স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা - পর্ব ০৪ - মুশফিকা রহমান মৈথি - ধারাবাহিক গল্প


জাওয়াদের ঠোঁট চিরে দূর্বোধ্য হাসি উন্মোচিত হলো। প্রফুল্ল স্বরে বললো,
 “বাবা বলেছে চিংকির সাথে যোগাযোগ বাড়াতে। আমি ভেবেছি প্রতিদিন ওর সাথে দেখা করবো। এতে দুটো জিনিস হবে, এক আমি আর স্বপ্ন দেখবো না। আর দুই, ওকে চোখে চোখে রাখতে পারবো। তারপর হাতে নাতে ধরবো।”
 
পাভেল মিনমিন করে বললো,
 “হাতে নাতে ধরতে যেয়ে নিজেই না ধরা খাস।”
 “কিছু বললি?”
 “নাহ, বললাম। অল দ্যা বেস্ট। আমি উঠি।”

বলেই উঠে দাঁড়ালো পাভেল। জাওয়াদ ভ্রু কুচকে শুধালো,
 “কোথায় যাচ্ছিস?”
 “তোর জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান দেওয়া ছাড়াও এই অধমের একটা জীবন আছে। আমার জন্যও কেউ অপেক্ষা করে।”
 
জাওয়াদের কপালে ভাঁজ পড়লো। বিহ্বল স্বরে শুধালো, 
 “তুই প্রেম করছিস? বলিসনি তো!”
 
পাভেল লাজুক হাসি হেসে বললো,
 “এসব কি ঢোল পিটানোর বিষয়! লজ্জা লাগে না?”
 “হাসি থামা, দেখলেই গা জ্বলছে।”

পাভেল হাসি বিস্তৃত করলো। ফিঁচেল গলায় বললো,
 “আমাকে নিয়ে এতো ভাবিস না, আপাতত তোর চিংকিকে নিয়ে ভাব।”
 “ও মোটেই আমার চিংকি নয়।”
 “হতে কতক্ষণ! আমি তো এখনই দেখছি, একটা লাল লাভ কার্ডবোর্ডে গোল্ডেন বর্ণে লেখা জাওয়াদ ওয়েডস চিংকি। আহা! কি মনোরম দৃশ্য।”

কথাটা শেষ করার সাথে সাথেই জাওয়াদ পেপারওয়েট হাতে নিলো। কড়া স্বরে বললো,
 “এক্ষন আমার ঘর থেকে বের হ! নয়তো তোর কল্পনায় ফুটো করার ব্যবস্থা করছি।”

জাওয়াদের হাতের পেপারওয়েট দেখে পাভেলের গলা শুকিয়ে এলো। বুঝলো এখানে দাঁড়ানো বিপজ্জনক। ফলে আর দাঁড়ালো না। এক ছুটে বেড়িয়ে গেলো। এখনো বিয়ে হয়নি। জাওয়াদের বিশ্বাস নেই, সত্যি সত্যি পেপারওয়েট ছুড়ে দাঁত ভেঙ্গে দিবে। দাঁত ফোকলা জামাইকে কে বিয়ে করবে তখন?

****

পা মচকে যাওয়ার বাহানা দিয়ে হাফ ডে অফিস করলো জাওয়াদ। গতরাতে একফোঁটাও ঘুমায়নি। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। ঘুমালে যদি আবার স্বপ্ন দেখে! একেই স্বপ্নের তান্ডবে জীবন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আর কোনো দূর্ভাগ্যের শিকার হতে চায় না জাওয়াদ। জাওয়াদের অবাক লাগছে। এককালে স্বপ্নকে কেবল কুসংস্কার বলে ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেওয়া ছেলেটি স্বপ্নের ভয়ে ঘুমাতে পারছে না। চিরটাকার যুক্তিবাদী ছেলে জাওয়াদ। যুক্তিতর্ক ছাড়া এই পঁচিশ বছরে কোনো কাজ করেছে কি না মনে পড়ছে না। কিন্তু তার সাথে যা ঘটছে কোনো যুক্তির আওতায় পড়ছে না। পাভেল বন্ধু বিধায় সে কথাগুলো শুনছে। নয়তো স্বাভাবিক মানুষ শুনলেই বলবে,
 “আপনি ভালো ডাক্তার দেখান।”

তবে জাওয়াদ দৃঢ় প্রতীজ্ঞা করেছে নিজের সাথে। এই যন্ত্রণার শেষ সে দেখেই তবে ছাড়বে। এই স্বপ্নকান্ডের ইতি সে টানবেই। 

*****

জ্যোতিকে ঘুষ দিয়ে চিংকির ভার্সিটির ঠিকানা নিয়েছে জাওয়াদ। বর্তমানে ইংরেজীতে অনার্স করছে মেয়েটি। দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। জাওয়াদের পরিকল্পনা হলো, ভার্সিটি ছুটির সময় সে ভার্সিটির গেটে উপস্থিত হবে। এখানে দাঁড়িয়েই মেয়েটিকে ফোন দিবে। তারপর তাকে বাড়িতে পৌছে দিবে। এর মাঝে একটু আলাপ করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুপুর একটার আগেই ভার্সিটির গেটের সামনে দাঁড়ালো। বিশাল বাগানবিলাস ঘেরা ডাল নেমে এসেছে ভার্সিটির গেটে। মাথার উপর উত্তপ্ত সূর্যকে উপেক্ষা করে জাওয়াদ দাঁড়িয়ে রইলো গেটের সম্মুখে। ভার্সিটির দারোয়ান সন্দিহান চোখে দেখছে। তার চাহনী তীক্ষ্ণ। যেনো কোনো চোর বাটপারকে দেখছে। 

জাওয়াদের অস্বস্তি লাগছে। এর পূর্বে কোনো মেয়ের জন্য কখনো অপেক্ষা করেছে কি না জাওয়াদের মনে পড়ছে না। অথচ আজ চিংকির জন্য অপেক্ষা করছে। জ্যোতির থেকে শুনেছে আজ চিংকির পরীক্ষা আছে। শেষ হবে একটার সময়। ঘড়িতে এখন একটা পনেরো বাজে। জাওয়াদ বিপাকে পড়লো। ঠিক করে উঠতে পারলো না সে ফোন দিবে কি না। অপরিচিত নম্বর নাও ধরতে পারে। পরমুহূর্তেই ভাবলো, সে যেমন চিংকির নম্বর পেয়েছে, চিংকিও পেতে পারে। কিন্তু চিংকি হল থেকে বের হয়েছে কি না বুঝতে পারছে না। দ্বিধার মেঘে ছেদ পড়লো যখন দেখলো সাদা জামা পরিহিত চিংকি গেটের দিকে হেটে আসছে। জাওয়াদ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। মোটর সাইকেলের ফ্রন্ট মিররে নিজের চুলগুলো ঠিক করেই হাত উঁচিয়ে ডাকলো,
 “চি… দীপশিখা।”

নিজের নাম শুনতেই চমকে উঠলো দীপশিখা। চমক আকাশ ছুঁলো যখন দেখলো। ভার্সিটির গেটে বাইকে হেলান দিয়ে জাওয়াদ দাঁড়িয়ে আছে। সে হাত উঁচিয়ে তাকে ডাকছে। দীপশিখা আশেপাশে তাকাতেই দেখলো সবার চোখ তার দিকে। এদের মধ্যে তার ক্লাসের ছেলেমেয়েও রয়েছে। ভার্সিটি জীবনে সামান্য কথাও রটনায় পরিণত হতে সময় লাগে না। এখানে একজন সুদর্শন যুবক বাইক নিয়ে দীপশিখার জন্য অপেক্ষা করছে। উপরন্তু হাত উঁচিয়ে সে তাকে ডাকছে। এই ঘটনা ব্রেকিং নিউজ হতে সময় লাগবে না। দীপশিখার মানুষের দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু হওয়া অপছন্দ। সেখানে ব্রেকিং নিউজ হওয়ার কথা সে ভাবতেও পারে না। ফলে চোখ মুখ কুচকে এলো। 

জাওয়াদ ভেবেছিলো চিংকি তাকে দেখে অবাক হবে, প্রফুল্ল হবে। কিন্তু এমন কিছুই হলো না। চিংকি তার পাশ কাটিয়ে সোজা হেটে চলে গেলো। তাকে হ্যালো, হাই কোনো সম্ভাষণ জানালো না। জাওয়াদ বেকুবের মত কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। বিস্ময় কাটতেই দেখলো চিংকি একটা রিকশায় উঠে গেছে। ফলে দ্রুত মোটরসাইকেলে স্টার্ট দিলো সে। রোদ মাথায় তুলে তার জন্য দাঁড়িয়ে থেকে যদি কথাও না হয় তবে এতো কষ্টের মানে কি?

চিংকির রিকশা চলছে আপন গতিতে। জাওয়াদ তার রিকশার পাশেই মৃদু গতিতে বাইক চালাচ্ছে। এতো আস্তে কখনো বাইক চালানোর অভ্যাস নেই তার। কিন্তু আজ চালাচ্ছে। সে কেনো এমন করছে তার কারণ নিজেও জানে না। শুধু জানে চিংকির সাথে কথা বলতেই হবে। চিংকি ভাবলেশহীন। একবার শুধু আড়চোখে দেখলো জাওয়াদকে। ক্ষণিকের জন্য চোখাচোখি হলো। তারপর সে দুম করে হুড তুলে দিলো। জাওয়াদ হতবাক হলো মেয়েটির এমন কাজে। এই প্রথম তার সাথে কোনো মেয়ে এমন আচারণ করছে। এতোকাল তো মেয়েরা তার হাসিতেই কুপোকাত হত। আর এই মেয়ে কি না তার মুখের উপর হুড টেনে দিচ্ছে মানা যায়!

রিকশা থামলো পুরোনো তিনতালা বাড়ির সামনে। জাওয়াদও তার মোটরসাইকেল এক কোনায় থামালো। চিংকি ভাড়া চুকতা করে যেই ভেতরে যেতে নিলো অমনি খপ করে তার হাত টেনে ধরলো জাওয়াদ। আকস্মিক কাজে অপ্রস্তুত হলো চিংকি। গোলগোল চোখে তার দিকে চেয়ে রইল। মেয়েটি আজ লেন্স পড়ে নি। গোলগোল চশমার ভেতরের বিহ্বল চোখজোড়ায় চোখ স্থির রেখে জাওয়াদ গাঢ় স্বরে শুধালো,
 “আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছো কেন?”

চিংকির কপাল কুচকে এলো। শানিত স্বরে উলটো প্রশ্ন করলো,
 “আপনি এভাবে আমার হাত ধরলেন কেনো? হাত ছাড়ুন।”

চিংকির স্বর শুনতেই হাত ছেড়ে দিলো জাওয়াদ। চিংকি তার চশমা ঠিক কড়া স্বরে বললো,
 “এভাবে কখনো আমার হাত ধরবেন না। লাফাঙ্গাগিরি আমার অপছন্দ। আর আপনি কেন আমার ভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন? এখানেও এভাবে হ্যারাস করছেন কেনো?”

জাওয়াদ থতমত খেলো। মেয়ে বলে কি? সে তাকে হ্যারাস করছে? স্মিত স্বরে স্বগোতক্তি করলো,
 “আমি তো তোমার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।”
 “কেন? আমাদের কি দেখা করার কথা ছিলো?”
 “না।”
 “তাহলে?”
 “কথা না থাকলে দেখা করা যায় না?”
 “না যায় না।”
 
জাওয়াদের রাগ হলো। ছোট একটা মেয়ে। মাথাটাও তার বুকের ধারে পড়ে থাকে। অথচ তেজ আকাশচুম্বী। ফলে মাথাটা ঝুকিয়ে চিংকির চোখে চোখ রেখে বললো,
 “বেশ তাহলে এখনই টুকে নাও, আমি প্রতিদিন তোমার সাথে দেখা করতে আসবো।”
 “আপনি বললে আমি কেনো দেখা করবো?”
 “করবে না কেন?”
 “আপনার কি মনে হয়, আপনি বলবেন আর আমি গদগদ মনে রাজি হয়ে যাবো। এমন লাফাঙ্গাগিরি আমার সাথে দেখাবেন না। আমি ত্যক্ত, বিরক্ত হই।”

কথাটা খুব চেনা। একদিন এমন কিছুই জাওয়াদ নিজেই বলেছিলো চিংকিকে। মৃদু হেসে বলল,
 “ব্যাপার না, অভ্যাস হয়ে যাবে। যাও, খেয়ে ঘুম দাও। তোমার কালকে টিউশন আছে না? আমি সাড়ে ছয়টায় অপেক্ষা করবো।”

চিংকির কপালের ভাঁজ প্রগাঢ় হলো। বিরক্তি স্পষ্ট ফুটে উঠলো। কিন্তু জাওয়াদ পাত্তা দিলো না। তার স্বপ্নকান্ডের ইতি টানাই এখন একমাত্র কাজ। 

****

জাওয়াদ সোফায় বসে রয়েছে। সামনে ল্যাপটপ। দু তিনটে ওয়েবসাইট ওপেন করা। প্রতিটিতেই একটি টপিক, “হাউ টু ইম্প্রেস এ গার্ল”—কিন্তু এসব উপায় সব ভুয়া। ওয়েবসাইট অনুযায়ী মেয়েরা হেলদি ফ্লার্টিং পছন্দ করে। চিংকির ভাষায় এটা লাফাঙ্গাগিরি। মেয়েটি তার সাথে কথা বলতেও আগ্রহী নয়। গত সাতদিনে তার সাথে দেখা করার একটি পরিকল্পনাও সফল হয় নি। মেয়েটি তাকে দেখেও না দেখার ভান করে হাটা দেয়। কথা বলতে অনীহা। তৃতীয়দিন তিনটে গোলাপ নিয়ে গিয়েছিলো জাওয়াদ, সাদা গোলাপ, দুশো টাকার তিনটে গোলাপ। অথচ মেয়েটি নির্বিকার মুখে বললো,
 “আমার গোলাপে এলার্জি।”

জাওয়াদ প্রতিদিন সেজেগুজে যায়। অফিসে মেয়েরা তার সাথে ফ্লার্টও করে। অথচ চিংকি নির্লিপ্ত। যেনো তার চোখে জাওয়াদ নামে কেউ নেই। ফলে আত্মবিশ্বাস খসতে লাগলো জাওয়াদের। সে তো এক কলিগ আপুকে শুধিয়েই বসলো, “আপু আমার চেহারা কি এট্রাক্টিভ না?”
 “কে বলেছে?”
 
সে আর উত্তর দিলো না। সকালবেলা উঠে আয়নায় আধা ঘন্টা কাটায় সে। কিন্তু তাও লাভ হচ্ছে না। চিংকির দৃষ্টি আগের মতোই তীক্ষ্ণ, শানিত। সে মোটেই বিরক্তি প্রকাশ করায় কার্পন্য করে না। তবে একটা ভালো ঘটনা ঘটেছে এই সাতদিন কোনো স্বপ্ন সে দেখেনি। ফলে কোনো দূর্ঘটনা বা খারাপ ঘটনাও ঘটেনি।

নারী বিষয়ে জাওয়াদের জ্ঞান সীমিত। এমন মোটেই নয় যে তার জীবনে নারীদের আনাগোনা কম। নাহ! জীবনে তার গার্লফ্রেন্ড বহু এসেছে। কিন্তু সেই আগমণ মোহ অবধি সীমাবদ্ধ। খুব কাছে যাবার ইচ্ছে কখনো হয়নি। ছুঁয়ে দেখার মাদকতা তার জন্মায়নি। শাম্মী ব্যাতীত যারাই এসেছে সময়কাল মাত্র দু বা তিন মাস। কেবল শাম্মীর সাথেই সম্পর্কটা বহুদিন টিকলো। টিকা বলাটা অপমান কিন্তু এ বাদে আর কিছু বলারও নেই। ঝগড়া বাদে কোনো স্মৃতিই জাওয়াদের মস্তিষ্কে নেই। ঝগড়াগুলোর কারণ অবশ্য জাওয়াদ নিজেই। শাম্মীর মতে জাওয়াদ তাকে বুঝে না। অস্বীকার করবে না। সে আসলেই শাম্মীকে বুঝে না। শাম্মী কেনো সে নারীদেরই বুঝে না। নারীদের কাছে জাওয়াদ সর্বদাই আকর্ষণীয়। সুদর্শন পুরুষ, নম্র ব্যবহার, নয়নাভিরাম হাসি-- কিন্তু সম্পর্কে দায়ছাড়া। তারা যত কাছে আসতে চায় ততই দূরে সরে যায় জাওয়াদ। যখনই কোনো সম্পর্কে জড়ায় তখনই মনে হয় একটা পানসে চা খাচ্ছে সে। যত দ্রুত শেষ হবে ততই মঙ্গল। নয়তো বদহজম হবে। তাই চিংকির সাথে প্রতিনিয়ত দেখা করা আর তার মন গলানোর ব্যাপারটা ব্যাপক মাথাব্যথার কারণ হলো। পাভেল হতচ্ছাড়াকে শুধালে বলে,
 “তোর চার্মের দিন শেষ দোস্ত।”

তারপর শয়তানের মত হাসবে। তাই একটা নারীকেই শুধানোই যথার্থ মনে হলো জাওয়াদের। নারী বলতে ছোট বোন জ্যোতি ব্যতীত আর কাউকেও স্মরণ হলো না। ফলে উপায়ন্তর না পেয়ে জ্যোতিকেই শুধালো,
 "আচ্ছা, মেয়েদের কেমন ছেলে ভালো লাগে?"

জ্যোতি মুখ না তুলেই বললো,
 "পাঁচশ টাকা দে।"

জ্যোতি একটি লোভী মহিলা। টাকা ছাড়া একটা কাজ সে করে না। টাকা ছাড়া সে বিছানা থেকেও উঠবে না। এমন টাকাপ্রেমী নারী জাওয়াদ দ্বিতীয়টি দেখে নি। ফলে মুখ বাঁকিয়ে শুধালো,
 "তোর লজ্জা লাগে না এভাবে চাঁদাবাজি করতে?"
 
জ্যোতি নির্লিপ্ত স্বরে বললো,
 "নাহ! আমি তোর বোন। জীবনে সাতটা গার্লফ্রেন্ড হবার পরও যদি তুই জিজ্ঞেস করতে পারিস মেয়েদের কেমন ছেলে ভালো লাগে!" তাহলে আমার চাঁদাবাজিতে পাপ নেই। তা ভাইয়া তুই কি ভাবিকে পটানোর ট্রাই করছিস?”
 “এসব বাজে ভাষা কে শিখিয়েছে তোকে? পটানো কি রে? আমি ওকে মোটেই পটাচ্ছি না। মেয়েটা ভীম দেমাগী। আমি শুধু ওর দেমাগ কমাতে চাই।”

জ্যোতি ঠোঁট টিপে হাসলো, ফিচেল গলায় বললো,
 “বুঝছি।”
 “এবার বল।”
 “কি?”
 “মেয়েদের কেমন ছেলে পছন্দ?”
 “পাঁচশ টাকা। এক টাকাও বাকি হলে চলবে না।”

জাওয়াদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কচকচে পাঁচশত টাকা বের করে হাতে দিলো জ্যোতির। জ্যোতির মুখ উজ্জ্বল হয়ে গেলো। জাওয়াদ হতাশ স্বরে বললো,
 “এবার বল।”
 “তাহলে শোন....”

*****

ছুটির দিনে দীপশিখা ঘুমিয়ে কাটায়। আজ ঘর থেকে শুধু খাওয়ার সময় বের হবে সে। বাকিটা সময় হয় ঘুমোবে, নয় ঘুম আনার জন্য বই পড়বে। আজও তাই হলো, ঘুম আনার জন্য সে বই পড়ছে। অনুরাগ বইটির মধ্যভাগে সে। আজ ঘুম আসছে না। তার ভীষণ আগ্রহ বইটি নিয়ে। পাতা উল্টাচ্ছিলো তখন বাবার স্বর কানে এলো,
 “চিংকি মা, এখানে আসো তো।”
 “বাবা আমি ঘুমাচ্ছি, এখন আসতে পারবো না।”
 “তাহলে ঘুম থেকে একটু উঠো মা, জাওয়াদ এসেছে।”
.
.
.
চলবে................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন