বাসর ঘরের সামনে পায়চারি করছে জাওয়াদ। প্রবেশ করবে কি না বুঝে উঠতে পারছে না। সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে। কিছুক্ষণ পূর্বে তার বিয়ে হয়েছে। অথচ তার যতটুকু মনে আছে সে অফিস করে এসে, খেয়েদেয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলো। ঘুম ভাঙ্গতেই নিজেকে আবিষ্কার করলো বিয়ের পিড়িতে। একজন বৃদ্ধ কাজী তাকে শুধাচ্ছে,
“বলুন কবুল”
জাওয়াদ মাথা চুলকালো। বিয়ে নিয়ে গতরাতে আব্বা কথা তো বলেছিলেন। কিন্তু বিয়েটা ঘুম থেকে উঠতেই হবে সেটাতো কথা ছিলো না। তার থেকে ভয়ংকর ব্যপার, সে কনের নাম মনে করতে পারছে না। সে একেবারেই কনের নাম মনে করতে পারছে না। প্রথমে ভাবলো, এটা হয়তো স্বপ্ন। কিন্তু স্বপ্ন এতোটা বাস্তবের মতো ঠেকছে কেনো? এর পূর্বে সে স্বপ্ন দেখেছে, তবে এমন নয়। স্বপ্নে সে ডাইনোসোরের ধাওয়া খেয়েছে, ট্রেন চালিয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছে। কিন্তু স্বপ্নগুলো এতো স্পষ্ট ছিলো না। খুব-ই আবছা আবছা ছিলো। কালো ক্যানভাসে খুব ঝাপসা কিছু, ছাড়া-ছাড়া, ধীর স্বর। এখানে তেমন কিছু হচ্ছে না। আব্বার চিৎকার স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। আব্বা চেঁচাচ্ছেন,
“কবুল বল, আহাম্মকের বাচ্চা”
আব্বার ধমকে কবুল বললো জাওয়াদ। জ্যোতিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে, দেশ তৃতীয়বারের মত স্বাধীন হয়েছে। অবশ্য সে চায় জাওয়াদের বিয়েটা তাড়াতাড়ি হোক। মেয়েটি প্রেম করছে। জাওয়াদের বিয়ে হলে সে তার প্রেমিককে বলবে,
“রাস্তা ক্লিয়ার।”
আস্ত খাসি দিয়ে কনেপক্ষে আপ্যায়ন করলেন। তখন অবশ্য কনে তার পাশে বসেছে। কিন্তু এক হাত লম্বা ঘোমটা। ঘোমটার জন্য মুখ দেখা যাচ্ছে না। জাওয়াদ দ্বিধাগ্রস্থ। বর্তমানে ঘটিত কাহিনীগুলো তার বোধগম্য হচ্ছে না। খাওয়ার টেবিলে অনেক অপরিচিত মুখের মধ্যে একটি মুখ পরিচিত। সে হলো জাওয়াদের ছোটবেলার বন্ধু পাভেল। পাভেল কবজি ডুবিয়ে খাচ্ছে। মনে হচ্ছে গত এক সপ্তাহ থেকে ক্ষুধার্ত। গোঁফে ভাত, ঝোল লেগে যাচ্ছে তার কোনো পরোয়া নেই। জাওয়াদ মুখ বাঁকালো। পাভেল খেতে খেতে দাঁত কেলিয়ে বললো,
“খা, খা। হেব্বি টেস।”
“তুই খা। খেয়ে মর।”
ক্রোধিত স্বরে চাঁপা গলায় বললো জাওয়াদ। পাভেল খাওয়া না থামিয়ে বললো,
“সকালে হাগু করিস নি? ব্যাপার না, এভোলাক সিরাপ নিয়ে এসেছি। এক মুখটি খেয়ে নে। তারপর হেগে আয়। দেখবি, পেট ক্লিয়ার।”
জাওয়াদের ইচ্ছে হলো লাথি মেরে পাভেলকে ফেলে দিতে। কিন্তু জামাই মানুষ লাত্থালাত্থি করছে ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু। খাওয়া-দাওয়া হলো, বিদায় হলো। মেয়েটি গলা ছেড়ে কাঁদলো না। বরং তার মা কাঁদছিলো, সে সান্ত্বনা দিয়ে বললো,
“মা, বিয়ে মেয়েদের করতেই হয়। এখানে এতো কাঁদার কি আছে?”
মেয়েটির তখনও ঘোমটা টানা। কি অদ্ভুত মেয়ে। এমন কথা বলা বউদের রুলস এন্ড রেগুলেশনে নেই। অথচ তার বউ লাজলজ্জাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এমন কথা বলছে। বিয়ের ঘটনার চেয়েও বেশি বিহ্বল হলো মেয়ের আচারণে। পাভেল একটা প্লাটিকের বাটিতে দই খাচ্ছে। শালা কি খেতেই এসেছে? বন্ধুদের কাজ চিন্তা কমানো। কিন্তু পাভেলকে দেখে জাওয়াদের চিন্তা বাড়ছে।
বিয়ে সম্পন্ন হলো। নিজ বাড়ি এলো জাওয়াদ। সেখানেও শান্তি নেই। জ্যোতি আর তার সাঙ্গপাঙ্গ দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বাসর ঘরে ঢোকার শর্ত তিন হাজার টাকা। মাছিগুলো সাথে প্যানপ্যান করার ইচ্ছে হলো না জাওয়াদের। হাতে গুজে বললো,
“ভাগ, এখান থেকে।”
“তর সচ্ছে না তাই না ভাই?”
জাওয়াদ কড়া চোখে তাকালো। সুরসুর করে জ্যোতি তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সরে গেলো। কিন্তু এখন ভয় হচ্ছে জাওয়াদের। তার বিয়ে হয়ে গেছে। অথচ বউয়ের নাম জানে না। এদিকে তার তো একটা গার্লফ্রেন্ড আছে। শাম্মীকে কি বলবে? আর্মির মেয়ে, দু-নলা বন্দুক নিয়ে দৌড়ানি দিবে সেটাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু জাওয়াদের খুব একটা চিন্তা হচ্ছে না কেনো যেনো। কারণ জাওয়াদের মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্নে বিয়ে হলে ক্ষতি কি?
জাওয়াদ দোয়া দুরুদ পড়ে প্রবেশ করলো বাসর ঘরে। লাল ঘোমটা পরিহিত মেয়েটি ফুলেল খাটে বসে আছে। জাওয়াদ পা টিপে টিপে তার কাছে গেলো। হৃদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে। বেসামাল হচ্ছে মন। আঁকুপাঁকু করছে বউয়ের মুখ দেখার জন্য। সে বউয়ের আলতো হাতে ঘোমটাখানা তুললো। দুরুদুরু করছে হৃদয়। কিন্তু ঘোমটা তুলতেই অনুভূতি উবে গেলো। রঙ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো মুখের। অস্পষ্ট স্বর বের হলো,
“চিংকি।”
চিংকির ঠোঁট প্রশস্থ হলো। জাওয়াদের চেতনা বিলুপ্ত হলো। সে সরে যেতে নিলেই চিংকি খপ করে ধরলো পাঞ্জাবীর কলার। শানিত স্বরে বললো,
“কি জাওয়াদ ভাই? সরেন কোথায়?”
“তুমি এখানে কি কর?”
“বিয়ে হয়েছে আমার সাথে। আমি ছাড়া এখানে কে থাকবে?”
“কি……কিন্তু...”
“ওমা, আমাদের প্রিন্স চার্মিং দেখি তোতলা। কি বলছিলেন, আমার মতো মেয়ে আপনার সাথে যায় না। আমি কিন্তু ভুলি নাই। সেই অপমানের বদলা আমি সুদে আসলে নিবো।”
ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠলো জাওয়াদ। তার শরীর ঘেমে জবজব করছে। মাথার উপরে ফ্যানের ঘটঘট শব্দটা ঘরের নিস্তব্ধতা চিরে ফেলছে। জাওয়াদ এখনো বসে আছে। তার মস্তিষ্ক কাজ করছে না। এ কেমন স্বপ্ন! স্বপ্ন আগেও দেখেছে সে। কিন্তু এমন বাস্তবের মতো স্বপ্ন সে কখনো দেখে নি। তার থেকেও ভয়ংকর ব্যাপার। স্বপ্নে তার সাথে চিংকির সাথে বিয়ে হয়েছে! আর কেউ না চিংকি! চিংকির কথাটা মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষে আলোড়ণ তৈরি করছে তীব্রভাবে। অপমানের বদলা সে সুদে আসলে নিবে? কিভাবে?
স্বপ্ন নিয়ে আকাশ পাতাল ভাবার মানে নেই। স্বপ্ন কেবলই অবচেতন মনের কারসাজি। মানুষ তাই স্বপ্নে দেখে যা নিয়ে সে দিনভর চিন্তা করে বা মনের এক প্রকোষ্ঠে যে অবান্তর চিন্তাগুলো জমিয়ে রেখেছে। কিন্তু চিংকির তার কোনোকিছুর ধারে কাছেও পড়ে না। চিংকি জাওয়াদের এমন একটি অতীত যাকে অতীত বলাও যায় না। ছয়বছর আগের অতীতটি এভাবে দুঃস্বপ্নরুপে ধরা দিবে তার কল্পনাতীত ছিলো। বুকটা এখনো ধরফর করছে।
জাওয়াদ বিছানা ছাড়লো। পানিও নেই বিছানার পাশে। পানি খেতে হবে। গলা শুকিয়ে সেগুন কাঠ হয়ে গেছে। সে অস্বীকার করবে না যে ভয় পেয়েছে। চিংকি মোটেই ভয়ংকর দেখতে নয়। চিংকি মোটামুটি গোছের এক রমনী। তবে হ্যা, লাল বেনারসী শাড়িতে তাকে চমৎকার লাগছিলো। তবুও জাওয়াদ ভয় পেয়েছে। কারণটি তার সাথে ঘটিত বিশ্রী ঘটনা। জাওয়াদ দু-তিনবার জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেললো। ঘড়ির দিকে তাকালো সে। পাঁচটা পনেরো বাজে। এতো সকালে তার ঘুম ভাঙ্গে না কখনো। আব্বা শুনলে একবার ভিড়মি খাইতেন সন্দেহ নেই। কিন্তু সে নিয়ে চিন্তিত নয় জাওয়াদ। চিন্তা হলো ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়। তাহলে কি চিংকির বিয়ের স্বপ্ন সত্যি হবে?
*****
দিনটা ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ দিন বলে মনে হচ্ছে জাওয়াদের। একবছরের প্রেমের ইতি ঘটলো। জাওয়াদ বসে আছে ধানমন্ডি লেকের ধারের একটি বেঞ্চিতে। মনটা অত্যন্ত খারাপ। একটু আগেই শাম্মী তার দেওয়া সব উপহার তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আর বলেছে,
“তোমার মুখটাই শুধু সুন্দর। কিন্তু তুমি একটা আস্ত ভাল্লুক। আমার বান্ধবীরা ঠিক বলতো, তোর মত গুড ফর নাথিং এর সাথে প্রেম করাই আমার ভুল।”
শাম্মীর সাথে তার সম্পর্কটা প্রথম একমাসই ভালো ছিলো। এরপর থেকেই মেয়েটা খুব ঝগড়ুটে হয়ে গেছে। কোনো কারণ বিহীন ঝগড়া করতো। জাওয়াদের এতো ঝগড়া অপছন্দ। এই সম্পর্ক বেশিদিন টিকবে না সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিলো না। তবুও মন ঝিমিয়ে আসছে। শুধু এই ঘটনা ঘটলে হয়তো মনটা এতো খারাপ হতো না। কিন্তু আরোও খারাপ ঘটনা ঘটেছে। অফিসের ছয়মাসের প্রমোশনটা আটকে গেছে, তার গাড়ির একটা দূর্ঘটনা ঘটেছে। হেডলাইট ভেঙ্গেছে, উপরন্তু গাড়ির ইন্স্যুরেন্স করা নেই। সব মিলিয়ে দিনটা খুব বেশি বিশ্রী গিয়েছে। এতো খারাপ যাওয়ার কারণ কি? চিংকির স্বপ্ন? জাওয়াদ বুদ্ধিমান ছেলে। সে এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না। মেদুর মনখানা দিয়ে উঠলো সে। অলস পায়ে হাটতে শুরু করতেই জুতোটা ছিড়ে গেলো। এটাই বাকি ছিলো। জাওয়াদের জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন আজ। জাওয়াদ আজকের দিনকে নিঃসন্দেহে “ব্যাড লাক ডে” ঘোষণা করতে পারে।
ডিসেম্বরে সাধারণত বৃষ্টি হয় না। আজ হয়েছে। একেবারে শ্রাবণের মতো মুষলধারে বৃষ্টি। কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফিরলো জাওয়াদ। ক্লান্ত শরীর আর বিষন্ন মন দুই নিয়েই ঘরে প্রবেশ করলো। জ্যোতি বললো,
“তোরে কি কেউ বুড়িগঙ্গায় চুবাইছে ভাই?”
উত্তর দিলো না জাওয়াদ। ইচ্ছে হলো না। নিজের ঘরে ঢোকার আগে আব্বার সাথে দেখা হলো। আব্বা কিছু একটা বলছেন। কিন্তু মূর্ছানো মস্তিষ্ক কিছুই শুনছে না। জাওয়াদ ম্লান স্বরে বলল,
“আচ্ছা।”
ঘরে গিয়ে ভেজা কাপড়েই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। সে আজকের মত আর দিন চায় না। কিন্তু প্রকৃতির মনে হয় সেটা মঞ্জুর ছিলো না। জাওয়াদ টানা তিনদিন একই স্বপ্ন দেখলো। তিনদিনে তার জীবন ওষ্ঠাগত। চাকরি হারাতে হারাতে ঠেকিয়েছে। তার মানিব্যাগ চুরি হয়েছে। ল্যাপটপ পুড়ে গেছে। এমন কি, ঘরে আগুন ধরতে গিয়েছিলো গ্যাস লিক হয়ে। যুক্তিবাদী জাওয়াদের ধারণা এই সবকিছুর কারণ একটাই। চিংকির স্বপ্ন। সে হয়তো এভাবেই তার বদলা নিচ্ছে। এসবে সীমাবদ্ধ হলেও হত। অফিস থেকে ফিরতে আব্বা ঘোষণা দিলেন,
“আগামীকাল ছুটি নিছিস তো? তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাচ্ছি মনে আছে?”
“জ্বী?”
“আহাম্মক তোর মনে নাই?”
আব্বাকে যমের মত ভয় পায় জাওয়াদ। এই লোককে চেঁতানো পানে ঘরছাড়া হওয়া। সে মাথা নাড়িয়ে বললো,
“জ্বী মনে আছে আব্বা।”
কিন্তু তার কিছুই মনে নাই। বিয়ের কথা কখন হলো? সে কি রাজী হয়েছে? কাকে দেখতে যাচ্ছে সে? সে কি এখন জেগে জেগেও স্বপ্ন দেখছে? চিমটি কাঁটলো জাওয়াদ নিজেকে। না এটা স্বপ্ন নয়। চামড়াটা জ্বলছে। কিন্তু তার জীবনে হচ্ছেটা কি?
****
গাড়িতে করে মেয়ের বাড়ি যাওয়া হচ্ছে। গাড়িতে মোট পাঁচজন। বড়মামা, আব্বা, জ্যোতির সাথে পাভেলকে বগলদাবা করে নেওয়া হয়েছে। জাওয়াদের কপালে প্রগাঢ় ভাঁজ সে চিন্তিত। তার ধারণা সে পাগল হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুর সূত্রপাত চিংকির স্বপ্ন। সেইদিন বেশি দেরি নয় যখন তাকে পাগল বলে পাবনায় চালান করা হবে। জাওয়াদের পাশে জ্যোতি বসা। সে গেম খেলছে। জাওয়াদ স্বর খাঁদে নিয়ে শুধালো,
“আচ্ছা, যাকে দেখতে যাচ্ছি তার নাম কি?”
জ্যোতি বিমূঢ় চাইলো। জাওয়াদ নির্লজ্জের মতো দাঁত কেলিয়ে বললো,
“বল না বোন। প্লিজ!”
“বলিস না তোর নাম ঠিকানা কিচ্ছু মনে নেই, তুই মেয়ের ছবিও দেখিসনি।”
“মেয়ের ছবি কখন দেওয়া হলো?”
“তিনদিন আগে যখন তুই ভিজে আসলি বাবা তো তখনই তোকে সব বললো। ছবি আমি তোর ঘরে রেখে এসেছি।”
এবার মনে পড়লো জাওয়াদের, যেদিন শাম্মীর সাথে ব্রেকাপ হয়েছিলো সেদিন বাবা তাকে কিছু বলেছিলো। আর সে না শুনেই আচ্ছা বলে দিয়েছে। কপাল চাপড়াতে ইচ্ছে করছে। উপায়ন্তর না পেয়ে পঞ্চাশ টাকার একটি নোট বের করে জ্যোতির হাতে গুজে বললো,
“এবার বাঁচিয়ে দে।”
“পঞ্চাশে হবে না।”
“আরোও দিবো।”
জ্যোতি চোখ বন্ধ করে কিছু ভাবলো। তারপর গম্ভীর মুখে বললো,
“বেশ। আরোও পঞ্চাশ দিবি। কিন্তু এটাই শেষ। মুখস্থ করে ফেল। আব্বা ভাইবা নিতে পারে। মেয়ের নাম দীপশিখা কবির। বাবার নাম মোস্তফা কবির। মায়ের নাম নীরুপমা কবির। ওরা দুই বোন। বড় বোনের নাম...”
“এত কিছু জেনে কি হবে? আমি তো সত্যি বিয়ে করতে যাচ্ছি না।”
“বড়মামার ছাত্রের শালী। বিয়েটা হয়েই যাবে দেখো।”
জাওয়াদ পাত্তা দিলো না। দীপশিখা, নামটি তার পছন্দ হয়েছে। চিংকি, ফিংকি যে না তাই সে খুব নিশ্চিন্ত। সে কখনোই চায় না চিংকি তার জীবনে আসুক। পরমূহুর্তে মস্তিষ্ক থেকে সকল কু-চিন্তা ঝেড়ে ফুরফুরে মনে মেয়ের বাড়িতে গেলো। ছেলেপক্ষদের আপ্যায়নে কোনো ত্রুটি রাখা হলো না। পাভেল লজ্জা শরম ছেড়ে খেতে শুরু করলো। জাওয়াদের চোখ রাঙ্গানিতে কাজ দিলো না। মোস্তফা সাহেব খুব অমায়িক মানুষ। গোলগাল চেহারার গোপাল ভাড়ের মতো মানুষটির আচারণ জাওয়াদের ভালো লাগলো। এখন শুধু অপেক্ষা আসল মানুষটিকে দেখার। মিনিট বিশের মাথায় চায়ের ট্রে নিয়ে দীপশিখা প্রবেশ করলো। মোস্তফা সাহেব গদগদ স্বরে বললেন,
“আমার মেয়ে দীপশিখা।”
জাওয়াদ কেবলই পায়েশের বাটিটা হাতে নিয়েছিলো। মেয়ের মুখখানা দেখতেই হাত ফসকে বাটিটা পড়ে গেলো পায়ের উপর। চোখ বিস্ফারিত হলো, মুখের রঙ ফ্যাকাশে হলো। অস্পষ্ট স্বর বের হলো,
“চিংকি?”…………
.
.
.
চলবে...............................................