠে পড়লো। গাড়ি চলতে লাগলো নিদারুণ স্পিডে। অনন্যা দ্রুত উপরের হ্যান্ডেল চেপে ধরলো। এতো জোরে চালানো হচ্ছে যে অনন্যার মাথা চক্কর দিয়ে উঠছে। গাড়ির অদ্ভুত গঠন দেখেও প্রচন্ড অবাক হয়ে পড়লো সে। বেশ আধুনিক মডেলের মনে হচ্ছে। 

অনন্যা চুপচাপ গাড়ির জানালার বাইরে তাকিয়ে রইল। রাস্তার বাতিগুলো দ্রুত পেছনে ফেলে যাচ্ছিল, ঠিক যেমন তার জীবনও আজ পেছনে ফেলে এসেছে তার চেনা পরিবেশ, চেনা মানুষজন। মনের ভেতর একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। মাত্র একটি দিন-ই কি সত্যিই যথেষ্ট পুরো জীবন পাল্টে দেওয়ার জন্য?

তবে, কিভাবে চোখের পলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইশতেহার কৌশিকের সাথে তার জীবন বাঁধা পড়ে গেল?

অনন্যার ভাবনায় ছেদ ঘটলো যখন গাড়ির স্পিডটা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকলো। অনন্যা দ্রুত চোখ ফিরিয়ে স্যারের দিকে তাকালো। স্যার মাথাটা নীচু করে রেখেছে, তার মন ড্রাইভিংয়ে নেই। হঠাৎ জোরে ব্রেক কষলো সে। কিছুক্ষণ নিশ্চুপ নিরবতায় কেটে গেলে সময়। 
হঠাৎ শোনা গেলো লোকটার গম্ভীর স্বর,
"গেট আউট অফ দ্য কার!"

অনন্যা বিস্ময়ের সাথে বললো,
"কী?"

"কথা কানে যায় না? গাড়ি থেকে নামুন।"

অনন্যা হতভম্ব হয়ে গাড়ির দরজা খুলে বাইরে দাঁড়ালো। কয়েক সেকেন্ড পরেই ইশতেহার কৌশিক স্যার গাড়ি স্টার্ট করলেন। অনন্যা হতচকিত হয়ে দরজার হাতল ধরে চেষ্টা করলো খোলার, কিন্তু কিছুতেই খোলা গেলো না। জানালায় শব্দ করে চিৎকার করলো,

"স্যার! স্যার! কী করছেন? দরজা খুলুন! আমাকে রেখে যাবেন না!"

"স্যার! আমি কোথায় যাবো? আমার যাওয়ার তো কোন জায়গা নেই, স্যার!"

কিন্তু কৌশিক স্যার একবার তার দিকে ফিরেও তাকালেন না। যেন পুরোপুরি নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে গাড়ি চালিয়ে চলে যেতে লাগলেন। অনন্যা হতবাক হয়ে চেয়ে রইলো। রাগে, অপমানে তার পুরো শরীর কাঁপছিল। শেষমেষ অনন্যা অসহায় হয়ে পায়ের জুতো খুলে গাড়ির পেছনে ছুঁড়ে মারলো। জুতোটা গিয়ে লাগে গাড়ির পিছনের কাঁচে, একটুখানি স্ক্র্যাচ পড়ে গেল।কিন্তু তাতেও গাড়ি থামলো না। 

গাড়ি পূর্ণোদ্যমে ছুটে চললো, দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। আর এক মুহূর্ত দেরি না করে অনন্যা অপর পায়ের জুতো খুলে ফেলে ছুট লাগালো গাড়ির পেছনে। তার খোঁপার খাঁজে আটকে থাকা খয়েরি রঙের কারুকাজ করা ওড়নাটা ছিটকে রাস্তায় পড়ে রইলো, বাতাসে এক মুহূর্তের জন্য উড়ে গিয়ে আবার থিতিয়ে পড়লো।

অনন্যা ছুটছে, দমবন্ধ করা গতিতে। তার পায়ের তলার রুক্ষ রাস্তার খাঁজগুলো প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে তার পায়ে গভীর ব্যথার চিহ্ন এঁকে দিচ্ছে। তবুও সে থামছে না। গাড়ি দূরে চলে গেছে, নাগাল পাওয়া এখন অসম্ভব। কিন্তু অনন্যা দম নেয়ার সুযোগও নিচ্ছে না, তার চোখ উপচে পানি গড়িয়ে পড়ছে। বিয়ে হয়েছে তার! লোকটা কীভাবে এভাবে ফেলে চলে যেতে পারে? 

অনন্যার প্রতিটি পদক্ষেপে যেন এক বুক যন্ত্রণা আর আকাঙ্ক্ষা মিশে আছে। শেষমেশ, ক্লান্তিতে তার শরীর আর সাড়া দিচ্ছে না। পায়ের তলা এতটাই জ্বালা করছে যে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়। হাঁপাতে হাঁপাতে রাস্তার ধারে বসে পড়লো সে। দু’হাতে মুখ ঢেকে কয়েক মুহূর্ত নিঃশব্দে কাঁদলো।

হঠাৎ, সে মুখ তুলে চারপাশের নির্জন রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে রইলো। কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকার পর তার ঠোঁটের কোণে এক অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠলো। মুহূর্তের মধ্যেই সেই হাসি উচ্চস্বরে রূপ নিলো। সে হাসছে, কখনো রাগে, কখনো কষ্টে, কখনো নিজের ভাগ্যের পরিহাসে। যেন নিজের জীবনের নাটকীয়তায় নিজেই মজা পাচ্ছে।

সবাই চলে যায় তাই না? কেউ থাকে না। কেউ না!
.
.
.
চলবে.................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন