মাই মিস্টিরিয়াস প্রিন্স - পর্ব ১১ - মৌমিতা মৌ - ধারাবাহিক গল্প


দুই তলা বিলাসবহুল বাড়ির ভেতর ঢুকতেই সরু গলির দেখা মেলে, যা সোজা এগিয়ে গেছে বাড়ির গভীরতা পর্যন্ত। সেই গলি পেরোলেই বাম দিকে চোখে পড়ে এক প্রশস্ত বসার ঘর, যেখানে আরামদায়ক সোফা, বড় টেলিভিশন আর একটি টেবিল মধ্যমণি হয়ে আছে। বসার ঘরের ঠিক আরও বামে, দেয়াল পেরিয়েই রান্নাঘর। রান্নাঘরের সংলগ্ন স্থানে রয়েছে এক সুসজ্জিত ডাইনিং টেবিল।

গলির ডান পাশে কিছু খালি স্থান রাখা হয়েছে। সেই খালি স্থান পেরিয়ে গলির উপর দিয়ে উঠে গেছে ঘোরানো সিঁড়ি, যা দ্বিতীয় তলায় যাওয়ার পথ দেখায়। সিঁড়ির নিচে ছয়টি রুম জায়গা করে নিয়েছে, প্রতিটি রুম পরিকল্পিতভাবে সাজানো গোছানো।

কৌশিক সোফায় বসে আপেল কাটতে কাটতে গভীর চিন্তায় নিমগ্ন। তার কপাল কুঁচকানো, চোখে অন্যমনস্কতা প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে। ঘরের নিরবতা হঠাৎ ভেঙে গেলো যখন নিচের এক রুম থেকে বেরিয়ে এলো নিকোলাই। তার পরনে ছিল ধূসর রঙের পাতলা টিশার্ট আর ঢিলেঢালা প্যান্ট। তার ধবধবে ফর্সা ত্বক, নীল-কালো মেশানো চুল আর সুঠাম দেহ কাঠামো দেখে মনে হয়, যেন সে শক্তিতে কৌশিককেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

নিকোলাই কৌশিকের চিন্তাগ্রস্ত ভঙ্গি দেখে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়ালো। তার চোখ দুটো গভীর পর্যবেক্ষণে আটকে গেল কৌশিকের মুখে। কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে থাকার পর সে দ্রুত পা ফেলে এগিয়ে এলো। বলে উঠলো,
"আলেকজান্ডার! কী গভীর চিন্তা করছো বসে বসে?"

'আলেকজান্ডার' শব্দটা কৌশিকের কানে পৌঁছানো মাত্রই তার শরীরটা হালকা কেঁপে উঠলো। চোখ দুটো মুহূর্তেই শীতল হয়ে গেলো, এক অদ্ভুত তীক্ষ্ণতা ফুটে উঠলো সেখানে। কৌশিক ছুরিটা পাশে রেখে ডান হাতের আঙুল একটু নাড়ালো। আশেপাশের বাতাস যেন তার নির্দেশ মেনে হাতের মুঠোয় জড়ো হলো। পর মুহূর্তেই সেই বাতাসের অপ্রতিরোধ্য ঝড় এক ধাক্কায় নিকোলাইয়ের দিকে ছুঁড়ে দিলো সে।

প্রচণ্ড ধাক্কায় নিকোলাই শব্দ করে দেয়ালের দিকে ছিটকে পড়লো। তার পিঠ দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করে মৃদু কাঁপন তুলে দিলো পুরো ঘর। ব্যথা পেয়ে কঁকিয়ে উঠলো নিকোলাই ভেস্পার। চিৎকার করে বললো,
"ওয়াট ইজ ইউর প্রবলেম , ম্যান?"

"বলেছিলাম এই নামে ডাকতে না, তাও বারবার একই ভুল করো কীভাবে?"

নিকোলাই দেয়াল ধরে কষ্ট করে দাঁড়ালো। পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
"উফফ! এতো নাম পরিবর্তন করো কেনো তুমি? একেক জায়গায় একেকটা নাম! কখন কোনটা ডাকবো সেটাই তো ভুলে যাই। আর ছোট নামটা! ওইটা উচ্চারণ করতে গেলে তো আমার জ্বর এসে যায়!"

কৌশিক ঠাণ্ডা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
"পরিবর্তন করা দরকার বলেই করি। তোমাদের সমস্যা হয় না, কারণ তোমরা এতো নামকরা নও। কিন্তু আমাকে নিয়ে বিভিন্ন বইয়ে লেখালেখি হয়েছে তাই এটা কোনো নরমাল বিষয় নয়।"

নিকোলাই ভ্রু কুঁচকে কষ্ট সহ্য করতে করতে বললো,
"কী নাম রেখেছিলে যেন? বারবার ভুলে যাই।"

কৌশিক ধীরে ধীরে উচ্চারণ করলো,
"ইশতেহার কৌশিক।"

নিকোলাই মাথা চুলকে বললো,
"ওহ! ককক...কাশিক?"

এক ধমকে কৌশিক শুধরে দিলো,
"নো, কৌশিক!"

নিকোলাই হাত তুলে মাথা নাড়িয়ে বললো,
"আচ্ছা আচ্ছা। ঠিক আছে, শিখে নিলাম। আর শুনলাম নতুন একটা মেয়ে এসেছে? আসলেই?"

"হুম! তোমার ব্যথার কী খবর?"

"সেরেছে!"

"আর শিকার?"

"মরেছে!"

কৌশিকের ঠোঁটের কোণে এক রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো। প্রশংসাসূচক সুরে বললো,
"গুড, খুব ভালো কাজ করেছো, নিক!"


ভোরের ঘটনাগুলো অনন্যার মাথা থেকে কিছুতেই বেরোচ্ছে না। স্যারের অদ্ভুত আচরণ, তার রহস্যময় ব্যক্তিত্ব,সবকিছু তাকে কেবল ভাবনার গভীরে টেনে নিচ্ছে। কালকে স্যার বললো, বিয়ের সময় তিনি নিজের সেন্সে ছিলেন না। কিন্তু সেন্সে না থাকলে বিয়ে কীভাবে হলো? অনন্যার মাথায় হঠাৎ একটা চিন্তা দানা বাঁধলো।

"না জানি, সেই মোমবাতির ট্রিকটাই কাজ করলো!"

এই ধারণা মাথায় আসতেই অনন্যা দ্রুত উঠে দাঁড়ালো। চারদিকে খুঁজতে লাগলো এক ফালি মোমবাতি। দীর্ঘক্ষণ খুঁজে শেষে মোমবাতি পেয়ে গেলো। মোমবাতিটা জ্বালিয়ে রুমের মাঝখানে বসিয়ে নিলো। নিজের মনের অস্থিরতাকে সংবরণ করার চেষ্টা করলো। কিছুক্ষণ শান্ত হয়ে নিজেকে স্থির করলো, তারপর মোমবাতির দিকে তাকিয়ে ধীর কণ্ঠে বললো,

"স্যার, আমাকে আপনার দরকার। একবার আমার কাছে আসুন।"

এই বাক্যটি সে বারবার উচ্চারণ করলো। প্রতিবারই যেন গভীর মনোযোগ দিয়ে। চোখ বন্ধ করলো, চেষ্টা করলো কৌশিক স্যারকে মনে করার। মনে পড়লো সেই তীক্ষ্ণ আকাশি দৃষ্টিটা আর তার স্বভাবসিদ্ধ শীতল ভঙ্গি।

সময় পার হতে লাগলো। এক মিনিট, দু'মিনিট... অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলো অনন্যা। কিন্তু স্যারের কোনো সাড়া নেই। রুমে সেই নিস্তব্ধতাই ফিরে এলো। মোমবাতির নড়ন্ত শিখায় অনন্যার মুখ পড়ে আছে এক ধরনের হতাশা আর দ্বিধার ছাপ।

"এটা কীভাবে সম্ভব? আমি কি ভুল করছি?" 

তবুও মোমবাতির শিখার দিকে তাকিয়ে অনন্যা চুপ করে রইল। ভাবলো, সেদিনের মতোই কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু তা আর হলো না। তাই নিচে নেমে গোসল সেরে নেওয়ার জন্য বাথরুমে চলে গেলো সে।

বাথরুম থেকে স্নান সেরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অনন্যা ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলো। মাথায় তোয়ালে পেঁচানো, কপাল বেয়ে পানির চিকন ফোঁটা গড়িয়ে পড়ছে, তার স্নিগ্ধ, সতেজ উপস্থিতি ঘরকে পবিত্রতায় ভরিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যে। বসার রুম থেকে ভেসে আসা অপরিচিত আওয়াজে থমকে দাঁড়ালো সে। কিছুটা দ্বিধায় এগিয়ে গেলো, কৌশিক স্যারের পাশে বসে থাকা অচেনা ব্যক্তিটিকে দেখার জন্য।

রুমের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা অনন্যা নীরবে পর্যবেক্ষণ করলো। লোকটি, যাকে সে আগে কখনো দেখেনি, অস্বাভাবিক সুগঠিত। তার চোখের গভীরে যেন আরেকটি অনন্ত রহস্যের ছায়া। 

কৌশিক স্যারের দৃষ্টি পড়তেই অনন্যার মুখে এক মুহূর্তের জন্য চাপা গম্ভীরতা নেমে এলো। অন্যদিকে নিকোলাই, অনন্যার দিকে চোখ তুলে তাকালো। ঠোঁটের কোণে এক চিলতে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে আলতো করে হাত নাড়ালো।

অনন্যা বিভ্রান্ত হলেও হাসার চেষ্টা করলো। কণ্ঠে অস্ফুট স্বর নিয়ে বললো,
"আ... আপনি কে? মানে, আপনি কি নিকোলাই ভেস্পার?"

নিকোলাইয়ের মুখে হাসির রেখা আরো গাঢ় হলো। তার চোখে যেন বিদ্রুপের মৃদু ঝলক। নিজের নাম উচ্চারিত হওয়া উপভোগ করে সে বললো,
"একদম ঠিক ধরেছো। ছোট নাম নিক!"

কৌশিক কাঁটাচামচ দিয়ে আপেলের এক টুকরো তুলে মুখে পুরলো, তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি অনন্যার দিকে নিবদ্ধ। চোখের ভাষায় যেন সে অনন্যাকে গভীরভাবে পরখ করে নিচ্ছে।

অনন্যা এক মুহূর্তের জন্য কৌশিকের দৃষ্টি সহ্য করার চেষ্টা করলো। তারপর মিষ্টি হাসি ছড়িয়ে নিকের দিকে তাকিয়ে মাথা উপর-নিচে নাড়িয়ে বললো,
"আহহ... লারা কাল আমায় বলেছে। কালকেই এসেছি আমি, কিন্তু আপনার সাথে দেখা হয়নি।"

নিক হেসে বললো,
"হুম! এই তো দেখা হয়ে গেলো। তোমার নাম কী?"

অনন্যা হালকা হেসে মাথা নুইয়ে নিজের নাম জানালো।
কৌশিক এক নজর আপেলের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বললো,
"ব্রেকফাস্ট নয়টায়। দশটায় ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হবো। বি রেডি।"

অনন্যা ভদ্রতায় মাথা ঝুঁকিয়ে বললো,
"ঠিক আছে।"
তারপর দ্রুত পা ফেলে ঘর ছেড়ে চলে গেলো।

নিকের ঠোঁটের কোণায় অদ্ভুত এক হাসি খেলে গেলো। চোখ টিপে কৌশিকের দিকে তাকিয়ে বললো,
"মেয়েটা তো বেশ ইন্টারেস্টিং! ক্যান আই টেস্ট হার?"

কৌশিক সঙ্গে সঙ্গেই কাঁটাচামচের নিচের অংশ দিয়ে প্লেটের ওপর জোরে আঘাত করলো। আঘাতের তীব্রতায় প্লেটটায় আংশিক ফাটল ধরলো আর আপেল টুকরোগুলো ছিটকে টেবিলের ওপর পড়ে গেলো। কৌশিকের মুখটা কঠোর হয়ে উঠলো, দাঁতে দাঁত পিষে ক্ষুব্ধ গলায় বললো,
"আমি বলেছিলাম আমার সামনে মুখ সামলে রাখতে!"

নিক এক মুহূর্তের জন্য থতমত খেয়ে গেলো, তারপর নিজেকে সামলে বললো,
"কিন্তু আগের বার তুমি তো..."

কৌশিক তাকে থামিয়ে দিয়ে ঠান্ডা অথচ ভয়ানক গলায় বললো,
"সেটা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। সি ইজ মাই গার্ল! এন্ড আই গট হার! তাই ওর ব্যাপারে যা করার, আমি করবো। অন্য কেউ এতে নাক গলানোর চেষ্টা না করলে খুশি হবো।"

"ওকে, ওকে! কিন্তু মেয়েটাকে কীভাবে পেলে?"

কৌশিক এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোফার পেছনের অংশে হাত ছড়িয়ে ঠান্ডা গলায় বললো,
"আমাদের বিয়ে হয়েছে।"

নিক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলো। বিস্ময়ে তার চোখ বড় হয়ে উঠলো। ধাক্কা সামলে বললো,
"আর কতবার বিয়ে করবে, ব্রো? আমাদেরও তো কিছু সুযোগ দাও, একটু বিয়ে-শাদির স্বাদ নেওয়ার জন্য!"

কৌশিক ভ্রু কুঁচকে ধমক দিয়ে বললো,
"শাট আপ! আমি ইচ্ছা করে বিয়ে করিনি। হয়ে গেছে।"

নিক কথাটা শুনে হো হো করে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে সে গড়িয়ে পড়লো সোফার পাশ থেকে। হাততালি দিতে দিতে বললো,
"সিরিয়াসলি? বিয়ে 'হয়ে গেছে'? এটা কীভাবে সম্ভব? বিয়ে কি কোনো দুর্ঘটনা? চাইনা তাও হয়ে যায়?"

কৌশিক চুপচাপ বসে রইলো। আড়চোখে একবার নিকের দিকে তাকালো, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। তার হালকা গোলাপি ঠোঁট শক্ত, চোখের গভীরে এক ধরনের অস্বস্তি লুকানো। এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে সে পেছনে হেলান দিলো।

কিছু কথা থাকে যা মুখ ফুটে বলা যায় না। এমনকি নিকের মতো কাছের মানুষের কাছেও না। কৌশিক জানে, বললেও নিক সেটা বুঝবে না। আর যে বুঝবে তাকে বলার সময় এখনো আসেনি।


কৌশিক অনন্যাকে নিয়ে বাড়ির পাশের গ্যারেজে প্রবেশ করলো। গ্যারেজের ভেতরের চিত্র দেখে অনন্যা যেন হতবাক হয়ে গেলো। বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে দেখলো, গুণে গুণে পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি, দু’টি হাই-এন্ড বাইক আর এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা চকমকে সাইকেল। প্রতিটি বাহন যেন নিজস্ব রাজকীয় আভিজাত্য প্রকাশ করছে।

অনন্যা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো, চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেলো। কৌশিক সাইকেলের কাছে গিয়ে থামলো। এক হাতে সাইকেলের হ্যান্ডেল ধরলো, অন্য হাতে ইশারা করে অনন্যাকে ডাকলো। তার গভীর কণ্ঠে প্রতিধ্বনি হলো,
"এদিকে আসুন, শিকদার!"

অনন্যা মুখ ভেঙিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে এলো। কৌশিক তার চিরাচরিত গম্ভীর ভঙ্গিতে বললো,
"এই গ্যারেজের সবকিছু আমার খুব প্রিয়। তবে, যেহেতু রাস্তা অনেক দূরের, তাই আমার সাইকেলটা ধার দিতে পারি আপনাকে।"

অনন্যা ভ্রু কুঁচকে, ঠোঁট উল্টে প্রতিবাদ করলো,
"আমি সাইকেল চালাতে পারি না।"

"তো কী চালাতে পারেন আপনি?"

অনন্যা চোখ ঘুরিয়ে একে একে সব বাহনের দিকে তাকালো। প্রতিটির দিকে দৃষ্টি বুলিয়ে আবার কৌশিকের দিকে ফিরলো। গলার স্বরে একটা অভিমান মেশানো,
"কিছুই পারি না।"

কৌশিক ঠোঁটের কোণে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটিয়ে বললো,
"ইউসলেস!"

অনন্যার ভ্রু কুঁচকে গেলো। দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হলো, যেন তাতেই কৌশিককে বিদ্ধ করবে। তার জোরালো কণ্ঠ প্রতিধ্বনিত হলো,
"ক...কী? কী বললেন আপনি? ইউসলেস আমি? আপনি নিজে যেমন কতো মহাপুরুষ! আর পারি না ঠিক আছে...কিন্তু ইউসলেস বলতে হলো কেনো? শিখানোর কথাও তো বলতে পারতেন! কিন্তু না, আপনি তো চান আমি ঘরে বসে থাকি, তাই না?"

কৌশিক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
"লিসেন, নট এগেইন! প্লিজ স্টপ হেয়ার।"

অনন্যা এক পা এগিয়ে তীব্র কণ্ঠে বলে উঠলো,
"না, স্টপ করবো না! আপনি ইউসলেস কেনো বলবেন?"

"আচ্ছা, শব্দ ফিরিয়ে নিলাম। আসুন আমার সাথে‌।"

কৌশিক গাড়ির ড্রাইভিং সিটে আরামের সঙ্গে বসে ইঞ্জিন চালু করলো। অনন্যা দ্রুত পায়ে এগিয়ে গাড়ির পিছনের সিটে বসার চেষ্টা করতেই কৌশিকের কণ্ঠ ঠান্ডা অথচ তীক্ষ্ণ হয়ে তার কানে পৌঁছালো,
"পিছনে বসতে চাইলে অন্য গাড়িতে উঠুন। আমার গাড়ির ব্যাক সিটে বসলে মাঝ রাস্তায় ফেলে চলে যাবো।"

কথাটা শুনে অনন্যার চোখ সরু হয়ে গেলো, ঠোঁট শক্ত করে চেপে ধরলো। গলার ভেতর থেকে একটা গর্জন বেরোতে চাইলো, কিন্তু সে সেটাকে চেপে রাখলো। দাঁতে দাঁত পিষে, ভ্রু কুঁচকে সামনের সিটে বসে পড়লো। 

অনন্যা পাশ ফিরে বাইরের রাস্তার দিকে তাকিয়ে রইলো, মনের ভেতর কৌশিকের ওপর বিরক্তির পাহাড় জমতে লাগলো। যতোই সময় যাচ্ছে লোকটার সাথে সম্পর্ক ভালো তো নয়, খারাপই হচ্ছে বেশি। ভবিষ্যতে কি হবে তাই নিয়েই চিন্তা হচ্ছে।
.
.
.
চলবে..................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন